ইলমে তাসাউফ অর্জন করা  এবং বাইয়াত গ্রহণ করা ফরজ

পিডিএফ লিংক- https://drive.google.com/open?id=1DV5Q-JQJ5byhezllEa1zDs2UYkW-Hdem 
Image result for বাইয়াত গ্রহণ করা ফরজইলমে তাসাউফ অর্জন করা
এবং বাইয়াত গ্রহণ করা ফরজ
  
 পবিত্র আল কুরআন উল কারিম উনার মধ্যে আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার রহমত - মুহসিন অথবা আল্লাহওয়ালাগণ উনাদের নিকটে(সূরা আরাফ শরীফঃ আয়াত শরীফ ৫৬)

 পবিত্র আল কুরআন উল কারিম উনার সূরা কাহাফ শরীফ উনার ১৭ নম্বর আয়াত শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে, কামিল মুর্শিদের গুরুত্ব সম্পর্কে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মোবারক হয়েছে, “আল্লাহ পাক তিনি যাঁকে হেদায়েত দান করেন, সেই হিদায়েত পায় আর যে ব্যক্তি গুমরাহীর মধ্যে দৃঢ় থাকে, সে কোন ওলীয়ে মুর্শিদ (কামিল শায়খ বা পীর) উনার ছোহবত লাভ করতে পারে না

 আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “তোমরা সব আল্লাহওয়ালা হয়ে যাও(সূরা আল ইমরান শরীফ-আয়াত শরীফ ৭৯)

 মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ পাক উনার সূরা তওবা শরীফ উনার ১১৯ নম্বর আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মোবারক করেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো এবং ছাদিক্বীন বা সত্যবাদীগণ উনাদের সঙ্গী হও এখানে ছাদিক্বীন বলতে ওলী-আল্লাহগণ উনাদেরকেই বুঝানো হয়েছে

 আল্লাহ পাক পবিত্র আল কুরআন উল কারিম উনার মধ্যে বলেন, “আল্লাহ পাক উনার ও উনার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার ইত্বায়াত করো এবং তোমাদের মধ্যে যারা (উলিল আমর) আদেশদাতা, তাদের অনুসরণ করো

 আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আমাকে পাওয়ার জন্য উসিলা তালাশ কর(সূরা মায়িদা শরীফঃ আয়াত শরীফ ৩৫)

 পবিত্র সূরা কাহাফ শরীফ উনার ২৮ নম্বর আয়াত শরীফে উল্লেখ আছে আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “আপনি নিজেকে উনাদের সংসর্গে আবদ্ধ রাখুন, যাঁরা সকাল-সন্ধ্যায় উনাদের রবকে ডাকেন উনার সন্তুষ্টি হাছিলের জন্য অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহ্ পাক, উনার সন্তুষ্টি হাছিলের জন্য ক্বলবী যিকির করেন, উনার অনুসরণ ও ছোহ্বত (সাক্ষাত) এখতিয়ার করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে

 হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আদম সন্তানের শরীরে এক টুকরা গোস্ত আছে যদি সেটা শুদ্ধ হয়ে যায় তবে সমস্ত শরীর শুদ্ধ হয়ে যায় আর যদি সেটা অশুদ্ধ হয় তাহলে সমস্ত শরীর বরবাদ হয়ে যায়, সাবধান ওটা হচ্ছে কলব(বুখারি শরীফ)

 মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “যার ক্বলবে আমার যিকির জারি নেই সে নফসের অনুসরণ করে এবং তার আমলগুলো হয় শরীয়তের খিলাফ।”

১০ আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বলেন, “সাবধান! আল্লাহ পাক উনার যিকির দ্বারা দিল ইতমিনান হয় এই আয়াতের ব্যাখ্যায় রসুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “শয়তান আদম সন্তানের কলবের উপর বসে, যখন আল্লাহ পাক উনার যিকির করে তখন পালিয়ে যায়, আর যখন আল্লাহ পাক উনার যিকির থেকে গাফিল হয় তখন শয়তান ওসওয়াসা দেয়

১১ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ মোবারক করেন, “প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য (জরুরত আন্দাজ) ইলম অর্জন করা ফরয(বায়হাক্বী, মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত, তালীকুছ্ ছবীহ্, শরহুত্ ত্বীবী, মোযাহেরে হক্ব, আশয়াতুল লুময়াত)

১২ হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “ইলম দুপ্রকার-
() ক্বলবী ইলম অর্থাৎ ইলমে তাছাউফ আর এটাই মূলতঃ উপকারী ইলম
() যবানী ইলম অর্থাৎ ইলমে ফিক্বাহ্, যা আল্লাহ্ পাক, উনার পক্ষ হতে বান্দার জন্য দলীল(দারিমী, তারগীব ওয়াত তারহীব, তারীখ, আব্দুল বার, দাইলামী, বায়হাক্বী, মিশকাত, মিরকাত, শরহুত্ ত্বীবী, তালীকুছ্ ছবীহ্, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, মুযাহিরে হক্ব)

সকলেই একমত যে, ইলমে তাছাউফ অর্জন করার মাধ্যমে অন্তর পরিশুদ্ধ করতঃ হুযূরী ক্বল্ব হাছিল করা তথা অন্ততঃপক্ষে বিলায়েতে আম হাছিল করা ফরয এ ফরয ততক্ষণ পর্যন্ত আদায় করা সম্ভব হবেনা, যতক্ষণ পর্যন্ত একজন কামিল মুর্শিদ, উনার নিকট বাইয়াত না হবে

১৩ সুলতানুল আরিফীন, হযরত বায়েজীদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি, সাইয়্যিদুত্ ত্বায়িফা হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হুজ্জাতুল ইসলাম, হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহিসহ আরো অনেকেই বলেন যে, “যার কোন পীর বা মুর্শিদ নেই তার মুর্শিদ বা পথ প্রদর্শক হলো শয়তান(ক্বওলুল জামীল, নুরুন আলা নূর, তাছাউফ তত্ত্ব)

১৪ হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মোবারক হয়েছে, “তোমরা কার নিকট থেকে দ্বীন শিক্ষা করছো, তাকে দেখে নাও(মুসলিম শরীফ) তাই, ইসলাম তিনি কখনও বলেন না যে তোমরা কোন ওলী-আল্লাহ উনাদের কাছে যেও না, বরং উনাদের কাছে যাওয়ার জন্যই নির্দেশ করা হয়েছে

১৫ আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “যদি তোমরা না জান, তবে আহলে যিকির বা আল্লাহওয়ালাগণ উনাদেরকে জিজ্ঞেস করে জেনে নাও(সূরা নহল শরিফঃ আয়াত শরীফ ৪৩ ও সূরা আম্বিয়া শরিফঃ আয়াত শরীফ ৭)

১৬)  আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি বলেনঃ আল্লাহ্ সুবাহানাহু ওয়া তাআলা বলেনঃ যে ব্যক্তি আমার অলী উনার সাথে শত্রুতা করে, আমি তার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করছি আমার বান্দার প্রতি যা ফরয করেছি তা দ্বারাই সে আমার অধিক নৈকট্য লাভ করে আমার বান্দা নফল কাজের মাধ্যমেও আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে অবশেষে আমি তাকে ভালবেসে ফেলি যখন আমি তাকে ভালবাসি, তখন আমি তার কান হয়ে যাই যা দিয়ে সে শোনে, তার চোখ হয়ে যাই যা দিয়ে সে দেখে, তার হাত হয়ে যাই যা দিয়ে সে ধরে এবং তার পা হয়ে যাই যা দিয়ে সে চলাফেরা করে সে আমার কাছে কিছু চাইলে, আমি তাকে তা দেই সে যদি আমার নিকট আশ্রয় কামনা করে, তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দেই আমি যা করার ইচ্ছা করি, সে ব্যাপারে কোন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগি না কেবল মুমিনের আত্মার ব্যাপার ছাড়া সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার মন্দকে অপছন্দ করি[সহিহ বুখারী শরিফঃ হাদিস শরীফ ৬৫০২]

উল্লিখিত উছুলের ভিত্তিতে সুস্পষ্টভাবে এটিই প্রমাণিত হয় যে, ফরয পরিমাণ ইলমে তাছাউফ যেহেতু অর্জন করা ফরয, আর তা যেহেতু কামিল মুর্শিদ বা পীর ছাহেব, উনার নিকট বাইয়াত হওয়া ব্যতীত অর্জন করা সম্ভব নয়, সেহেতু একজন কামিল মুর্শিদ অর্থাৎ যিনি সর্বদা আল্লাহ্ পাক, উনার যিকিরে মশগুল, যিনি ১০০ ভাগ কোরআন সুন্নাহ অনুসরণ করে নিজেকে গড়ে তুলেছেন উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করাও ফরয





হক্কানী শায়েখ উনার কাছে বাইয়াত হওয়া ফরয
Image result for বায়য়াতহক্কানী শায়েখ উনার কাছে বাইয়াত হওয়া ফরয

কজন হক্কানী শায়েখ তথা ওলী আল্লাহ উনার নিকট বাইয়াত হয়ে জিকির-ফিকির করে ইছলাহ হাছিল করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরয। নিচে কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা-কিয়াস এর দৃষ্টিতে আলোচনা করা হলোঃ

১। মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ইমহান আল্লাহ পাক উনার রহমত মুহসিন বা আল্লাহওয়ালাগণ উনাদের নিকটে।” (সূরা আ’রাফঃ আয়াত শরীফ ৫৬)


২। কামিল মুর্শিদের গুরুত্ব সম্পর্কে কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে,“আল্লাহ পাক যাঁকে হিদায়েত দান করেন, সেই হিদায়েত পায়। আর যে ব্যক্তি গুমরাহীর মধ্যে দৃঢ় থাকে, সে কোন ওলীয়ে মুর্শিদ (কামিল শায়খ বা পীর) উনার ছোহবত লাভ করতে পারে না।” (সূরা কাহাফঃআয়াত শরীফ-১৭)

৩। মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “তোমরা সব আল্লাহওয়ালা হয়ে যাও”। (সূরা ইমরানঃ আয়াত শরীফ-৭৯)

৪। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালাম পাক-এ ইরশাদ করেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো এবংছাদিক্বীন বা সত্যবাদীগণের সঙ্গী হও।” (সূরা তওবাঃ আয়াত শরীফ-১১৯) এখানে ছাদিক্বীন বলতে ওলী-আল্লাহ উনাকেরকেই বুঝানো হয়েছে।

৫। মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ আরো ইরশাদ করেন, “মহানআল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইত্বায়াত কর এবং তোমাদের মধ্যে যাঁরা (উলিল আমর) আদেশদাতা, উনাদেরকে অনুসরণ কর”।

৬। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আমাকে পাওয়ার জন্য উসিলা তালাশ কর”।

৭। পবিত্র কুরআন শরীফ আরো উল্লেখ রয়েছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “আপনি নিজেকে উনাদের সংসর্গে আবদ্ধ রাখুন, যাঁরা সকাল-সন্ধ্যায় উনাদের রবকে ডাকে উনার সন্তুষ্টি হাছিলের জন্য। অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহ্ পাক, উনার সন্তুষ্টি হাছিলের জন্য ক্বলবী যিকির করেন, উনার অনুসরণ ও ছোহ্বত (সাক্ষাত) এখতিয়ার করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।” (সূরা কাহাফঃ আয়াত শরীফ- ২৮)


৮। হাদীস শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “আদম সন্তানের শরীরে এক টুকরা গোশতআছে যদি সেটা শুদ্ধ হয়ে যায় তবে সমস্ত শরীর শুদ্ধ হয়ে যায়। আর যদি সেটা অশুদ্ধ হয় তাহলে সমস্ত শরীর বরবাদ হয়ে যায়, সাবধান ওটা হচ্ছে ক্বলব”। (বুখারী শরীফ)

৯। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “যার ক্বলবে আমার যিকির জারি নেই সে নফসের অনুসরণ করে এবং তার আমলগুলো হয় শরীয়তের খিলাফ”।

১০। মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ বলেন, “সাবধান! মহানআল্লাহ পাক উনার যিকির দ্বারা দিল ইতমিনান হয়”। এই আয়াতের ব্যাখ্যায় হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “শয়তান আদম সন্তানের ক্বলবের উপর বসে, যখন আল্লাহ পাক উনারযিকির করে তখন পালিয়ে যায়, আর যখন আল্লাহ পাক উনার যিকির থেকে গাফিল হয় তখন শয়তান ওসওয়াসা দেয়”।

১১। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য (জরুরত আন্দাজ) ইলম অর্জন করা ফরয।” (বায়হাক্বী, মিশকাত,মিরকাত, লুময়াত, তা’লীকুছ্ ছবীহ্, শরহুত্ ত্বীবী, মোযাহেরে হক্ব, আশয়াতুল লুময়াত)

১২। হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “ইলম দু’প্রকার- (১) ক্বলবী ইলম অর্থাৎ ইলমে তাছাউফ। আর এটাই মূলতঃ উপকারী ইলম। (২) যবানী ইলম অর্থাৎ ইলমে ফিক্বাহ্, যা আল্লাহ্ পাক উনার পক্ষ হতে বান্দার জন্য দলীল।” (দারিমী, তারগীব ওয়াত তারহীব, তারীখ, আব্দুল বার, দাইলামী, বায়হাক্বী, মিশকাত, মিরকাত,শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ্ ছবীহ্, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, মুযাহিরে হক্ব)

সকলেই একমত যে, ইলমে তাছাউফ অর্জন করার মাধ্যমে অন্তর পরিশুদ্ধ করতঃ হুযূরী ক্বলব হাছিল করা তথা অন্ততঃপক্ষে বিলায়েতে আম হাছিল করা ফরয। এ ফরয ততক্ষণ পর্যন্ত আদায় করা সম্ভব হবেনা,যতক্ষণ পর্যন্ত একজন কামিল মুর্শিদ, উনার নিকট বাইয়াত না হবে। তাই বাইয়াত গ্রহণ করাও ফরয।

১৩। এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ “তাফসীরে মাযহারী” তে উল্লেখ আছে যে,“যে কাজ বা আমল ব্যতীত ফরযসমূহ আদায় করা সম্ভব হয়না, উক্ত ফরযগুলোকে আদায় করার জন্য সে কাজ বা আমল করাও ফরয”।

১৪। হানাফী মায্হাবের মশহুর ফিক্বাহর কিতাব “দুররুল মুখতার” এ উল্লেখ আছে, “যে আমল ব্যতীত কোন ফরয পূর্ণ হয়না; উক্ত ফরয পূর্ণ করার জন্য ঐ আমল করাটাও ফরয”।

১৫। সুলতানুল আরিফীন, হযরত বায়েজীদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি, সাইয়্যিদুত্ ত্বায়িফা হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হুজ্জাতুল ইসলাম, হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহিসহ আরো অনেকেই বলেন যে, “যার কোন পীর বা মুর্শিদ নেই তার মুর্শিদ বা পথ প্রদর্শক হলো শয়তান”। (ক্বওলুল জামীল, নুরুন আলা নূর, তাছাউফ তত্ত্ব)

১৬। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “তোমরা কার নিকট থেকে দ্বীন শিক্ষা করছ, তাকে দেখে নাও”। (মুসলিম শরীফ)। তাই, ইসলাম কখনও বলে না যে তোমরা কোন ওলী-আল্লাহর কাছে যেও না, বরং উনাদের কাছে যাওয়ার জন্যই নির্দেশ করা হয়েছে।

১৭। মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “যদি তোমরা না জান, তবে আহলে যিকির বা আল্লাহওয়ালাগণকে জিজ্ঞেস করে জেনে নাও”। (সূরা নহলঃআয়াত শরীফ- ৪৩ ও সূরা আম্বিয়াঃ আয়াত শরীফ-৭)

উল্লিখিত উছুলের ভিত্তিতে সুস্পষ্টভাবে এটিই প্রমাণিত হয় যে, ফরয পরিমাণ ইলমে তাছাউফ যেহেতু অর্জন করা ফরয, আর তা যেহেতু কামিল মুর্শিদ বা পীর ছাহেব, উনার নিকট বাইয়াত হওয়া ব্যতীত অর্জন করা সম্ভব নয়, সেহেতু একজন কামিল মুর্শিদ অর্থাৎ যিনি সর্বদা আল্লাহ্ পাক, উনার যিকিরে মশগুল,উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করাও ফরয।
শায়েখ/মুর্শিদ/পীর সাহেবের কাছে বায়াত হওয়া কি?
Image result for বায়াতবায়াত হওয়া
শায়েখ/মুর্শিদ/পীর সাহেবের কাছে বায়াত হওয়া কি?
উত্তর : সম্মানিত বায়াত হওয়া ফরজ। 
*******************************************************
যিনি খালিক্ব মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনি উনার সম্মানিত কিতাব কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন مَن يَهْدِ اللَّهُ فَهُوَ الْمُهْتَدِي وَمَن يُضْلِلْ فَلَن تَجِدَ لَهُ وَلِيًّا مُّرْشِدًا অর্থাৎ যে হেদায়েত চায় সে হেদায়েত পায় আর যে গুমরাহের উপর ইস্তিকামত থাকে সে কখনো ওলি মুর্শিদ পায়না। সম্মানিত সুরা কাহাফ শরীফ, সম্মানিত আয়াত শরীফ ১৭। 

তার মানে হল কেউ যদি হক্ব তালাশী না হয় সে কখনো ওলী, মুর্শিদ উনাকে পাবে না।
আসুন শুরুতেই সম্মানিত বায়াত বিষয়ে সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার কিছু সম্মানিত হাদিস শরীফ বর্ননা করি,
সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন।

عن عبد الله بن عمررض قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول من خلع يدامن طاعة لقى الله يوم القيامة لاحجة له ومن مات وليس فى عنقه بيعة مات ميتة جاهلية (مسلم شريف ج২ ص ২৮১)
অর্থ : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি খলিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক ও উনার রাসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুকরণ করা থেকে হাত সরিয়ে নিবে, কেয়ামতের দিন তার নাজাতের জন্য কোন দলিল থাকবে না। আর যে ব্যক্তি বাইয়াত গ্রহণ করা ছাড়া মৃত্যুবরণ করবে তার মৃত্যু জাহেলী যুগের বেঈমানদের মত হবে। নাউযুবিল্লাহ।(মুসলিম শরিফ ২ খ. ১২৮ পৃ.)
অন্য হাদিছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে।
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ومن بايع إماماً فأعطاه صفقة يده وثمرة قلبه فليطعه ما استطاع فإن جاء آخر ينازعه فاضربوا عنق الآخر (مسلم شريف ج২ ص ৬২১ رقم الحديث ১৮৫২)
অর্থ : সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, "যে ব্যক্তি অন্তরের বিশ্বাসের সাথে কোন শায়েখের হাতে বাইয়াত হন, তিনি যেন যথাসম্ভব তার শায়েখের কথা মান্য করে চলেন। যদি অন্য কেউ তার সে বাইয়াতকে ভঙ্গ করাতে চায়, তাহলে তার গর্দান উড়িয়ে দিন। (মুসলিম শরিফ ২ খ. ৬২১ পৃ. হাদীস নং ১৮৫২)
আরও ইরশাদ মুবারক হয়েছেন।
عن عمرو بن العاص رض قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من بايع اماما فاعطاه صفقة يده وثمرة قلبه فليطعه ان استطاع (مسلم شريف ج২ ص৬২১)
অর্থ : হযরত আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি কোন শায়েখের হাতে বাইয়াত হবে। সে যেন এর অঙ্গীকারও পূর্ণ করতে থাকে এবং অন্তর দ্বারা পীর সাহেব বা শায়েখকে ভালবাসতে থাকে। আর যথা সম্ভব শায়েখের অনুকরণ ও অনুসরণ করতে থাকে। (মুসলিম শরিফ ২ খ. ১২৬ পৃ.)
===========================
عن ابن عمر رض من مات ولابيعة عليه مات ميتة جاهلية (رواه احمد- كنزل العمال ج১ص৬৬)
অর্থ : হযরত ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি বাইয়াত না হয়ে মরবে সে কাফেরদের মত মরবে। (মুসনাদে আহমাদ, কানযুল উম্মাল ১খ.৬৬ পৃ.)
عن معاوية رض من مات بغيرإمامٍ مات ميتةً جاهليةً (أحمد ج৪ص৯৬)
অর্থ : হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনুহু বলেন, যে ব্যক্তি শায়েখের তত্ত্বাবধানে থাকা ছাড়া করবে, সে বেঈমান হয়ে মরবে। (আহমদ ৪ খ. ৯৬ পৃ.)
وعن ابن عمر رض من مات على غيرطاعة الله مات ولاحجة له ومن مات وقد نزع يده من بيعةٍ كانت ميتته ميتة ضلالةٍ (رواه أحمد ج ২ ص ১১১)
অর্থ : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাকের আনুগত্য করা ছাড়া মৃত্যুবরণ করবে, তার নাজাতের কোন উপায় থাকবে না। আর যে ব্যক্তি বাইয়াত হওয়া থেকে হাত সরিয়ে রাখবে এবং বাইয়াত হওয়া ছাড়া মরবে সে গোমরাহী অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করবে। (আহমদ ২ খ. ১১১ পৃ.)
উপরে উল্লেখিত হাদিস সমুহ দ্বারা বাইয়াত হওয়ার গুরুত্ব কিছুটা হলেও অনুধাবন করা যায়, এছাড়াও শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভি রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
اِنَّ الَّذِیْنَ یُبَایِعُوْنَكَ اِنَّمَا یُبَایِعُوْنَ اللّٰهَ١ؕ یَدُ اللّٰهِ فَوْقَ اَیْدِیْهِمْ١ۚ فَمَنْ نَّكَثَ فَاِنَّمَا یَنْكُثُ عَلٰی نَفْسِهٖ١ۚ وَ مَنْ اَوْفٰی بِمَا عٰهَدَ عَلَیْهُ اللّٰهَ فَسَیُؤْتِیْهِ اَجْرًا عَظِیْمًا۠۝۱۰ (القول الجميل ص১২)
অর্থ : নিশ্চয় যারা আজ আপনার কাছে মুরিদ হচ্ছে তারা মূলত আল্লাহর কাছেই মুরিদ হচ্ছে। কারণ পীর-মুরিদীর অঙ্গীকার করার সময় আল্লাহ পাকের হাত তাদের হাতের উপরই রয়েছে। সুতরাং যারা এই অঙ্গীকার ভঙ্গ করবে তারা তাদের ক্ষতির জন্যই তা করবে এবং যারা তা পরিপূর্ণভাবে পালন করবে, অচিরেই আল্লাহ পাক তাদেরকে মহা পুরস্কার দিবেন। (সূরা ফাতাহ শরীফ আয়াত শরীফ ১০) (আল কওলুল জামিল ১২ পৃ.)
তিনি আরও বলেন ,آنكہ درحديث وارد شده كہ : من مات وليس فى عنقه بيعة مات ميتة جاهلية (الحديث) يعنی ہركہ بميرد حال آنكہ نيست در گردن اوبيعت خلیفہ مرده است بمرگ جاہليت واين نص شرع است تفصيلا (إزالة الخفاء عن خلافة الخلفاء للشيخ ولى الله المحدث الدهلوىج১ص১৭)
অর্থ : হাদীস শরিফে আছে, "যে ব্যক্তি বাইয়াত হওয়া ছাড়া মরবে সে জাহেলী যুগের বেঈমানদের মত মরবে" (আল'হাদীস)। অর্থাৎ যে ব্যক্তি কোন খেলাফতপ্রাপ্ত হক্কানী কামেল শায়েখের কাছে বাইয়াত না হয়ে মরবে, সে জাহেলী যুগের বেঈমানদের মত মরবে। এ কথা শরিয়তের দলিল দ্বারা বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। (ইঝালাতুল-খফা আ'ন্ খেলাফাতিল-খোলাফা ১খ. ১৭পৃ. শায়েখ ওলীউল্লাহ্ মুহাদ্দেস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
এছাড়াও বিখ্যাত ইমাম হাফেজ আয-যাহাবি রহমতুল্লাহি আলাইহ তার ঐতিহাসিক কিতাব "কিতাবুল কাবায়েরে" লিখেছেন , বায়াত না হওয়া কবিরা গুনাহ ।
এখন প্রশ্ন হলো, কার কাছে বাইয়াত হবো ???
এই বিষয়ে আসুন সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার হাদিস শরীফ দেখি :
।عَنْ أَبِى حَازِمٍ قَالَ قَاعَدْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ خَمْسَ سِنِينَ فَسَمِعْتُهُ يُحَدِّثُ عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ كَانَتْ بَنُو إِسْرَائِيلَ تَسُوسُهُمُ الأَنْبِيَاءُ كُلَّمَا هَلَكَ نَبِىٌّ خَلَفَهُ نَبِىٌّ وَإِنَّهُ لاَ نَبِىَّ بَعْدِى وَسَتَكُونُ خُلَفَاءُ فَتَكْثُرُ قَالُوا فَمَا تَأْمُرُنَا قَالَ فُوابِبَيْعَةِ الأَوَّلِ فَالأَوَّلِ وَأَعْطُوهُمْ حَقَّهُمْ فَإِنَّ اللَّهَ سَائِلُهُمْ عَمَّا اسْتَرْعَاهُمْ (مسلم شريف ج২ ص ১২৬)
অর্থ : হযরত আবু হাজেম রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার খেদমতে পাঁচ বছর ছিলাম, তিনি হাদীছ শরীফ শুনাতেন একদা তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ মুবারক, বনী ইসরাইলদের একের পর এক নবী আসতেন। কিন্তু আমার পর আর কোন নবী আসবেন না, তবে আমার অনেক খলিফা হবেন। সাহাবা কেরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, তখন আমরা কি করব? উত্তরে তিনি বললেন, আমার খলিফাগণের একের পর একের কাছে বাইয়াত হতে থাকবে এবং তাদের হকও আদায় করতে থাকবে। কেননা তাদের অধীনস্তদের আমল সম্পর্কে তাদেরকেও প্রশ্ন করা হবে। (মুসলিম শরিফ ২ খ. ১২৬ পৃ.)
অনেকেই বলে থাকেন খলিফা হলেন তিনি যিনি রাস্ট্রের প্রধান হয়ে থাকেন , অথচ আল্লাহর রাসুল সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাদেরকে খলিফা সাব্যস্ত করেছেন নিচের হাদিছ শরীফ দেখলেই বুঝতে পারবেন ।

উম্মতের নবী আর আসবেন না, কিন্তু উনার প্রতিনিধি ও খলিফাগণ সব সময় আসতে থাকবেন। উনারা দুনিয়ায় দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা-মেহনত করতে থাকবেন। পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদয় হওয়ার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত দ্বীন দুনিয়ায় বাকী থাকবে, সে সময় আসা পর্যন্ত সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার খলিফা আলাইহিমুস সালাম উনারা দ্বীন প্রতিষ্ঠার এ বরকতময় দায়িত্ব্ব পালন করে যাবেন। উনারা সংখ্যায় কম হলেও উনাদের থেকে দুনিয়া একেবারে খালি থাকবে না, যে বিষয়টি হাদীস শরিফে এভাবে বর্ণিত হয়েছে,
عن على رض قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اللهم ارحم خلفائى قلنا يارسول الله! ومن هم خلفائك؟ قال الذين يأتون من بعدى يروون أحاديثى ويعلمون الناس (رواه الهيثمى فى مجمع الزوائد ج ১ ص ১২৬) عند الطبرانى فى الأوسط (والغزالى فى الإحياء ج১ ص ১১) (والسيوطى فى مفتاح الجنة (والقاضى عياض رح فى تعليقات الألماع إلى معرفة اصول الرواية وتقييد السماع ص ১৭) {درس ترمذی ج ১ ص ২০}
অর্থ : ইমামুল আউয়াল মিন আহলি বাইতি রসুলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলি কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম বলেন, একদা সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করছিলেন, আয় বারে ইলাহি! আমার খলিফাদের উপর রহম করুন। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনার খলিফা কারা, যাদের জন্য আপনি রহমতের দোয়া করছেন? উত্তরে তিনি বললেন, যারা আমার পর আসবে ও হাদীসসমূহ বর্ণনা করবে এবং তা মানুষদেরকে শিক্ষা দিবে।

হযরত আল্লামা হায়সামী রহমতুল্লাহি আলাইহি 'মাজমাউঝ যাওয়ায়েদে' ১ খ. ১২৬ পৃ. উল্লেখ করেছেন। হযরত আল্লামা তবরানী রহমতুল্লাহি আলাইহি 'আওসাতে' উল্লেখ করেছেন। হযরত আল্লামা ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহ 'এহইয়ায়ে-উলূমিদ্দিনে' ১খ. ১১পৃ. উল্লেখ করেছেন। হযরত আল্লামা সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি 'মেফতাহুল জান্নাতে' উল্লেখ করেছেন। ইমাম কাজী ইয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি 'তাকীদুস সিমা' ১৭ পৃ. উল্লেখ করেছেন, হাশিয়া দরসে তিরমিযী ১ খ. ২০ পৃ.)
এই হাদীস শরীফ খানা একটু ভিন্ন ভাষায় এভাবেও বর্ণিত হয়েছে, তাতে সুন্নত জিন্দাকারীদের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে,
عن على رض قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اللهم ارحم خلفائى قلنا يارسول الله! ومن هم خلفائك؟ قال الذين يأتون من بعدى يروون أحاديثى وسنتى (أخرجه أبونعيم أحمدبن عبدالله الحافظ من طريق الطلحى هذا فى أخبار اصبهانى ج ১ص ৮১)
অর্থ : ইমামুল আউয়াল মিন আহলি বাইতি রসুলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, একদা সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া মুবারক করলেন এভাবে আয় বারে ইলাহি! আমার খলিফাদের উপর রহম করুন। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ ই হাবিবাল্লাহ সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনার খলিফা কারা, যাদের জন্য আপনি রহমতের দোয়া করছেন? উত্তরে তিনি বললেন, যারা আমার পর আসবে ও হাদীস বর্ণনা করবে এবং আমার সুন্নত জিন্দা করবে তারাই আমার খলিফা হবে।

হাফেজে হাদীস হযরত আল্লামা আবু নুআয়েম আহমদ বিন আব্দিল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি 'আখবারে-আসবাহানী' নামক কিতাবের ১ খ. ৮১ পৃ. এই হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। (দরসে তিরমিযী ১ খ. ২০ পৃ.)।
তর্কের খাতিরে যদি মেনেও নেই যে খলিফা এবং বাইয়াত গ্রহনকারী ব্যক্তি রাস্ট্রের প্রধান হতে হবে , তাহলেও সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার হাদিস শরীফ অনুযায়ী সেই জামানা অনেক পুর্বেই শেষ হয়ে গেছে, প্রমান হিসাবে নিচের কয়েক খানা হাদিস শরীফ দেখা যেতে পারে ।
وعن مسروق قال كنا جلوسا عند عبد الله بن مسعود وهو يقرئنا القرآن فقال له رجل يا أبا عبد الرحمن هل سألتم رسول الله ﷺ كم يملك هذه الأمة من خليفة؟ فقال عبد الله ما سألنى عنها أحد منذ قدمتُ العراق قبلك ثم قال نعم ولقد سألنا رسول الله ﷺ فقال اثنا عشر كعدة نقباء بنى إسرائيل (المسند للإمام أحمد بن حنبل ج১ص ৩৯৮ ৩৭৮১ (تفسير ابن كثير ج ৩ ص৬৫)
অর্থ : হযরত ইমাম মাসরুক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, একদা আমরা হযরত আব্দুল্লাহ্ বিন মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাছে কোরআন শরিফ শিক্ষা করছিলাম। তখন কেউ প্রশ্ন করলেন, উম্মতের খলিফা কতজন হবেন সে সম্পর্কে আপনারা কি সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনাকে কখনো জিজ্ঞাসা করেছিলেন? তিনি বললেন, আমি ইরাকে আসার পর আপনার পূর্বে কেউ আমাকে এই প্রশ্ন করেনি। এরপর তিনি বললেন হ্যাঁ, এই উম্মতের খলিফা কত জন হবেন সে সম্পর্কে আমরা সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন্যাবিয়্যিন, হাবিবুল্লাহ নূর-ই-মুজাসসাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন, “বনী ঈসরাইলের নুকাবাদের সংখ্যা ১২ জন ছিল আমার উম্মতের খলিফারাও ১২ জন হবেন। (মুসনাদে আহমাদ ১ খ. ৩৯৮, ৩৭৮১ পৃ. এবং তাফসিরে ইমাম ইবনে কাসির ৩ খ. ৬৫ পৃ.)