তাফসীরে ইলমে গইব

Image result for কুরআনতাফসীরে ইলমে গইব

يعلم ما بين ايديهم و ما خلفهم و لا يحيطون بشيء من علمه إلا بما شاء

১) তিনি তাদের অগ্র ও পশ্চাত সম্পর্কে অবগত।তার ইলমের কোন অংশ কেউ অবগত হতে পারে না তবে যাকে তিনি ইচ্ছা করেন অবগত করান।

[সূরা বাকারা, আয়াত নং ২৫৫]

ইমাম বাইহাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি  এই আয়াতের তাফসীরে লিখেছেন,

ولا يحيطون بشيء من علمه إلا بما شاء أي لا يعلمون من علمه إلا ما شاء أن يعلمهم إياه بتعليمه

তার ইলমের কোন অংশ কেউ জানে না, তবে যাকে ইচ্ছা তিনি তা জানান অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা যাকে ইচ্ছা তাকে বিশেষ ইলম শিক্ষা দেন। [আল-আসমা ওয়াস সিফাত, ইমাম বাইহাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি . পৃ.১৪৩]

ইমাম ইবনে কাসীর রহমতুল্লাহি আলাইহি  এই আয়াতের তাফসীরে লিখেছেন,

وقوله : ( ولا يحيطون بشيء من علمه إلا بما شاء ) أي : لا يطلع أحد من علم الله على شيء إلا بما أعلمه الله عز وجل وأطلعه عليه

অর্থাৎ আল্লাহর ইলমের ব্যাপারে কেউ অবগত হতে পারে না, তবে আল্লাহ তায়ালা কাউকে যদি অবহিত করেন তাহলে সে অবগত হতে পারে।

২. আল্লাহ তায়ালা সূরা কাহাফে হযরত খাজির আলাইহিস সালাম এর সম্পর্কে বলেছেন,

فَوَجَدَا عَبْدًا مِنْ عِبَادِنَا آتَيْنَاهُ رَحْمَةً مِنْ عِنْدِنَا وَعَلَّمْنَاهُ مِنْ لَدُنَّا عِلْمًا

অত:পর তারা উভয়ে আমার একজন নেককার বান্দার দেখা পেল, যাকে আমি আমার রহমত দান করেছি এবং আমার পক্ষ থেকে বিশেষ ইলম দান করেছি।[ সূরা কাহাফ, আয়াত নং ৬৫]

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,

عَالِمُ الْغَيْبِ فَلا يُظْهِرُ عَلَى غَيْبِهِ أَحَدًا إِلا مَنِ ارْتَضَى مِنْ رَسُولٍ فَإِنَّهُ يَسْلُكُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ رَصَدًا

অর্থাৎ তিনিই অদৃশ্য সম্পর্কে অবগত। অতএব তিনি তার গায়েবী বিষয় সম্পর্কে কাউকে অবহিত করেন না। তবে তার মনোনীত রাসূল ব্যতীত। সেক্ষেত্রে তিনি তার সামনে ও পেছনে প্রহরী নিয়োজিত করেন।

[সূরা জিন, আয়াত নং ২৬-২৭]

এ আয়াতের তাফসীরে ইবনে কাসীর রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন,

وهكذا قال هاهنا: إنه يعلم الغيب والشهادة، وإنه لا يطلع أحد من خلقه على شيء من علمه إلا مما أطلعه تعالى عليه

এখানে তিনি বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা দৃশ্য-অদৃশ্য সব কিছু জানেন। কোন সৃষ্টি তার কোন ইলম সম্পর্কে জানতে পারে না তবে যাকে তিনি জানান, কেবল সেই জানতে পারে।

[তাফসীরে ইবনে কাসীর, খ.৬, পৃ.২৮৪]

ইমাম কুরতুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি  বলেন,
قال علماؤنا: أضاف سبحانه علم الغيب إلى نفسه في غيرما آية من كتابه إلا من أصطفى من عباده....فالله تعالى عنده علم الغيب وبيده الطرق الموصلة إليه لا يملكها إلا هو : فمن شاء إطلاعه عليها أطلعه , ومن شاء حجبه عنها حجبه

আমাদের আলেমগণ বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা কুরআনের অনেক আয়াতে গায়েব সম্পর্কিত জ্ঞানকে নিজের দিকে সম্পৃক্ত করেছেন, তবে তার নির্বাচিত বান্দাদেরকে কিছু গায়েবের সংবাদ দিয়ে থাকেন। সুতরাং একমাত্র আল্লাহর নিকটই গায়েবের ইলম রয়েছে। গায়েবের ইলম পর্যন্ত পৌছার রাস্তা সম্পর্কে তিনিই পরিজ্ঞাত। তবে তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে গায়েব সম্পর্কে অবহিত করেন, যাকে ইচ্ছা তার থেকে গোপন রাখেন। [তাফসীরে কুরতুবী খ.৭, পৃ.২]

ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি  ফাতহুল বারীতে লিখেছেন,

وأما ما ثبت بنص القرآن أن عيسى عليه السلام قال أنه يخبرهم بما يأكلون وما يدخرون وأن يوسف قال إنه ينبئهم بتأويل الطعام قبل أن يأتي ذلك مما ظهر من المعجزات والكرامات : فكل ذلك يمكن أن يستفاد من الاستثناء في قوله تعالى ( إِلَّا مَنِ ارْتَضَى مِن رَّسُولٍ ) ,فإنه يقتضي إطلاع الرسول على بعض الغيب , والولي التابع للرسول عن الرسول يأخذ وبه يكرم , والفرق بينهما أن الرسول يطلع على ذلك بأنواع الوحي كلها , والولي لا يطلع على ذلك الا بمنام أو إلهام , والله اعلم

কুরআনের স্পষ্ট নস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে হযরত ইসা আ. তারা কী খায় ও সন্চয় করে সে সম্পর্কে বলেছেন এবং হযরত ইউসুফ আ. তাদের খাদ্যের ব্যাপারে ভবিষ্যৎবাণী করেছেন, গায়েব সংক্রান্ত এ বিষয়গুলো অবহিত হওয়ার বিষয়টি পবিত্র কুরআনের এই আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, “ তিনিই গায়েব সম্পর্কে পরিজ্ঞাত। তিনি কারও সম্মুখে গায়েব প্রকাশ করেন না, তবে তার নির্বাচিত রাসূল ব্যতীত।” কেননা, এই আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, রাসূলগণ কিছু গায়েব সম্পর্কে অবহিত। আর রাসূলের অনুসারী ওলীগণ তাদের কারণেই কিছু গায়েব সম্পর্কে অবহিত হন এবং তাদের মাধ্যমেই সম্মানিত হন। রাসূল ও ওলীর কিছু গায়েব সম্পর্কে অবহিত হওয়ার ক্ষেত্রে পার্থক্য হলো, রাসূল ওহী পাঠানোর সবগুলো পদ্ধতির মাধ্যমে গায়েব সম্পর্কে অবহিত হন, আর ওলী শুধু স্বপ্ন বা ইলহামের মাধ্যমে গায়েব সম্পর্কে অবহিত হন।” [ফাতহুল বারী, খ.৮, পৃ.৫১৪]

কাযী শাওকানী তাফসীরে ফাতহুল কাদীরে লিখেছেন,

إن الله سبحانه قد يطلع بعض عبيده على بعض غيبه

আল্লাহ তায়ালা কোন কোন বান্দাকে কিছু কিছু গায়েব সম্পর্কে অবহিত করে থাকেন।[ফাতহুল কাদীর, কাযী শাওকানী, খ.৩, পৃ.২০, শামেলা]

يخصص الرسول بالملك في اطلاعه على الغيب، والأولياء يقع لهم ذلك بالإلهام

ফেরেশতাদের মাধ্যমে গায়েব অবহিত হওয়ার বিষয়টি রাসুলগণের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। ওলীগণ কিছু কিছু গায়েব সম্পর্কে অবহিত হয়ে থাকেন ইলহামের মাধ্যমে।

[তাফসীরে বায়যাবী, খ.১৩, পৃ.৩৬৪]

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন ‘ আল্লামাকা মা লাম তাকুন তা’লাম ” আর্থাৎ, তিনি আপনাকে এমন জিনিস শিক্ষা দিয়েছেন যা আপনি জানতেন না “
( সুরা নিসা আয়াত ১১৩)

এ আয়াতে ব্যাখা করতে গিয়ে প্রসিদ্ধ তাফসীর গ্রন্থ “জালালাইন শরীফে” বলা হয়েছে ” আউযয়ু মিনাল আহকামে ওয়াল গাইব ” অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) কে শরীয়তের যাবতীয় হূকুম ও গায়েব সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছেন।

তাফসীরে সাভার ৪র্থ খন্ডে ২৭৫ পৃষ্টা রয়েছে,
“ইনণাহু(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) লাম ইয়াখ রুজু মিনাদ দুনিয়া হাত্বা আ’লামাহু ল্লাহু বি জামইহি মুগি বাতিদ দুনিয়া ওয়াল আখেরাহ “
অর্থাৎ, আল্লাহর দুনিয়া এবং আখেরাতের সমস্ত গায়েব না জানানো পর্যন্ত রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) দুনিয়া থেকে ইন্তেকাল করেন নি ।

তাফসিরে খায়েন ৪র্থ পারায় রয়েছে ;
” মা কানাল্লাহু লি ইয়াজ রাল মু’মিনিনা আলা মা ানতুম আলাইকুম “
উক্ত আয়াতের ব্যখ্যাু উল্লেখ করা হয়েছে – রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) এরশাদ করেন , আমার কাছে আমর উম্মতকে তাদের নিজ নিজ মাটির আকৃতিতে পেশ করা হয়েছে যেমন ভাবে আদম (আলাহিস সালাম) এর কাছে পেশ করা হয়েছিল । আমাকে জানানো হয়েছে , কে আমার উপর ঈমান আনবে ? কে আমাকে অস্বিকার করবে ? যখন এ খবর মুনাফিকদের কাছে পোছলো তখন তারা ঠাট্টা করে বললো -কে তাঁর উপর ঈমান আনবে আর কে তাকে অস্বিকার করবে তাদের কে তাদের জন্মের পুর্বেই মুহাম্মদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) জানতেন বলে বলেন । অথচ আমরা তাঁর সাথেই আছি – কিন্তু আমাদেরকে চিন্তে পারেন নি । এ খবর যখন রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) এর নিকট পৌছলো । তখন তিনি মিম্বরের উপরে দাড়ালেন এবং আল্লাহর প্রশংসা করে ইরশাদ করলেন,

“( কালা মা বালআকওয়ামে তায়ানু ফি ইলমি লা তাসআলু নি আন শাঈন ফিমা বাইনাকুম ওয়া বাইনাস সাআতি ইল্লা আনবাইতুকুম বিহ্‌)
অর্থাৎ, এসব লোকেদের ( মুনাফিকদের) কি যে হলো আমার জ্ঞান নি্যে তারা বিরূপ সমালোচনা করছে । তোমরা এখন থেকে কেয়ামত পর্যন্ত যে কোন বিষয় সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাসা করো আমি অবশ্যই উহা তোমাদের কে বলে দিবো”
(তাফসীরে খায়েন
ইলমে গইব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নবুয়তের অন্যতম দলীল ।

Image result for রওজা শরীফের ছবিইলমে গইব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নবুয়তের অন্যতম দলীল ।

১. হযরত আমর ইবনে আখতাব রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্নিত , তিনি বলেন , হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামাজ পড়লেন । অতঃপর মিম্বরে আরোহন করলেন এবং আমাদের উদ্দেশে দীর্ঘ বক্তব্য প্রদান করলেন ; এমন কি যোহরের নামায পড়ালেন ।অতঃপর আবারো আরোহন করলেন মিম্বরে , আর বক্তব্য দেওয়া শুরু করলেন ,এমন কি আসরের নামাযের সময় উপস্থিত হল । অতঃপর মিম্বরে হতে নেমে আসরও পড়লেন । পুনরায় মিম্বরে আরোহন করে বক্তব্য দিতে দিতএ সুর্য অস্তমিত হয়ে গেল । সে দিন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতীতে যা কিছু এবং ভবিষ্যতে যা কিছু হবে সকল বিষয়ে আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন । আমাদের মধ্যে যাঁদের স্মরণশক্তি অধিক তাঁরা সেসব (অদৃশ্য) সংবাদ বেশী মনে রাখতে পেরেছেন ।

( সুত্র : বুখারী শরীফ হাদিস নম্বর ৬২৩০ কিতাবুল কদর , মুসলিম শরিফ হাদিস নম্বর ২৮৯১ কিতাবুল ফিতান , তোরমিযী শরীফ হাদিস নম্বর ২১৯১ কিতাবুল ফিতান , আবু দাউদ শরীফ হাদিস নম্বর ৪২৮ কিতাবুল ফিতাম , মিসকাতুল মাসাবিহ : কিটাবুল ফিটাম ৪৬১ পৃষ্ঠা )

২.পবিত্র ক্বোরআনের ভাষায় বলা যায় - নবীপাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য মহান আল্লাহ অজানা কিছুই রাখেন নি ; হোকনা তা অতীত কিংবা ভবিষ্যত । কিয়ামত পরবর্তি বেহেশত-দোযখের সংবাদ পর্যন্ত যেখানে লুকায়ে থাকতে পারেনি ।তাই তো তিনি উপস্থিত আনেক লোকের মনের খবর বলে দিয়েছেন , মুনাফিক্বেদের অন্তরে আবৃত অন্ধকার কুঠুরিতে লালিত কপটতা প্রকাশ করে মসজিদ থেকে তাদের অনেককে বের করে দিয়েছেন । এমন কি অনেক সাহাবীর আবেদন পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বংশ তালিকা নিখুঁত ভাবে বলে দিয়েছেন এ গুলো কি প্রমান করে না নবীপাকের ইলমে গায়েব বিতর্কের উর্ধ্ধে একটি স্বীকৃত বিষয় ?

`৩.হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাল্যবন্ধু নয় কেবল সারাজীবনের একান্ত সঙ্গী ইসলামের প্রথম খলিফা এবং নবীগনের পর যিনি শ্রেষ্ট মানুষ , সিদ্দিকে আকবর হযরত আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ইসলাম গ্রহনের প্রক্কালে নবী করীমের কাছে তাঁর নুবুয়তের পক্ষে দলিল কি আছে জানতে চাইলে নবী করীম উত্তর দিতে গিয়ে ভ্রু কুঁচকে ফেলেন নি বরং দু'শ ভাগ দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে বলে দিয়েছিলেন কেন গত রাতে তুমি যে স্বপ্ন দেখেছ , আকাশের চন্দ্র-সুর্য তোমার কোলে এসে হাজির । আর সিরিয়া যাত্রাপথে সেই স্বপ্নের ব্যাখ্যাকারী তোমাকে যা কিছু বলেছে তাইতো আমার নুবুয়তের পক্ষে দলিল ।
এমন আশ্চর্যজনক তথ্যপ্রদানের অবস্থ হচ্ছে সিদ্দিক-ই-আকবরের স্তম্ভিত ! তিনি শতভাগ নিশ্চিত হলেন যে , এই অদৃশ্যজ্ঞানের সংবাদদাতা (নবী) কষ্মিণকালেও মিথ্যুক হতে পরেন না ।
৪.তদ্রুপ হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কথা শোনা যাক । বদরের যুদ্ধের বন্দিদের কে মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ হলে অন্য বন্দীরা যথারীতি মুক্তিপণ আদায়ে ব্যস্ত । এ দিকে চাচা হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও ঐ যুদ্ধবন্দীদের একজন । তিনি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাছে এসে আবেদন করলেন ইয়া হাবিবাল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আমি তো গরিব মানুষ ! মুক্তিপন দেয়ার মত আমার কাছে কোন সম্পদ নেই ।উত্তরে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন " কেন চাচা ! আপনি যুদ্ধে আসার পুর্বে আমার চাচীর কাছে যে স্বর্নালন্কার লুকিয়ে রেখে এসেছেন সে গুলো কোথায় ? হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহূর সে গোপন সংবাদ তো দুনিয়ার বুকে অন্য কেউ জানার কথা নয় ! কিন্তূ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিভাবে সুস্পস্টভাবে বলে দিলেন । তা রীতিমত বিষ্ময়ের ! না! এ ধরনের অদৃশ্য সংবাদদাতা কোনদিন মিথ্যুক হতে পারেন না । তাঁর কপালও চমকে উঠল । হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  হাতে নিজেকে সঁ'পে দিয়ে বলে উঠলেন হে আল্লাহর রাসুল ! আমাকে ইসলামের কালেমা শরীফ পড়িয়ে মুসলমান বানীয়ে দিন । আমি এতদিন ছিলাম গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত। এবার আলোতে আসতে চাই । নবীজি তাঁকে কালেমা পড়িয়ে নিজ হাতে বায়াত করে মুসলমান বানালেন । এ ভাবে একজন জাহান্নামী মুহুর্তে বেহেশতী হয়ে গেলেন । শুধু কি তাই ? নবীর পরশে শ্রেষ্ট সোনার মানুষে রুপান্তরিত হলেন ।
এ ভাবে হাজারো দৃষ্টান্ত রয়েছে যদ্বারা স্পস্ট প্রমাণিত হয় -মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় হাবীব কে ইলমে গায়েব দান করেছেন ।
এখন আরো কয়েকটি সহিহ হাদীসের উদ্ধৃতি পেশ করব যাতে সহীহ হাদীস ছাড়া অন্য কিছূ মানিনা বলে যারা গলার পানি শুকিয়ে ফেলে তারা বিষয়েটি শজে বুঝতে পেরে হিদায়াত লাভ করে ।

৫.হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত , তিনি বলেন একদা হুজুর নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম আমাদের সামনে দন্ডায়মান হলেন অতঃপর সৃষ্টিজগতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তথা বেহেশত বাসীরা বেহেশতে এবং দোযখনাসীরা দোযখে প্রবেশ করা পর্যন্ত সবকিছু আমাদের সামনে বলে দিলেন । আমাদের মধ্যে যারা মুখস্ত রাখতে পেরেছে তারা মুখস্ত রেখেছে ; আর যারা ভুলে যাবার তারা ভুলে গেছে ।
[ বুখারী : হাদীস নং ৩০২০ : কিতাবু বাডয়িল খালক্ব ]

৬.হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত । তিনি বলেন রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সামনে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করলেন- সে দিন থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে টার কোন বিষয়েই তাঁর বক্তব্যে বাদ দেননি । শ্রোতাদের মধ্যে যে মুখস্থ রাখার সে মুখস্ত রেখেছে আর যে ভুলে যাবা সে ভুলে গেছে ।
( বুখারী শরীফ হাদীস নং ৬২৩০ কিতাবুল কদর । মুসলিম শরীফ হা:নং২৮৯১ কিতাবুল ফিতন )

৭.হযরত আনাস বিন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আহু হতে াপর এক হাদীস শরিফে দেখা যায় । তিনি বলেন একদা নবীপাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে তাশরীফ আনলেন তখন সয়র্য পশ্চিমাকাশে দিকে ঝুঁকে পড়েছিল ( অর্থাৎ যোহরের নামাযের সময় হয়ে গিয়েছিল ) অতঃপর নবী করীম যোহরের মানায পড়লেন আর সালাম ফিরানোর পর মিম্বরে আরোহন করে ক্বিয়ামতের আলোচনা রাখলেন এবং ক্বিয়ামতের পুর্বেকার কতিপয় বড় বড় ঘটনা বর্ননা দিলেন আর উপস্থিত সাহাবিদেরকে সম্বোধন করে বললেন , খোদার কসম তোমরা আমার কাছে যা কিছু জানতে চাইবে আমি এই মজলিসেই সব প্রশ্নের উত্তর দেব ।
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন হুজুরের বানীর এমন দৃঢ়তা দেখে আনসারী সাহাবাদের মধ্যে আনন্দের কান্নার রোল বয়ে গেলো । আর নবীপাক বারবার বলে যাচ্ছেন - তোমরা আমাকে প্রশ্ন কর , প্রশ্ন কর । অতঃপর এক ব্যক্তি দাড়িয়ে প্রশ্ন করল - হে আল্লাহর রাসুল ! পরকালে আমার ঠিকানা কোথায় হবে ? নবীপাকে বললেন জাহান্নাম । অথপর আবদুল্লাহ ইবনে হুযাফা বললেন -ইয়া রাসুল লাল্লাহ ! আমার পিতা কে ? নবী করীম বললেন - তোমার পিতা হুযাফা । নবীপাক আবার ও জোর তাগিদ দিয়ে বললেন , তোমরা প্রশ্ন কর , প্রশ্ন কর ।
অথপর ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম বরাবর সামনে গিয়ে বসলেন আর বললেন -আমরা সন্তস্ট আল্লাহ কে রব হিসাবে পেয়ে , ইসলাম কে ড্বীন হিসাবে আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে রাসুল হিসেবে পেয়ে । তিনি এসব কথা বলার সময় নবী করীম চুপ রইলেন । অতঃপর বললেন -সেই সত্তার কসম ! যার হাতে আমার প্রান , আমার এ দেয়ালের সামনে এই মাত্র বেহেসত ও দোযখ হাজির করা হয়েছে , যখন আমি নামায পড়ছিলাম , আজকের মত কোন ভাল-মন্দকেও দেখিনি ।
(সুত্র বুখারী শরীফ হাদীস নং৬৮৬৪ কিতাবুল ই'তিসাম , বিল কিতাবে ওয়াস সুন্নাহ :, মুসলিম শরীফ হাদিস নং ২৩৫৯ )
এ ভাবে অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় রাসুলে আকরম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া ষাল্লাম ইলমে গায়েবের অধিকারী ছিলেন । অবশ্যই তা আল্লাহ প্রদত্ত ।

৮.আর সত্তাগত আলিমুল গায়েব হলেন একমাত্র আল্লাহ । আর আল্লাহর রাসুলের ইলমে গায়েব আল্লাহ্‌ প্রদত্ত । যেমন এ পসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে -
'' মা কানাল্লাহু লি উতলিয়াকুম আলাল গাইবে ওয়া কিন নাল্লাহা ইজতাবিয়ু মির রুসুলিহু মাইয়া সায়ু ''
অর্থাৎ হে সাধারাণ লোকগন ! আল্লাহ তা'আলার শান নয় যে , তিনি তোমাদেরকে ইলমে গায়েব দান করবেন , তবে হ্যাঁ রাসুলগনের মধ্য হতে তিনি যাকে চান তাকে অদৃশ্যজ্ঞানের জন্য মনোনীত করেন ।( সুরা আলইমরান ১৭৯)
রসুলগণের মধ্য হতে যদি আল্লাহ পাক কাউকে নির্বাচিত করেন। তাহলে সর্বপ্রথমে কাকে নির্বাচিত করবেন টা সহজেই অনুমেয় ।
আরেক জায়গায় ইরশাদ হয়েছে ;
তিনি স্বীয় গায়েবের বিষয়ে কাউকে ক্ষমতাবান করেন না । কিন্তূ রাসুলদের মধ্য যার উপর তিনি সন্তষ্ট হন ( তাকেই ক্ষমতা বান করেন )
(সুরা জিন- আয়াত ২৬-২৭ )

৯.আল্লাহ তায়ালা ইরশদ করেছেন ' আল্লামাকা মা লাম তাকুন তা'আলাম " আর্থাৎ ' তিনি আপনাকে এমন জিনিস শিক্ষা দিয়েছেন যা আপনি জানতেন না "
( সুরা নিসা আয়াত ১১৩)
এ আয়াতে ব্যাখা করতে গিয়ে প্রসিদ্ধ গ্রন্থ জালালাইন শরীফে বলা হয়েছে " আউযয়ু মিনাল আহকামে ওয়াল গাইব '' অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহিস সালাম কে শরীয়তের যাবতিয় হূকুম ও গায়েব সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছেন ।
উপরে বর্নিত আয়াত এবনহ জালালাইন শরীফের ব্যাখ্যা দ্বারা বুঝা গেল
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনন তানন হাবীব সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম কে ইলমে গায়েব জানাইয়াছেন । তাই আমরা বলি রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম ইলমে গায়েব জানেন । অসংখ্য হাদিসে মাধ্যমে জানা যায় যে রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম স্পস্ট বলে দিয়েছেন -কে কখন মৃত্যুবরন করবে ? কোন জায়গায় কে মারা যাবে এবং কার গর্ভে ছেলে সন্তান অথবা মেয়ে সন্তান রয়েছে ইত্যাদি।
যদি রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম এ সব বিষয়ে গয়েব না জানতেন , তাহলে সম্স্ত গয়েবের সংবাদ কি ভাবে দিলেন ?
৯.তাফসীরে সাভার ৪র্থ খন্ডে ২৭৫ পৃষ্টা রয়েছে
"ইনণাহু সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম লাম ইয়াখ রুজু মিনাদ দুনিয়া হাত্বা আ'লামাহু ল্লাহু বি জামইহি মুগি বাতিদ দুনিয়া ওয়াল আখেরাহ "
অর্থাৎ আল্লাহর দুনিয়া এবং আখেরাতের সমস্ত গায়েব না জানানো পর্যন্ত রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম দুনিয়া থেকে ইনতেকাল করেন নি ।
তাফসিরে খায়েন ৪র্থ পারায় রয়েছে ;
" মা কানা ল্লাহু লি ইয়াজ রাল মুক মিনিনা আলা মা ানতুম আলাইকুম "
উক্ত আয়াতের ব্যখ্যাু উল্লেখ করা হয়েছে - রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম এরশাদ করেন , আমার কাছে আমর উম্মতকে তাদের নিজ নিজ মাটীর আকৃতিতে পেশ করা হয়েছে যেমন ভাবে আদম আলািহিস সালাম এর কাছে পেশ করা হয়েছিল । আমাকে জানানো হয়েছে , কে আমার উপর ঈমান আনবে ? কে আমাকে অস্বিকার করবে ? যখন এ খবর মুনাফিকদের কাছে পোছলো তখন তারা ঠাট্টা করে বললো -কে তাঁর উপর ঈমান আনবে আর কে তাকে অস্বিকার করবে তাদের কে তাদের জন্মের পুর্বেই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম জানতেন বলে বলেন । অথচ আমরা তাঁর সাথেই আছি - কিন্তু আমাদেরকে চিন্তে পারেন নি । এ খবর যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম -এর নিকট পৌছলো । তখন তিনি মিম্বরের উপরে দাড়ালেন এবং আল্লাহর প্রসংসা করে ইরশাদ করলেন
(" কালা মা বালআকওয়ামে তায়ানু ফি ইলমি লা তাসআলু নি আন শাঈন ফিমা বাইনাকুম ওয়া বাইনাস সাআতি ইল্লা আনবাইতুকুম বিহ্‌")
অর্থাৎ " এসব লোকেদের ( মুনাফিকদের) কি যে হলো আমার জ্ঞান নি্যে তারা বিরূপ সমালোচনা করছে । তোমরা এখন থেকে কেয়ামত পর্যন্ত যে কোন বিষয় সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাসা করো আমি াবশ্যই উহা তোমাদের কে বলে দিবো"
(তাফসীরে খয়েন )


বুখারী শরীফের ' বাদ্‌য়ু খালকে " শীর্ষক আলোচনায় ও মিশকাত শরীফের বাদয়ু খলকে ওয়া জিকরুল আমবিয়া শীর্ষক াধ্যায়ে হযরত উমর ফারূক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহূ থেকে বর্নিত অর্থাৎ হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন -- " রাসুল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আনহু এক জায়গায় আমাদের সাথে অবস্থান করছিলেন । সে খানে তিনি আমাদের সৃষ্টির সুচনা তজেকে সংবাদ দিচ্ছিলেন - এমন কি বেহেস্তবাসী দোযখবাসী নিজ নিজ ঠিকানায় যাওয়ার াবধি পরিব্যাপ্ত যাবতিয় আবস্থা ও ঘটনা বলী প্ড়দান করেন ,যিনি ওসব স্মরণ রাখতে পেরেছেন তিনিতো স্মরণ রেখেছেন ; আর যিনি রাখতে পারেন নি তিনি ভুলে গেছেন । ( মেশকাত শরীফ ৫০৬)
মেশকাত শরিফের আল-ফিতনা অধ্যায়ে বুখারী ও মুসলিম শরীফ বরাত দিয়ে হযরত হুয়াইফা রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্নিত হয়েছে
অনুবাদ : রাসুল সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহিস সালাম সে স্থানে কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে সব কিছুর খবর দিয়েছেন । কোন কিছুই বাদ দেন নাই । যারা মনে রাখার তারা মনে রেখেছেন, আর যারা ভুলে যাওয়ার তারা ভুলে গেছেন ।( মিশকাত)
এ সমস্ত হাদীস শরীফের মাধ্যমে জানা গেল রাসুল সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহিস সালাম সৃষ্তির শুরু থেকে কেয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে উহা জানতেন এবং উহার সংবাদ সাহাবাদের দিয়েছেন । 
নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ইলমে গইব’-এর অধিকারী নন’ একথা বলার অর্থ হলো- সরাসরি কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফকেই অস্বীকার করা; যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।

Related imageনূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ইলমে গইব’-এর অধিকারী নন’ একথা বলার অর্থ হলো- সরাসরি কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফকেই অস্বীকার করা; যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।


মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “আল্লাহ পাক আলিমুল গইব। তিনি তাঁর মনোনীত রসূলগণ ব্যতীত কারো নিকট ইলমে গইব প্রকাশ করেন না।” নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবশ্যই ‘আল্লাহ পাক প্রদত্ত ইলমে গইবের অধিকারী’, যা কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফ দ্বারাই অকাট্যভাবে প্রমাণিত। কাজেই তিনি ‘ইলমে গইব’-এর অধিকারী নন’ একথা বলা- সরাসরি কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফকেই অস্বীকার করার শামীল। আর কোন মুসলমান কুরআন শরীফকে অস্বীকার করলে সে ঈমানদার থাকতে পারে না বরং সে কাফিরের অন্তর্ভুক্ত হবে
‘গইব’ হচ্ছে এরূপ এক অদৃশ্য বস্তু বা বিষয়; যা মানুষ চোখ, নাক, কান ইত্যাদি ইন্দ্রিয়সমূহের সাহায্যে উপলব্ধি করতে পারে না এবং যা কোন দলীল-প্রমাণ ব্যতীত সুস্পষ্টভাবে ইলমের আওতায়ও আসে না। যেমন- জিন, ফেরেশতা, বেহেশত, দোযখ ইত্যাদি আমাদের জন্য গইব বা অদৃশ্য। কেননা এগুলোকে ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে অথবা বিনা দলীলে শুধুমাত্র বিবেক বুদ্ধির দ্বারা অনুভব করা যায় না।
 ‘গইব’ দুই প্রকার। যথা- (১) যা যুক্তি প্রমাণভিত্তিক অর্থাৎ প্রমাণাদি দ্বারা অনুভব করা যায়। যেমন- বেহেশত, দোযখ মাখলুকাত, মহান আল্লাহ পাক-এর জাত, গুণাবলী এবং কুরআন শরীফ-এর আয়াতসমূহ দেখে এ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়।
(২) যা দলীলের দ্বারাও অনুভব করা যায় না। যেমন- ক্বিয়ামত কখন হবে, মানুষ কখন মারা যাবে ইত্যাদি। আর এ দ্বিতীয় প্রকার গইবকেই ‘মাফাতীহুল গইব’ বলা হয়।
কুরআন শরীফ-এ বর্ণিত ‘আল্লাহ পাক-এর নিকটেই রয়েছে গইবের চাবিকাঠি’ এ আয়াত শরীফ দ্বারা এরূপ গইবকেই বুঝানো হয়েছে।
 গইব যত প্রকারই হোক না কেন মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন হচ্ছেন (আলিমুল গইব) অর্থাৎ সর্ব প্রকার গইব বা অদৃশ্য বস্তু বা বিষয়ের ইলম আল্লাহ পাক-এর রয়েছে। আল্লাহ পাক বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ছাড়াই ইলমে গইবের অধিকারী। আর এরূপ ইলমে গইব সম্পর্কেই মহান আল্লাহ পাক তাঁর কালাম পাক-এ ইরশাদ করেন, “আসমান-যমীনে আল্লাহ পাক ব্যতীত কারো ইলমে গইব নেই।” সূরা নমল/৬৫) অর্থাৎ বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ব্যতীত যে ইলমে গইব তা শুধুমাত্র আল্লাহ পাক-এরই রয়েছে।
 পক্ষান্তরে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন “মুত্তালা আলাল গইব” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তাঁর হাবীবকে সর্বপ্রকার ইলমে গইব দান করেছেন। যা কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফ দ্বারাই অকাট্যভাবে প্রমাণিত।
মহান আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ শরীফ-এর সূরা জিন’ এর ২৬, ২৭ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “তিনি (আল্লাহ পাক) আলিমুল গইব, তাঁর ইলমে গইব তাঁর মনোনীত রসূল ব্যতীত কারো নিকট প্রকাশ করেন না।” অর্থাৎ রসূলগণকে তিনি ইলমে গইব দান করেছেন। (সুবহানাল্লাহ)
এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিশ্বখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থ “তাফসীরে খাযিন ও বাগবী শরীফ-এ” উল্লেখ আছে যে, “যাঁকে তাঁর নুবুওওয়াত ও রিসালতের জন্য মনোনীত করেন, তাঁকে যতটুকু ইচ্ছা ইলমে গইব দান করেন। তাঁর ইলমে গইব তাঁর নুবুওওয়াতের প্রমাণ স্বরূপ এবং তাঁর মু’জিযাও বটে।” শাব্দিক কিছু পার্থক্যসহ অনুরূপ ব্যাখ্যা তাফসীরে রুহুল বয়ান, জালালাইন, ছাবী ও আযীযীতেও উল্লেখ আছে।
মহান আল্লাহ পাক তাঁর কালাম পাক-এ ‘সূরা আলে ইমরান’-এর ১৭৯ নম্বর আয়াত শরীফ-এ আরো ইরশাদ করেন, “এটা আল্লাহ পাক-এর দায়িত্ব নয় যে, গইব বা অদৃশ্য সম্পর্কে তোমাদের (সাধারণ লোকদের) অবহিত করবেন। তবে আল্লাহ পাক তাঁর রসূলগণের মধ্যে যাকে ইচ্ছা ইলমে গইব দান করেন।”
উক্ত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় বিশ্বখ্যাত ও মশহুর তাফসীর গ্রন্থ “তাফসীরে জালালাইন শরীফে” উল্লেখ আছে যে, “তবে আল্লাহ পাক যাঁকে (রসূল হিসেবে) মনোনীত করেন, তাঁকে ইলমে গইব দান করেন। যেমন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মুনাফিকদের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল।” উক্ত আয়াত শরীফ-এর এরূপ ব্যাখ্যা তাফসীরে বাইযাবী, খাযিন, কবীর, জুমাল, ছাবীসহ আরো বহু নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থে উল্লেখ আছে।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ইলমে গইবের অধিকারী তা ‘সূরা তাকভীর’-এর ২৪ নম্বর আয়াত শরীফ দ্বারাও প্রমাণিত হয়। যেমন, মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, তিনি (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গইবের সংবাদ প্রকাশে কৃপণতা করেন না।”
এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় তাফসীরে “মায়ালিমুত তানযীল”- কিতাবে উল্লেখ আছে, আল্লাহ পাক বলেন, নিশ্চয়ই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট ইলমে গইব রয়েছে। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে তার সংবাদদানে কৃপণতা করেন না। বরং তোমাদেরকে তা শিক্ষা দেন এবং গইব-এর সংবাদ প্রদান করেন।” অনুরূপ তাফসীরে খাযীন ও বাগবীতেও উল্লেখ আছে।
মহান আল্লাহ পাক ‘সূরা আর রহমান’-এর ১-৪ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “দয়াময় আল্লাহ পাক তাঁর হাবীবকে কুরআন শরীফ শিক্ষা দিয়েছেন, তিনি ইনসান সৃষ্টি করেন এবং তাঁকে বয়ান শিক্ষা দিয়েছেন।”
এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে খাযিনে’ উল্লেখ আছে, “বলা হয়েছে যে, ইনসান দ্বারা উদ্দেশ্য হলেন হুযূর পাক ছল্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর বয়ান দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, যা ঘটেছে এবং যা ঘটবে, পূর্বাপর সমস্ত কিছুর ইলম আল্লাহ পাক তাঁকে দান করেছেন। কেননা তাঁকে পূর্ববর্তী-পরবর্তী এবং পরকালের সম্পর্কে সকল গইবী বিষয়ে ইলম দান করেছেন।” অনুরূপ তাফসীরে মায়ালিমুত তানযীল, হুসাইনী, ছাবীতেও উল্লেখ আছে।”
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো অবশ্যই এমনকি পূর্ববর্তী নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ সকলেই যে ইলমে গইবের অধিকারী ছিলেন তার সূস্পষ্ট প্রমাণও কুরআন শরীফ-এ রয়েছে।
যেমন, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা কি খেয়েছ আর কি ঘরে রেখে এসেছ তা সবই আমি (হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম) বলে দিতে পারি।” (সূরা আলে ইমরান/৪৯)
আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেন, “যখন তারা (হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম-এর সৈন্যবাহিনী) পিপিলিকা অধ্যুষিত উপত্যকায় পৌঁছলেন তখন এক পিপিলিকা বললো, হে পিপিলিকার দল! তোমরা তোমাদের ঘরে প্রবেশ কর। অন্যথায় হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম এবং তাঁর বাহিনী অজান্তেই তোমাদের পিষ্ট করে ফেলবেন। তার (পিপিলিকার) কথা শুনে হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম মুচকি হাসলেন এবং বললেন, হে আমার রব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দান করুন যাতে আমি আপনার সেই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে পারি যা আপনি আমাকে এবং আমার পিতা-মাতাকে দান করেছেন।” (সূরা নমল/১৮,১৯)
উক্ত আয়াত শরীফ-এর তাফসীরে রয়েছে, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম পিপিলিকার সেই কথা তিন মাইল দূরবর্তী স্থান থেকে শুনেছিলেন যা তাঁর ইলমে গইবের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে জালালাইন, হাশিয়ায়ে শাইখযাদাহ)
কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফসমূহ ও তার নির্ভরযোগ্য তাফসীর বা ব্যাখ্যা দ্বারা অকাট্য ও সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক পূর্ববর্তী সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণকেই ‘ইলমে গইব’ দান করেছেন। আর বিশেষ করে তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইলমে গইবসহ সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বিষয়ের ইলমই দান করেছেন। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত বিষয়ের ইলম দেয়া হয়েছে। (মিশকাত শরীফ) অর্থাৎ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন, ‘মুত্তালা আলাল গইব’ যা উল্লিখিত আয়াত শরীফসমূহ এবং অন্যান্য বহু আয়াত শরীফ দ্বারাই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত।
কাজেই ‘নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ইলমে গইব’-এর অধিকারী নন’ একথা বলার অর্থ হলো- সরাসরি কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফকেই অস্বীকার করা; যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
আসছেন মহাপবিত্র মহাসম্মানিত ১৯ শে রবিউছ ছানী শরীফ। সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার কিছু মুবারক কারামত

Related image
Image result for red flowerআসছেন মহাপবিত্র মহাসম্মানিত ১৯ শে রবিউছ ছানী শরীফ। সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার কিছু মুবারক কারামত
===============================================
মহিমান্বিত, নূরান্বিত, আলোকিত, উদ্ভাসিত, আনন্দিত, আন্দোলিত, হাস্যোজ্জ্বল, আড়ন্বরপূর্ণ, বেমেছাল শান-শওকত-জৌলুসযুক্ত এবং রহমত-বরকত-সাক্বীনাপূর্ণ এক মহান দিবস ১৯শে রবীউছ ছানী শরীফ। সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবে আ’যম, ফারূকে আ’যম, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল রাজারবাগ শরীফ-এর মহামান্য মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, আফদ্বালুন নিস, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদাতুনা মহামান্য হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাদের কলিজা মুবারক-এর টুকরা মুবারক, নয়ন মুবারক-এর মণি মুবারক, হৃদয় মুবারক-এর প্রশান্তি, আদরণীয় প্রাণপ্রিয়া দ্বিতীয়া আওলাদ সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার আজিমুশশান বিলাদত শরীফ দিবস ১৯শে রবীউছ ছানী শরীফ। (সুবহানাল্লাহ!)
তাই এদিন মুরীদ-মুতাক্বিদ, আশিক আশিকাদের তথা সব হাক্বীক্বী দ্বীনদার মুসলমানদের জন্য এক মহান ঈদ। অর্থাৎ পবিত্র ঈদে বিলাদতে হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম। (সুবহানাল্লাহ!) এই মহান ঈদের শুরু আছে, শেষ নেই; আনন্দ আছে, বেদনা নেই; প্রাপ্তি আছে, বিয়োগ নেই।
যুগে যুগে অসংখ্য ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা তাশরীফ আনলেও মহিলাদের মাঝে হক্কানী-রব্বানী ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। যার কারণে মহিলাদের তালিম-তালক্বীন, হিদায়েত ও দ্বীনি জযবা অর্জনের ক্ষেত্রে আশানুরূপ সফলতা পরিলক্ষিত হয়নি।
দ্বীন ইসলামের ইলম সম্পর্কে জানা ও মানার ক্ষেত্রে নারীদের ক্ষেত্র ও পরিসর কিছুটা সীমিত। কারণ ইলম ও হিদায়েত লাভের ক্ষেত্রে পুরুষের সুযোগ-সুবিধা অনেকটায় প্রসারিত। কেননা পুরুষরা অবাধে মসজিদে যেতে পারে, ওয়াজ মাহফিলে যেতে পারে, আলিম-উলামাগণ উনাদের সাথে সরাসরি দেখা-সাক্ষাৎ তথা যোগাযোগ করতে পারে। কিন্তু সমাজে হক্কানী-রব্বানী আলিমা ও ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের উপস্থিতি কম হওয়ায় ইলম ও হিদায়েত লাভে মহিলাদের সুযোগ-সুবিধা একান্তই সীমিত। আর যারা আলিমা দাবিদার রয়েছে, তাদের মাঝে লক্ষ-কোটি আক্বীদা-আমলের ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়। যার কারণে তারা উলামায়ে ছু’তে পরিণত হয়েছে। তাই অনেক মেয়ে মাঝে দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের আগ্রহ থাকলেও প্রয়োজনীয় সুবিধার অভাবে তা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না।
চিরন্তন সত্য যে, সংসর্গ প্রভাব বিস্তার করে। অর্থাৎ নেককার লোকের ছোহবতে নেককার হয় আর বদকার লোকের ছোহবতে বদকার হয়। একজন মহিলা বা বান্দীকে আল্লাহওয়ালী হতে হলে অবশ্যই একজন নেককার বুযূর্গ মহিলা ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনার ছোহবত ইখতিয়ার করতে হবে। ছোহবত ইখতিয়ার এবং নির্দেশনা মান্য করা ব্যতীত কস্মিনকালেও হিদায়েতের উপর কোনো মহিলা-মেয়ে ইস্তেকামত থাকতে পারবে না।
মহান আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সীমাহীন রহমত-ইহসান করে সারা দুনিয়ায় দ্বীন ইসলাম পালনের এ কঠিন দুর্দিনে অন্ধকারাচ্ছন্ন হিদায়েতশূন্য নারীজাতিকে বাঁচানোর লক্ষ্যে, হিদায়েতদানের উদ্দেশ্যে এ হিজরী পনের শতকে যমীনে প্রেরণ করেছেন উনাদের মাহবুবা, লক্ষ্যস্থল, বেমেছাল বুযূর্গী, হুরমত ইজ্জতসম্পন্না একজন সুমহান মহিলা ওলীআল্লাহ আলাইহাস সালাম উনাকে। যিনি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কলিজা মুবারক-এর টুকরা মুবারক তথা খাছ আওলাদ।
আজকের এই আত্মভোলা, পথহারা নারী জাতিকে সঠিক পথের সন্ধান দিতে এবং দু’জাহানে সফলতা দান করতেই সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার মুবারক তাশরীফ।
উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত বুযূর্গী-সম্মান অতুলনীয়া। তাই বর্তমান যুগে হক্ব মত ও পথ আশাকারিনী সকলেরই ফরয দায়িত্ব উনাকে মুহব্বত করা।
সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার মুবারক ছোহবত ইখতিয়ার করার তথা উনার মুবারক দীদার লাভ করার সৌভাগ্য অর্জনকারিনীগণ সর্বপ্রকার হীনমন্যতা মুক্ত হয়ে অতি সহজেই দ্বীনি জযবা ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন হয়ে যাচ্ছেন। (সুবহানাল্লাহ!)
সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম তিনি মহান বারে ইলাহী আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম হাবীব সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে বান্দা ও উম্মতদের অপূর্ব উপায়ে সংযোগ ঘটিয়ে দিচ্ছেন। মুসলমানদের ঈমানী জযবা, আখলাক্বের পবিত্রতা ও ইসলামী মুহব্বত ফিরিয়ে দিচ্ছেন। মুসলমানদের ঈমানের প্রথম, প্রধান ও মূল শর্ত আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত। যে মুহব্বত থাকলে মুসলমান স্বতঃস্ফূর্তভাবে সব ইসলামী তথা সুন্নতী আমল করে এবং সতর্কভাবে সব অনৈসলামী আমল থেকে দূরে থাকে।
মূলত, যতই ফিকির করা যাবে ততই উপলব্ধি করা যাবে উনার শান মান ফাযায়িল ফযীলত বুযূর্গী সম্মান অরাউল অরা অরাউল অরা অরাউল অরা।(সুবহানাল্লাহ!)
সঙ্গতকারণেই এ সত্য এখন আমাদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে এবং বুলন্দ আওয়াজে উচ্চারণ করতে হবে। সর্বত্র বিস্তৃত করতে হবে। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে। মহান আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি যদি কেউ পেতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনাকে মুহব্বত করতে হবে এবং উনার মহান ছোহবত ইখতিয়ার করতে হবে।
সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার রয়েছে লক্ষ-কোটি কারামত। যা উনার আযিমী শান ও মর্যাদারই বহিঃপ্রকাশ।
সন্তুষ্টি ও নিছবত লাভের প্রত্যাশায় দু’/চারটি উল্লেখ করা হলো-
*** আমাদের এক পীরবোন যিনি হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে বিশেষ দ্বীনি তালিমী সফরে একবার কুড়িগ্রামে যান। তখনও উনার বিয়ে হয়নি। সফরে অবস্থানস্থল স্মৃতি হোটেলে দাঁড়িয়ে সে এলাকার একজন পীরবোনের সাথে কথা বলছিলেন। ঠিক তখনই সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম তিনি সেই সফরকারী পীরবোনকে দেখে বলেছিলেন, “দেখো, বেশি কথা বললে তোমাকে আবার ভাইয়ের বউ বানিয়ে নিবে।” কথাটি শুনে পীরবোনটি খুব লজ্জা পেয়ে যায়। পরবর্তীতে ২/৩ বছর পরে দেখা যায়, সত্যি উক্ত পীরবোন যে মহিলার সাথে কথা বলেছিল সেই মহিলার ভাইয়ের সাথেই উক্ত পীরবোনের শাদী অনুষ্ঠিত হয়। সুবহানাল্লাহ!
ঘটনাটি দ্বারা সহজেই সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার ইলমে গাইবের বিষয়টি প্রকাশ পায়।
*** এক পীরবোন সন্তানসম্ভাবা ছিলেন। বাচ্চা হওয়ার পূর্বে তিনি খুব চিন্তিত ছিলেন। মনে মনে খুব চাচ্ছিলেন যেন দ্বিতীয় বাচ্চাটি অপেক্ষাকৃত অধিক সুন্দর হয়। অবস্থা দর্শনে সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম তিনি উক্ত পীরবোনের দিকে খুব দয়া-ইহসানের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেছিলেন, “চিন্তা করো না। এবারের বাচ্চাটি আরো অধিক সুন্দর হবে।” পরবর্তীতে তাই হয়েছিল। (সুবহানাল্লাহ!)
*** এক পীরবোন একদা স্বপ্নে দেখলেন সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম তিনি উক্ত পীরবোনকে বলেছিলেন যে, “তুমি তো নতুন। অনেক কিছুই জান না, বুঝ না। তোমাকে আজকে কিছু বিষয় দেখাব- যা দেখলে তুমি বুঝতে পারবে যে, সবার বাহ্যিকের সাথে অন্তরের মিল নেই। অতঃপর সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম তিনি একটা জায়গা দিয়ে উক্ত পীরবোনকে নিয়ে রওয়ানা হলেন। রাস্তার মাঝে অনেক মহিলাদের দেখে দেখে তিনি যখন যাচ্ছিলেন তখন কারো কারো চেহারা তিনি বিকৃত হতে দেখেন। আবার অনেকের চেহারা ঠিকই থাকলো। যাদের চেহারা বিকৃতি হলো তাদেরকে ভালোভাবে চিহ্নিত করতে বললেন।”
পরবর্তীতে দেখা গেলো, যাদের বিকৃত চেহারা তিনি দেখিয়েছিলেন তাদের নাম প্রকাশিত মুনাফিকদের তালিকায় দেখা গেল। নাঊযুবিল্লাহ!
মুবারক স্বপ্নটি দ্বারা সুস্পষ্টরূপে আশিকা-মুরিদাদের ঈমান-আক্বীদা হিফাযতের প্রতি সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার দয়া-ইহসান প্রকাশ পেয়েছে।
*** আমাদের এক পীরবোন সন্তানসম্ভাবা ছিলেন। কি সন্তান জন্মগ্রহণ করবে- তা সাধারণভাবে কারো পক্ষেই বলা সম্ভব নয়। তা মহান আল্লাহ পাক, উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং ওলীআল্লাহগণ উনারা ব্যতীত কারো পক্ষে জানা সম্ভব নয়। কিন্তু সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা নিবরাসাতুল উমাম আমাদের হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনিতো ছহিবায়ে ইলমে গাইব। তাই তিনি ওই পীরবোনকে পূর্বেই বলেছিলেন যে, তার একটি কন্যা সন্তান জন্ম নিবে। সত্যি! যথাসময়ে দেখা গেল পীরবোন একটি কন্যা সন্তানই প্রসব করেছেন। (সুবহানাল্লাহ!)
*** আমাদের এক পীরবোন ছোটবেলা বালিকা মাদরাসায় অধ্যায়নরত অবস্থায় প্রায়শ তিনি তার বাবার সাথে দেখা করার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠতেন। তাই তিনি মুয়াল্লিমাদের বারবার জিজ্ঞাসা করতেন যে, বাবা কখন আসবেন। কিন্তু মুয়াল্লিমাগণ তো তা বলতে পারতেন না। উপায়ন্তর না দেখে শিশু পীরবোন সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার খিদমতে জানার আগ্রহ পেশ করলে উনি বললেন ‘’লাল জুমু’আবার’’ হলে তোমার বাবা আসবে।‘’ জুমু’আবার’’ আর কখনই লাল হয়নি। সে পীরবোনের বাবাও আসেননি। অর্থাৎ আসার পূর্বেই তার বাবা ইন্তিকাল করেন।
মহান মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি আমাদের সকলকে সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার সন্তুষ্টি নছীব করুন। আমীন।