খতমে
নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র
খতমে
নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির
(ইসলামী
শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের
অন্তর্ভূক্ত হয় (যেমন- কাদিয়ানী,
বাহাই ইত্যাদি)
তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে, তাদের
শাস্তি মৃত্যুদন্ড)
(১)
কাদিয়ানী
রদ!
( দ্বিতীয়
ভাগ )
বাহরুল
উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা,
রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেযে
হাদীছ, মুফতীয়ে আ’যম, পীরে কামিল, মুর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন
রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানি রদ” কিতাবখানা
(৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ
করছি। যাতে কাদিয়ানিদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহলে সুন্নত
ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হেফাজত হয়। আল্লাহ পাক আমাদের প্রচেষ্টার
কামিয়াবী দান করুন (আমীন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে
তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
মির্জ্জা
গোলাম আহমদ কাদেয়ানি ছাহেব প্রতিশ্রুত ইছা মছিহ হইতে পারেন কিনা ?
আমাদের
উত্তর :
মির্জ্জা
ছাহেব যেরূপ হাদিছগুলির অর্থ বিকৃত করিয়া ইছলামকে ছারেখারে দিবার সঙ্কল্প
করিয়াছিলেন, সেইরূপ উপরোক্ত কোর-আনের আয়তের বিকৃত অর্থ করিয়া মুছলমানদিগকে ভ্রান্ত করার
প্রয়াস পাইয়াছেন।
وقالوا
لن نؤمن لك حتى تفجر لنا من الارض ينبو عا او تسقط السماء كما زعمت علينا كسفا او
تاتى بالله والمنكة قبيلا او يكون لك بيت من زخرف او ترقى فى الماء و لن نؤمن لر
قيك حتى تنزل علينا كتابا نقرؤة ط قل سبحان ربى هل كنت الا بشرا رسولا.
এবং
তাহারা (কাফেরেরা) বলিল,
আমরা তোমার উপর ইমান আনিব না - যতক্ষণ (না) তুমি আমাদের
জন্য জমি হইতে একটী ঝরণা প্রবাহিত কর, কিম্বা তোমার একটী খেজুর ও
আঙ্গুরের উদ্যান হয় এবং তুমি উহার মধ্যে নদী প্রবাহিত কর, যেরূপ
তুমি ধারণা করিয়া থাক,
কিম্বা আল্লাহ ও ফেরেশতাগণকে আমাদের সাক্ষাতে আন, কিম্বা
তোমার জন্য একটী সুবর্ণের গৃহ হয়, কিম্বা আছমানে আরোহণ কর, আর আমরা তোমার আছমানে আরোহণ
করাতেও ইমান আনিব না,
যতক্ষণ না তুমি আমাদের জন্য একখানা কেতাব আন যাহা আমরা
পড়িতে পারি।
তুমি বল, আমি আমার
প্রতিপালকের তছবিহ পড়ি,
আমি একজন মনুষ্য ব্যতীত নহি।”
প্রথম ও
দ্বিতীয় নম্বর দাবি মু’জেজা হইতে পারে না,
তৃতীয় ও চতুর্থ দাবি খোদার বিধানের বিপরীত। ৬ নম্বর দাবি
অর্থাৎ হজরতের আছমানে আরোহন করা সম্ভব দাবি ছিল, কিন্তু তাহারা জানিত যে, হজরতের
দ্বারা ইহা সম্ভব হইবে,
কাজেই তাহারা উহার সহিত এই সর্ত্ত পেশ করিল যে, তোমাকে
আমাদের উপর একখানা কেতাব নাজিল করিতে হইবে।
তদুত্তরে
মহান আল্লাহ পাক তিনি বলিলেন, তুমি বল, আমি একজন মনুষ্য ও রাছুল, আল্লাহতায়ালা উনার হুকুম ব্যতীত
কোন মো’জেজা প্রকাশ করা সম্ভব নহে।
ছুরা মো’মেনে আছে
;-
وما كان لرسول ان ياتى باية الا باذن الله.
“কোন
রাছুলের এইরূপ শক্তি নাই যে, আল্লাহ তায়ালার অনুমতি ব্যতীত কোন নিদর্শন প্রকাশ করেন।”
মির্জ্জা
ছাহেব অনুবাদে উক্ত সর্ত্তটী উল্লেখ না করিয়া আশ্চার্য্যজনক কারিগিরি করিয়াছেন।
এক্ষণে
মির্জ্জা ভক্তদিগকে জিজ্ঞাসা করি, কোথায় হজরতের পক্ষে আছমানে আরোহন করা অসম্ভব বলিয়া লিখিত
আছে? কোন স্থানে উহা খোদার বিধানের বিপরীত বলিয়া লিখিত আছে? ইহাতে
হজরতের আছমানে আরোহন করা সম্ভব বলিয়া প্রতিপন্ন হইতেছে।
দ্বিতীয়
হজরত ইছা আলাইহিস সালাম উনার মাতা খোদাতায়ালা উনার মনোনীত স্ত্রীলোক ছিলেন, কিন্তু
হজরতের মাতার এইরূপ দরজা লাভ হয় নাই।
হজরত ইছা
আলাইহিস সালাম বিনা পিতা পয়দা হইয়াছিলেন, কিন্তু আমাদের হজরত এরূপভাবে পয়দা
হন নাই। হজরত ইছা আলাইহিস সালাম উনার যে ধরণের মো’জেযা ছিল, আমাদের
হজরতের সেই ধরণের মো’জেযা ছিল না। হজরত ইছা আলাইহিস সালাম উনার উপর আছমান হইতে খাদ্যপূর্ণ খাঞ্চা
নাজিল হইয়াছিল, কিন্তু আমাদের হজরতের জন্য ইহা নাজিল হয় নাই।
এক্ষণে
মির্জ্জা সাহেব বলিবেন কি যে, খামেমোল আম্বিয়ার জন্য যাহা হয় নাই, তাহা
হজরত ইছার পক্ষে সম্ভব হইবে কিরূপে
প্রশ্ন ;.....
মির্জ্জা
সাহেব এজালাতোল-আওহামের ৩০৪ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন, যদি হজরত ইছা আলাইহিস সালাম
পুনরায় দুনইয়ায় আসেন,
তবে হয় তাহার উপর অহিয়ে-নবুয়ত নাজিল হইবে, না হয়
নবুয়ত হইতে বারখাস্ত হইয়া একজন খাঁটি উম্মত হইয়া থাকিবেন, উভয় বিষয়
অসম্ভব।
আরও তিনি
উক্ত কেতাবের ২১৮ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন, যদিও একবার অহি নাজিল হওয়া
স্বীকার করা হয় এবং কেবল একটি শব্দ হজরত জিবরাইল আনয়ন করিয়া মৌন অবলম্বন করেন, তবু
নবুয়ত খতম হওয়ার বিপরীত হইবে, কেননা যখন খতম হওয়ার মোহর ভাঙ্গিয়া গিয়াছে, এক্ষণে
অহিয়ে-রেছালাত পুনরায় নাজির হইলে, অল্প বিস্তর নাজিল হওয়া সমান। যদি খোদাতায়ালার প্রতিশ্রুতি
সত্য হয়, আয়তে খাতামুন নাবিয়্যীনে যাহা ওয়াদা দেওয়া হইয়াছে, আর যে
হাদিছগুলিতে স্পষ্ট ব্যক্ত করা হইয়াছে যে, রাছুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার ওফাত শরীফ-এর পরে হজরত জিবরাইলের পক্ষে চিরতরে অহিয়ে-নবুয়ত আনয়ন
করা নিষিদ্ধ হইয়াছে,
তবে কোন ব্যক্তি আমাদের নবি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার পরে রেছালাতের হিসাবে আসিতে পারে না। যদি হজরত মছিহ জীবিত হইয়া আসেন, তবে তিনি
রছুল হইয়া আসিবেন এবং উনার নিকট ওহী ও জিবরাইল নাজিল হওয়া জরুরি।
আমাদের
উত্তর ;....
ছহিহ
মোছলেমের হাদিছে আছে যে,
তিনি যে সময় নাজির হইবেন, সেই সময় নবি থাকিবেন। কুরআন
শরীফ-এর খাতামুন নাবিয়্যীনের ও হাদীছ শরীফ-এর অর্থ এই যে, হজরতের
পরে নূতন নবি পয়দা হইবে না। হজরত ইছা আলাইহিস সালাম আমাদের হজরতের পূর্ব্বে নবুয়ত
প্রাপ্ত হইয়াছিলেন,
তিনি আসমানে থাকাকালে যেরূপ নবি ছিলেন, জমিনে
নাজিল হওয়াকালে সেইরূপ নবি থাকিবেন, ইহাতে হজরতের খাতামুন নাবিয়্যীনে
হওয়ার প্রতিবন্ধক হইবে কেন
হজরত ইছা
আলাইহিস সালাম জমিনে আগমন কালে শরিয়তে ইসলামের তাবেদারি করিবেন, তিনি যে
জিজইয়া কর উঠাইয়া দিবেন,
ইহাও আমাদের হজরতের হুকুম অনুসারে উঠাইয়া দিবেন। দাজ্জাল ও
য়িহুদিদের সহিত জেহাদ করিবেন, ইহাও ইছলামের উন্নতির জন্য করিবেন। ইহাতে তাঁহার নবুয়ত
বরখাস্ত হইবে কেন?
ছুরা মায়েদা ;-
وما
كان لرسول ان ياتى با ية الا باذن الله انا ان زلنا التوراة فيها هدى ونور يحكم
بها النبيون الذين اسلموا.
“আমি
তওরাত নাজিল করিয়াছি- উহাতে হেদায়েত ও নূর আছে, তদনুসারে (আল্লাহতায়ালার) অনুগত
নবিগণ বিচার ব্যবস্থা করিবেন।” ইহাতে বুঝা যাইতেছে যে, হজরত মুছা আলাইহিস সালাম উনার পরে
অনেক নবী উনার শরীয়তের তাবেদারি করিতেন।
ছুরা ফোরকানে আছে ;-
ولقد
اتينا موسى الكتب وجعلنا معه اخاه هارون وزيرا.
“আর আমি
নিশ্চয় মুছাকে কেতাব দিয়াছি এবং তাহার সহিত তাহার ভ্রাতা হারুনকে উজির স্থির
করিয়াছি।”
ছুরা আ’রাকে আছে
;-
وقال لا خيه هارون اخلفنى فى قومى.
এবং তিনি
নিজের ভ্রাতা হারুণকে বলিলেন, তুমি আমার স্বজাতিদিগের সম্বন্ধে আমার খলিফা থাক।
ইহাতে
বুঝা যাইতেছে যে,
হজরত হারুণ নবী হজরত মুছা আলাইহিস সালাম উনার শরিয়তের
তাবেদারী করিতেন।”
ছুরা ছাফফাতে আছে ;-
وان لو طا لمن المرسلين.
“এবং
নিশ্চয়ই লুত রাছুলগণের অন্তর্গত ছিলেন।”
ছুরা
আনকাবুতে আছে ;-
فامن له لوط.
“তৎপরে
লূত উক্ত এবরাহিমের উপর ঈমান আনিলেন।”
ইহাতে
বুঝা যাইতেছে যে,
হজরত লুত আলাইহিস সালাম হজরত এবরাহিম আলাইহিস সালাম-এর
শরিয়তের তাবেদারী করিতেন।
যেরূপ
হজরত হারুণ ও লুত হজরত মুছা ও হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম উনার শরীয়তের তাবেদারী
করিতেন, ইহা সত্ত্বেও প্রথমোক্ত নবিদ্বয় নবী ছিলেন, সেইরূপ হজরত ইছা আলাইহিস সালাম
আছমান হইতে নাজেল হইয়া খাতামুল আম্বিয়ার উজির, খলিফা ও তাবেদার হইবেন, ইহা
সত্ত্বেও তিনি নবী থাকিবেন,
এই হেতু ছহিহ মোছলেমের এক হাদিছে তাঁহাকে নবী বলিয়া উল্লেখ
করা হইয়াছে।
মথি, ১৫
অধ্যায়, ২৪ পদ ;-
“তখন তিনি
উত্তর করিয়া কহিলেন,
ইস্রায়িল কুলের হারুণ মেষ ছাড়া আর কাহারও নিকটে আমি প্রেরিত
নহি।
আর উহার
৫/১৭/১৮ পদ ;-
“আমি ব্যবস্থা কি ভাববাদিদের গ্রন্থ লোপ করিতে আসিয়াছি এমন বোধ করিও না; আমি লোপ করিতে আসি নাই, কিন্তু পূর্ণ করিতে আসিয়াছি।” (অসমাপ্ত)
(২)
ইসলামী
শরীয়ত মোতাবেক
পাকিস্তান
সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের কাফির ঘোষণা!
অনুবাদক - মুহম্মদ হাবিবুল হক
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
মির্জা
সাহেব ইহা এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে, ভবিষ্যদ্বানি কার্যকারীতার শর্ত
ছিল আথামের মতের পরিবর্তনের উপর নির্ভরশীল (তার বিশ্বাস পরিবর্তনের উপর)।
বিতর্কনুশীলন সভাতেই সে রসূল (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্বন্ধে তার
উক্তি- দজ্জাল, প্রত্যাহার করেছিল,
যেখানে ৭০ জন লোক উপস্থিত ছিল। শুধু তাই নয়, গত পনের
মাস তার নিরবচ্ছিন্ন নীরবতা ও ঐ প্রত্যাহারেরই প্রমাণ। সে রসূল (ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উনাকে দাজ্জাল বলিয়াছিল কারণেই ভবিষ্যদ্বাণীর ভিত্তি এবং কৃত
পাপের জন্য প্রায়শ্চিত্ত দ্বারা উপকৃত হওয়াতেই সে পনের মাস পর মারা যায় (রূহানী
খাজাইন, ভলিউম ৯, পৃষ্ঠা-৬, বিশতি-ই-নূহ হতে,
১৯০২ সালে মুদ্রিত, হাক্বীকতুল ওহী পৃষ্ঠা-৮
দ্রষ্টব্য)
মির্জা
সাহেব নাসিম-ই-দাওয়াতে (১৯০৩ সালে মুদ্রিত, পৃষ্ঠা-৯১) লিখেছেন, কোন কোন
সময় কৃত পাপের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করার কারণে ভবিষ্যদ্বাণীর কার্যকারীতা বিলম্বিত
হয়। যদি আথামের আগে সে নিজে মারা যেত, তবেই ভবিষ্যদ্বাণীর কার্যকারীতা
সম্বন্ধে আপত্তি করা যেত। (রূহানী খাজাইন, ভলিউম ১৯, পৃষ্ঠা-৪৫১, প্রকাশিত
১৯০৭, পৃষ্ঠা-১৮৫)
ইহা
লক্ষণীয় যে, ভবিষ্যদ্বাণীতে ইহা উল্লেখ নেই যে, আথাম রসূল (ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) উনার নাম বলেছিল। ভবিষ্যদ্বাণীর ভিত্তি ছিল, আল্লাহ
পাককে ত্যাগ করে,
নতুন বাইবেলের অনুসরণে আথাম দ্বারা একজন মানুষকে দেবত্বের
আসনে বসানোর চেষ্টা। পনের মাসের মধ্যে আথামের মৃত্যু হবে, মির্জা
ছাহেবের এই ভবিষ্যদ্বাণী সফল হয়নি।
অমৃতসরের
মৌলভী সানাউল্লাহ সাহেব ছিলেন, মির্জা সাহেবর বিরোধিদের অন্যতম। ১৯০৭ সালের ১৫ই এপ্রিল
মির্জা সাহেব উনাকে একটি উত্তেজিত চিঠি লিখেছিল (যা তার চিঠির ভাষা থেকেই
প্রতিয়মান হয়)। ঐ চিঠিতে তার (মির্জা সাহেব) বিরুদ্ধে প্রচারের জন্য মৌলভী
সানাউল্লাহ সাহেবকে ভন্ড,
মিথ্যাবাদী, দজ্জাল হিসাবে আখ্যায়িত করে এবং
এরপর উল্লেখ করে,
“যদি আমি (মির্জা সাহেব) ঐরূপ মিথ্যাবাদী এবং ভন্ড হয়েই থাকি, যেমন
আপনি সংবাদ পত্রে প্রচার করেছেন, তবে আপনার জীবদ্দশায়ই আমি ধ্বংস প্রাপ্ত হব, কেননা
আমি জানি যে, প্রতারক ও মিথ্যাবাদী সে দীর্ঘদিন বাঁচেনা এবং সে তার শত্রুদের জীবদ্দশায়ই
অসম্মানিত ও দুঃখের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করে বা ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। বাস্তবিক তার ধ্বংস
প্রাপ্ত হওয়াই উচিত,
যাতে সে আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টিকে কুলষিত করতে না পারে। এবং
যদি আমি মিথ্যাবাদী এবং প্রতারক না হই এবং আমি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে সংযোগ
রক্ষাকারী বেং মহান আল্লাহ পাক উনার লক্ষ্যস্থল এবং প্রতিশ্রুত মসীহ হই। আমি আশা
করি মিথ্যারোপের জন্য আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার আইন অনুযায়ী উনার শাস্তি থেকে
রেহাই পাবেন না। মানুষের আরোপিত শাস্তি নয় বরং গায়েবী শাস্তি হবে। যেমন- প্লেগ, কলেরা বা
প্রাণ নাশক ব্যধি। মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে যদি এরূপ শাস্তি আপনার না হয়, তবে আমি
মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে নই .....)।
এর
সমাপ্তিতে এই বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার অধ্যাদেশ জারি করার জন্য একটি প্রার্থণা
করা হয়েছে। (হিদায়েত-ই-তাইয়েবা, পৃষ্ঠা-৪২৩-৪২৫)
প্রকৃতপক্ষে
মির্জা সাহেব থেকে সানাউল্লাহ সাহেব অনেক বেশী বৎসর বেঁচেছিলেন। এবং তার
অনুসারীদের মত অনুযায়ী মির্জা সাহেব মারা যায় ডাইরিয়া হয়ে ১৯০৮ সালে এবং তার
স্বশুরের কথা অনুযায়ী কলেরা হয়ে মারা যায়। (দ্রষ্টব্য, কাদিয়ানী
মজহাব- ইলিয়াস বারী,
পৃষ্ঠা-১৩৭)
চিঠিটি
ছিল একটি মুবাহালা (একে অন্যকে অভিসম্পাত করা এবং প্রার্থনা করা, যে সত্য
পথে নেই, তার মৃত্যু হোক)। কিন্তু মৌলভী সানাউল্লাহ সাহেব উহা মেনে নেননি এবং মির্জা
সাহেবের মৃত্যুতে তার অনুসারীরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ঐ ছিঠিটি উহার
ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। ইহা পরিস্কার একটি এক তরফা ব্যাপার ছিল, যাতে
অপরজনের সম্মতির কোন প্রয়োজন ছিলনা।
কে আগে
মারা যাবে, উহা একটি জরুরী বিষয় নয়। মির্জা সাহেবের উচ্চাকাঙ্খী এবং অনমনীয় ভাষাই মৌলভী
সানাউল্লাহ সাহেবের পূর্বে তার মারা যাওয়া বেশী তাৎপর্য পায়, যাতে
বাঁচা-মরাকে তার আল্লাহ পাক দ্বারা মনোনীত হওয়া বা ভন্ড হওয়াকে পরীক্ষা হিসাবে
ব্যবহার করা হয়েছিল।
(অসমাপ্ত)
**************************************************************************
খতমে
নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির
(ইসলামী শরীয়ত উনার হুকুম মুতাবিক
যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় (যেমন-
কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে, তাদের
শাস্তি মৃত্যুদন্ড)
(১) কাদিয়ানী রদ! ( দ্বিতীয় ভাগ )
বাহরুল উলুম, ফখরুল
ফুক্বাহা, রইছুল মুহাদ্দিছীন,
তাজুল মুফাসসিরীন, হাফিজে হাদীছ, মুফতীয়ে
আ’যম, পীরে কামিল, মুর্শিদে মুকাম্মিল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন
রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানি রদ” কিতাবখানা
(৬ষ্ঠ খণ্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে
প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানিদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফিরকা থেকে আহলে
সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। মহান আল্লাহ্ পাক
তিনি আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। উনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত
করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। (পূর্ব
প্রকাশিতের পর)
মির্জ্জা গোলাম আহমদ
কাদিয়ানি ছাহেব প্রতিশ্রুত ইছা মছিহ হইতে পারেন কিনা ?
মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল-আওহামের
৩৭৪ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন-
مسيح
در حقيقت اخرى خليفه موسى عليه السلام كاتها.
“মছিহ প্রকৃত পক্ষে মুছা আলাইহিস
সালাম-এর শেষ খলিফা ছিলেন।”
উপরোক্ত বিবরণে বুঝা যায় যে, হজরত ইছা
আলাইহিস সালাম মুছায়ি-শরিয়তের খলিফা ও তাবেদার ছিলেন, ইহাতে
তাঁহার নবুয়তের কোন ক্ষতি হইয়াছিল না, যখন তিনি আছমান হইতে পৃথিবীতে
নাজিল হইবেন, তখন তিনি মোহাম্মদী-শরিয়তের খলিফা ও তাবেদার হইলে, তাঁহার
নবুয়তের ক্ষতি হইবে কেন?
মেশকাত, ৩০
পৃষ্ঠা :-
ولو
كان موسى حيالـما وسعه الااتباعى رواه احمد والبيهقى.
“হজরত বলিয়াছেন, যদি মুছা
জীবিত থাকিতেন, তবে তাঁহার পক্ষে আমার তাবেদারী করা ব্যতীত গত্যান্তর থাকিত না।”
এক্ষণে তাঁহার খলিফা হজরত
ঈছা আলাইহিস সালাম হজরতের শরিয়তের তাবেদারী করিলে, তাহার মর্য্যাদার লাঘব না হইয়া
উন্নতি হইবে। কুরআন শরিফে আছে :-
راذ اخذ الله ميثاق النبيين لـما
اتيتكم من كتاب وحكمة ثم جاء كم رسول مصدق لـما معكم لتؤمتن به ولتنصرنه.
“আর যে সময় খোদাতায়ালা নবিগণের নিকট
অঙ্গীকার গ্রহণ করিয়াছিলেন যে, আমি তোমাদিগকে যে কেতাব ও হেকমত প্রদান করিয়াছি, তৎপরে
তোমাদের নিকট এরূপ একজন রাছুল আগমন করেন- যিনি তোমাদের সঙ্গে যাহা আছে তাহার
সত্যতা প্রমাণকারী হয়েন,
তবে নিশ্চয়ই তোমরা তাঁহার উপর ঈমান আনিবে এবং তাঁহার
সহায়তাকারী হইবে।”
কোরআনের এই আয়তে বুঝা যায় যে, পূর্ব্বতন
নবিগণের মধ্যে যে কেহ হজরতের জামানা পর্য্যন্ত জীবিত থাকেন, তাঁহার
পক্ষে ইছলামি শরিয়তের তাবেদারি করা ফরয। হজরত ইছা আলাইহিস সালাম-এর উপর শরিয়তের
আহকাম সম্বন্ধে কোন অহি নাজিল হইবেনা, কোর-আন শরিফ উহার সম্বন্ধে
যথেষ্ট। অবশ্য মেশকাত শরিফের ৪৭৩/৪৭৪
পৃষ্ঠায় একটী হাদিছে আছে,
তাঁহার উপর এই অহি নাজিল হইবে :-
انى قد اخرجت عبادالى لا يداف لا حد
بقتا لهم فحرز عبادى الى الطور.
“নিশ্চয় আমি আমার এরূপ বান্দাগণকে
বাহির করিয়াছি যে,
তাহাদের সহিত যুদ্ধ করা কাহারও শক্তি নাই (অর্থাৎ ইয়াজুজ
মাজুজদিগকে বাহির করিয়াছি),
কাজেই তুমি আমার (ইমানদার) বান্দাগণকে তুর পর্ব্বতে
সুরক্ষিত কর।” ইহা শরিয়তের কোন হুকুম সংক্রান্ত অহি নহে। মির্জ্জা
ছাহেব হাকিকাতোল অহির ৮১/৮২ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন।
قل انما انا بشر مشلكم يوحى الى انما الهكم اله واحد.
“তুমি বল, আমি
তোমাদের ন্যায় একজন মনুষ্য ব্যতীত নহি, আমার নিকট অহি আসিয়া থাকে, তোমাদের
মা’বুদ এক মা’বুদ।”
আরও তিনি উহার ৭৪ পৃষ্ঠায়
লিখিয়াছেন :-
واتل عليهم ما اوحى اليك من ربك
“এবং তোমার প্রতিপালক হইতে তোমার নিকট
যাহা অহি পাঠান হইয়াছে,
তাহা তুমি লোকদের নিকট পাঠ কর।” আরও তিনি উক্ত কেতাবের ৩৯১ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন :-
উদূ লেখা ঢুকবে...............
“মূল কথা, এই উম্মতের মধ্যে আমি এক ব্যক্তি এত অধিক সংখ্যক আল্লাহতায়ালার অহি প্রাপ্তিতে
ও অদৃশ্য বিষয়গুলি জানিতে বিশেষত্ব লাভ করিয়াছি।” আরও তিনি উহার ১৫০ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন :-
উদূ লেখা ঢুকবে...............
“আমি খোদাতায়ালার ২৩ বৎসরের
ধারাবাহিক অহিকে কিরূপে রদ করিতে পারি? আমি খোদার পাক অহির উপর এইরূপ
ইমান আনিয়া থাকি,
যেরূপ খোদার ওই সমস্ত অহির উপর ইমান আনিয়া থাকি যাহা আমার
পূর্ব্বে নাজিল হইয়াছিল।”
আরও তিনি উহার ১৫০ পৃষ্ঠায়
লিখিয়াছেন :-
উদূ লেখা ঢুকবে...............
“ইহার পরে খোদার অহি বৃষ্টির ন্যায়
আমার উপর নাজিল হইল,
উহা আমাকে এই আকিদার উপর স্থির থাকিতে দিল না।”
এক্ষণে আমি মির্জ্জা
ভক্তদিগকে জিজ্ঞাসা করি,
এক অক্ষর অহি নাজিল হইলে হজরত খাতেমোল আম্বিয়ায় শেষ নবুয়ত
বজায় থাকে না, মির্জ্জা ছাহেব এই কারণ দর্শাইয়া হজরত ইছা আলাইহিস সালাম-এর নাজিল হওয়া বাতীল
করিতে চাহেন, এক্ষণে মির্জ্জা ছাহেবের বৃষ্টিপাতের ন্যায় অহিতে কোন দোষ হইবে কি? মির্জ্জা
ছাহেব ৪ নম্বর আরবাইনের ৭ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন -
উদূ লেখা ঢুকবে...............
“শরিয়ত কি বস্তু? যিনি নিজের
অহির দ্বারা কতকগুলি আদেশ নিষেধ বর্ণনা করেন এবং নিজের উম্মতের জন্য একটী নিয়ম
স্থির করেন, তিনি শরিয়ত প্রবর্ত্তক হইবেন। আমার অহিতে আদেশ নিষেধ ও আছে।”
এক্ষণে মির্জ্জা ভক্তদিগকে
জিজ্ঞাসা করি, হজরত ইছা আলাইহিস সালাম-এর অহিতে কোন শরিয়তের হুকুম থাকিবেনা, আর
মির্জ্জা ছাহেবের অহিতে নাকি শরিয়তের আহকাম নাজিল হইয়াছিল, ইহাতে
হজরতের নবুয়তের খতম হওয়ার প্রতিবন্ধক হইবে কি না? প্রশ্ন ;... মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল-আওহামের ২২০ পৃষ্ঠায়
বিদ্রুপ করিয়া লিখিয়াছেন,
“মছিহ আলাইহিস সালাম-এর উপর অহি নাজিল হইলে, তাঁহার
কেতাব কোর-আন অপেক্ষা বড় হইবে। তিনি জিবরাইল ব্যতীত অন্য কাহারও নিকট শরিয়তের
যাবতীয় মছলা শিক্ষা করিতে পারেন না, এক্ষেত্রে তাঁহার এই নূতন কেতাব
দ্বারা তওরাত, ইঞ্জিল ও কোর-আন মনছুখ হইয়া যাইবে। তিনি নিজের কেতাব নামাজে পড়িবেন, অন্য
লোকদিগকে জবরদস্তি করিয়া উক্ত কেতাব নামাজে পড়িতে বলিবেন, এবং কালিমার
কিছু পরিবর্ত্তন হইয়া যাইবে।” আমাদের উত্তর । আমরা
মির্জ্জা ভক্তদিগকে জিজ্ঞাসা করি, আপনাদের মির্জ্জা ছাহেবের ২৩ বৎসর অহিতে যে কেতাব প্রস্তুত
হইয়াছে, উহা কোর-আনের পরিমাণ হইয়াছে কিনা? তাঁহার কেতাব কুরআন মনছুখ করিয়াছে
কি না? তাঁহার কেতাব তিনি নামাজে পড়িতেন কিনা? তিনি কালিমার পরিবর্ত্তন করিয়াছেন
কি না?
এইরূপ ফজুল কথা দ্বারা
রাশি রাশি কেতাব রচনা করার নাম কি মোহাদ্দাছ ও মোজাদ্দেদ হওয়া?
এইরূপ লোককে মোহাদ্দাছ ও
মোজাদ্দেদ বলিয়া স্বীকার করিলে, অন্যান্য জাল নবি, মাহদী ও মছিহর কি দোষ হইয়াছিল? ( দ্বিতীয়
খন্ড শেষ। আগামী সংখ্যা হতে তৃতীয় খন্ড
আরম্ভ হবে ইনশাআল্লাহ্ )
(২) ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- ‘কাফির’ ঘোষণা!
অনুবাদক - মুহম্মদ হাবিবুল হক
(পূর্ব প্রকাশিতের পর )
তার সত্যবাদীতা প্রমাণ
করার জন্য মির্জা ছাহিব তার বিরোধীদের মৃত্যুর ভবিষ্যদ্বাণী করার পথ বেছে নিয়েছিল।
যখন প্রতিপক্ষের ওই ব্যক্তি স্বাভাবিকভাবেই ইন্তেকাল করলো, সেটা
মির্জা ছাহিবের কথিত মিশনের সত্যতা প্রমাণ হিসাবে গ্রহণ করা হতো। অবশেষে ১৮৯৭
সালের ২৩শে আগষ্ট উৗউে (উরধবধভটফ রেমডণঢলরণ উমঢণ)-এর ১০৭নং সেকশনের আওতায় শান্তি
ভঙ্গের একটি মুকাদ্দমায় গুরুদাশপুরের ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট (ডিপুটি কমিশনার)
মির্জা ছাহিবকে কোন মানুষের মৃত্যুর বা অসম্মানিত হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করা থেকে
বিরত থাকার আদেশ দানে বাধ্য হয় (আল বাররিয়াহ, পৃষ্ঠা-২৬১)। ওই কোর্টে মির্জা ছাহিব
একটি অঙ্গীকার নামা দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ আছে যে, তিনি ওইরূপ ভাষা ব্যবহার করিবেন
না। (দ্রষ্টব্য তাবলীগ-ই-রিসালাত, ভলিয়ুম-৬, পৃষ্ঠা-১৬৮ এবং দ্রষ্টব্য প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা-১৬৬)। কিন্তু
পরে সে তা অস্বীকার করে। তবে ১৮৯৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারী মির্জা ছাহিব
গুরুদাশপুরের ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট মিষ্টার এম, দুই এর কোর্টে (কাদিয়ানী মাজহাব
পৃষ্ঠা-৪৫৬, ৪৫৮, তাবলীগ-ই- রিসালাত ভলিয়ুম-৮, পৃষ্ঠা-৪৪) ওইরূপ একটি অঙ্গীকার নামা দিয়েছিলেন।
বারাহীন-ই-আহমদীয়ার
প্রকাশনা, যাতে মির্জা ছাহিবের ওইশ্বরিক গুপ্ত তথ্য পাওয়ার বিষয় বিশেষ গুরুত্ব দেখানো হয়, যা
মুসলমানদের মধ্যে প্রবল উৎসুক্য ডেকে আনে। অন্যান্য ভবিষ্যদ্বাণীর কার্য্যকারিতা
দেখার জন্য তার অপেক্ষা করতে ছিলেন। প্যাম্ফ্লিট (বাধাইহীন পুস্তিকা) মাধ্যমে মির্জা
ছাহিবের প্রচারিত ভবিষ্যদ্বাণীগুলি অশুদ্ধ প্রমাণিত হয়। সুতরাং সে সমালোচনা এবং
উপহাসের পাত্রে পরিণত হয়। এবং নিজেকে সমালোচনা মুক্ত করার জন্য তার ভবিষ্যদ্বাণীর
ভিন্ন ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করে।
১৮৮৬ সালের ২০শে
ফেব্রুয়ারী মাসে মির্জা ছাহিব একটি প্যাম্ফ্লিটের মাধ্যমে ওইশ্বরিক গুপ্ত তথ্য
প্রচার করে যে, তার একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করবে। তার নাম এমানুয়েল এবং বিশরও। ওই সময়ে যে
জন্ম গ্রহণ করবে,
সে সম্পদশালী এবং আড়ম্বরপূর্ণ এবং মহিমাময় হবে। তার আগমনে
অলৌকিক শক্তির বিকাশ ঘটাবে এবং অনেক রোগের উপশম হবে। তিনি হবেন কলিমুল্লাহ্
ত্মরূহৈৃব্ধঞ্জব্জৈৈষ্ফশ্চত্র। সকলেই ওই বিস্ময় তথ্যের কার্য্যকারিতা প্রকাশের
অপেক্ষা করতে লাগলো।
কিন্তু ঘটনা এরূপ ঘটেছিল যে, ১৮৮৬
সালের মে মাসে মির্জা ছাহিবের এক কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছিল। ওই ঘটনায় তখনকার
পরিস্থিতি সম্বন্ধ সীরাত-উল-মেহেদীর লেখক যেমন উল্লেখ করেছেন, মির্জা ছাহিবের
এ অসমতাপূর্ণ সিদ্ধান্ত,
ভাঁড়ামী এবং নিজেকে হাস্যকর তোলার কারণে, তার
বিরোধীতাকারীরা এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিলেন যে, মির্জা ছাহিবের
প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারীরা এমন হতাশ হয়েছিল যে, তাদের মনে হয়েছিল যে, ভূমিকম্প
হচ্ছিল। প্যাম্ফ্লিট এবং চিঠির মাধ্যমে মির্জা ছাহিব ঘোষণা করেছিল যে, তার
পূর্ব প্রকাশিত গুপ্ত তথ্যে এরূপ ঈঙ্গিত ছিলনা যে, এই গর্ভাবস্থায় পুত্র সন্তান জন্ম
গ্রহণ করবে।
১৮৮৭ সালের আগষ্ট মাসে
অতঃপর এক পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছিল। এতে বিজয়ানন্দ হয়েছিল এবং যারা বিশ্বাসে
দ্বিধাগ্রস্থতায় ছিল,
তাদের দৃঢ় (বিশ্বাস) হয়েছিল। বিশর-১ এর জন্ম গ্রহণে জনগণ
বিশ্বাস করেছিল, এটাই প্রতিশ্রুত পুত্র সন্তান এবং মির্জা ছাহিবও একই ধারণা পোষণ করেছিল। এতে
কিছু লোক মির্জা ছাহিবের নিকট ফিরে এসেছিল। কিন্তু এক বৎসর পর ওই ৫ম পুত্র
সন্তানটি মারা যায়। লোকজনের এ ব্যবহারে দেশে একটি ভয়ঙ্কর ঝড় ও ভূমিকম্প হয়েছিল। যেমনটি
তার পূর্বে বা পরে সংঘটিত হয়েছে বলে স্মরণ করা যায়নি। মির্জা ছাহিবের প্রতি
বিশ্বাস স্থাপনকারীদের অনেকেই প্রতিবন্ধীতে পরিণত হয়েছিল এবং আর কখনোই সুস্থ হয়নি।
পূণরায় প্যাম্ফ্লিট ও
চিঠির মাধ্যমে মির্জা ছাহিব জনগণকে বুঝাতে চেষ্টা করেছিল যে, তিনি
কখনোই নিশ্চিত ছিলেন না যে,
ওই পুত্রটিই ওই গুপ্ত তথ্যের বিষয় ছিল। এবং ইতিমধ্যে তিনি
অনেক গুপ্ত তথ্য পেয়েছেন,
যাতে তার শ্রেষ্ঠতা ঘোষণা করা হয়েছিল। তারও মনে হয়েছিল, হয়তবা
ইহাই সেই প্রতিশ্রুত পুত্র। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে গুপ্ত তথ্যে ওইরূপ কোন ইঙ্গিত
ছিলনা। ব্যাখ্যাটি কিছু অনুসারীদেরকে আশ্বস্ত করে ছিল কিন্তু অনেকেই হতাশ হয়েছিল
এবং বিরুদ্ধবাদীরা উপহাস করেছিল। (সীরাত-ই-মেহদী, ভলিউম-১, পৃষ্ঠা-৮৮)
১৮৮৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি
উপরোল্লিখিত গুপ্তভেদ সম্পর্কিত প্যাম্ফ্লিট প্রকাশ করা হয়েছিল। (অসমাপ্ত)
****************************************************************************
খতমে
নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র
খতমে
নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির
(ইসলামী
শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের
অন্তর্ভুক্ত হয়
(যেমন-
কাদিয়ানী,
বাহাই ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর
তওবা না করলে,
তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড)
(১)
কাদিয়ানী
রদ!
(তৃতীয়
ভাগ)
বাহরুল
উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা,
রইছুল মুহাদ্দিসীন, তাজুল মোফাসসিরীন, হাফিযে
হাদীছ, মুফতীয়ে আযম,
পীরে কামিল, মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা
আল্লামা শাহ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রদ্বিয়াল্লাহু কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানি
রদ” কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খণ্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায়
ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানিদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল
ফেরকা থেকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হেফাজত হয়। আল্লাহ
পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত
করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
মির্জ্জার মছিহ দাবী খণ্ড।
প্রশ্ন
মির্জ্জা
ছাহেব এজালাতোল আওহামের ১৬৯/২২৭ পৃষ্ঠায় ছুরা আল এমরানের আয়ত উল্লেখ করিয়া
বলিয়াছেন যে, হজরত ইছা মরিয়া গিয়াছেন।
আমাদের
উত্তর
ইহার
বিস্তারিত আলাচনা অন্য খন্ডে হইবে, এস্থলে এতটুকু লিখিতেছি, উক্ত
আয়তটি এই;-
يعيسى انى متو فيك و رافعك الى
মাওলানা
আবদুল কাদের ছাহেব ইহার অনুবাদে লিখিয়াছেন-
مين تجهه كو..هر لون كا اور اطها لونكا ا.زنى طرف.
“আমি
তোমাকে ফিরাইয়া লইব এবং নিজের দিকে উঠাইয়া লইব।”
মাওলানা
শাহ রফি উদ্দিন ছাহেব উহার অনুবাদে লিখিয়াছেন ;-
مین
تجھہ کو لینے و الا ھون اور اطھا نے و الا ھون طرف اپنے-
“আমি
তোমাকে গ্রহণ করিব এবং নিজের দিকে উঠাইয়া লইব।”
শাহ অলি
উল্লাহ ছাহেব ইহার অনুবাদে লিখিয়াছেন ;-
گفت
خدا ای عیسی ھراینہ من بر گیرندہ تو ام یعنے ازین جھان وبر دار ندہ تو ام سوی خود-
“খোদা
বলিলেন, হে ইছা, নিশ্চয় আমি তোমাকে (এই জাহান হইতে) গ্রহণ করিব এবং তোমাকে নিজের দিকে উঠাইয়া
লইব।”
উপরোক্ত
আয়তে তাঁহার মৃত্যু প্রমাণিত হয়না।
ছুরা
আনয়ামে আছে ;-
ثم توفى كل نفسى ما كسبت وهم لا يظلمون.
“তৎপরে প্রত্যেক
প্রাণী যাহা অর্জ্জন করিয়াছে, উহা পূর্ণভাবে প্রদত্ত হইবে এবং তাহারা অত্যাচারগ্রস্ত হইবে
না।”
এই আয়তে
توفى
শব্দের
অর্থ পূর্ণভাবে গ্রহণ করা।
কুরআন
ছুরা নেছা, ২৪ রুকু ;-
فاما الذين امنوا وعملو الصلحت فيو فيهم اجورهم.
“যাহারা
ইমান আনিয়াছে এবং সৎকার্য্য সকল করিয়াছে, আল্লাহ তাহাদিগকে তাহাদের বিনিময়
পূর্ণভাবে দিবেন।”
কুরআন
ছুরা আল-এমরান, ১৯ রুকু ;-
انما توفون اجوركم يوم القيمة.
“তোমরা
কেয়ামতের দিবস তোমাদের বিনিময় পূর্ণভাবে প্রদত্ত হইবে।”
উপরোক্ত
আয়তদ্বয়ে توفيى শব্দের অর্থ পূর্ণভাবে প্রদান বা
গ্রহণ করা।
ছুরা আনয়ামে
আছে ;-
وهو
الذى يتو فكم با لليل ويعلم ما جرحتم بالنهار هم يبعثكم فيه ليقضى اجل مشمى ثم
اليه مر جعكم ثم ينبئكم بما كنتك تعملون.
“তিনিই
তোমাদিগকে রাত্রে কবজ (গ্রহণ) করিয়া থাকেন এবং যাহা তোমরা দিবসে উপার্জ্জন করিয়া
থাক, তিনি তাহা অবগত আছেন,
তৎপরে তিনি তোমাদিগকে উক্ত দিবসে প্রেরণ করেন, যেন নির্দ্দিষ্ট মিয়াদ পূর্ণ করা
হয়। তৎপরে তাহার দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্ত্তন স্থল, তৎপরে তোমরা যাহা করিতে, তিনি
তোমাদিগকে তাহার সংবাদ দিবেন।”
এই আয়তে توفيى শব্দের অর্থ নিদ্রিত করা।
যদি
এস্থলে উহার অর্থ ‘মারিয়া ফেলা’
গ্রহণ করা হয়, তবে আয়তের এইরূপ অর্থ হইবে, আল্লাহ
মানুষদিগকে রাত্রে মারিয়া ফেলিয়া দিবসে জীবিত করেন। ইহা একেবারে বাতীল অর্থ।
ছুরা
জোমারে আছে ;-
الله
يتوفى الانفس حين موتها والتى لم تمت فى منا مها فيمسك التى فضى عليها الموت وسرسل
الاخرى الى اجل مسمى.
“আল্লাহ
হরণ (কবজ) করিয়া লন প্রাণ সমূহকে উহাদের মৃত্যুর সময় এবং উক্ত প্রাণগুলিকে যাহারা
স্ব স্ব নিদ্রাতে মরে নাই,
তৎপরে তিনি যে প্রাণগুলির উপর মৃত্যুর আদেশ করিয়াছেন, তৎসমস্তকে
আবদ্ধ রাখেন এবং অপর আত্মাগুলিকে নির্দ্দিষ্ট কাল পর্যন্ত প্রেরণ করেন।”
এই আয়তে
যদি توفيى শব্দের অর্থ মৃত্যু গ্রহণ করা হয়, তবে আয়তের মতলব এইরূপ হইবে যে, মৃত্যুর
পরে কতক আত্মাকে ফিরাইয়া দেন, ইহা বাতীল ব্যাখ্যা।
মির্জ্জা
ছাহেব বারাহিনে আহমদীর ৫১৯ পৃষ্ঠায় উক্ত আয়তের অর্থ লিখিয়াছেন;-
مین
تجھہ کو پوری نعمت دونگا اور اپنی طرف اطھاؤن گا-
“আমি
তোমাকে পূর্ণ সম্পদ প্রদান করিব এবং নিজের দিকে উঠাইয়া লইব।”
মির্জ্জা
ছাহেব তওজিহ মারাউেনার ৩ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন;-
بائبل
اور ھماری احادیث اور اخبار کی کتابون کے روسے جن نبیون کا اسی وجود عنصری کے
ساتلھہ آسمان پر جانا تصور کیا گیا ھے وہ
دو نبی ھین ایک یوحنا جس کا نام ابلیا اور ادریس بھی ھے اور دوسرے مسیح بن مریم جن
کو عیسی اور یسوع بھی کھتے ھین-
“বাইবেল
এবং আমাদের হাদিছ ও ইতিহাসের কেতাবগুলির হিসাবে যে নবিগণের এই স্থূল দেহের সহিত
আছমানে যাওয়া ধারণা করা হইয়াছে, তাঁহারা দুইজন নবি, -এক ইউহানা- যাহার নাম এলিয়া ও
ইদরিছ। দ্বিতীয় মছিহ বেনে মরিয়েম-যাহাকে ইছা ও এছু বলিয়া থাকেন।”
মূলকথা, ছুরা
আল-এমরানের আয়তে হজরত ইছার মৃত্যু প্রমাণিত হয়না।
তফছিরে
বয়জবি, ২/২১ পৃষ্ঠা ;-
اى
متوفى اجلك وموخوك الى اجلك المسمى عا صما اياك من قتلهم اوقابضك من الارض من
توفيت مالى او متوفيك نائما اذ روى انه رفع نائما او مميتك عن الشهوات العائفة عن
العروج الى عالم الملكوت.
متوفيك শব্দের অর্থ,
(১) তোমার আয়ুকাল পূর্ণ করিব, তোমার নির্দ্দিষ্ট আয়ুকাল অবধি
তোমাকে নিরাপদে জীবিত রাখিব যেন শত্রুরা তোমাকে হত্যা করিতে না পারে।
(২)
তোমাকে জমি হইতে উত্থাপন করিয়া লইব। যেরূপ বলা হইয়া থাকে, توفيت مالى আমি নিজের অর্থ কবজ করিয়া লইয়াছি।
(৩)
তোমাকে নিদ্রিত অবস্থায় গ্রহণ করিব। কেননা রেওয়াএত করা হইয়াছে যে, তিনি
নিদ্রিত অবস্থায় সমুত্থিত হইয়াছিলেন।
(৪) আমি
তোমার উক্ত কামনা বাসনাগুলি রহিত করিয়া দিব- যাহা আলমে-মালাকুতে সমুত্থিত হওয়ার
বাধা জন্মাইয়া থাকে।
তফছিরে-আবু
ছউদের ২/৪২০ পৃষ্ঠায় উপরোক্ত কয়েক প্রকার অর্থ লিখিত আছে, তৎপরে
নিম্নোক্ত এবারতগুলি লিখিত আছে ;-
وقيل
مميتك فى وقتك بعد النزول من السماء ورافعك الان قال القرطبى والصحيح ان الله
تعالى رفعه من غير وفاة ولا نوم كما قال الحسن وابن زيد وهو اختيار الطبرى وهو
الصحيح عن ابن عباس رضى الله عنهما.
(৫) কেহ
বলিয়াছেন, তোমার নিজ সময়ে আছমান হইতে নাজিল হওয়ার পরে তোমাকে মারিয়া ফেলিব এবং
বর্ত্তমানে তোমাকে উঠাইয়া লইতেছি। কোরতবি বলেন, ছহিহ মত এই যে, নিশ্চয়
আল্লাহ তাহাকে বিনা মৃত্যু ও বিনা নিদ্রা উঠাইয়া লইয়াছেন, যেরূপ
হাছান ও এবনো-জায়েদ বলিয়াছেন। ইহাই তাবারির মনোনীত মত, ইহাই
এবনো আব্বাছের ছহিহ মত।”
(অসমাপ্ত)
(২)
ইসলামী
শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- ‘কাফের’ ঘোষণা!
অনুবাদক - আলহাজ্ব মুহম্মদ
হাবিবুল হক
(পূর্ব
প্রকাশিতের পর)
১৮৮৬ সালের
২২শে মার্চ আরেকটি প্যামফলিট প্রকাশ করা হয়েছিল। যাতে বলা হয়েছিল যে, “পুত্রটি
৯ বৎসরের মধ্যে জন্ম গ্রহণ করবে।” একটি তৃতীয় প্যামফলিট প্রকাশ করা হয়েছিল ১৮৮৬ সালের ৮ই
এপ্রিলে। যাতে বলা হয়েছিল যে, শীঘ্রই এক পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করবে এবং জন্মের সময়
গর্ভাবস্থার সীমা অতিক্রম করবে না। (তাবলীগ-ই-রিসালাত, ভলিয়ম-১
পৃষ্ঠা-৮৬-৮৭)। এটা এ কারণে করা হয়েছিল ১৮৮৬ সালের মে মাসে মির্জা সাহেবের একটি
কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করায় লোকজন তাকে উপহাস করছিল। কিন্তু এটাও মির্জা সাহেব
নিজের সমর্থনে ব্যাখ্যা করেছিল। এতে বলা হয়েছিল যে, কখনোই উনারূপ ভবিষ্যদ্বাণী করা
হয়নি যে, এই গর্ভাবস্থাতেই পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করবে। জন্মের সময় গর্ভাবস্থার সীমা
অতিক্রম করবেনা, কথাগুলির অর্থ হবে- ২ বৎসর ৬ মাস বা ৩ বৎসরের মধ্যেই জন্ম গ্রহণ করবে এবং
উনারূপও হতে পারে যে,
৯ বৎসরের মধ্যে যেকোন সময়ে জন্ম গ্রহণ করতে পারে।
(প্রাগুক্ত) স্বাভাবিকভাবে এ ব্যাখ্যাগুলি জনগণকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি।
১৮৮৭
সালের ৭ই আগষ্টের প্যামফলিটের আলোকে বিচার করলে প্রতিয়মান হয় যে, রাত ১-৩০
মিনিটে তার পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণে সে তার প্রকাশিত গুপ্তভেদের কার্য্যকারীতায়
পূর্ণ সন্তুষ্টি এবং প্রগাঢ় তুষ্টি প্রকাশ করে। যদিও সে তার বর্তমান ব্যাখ্যায়
বলছে যে, সে নিশ্চিত ছিল না যে,
গুপ্তভেদ বশির-১-উনার জন্ম সম্বন্ধে ইঙ্গিত করা হয়েছিল।
(তবলীগ-ই-রিসালাত,
ভলিয়ম-১, পৃষ্ঠা-৯৯)
প্যামফলিটের
শিরোনাম ছিল, সু-খবর خوشخبرىসু-খবর শিরোনাউেনার প্যামফলিটটি প্রমাণ করে যে, মির্জা সাহেব নিজে নিশ্চিত ছিল
এবং সে-ই জনগণের নিকট উহা প্রকাশ করেছিল।
মির্জা
সাহেব কর্তৃক মোহাম্মদী বেগমকে বিয়ে করার চেষ্টা এবং তার ব্যর্থতার ঘটনা সকলেরই
জানা।
১৮৮৭ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারীতে প্রকাশিত প্যামফলিটে একটি গুপ্ত তথ্যের দোহাই দিয়ে পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণের ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল এবং উহাতে ঐশ্বরিক গুপ্ত তথ্যের দোহাইয়ে আর একটি ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল। সে লিখেছিল যে, আল্লাহ পাক তাকে মহিলাদের সম্বন্ধে সু-সংবাদ দিচ্ছিলেন, যাদের কিছু মহিলাকে মির্জা সাহেব ভবিষ্যতে পাবে। তার লেখা ও প্যামফলিট থেকে ইহা পরিস্কার বুঝা যায় যে, এই সুসংবাদ, তার ভবিষ্যত বিয়ে সম্পর্কিত ছিল। তবে প্রকৃত ঘটনা এই যে, মির্জা সাহেব ১৮৮৪ সালের ১৭ই....
**************************************************************
খতমে
নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফের
(ইসলামী
শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের
অন্তর্ভূক্ত হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে, তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড )
(১)
কাদিয়ানী রদ!
(তৃতীয়
ভাগ)
বাহরুল
উলুম,
ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীছ, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল,
মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ সূফী মুহম্মদ
রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানি
রদ” কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)। আউনারা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায়
ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানিদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল
ফেরকা থেকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হেফাজত হয়। আল্লাহ
পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত
করা হলো,
তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য
রয়েছে।
(পূর্ব
প্রকাশিতের পর) মির্জ্জার মছিহ দাবী খন্ডন।
তফছিরে কবির, ২/৪৮১ পৃষ্ঠা ;-
انى
متمم عمرك فحينئذ اتوفاك فلا اتركهم حتى يقتلوك بل انا رافعك الى سمائى ومقربك
بملائكتى واصونك عن ان يتمكنوا من قتلك وهذا تاويل حسن.
(১) “নিশ্চয় আমি তোমার আয়ু পূর্ণ করিব, সেই সময় আমি তোমাকে মারিয়া ফেলিব, কাজেই শত্রুদিগকে তোমাকে হত্যা করার সুযোগ দিব না, বরং আমি
তোমাকে আমার আছমানের দিকে উত্থাপন করিয়া লইব, আমার
ফেরেশতাগণের নিকট তোমার স্থান দিব এবং তোমাকে রক্ষা করিব, যেন
তাহারা তোমাকে হত্যা করিতে ক্ষমতাবান না হয়। ইহা উৎকৃষ্ট ব্যাখ্যা।”
তৎপরে তিনি লিখিয়াছেন ;-
ان
التوفى اخذ الشئ وافيا ولما علم الله ان من الناس من يخطر بباله ان الذين رفعه
الله هو روحه لا جسده ذكر هذا الكلام ليدل على انه عليه الصلوة والسلا رفح بتمامه
الى السماء بروحه وبجسده ويدل على صحة هذا التاويل قوله تعالى وما يضرونك من شئ.
توفىশব্দের অর্থ কোন বস্তু সম্পূর্ণরূপে গ্রহণ করা। আল্লাহ জানিতেন যে, কতক লোক ধারণা করিবে যে, আল্লাহতায়ালা তাঁহার আত্মা উঠাইয়া
লইবেন,
কিন্তু তাঁহার শরীর উঠাইয়া লইবেন না, এই হেতু উক্ত শব্দ ব্যবহার করিয়াছেন, যেন ইহাতে বুঝা যায় যে, তাঁহার আত্মা ও শরীর উভয় উঠাইয়া লওয়া হইয়াছে। খোদা বলিয়াছেন, তাঁহারা তোমার কোন প্রকার ক্ষতি করিতে পারিবে না, ইহাতেই
উপরোক্ত ব্যাখ্যার ছহিহ হওয়া বুঝা যাইতেছে।”
তৎপরে তিনি বলিয়াছেন ;-
ان
التوفى هو القبض يقال وفائى فلان دراهمى واوفانى وتوفيتها منه وقد يكون ايضاتوى
بمعنى استوي وعلى كلا الاحتمالين كان اخراجه من الارض واصعادهك الى السماءك تو
فياله.
توفيى শব্দের অর্থ কবজ করা, আরবের
ব্যবহারে বলা হয়, অমুক ব্যক্তি আমার টাকাগুলি আমাকে প্রদান করিয়াছে এবং আমি
উহা তাহার নিকট হইতে কবজ করিয়াছি। কখন توفيى উনার অর্থ ‘পূর্ণ গ্রহণ করিয়াছে‘ হইয়া থাকে। উভয় সূত্রে এই শব্দের এইরূপ মর্ম হইবে- তাঁহাকে জমিন হইতে বাহির
করিয়া আছমানে তুলিয়া লওয়া হইয়াছে।”
তফছিরে এবনে-জরির, ২/১৮৩/১৮৪ পৃষ্ঠা ;-
عن
الربيع فيى قوله اني منوفيك قال معنيى وفاة المنام رفعه الله فيى منامه قال الحين
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لليهود ان عيسى لم يمت وانه راجعاليكم قبل يوم
القيمة وقال اخرون معنيى ذلك انى قايضك من الارض فرافعك الى قالوا ومعني الوفاة
القبض كما يقال توفيت من فلان مالي عليه بمعني قبضته.
“রবি বলিয়াছেন, èল্পব্জব্ধ শব্দের অর্থ নিদ্রা, অর্থাৎ আল্লাহ (হজরত) ইছা আলাইহিস
সালামকে নিদ্রিত অবস্থায় তুলিয়া লইয়াছিলেন। হাছান বলিয়াছেন, রাছুলুল্লাহ (ছাঃ) য়িহুদীদিগকে বলিয়াছিলেন, নিশ্চয়
ইছা আলাইহিস সালাম মৃত্যু প্রাপ্ত হয়েন নাই, তিনি
কেয়ামতের পূর্ব্বে তোমাদের নিকট পুনরাগমন করিবেন।
অন্যদল
বলিয়াছেন,
ইহার অর্থ আমি তোমাকে জমি হইতে তুলিয়া আমার নিকট উঠাইয়া
লইব। তাহারা বলেন, èল্পব্জব্ধ শব্দের অর্থ কবজ করা। যেরূপ আরবেরা বলিয়া থাকেন, আমি অমুকের নিকট হইতে আমার প্রাপ্য টাকা কবজ করিয়া লইয়াছি।
তৎপরে
তিনি মাতারে-অর্রাক, হাছান এবনো জোরাএজ ও জাফর বেনে জোবাউনার হইতে উহার অর্থ কবজ
করা উল্লেখ করিয়াছেন।
তৎপরে
তিনি লিখিয়াছেন ;-
ان كعب الا حبار قال ما كان الله
عزوجل ليميت عيسى بن مريم انما بعثه الله داعيا ومبشرا يدعو اليه وحده فلما راى
عيسى قلة من اتبعه وكشرة من كذبه شكى ذلك الى الله عزوجل فاوحى الله اليه انى
متوفيك ورافعك الى وليس من رفعته عندي ميتا واني سا بعثك على الاعور الدجال
فتقتله- قال كعب الاحبار وذلك يصدق حديث رسول الله صلعم حيث قال كيف تهلك امة انا
في اولها وعيسى فيى اخرها.
কা’ব আহবার বলিয়াছেন, আল্লাহতায়ালা ইছা আলাইহিস সালামকে মারিয়া ফেলেন নাই। তিনি
তাঁহাকে আল্লাহতায়ালার অহদানিয়তের দিকে আহ¡ানকারী ও সুসংবাদ প্রদানকারী
করিয়া প্রেরণ করিয়াছিলেন, যখন (হজরত) ইছা আলাইহিস সালাম
তাঁহার অনুসরণকারীর সংখ্যা অল্প ও তাঁহার অসত্যারোপকারীর সংখ্যা অধিক দেখিলন, তখন আল্লাহ তায়ালার নিকট অনুযোগ করিলেন। আল্লাহতায়ালা তাঁহার নিকট উক্ত আয়ত
অহি পাঠাইলেন,
আমার মতে তুলিয়া লওয়ার অর্থ মৃত্যু নহে। নিশ্চয় অচিরে আমি
তোমাকে কানা দাজ্জালের নিকট পাঠাইব, তুমি তাহাকে হত্যা করিবে। তৎপরে
তিনি বলিয়াছেন,
ইহা নিম্নোক্ত হাদিছের সত্যতার সমর্থন করে। হজরত বলিয়াছেন, আামার উম্মত কিরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হইবে- অথচ আমি উহার প্রথম ভাগে আছি এবং
(হজরত) ইছা আলাইহিস সালাম উহার শেষ ভাগে হইবেন।”
তৎপরে
তিনি লিখিয়াছেন ;-
قال
ابن زيد موفيك قابضك ولم يمت بعد حتى يقتل الدجال وسيموت وقرأقول الله عزوجل و
يكلم الناس فى المهد وكهلا قال رفعه الله اليه قبل ان يكون كهلا.
“এবনো জয়েদ বলিয়াছেন, হৃণ্ডèল্প“রূ শব্দের
অর্থ ‘তুলিয়া লইব’। তিনি মৃত্যুপ্রাপ্ত হন নাই, যতক্ষণ দাজ্জাল হত্যা না করিবেন
(মরিবেন না),
তৎপরে মরিবেন। তিনি এই আয়ত পড়িলেন, (হজরত)
ইছা দোলায় থাকিয়া (শৈশব কালে) এবং অর্দ্ধ বৃদ্ধ অবস্থায় লোকের সঙ্গে কথা বলিবেন।”
তিনি
বলিয়াছেন,
আল্লাহ তাঁহাকে তাঁহার অর্দ্ধ বৃদ্ধ হওয়ার পূর্ব্বে নিজের দিক তুলিয়া লইয়াছেন।
তৎপরে
তিনি লিখিয়াছেন ;-
وقال
اخرون معني ذلك اذ قال الله ياعيسى انىرافعك الى ومطهرك من الذين كفروا ومنوفيك
بعد انزالك اياك الى الدنيا- واولى هذه الاقوال با لصحة عندنا قول من قال معني ذلك
اني قابضك من الارض ورافعك لتواتر الاخبار عن رسول الله صلى الله عليه وسلم انه
قال ينزل عيسى بن مريم فيقتل الدجال ئم يمكث فى الارض مدة ئم يموت فيصلى عليه
المسلمون ويدفنؤنه.
অন্য
একদল উহার অর্থে বলিয়াছেন, আল্লাহ বলিয়াছেন হে ইছা নিশ্চয়
আমি তোমাকে আামার দিকে উঠাইয়া লইব, কাফেরদিগের (হস্ত) হইতে তোমাকে
পবিত্র করিব এবং তোমাকে দুনইয়ায় নাজিল করার পরে মারিয়া ফেলিব। এই সমস্ত মত হইতে
আমার নিকট ঐ দলের মত সমধিক ছহিহ- যাহারা উহার অর্থে বলিয়াছেন, নিশ্চয় আমি তোমাকে তুলিয়া লইব। কেননা রাছুলুল্লাহ (ছাঃ) উনার অসংখ্যক হাদিছে
আসিয়াছে যে,
ইছা বনে উনারয়েম নাজিল হইয়া দাজ্জালকে হত্যা করিবেন, তৎপরে তিনি কিছুকাল জমিতে থাকিবেন, তৎপরে মরিয়া যাইবেন, মুসলমানেরা তাঁহার জানাজা পড়িয়া তাঁহাকে দাফন করিবেন। (অসমাপ্ত)
(২)
ইসলামী
শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- ‘কাফের’ ঘোষণা!
(পূর্ব
প্রকাশিতের পর)
অনুবাদক
- আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক
তাতে
স্বাক্ষর করতে মির্জা সাহেব আগ্রহীই ছিল, কিন্তু সে স্বর্গীয় আদেশ পোয়েছিল
যে, মির্জা আহমদ বেগের মেয়েকে বিয়ে করার দাবীর মাধ্যমে এখন একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা
উচিত এবং তাদেরকে (মির্জা আহমদ বেগ ও অন্যান্য) জানিয়ে দিতে হবে যে, এই কৃপা বা মহত্ব দেখানো হবে, যদি বিয়ে একটি আর্শীবাদের উৎস এবং
তাদের প্রতি কৃপা প্রদর্শন করা হয়। যদি তারা বিয়েতে রাজী না হয়, তাহলে মেয়েটি প্রচন্ড দুঃখে পড়বে। যে পুরুষের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে হবে, সে ২ বৎসরের মধ্যে মৃত্যুবরণ করবে এবং মেয়ের পিতা ৩ বৎসরের মধ্যে মৃত্যুবরণ
করবে। (তবলীগ-ই-রিসালাত, ভলিউম-১ পৃষ্ঠা-১১৬)
১৮৮৮
ইংরেজী সালের ১৫ই জুলাইয়ে প্রকাশিত প্যামফলিটের ক্রোড়পত্র থেকে এটাই প্রতিয়মান হয়
যে, মির্জা সাহেবের আত্মীয়-স্বজনরা তাকে (মির্জা সাহেবকে) প্রতারক এবং ধর্ম
ব্যবসায়ী মনে করতো। (আল্লাহ পাক উনার সাথে সরাসরি যোগাযোগ আছে, এ দাবী দ্বারা অর্থ-সম্পদ অর্জনই ছিল যার উদ্দেশ্য)। সে লিখেছে যে, নিদর্শন দেখানো সত্বেও তারা সন্তুষ্ট হয়নি। তার এই নুতন আত্মীয়তার কোন প্রয়োজন
ছিলনা। যারা তাকে (মির্জা সাহেব) বিশ্বাস করতে অস্বীকার করেছিল, তাদের জন্য নিদর্শন স্বরুপই বিবাহের প্রস্তাব করা হয়েছিল। আল্লাহ পাকই তাদেরকে
প্রাকৃতিক এবং অলৌকিক ঘটনাবলী দেখাবেন। বিবাহের প্রস্তাব গ্রহণ দ্বারা তারা
স্বর্গীয় দয়া আশীর্বাদ গ্রহণ করতে পারতো এবং আসন্য দূর্ভাগ্য ও দূর্যোগ থেকে
রেহাই পেতে পারতো। যদি তারা প্রত্যাখ্যান করে, আইনানুগ
এবং ভয়ঙ্কর নিদর্শন পাঠিয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হবে। (ইবিড পৃষ্ঠা-১১৯, ১২০)
শুধু ঐ
সকল শাসানি দিয়েই মির্জা সাহেব ক্ষান্ত হয়নি, তার
(আহমদ বেগ) আত্মীয়-স্বজন এবং মির্জা আহমদ বেগকে সে চিঠিও লিখেছিল। সনির্বন্ধ
অনুরোধই ছিল ঐ সকল চিঠির বিষয়বস্তু। মির্জা আহমদ বেগকে লিখিত ১৮৮৮ সালের ২০ শে
ফেব্রুয়ারীর চিঠিতে উল্লেখ করে যে, যদি তারা (মেয়ের পক্ষের লোকেরা)
বিয়েতে রাজী হয়,
তবেই সে জউিনার দানপত্রে সম্মত সই করবে এবং তার (মির্জা
সাহেব) নিজস্ব সম্পত্তিও আল্লাহ পাক উনার এবং মির্জা আহমদ বেগের হবে। সে আরো
প্রতিশ্রুতি দেয় যে, মির্জা সাহেবের প্রচেষ্টায় পুলিশ ডিপার্টমেন্টে তার (মির্জা
আহমদ বেগ) ছেলের চাকুরী হবে এবং তার (মির্জা সাহেব) জনৈক বিত্তশালী মুরীদের কন্যার
সাথে তার (মির্জা আহমদ বেগ) ছেলের বিবাহের ব্যবস্থা করা হবে। (নাউইশতা-ই-গায়েব, লেখক- এম,
এস খালিদ, পৃষ্ঠা-১০০, দ্রষ্টব্য কাদিয়ানী মজহাব, লেখক- ইলিয়াস বার্নি, ৫ম সংস্করণ,
পৃষ্ঠা-৩৭৫ এবং ৩৭৬)
মির্জা
সাহেব ১৮৯২ ইংরেজী সালের ১৭ই জুলাই মির্জা আহমদ বেগকে আর একটি চিঠি লিখেছিল, যাতে সে উল্লেখ করেছিল যে, তার নিজের বিয়ে সম্বন্ধে
ভবিষ্যদ্বাণী খুবই সুবিদিত ছিল। তাই ভবিষ্যদ্বাণী প্রতিপালনে সহযোগীতা করার জন্য
তাকে (মির্জা আহমদ) সনির্বন্ধ অনুরোধ জানায়। (কালিমাত-ই-ফজলে রহমানী, লেখক কাজী ফজল আহমদ পৃষ্ঠা-১২৩, কাদিয়ানী মজহাব পৃষ্ঠা-৩৭৭-৩৭৯)
মির্জা সাহেবের ছেলে, ফজল আহমদের বিয়ে হয়েছিল মির্জা শের আলীর কন্যার সাথে। মির্জা শের আলীর স্ত্রী মির্জা আহমদ বেগের বোন। মুহম্মদী বেগমকে যাতে মির্জা সাহেব বিয়ে করতে পারে, সাহায্য করার জন্য মির্জা সাহেব মির্জা শের আলী এবং তার স্ত্রীর নিকটও পত্র লিখেছিল এবং ওটাতে সে তাদেরকে শাসিয়েও ছিল যে, যদি তাকে (মুহম্মদী বেগম) অন্যকোন লোকের নিকট বিয়ে দেয়া হয়, তবে সে (মির্জা সাহেব) তার ছেলে ফজল আহমদকে বলবে, তার স্ত্রীকে (মির্জা শের আলীর কন্যা) তালাক দেয়ার জন্য। মির্জা সাহেবের পত্রের জবাবে মির্জা শের আলী লিখেছিল যে, সে (মির্জা সাহেব) যদি নিজেকে মির্জা আহমদের স্থলাভিষিক্ত করে এবং মির্জা আহমদ বেগ, যার বয়স পঞ্চাশের উর্দ্ধে এবং যে মুনাফেকীতে মুসায়লামাকে অতিক্রম করেছে, তার (মির্জা সাহেবের) কন্যাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তবে কি সে (মির্জা সাহেব) তার কন্যাকে তার (মির্জা আহমদ বেগ) নিকট বিয়ে দিতে সম্মত হবে? (অসমাপ্ত)
আবা- ৩২,৩৩,৩৪,৩৫
******************************************************************