৭৫৭ নং- সুওয়াল : মাসিক মদীনা জানুয়ারী/৯৭ সংখ্যায় নিম্নোক্ত প্রশ্নোত্তর ছাপানো হয়।- প্রশ্ন : আমি যদি কোন ইসলামী দলে যোগদান করে আন্দোলনে শরীক হই এবং সংঘর্ষে মুসলমানদের হাতেই মারা যাই, তবে কি আমি শহীদ বলে বিবেচিত হবো?

 


সুওয়াল : মাসিক মদীনা জানুয়ারী/৯৭ সংখ্যায় নিম্নোক্ত প্রশ্নোত্তর ছাপানো হয়।-

প্রশ্ন : আমি যদি কোন ইসলামী দলে যোগদান করে আন্দোলনে শরীক হই এবং সংঘর্ষে মুসলমানদের হাতেই মারা যাই, তবে কি আমি শহীদ বলে বিবেচিত হবো?

উত্তর : মহান আল্লাহ পাক উনার দ্বীনের সম্মান রক্ষা বা বর্ধন করার লক্ষ্যে যদি সংগ্রাম করেন, এবং সংঘর্ষে নিহত হন তবে অবশ্যই আপনি শহীদরূপে মর্যাদা পাবেন। হত্যাকারী যদি মুসলমান নামধারীও হয়, তাতেও কিছু যায় আসেনা। স্মরণীয় যে, ইসলামের স্বার্থে সংগ্রামরত ব্যক্তিকে হত্যা করলে পরে সে হত্যাকারী আর মুসলমান থাকেনা।

এখন আমার সুওয়াল হলো- বর্তমান প্রেক্ষাপটে মদীনা সম্পাদকের প্রদত্ত উত্তর ঠিক হয়েছি কি?

 

জাওয়াব : বর্তমান প্রেক্ষাপটে মাসিক মদীনার উপরোক্ত উত্তর শুদ্ধ হয়নি।

কারণ প্রশ্নকারী তার প্রশ্নে উল্লেখ করেছে, সে যদি কোন ইসলামী দলে যোগদান করে এবং তাদের আন্দোলনে শরীক হয় এবং সে আন্দোলনে যদি সে মারা যায়, তবে কি সে শহীদ হবে কিনা? কিন্তু বাস্তব সত্য হচ্ছে যে, ইসলামী দল বলতে বর্তমানে যে সব দল সমূহকে বোঝায়, সেগুলি একটিও প্রকৃতপক্ষে ইসলামসম্মত নয়। বরং সেসব দলসমূহ হাক্বীক্বতে ইসলামের নামে কলঙ্ক। কারণ ইসলামী দল বললেও তারা আসলে গণতান্ত্রিক রাজনীতিরই অনুসারী এবং গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যনুযায়ীই অন্যান্য দলের ন্যায় তারা দল গঠন করেছে। আবার অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের ন্যায়ই মিছিল-মিটিং, ভাংচুর, হরতাল, অবরোধ, অসহযোগ করে তারা আন্দোলন করে। আর করতে গিয়ে যে সংঘর্ষ হয়, তাতে তাদের কেউ কেউ মারাও যায়। এছাড়া প্রতিপক্ষের সাথে কোন্দলের কারণেও সংঘর্ষে তাদের কেউ কেউ মারা যায়। অথচ এসব কাজকেই তারা ইসলামী আন্দোলন নাম দিয়ে থাকে।

কাজেই স্পষ্টতঃই বোঝা যাচ্ছে যে, উপরোক্ত আন্দোলন, সংগ্রাম বা সংঘর্ষে যদি কেউ মারা যায়, তবে সে ইসলামের উপর থেকে মারা যায়না। কারণ ইসলামে গণতান্ত্রিক রাজনীতি হারাম। কাজেই সে পদ্ধতির প্রতিবাদ, আন্দোলন, সংগ্রাম, সংঘর্ষ হারাম এবং তা হচ্ছে- মূলতঃ ইহুদী, খ্রীষ্টান, হিন্দু তথা বিধর্মীদের রাজনৈতিক রীতি বা তার ফসল। অথচ ইসলাম পরিপূর্ণ ধর্ম। আল্লাহ পাক বলেন,

من يبتغ غير الاسلام دينا فلن يقبل منه وهو فى الاخرة من الخاسرين.

অর্থ : যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম বা নিয়ম-নীতি তালাশ করে, তার থেকে তা গ্রহণ করা হবেনা এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত হবে।” (পবিত্র সূরা ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৫)

কাজেই গণতান্ত্রিক নিয়ম-নীতিতে কেউ তথাকথিত ইসলামী আন্দোলন করতে গিয়ে মারা গেলে, তার সে মৃত্যু আদৌ ইসলামকে বুলন্দ করার জন্য বলে বিবেচিত তো হবেইনা বরং ইসলামের খেলাফ বিধর্মীদের পক্ষে হওয়ায় তা কুফরী বলেই গণ্য হবে।

এখানে আরো উল্লেখ্য যে, ইসলামের কোন বিষয়কে প্রতিষ্ঠা বা বুলন্দ করার জন্য যদি কেউ মারা যায়, তবে সে সংঘর্ষে মারা গিয়েছে, তা বলা জায়েয হবেনা। তাকে বলতে হবে জ্বিহাদ। আর সংঘর্ষ তাকেই বলে, যেখানে কোন ইসলামী বিষয় বা উদ্দেশ্য থাকেনা বরং স্বার্থান্বেষী উদ্দেশ্যেই দুদল তাতে লিপ্ত হয় ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কাজেই এসব সংঘর্ষ ও তথাকথিত ইসলামী দলে যোগদান করে কেউ মারা গেলে সে শহীদ হবেনা।

আবা-৪২

0 Comments: