৭৫৪ নং- সুওয়াল : মাসিক মদীনা জানুয়ারী/৯৭ ইং সংখ্যায় নিম্ন বর্ণিত প্রশ্নোত্তর ছাপা হয়। প্রশ্ন : রমযান মাসে প্রাকৃতিক কারণে মেয়েদের যে রোযাগুলি ক্বাযা হয়, সেগুলি কি নফল? ছয় রোযার নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই করতে হবেনা পরবর্তী রমযানের পূর্বে যে কোন মাসে করলেই চলবে। ক্বাযা রোযাগুলি বিরতিহীনভাবে না বিরতি দিয়ে করা উচিত?



সুওয়াল : মাসিক মদীনা জানুয়ারী/৯৭ ইং সংখ্যায় নিম্ন বর্ণিত প্রশ্নোত্তর ছাপা হয়।

প্রশ্ন : রমযান মাসে প্রাকৃতিক কারণে মেয়েদের যে রোযাগুলি ক্বাযা হয়, সেগুলি কি নফল? ছয় রোযার নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই করতে হবেনা পরবর্তী রমযানের পূর্বে যে কোন মাসে করলেই চলবে। ক্বাযা রোযাগুলি বিরতিহীনভাবে না বিরতি দিয়ে করা উচিত?

উত্তর : ক্বাযা ফরয রোযাগুলিই আগে করা উচিত। কেউ যদি শাওয়াল মাসে রমযানের ক্বাযা রোযা করার সাথে সাথে শাওয়ালের নফল ছয় রোযারও নিয়ত করে তবেও উভয়টিই আদায় হবে বলে ফিক্বাহ্বিদগণ উল্লেখ করেছেন। যদি কেউ তা না করে শাওয়ালের নফল রোযা করার পর অবশিষ্ট বছরের যে কোন সময় রমযানের ক্বাযা করে তবে তার রোযাও হয়ে যাবে। প্রাকৃতিক কারণে ক্বাযা হয়ে যাওয়া রোযা একটানা আদায় করা অত্যাবশ্যকীয় নয়। ভেঙ্গে ভেঙ্গে আদায় করলেও আদায় হয়ে যাবে।

এখন আমার সুওয়াল হলো সত্যিই কি রমযানের ক্বাযা রোজা শাওয়ালের ছয় রোজার সাথে একই নিয়তে আদায় হবে? অনুগ্রহ করে জানিয়ে বাধিত করবেন।

 

জাওয়াব : মাসিক মদীনার উক্ত উত্তর অশুদ্ধ ও ভুল হয়েছে। কারণ এখানে দুধরণের রোজার কথা বলা হয়েছে-

(১) রমযান মাসের প্রাকৃতিক কারণে অথবা অসুস্থতার কারণে অনাদায়ী ক্বাযা রোযা, যা ফর রোযারই অন্তর্ভূক্ত। অর্থাৎ ফরজের ক্বাযা আদায় করাও ফর

সুতরাং রমজান মাসের রোজা মেয়েলোকের অসুস্থতার কারণে আদায় করতে না পারলে তা রমযান ব্যতীত অন্য মাসে ক্বাযা আদায় করা ফর। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন,

فمن كان مريضا او على سفر فعدة من ايام اخر.

অর্থ : অতঃপর যে অসুস্থ অথবা সফরে থাকবে, সে অন্য সময় ক্বাযা আদায় করবে। অর্থাৎ রমজানের ক্বাযা আদায় করাও ফর” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮৫)

(২) শাওয়াল মাসের ছয় রোজা, যা সুন্নতে যায়েদা বা নফল, তা রাখলে অধিক ফযীলত রয়েছে। যেমন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,             

من صام رمضان ثم اتبعه سة من شوال كان كصيام الدهر.

অর্থ : যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখার পরে শাওয়ালের ছয় রোজা রাখবে সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল।” (মুসলিম শরীফ, শরহে নববী, ফতহুল মুলহীম)

পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে শাওয়ালে ছয় রোজা নফল সাব্যস্ত হয়েছে। উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, রমজানের ক্বাযা রোজা, আদায় করা ফরজ, যা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার দ্বারা ছাবেত। আর শাওয়ালের ছয় রোজা আদায় করা নফল, যা পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত।

কাজেই নফলের নিয়ত দ্বারা ফরজ অথবা ফরজের নিয়ত দ্বারা নফল আদায় হয়, একথা বলা চরম জাহেলী ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে একই সঙ্গে ফরজ ও নফল উভয়ের নিয়ত করলে ফরজ আদায় হবে, নফল আদায় হবেনা। (আলমগীরি, জখীরা, মুহীত ইত্যাদি)

উল্লেখ্য, মদীনা সম্পাদক তার মুর্খতার কারণেই বারংবার এরূপ ভুল ফতওয়া দিয়ে থাকে। যা থেকে বিরত থাকা ও পরহেজ করা সকল মুসলমানের অবশ্য কর্তব্য। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হলে মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার ১০ম সংখ্যা পাঠ করুন।

আবা-৪২

0 Comments: