সুমহান ২৯শে যিলহজ্জ শরীফ (সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম উনার নাম মুবারক হযরত সাওদা বিনতু যাময়া আলাইহাস সালাম উনার বিছাল শরীফ দিবস-
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম উনার
ফাযায়িল ফযীলত মুবারক
পরিচিতি মুবারক:
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জাওযাতুম মুকাররমাহ হিসেবে দ্বিতীয়া। উনার
নাম মুবারক হযরত সাওদা বিনতু যাময়া আলাইহাস সালাম। সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম
উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পরে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উনার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত
হয়।
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত
পিতা আলাইহিস সালাম হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত যাম‘আহ ইবনে ক্বইস আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে মহাসম্মানিত ৯ম পুরুষে যেয়ে
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত
হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন-
اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ سَوْدَةُ بِنْتُ زَمْعَةَ بْنِ قَيْسِ بْنِ عَبْدِ شَمْسِ بْنِ عَبْدِ وُدّ بْنِ نَصْرِ بْنِ مَالِكِ بْنِ حِسْلِ بْنِ عَامِرِ بْنِ لُؤَيّ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাওদাহ আলাইহাস সালাম বিনতে যাম‘আহ
ইবনে ক্বইস্ ইবনে আব্দু শাম্স ইবনে ‘আবদু উদ্দ ইবনে নছ্র ইবনে মালিক ইবনে হিস্ল ইবনে
‘আমির ইবনে লুআই আলাইহিমুস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত লুয়াই আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের
অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা
মাতা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত শুমূস বিনতে ক্বইস আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনার
মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার
বনী নাজ্জার বংশের। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম উনার দিক থেকে উনার
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামা মুবারক হচ্ছেন-
اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ سَوْدَةُ بِنْتُ الشُّمُوس بِنْت قَيْسِ بْنِ عَمْرِو بْنِ زَيْدِ بْن عَمْرو بْنِ لَبِيدِ بْنِ خِدَاشِ بْنِ عَامِرِ بْنِ غَنْمِ بْنِ عَدِيِّ بْنِ النَّجَّارِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাওদাহ আলাইহাস সালাম বিনতে শুমূস বিনতে
ক্বইস ইবনে ‘আমর ইবনে যায়েদ ইবনে ‘আমর ইবনে লাবীদ ইবনে খিদাশ ইবনে ‘আমির ইবনে গ¦ন্ম ইবনে ‘আদী ইবনে
নাজ্জার আলাইহিমুস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা
মাতা ছিলেন জাদ্দু রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বলিব আলাইহিস সালাম উনার
আপন মামাতো বোন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত হায়াত মুবারক উনার প্রাথমিক অবস্থা:
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম উনার প্রথম শাদী মুবারক হয় হযরত সাক্রান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু উনার সঙ্গে। হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার অপর চার ভাই সকলেই ছাহাবী
ছিলেন, যেমন হযরত সুহায়ল রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু, হযরত সাহল রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু, হযরত সালীত্ব রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু এবং হযরত হাত্বীব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। (যুরক্বানী আলাল মাওয়াহিব)।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম ও হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা ছিলেন “আস-সাবিকুনাল
আউয়ালুন” উনাদের অন্তর্ভূক্ত অর্থাৎ উনারা ইসলাম উনার প্রথম যুগেই ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন
এবং উনারা উভয়ে একত্রে হাবশায় হিজরত করেন। পরবর্তীতে হাবশায় অবস্থানরত মুহাজিরগণের
মধ্যে একটি গুজব শোনা যায় যে, পবিত্র মক্কা শরীফ
উনার কাফিরগণ ঈমান আনয়ন করেছে। এ খবর শুনে অনেকেই হাবশা থেকে পবিত্র মক্কা শরীফে ফিরে
আসেন। এ সময় সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন,
উম্মুল
মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম ও হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা
উভয়ই হাবশা থেকে পবিত্র মক্কা শরীফে ফিরে আসেন। পবিত্র মক্কা শরীফে ফিরে আসার পর এখানে
হযরত আবদুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি নামে উনাদের এক আওলাদ বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ
করেন। তখন থেকে উনারা পবিত্র মক্কা শরীফেই বসবাস করতে থাকেন। হাবশা থেকে যাঁরা মক্কা
শরীফে ফিরে এসেছিলেন, যখন উনারা দেখতে পান
যে, কাফিরগণ ঈমান আনয়ন করেনি, ইহা গুজব ছিল, তখন যাঁদের পবিত্র মক্কা শরীফে অবস্থান গ্রহণ করার কোন অবস্থা
ছিল না, উনারা হাবশায় পুনরায় ফিরে যান।
আর যাঁদের অবস্থান গ্রহণ করার কোন না কোন অবস্থা ছিল, উনারা পবিত্র মক্কা শরীফে থেকে যান।
বর্ণিত আছে যে, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল
আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়া
আলাইহাস সালাম তিনি একটি স্বপ্ন মুবারক দেখেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল
মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতু
নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম উনার নিকট এসে উনার কাঁধের উপর উনার একটি কদম মুবারক রাখলেন।
এই স্বপ্ন তিনি হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট বর্ণনা করেন, যিনি স্বপ্নের একজন বিশিষ্ট তা’বীর বিশারদ ছিলেন।
হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এ স্বপ্নের তা’বীর এভাবে করেন, আপনার স্বপ্ন মুবারক যদি সত্য হয়, তবে আমি ইনতিকাল করব এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে আপনার
নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত হবে। কিছুদিন পর সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম
পূণরায় আর একটি স্বপ্ন মুবারক দেখেন যে,
তিনি
বালিশ মুবারকে হেলান দিয়ে শুয়ে আছেন,
হঠাৎ
আসমান থেকে চাঁদ ভেঙ্গে উনার উপর পড়েন। হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এই স্বপ্ন
মুবারকের তা’বীর এইরূপ করেন, আপনার স্বপ্ন মুবারক
যদি সত্য হয়, অল্প দিনের মধ্যেই
আমি ইনতিকাল করব এবং আমার পরে শীঘ্রই আপনার দ্বিতীয় নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত
হবে। অতঃপর হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অল্প কিছুদিনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে
পড়েন এবং বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। (শরহে যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার
সঙ্গে উনার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ:
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পরে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আওলাদ আলাইহিমুস
সালাম আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের দেখা-শুনা করার আর কেউ ছিলেন না। আত্মীয়দের মধ্যে হযরত
উছমান ইবনে মাজউন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আহলিয়া হযরত খাওলা বিনতে হাকীম রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার
নিকট এসে নিবেদন করেন যে, তিনি হযরত বিনতু যাম‘য়া
আলাইহাস সালাম উনাকে নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ করবেন কিনা। নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই প্রস্তাবে সম্মত
হন।
হযরত খাওলা বিনতে হাকীম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, অতঃপর আমি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম উনার নিকট গিয়ে বললাম- যদি মহান আল্লাহ পাক আপনাদের উপর খায়র ও বরকত
বর্ষণ করেন, তাহলে কেমন হবে? তিনি উত্তর দিলেন- তা কি? আমি বললাম নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
আমাকে আপনার নিকট পাঠিয়েছেন, আপনার সাথে পবিত্র
নিসবাতুল আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব নিয়ে। তিনি উত্তর দিলেন- আমি ইহা পছন্দ করি, কিন্তু আপনি আমার পিতার নিকট গিয়ে বিষয়টি উল্লেখ
করুন। আমি উনার নিকট গিয়ে দেখতে পেলাম,
তিনি
একজন অতি বৃদ্ধ লোক, লোহার আসনের উপর বসে
আছেন। আমি জাহেলী যুগের নিয়মে উনাকে সম্ভাষণ করলাম- أنعم صباحا (সুপ্রভাত)। তিনি বললেন- আপনি কে? আমি বললাম- খাওলা। তিনি আমাকে অভিনন্দন জানিয়ে
যা ইচ্ছা করলেন বললেন। আমি বললাম- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আপনার মেয়ের সাথে পবিত্র নিসবাতুল আযীম শরীফ
উনার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বললেন- হাঁ,
তিনি
তো সম্মানিত কুফূ (অর্থাৎ উপযুক্ত সমকক্ষ),
তবে আপনার
সাথী (অর্থাৎ সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন,
সাইয়্যিদাতুনা
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম) তিনি কি বলেন, তা উনাকে জিজ্ঞেস করুন? আমি বললাম- আমি উনাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি ইহা পছন্দ করেছেন। অতঃপর তিনি বললেন- তাহলে
উনাকে আপনি গিয়ে বলুন, তিনি যেন আমার বাড়ীতে
মুবারক তাশরীফ আনেন। অতঃপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
নূরে
মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম উনার পিতা হযরত যাময়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বাড়ীতে
তাশরীফ মুবারক আনয়ন করেন। হযরত যাময়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নিজেই এই নিসবাতুল
আযীমাহ শরীফ পড়িয়ে দেন। হিজরতের তিন বছর পূর্বে পবিত্র ২৬ মাহে রমাদ্বান শরীফ এই পবিত্র
নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়।
পবিত্র নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম
উনার ভাই হযরত আবদুল্লাহ বিন যাময়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা যখন বাড়ী এসে দেখেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উনার বোনের
নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে,
তিনি
আফসুস করে উনার নিজ মাথায় ধূলা নিক্ষেপ করেন (কারণ এ সময় পর্যন্ত তিনি ইসলাম গ্রহণ
করেন নি)। পরে যখন তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন,
তিনি
আক্ষেপ করে বলেন, আমি তখন এতই নির্বোধ
ছিলাম যে, আমি আমার মাথায় এ জন্য ধুলা
নিক্ষেপ করেছিলাম যে, আমার বোনের নিসবাতুল
আযীমাহ শরীফ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সঙ্গে হয়েছে। এই বর্ণনা থেকে বুঝা যায় সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম
উনার পিতা হযরত যাময়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-ই উনার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার
ব্যবস্থা করেছেন। (শরহে যুরক্বানী আলাল মাওয়াহিব)
অতঃপর হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের লালন-পালন, বাড়ী-ঘরের তত্ত্বাবধান এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মনের প্রশান্তির
জন্য তাৎক্ষণিকভাবে উনাকে পবিত্র আহলু বাইত শরীফে
পাঠিয়ে দেয়া হয়। সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন,
উম্মুল
মু’মিনীন হযরত আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর সাইয়্যিদাতু
নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম এককভাবে উম্মুল মু’মিনীন হিসাবে আহলু বায়ত শরীফ উনাদের দায়িত্বভার
গ্রহণ করেন। অবশ্য হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু ওয়া আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আম্মাজান
হযরত ফাতিমা বিনতু আসাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি ও সম্মানিত আহলু বায়ত শরীফ
উনাদের দেখা শোনা করতেন।
হিজরত মুবারক:
নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
হিজরত মুবারক করে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে পৌঁছার পর হযরত যায়দ বিন হারিছা রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু এবং হযরত আবু রাফি রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদেরকে পবিত্র মক্কা শরীফ
উনার মধ্যে প্রেরণ করেন উনার পবিত্র আহলু বায়ত শরীফ উনাদেরকে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার
মধ্যে নিয়ে আসার জন্য। অনন্তর উনারা সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নুরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নুরুর রাবিয়া যাহরা আলাইহাস
সালাম ও হযরত উম্মে আয়মন আলাইহাস সালাম উনাদেরকে নিয়ে পবিত্র মদীনা শরীফে রওয়ানা হন
এবং যথাসময় পবিত্র মদীনা শরীফে গিয়ে উপস্থিত হন। (শরহে যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব)
সংসার জীবন:
অল্প দিনের মধ্যেই সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতু
নিসায়িল আলামীন উম্মুল মু’মিনীন হযরত আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সংসারকে আত্মস্থ
করে নিলেন। নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুয়ূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
দুই বানাত সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ,
সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নুরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম এবং সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নুরুর রবিয়া যাহরা আলাইহাস
সালাম উনাদেরকে তিনি অত্যন্ত মুহব্বত মুবারক করতেন। নবুয়ত মুবারক প্রকাশের দশম বছর
পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ থেকে শুরু করে একাদশ হিজরীর পবিত্র মাহে রবীউল আউয়াল শরীফ
পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৩ বছর পর্যন্ত সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম
তিনি নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
পবিত্র ছোহবত মুবারক লাভ করেন। উম্মুল মু’মিনীন হিসাবে নবুয়ত মুবারক প্রকাশের দশম বছরের
পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ থেকে প্রথম হিজরীর মাহে শাওওয়াল পর্যন্ত তিনি এককভাবে পবিত্র
আহলু বাইতি রসুলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের তত্ত¦াবধায়ক ছিলেন। অতঃপর
ক্রমান্বয়ে অপরাপর উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের তশরীফ আনয়নের পর সাইয়্যিদাতু
নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মুবারক দায়িত্বও হ্রাস পেতে থাকে।
অন্যান্য উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে সাইয়্যিদাতু
নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি সাধারণ মহিলাদের থেকে কিছুটা লম্বা ছিলেন এবং স্বাস্থ্যবতীও
ছিলেন। দশম হিজরীর বিদায় হজ্জে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সফর সঙ্গী ছিলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অন্য লোকদের
মুযদালেফা থেকে রওয়ানা হওয়ার পূর্বেই মীনায় চলে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করেন।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন আছ
ছালিছাহ হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, মুযদালেফার রাতে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন উম্মুল মু’মিনীন
হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট মানুষের ভীড়ের আগে চলে যাওয়ার অনুমতি
চান। স্বাস্থ্যের কারণে তিনি দ্রুত চলাফেরা করতেন না। সেজন্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে অনুমতি
প্রদান করেন। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, নাসাঈ শরীফ)
একদিন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস
সালাম উনারা অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এমন সময় একজন উম্মুল মু’মিনীন প্রশ্ন করলেন- ইয়া
রসুলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা যারা এখানে উপস্থিত আছি, আমাদের মধ্যে সর্বপ্রথম কার বিছাল শরীফ হবে? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- আপনাদের মধ্যে যাঁর হাত
মুবারক সবচেয়ে দীর্ঘ। উপস্থিত সকলে এই ক্বওল শরীফ উনার সরল অর্থ গ্রহণ করেন। উনারা
নিজেদের হাত মুবারক মেপে দেখেন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার হাত মুবারক সবার চেয়ে দীর্ঘ। উনারা বিশ্বাস করলেন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম
উনার বিছাল শরীফই হবে সবার আগে হবে। কিন্তু যখন উম্মুল মু’মিনীন হযরত আস সাবিয়াহ আত্বওয়ালু
ইয়াদান (হযরত যয়নব বিনতু জাহাশ আলাইহাস সালাম) সবার আগে বিছাল শরীফ লাভ করলেন, তখন বুঝা গেল, হাত মুবারক দীর্ঘ হওয়ার অর্থ দানশীলতা। দান করা ছিল উনার সবচেয়ে
প্রিয় কাজ, এজন্য উনার লক্বব মুবারক আত্বওয়ালু
ইয়াদান। সেখানে উপস্থিত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরে উম্মুল মু’মিনীন আস সাবিয়াহ অর্থাৎ হযরত বিনতু জাহাশ আলাইহাস
সালাম সর্ব প্রথম বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম তখনও দুনিয়ার জমীনে ছিলেন। (তাবাকাত, আনসাবুল আশরাফ)
নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খায়বর
থেকে প্রাপ্ত ভূ-স¤পত্তি হতে উনার খোরপোষের ব্যবস্থা করেছিলেন। ইবনে সাদ রহমতুল্লাহি আলাইহির বর্ণনা
অনুযায়ী তিনি সেখান থেকে ৮০ ওয়াসাক খেজুর ও ২০ ওয়াসাক গম অথবা যব পেতেন। এতদ্ব্যতীত
অন্যান্য উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের ন্যায় খলীফা হযরত ফারুকে আযম
আলাইহিস সালাম উনার প্রদত্ত নির্ধারিত সরকারী ভাতা তিনিও পেতেন।
বিছাল শরীফ:
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের
তারিখ সম্পর্কে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুরশিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম
তিনি বলেন, হিজরী ২২ সনের পবিত্র মাহে
২৯ জিলহজ্জ শরীফ, ইয়াওমুল খামীস উম্মুল
মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম তিনি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। এ সময়
উনার বয়স মুবারক হয়েছিল ৭১ বছর।
আওলাদ:
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম উনার প্রথম জাওয মুকাররম হযরত সাকরান
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ঔরশে উনার এক পুত্র সন্তান হযরত আবদুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি পারস্যে জালুলার জিহাদে শাহাদত
লাভ করেন। তবে হযরত আবনাউ রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত বানাতু রসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা কেউ সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে তাশরীফ মুবারক আনেননি।
(শরহে যুরকানী আলাল মাওয়াহিব)।
ফযীলত ও মর্যাদা মুবারক:
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সংখ্যায় ছিলেন ১৩ জন। তম্মধ্যে
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন দ্বিতীয় উম্মুল মু’মিনীন। সাইয়্যিদাতু নিসায়িল
আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল উলা
কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পরেই নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উনার পবিত্র নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত
হয়।
সার্বিক ভাবে পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন
আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের অতুলনীয় ফাযায়েল ফযীলত মুবারক সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে। পবিত্র
সুরা আহযাব শরীফ উনার পবিত্র ৬ নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে
উম্মাহাতুল মু’মিনীন বলে উল্লেখ করেছেন,
যেমন-
ألنَّبِيُّ أوْلَى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ أنْفُسِهِمْ وَ أزْوَاجُهُ أمُّهَاتُهُمْ
অর্থ: নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ঈমানদারগণের নিকট উনাদের প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয়। আর উনার হযরত যাওযাতুল মুকাররমাহ
আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মু’মিনগণের মাতা।
এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার প্রেক্ষিতে উনাদের একটি লক্বব মুবারক أمَّهَاتُ الْمُؤْمِنِيْنَ (মু’মিনগণের মাতা)
অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে অর্থাৎ সৃষ্টির শুরু থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত
মু’মিন ছিলেন, এখন আছেন এবং ভবিষ্যতে
থাকবেন উনাদের সকলেরই মাতা হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ
!
খালিক, মালিক, রব,
মহান
আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে বেমেছাল পুতঃপবিত্রা ও সুমহান চরিত্র মুবারকের অধিকারিণী
করে আল্লাহ পাক উনার হাবীব উনার জন্য খাছ করে সৃষ্টি করেছেন। সেজন্য উনাদের আরেকটি
লক্বব মুবারক হচ্ছে أزواج مطهرات (আযওয়াজে মুত্বাহহারাত অর্থাৎ পুতঃপবিত্রা
হযরত জাওযাতুল মুকাররমাহ) অর্থাৎ উনাদের চরিত্র সকল প্রকার কলুষ-মুক্ত। সুবহানাল্লাহ
!
পবিত্র সুরা আহযাব উনার পবিত্র ৫৩ নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে,
وَلَا أنْ تَنْكِحُوْا أزْوَاجَهُ مِنْ بَعْدِهِ أبَدًا
অর্থ: নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর উনার হযরত জাওযাতুল মুশররামাহ আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে
তোমরা বিবাহ করতে পারবে না)।
এই একই সুরার ৩২ নং আয়াত শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে-
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَاَحَدٍ مِّنَ النِّسَاءِ
অর্থ: হে নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিছা অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীনগণ!
আপনারা অন্যান্য নারীদের মত নন।
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেমন অন্য কোন পুরুষ
বা সাধারণ মানুষের মত নন, উনারাও অন্য কোন সাধারণ
নারীর মত নন। এই সব আয়াত শরীফ থেকে বুঝা যায়,
মহান
আল্লাহ পাক উনাদের মর্যাদাকে অতীত,
বর্তমান
এবং ভবিষ্যতের সকল স্ত্রী জাতীর উপরে স্থান দিয়ে উনাদেরকে পৃথক করে মুবারক সম্মান দিয়েছেন।
সুবহানাল্লাহ!
সাধারণভাবে সকল হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে মহান আল্লাহ
পাক অসাধারণ মর্যাদা-মর্তবার অধিকারিনী করেছেন, নূরে মুজাস্সাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সাথে সংশ্লিষ্ট হওয়ার কারণেই। এতদ্ব্যতীত উনার অন্যান্য অনেক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ গুণাবলী
ছিল।
দানশীলতা ছিল সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার বিশেষ গুণ।
একবার খলীফা হযরত ফারুকে আযম আলাইহিস সালাম উনার খিদমতে দিরহামপূর্ণ একটি থলি পাঠিয়ে
দেন। তিনি বাহককে জিজ্ঞাসা করেন, ইহাতে কি রয়েছে? বাহক বলেন, দিরহাম। তিনি বলেন,
খেজুরের
মত থলিতে ভরে দিরহামও পাঠান হয় নাকি?
তিনি
দিরহামগুলি থলি থেকে বের করেও দেখলেন না। অতঃপর তিনি উনার খাদিমাকে উক্ত দিরহামগুলি
অভাবগ্রস্থ লোকদের মধ্যে বন্টন করে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। (ইবনে সা‘দ)
তিনি চামড়ায় কারুকার্য করাতেন এবং এভাবে প্রাপ্ত আয় উদারভাবে দান করতেন এবং সৎকর্মে খরচ করতেন।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মুবারক অবস্থান উনার দিবসটি সাইয়্যিদাতু
নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া মুবারক করেছিলেন। এ ব্যাপারে উনার
বক্তব্য ছিল তিনি বার্ধক্যে উপনীত হয়েছেন,
উনার
একমাত্র কামনা তিনি যেন পরকালে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হযরত জাওযাতুল মুকাররমাহ হিসাবে উপস্থিত হওয়ার
সুযোগ লাভ করেন। (সীরত গ্রন্থাবলী)
তাকওয়া পরহেজগারীতে তিনি বিশেষভাবে বৈশিষ্ট্য-মন্ডিতা। তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ
বর্ণনা করেছেন। নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
বিছালী শান মুবারক উনার পরে তিনি কঠোর পর্দা করতেন। এমনকি পবিত্র হজ্জ ও পবিত্র উমরাহ
উনাদের জন্যও ঘর হতে বের হতেন না, যদিও পর্দা করে বের
হওয়া উনাদের জন্য নাজায়েয ছিল না। সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস
সালাম উনার বিশেষ তাক্বওয়া পরহেজগারীর ব্যাপারে প্রশংসা করে বলতেন- আমার ইচ্ছা হয় আমার
রুহ মুবারক যদি আপনার জিসিম মুবারকে প্রবেশ করত।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম অত্যন্ত
সরল প্রকৃতির ছিলেন। উনার কোন কোন কথা মুবারক শুনে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অত্যাধিক খুশি প্রকাশ করতেন। একদিন তিনি নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
বললেন, কাল রাতে আমি আপনার সাথে নামায
পড়েছি। আপনি এত দীর্ঘ সময় রুকুতে ছিলেন যে,
আমার
নাক দিয়ে রক্ত ঝরতে শুরু হয়েছে বলে মনে হয়েছিল। এ কারণে আমি দীর্ঘক্ষণ নাক চেপে ধরে
রেখেছিলাম। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথায় মৃদু হেসে খুশী মুবারক প্রকাশ করেন।
সুবহানাল্লাহ! (তাবাক্বাত, ইছাবা)
একটি হাদীছ শরীফে উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম তিনি বলেন- নূরে
মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
নিকট একজন লোক এসে বললেন- আমার পিতা অতি বৃদ্ধ লোক, তিনি পবিত্র হজ্জ করতে অক্ষম, (এখন কি করতে হবে)?
নূরে
মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন- তোমার পিতার যদি ঋণ থাকত,
আর তার
পক্ষ থেকে যদি তুমি তা আদায় করে দিতে,
তবে কি
তা তোমার নিকট থেকে কবুল করা হতো না?
লোকটি
বলল- হ্যাঁ। অতঃপর নূরে মুজাস্সাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি
ইহা অপেক্ষাও অধিক দয়ালু, তোমার পিতার পক্ষ থেকে
পবিত্র হজ্জ আদায় কর। (উসুদুল গাবা)
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সকলই পবিত্র হাদীছ শরীফ এবং
সুন্নাহ শরীফ উনার প্রচার প্রসারে এবং বিশেষ ভাবে নারী জাতির তা’লীম তালক্বীনে মূখ্য
ভূমিকা রেখেছেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পরে উনারা এই হেদায়েতের কাজে ব্যাপৃত ছিলেন। সাইয়্যিদাতু
নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম ১১ হিজরীতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পরে হিজরী ২২
সনে উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ পর্যন্ত প্রায় ১১ বছর তিনি এই হেদায়েতের কাজে ব্যাপৃত
ছিলেন। সুবহানাল্লাহ !
(সূত্র: উসুদুল গাবা, তাবাকাত,
যারক্বানী
আলাল মাওয়াহিব, সীরত গ্রন্থাবলী)
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম সালাম উনার মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক-
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ (হযরত সাওদাহ্) আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত যাম‘আহ ইবনে ক্বইস আলাইহিস সালাম। তিনি উনার
সম্মানিত পিতা উনার দিক থেকে ৯ম পুরুষ হয়ে ১০ম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন-
اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ سَوْدَةُ بِنْتُ زَمْعَةَ بْنِ قَيْسِ بْنِ عَبْدِ شَمْسِ بْنِ عَبْدِ وُدّ بْنِ نَصْرِ بْنِ مَالِكِ بْنِ حِسْلِ بْنِ عَامِرِ بْنِ لُؤَيّ بْنِ غَالِبِ بْنِ فِهْرِ بْنِ مَالِكِ بْنِ النَّضْرِ بْنِ كِنَانَةَ بْنِ خُزَيـْمَةَ بْنِ مُدْرِكَةَ بْنِ اِلْيَاسَ بْنِ مُضَرَ بْنِ نِزَارِ بْنِ مَعَدِّ بْنِ عَدْنَانَ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ.
১. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ سَوْدَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত সাওদাহ আলাইহাস সালাম।
২. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ زَمْعَةَ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত যাম‘আহ্
আলাইহিস সালাম।
৩. قَيْسِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বইস্
আলাইহিস সালাম।
৪. عَبْدِ شَمْسِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দু
শাম্স আলাইহিস সালাম।
৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدِ وُدّ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত
‘আবদু উদ্দ আলাইহিস সালাম।
৬. نَصْرِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নছ্র
আলাইহিস সালাম।
৭. مَالِك عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক
আলাইহিস সালাম।
৮. حِسْلِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হিস্ল
আলাইহিস সালাম।
৯. عَامِرِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত
‘আমির আলাইহিস সালাম।
১০. لُؤَىٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত লুআই
আলাইহিস সালাম।
১১. غَالِبٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত গ¦ালিব আলাইহিস সালাম।
১২. فِهْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ফিহ্র
আলাইহিস সালাম।
১৩. مَالِكٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক
আলাইহিস সালাম।
১৪. اَلنَّضْرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নদ্বর
আলাইহিস সালাম।
১৫. كِنَانَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত কিনানাহ্
আলাইহিস সালাম।
১৬. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ خُزَيـْمَةُ সাইয়্যিদুনা হযরত খুযাইমাহ্
আলাইহিস সালাম।
১৭. مُدْرِكَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মুদ্রিকাহ
আলাইহিস সালাম।
১৮. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اِلْيَاسُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইলইয়াস
আলাইহিস সালাম।
১৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ مُضَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত মুদ্বর
আলাইহিস সালাম।
২০. نِزَارٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নিযার
আলাইহিস সালাম।
২১. مَعَدٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মা‘আদ্দ
আলাইহিস সালাম।
২২. عَدْنَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত
‘আদ্নান আলাইহিস সালাম।
সাইয়্যিদুনা হযরত লুয়াই আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত।
সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিতা
মাতা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত শুমূস বিনতে ক্বইস্ আলাইহাস সালাম। তিনি ছিলেন সম্মানিত
বনী নাজ্জার গোত্রের। সুবহানাল্লাহ! যেমন,
سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ الشُّمُوسُ بِنْتُ قَيْسِ بْنِ عَمْرِو بْنِ زَيْدِ بْن عَمْرو بْنِ لَبِيدِ بْنِ خِدَاشِ بْنِ عَامِرِ بْنِ غَنْمِ بْنِ عَدِيِّ بْنِ النَّجَّارِ بْنِ ثَعْلَبَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْخَزْرَجِ بْنِ حَارِثَةَ بْنِ ثَعْلَبَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَامِرٍ بْن حَارِثَة الغطريف بْن امْرِئ الْقَيْس بْن ثَعْلَبَة بْن مَازِن بْن الأزد بْن الغوث بْنِ نَبْتِ بْنِ مَالِكِ بْنِ زَيْدِ بْنِ كَهْلانَ بْنِ سَبَأَ بْنِ يَشْجُبَ بْنِ يَعْرُبَ بْنِ قَحْطَانَ بن هود النبى عليه السلام بن شالخ بن أرفخشد بن سام بن نوح عَلَيْهِمُ السَّلَامُ.
১. سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ الشُّمُوسُ عَلَيْهَا السَّلَامُ সাইয়্যিদাতুনা হযরত শুমূস আলাইহাস সালাম।
২. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَيْسِ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বইস
আলাইহিস সালাম।
৩. عَمْرِو عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত
‘আমর আলাইহিস সালাম।
৪. زَيْدِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ
আলাইহিস সালাম।
৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَمْرو عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত
‘আমর আলাইহিস সালাম।
৬. لَبِيدِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত লাবীদ
আলাইহিস সালাম।
৭. خِدَاشِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খিদাশ
আলাইহিস সালাম।
৮. عَامِرِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত
‘আমির আলাইহিস সালাম।
৯. غَنْمِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত গ¦ন্ম আলাইহিস সালাম।
১০. عَدِيِّ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত
‘আদী আলাইহিস সালাম।
১১. النَّجَّارِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নাজ্জার
আলাইহিস সালাম।
১২. ثَعْلَبَةَ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ছা’লাবাহ্
আলাইহিস সালাম।
১৩. عَمْرِو عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত
‘আমর আলাইহিস সালাম।
১৪. الْخَزْرَجِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খয্রাজ
আলাইহিস সালাম।
১৫. حَارِثَةَ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছহ্
আলাইহিস সালাম।
১৬. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ ثَعْلَبَةَ সাইয়্যিদুনা হযরত ছা’লাবহ্
আলাইহিস সালাম।
১৭. عَمْرِو عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত
‘আমর আলাইহিস সালাম।
১৮. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ حَارِثَة الغطريف عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছহ্
গি¦ত্বরীফ আলাইহিস সালাম।
১৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ امْرِئ الْقَيْس عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমরিয়িল
ক্বইস্ আলাইহিস সালাম।
২০. ثَعْلَبَة عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ছা’লাবাহ্
আলাইহিস সালাম।
২১. مَازِن عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মাযিনআলাইহিস
সালাম।
২২. الْأَزْدِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আয্দ
আলাইহিস সালাম।
২৩. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ الغوث عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত গ¦ওছ্ আলাইহিস সালাম।
২৪. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ نَبْتِ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত নব্ত
আলাইহিস সালাম।
২৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ مَالِكِ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক
আলাইহিস সালাম।
২৬. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ زَيْدِ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ
আলাইহিস সালাম।
২৭. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ كَهْلانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত কাহ্লান
আলাইহিস সালাম।
২৮. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ سَبَأَ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত সাবা’
আলাইহিস সালাম।
২৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ يَشْجُبَ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াশজুব
আলাইহিস সালাম।
৩০. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ يَعْرُبَ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়া’রুব
আলাইহিস সালাম।
৩১. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ حَارِثَة الغطريف عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছহ্
গি¦ত্বরীফ আলাইহিস সালাম।
৩২. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَحْطَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমরিয়িল
ক্বহ্ত্বান আলাইহিস সালাম।
৩৩. هود عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হূদ
আলাইহিস সালাম।
৩৪. شَالَـخٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত শালাখ
আলাইহিস সালাম।
৩৫. اَرْفَخْشَذُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আরফাখ্শায
আলাইহিস সালাম।
৩৬. سَامٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত সাম
আলাইহিস সালাম।
৩৭. نُوْحٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নূহ
আলাইহিস সালাম।
(আল ইস্তী‘য়াব, ইবনে হিশাম, আর রওদ্বুল উন্ফ,
‘উয়ূনুল
আছার, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, ইবনে সা’দ, নসবু কুরাইশ,
আছ ছিক্বাত
ইবনে হিব্বান, উসদুল গ¦বাহ, তাহযীবুল কামাল, আল আনসাব, জমহুরাতুল আনসাব, আল মুন্তাখ¦ব ইত্যাদী)
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিতা
মাতা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত শুমূস বিনতে ক্বইস্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন জাদ্দু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বলিব আলাইহিস
সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা আলাইহাস সালাম ভাতিজী।
সুবহানাল্লাহ!
যেমন- কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
الشُّمُوسُ بِنْتُ قَيْسِ بِنْتُ أخي سلمى
بِنْتِ عَمْرِو بْنِ زَيْدِ أُمِّ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত শুমূস বিনতে ক্বইস্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন জাদ্দু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বলিব আলাইহিস
সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে ‘আমর ইবনে যায়েদ
আলাইহাস সালাম ভাতিজী। সুবহানাল্লাহ! (‘উয়ূনুল আছার)
********************************************
এক নজরে
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পরিচিতি
মুবারক-
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন হযরত
উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ!
নিম্নে এক নজরে উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক তুলে ধরা হলো-
সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাওদাহ্ আলাইহাস সালাম।
সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র লক্বব মুবারক: উম্মুল মু’মিনীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল
আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আত্ব ত্বাহিরাহ, আত্ব ত্বইয়্যিবাহ্,
আল মুত্বহ্হার, আল মুত্বহ্হির, যাতুল হিজরাতাঈন,
মালিকাতুল
জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত এছাড়াও আরো
অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ!
যেই সম্মানিত লক্বব মুবারক-এ সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন: উম্মুল মু’মিনীন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম: সাইয়্যিদুনা হযরত যাম‘আহ্ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম: সাইয়্যিদাতুনা হযরত শুমূস আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী
শান মুবারক প্রকাশের ৪ বছর পর ৫ই ছফর শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ভাই রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু: সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক ইবনে যাম‘আহ্
রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বংশ মুবারক: কুরাইশ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান
মুবারক: সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ: আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের শুরুর দিকে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত হিজরত মুবারক: সম্মানিত ও পবিত্র হাবশা শরীফ এবং সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা
শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত অবস্থান মুবারক: সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র হাবশা শরীফ এবং সম্মানিত ও পবিত্র
মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ:
আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১০ম বৎসরে ২৬শে রমাদ্বান শরীফ ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আ’যীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সম্মানিত
বয়স মুবারক: দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪৯ বছর ৬ মাস ১৪ দিন আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন
৪৫ বছর ৭মাস ২১দিন। সুবহানাল্লাহ!
এককভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক
দেয়া: ৪ বছর ২৫ দিন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক
দেয়া: ১৩ বছর ৫ মাস ১৬ দিন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান
মুবারক প্রকাশের পর দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক: ১১ বছর ৯ মাস ১৭ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ২২ হিজরী সনের ২৯ শে
যিলহজ্জ শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান
মুবারক: সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক: ৭০ বছর ১০ মাস ২৪ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ : সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সংক্ষিপ্ত
জীবনী মুবারক-
সম্মানিত পরিচিতি মুবারক-
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
হচ্ছেন মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয়, উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এবং উনার মহাসম্মানিতা ‘আযওয়াজুম মুত্বহহারাত’ (হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস
সালাম) উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
(সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস
সালাম উনারা ছিলেন মোট ১৩ জন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন,
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত
মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার মুবারক ধারাবাহিকক্রম অনুযায়ী উম্মুল মু’মিনীন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আছ ছানিয়াহ্ তথা দ্বিতীয়া’।
এ জন্য উনাকে ‘উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা
হয়। সুবহানাল্লাহ! তবে উনার মূল মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন
‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাওদাহ্ আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মাহবূব হাবীব,
সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন,
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিনী। সুবহানাল্লাহ! উনার
সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! উনাকে সম্মানিত মুহব্বত
মুবারক করা, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম
মুবারক করা, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক
করা এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!
তাই উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক জানাও সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বংশ পরিচয় মুবারক
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত
পিতা আলাইহিস সালাম হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত যম‘আহ ইবনে ক্বইস আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে মহাসম্মানিত ৯ম পুরুষ হয়ে
১০ম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন-
اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ سَوْدَةُ بِنْتُ زَمْعَةَ بْنِ قَيْسِ بْنِ عَبْدِ شَمْسِ بْنِ عَبْدِ وُدّ بْنِ نَصْرِ بْنِ مَالِكِ بْنِ حِسْلِ بْنِ عَامِرِ بْنِ لُؤَيّ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাওদাহ আলাইহাস সালাম বিনতে যাম‘আহ
ইবনে ক্বইস্ ইবনে আব্দু শাম্স ইবনে ‘আবদু উদ্দ ইবনে নছ্র ইবনে মালিক ইবনে হিস্ল ইবনে
‘আমির ইবনে লুআই আলাইহিমুস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত লুয়াই আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের
অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা
মাতা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত শুমূস বিনতে ক্বইস আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনার
মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার
বনী নাজ্জার বংশের। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম উনার দিক থেকে উনার
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক হচ্ছেন-
اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ سَوْدَةُ بِنْتُ الشُّمُوس بِنْت قَيْسِ بْنِ عَمْرِو بْنِ زَيْدِ بْن عَمْرو بْنِ لَبِيدِ بْنِ خِدَاشِ بْنِ عَامِرِ بْنِ غَنْمِ بْنِ عَدِيِّ بْنِ النَّجَّارِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাওদাহ আলাইহাস সালাম বিনতে শুমূস বিনতে
ক্বইস ইবনে ‘আমর ইবনে যায়েদ ইবনে ‘আমর ইবনে লাবীদ ইবনে খিদাশ ইবনে ‘আমির ইবনে গ¦ন্ম ইবেন ‘আদী ইবনে
নাজ্জার আলাইহিমুস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা
মাতা ছিলেন জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল
মুত্ত্বলিব আলাইহিস সালাম উনার আপন মামাতো বোন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের ৪ বছর পর সম্মানিত কুরাইশ বংশ মুবারক উনার বিশেষ
শাখা ‘আমিরী গোত্রে ৫ই ছফর শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময়
বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র কুনিয়াত মুবারক-
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও
পবিত্র কুনিয়াত মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু আব্দিল্লাহ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র লক্বব মুবারক:
উম্মুল মু’মিনীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি
‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি
আহলিল জান্নাহ, আত্ব ত্বাহিরাহ, আত্ব ত্বইয়্যিবাহ্, আল মুত্বহ্হার, আল মুত্বহ্হির,
যাতুল
হিজরাতাঈন, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত এছাড়াও আরো অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক-
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত
শৈশবকাল মুবারক-এ উনার মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম এবং পরিবার-পরিজন উনাদের
সাথে সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফেই অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি পরিবারের সকালের
নিকট সবচেয়ে প্রিয়, পছন্দীয় এবং সম্মানিত
ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত প্রথম শাদী মুবারক-
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার প্রথম শাদী
মুবারক হয় উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত যাম‘আহ্ ইবনে ক্বইস আলাইহিস
সালাম উনার আপন চাচাতো ভাই হযরত সাকরান ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার
সাথে। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন-
سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ اَلسَّكْرَانُ بْنُ عَمْرِو بْنِ عَبْدِ شَمْسِ بْنِ عَبْدِ وُدّ بْنِ نَصْرِ بْنِ مَالِكِ بْنِ حِسْلِ بْنِ عَامِرِ بْنِ لُؤَيّ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু ইবনে ‘আমর ইবনে আব্দু
শাম্স ইবনে ‘আবদু উদ্দ ইবনে নছ্র ইবনে মালিক ইবনে হিস্ল ইবনে ‘আমির ইবনে লুআই আলাইহিমুস
সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ)
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَتْ قَبْلَهُ تَحْتَ السَّكْرَانِ بْنِ عَمْرٍو أَخِي سُهَيْلِ بْنِ عَمْرٍو
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে সুহাইল ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু
তা‘য়ালা আনহু উনার আপন ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা
আনহু উনার অধীনে ছিলেন। অর্থাৎ উনার সম্মানিত শাদী মুবারক-এ উনার আওতায় ছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
(বিদায়া-নিহায়া, ইবনে সা’দ, ইবনে হিশাম ইত্যাদী)
বিশিষ্ট্য চারজন হযরত ছাহাবী হযরত সুহাইল ইবন ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু
তিনি, হযরত সাহ্ল ইবন ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু
তা‘য়ালা আনহু তিনি, হযরত সালীত্ব ইবন
‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং হাতিব ইবন ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু
তিনি অর্থাৎ উনারা চারজন ছিলেন হযরত সাক্রান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত
আপন ভাই। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ-
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার শুরুর দিকেই উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ
ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এবং উনার সম্মানিত যাওজুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান
ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা উভয়ে সম্মানিত ঈমান মুবারক
প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উনারা আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত
মুবারক প্রকাশের পর পরই সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وأسلمت بمكة قديمًا وبايعت وأسلم زوجها السكران بن عمرو.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি শুরুর
দিকেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম মুবারক গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত বায়াত মুবারক গ্রহণ করেন
এবং উনার সম্মানিত আহাল হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনিও সম্মানিত দ্বীন
ইসলাম গ্রহণ করেন সম্মানিত ঈমান মুবারক আনেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
وكان السكران بْن عَمْرو قديم الْإِسْلَام بمكّة
অর্থ: “ সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সম্মানিত
দ্বীন ইসলাম উনার সূচালগ্নে সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ-এ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ
করেন, সম্মানিত ঈমান মুবারক আনেন।”
সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ)
হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক :
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার শুরুর দিকেই উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ
ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এবং উনার সম্মানিত যাওজুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান
ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা উভয়ে আত্মীয়-স¦জনের প্রবল বিরোধিতা
সত্ত্বেও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম কবুল করেন এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
শুধু তাই নয়, উনাদের উপর উনাদের
নিকটাত্মীয়-স্বজনদের সীমাহীন যুলুম-নির্যাতনের কারণে উনারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী হাবশায় সম্মানিত হিজরী মুবারক করেন।
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وهاجر إِلَى أرض الحبشة فِي الهجرة الثانية ومعه امرأته سودة بِنْت زمعة.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার
মহাসম্মানিতা যাওজাতুম মুকাররমাহ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস
সালাম উনাকেসহ সম্মানিত মুসলমান উনারা যখন দ্বিতীয়বার হাবশায় হিজরত মুবারক করেন, তখন উনারাও হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন।”
সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ)
হাবশায় কয়েক বছর সম্মানিত অবস্থান মুবারক করার উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্মানিত জাওযুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান
রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনিসহ সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ ফিরে আসেন। সুবহানাল্লাহ!
তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত
নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশে ১০ম বৎসর সম্মানিত বিছাল শরীফ
গ্রহণ করেন।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ উনার পূর্বাভাস মুবারক:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
عَنِ حضرت ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه قَالَ كَانَتْ ام المؤمنين سيدتنا حضرت الثانية عليها السلام (حضرت سَوْدَةُ بِنْتُ زَمْعَةَ عليها السلام)
عِنْدَ حضرت السَّكْرَانِ بْنِ عَمْرٍو رضى الله تعالى عنه أَخِي حضرت سُهَيْلِ بْنِ عَمْرٍو رضى الله تعالى عنه فَرَأَتْ فِي الْمَنَامِ كَأَنَ النَّبِيَّ صلّى الله عليه وسلم أَقْبَلَ يَمْشِي حَتَّى وَطِئَ عَلَى عُنُقِهَا فَأَخْبَرَتْ زَوْجَهَا بِذَلِكَ فَقَالَ لَئِنْ صَدَقَتْ رُؤْيَاكِ لَأَمُوتَنَّ وَلَيَتَزَوَّجَنَّكِ رَسُولُ اللَّهِ صلّى الله عليه وسلم.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্
আলাইহাস সালাম তিনি হযরত সুহাইল ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত
ভাই হযরত সাকরান ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট ছিলেন। তখন উম্মুল
মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি একবার সম্মানিত স্বপ্ন
মুবারক-এ দেখেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হেটে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস
সালাম উনার নিকট সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করে উনার সম্মানিত কাঁধ মুবারক-এ মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পা মুবারক) কোমলভাবে রেখেছেন।
সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এই সম্মানিত স্বপ্ন
মুবারক উনার সম্মানিত আহাল উনার নিকট ব্যক্ত করলেন। তখন তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ! আপনি যদি সত্যিই এই
সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক দেখে থাকেন,
তাহলে
অবশ্যই আমি সম্মানিত বিছাল শরীফ গ্রহণ করবো এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
আপনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
ورأت فى المنام ان النبىّ صلّى الله عليه وسلم أتاها ووضع رجله على رقبتها فلما انتبهت أخبرت زوجها قال ان صدقت فانا أموت ويتزوّجك محمد صلّى الله عليه وسلم
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি একবার
সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক-এ দেখেন যে,
সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্্ আলাইহাস
সালাম উনার নিকট সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্
মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পা মুবারক) উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ
ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত কাঁধ মুবারক-এ রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল
মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি যখন জাগ্রত হলেন, তখন এই সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার সম্মানিত আহাল
উনাকে বললেন। উনার সম্মানিত আহাল তিনি বললেন,
আপনি
যদি সত্যিই এই সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক দেখে থাকেন, তাহলে আমি সম্মানিত বিছাল শরীফ গ্রহণ করবো এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
আপনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস)
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এই সম্মানিত
স্বপ্ন মুবারক দেখার পর আরো একখানা বরকতময় স্বপ্ন মুবারক দেখেন। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
ثُمَّ رَأَتْ فِي الْمَنَامِ لَيْلَةً أُخْرَى أَنَّ قَمَرًا انْقَضَّ عَلَيْهَا مِنَ السَّمَاءِ وَهِيَ مُضْطَجِعَةٌ فَاَخْبَرَتْ زَوْجَهَا فَقَالَ لَئِنْ صَدَقَتْ رُؤْيَاكِ لَمْ أَلْبَثْ إِلَّا يَسِيرًا حَتَّى أَمُوتَ وَتَزَوَّجِينَ مِنْ بَعْدِي, فَاشْتَكَى حضرت السَّكْرَانُ رضى الله تعالى عنه مِنْ يَوْمِهِ ذَلِكَ , فَلَمْ يَلْبَثْ إِلَّا قَلِيلًا حَتَّى مَاتَ , وَتَزَوَّجَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلّى الله عليه وسلم
অর্থ: “তারপর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুান হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি
অন্য রাতে আরো একখানা সম্মানিত বরকতময় স্বপ্ন মুবারক দেখেন যে, তিনি কাত হয়ে শুয়ে আছেন, এমন সময় আকাশের চাঁদখানা ছুটে এসে উনার উপর পড়লেন।
সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনি উনার এই সম্মানিত বরকতময় স্বপ্ন মুবারকখানা উনার সম্মানিত
আহাল উনাকে জানালেন। উনার সম্মানিত আহাল বললেন, যদি সত্যিই আপনি এই সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক দেখে থাকেন, তাহলে আমি খুব তাড়াতাড়ী সম্মানিত বিছাল শরীফ গ্রহণ
করবো এবং আমার পর আপনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হবেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সে দিনই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং অল্প কয়েক
দিনের মধ্যে সম্মানিত বিছাল শরীফ গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার
রশাদ, ইবনে সা’দ)
আল্লামা দিয়ার বাকরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি (বিছাল শরীফ : ৯৬৬ হিজরী শরীফ) উনার
বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘তারীখুল খমীস শরীফ’ উনার মধ্যে বর্ণনা করেন,
ثم رأت فى المنام انها اتكأت ووقع عليها القمر من السماء فأخبرت بها زوجها قال ان كنت صدقت فأنا أموت قريبا وتتزوجين زوجا آخر فمرض فى ذلك اليوم ومات بعد أيام ثم تزوّجها النبىّ صلّى الله عليه وسلم فى السنة العاشرة من النبوّة بعد وفاة خديجة
অর্থ: “তারপর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুান হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি
অন্য রাতে আরো একখানা সম্মানিত বরকতময় স্বপ্ন মুবারক দেখেন যে, তিনি হেলান দিয়ে বসে আছেন, এমন সময় আকাশের চাঁদখানা ছুটে এসে উনার উপর পড়লেন।
সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনি উনার এই সম্মানিত বরকতময় স্বপ্ন মুবারকখানা উনার সম্মানিত
আহাল উনাকে অবহিত করলেন। উনার সম্মানিত আহাল তিনি
বললেন, যদি সত্যিই আপনি এই
সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক দেখে থাকেন,
তাহলে
আমি অতিশীঘ্রই সম্মানিত বিছাল শরীফ গ্রহণ করবো এবং আমার পর আপনি অপর একজন অর্থাৎ নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হবেন।
সুবহানাল্লাহ! হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এই দিন থেকে অসুস্থ হয়ে
পড়েন এবং কিছু দিন পর সম্মানিত বিছাল শরীফ গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক মুবারক প্রকাশের
১০ম বৎসর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা
হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের
পর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস)
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে
সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক ও সম্মানিত রিসালাত মুবারক প্রকাশের ১০ম বৎসর ১৭ রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাবত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স
মুবারক ছিলেন ৪৯ বছর ৬ মাস ৫ দিন। সবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ উনার সম্মানিত প্রস্তাব মুবারক এবং উনার সম্মানিত সম্মতি
মুবারক প্রকাশ:
যখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অত্যন্ত ব্যথিত ছিলেন। এদিকে বাহিরে
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ভিতরে
নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক
দেয়া এবং মহাসম্মানত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের দেখাশুনা
করার জন্য একজন উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম উনার প্রয়োজন। তখন হযরত ‘উছমান ইবনে
মায‘ঊন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার যাওজাতুম মুকাররমাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাওলা
রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বললেন,
ইয়া রাসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম!
উম্মুল মু‘মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও
মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক উনার কারণে আপনাকে অত্যন্ত বিষন্ন দেখছি। এ কথা
বলে তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপত্রি
আযীমুশ শান মুবারক নিসবতে আযীম শরীফ উনার সম্মানিত প্রস্তাব মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ ام المؤمنين الثالثة سيدتنا حضرت الصديقة عليها السلام (حضرت عائشة عليها السلام)
قَالَتْ: لَمَّا تُوُفِّيَتْ ام المؤمنين الاولى سيدتنا حضرت الكبرى عليها السلام (حضرت خَدِيجَةُ عليها السلام) جَائت حضرت خَوْلَةُ بنتُ حَكِيمِ بن الأَوْقَصِ رضى الله تعالى عنها امْرَأَةُ حضرت عُثْمَانَ بن مَظْعُون رضى الله تعالى عنه يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلا تَزَوَّجُ قَالَ مَنْ قَالَتْ إِنْ شِئْتَ بِكْرًا وَإِنْ شِئْتَ ثَيِّبًا، قَالَ وَمَنِ الثَّيِّبُ قَالَتْ ام المؤمنين سيدتنا حضرت الثانية عليها السلام (حضرت سَوْدَة بِنْت زَمْعَةَ عليها السلام) قَدْ آمَنَتْ بِكَ وَاتَّبَعَتْكَ عَلَى مَا أَنْتَ عَلَيْهِ، قَالَ فَاذْهَبِي فَاذْكُرِيهَا عَليَّ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা
হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত
কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ
করেন, তখন হযরত ‘উছমান ইবনে মায‘ঊন
রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার যাওজাতুম মুকাররমাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু
তা‘য়ালা আনহা তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল
মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বললেন,
ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
আপনি কি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ করবেন না? অর্থাৎ আপনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান
নিসবতে আযীম শরীফ করুন! তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, কাকে? তিনি বললেন, আপনার সম্মানিত ইচ্ছা মুবারক অনুযায়ী- আপনি যদি
চান অকুমারী গ্রহণ করতে পারেন অথবা যদি চান কুমারীও গ্রহণ করতে পারেন। (এখন আপনি যাকে
পছন্দ মুবারক করেন।) নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, অকুমারী কে? তিনি বললেন,
উম্মুল
মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি আপনার
প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন এবং আপনাকে পরিপূর্ণরূপে সম্মানিত ইতা‘য়াত তথা অনুসরণ-অনুকরণ
মুবারক করে থাকেন, আপনার আনীত সম্মানিত
দ্বীন ইসলাম উনার উপর চলে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন,
فَاذْهَبِي فَاذْكُرِيهَا عَليَّ
আপনি যান আমার পক্ষ থেকে উনার সাথে এ বিষয়ে আলোচনা মুবারক করুন।” সুবহানাল্লাহ!
(আল আহাদ ওয়াল মাছানী ৫/৪১৩, আল মু’জামুল কাবীর
লিত ত্ববারনী ৩০/২৪)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ
শান নিসবতে আযীম শরীফ উনার সম্মানিত প্রস্তাব মুবারক:
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু
তা‘য়ালা আনহা উনাকে বললেন,
فَاذْهَبِي فَاذْكُرِيهَا عَلِيَّ
‘আপনি যান আমার পক্ষ
থেকে (উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম) উনার সাথে এ
বিষয়ে আলোচনা মুবারক করুন।’ সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু
তা‘য়ালা আনহা তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে
আযীম মুবারক উনার সম্মানিত প্রস্তাব মুবারক নিয়ে যান। এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
فَخَرَجْتُ، فَدَخَلْتُ عَلَى ام المؤمنين سيدتنا حضرت الثانية عليها السلام (حضرت سَوْدَة بِنْت زَمْعَةَ عليها السلام) فَقُلْتُ: يَا ام المؤمنين سيدتنا حضرت الثانية عليها السلام (حضرت سَوْدَة بِنْت زَمْعَةَ عليها السلام) مَاذَا أَدْخَلَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ مِنَ الْخَيْرِ وَالْبَرَكَةِ، قَالَتْ: وَمَا ذَاكَ؟، قَالَتْ: أَرْسَلَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخْطُبُكِ عَلَيْهِ، فَقَالَتْ: وَدِدْتُ، فَادْخُلِي عَلَى أَبِي وَاذْكُرِي ذَلِكَ لَهُ، قُلْتُ: وَهُوَ شَيْخٌ كَبِيرٌ فَدَخَلْتُ عَلَيْهِ وقلت له: إِنَّ سيدنا مولنا مُحَمَّدَ بن عَبْدِ اللَّهِ بن عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، أَرْسَلَنِي أَخْطَبُ عَلَيْهِ ام المؤمنين سيدتنا حضرت الثانية عليها السلام (حضرت سَوْدَة بِنْت زَمْعَةَ عليها السلام) فَقَالَ: كُفُؤٌ كَرِيمٌ، فَمَاذَا تَقُولُ صَاحِبَتُكِ؟، قَالَتْ: تُحِبُّ ذَلِكَ، قَالَ: فادْعِيهَا إِلَيَّ، فَدَعَوْتُهَا، فَقَالَ: أَيْ ام المؤمنين سيدتنا حضرت الثانية عليها السلام (حضرت سَوْدَة بِنْت زَمْعَةَ عليها السلام) رَفَعَتْ هَذِهِ أَنَّ سيدنا مولنا مُحَمَّدَ بن عَبْدِ اللَّهِ بن عَبْدِ الْمُطَّلِبِ يَخْطُبُكِ وَهُوَ كُفُؤٌ كَرِيمٌ، أَفَتُحِبِّينَ أَنْ أُزَوِّجُهُ قَالَتْ نَعَمْ
অর্থ: “(সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু
তা‘য়ালা আনহা তিনি বলেন,) আমি বের হয়ে উম্মুল
মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুান হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার নিকট গেলাম। আমি উনাকে
বললাম, হে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম! যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদেরকে
কতোই না সম্মানিত খইর (ভালাই, কল্যাণ) এবং বরকত মুবারক
হাদিয়া মুবারক করেছেন! উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম
তিনি বললেন, সেটা কী? তিনি বললেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল
মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
আমাকে পাঠিয়েছেন আমি যেন উনার পক্ষ থেকে আপনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান
নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার বিষয়ে সম্মানিত প্রস্তাব মুবারক পেশ করি। সুবহানাল্লাহ! তখন
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, আমি এটাই চাই। আপনি আমার সম্মানিত পিতা আলাইহিস
সালাম উনার নিকট যান এবং উনার নিকট এ বিষয়ে আলোচনা মুবারক করুন! আমি বললাম, তিনি তো অনেক বয়স্ক লোক। তারপর আমি উনার সম্মানিত
পিতা আলাইহিস সালাম উনার নিকট গেলাম এবং উনাকে বললাম, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি আমাকে পঠিয়েছেন উনার পক্ষ থেকে (আপনার মহাসম্মানিতা আওলাদ আলাইহাস সালাম)
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও
মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব মুবারক পেশ করার জন্য। সুবহানাল্লাহ!
তখন তিনি বললেন, অত্যন্ত সম্মানিত কুফু
মুবারক। আপনার যিনি বান্ধবী তিনি কী বলেন?
সাইয়্যিদাতুনা
হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি বললেন, তিনি এটা পছন্দ মুবারক করেছেন। তিনি বললেন, উনাকে আমার নিকট ডেকে আনুন। আমি উনাকে ডেকে আনলাম।
তিনি উনাকে বললেন, হে উম্মুল মু’মিনীন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম! তিনি এটা উপস্থাপন করেছেন যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি আপনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ করার সম্মানিত
প্রস্তাব মুবারক পেশ করেছেন আর তিনি অত্যন্ত সম্মানিত কুফু মুবারক। আপনি কি এটা পছন্দ
করেন যে, আমি আপনাকে উনার নিকট মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ দেই? তিনি বললেন,
হ্যাঁ।
সুবহানাল্লাহ! (আল আহাদ ওয়াল মাছানী ৫/৪১৩,
আল মু’জামুল
কাবীর লিত ত্ববারনী ৩০/২৪)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম মুবারক-
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ পড়ান উনার মহাসম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত যাম‘আহ্
ইবনে ক্বইস আলাইহিস সালাম তিনি। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ
উনার সম্মানিত খুতবাহ মুবারকও তিনি নিজেই পাঠ করেন। সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও
মহাপবিত্র আযীমুশ শান উনার সম্মানিত মোহরানা মুবারক ছিলো ৫০০ দিরহাম। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম ইবনে সা’দ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘ত্ববাক্বাত শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ
করেন,
فَتَزَوَّجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَوْدَةَ بِنْتَ زَمْعَةَ فِي شَهْرِ رَمَضَانَ سَنَةَ عَشْرٍ مِنَ النُّبُوَّةِ
অর্থ: “অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত
মুবারক মুবারক প্রকাশের ১০ম বৎসর সম্মানিত রমাদ্বান
শরীফ মাসে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত
নিসবতে আযীম শরীফ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ ৮/২১৭)
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা
ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা
আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক ও সম্মানিত রিসালাত মুবারক
প্রকাশের ১০ম বৎসর ১৭ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস
সাবত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের ৯ দিন পর অর্থাৎ আনুষ্ঠানিকভাবে
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১০ম বৎসর ২৬ শে রমাদ্বান শরীফ ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ করেন।” সুবহানাল্লাহ!
তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪৯ বছর ৬
মাস ১৪ দিন আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪৫ বছর ৭মাস ২১দিন। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ
ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি প্রায় ৩ বছর ২৫ দিন এককভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ উনার পর উম্মুল মু‘মিনীন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুনা হযরত মাম‘আহ্
আলাইহিস সালাম তিনি অত্যন্ত খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু উনার সম্মানিত
ভাই আব্দুল্লাহ ইবনে যাম‘আহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু যিনি তখনও সম্মানিত দ্বীন
ইসলাম গ্রহণ করেননি- তিনি এ সম্পর্কে জানতে পেরে গভীরভাবে ব্যথিত হন এবং স্বীয় মস্তকে
ধূলি-বালি নিক্ষেপ করেন। না‘ঊযুবিল্লাহ! তবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার পর তিনি উনার এই আচরণের জন্য তাওবা-ইস্তিগফার করেন।
আর যখনই উনার এ কথা মনে পড়তো, তখন তিনি অত্যন্ত দুঃখ
প্রকাশ করতেন।
এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
فَجَاءَ أَخُوهَا عَبْدُ اللَّهِ بن زَمْعَةَ مِنَ الْحَجِّ، فَجَعَلَ يَحْثُو فِي رَأْسِهِ التُّرَابَ، فَقَالَ بَعْدَ أَنْ أَسْلَمَ: إِنِّي لَسَفِيهٌ يَوْمَ أَحْثُو فِي رَأْسِي التُّرَابَ أَنْ تَزَوَّجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَوْدَةَ بنتَ زَمْعَةَ.
অর্থ: “অত:পর উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত ভাই হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যাম‘আহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সম্মানিত
হজ্জ মুবারক থেকে এসে (মহাসম্মনিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ উনার বিষয়টি শুনে)
স্বীয় সম্মানিত মাথা মুবারক-এ ধুলি-বালি নিক্ষেপ করেন। তারপর সম্মানিত দ্বীন ইসলাম
গ্রহণ করার পর বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ করার কারণে
আমি আমার সম্মানিত মাথা মুবারক-এ ধুলি-বালি নিক্ষেপ করে অবশ্যই নির্বুদ্ধিতার কাজ করেছি।”
(আল মু‘জামুল কাবীর)
উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোন মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেননি।
সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ সম্মানিত হিজরত মুবারক:
মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামি‘উল আলক্বাব,
মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ
মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস
সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করে সম্মানিত
ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করার প্রায় এক থেকে দেড় মাস পর
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত
ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা এক সাথে
সম্মানিত হিজরত মুবারক করে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক
গ্রহণ করেন।” সুবহানাল্লাহ!
****************************************************
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত লক্বব
মুবারক-
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلِلّٰهِ الْاَسْـمَاءُ الْـحُسْنٰـى فَادْعُوْهُ بِـهَا.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার অনেক সুন্দর সুন্দর সম্মানিত নাম মুবারক তথা সম্মানিত
লক্বব মুবারক রয়েছেন, তোমরা উনাকে সেই সম্মানিত
নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারা উনাকে আহ্বান মুবারক করো।” সুবহানাল্লাহ!
(সম্মানিত সূরা আ’রাফ শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ১৮০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন অসীম,
ঠিক তেমনিভাবে
উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসীম। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে মহান আল্লাহ
পাক উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পরিপূর্ণ ক্বায়িম মাক্বাম হওয়ার কারণে উনার সম্মানিত
লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ
পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত সম্মানিত
লক্বব মুবারক উনার অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! ঠিক একইভাবে উম্মুল মু‘মিনীন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট হওয়ার করণে তথা উম্মুল মু‘মিনীন আলাইহাস সালাম
হওয়ার কারণে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার সংখ্যাও অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ!
তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত সম্মানিত
লক্বব মুবারক রয়েছেন, সমস্ত সম্মানিত লক্বব
মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
এখানে উনার কতিপয় সম্মানিত বরকতময় লক্বব
মুবারক উল্লেখ করা হলো:
১. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ (উম্মুল মু’মিনীন
আলাইহাস সালাম) একমাত্র যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব
হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল
আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান,
তামাম
কায়িনাতবাসী সকলের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
২. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ اَلثَّانِيَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (উম্মুল মু’মিনীন
আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার মুবারক
ধারাবাহিকক্রম অনুযায়ী উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম
তিনি হচ্ছেন ‘আছ ছানিয়াহ্ তথা দ্বিতীয়া’। এ জন্য উনাকে ‘উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
৩. اَهْلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহি
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
৪. سَيِّدَةُ النِّسَاءِ عَلـٰى الْعَالَمِيْنَ (সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি
‘আলাল আলামীন) সারা কায়িনাতে যত মহিলা রয়েছেন উনাদের প্রত্যেকের সাইয়্যিদাহ। সুবহানাল্লাহ!
৫. سَيِّدَةُ نِسَاءِ اَهْلِ الْجَنَّةِ (সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ)
জান্নাতবাসী সমস্ত মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদাহ। সুবহানাল্লাহ!
৬. اٰيَةُ اللهِ (আয়াতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার
সম্মানিত নিদর্শন মুবারক।
৭. اَلْبُشْرٰى (আল বুশরা)- সম্মানিত
সুসংবাদ মুবারক, সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক
দানকারিণী।
৮. جَامِعةُ النِّعْمَةِ وَالنِّسْبَةِ (জামি‘য়াতুন নি’মাতি
ওয়ান নিসবাহ)- সমস্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক ও নিবসত মুবারক উনাদের মালিকাহ, সমস্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক ও নিবসত মুবারক
দানকারিণী।
৯. اَلْـحَافِظَةُ (আল হাফিযাহ)- সর্বোত্তম
হিফাযতকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠ সংরক্ষণকারিণী।
১০. اَلْـحَامِدَةُ (আল হামিদাহ)- সর্বোত্তম
প্রশংসাকারিণী।
১১. حَبِيْبَةُ اللهِ (হাবীবাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক
উনার হাবীবাহ।
১২. اَلْـحَلِيْمَةُ (আল হালীমাহ)- পরম
ধৈর্যশীলা, মহাসহনশীলা।
১৩. اَلْـخَالِصَةُ (আল খ¦ালিছাহ)- খালিছাহ, পূত-পবিত্রা, পবিত্রতা দানকারিণী।
১৪. اَلْـخَبِيْرَةُ (আল খ¦বীরাহ)- মহাবিচক্ষণা।
১৫. اَلْـخَلِيْلَةُ (আল খ¦লীলাহ)- আখাছ্ছুল খাছ
মাহবূবাহ।
১৬. خَلِيْلَةُ الرَّحْـمٰنِ (খ¦লীলাতুর রহমান)- মহান
আল্লাহ উনার আখাছ্ছুল খাছ মাহবূবাহ।
১৭. اَلذَّاكِرَةُ (আয যাকিরাহ)- সর্বোত্তম
যিকিরকারিণী।
১৮. ذِكْرُ اللهِ (যিক্রুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার
সম্মানিত যিকির মুবারক। অর্থাৎ উম্মুল মু‘মিনীন আস সাবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত্বওয়ালু
ইয়াদান আলাইহাস সালাম তিনি নিজেই যিকরুল্লাহ। সুবহানাল্লাহ!
১৯. ذَاتُ الْـخلق العظيم (যাতুল খুলুক্বিল আযীম)- সর্বোত্তম
সুমহান চরিত্র মুবারক উনার অধিকারিণী।
২০. ذَاتُ السَّكِيْنَةِ (যাতুস সাকীনাহ)-
সাকীনাহ, শান্তি, প্রশান্তি, ইতমিনান মুবারক উনাদের মালিকাহ।
২১. ذَاتُ الْعِزَّةِ (যাতুল ‘ইযযাহ)-
সম্মানিত ইজ্জত মুবারক উনার মালিকাহ।
২২. ذَاتُ الْفَضْلِ (যাতুল ফাদ্বল)-
সম্মানিত ফযল মুবারক উনার মালিকাহ।
২৩. اَلرَّافِعَةُ (আর রাফি‘য়াহ)-
সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারিণী এবং সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক দানকারিণী।
২৪. رَحْـمَةُ الْاُمَّةِ (রহমাতুল উম্মাহ)-
সমস্ত উম্মতের জন্য সম্মানিত রহমত মুবারক।
২৫. لِّـلْـعَـالَـمِيْنَ ٌ رَحْـمَة (রহমাতুল্লিল ‘আলামীন)- সমস্ত আলমের
জন্য সম্মানিত রহমত মুবারক।
২৬. رَفِيْقَةُ اللهِ (রফীক্বতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক
উনার রফীক্বাহ, হাবীবাহ।
২৭. رَفِيْعَةُ الدَّرَجَاتِ (রফী‘য়াতুদ দারাজাত)-
সকল সুউচ্চ সুমহান মর্যাদা-মর্তাবা ও মাক্বামাত মুবারক উনাদের মালিকাহ।
২৮. اَلزَّاهِدَةُ (আয যাহিদাহ)- দুনিয়াবিরাগিণী, মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে দায়িমীভাবে রুজু, মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে দায়িমীভাবে রুজু করানে
ওয়ালা।
২৯. اَلـزَّكِـيَّةُ (আঝ ঝাকিয়্যাহ)-
পূত-পবিত্রা, মহাবিচক্ষণা।
৩০. اَلسَّابِقَةُ بِالْـخَيْرَاتِ (আস সাবিক্বাতু
বিল খইরাত)- খইর, কল্যাণ, ভালাই ইত্যাদি সর্ববিষয়ে অগ্রগামিণী।
৩১. اَلسَّاجِدَةُ (আস সাজিদাহ)- সর্বোত্তম
সিজদাকারিণী।
৩২. اَلسَّخِىَّةُ(আস সাখি¦য়্যাহ)- মহাদানশীলা।
৩৩. سَعِيْدَةُ (আস সাঈদাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ সুখী, সর্বশ্রেষ্ঠ নেকবখ্ত, সৌভাগ্যবান।
৩৪. اَلسَّلَامُ (আস সালাম)- সর্বশ্রেষ্ঠ
শান্তিদাতা।
৩৫. اَلسَيِّدَةُ (আস সাইয়্যিদাহ)-
সাইয়্যিদাহ, সর্বশ্রেষ্ঠা।
৩৬. سَيِّدَةُ الثَّقَلَيْنِ (সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বলাইন)-
দুই প্রধান সৃষ্টিজীব- জিন ও ইনসানের সাইয়্যিদাহ।
৩৭. سَـيِّـدَةُ الْكَوْنَيْنِ (সাইয়্যিদাতুল কাওনাঈন)-
দুই জগতের সাইয়্যিদাহ।
৩৮. اَلشَّافِعَةُ (আশ শাফি‘য়াহ)-
সর্বোত্তম সুপারিশকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠ শাফা‘য়াতকারিণী।
৩৯. اَلشَّافِـيَةُ (আশ শাফিয়াহ)- শিফাদানকারিণী, আরোগ্যদানকারিণী, সমস্ত উম্মতের জন্য যাহিরী-বাতিনী আরোগ্যদানকারিণী।
৪০. اَلشَّاكِرَةُ (আশ শাকিরাহ)- যথার্থ
পুরস্কারদানকারিণী, যথাযথ শুকরিয়া আদায়কারিণী।
৪১. اَلشَّاهِدَةُ (আশ শাহিদাহ)- উপস্থিত, হাযির-নাযির, সাক্ষ্যদানকারিণী।
৪২. اَلشَّرِيْفَةُ (আশ শারীফাহ)- সর্বোচ্চ
শরীফ, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান, সর্বোচ্চ সম্ভ্রান্তশীলা।
৪৩. اَلصَّابِرَةُ (আছ ছাবিরহ)- চরম
ধৈর্যশীলা।
৪৪. اَلصَّاحِبَةُ (আছ ছাহিবাহ)- মালিকাহ, অধিকারিণী।
৪৫. صَاحِبَةُ الشَّفَاعَةِ (ছাহিবাতুশ শাফা‘আহ)-
সম্মানিত শাফায়াত মুবারক উনার মালিকাহ।
৪৬. صَاحِبَةُ الْفَضِيْلَةِ (ছাহিবাতুল ফাদ্বীলাহ)-
সম্মানিত ফযীলত মুবারক উনার মালিকাহ।
৪৭. صَاحِبَةُ الْـخَيْرِ (ছাহিবাতুল খইর)-
সমস্ত কল্যাণ মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৪৮. صَاحِبَةُ الْكَوْثَرِ (ছাহিবাতুল কাওছার)-
সম্মানিত কাওছার মুবারক উনার মালিকাহ,
সম্মানিত
খাইরে কাছীর মুবারক তথা সমস্ত সম্মানিত ভালাই বা কল্যাণ মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৪৯. صَاحِبَةُ الدَّرَجَةِ الْعَالِيَةِ الرَّفِيْعَةِ (ছাহিবাতুদ দারাজাতিল
‘আলিয়াতির রফী‘য়াহ) সুউচ্চ সুমহান সম্মানিত দারাজাত তথা সম্মান ও মাক্বামাত মুবারক
উনার মালিকাহ।
৫০. اَلطَّاهِرَةُ (আত্ব ত্বাহিরাহ)-
পূত-পবিত্রা, পূত-পবিত্রতাদানকারিণী।
৫১. اَلظَّاهِرَةُ (আয যাহিরাহ)- অত্যন্ত
সুস্পষ্ট, উজ্জ্বল, সুউচ্চ মর্যাদাবান, সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয়িনী।
৫২. اَلْعَادِلَةُ (আল ‘আদিলাহ)- চরম
ন্যায়বিচারকারিণী, চরম ন্যায়পরায়ণা।
৫৩. اَلْعَارِفَةُ (আল ‘আরিফাহ)- পরিচিত, অবহিত,
জ্ঞাত।
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী সম্মানিত পরিচয় মুবারক লাভকারিণী, মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী সম্মানিত পরিচয়
মুবারক দানকারিণী।
৫৪. اَلْعَافِـيَةُ (আল ‘আফিয়াহ)- মাফকারিণী, ক্ষমাকারিণী।
৫৫. اَلْعَالِـمَةُ (আল ‘আলিমাহ)-
‘আলিমাহ, মহাজ্ঞানী।
৫৬. اَلْعَلِيْمَةُ (আল ‘আলীমাহ)-
‘আলীমাহ, সর্বজ্ঞাত।
৫৭. اَلْعَزِيْزَةُ (আল ‘আযীযাহ)- মাহবূবাহ, মহাসম্মানিতা, বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি মুবারক উনার অধিকারিণী, মালিকাহ।
৫৮. اَلْعَلِـيَّةُ (আল ‘আলিয়্যাহ)-
সুউচ্চ, মহামর্যাদাবান, মহাসম্মানিতা।
৫৯. اَلْغَالِبَةُ (আল গ¦ালিবাহ)- গ¦ালিবাহ, মহাবিজয়িনী, সর্বাধিক প্রাধান্য বিস্তারকারিণী।
৬০. اَلْغَنِيَّةُ (আল গ¦নিয়্যাহ)- মহাসম্পদশালিনী, মহাধনী,
অমুখাপেক্ষী, বেনিয়াজ।
৬১. اَلْفَاضِلَةُ (আল ফাদ্বিলাহ)-
মহাসম্মানিতা, সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা
মুবারক উনার অধিকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠা, সর্বসেরা।
৬২. اَلْفَائِقَةُ (আল ফায়িক্বাহ)-
সর্বশ্রেষ্ঠা, অনন্যা।
৬৩. اَلْفَارِقَةُ (আল ফারিক্বাহ)-
হক্ব ও নাহক্বের মাঝে পার্থক্যকারিণী।
৬৪. اَلْفَصِيْحَةُ (আল ফাছীহাহ)- সুভাষিণী, বিশুদ্ধভাষিণী।
৬৫. اَلْقَاسِمَةُ (আল ক্বাসিমাহ)- বণ্টনকারিণী।
৬৬. اَلْـقَائِدَةُ (আল ক্বায়িদাহ)-
সাইয়্যিদাহ, মহানপরিচালিকা, সম্মানিত হিদায়াত উনার পথে পরিচালনাকারিণী।
৬৭. قَائِدَةُ الْـخَيْرِ (ক্বায়িদাতুল খইর)- কল্যাণের দিকে
পরিচালনাকারিণী, যিনি সবাইকে কল্যাণের
দিকে নিয়ে যান।
৬৮. قَائِدَةُ اللهِ
(ক্বায়িদাতু ইলাল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে পরিচালনাকারিণী, যিনি সবাইকে মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে নিয়ে যান।
৬৯. قَائِدَةُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (ক্বায়িদাতু ইলা
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার দিকে পরিচালনাকারিণী,
যিনি
সবাইকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে নিয়ে যান।
৭০. اَلْقَرِيْبَةُ (আল ক্বরীবাহ)-
চিরনিকটবর্তী, অতি নিকটস্থ, অতি ঘনিষ্ঠ।
৭১. اَلْقَوِيَّةُ (আল ক্বওইয়াহ)-
সর্বশক্তিমান, মহাশক্তিধর।
৭২. اَلْكَامِلَةُ (আল কামিলাহ)- পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণতাদানকারিণী।
৭৩. اَلْكَرِيْـمَةُ (আল কারীমাহ)- মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, মহাদানশীলা।
৭৪. اَلْمُؤْتَـمَنَةُ (আল মু’তামানাহ)- চির বিশ্বস্ত, সর্বশ্রেষ্ঠা আমানাতদার, আমানতের যথাযথ হিফাযতকারিণী।
৭৫. اَلْمَأْمُوْنَةُ (আল মা’মূনাহ)- নিরাপদ, চির বিশ্বস্ত, আমানদানকারী,
নিরাপত্তাদানকারী।
৭৬. اَلْـمُؤْمِنَةُ (আল মু’মিনাহ) সর্বশ্রেষ্ঠা
ঈমানদার, সর্বশ্রেষ্ঠা মু’মিনাহ, সম্মানিত ঈমান মুবারক দানকারিণী।
৭৭. مَأْوَى الْجِنِّ وَالْاِنْسِ (মা’ওয়াল জিন্নি
ওয়াল ইন্স) জিন-ইনসানের আশ্রয়স্থল।
৭৮. اَلْمَاجِدَةُ (আল মাজিদাহ)- গৌরবময়ী, মহামর্যাদাবান, মহান, গৌরবান্বিত, মর্যাদাদানকারিণী।
৭৯. اَلْمُبَاركَةُ (আল মুবারিকাহ)-
বরকতদানকারিণী, কল্যাণদানকারিণী।
৮০. اَلْمُبَارَكَةُ (আল মুবারকাহ)-
বরকতময়, কল্যাণময়।
৮১. اَلْـمُبَشِّرَةُ (আল মুবাশশিরাহ)- সুসংবাদদানকারিণী।
৮২. اَلْمُبَلِّغَةُ (আল মুবাল্লিগহ)- সম্মানিত দ্বীন উনার প্রতি আহ্বানকারিণী।
৮৩. اَلْمُتَبَسِّمَةُ (আল মুতাবাসসিমাহ)- হাস্যোজ্জ্বল, যিনি মুচকি হাসি মুবারক দেন।
৮৪. اَلْمُجَاهِدَةُ (আল মুজাহিদাহ)- মুজাহিদাহ, জেহাদকারিণী।
৮৫. اَلْمُجِيْبَةُ (আল মুজীবাহ)- জবাবদানকারিণী, সাড়াদানকারিণী, কবুলকারিণী।
৮৬. اَلْمَجِيْدَةُ (আল মাজীদাহ)- মহামর্যাদাবান, মহীয়ান,
গৌরবান্বিত, গৌরবময়ী।
৮৭. اَلْمَحْمُوْدَةُ (আল মাহমূদাহ)- চরম প্রশংসিত।
৮৮. اَلْمُخْتَارَةُ (আল মুখ¦তারহ)- মনোনীত, সর্বশ্রেষ্ঠা, শ্রেষ্ঠত্বদানকারিণী।
৮৯. اَلْمُخْتَصَّةُ (আল মুখতাচ্ছাহ)- বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক, আখাছ্ছুল খাছ ব্যক্তিত্বা মুবারক।
৯০. اَلْـمَخْصُوْصَةُ بِالعِزَّةِ (আল মাখ¦ছূছাতু বিল ‘ইজ্জাহ)- বিশেষ সম্মান-ইজ্জত মুবারক উনার অধিকারিণী, আখাছ্ছুল খাছ সম্মান-ইজ্জত, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৯১. اَلْـمُرْشِدَةُ (আল মুরশিদাহ)-
সৎ পথ প্রদর্শনকারিণী, হিদায়াতদানকারিণী।
৯২. اَلْـمُزَكِّيَةُ (আল মুযাক্কিয়াহ)-
তাযকিয়াদানকারিণী, পবিত্রতাদানকারিণী।
৯৩. اَلْـمُسْتَجِيْبَةُ (আল মুস্তাজীবাহ)- সাড়াদানকারিণী, জবাবদানকারিণী।
৯৪. اَلْمُسْتَفِيْضَةُ (আল মুস্তাফীযাহ)-
ফয়েযদানকারিণী।
৯৫. اَلْمُسْتَقِيْمَةُ (আল মুস্তাক্বীমাহ)-
সরল, সঠিক, ইস্তিকামত রাখনে ওয়ালা।
৯৬. اَلْمَسْعُوْدَةُ (আল মাস‘ঊদাহ)-
সৌভাগ্যশীলা, সর্বশ্রেষ্ঠা ভাগ্যবান, সৌভাগ্যদানকারিণী।
৯৭. اَلْمَشْهُوْدَةُ (আল মাশহূদাহ)- উপস্থিত, হাযির-নাযির।
৯৮. اَلْـمُشَفَّعَةُ (আল মুশাফ্ফা‘আহ)- যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক
উনার সুপারিশ কবুল করা হয়।
৯৯. اَلْمُصْلِحَةُ (আল মুছলিহাহ)- ইছলাহদানকারিণী, সংশোধনকারিণী।
১০০. اَلْمُصَدِّقَةُ (আল মুছদ্দিক্বাহ)- সত্যায়নকারিণী।
১০১. مُطَهَّرٌ (আল মুত্বহ্হারহ)- পূত-পবিত্রা।
১০২. مُطَهِّرٌ (আল মুত্বহ্হিরহ্)- পূত-পবিত্রতাদানকারিণী।
১০৩. اَلْمَعْرُوْفَةُ (আল মা’রূফাহ)- পরিচিত, প্রসিদ্ধ, মশহূর।
১০৪. اَلْـمُعَزَّزَةُ (আল মু‘আয্যাযাহ)-
মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, সম্মান দানকারিণী, মর্যাদা দানকারিণী।
১০৫. اَلْمَعْشُوْقَةُ (আল মা’শূক্বাহ)- মা’শূক্বাহ, সকলের নিকট সর্বাধিক মাহবূবাহ।
১০৬. اَلْمُعَظَّمَةُ (আল মু’য়ায্যামাহ)- মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, সম্মান দানকারিণী,
মর্যাদা
দানকারিণী।
১০৭. اَلْمُعَلِّمَةُ (আল মু‘য়াল্লিমাহ)- মু‘য়াল্লিমাহ, তা’লীমদানকারিণী।
১০৮. اَلْمُعِيْنَةُ (আল মু‘ঈনাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারিণী।
১০৯. اَلْـمُقَدِّسَةُ (আল মুক্বদ্দিসাহ)- উৎসর্গকারিণী,
পবিত্রতাদানকারিণী।
১১০. اَلْـمُقَدَّسَةُ (আল মুক্বাদ্দাসাহ)- উৎসর্গকৃত, মহাপবিত্রা, পবিত্রতা দানকারিণী।
১১১. اَلْمُكَرَّمَةُ (আল মুর্কারমাহ)- মহাসম্মানিতা, সম্মান দানকারিণী।
১১২. اَلْمَالِكَةُ (আল মালিকাহ)- মালিকাহ, অধিকারিণী।
১১৩. مَالِكَةُ الْـجَنَّةِ (মালিকাতুল জান্নাহ)- সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার
মালিকাহ।
১১৪. مَالِكَةُ الْكَائِنَاتِ (মালিকাতুল কায়িনাত)- সমস্ত কায়িনাতের মালিকাহ।
১১৫. مَالِكَةُ جَامِعِ النِعَمِ(মালিকাতু জামিয়িন
নি‘য়াম)- সমস্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক উনাদের মালিকাহ।
১১৬. اَلْـمُنْتَصِرَةُ (আল মুনতাছিরহ)-
সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয়িনী, মহাশক্তিধর।
১১৭. منّة الله (মিন্নাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পক উনার
সর্বশ্রেষ্ঠ অনুগ্রহ মুবারক।
১১৮. اَلْـمُنْذِرَةُ (আল মুনযিরহ)- ভীতিপ্রদর্শনকারিণী, সতর্ককারিণী।
১১৯. اَلْـمُنِيْبَةُ (আল মুনীবাহ)- মালিকাহ, মুনীবাহ,
সমস্ত
কায়িনাত যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার গোলাম।
১২০. اَلْـمُغِيْثَةُ (আল মুগীছাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ
সাহায্যকারিণী, ত্রাণকর্তা, উদ্ধারকারিণী।
১২১. اَلْـمُنِيْرَةُ (আল মুনীরহ)- আলোদানকারিণী, উজ্জ্বল,
নূর দানকারিণী, হিদায়াত দানকারিণী, ফয়েযদানকারিণী, সম্মানিত রহমত মুবারক দানকারিণী।
১২২. اَلْمَوْعِظَةُ (আল মাও‘িয়য¦হ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারিণী।
১২৩. اَلْمُهَذَّبَةُ (আল মুহায্যাবাহ)-
পূত-পবিত্রা, মহাপবিত্রা, পবিত্রতা দানকারিণী।
১২৪. اَلنَّاصِحَةُ (আন নাছিহাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ
নছীহতকারিণী, উপদেশদানকারিণী।
১২৫. اَلنَّاهِـيَةُ (আন নাহিয়াহ)-
(সম্মানিত শরী‘য়াত উনার খিলাফ সমস্ত কাজে) নিষেধকারিণী, বারণকারিণী।
১২৬. اَلنِّعْمَةُ (আল নি’মাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ
নি‘য়ামত মুবারক।
১২৭. نِعْمَةُ اللهِ (নি’মাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার
পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নি‘য়ামত মুবারক।
১২৮. اَلنَّقِيْبَةُ (আন নাক্বীবাহ)-
সাইয়্যিদাহ।
১২৯. اَلنُّوْرُ (আন নূর)- নূর মুবারক।
১৩০. اَلنُّوْرُ الْمُكَرَّمَةُ (আন নূরুল মুকাররমাহ)-
মহাসম্মানিত নূর মুবারক।
১৩১. اَلنُّوْرُ الْمُطَهَّرَةُ (আন নূরুল মুত্বহ্হারহ)-
মহাপবিত্র নূর মুবারক।
১৩২. نُوْرُ اللهِ (নূরুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার
সম্মানিত নূর মুবারক।
১৩৩. نُوْرُ الْكَائِنَات (নূরুল কায়িনাত)-
সমস্ত কায়িনাতের জন্য নূর মুবারক, আলোকবর্তিকা।
১৩৪. اَلْـهَادِيَةُ (আল হাদিয়াহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ
হিদায়াতকারিণী।
১৩৫. هَدِيَّةُ اللهِ (হাদিয়্যাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক
উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত হাদিয়া মুবারক,
তোহফা
মুবারক।
১৩৬. اَلْوَاسِعَةُ (আল ওয়াসি‘আহ)-
সীমাহীন ইলম মুবারক উনার অধিকারিণী,
মহাদানশীলা।
১৩৭. اَلْوَاعِظَةُ (আল ওয়া‘য়িযহ)-
সর্বশ্রেষ্ঠ ওয়ায়েজ, নছীহতকারিণী, উপদেশদানকারিণী।
১৩৮. اَلْوَافِـيَةُ (আল ওয়াফীয়াহ)-
পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণতাদানকারিণী।
১৩৯. اَلْوَسِيْلَةُ (আল ওয়াসীলাহ)-
সর্বশ্রেষ্ঠ ওয়াসীলাহ মুবারক, সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম
মুবারক।
১৪০. اَلْوَهَّابَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (আল ওহ্হাবাহ আলাইহাস
সালাম)- সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল, সীমাহীন দানকারিণী।
সুবহানাল্লাহ!
এছাড়াও অসংখ্য-অগণিত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের মালিকাহ হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সংক্ষিপ্ত
জীবনী মুবারক-২
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
قَالَتْ سَوْدَةُ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّيْتُ خَلْفَكَ الْبَارِحَةَ فَرَكَعْتَ بِي حَتَّى أَمْسَكْتُ بِأَنْفِي مَخَافَةَ أَنْ يَقْطُرَ الدَّمُ: فَضَحِكَ وَكَانَتْ تُضْحِكُهُ الأَحْيَانَ بِالشَّيْءِ.
অর্থ: “(একবার) উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম
তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলেন, গত রাত্রে আমি আপনার পেছনে নামায পড়েছি। কিন্তু
আপনি সম্মানিত রুকু মুবারক উনার মধ্যে এত দেরী করছেন যে, আমার নাক ফেটে রক্ত বের না হয়, সেজন্য আমি নাক চেপে ধরেছিলাম। অতঃপর নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার কথা মুবারক শুনে মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র নূরুশ শাহাদাত মুবারক প্রকাশ করেন (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাবাস্সুমী
শান মুবারক থেকে একটু বেশী প্রকাশ করেন)। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি প্রায়ই কিছু কিছু বিষয়ে
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে (সন্তুষ্ট
মুবারক কারার জন্য) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শাহাদাত মুবারক প্রকাশ করাতেন (মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র তাবাস্সুমী শান মুবারক থেকে একটু বেশী প্রকাশ করাতেন)। সুবহানাল্লাহ! (আত্ব ত্ববাক্বাতুল কুবরা ৮/৫৪, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’ ৩/২৩৬)
সম্মানিত বিদায় হজ্জ মুবারক-
দশম হিজরী শরীফ-এ সম্মানিত হজ্জ মুবারক উনার সময় উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনিও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: ্রنَزَلْنَا المُزْدَلِفَةَ فَاسْتَأْذَنَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَوْدَةُ، أَنْ تَدْفَعَ قَبْلَ حَطْمَةِ النَّاسِ، وَكَانَتِ امْرَأَةً بَطِيئَةً، فَأَذِنَ لَهَا، فَدَفَعَتْ قَبْلَ حَطْمَةِ النَّاسِ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমরা মুজদালিফায় অবতরণ করলাম। তখন উম্মুল মু’মিনীন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি জনতার ভিড়ের আগেই মুজদালিফা থেকে
(মিনায়) চলে যাওয়ার অনুমতি চাইলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে সম্মানিত অনুমতি মুবারক দিলেন, তিনি লোকজনের ভিড়ের পূর্বেই তিনি (মিনায়) চলে যান।
কারণ তিনি ছিলেন একটু স্বাস্থ্যবান। সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসনাদে ইসহাক্ব)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ يَقُولُ حَجَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِنِسَائِهِ عَامَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ ثُمَّ قَالَ هَذِهِ الْحَجَّةُ ثُمَّ ظُهُورَ الْحُصُرِ(أى الْزَمْنَ بيوتكنّ ولا تخرجْنَ منها) قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ وَكَانَ كُلُّ نِسَاءِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَحْجُجْنَ إِلاَّ سَوْدَةَ بِنْتَ زَمْعَةَ وَزَيْنَبَ بِنْتَ جَحْشٍ قَالَتَا لاَ تُحَرِّكُنَا دَابَّةٌ بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সম্মানিত বিদায় হজ্জের বছর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস
সালাম উনাদেরকে নিয়ে সম্মানিত হজ্জ মুবারক করেন। এই সম্মানিত বিদায় হজ্জ মুবারক উনার
পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত
উম্মাহাতুল মু‘মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে বলেন, অতঃপর আর ঘরের বাইরে যাবেন না। হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, (নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক উনার পরও)
অন্যান্য হযরত উম্মাহাতুল মু‘মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হজ্জ মুবারক করেন। কিন্তু
উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এবং উম্মুল মু‘মিনীন
আস সাবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত্বয়ালু ইয়াদান আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত।
উনারা বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর পশু তথা সম্মানিত বাহন মুবারক আমাদেরকে
নাড়াতে পারবে না। অর্থাৎ উনারা এই সম্মনিত নির্দেশ মুবারক এমন দৃঢ়তার সাথে মেনে চলেন
যে, আর সম্মানিত হুজরা শরীফ থেকে
বাইরে যাননি।” সুবহানাল্লাহ! (তবাকত ৮/৫৫)
আরো বর্ণিত রয়েছে,
قَالَتْ سَوْدَةُ : حَجَجْتُ وَاعْتَمَرْتُ فَأَنَا أَقَرُّ فِي بَيْتِي
كَمَا أَمَرَنِي اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ.
অর্থ: “উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি হজ্জ করেছি, ওমরা করেছি। এখন মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক
মতো সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার মধ্যে বসে কাটাবো।” সুবহানাল্লাহ! (তবাকত ৮/৫৫)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা এবং বাক্বা মুবারক-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ عَائِشَةَ ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَرَادَ سَفَرًا أَقْرَعَ بَيْنَ نِسَائِهِ فَأَيَّتُهُنَّ خَرَجَ سَهْمُهَا خَرَجَ بِهَا مَعَهُ وَكَانَ يَقْسِمُ لِكُلِّ امْرَأَةٍ مِنْهُنَّ يَوْمَهَا وَلَيْلَتَهَا غَيْرَ أَنَّ سَوْدَةَ بِنْتَ زَمْعَةَ وَهَبَتْ يَوْمَهَا وَلَيْلَتَهَا لِعَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَبْتَغِي بِذَلِكَ رِضَا رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা
হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত সফর মুবারক করার ইচ্ছা মুবারক করতেন, তখন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম
উনাদের মধ্যে সম্মানিত লটারী মুবারক করতেন। সম্মানিত লটারী মুবারক উনার মাধমে যিনি
নির্ধারিত হতেন, উনাকে তিনি সম্মানিত
সফর মুবারক-এ সাথে নিতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি সমস্ত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস
সালাম উনাদেরকে দিন-রাত মুবারক ভাগ করে দিয়েছিলেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে ব্যতীত। কারণ তিনি উনার সম্মানিত দিন-রাত মুবারক উম্মুল
মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া মুবারক
করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক
হাছিলে লক্ষ্যে।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, সুনানুল কুবরা লিলবাইহাক্বী ৭/২৯৬, মুস্তাখরজে আবী ‘আওয়ানাহ ৫/২০৭, আল মুন্তাক্বা ১/২৯৬ ইত্যাদি)
উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার
আকাঙ্খা মুবারক:
‘মুসলিম শরীফ’-এ বর্ণিত
রয়েছে,
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: مَا رَأَيْتُ امْرَأَةً أَحَبَّ إِلَيَّ أَنْ أَكُونَ فِي مِسْلَاخِهَا مِنْ سَوْدَةَ بِنْتِ زَمْعَةَ،
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম
উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি মহিলাদের মধ্যে ছিলেন আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয়।
তিনি ব্যতীত অন্য কারো ক্ষেত্রে আমার এ আকাঙ্খা জাগেনি যে, উনার দেহে যদি আমার প্রাণ হতো।” সুবহানাল্লাহ!
(মুসলিম শরীফ)
অপর বর্ণনায় এসেছে,
عن عائشة قالت ما من الناس أحد أحب الي أن أكون في مسلاخه من سودة
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম
উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সমস্ত মানুষের মধ্যে
উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন আমার নিকট
সবচেয়ে প্রিয়। তিনি ব্যতীত অন্য কারো ক্ষেত্রে আমার এ আকাঙ্খা জাগেনি যে, উনার দেহে যদি আমার প্রাণ হতো।” সুবহানাল্লাহ!
(শরহুয যারক্বানী ৪/৩৮০)
দানশীলতা:
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ بَعَثَ إِلَى سَوْدَةَ بِنْتِ زَمْعَةَ بِغِرَارَةٍ مِنْ دَرَاهِمَ , فَقَالَتْ : مَا هَذَهِ ؟ قَالُوا : دَرَاهِمُ . قَالَتْ : فِي الْغِرَارَةِ مِثْلُ التَّمْرِ: فَفَرَقَتْهَا.
অর্থ: “হযরত মুহম্মদ ইবনে সীরীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। একবার হযরত
ফারূকে আযম আলাইহিস সালাম তিনি দিরহামপূর্ণ একটি থলি উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ হাদিয়া পাঠান। তখন উম্মুল
মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলনে, এতে কি আছে? সকলে বললো, দিরহাম। তিনি বললেন, খেজুরের থলির মতো থলিতে! এ কথা মুবারক বলে তখনই
তিনি দেরহামসমূহ বণ্টন করে দেন। সুবহানাল্লাহ! (ইছাবাহ ৭/৭২১)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
وكانت السيدة سودة -رضى الله عنها- زاهدة في الدنيا مقبلة على الآخرة. بعث إليها عمر بن الخطاب -رضى الله عنه- في خلافته ببعض الدراهم، فوَزَّعَتْهَا على الفقراء والمساكين.
অর্থ: “উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি দুনিয়া
প্রতি বিরাগ এবং আখেরাতের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। একবার সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম
আলাইহিস সালাম তিনি উনার খিলাফতকালে হাদিয়া স্বরূপ কিছু দিরহাম উনার সম্মানিত খিদমত
মুবারক-এ পাঠান। তখন তিনি এগুলো ফক্বীর-মিসকীনদের মাঝে বণ্টন করে দেন।” সুবহানাল্লাহ!
*********************************************************************************
সাইয়্যিদাতুনা
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সংক্ষিপ্ত
জীবনী মুবারক-৩
হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক :
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার শুরুর দিকেই উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ
ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এবং উনার সম্মানিত যাওজুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান
ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা উভয়ে আত্মীয়-স¦জনের প্রবল বিরোধিতা
সত্ত্বেও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম কবুল করেন এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
শুধু তাই নয়, উনাদের উপর উনাদের
নিকটাত্মীয়-স্বজনদের সীমাহীন যুলুম-নির্যাতনের কারণে উনারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী হাবশায় সম্মানিত হিজরী মুবারক করেন।
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وهاجر إِلَى أرض الحبشة فِي الهجرة الثانية ومعه امرأته سودة بِنْت زمعة.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার
মহাসম্মানিতা যাওজাতুম মুকাররমাহ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস
সালাম উনাকেসহ সম্মানিত মুসলমান উনারা যখন দ্বিতীয়বার হাবশায় হিজরত মুবারক করেন, তখন উনারাও হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন।”
সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ)
হাবশায় কয়েক বছর সম্মানিত অবস্থান মুবারক করার উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্মানিত জাওযুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান
রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনিসহ সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ ফিরে আসেন। সুবহানাল্লাহ!
তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত
নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশে ১০ম বৎসর সম্মানিত বিছাল শরীফ
গ্রহণ করেন।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম মুবারক-
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে
সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক ও সম্মানিত রিসালাত মুবারক প্রকাশের ১০ম বৎসর ১৭ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাবত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের ৯ দিন পর অর্থাৎ আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১০ম বৎসর ২৬ শে রমাদ্বান শরীফ
ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ করেন।” সুবহানাল্লাহ!
তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪৯ বছর ৬
মাস ১৪ দিন আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৪৬ বছর। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস
সালাম তিনি প্রায় ৩ বছর ২৫ দিন এককভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ সম্মানিত হিজরত মুবারক:
মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামি‘উল আলক্বাব,
মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ
মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস
সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করে সম্মানিত
ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করার প্রায় এক থেকে দেড় মাস পর
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত
ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা এক সাথে
সম্মানিত হিজরত মুবারক করে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক
গ্রহণ করেন।” সুবহানাল্লাহ!