রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি তুলে ধরতে হলে পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদ উনার কথা বলতেই হবে। এছাড়া সমস্ত বর্ণনা অপূর্ণ রয়ে যাবে। মসজিদ মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর। খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে- মুসলমান মাত্রই কোনো না কোনো মসজিদ তৈরিতে সাহায্য করেন বা দান করে থাকেন। শহরে থাকলে এলাকার মসজিদে, গ্রামে থাকলে গ্রামের মসজিদে আবার অনেকে শহরে থেকেও নিজের গ্রামের মসজিদের জন্য দান করে থাকেন। পাশ্চাত্যে যেমন- আমেরিকা, ব্রিটেন, ইটালী, ফ্রান্স এসব দেশে যখন কোনো মুসলিম দেশ যেমন- বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা কোনো আফ্রিকার মুসলিম দেশ থেকে মুসলমানগণ যান; তারা সেদেশে গিয়ে অনেক মসজিদ-মাদরাসা তৈরি করেছেন তার বহু নজির রয়েছে। অনেক বেনামাযী লোকও কেবল মসজিদ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত হয়ে নামাযী হয়ে গেছেন। এর কারণ মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত। অর্থাৎ খালিছ নিয়তে কেউ যদি মহান আল্লাহ পাক উনার ঘরের খিদমতের আঞ্জাম দেয়, তাহলে এক সময় তার আল্লাহওয়ালা হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়ে যায়।
তবে অবশ্যই একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, তা হচ্ছে- যদি কোনো ভ্রান্ত মত-পথ প্রচারের লক্ষ্যে, সমাজে নিজের অবস্থান প্রকাশের উদ্দেশ্যে, কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মসজিদ-মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে বা সেখানে দান করে, তবে নেকী না হয়ে বিপরীত ফল বয়ে আনবে।
পবিত্র মসজিদুল হারাম শরীফ উনার মধ্যে নামায পড়লে এক রাকাতের সমান এক লক্ষ রাকাতের ছওয়াব, পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ এবং পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ উনার মাঝে এক রাকাতের বিনিময়ে পঞ্চাশ হাজার রাকাতের সমান ছওয়াব পাওয়া যায়। আর যে মসজিদে জুমুয়াহ হয় সেখানে নামায পড়লে এক রাকাতের বিনিময়ে পাঁচশ’ রাকাত আর সাধারণ মসজিদে নামায পড়লে ঘরে পড়ার চেয়ে পঁচিশগুণ বেশি ছওয়াব পাওয়া যায়। এখানে ফতওয়া হচ্ছে, বেশি ছওয়াবের নিয়তে পবিত্র মসজিদুল হারাম শরীফ, পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ এবং পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ ভিন্ন অন্য কোনো মসজিদে ভ্রমণ (ছফর) করা জায়িয নেই। কিন্তু এটা সত্য, এই তিন মসজিদে দান করা আর অন্য কোনো মসজিদে দান করা কখনোই সমান হবে না। একইভাবে যে মসজিদ কোনো মহান ওলীআল্লাহ উনার সঙ্গে নিছবতযুক্ত (সম্পর্কযুক্ত) এবং যে মসজিদ হতে হাক্বীক্বীভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার কার্যক্রম হয়, সেখানে দান করা আর কেবল পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ের মসজিদে দান করা কখনো এক হবে না। এর মূল কারণ বুঝতে হলে একটি বিষয় জানা ও উপলব্ধি করা দরকার। যেমন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার আমলনামা দাঁড়িপাল্লার এক অংশে রাখা হলে আর অন্য অংশে বিশ্বের সকল মুসলমান উনাদের আমলনামা রাখা হলে উনার অংশই ভারী হবে। এর কারণ তিনিই প্রথম সম্মানিত পুরুষ ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে প্রথম কবুল করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! ফলে যত মুসলমান পবিত্র দ্বীন ইসলাম কবুল করবেন সবার আমলনামা সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার আমলনামায় জমা হচ্ছে এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত হতেই থাকবে। তাহলে সকলের সঞ্চিত নেক আমলনামা যোগে উনার আমলনামা ভারী হবে- এটাই স্বাভাবিক।
একইভাবে যে মসজিদ মুবারকে যিকির-ফিকির, ইলম আমলের, পবিত্র দ্বীন ইসলামের প্রচার প্রসারের কাজকর্ম চলতেই থাকে, সেই মসজিদে দান করলে অবশ্যই কেবল ওয়াক্তিয়া মসজিদে দান করার চেয়ে ছওয়াব বেশি পাওয়া যাবে। এটা মহান আল্লাহ পাক উনার ওয়াদা। কারণ তিনি সমস্ত নেক কাজের উত্তম প্রতিদান দিয়ে থাকেন। (চলবে)
#7RobiulAwalShareef
#12RobiulAwalShareef
#90DaysMahfil
#RajarbagDorberShareef
sunnat.info
Sm40.com