৬৬৯ নং- সুওয়াল : মসজিদে জামায়াত হয়ে গেলে বা জামায়াত ফউত হলে বাড়িতে স্ত্রীর সাথে জামায়াত করা যাবে কি?

সুওয়াল : মসজিদে জামায়াত হয়ে গেলে বা জামায়াত ফউত হলে বাড়িতে স্ত্রীর সাথে জামায়াত করা যাবে কি?

জাওয়াব : হ্যাঁ, মসজিদে জামায়াত ফউত হয়ে গেলে স্ত্রীর সাথে জামায়াত করে নামা আদায় করতে পারবে। তবে শর্ত হলো- স্বামী, স্ত্রী একই কাতারে দাঁড়াতে পারবে না। বরং স্ত্রী, স্বামীর পিছনের কাতারে দাঁড়াবে। (সমূহ ফিক্বাহ কিতাব) 
আবা-৩৭ 
সাত ভাগে কুরবানি দেওয়া যাবে ।


সাত ভাগে কুরবানী দেয়ার বিষয়ে বেশি কিছু দিবো না শুধু একটা হাদীছ শরীফ দলীল দিচ্ছি।
বিখ্যাত ইমাম হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “মুসনাদে আহমদ” কিতাবে একটা হাদীছ শরীফ এনেছেন,
عَنْ حُذَيْفَةَ ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَشْرَكَ بَيْنَ الْمُسْلِمِينَ الْبَقَرَةَ عَنْ سَبْعَةٍঅর্থ: হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানদের মধ্যে গরুকে ৭ ভাগে (কুরবানী) নির্ধারন করে দিয়েছেন।” (মুসনাদে আহমদ ৩৮ খন্ড ৩৩৭ পৃষ্ঠা, হাদীছ নং ২৩৪৪৬)
মুসনাদে আহমদের এই সংষ্করন তাহকীক করেছেন শুয়াইব আরনাউত। উক্ত হাদীছ সর্ম্পকে তিনি বলেছেন,
صحيح لغيره (সহীহ লি গাইরিহী)
সূতরাং যারা সাত ভাগে কুরবানী দেয়া নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায় তারা গন্ড মূর্খ ও চরম ফেতনাবাজ নামে অভিহিত।
এদের মধ্যে বেশীর ভাগ লামাযহাবী, বাতিল আহলে হাদীছ ফেরকা, ফেতনাবাজ ফেরকা নামে পরিচিত।
No photo description available.
৬৬৮ নং- সুওয়াল :“তাখাল্লাক্বু বি আখলাক্বিল্লাহ” অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া বলতে কি বুঝায়, জানিয়ে বাধিত করবেন।

সুওয়াল :তাখাল্লাক্বু বি আখলাক্বিল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া বলতে কি বুঝায়, জানিয়ে বাধিত করবেন। 

জাওয়াব :তাখাল্লাক্বু বি আখলাক্বিল্লাহ”-এর অর্থ এক কথায় হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক উনার গুণে গুণান্বিত হওয়া। যেমন আল্লাহ পাক দয়ালু বা রহমান ও রহীম, তদ্রুপ বান্দাহজন্য দয়ালু হওয়া বা দয়ার গুণ অর্জন করা। মহান আল্লাহ পাক সাত্তার, অর্থাৎ দোষ গোপনকারী, তদ্রুপ বান্দার জন্য দোষ গোপণ করার গুণটি অর্জন করা। আল্লাহ পাক গাফ্ফার অর্থাৎ ক্ষমাশীল, তদ্রুপ বান্দার জন্য ক্ষমার গুণটি অর্জন করা। এরূপ মহান আল্লাহ পাক উনার যতগুলি ছিফতী নাম মুবারক রয়েছে, প্রত্যেকটি নাম মুবারকের যে বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সে বৈশিষ্ট্যসমূহ অর্জন করাই হচ্ছে তাখাল্লাক্বু বি আখলাক্বিল্লাহ্।যা মৌখিক শুনে বা কিতাবাদি বা বই-পুস্তক পড়ে হাছিল করা কস্মিণকালেও সম্ভব নয়।এ গুণসমূহ হাছিল বা অর্জন করতে হলে, যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার গুণাবলীর পূর্ণ মেছদাক, নমুনা বা নকশা হয়েছেন অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন,নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহহুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সূক্ষাতিসূক্ষ্ম, পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসরণ- অনুকরণ করতে হবে। কারণ পবিত্র কালামে পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
من يطع الرسول فقد اطاع الله.
অর্থ :যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাকছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইতায়াত বা আনুগত্যতা অথবা গুণে গুণান্বিত হলো, সেই মূলতমহান আল্লাহ পাক উনার ইতায়াত বা আনুগত্যতা অথবা গুণে গুণাণি¦ত হলো।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ৮০)
এখন যেহেতু মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সরাসরি পাওয়া যাবেনা, সেহেতু যারা মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ ওয়ারীশ বা নায়েব ও আউলিয়ায়ে কিরাম রয়েছেন, উনাদের পূর্ণ অনুসরণের মাধ্যমেই মহানআল্লাহ পাক উনার গুণে গুণান্বিত হওয়া সম্ভব। (ফতহুল গয়ব, মকতুবাত শরীফ)   অর্থাৎ এ সমস্ত গুণসমুহ অর্জন একমাত্র পীরানে তরীক্বত বা বুযুর্গানে দ্বীনগণের নিকট বাইয়াত হয়ে ইলমে তাসাউফ চর্চার মাধ্যমেই সম্ভব। (ফতহুল গায়েব, মকতুবাত শরীফ)
আবা-৩৭
৬৬৭ নং- সুওয়াল : কোন এক বাংলা কিতাবে দেখেছি, মায়ের গর্ভে সন্তান কমপক্ষে ছয় মাস উর্ধ্বে দু’বছর থাকে। আমাদের ইমাম সাহেবও অনুরূপ বলেছেন এবং ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি নাকি মায়ের গর্ভে চব্বিশ মাস ছিলেন। দলীলসহ জানতে বড়ই ইচ্ছা।

সুওয়াল : কোন এক বাংলা কিতাবে দেখেছি, মায়ের গর্ভে সন্তান কমপক্ষে ছয় মাস উর্ধ্বে দুবছর থাকে। আমাদের ইমাম সাহেবও অনুরূপ বলেছেন এবং ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি নাকি মায়ের গর্ভে চব্বিশ মাস ছিলেন। দলীলসহ জানতে বড়ই ইচ্ছা।

জাওয়াব : আপনার দেখা বাংলা কিতাবের বর্ণনা সঠিক যে, মায়ের গর্ভে সন্তান কমপক্ষে ছয় মাস, উপরে দুবছর থাকতে পারে। যেমন হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম, হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম, হযরত ইসা আলাইহিস সালাম ও হযরত ইয়াহ্ইয়া আলাইহিস সালাম ছমাস করে উনাদের মায়ের রেহেম মুবারকে অবস্থান করেছিলেন। আর শাফেয়ী মাযহাবের ইমাম, হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহিউনার মায়ের রেহেম মুবারকে দুবছর ছিলেন। (সমূহ তাফসীর ও ফিক্বাহ্র কিতাব এবং হায়াতে ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি দ্রষ্টব্য)
আবা-৩৭
৬৬৬ নং- সুওয়াল : আমাদের সমাজে কিছু কথা প্রচলিত রয়েছে, যেমন- দূরে কোথাও গেলে অথবা পরীক্ষা দিতে গেলে ডিম বা কলা ইত্যাদি খেতে নিষেধ করা হয় এবং ঘর থেকে বের হওয়ার সময় খালি কলসী দেখলে, জুতা সেন্ডেল উল্টানো দেখলে, রাস্তায় মৃত লাশ দেখলে, ঘর থেকে কোন কাজে বের হওয়ার সময় পায়ে হোঁচট খেলে যাত্রা অশুভ বলা হয়। এগুলো কি শরীয়ত সম্মত?

সুওয়াল : আমাদের সমাজে কিছু কথা প্রচলিত রয়েছে, যেমন- দূরে কোথাও গেলে অথবা পরীক্ষা দিতে গেলে ডিম বা কলা ইত্যাদি খেতে নিষেধ করা হয় এবং ঘর থেকে বের হওয়ার সময় খালি কলসী দেখলে, জুতা সেন্ডেল উল্টানো দেখলে, রাস্তায় মৃত লাশ দেখলে, ঘর থেকে কোন কাজে বের হওয়ার সময় পায়ে হোঁচট খেলে যাত্রা অশুভ বলা হয়। এগুলো কি শরীয়ত সম্মত?

জাওয়াব : ইসলামী শরীয়তে অশুভ লক্ষণ বলতে কিছুই নেই। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,
لاعدوى ولا طيرة.
অর্থ :ইসলামে ছোঁয়াচে রোগ ও অশুভ লক্ষণ বলতে কিছু নেই।” (বোখারী শরীফ)
মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন,
الطيرة شرك قاله ثلاثا.
অর্থ :অশুভ বা কুলক্ষণ মানা শেরেক, যা তিনবার বললেন।” (আবু দাউদ শরীফ ও তিরমিযী শরীফ)
কাজেই উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ সমূহের বর্ণনা মুতাবেক সুওয়ালে বর্ণিত কুলক্ষণ সমূহ এবং এছাড়াও সমাজে আরো যে সমস্ত কুলক্ষণ রয়েছে, তা পালন করা বা বিশ্বাস করা শেরেকীর অন্তর্ভূক্ত।শেরেক সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
ان الله لا يغفر ان يشرك به ويغفر مادون ذالك لمن يشاء.
অর্থ :নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক ক্ষমা করবেন না, যারা শেরেক করে এবং ক্ষমা করবেন তা (শেরেক) ব্যতীত যাকে ইচ্ছা।” (পবিত্র সুরা নিসা শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৬)
অতএব, প্রত্যেক মুসলমানের জন্যে এই প্রকার কুলক্ষণ থেকে বেঁচে থাকা ফর-ওয়াজিবের অন্তর্ভূক্ত। (বোখারী, মুসলিম, আবূ দাউদ, তিরমিযী, ফতহুল বারী, ওমদাতুল ক্বারী, শরহে নববী, বযলুল মাজহুদ, উরফুস্ সাযী এবং সমূহ আক্বাইদের কিতাব)
আবা-৩৭
৬৬৫ নং- সুওয়াল : মেয়েদের জন্য জুমুয়া ও ঈদের নামায আবশ্যক কিনা? যদি আবশ্যক হয় তারা কি একাকী আদায় করবে, না জামাতে আদায় করবে? জানতে চাই।

সুওয়াল :মাসিক আত্ তাওহীদপত্রিকার রবিউল আউয়াল ১৭ হিজরী জুলাই/আগষ্ট৯৬ইঃ সংখ্যায় সমস্যা ও সমাধান বিভাগে নিম্নলিখিত সমস্যা ও তার সমাধান দেয়া হয়-
সমস্যা : মেয়েদের জন্য জুমুয়া ও ঈদের নামায আবশ্যক কিনা? যদি আবশ্যক হয় তারা কি একাকী আদায় করবে, না জামাতে আদায় করবে? জানতে চাই। 
সমাধান : মেয়েদের জন্য জুমা ও ঈদের নামায বাধ্যতামূলক নয়। ফিৎনার সম্ভাবনার কারণে তাদের জন্য জুমাতে উপস্থিত হওয়া অনুচিৎ। তবুও যদি পর্দা সহ নামাযে শরীক হয় নামায আদায় হবে। কিন্তু জুমুয়া না পড়ে ঘরে যোহর পড়া ও ঈদের জামাতে শরীক না হওয়া উত্তম।মাসিক আত্ তাওহীদপত্রিকার উক্ত সমাধানে একবার বলা হয়েছে- মেয়েদের জুমাও ঈদের নামায বাধ্যতামূলক নয় ও ফিৎনার জন্য উপস্থিত হওয়া অনুচিৎ এবং শরীক না হওয়াই উত্তম। আবার বলা হয়েছে পর্দাসহ নামাজে শরীক হলে নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
এখন আমার সুওয়াল হচ্ছে- সত্যি কি মেয়েদের জন্য ঈদ ও জুমুয়ার নামা বাধ্যতামূলক নয়? আর পর্দার সহিত যদি আদায় করে তাহলে আদায় হয়ে যাবে

জাওয়াব : মাসিক আত্ তাওহীদত্রিকার উক্ত সমাধান অশুদ্ধ হয়েছেপ্রথমত : মেয়েদের জন্য জুমুয়া ও ঈদের নামাজের জামায়াত বাধ্যতামূলক নয়। বরং একথা না বলে শরীয়তে মেয়েদের জন্য জুমুয়া ও ঈদের জামায়াত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলা উচিৎ ছিল।
কেননা পর্দার  গুরুত্ব ও মহিলাদের  ঘরে নামা পড়ার উৎসাহ ও ফযীলতপূর্ণ হাদীছ শরীফ উনার দিকে লক্ষ্য রেখে আমীরুল মুমিনীন, হযরত মর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালামইজতিহাদ করতঃ মহিলাদেরকে মসজিদে এসে জামায়াতে নামা পড়তে নিষেধ করেন। তখন মহিলারা হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার নিকট গিয়ে এ ব্যাপারে অভিযোগ করলে, জবাবে হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,

لوان رسول الله صلى الله عليه وسلم رأى ما احد ثت النساء لمنعهن.
অর্থ :যদি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহিলাদের বর্তমান অবস্থা দেখতেন, তবে অবশ্যই তিনি নিষেধ করতেন।” (বোখারী, মুসলীম, আবু দাউদ, আইনী শরহে বোখারী, ফাতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, এরশাদুস্ সারী, তাইসীরুল ক্বারী, বজলুল মাজহুদ, শরহে নববী, ফাতহুল মুলহিম) 
হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার এ কথার আসল অর্থ হলো- হযরত মর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম যা করেছেন, ঠিকই করেছেন। অর্থাৎ আমি উনার একথাকে পূর্ণরূপে সমর্থন করি। আর তাংর কথাকে করার অর্থই হলো, মহিলাদের মসজিদে যেতে নিষেধ করা।কাজেই যেখানে হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালামপবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে ইজতিহাদ করতঃ মহিলাদের মসজিদে উপস্থিত হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন এবং উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তা পূর্ণরূপে সমর্থণ করেন, সেখানে এর বিরোধীতা করে প্রথম যুগের দোহাই দিয়ে, মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামা পড়া সম্পূর্ণ পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের বিরোধী। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়,
عليكم بسنتى وسنة الخلفاء الرا شدين المهدين.
অর্থ :তোমাদের জন্য আমার সুন্নত এবং হযরত খোলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের সুন্নত পালন করা ওয়াজিব।” (মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরহে মিশকাত, শরহুত্ ত্বীবী, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, মোযাহেরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজিহ্, তালিকুছ ছবীহ)
এছাড়াও নিম্নোক্ত সকল কিতাবে মহিলাদের জামায়াতের জন্যে মসজিদে যাওয়া মাকরূহ তাহরীমী লেখা হয়েছে- উমদাতুল ক্বারী, ফয়জুল বারী, বযলুল মাজহুদ, মেরকাত, আশয়াতুল লুময়াত, আলমগীরী, তাতারখানিয়া, বাহ্রুর রায়েক, আইনী, বাদায়েউস সানায়ে, গায়াতুল আওতার, তাহ্তাবী, শামী, দুররুল মোখতার, রদ্দুল মোহ্তার, ফতওয়ায়ে হিন্দীয়া, আইনুল হেদায়া, নেহায়া, হেদায়া, ফাতহুল ক্বাদির, ফতওয়ায়ে দেওবন্দ, ফতওয়ায়ে রহিমীয়া, বাহ্রুর রায়েক, শরহে কানজুদ দাক্বায়েক্ব, মাদানুল হাক্বায়েক্ব, আহ্সানুল মাসায়েল, মিনহাতুল খালিক, আল জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ্, মারাকিউল ফালাহ্, মুহীত্ব, ফতওয়ায়ে নঈমিয়াহ্, আযীযুল ফতওয়া, ফতওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ, কিফায়াতুল মুফতী, বেহেস্তী জিওর ও ফতওয়ায়ে মাহ্মুদীয়াহ্)
দ্বিতীয়ত : পর্দার সহিত আদায় করলে আদায় হয়ে যাবে, এটা বলাও শুদ্ধ হয়নি। এটা ইজমায়ে আযীমতের খেলাফ হয়েছে। সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদগণ ফতওয়া দিয়েছেন, মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া মাকরূহ তাহরীমী। যদিও কোন কোন ইমাম-মুজতাহিদ শর্ত সাপেক্ষে মাকরূহতাহরীমী ফতওয়া দিয়েছেন। কিন্তু হানাফী মায্হাবের সকল ইমাম-মুজতাহিদগণ বিনাশর্তে মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া মাকরূহ্ তাহরীমী ফতওয়া দিয়েছেন। 
এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, 
قد اجمعت الامة على كراهة خروج النساء الى مسجد الجماعة.
অর্থ :মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতের সাথে নামাজ পড়া মাকরূহ্ তাহরীমী হওয়ার ব্যাপারে উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।” (ইমদাদুল আহ্কাম)
কাজেই, যেখানে বিশ্বের অসংখ্য ইমাম-মুজতাহিদগণ মহিলাদের মসজিদে যাওয়া মাকরূহতাহরীমী হিসেবে ফতওয়া প্রদান করেছেন, সেখানে এর বিরোধীতা করে এটাকে জায়েয বলা, মারাত্মক অপরাধ হয়েছে।
এখানে উল্লেখ যে, উমদাতুল ক্বারী, ফয়জুল বারী, বযলুল মাজহুদ, মেরকাত, আশয়াতুল লুময়াত, আলমগীরী, তাতারখানিয়া, বাহ্রুর রায়েক, আইনী, বাদায়েউস সানায়ে ইত্যাদি আরো অনেক কিতাবে মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া মাকরূহ্ তাহরীমী বলা হয়েছে। আর নামাজ মাকরূহ্ তাহরীমী হলে তা দোহ্রায়ে (পুণরায়) পড়া ওয়াজিব। (সমূহ ফিক্বাহ্র কিতাব দ্রষ্টব্য) মাসিক আত্-তাওহীদপত্রিকার যারা ফতওয়া দাতা তাদের সকলেরই তাহ্ক্বীক্ব করে ফতওয়া দেয়া উচিৎ। কেননা বিনা তাহ্ক্বীক্বে অশুদ্ধ ফতওয়া দেয়ার কারণে ফতওয়া দাতা এবং যারা ফতওয়ার উপর আমল করবে, তারা সকলেই পরকালের ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
[আরো বিস্তারিত জানতে হলে মাসিক আল বাইয়্যনাত পত্রিকা১১তম সংখ্যা দেখুন। সেখানে অসংখ্য দলীল-আদিল্লার মাধ্যমে বিস্তারিত ফতওয়া প্রদান করা হয়েছে যে, মহিলাদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত, জুমুয়া ও ঈদের নামাজের জামায়াতে উপস্থিত হওয়া মাকরূহ্ তাহরীমী]
আবা-৩৭
মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া মাকরূহ্ তাহরীমীর ফতওয়া- . https://khawajarazi.blogspot.com/2018/09/blog-post_840.html
৬৬৪ নং- আযান ও ইক্বামতের সময় বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করার প্রমাণ সহীহ্ পবিত্র হাদীছ শরীফ আছে কি? আর সহীহ্ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত না হলেই কি তা বিদ্য়াত? নির্ভরযোগ্য দলীল-আদিল্লার ভিত্তিতে জাওয়াব দানে খুশী করবেন।


সুওয়াল : মাসিক মুঈনুল ইসলাম সেপ্টেম্বর/৯৬ সংখ্যার জিজ্ঞাসা-সমাধান বিভাগের কোন এক জিজ্ঞাসার সমাধানে লেখা হয়েছে যে, “আযান-এক্বামতে বা অন্য কোনভাবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নাম শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুমু খেয়ে চোখে নাগানোর বিশুদ্ধ কোন প্রমাণ কোথাও নেই। যে কারণে তা বিদ্আত হিসেবে চিহ্নিত।”     অর্থাৎ তাদের উপরোক্ত বক্তব্যের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে- (১) আযান ও ইক্বামতের সময় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করার বিশুদ্ধ কোন প্রমাণ তাফসীর, হাদীছ শরীফ, ফিক্বাহ্ ও ফতওয়ার কোন কিতাবেই উল্লেখ নেই। (২) আর যে সকল বিষয় সহীহ্ বা বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত নয়, তা বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্।
এখন আমার সুওয়াল হলো- আযান ও ইক্বামতের সময় বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করার প্রমাণ সহীহ্ পবিত্র হাদীছ শরীফ আছে কি? আর সহীহ্ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত না হলেই কি তা বিদ্য়াত? নির্ভরযোগ্য দলীল-আদিল্লার ভিত্তিতে জাওয়াব দানে খুশী করবেন।

জাওয়াব : আযান ও ইক্বামতের সময় বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করা সম্পর্কিত মাসিক মুঈনুল ইসলামের উপরোক্ত বক্তব্য ডাহা মিথ্যা, মনগড়া, বিভ্রান্তিকর ও জেহালতপূর্ণ। তাদের এ বক্তব্য এটাই প্রমাণ করে যে, তারা হাদীছ শরীফ ও তার উছূল সম্পর্কে নেহায়েতই অজ্ঞ। কেননা তারা প্রথমেই বলেছে যে, বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করা সম্পর্কে বিশুদ্ধ কোন প্রমাণ কোথাও নেই। অথচ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার কিতাবে বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করার ব্যাপারে সহীহ্ হিসেবে মরফু ও মাওকুফ হাদীছ বর্ণিত রয়েছে। অবশ্য কেউ কেউ জঈফ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। এ প্রসঙ্গে মারাকিউল ফালাহ্-এর ১৩৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে যে,
وذكر الديلمى فى الفردوس من حديث ابى بكر رضى الله عنه مرفوعا من مسح العين بباطن انملة السابتين بعد تقبيلهما عند قول المؤذن اشهد ان محمدا رسول الله وقال اشدان محمدا- عبده ورسوله .......... حلت له شفاعتى.
অর্থ :ইমাম দায়লামী রহমতুল্লাহি আলাইহি (উনার বিখ্যাত ও মশহুর হাদীছ শরীফের কিতাব) ফিরদাউস লিদ্ দায়লমীতেহযরত আবূ বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম থেকে মরফু হাদীছ উল্লেখ করেন যে, যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের আযানের সময় মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ্ শুনে অঙ্গুলী চুম্বন করে চোখে বুছা দিবে ..... তার জন্য আমার সুপারিশ ওয়াজিব।এছাড়াও ইমাম ছাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহিউনামাকাসিদুল হাসানাকিতাবে, মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহিউনামওযুআতুল কবীরকিতাবে এবং মুহাম্মদ তাহের ফাত্তানী রহমতুল্লাহি আলাইহিউনামাজমাউল বিহারকিতাবে আযানের সময় অঙ্গুলী চুম্বন করা সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ উনাকে মরফু হিসেবে সহীহ্ বলে উল্লেখ করেছেন। আর মুফতী আমীমুল ইহ্সান সাহেব উনাফতওয়ায়ে বরকতীয়ায়পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকেমওকুফহিসেবে সহীহ্ বলে উল্লেখ করেন।
অতএব, মাসিক মুঈনুল ইসলাম পত্রিকায় যে লিখেছে, “আঙ্গলী চুম্বনের ব্যাপারে বিশুদ্ধ কোন প্রমাণ কোথাও নেই।তা উপরোক্ত দলীল ভিত্তিক বর্ণনা দ্বারা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা প্রমাণিত হলো। দ্বিতীয়তঃ তারা বুঝাতে চেয়েছে যে, “যে বিষয়ে বিশুদ্ধ (হাদীছ শরীফ উনার) প্রমাণ নেই, তা করা বিদ্আত।তাদের এ বক্তব্যটিও নিতান্ত অজ্ঞতামূলক, দলীল বিহীন। পবিত্র কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের খেলাফ তো অবশ্যই। কারণ শরীয়তের কোথাও একথা উল্লেখ নেই যে, কোন বিষয়ে সহীহ্ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার প্রমাণ না থাকলেই তা বিদ্য়াত। বরং শরীয়তের বিধান হলো- যেসকল বিষয় সহীহ্ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত নয় বরং জঈফ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত, সেসকল বিষয়ও ফযীলত লাভের উদ্দেশ্যে আমল করা কখনো বিদ্য়াত নয় বরং জায়েয ও মুস্তাহাব। এ প্রসঙ্গে ফিক্বাহের বিখ্যাত কিতাব ফতহুল ক্বাদীর”-এ উল্লেখ আছে যে,
الا ستحباب يثبت بالضعيف غير الموضوع.
অর্থ :জঈফ পবিত্র হাদীছ শরীফ, যা মওজু নয়, তদ্বারা মুস্তাহাব প্রমাণিত হয়।কাজেই যেখানে আযানের সময় বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করা সম্পর্কেজঈফ হাদীছ তো অবশ্যই, উপরোন্ত মরফূ ও মওকুফ পবিত্র হাদীছ শরীফ সহীহ হিসেবে বর্ণিত আছে। সেখানে এটাকে বিদ্য়াত বলা কি করে জায়েয বা শরীয়তসম্মত হতে পারে? মূলতঃ এটাকে বিদয়াত বলার অর্থই হচ্ছে- পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার উছূলকে অস্বীকার করা এবং অনুসরণীয় হক্কানী-রব্বানী আলেমগণ উনাদের প্রতি বিদয়াতের তোহত দেয়া। কেননা অনুসরণীয় ও বিশ্বখ্যাত বহু ইমাম, মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরামরহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁদের স্ব স্ব কিতাবে আযানের মধ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করে চোখে বুছা দেয়ার আমলকেমুস্তাহাব বলে ফতওয়া দিয়েছেন। যেমন এ প্রসংগে আল্লামা কাহেস্তানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ফতওয়া হলো-
اعلم انه يستحب ان يقال عند سماع الاولى من الشهادة الشانية قرة عينى بك يارسل الله صلى الله عليه وسلم وعند سماع  الثانية يقال اللهم متعنى بالسمع والبصر بعد وضع ظغر الابها مين على العنين فانه صلى الله عليه وسلم يكون قائدا له الى الجنة. 
অর্থ :জেনে রাখ, আযানের সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শুনে প্রথমবার র্কুরাতু আইনী বিকা ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএবং দ্বিতীয়বার আল্লাহুমা মুতয়িনী বিস্সাময়ি ওয়াল বাছারপাঠ করার পর বৃদ্ধা অঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন করে উভয় চোখে বুছা দেয়া মুস্তাহাব। আর এরূপ আমলকারীকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে টেনে বেহেশ নিয়ে যাবেন। (জামিউর রুমুজ, কানযুল ইবাদ, শরহে কবীর, শরহে ইলিয়াছ)এছাড়াওনিম্নোক্ত সকল কিতাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন করে চোখে বুছা দেয়াকে জায়েয, ফযীলতের কারণ ও মুস্তাহাব বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন- তাফসীরে জালালাইন, তাফসীরে রুহুল বয়ান, শরহে নেকায়া, মাজমাউল বিহার, ফতওয়ায়ে শামী, মাযমুয়ায়ে ফতওয়া, ফতওয়ায়ে খাজানাতুর রেওয়ায়েত, ফতওয়ায়ে সিরাজুম মুনীর, ফতওয়ায়ে মেফতাহুল যিনান, ফতওয়ায়ে সিদ্দীকিয়া, ফতওয়ায়ে বরকতীয়া, মাকাসিদুল হাসানা, এয়ানাতুত্ তালেবীন আলা হল্লে আলফাযে ফাত্হিল মুবীন, কেফায়াতুত্ তালেবীর রব্বানী লি রেসালতে আবি যায়িদিল কায়রুয়ানী, মুনীরুল আইন ফী তাকবীলুল ইবহামাইন, নাহ্জুস্সালামাহ্ ফী তাকবীলিল ইবহামাইনে ফিল ইক্বামা, ছালাতে নক্শী, হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামীন, কুওয়াতুল কুলুব, কিতাবুন নেয়ামুল ইনতেবাহ্, তরীকুল ইসলাম, জায়াল হক্ব ইত্যাদি আরো অনেক কিতাবেই এটাকে জায়েয, ফযীলতের কারণ ও মুস্তাহাব বলা হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো- মাসিক মুঈনুল ইসলামের বক্তব্য মোতাবেক উল্লিখিত কিতাবসমূহের লেখকগণ এটাকে জায়েয-মুস্তাহাব বা ফযীলতের কারণ বলে বিদ্য়াতীদের অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন কি? (নাউযুবিল্লাহ্ মিন যালিক)
এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয় বিষয় এই যে, শরীয়ত যে বিষয়ে স্পষ্টভাবে কোন আদেশ বা নিষেধ প্রদান করেনি, তা মোবাহ্ হওয়ার ব্যাপারে সকলেই একমত। তবে আযানের সময় বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করার আমলযেখানে মরফু ও মওকুফ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত, তা কি করে বিদ্য়াত হতে পারে? আর যদি উক্ত হাদীছ শরীফকে জঈফও ধরে নেই, তথাপিও তা বিদ্য়াত হতে পারেনা। কারণ সকল মুহাদ্দিসগণের মতেই জঈফ হাদীছ শরীফ ফযীলত অর্জনের জন্য আমল করা জায়েয। আর জঈফ হাদীছ শরীফ দ্বারাও মুস্তাহাব প্রমাণিত হয়।
কাজেই কোন বিষয়ে বিশুদ্ধ প্রমাণ না থাকলেই তা বিদ্য়াত নয়। বরং শরয়ী দলীল-প্রমাণ ব্যতীত কোন বিষয়কে বিদ্য়াত বলা জেহালত ও গোমরাহী বৈ কিছুই নয়উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হলো যে, আযানের সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন করে চোখে বুছা দেয়া সম্পর্কিত মাসিক মঈনুল ইসলামের উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ অশুদ্ধ, দলীলবিহীন, বিভ্রান্তিকর ও লামায়ে কিরামগণ উনাদের প্রতি বিদয়াতের তোহত স্বরূপ। মূলকথা হলো, আযান-ইক্বামত ও অন্যান্য সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন করে চোখে বুছা দেয়া জায়েয ও মুস্তাহাব হওয়ার মতটিই অধিক সহীহ্, গ্রহণযোগ্য ও সর্বজন স্বীকৃত। যার প্রমাণ তাফসীর, হাদীছ, ফিক্বাহ, ফতওয়া ও অন্যান্য কিতাবসমূহে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে।
[বিঃদ্রঃ আরো বিস্তারিত জানতে হলে মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার ১ম বর্ষ ৩য় সংখ্যার অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াপাঠ করুন।]
আবা-৩৭

অঙ্গুলী চুম্বনের ফতওয়া