৬৩৯ নং- সুওয়াল : আযানের জবার দেওয়া কি ফরজ না ওয়াজিব না সুন্নত জানতে চাই।


সুওয়াল : মাসিক মদীনা জুন৯৬ সংখ্যার প্রশ্নোত্তর বিভাগের ২৯নং প্রশ্নের উত্তর বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। আপনারা আপনাদের আল বাইয়্যিনাতের সুওয়াল-জাওয়াব বিভাগে তার সঠিক ফায়সালা দিয়ে বিভ্রান্তি নিরসন করার জন্য অনুরোধ করছি।
মাসিক মদীনার প্রশ্ন : আযানের জবার দেওয়া কি ফরজ না ওয়াজিব না সুন্নত জানতে চাই।
মাসিক মদীনার উত্তর : আযানের জবাব দেওয়া মোস্তাহাব।

জাওয়াব : মাসিক মদীনার উক্ত উত্তর সম্পূর্ণ ভুল হয়েছে। আযানের জবাব দেয়া যে ওয়াজিব তা বহু ফিক্বাহের কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং উনার উপরই ফতওয়া দেয়া হয়েছে। সুতরাং এ সাধারণ মাসয়ালা ভুল করলে সমাজে স্বাভাবিকভাবেই বিভ্রান্তি ছড়ানোর কথা। তবে উত্তর দাতার উচিৎ কোন মাসয়ালা বলার পূর্বে তাহক্বীক্ব করে বলা। কারণ এ ভুলের জন্য সকলের ওয়াজিব তরকের গুণাহ উক্ত ভুল উত্তর দাতার উপরই বর্তাবে।
অধিকাংশ ফক্বীহগণের মতানুসারে আযানের জাওয়াব দেয়া ওয়াজিব। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن ابى سعيد الخدرى رضى الله تعالى  عنه  قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا سمعتم النداء فقولوا مثل ما يقول المؤذن.
অর্থ : হযরত আবূ সাঈদ খুদরি রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “তোমরা যখন আযান শুন, তখন মুয়াজ্জিন যা বলে, তোমরাও তাই বল।” (বোখারী শরীফ ১/১৫২ পৃঃ, মুসলিম শরীফ, তিরমিযী ১/৪০৭ পৃঃ, আবু দাউদ ১/১৪৪ পৃঃ, নাসাঈ শরীফ, ইবনে মাযাহ ১/১২১ পৃঃ,  মুয়াত্তা ইমাম মালেক পৃঃ৬১, মুয়াত্তা ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি পৃঃ৮৫)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن ابى هريرة رضى الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اذا اذن المؤذن فقولوا مثل قوله.
অর্থ : হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “মুয়াজ্জিন যখন আযান দেয়, তোমরা মুয়াজ্জিনের অনুরুপ বল।” (ইবনে মাযাহ ১/১২১ পৃঃ)
এ পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুসারে বুঝা যায় যে, আযানের শব্দ যা রয়েছে, শ্রবণকারী তাই বলবে, বোখারী ও মুসলীম শরীফ উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে, “হাইয়া আলাস সালাহ ও ফালাহ শব্দদ্বয়ের স্থলে লা-হাওলা-ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলতে হবে।এটা হাশিয়ায়ে মুয়াত্তা ইমাম মুহম্মদ-এ উল্লেখ রয়েছে (৮৫ পৃষ্ঠা)। উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুসারে ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ও আসহাবে জাওয়াহিরের মত হচ্ছে- আযানের মৌখিক জাওয়াব দেয়া ওয়াজিব (ঐ ৮৫ পৃষ্ঠ)। তবে কেউ কেউ আযানের জাওয়াব দেয়া মুস্তাহাব বলেছেন, এটা ঠিক নয় এ কারণে যে, অধিকাংশ রেওয়ায়েতই মৌখিক জাওয়াবের পক্ষে, তাছাড়া হাদীছ শরীফ-উনার ইবারতে ল্ফèèৈব্জ শব্দটি ব্জহৃ॥ উনার সিগাহ। আর উছূূল হচ্ছে॥ আমাদের হানাফীদের নিকট  ব্জহৃ॥  উনার হাক্বীক্বত হচ্ছে- èভ্রèব্দ তাই যে পর্যন্ত উনার বিপরীত কোন দলীল পাওয়া না যাবে, সে পর্যন্ত   ব্জহৃ॥ব্জহৈৃম্ভ্রল্ফৈ  কে   èভ্রèব্দ উনার উপর রাখতে হবে।
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার হুকুম এ পর্যায়ভূক্ত নয় কি? এ হুকুমের বিপরীত কোন হাদীছ শরীফ, যারা মৌখিক জাওয়াবকে মুস্তাহাব বলেন, তারা দেখাতে পারবেন কি? কোথাও না। সুতরাং মৌখিকভাবে আযানের জাওয়াব দেয়া ওয়াজিব সাব্যস্ত হলো। (আলমগীরী, বাহরুল মুহীত্ব, মারাকিউল ফালাহ, হাশিয়ায়ে তাহতাবী, ফতহুল ক্বাদীর, কবিরী, আরকানে আরবা, হাশিয়ায়ে তাবিনুল হাকায়েক, শামী ইত্যাদি কিতাবে আযানের মৌখিক জাওয়াবকে ওয়াজিব বলা হয়েছে।
আবা-৩৫

0 Comments: