খতমে
নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র?
খতমে
নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির
( ইসলামী শরীয়ত উনার হুকুম মুতাবেক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয় (ঊমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে, তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড )
(১)
কাদিয়ানি
রদ!
(দ্বিতীয়
ভাগ)
বাহরুল
উলুম,
ফখরুল ফুক্বাহা, রইছুল মুহাদ্দিসীন, তাজুল মুফাসসিরীন, হাফিযে হাদীছ, মুফতীয়ে আ’যম,
পীরে কামিল, মুর্শিদে মুকাম্মিল হযরত মাওলানা
আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানি রদ” কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খণ্ডে সমাপ্ত)। আমরা ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাত’ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ
করছি। যাতে কাদিয়ানিদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফিরকা থেকে আহ্লে
সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হেফাজত হয়। আল্লাহ পাক আমাদের
প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন। (আমীন)
উনার
কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃতি করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে
প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
মির্জ্জা
গোলাম আহমদ কাদেয়ানি ছাহেব প্রতিশ্রুত
ইছা মছিহ
হইতে পারেন কিনা ?
(৭) মিশকাত, ৪৭৩/৪৭৪
পৃষ্ঠা :
فبيما
هو كذلك اذاوحى الله الى عيسمى انى قد اخرجت عبادا لى لايدان لاحد بقتالهم
فحرزعبادى الى الطورو يبعث الله يا جوج رما جوج وهم من كل حدب يسلون فيمر اوائلهم
على بحيرة طبرية فيشربون ما فيها ويمر اخر هم فيقول لقد كان فى هذه مرة ماء ثم
يسيرون حتى ينتهوا الى جبل الخمر وهو جبل بيت القدس فيقولون لقد قتلنا من فى الارص
فلنقتل من فى السماء فيرمرن بنشايهم الى السماء فيرد الله عليهم نشابهم مصضوبة دما
ويحصر نبى الله واصحابه حتى يكون راس الثور لا حدهم خير من مائة دينار لا حدكم
اليوم فير غب نبى الله غيسى واصحابه فير سل الله عليهم النغف فى رقابهم فيصبحون قرسى كموت نفس واحدة ثم يهبط نبى الله
عيسى واصحابه الى لارض قلا يجدون فى الارض موضع شبر الاملاه زهمهم ونتنهم فير سل
الله طيرا كا عناق البخت فتحملهم فتطر حهم حيث شاء الله ويستو قد المسلمون من
قسيهم ونشابهم وجعابهم سبح سنين.
(হজরত) ইছা এরূপ অবস্থায় থাকিবেন, এমতাবস্থায় মহান আল্লাহ পাক তিনি (হজরত) ইছার নিকট এই অহি প্রেরণ করিবেন যে, নিশ্চয়ই আমি আমার এরূপ একদল বান্দাকে বাহির করিলাম যে তাহাদের সহিত যুদ্ধ করার
কাহারও শক্তি নাই, কাজেই তুমি তুর পর্ব্বতে আমার বান্দাগণকে লইয়া সুরক্ষিত কর।
মহান আল্লাহ পাক ইয়াজুজ মাজুজ সম্প্রদায়কে প্রেরণ করিবেন, তাহারা
প্রত্যেক শক্তিও উচ্চ ভূমি হইতে সবেগে ধাবিত হইবে, তাহাদের
প্রথমদল তিবরিবা উপসাগরের নিকট উপস্থিত হইয়া উহার সমস্ত পানি পান করিয়া ফেলিবে।
উহাদের শেষ দল তথায় উপস্থিত হইয়া বলিবে, এই উপসাগরে এক সময় পানি ছিল, তৎপরে তাহারা ভ্রমণ করিতে করিতে বয়তুল মোকাদ্দছের ‘খামার-পর্ব্বতের
নিকট পৌঁছিবে,
তৎপরে তাহারা বলিবে, নিশ্চয়ই
আমরা জমিনবাসীদিগকে হত্যা করিয়াছি, এক্ষণে তোমরা আইস, আমরা আছমান বাসিদিগকে হত্যা করিব, তথন তাহারা তীরগুলিকে আছমানের
দিকে নিস্পাপ করিবে, ইহাতে মহান আল্লাহ পাক তাহাদের তীরগুলিকে রক্তে রঞ্জিত
করিয়া তাহাদের দিকে ফিরাইয়া দিবেন। আল্লাহতায়ালা উনার নবী (হযরত ইছা) এবং তাঁহার
সহচরগণ অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকিবেন, এমনকি বর্ত্তমান কালের তোমাদের
একশত ‘দীনার অপেক্ষা তাঁহাদের একটী গরুর মস্তক সমধিক মূল্যবান হইবে। তখন
আল্লাহতায়ালা উনার নবি ইছা এবং তাঁহার সহচরগণ (আল্লাহ্তায়ালা উনার নিকট) দোয়া
করিবেন,
আল্লাহতায়ালা তাহাদের (ধ্বংসের) জন্য তাহাদের গ্রীবাদেশে
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কীট প্রেরণ করিবেন, ইহাতে তাহারা সমস্তই একেবারে নিহত
হইবে। তৎপরে আল্লাহতায়ালার নবী ইছা ও তাঁহার সহচরগণ (পর্ব্বত হইতে) জমিতে নামিয়া
আসিবেন,
তাঁহারা জমিতে এরূপ একবিঘত স্থান পাইবেন না-- যাহা তাহাদের
চর্ব্বি ও দুর্গকে পরিপূর্ণ না হইয়াছে। তখন আল্লাহ খোরাছানের উষ্ট্রগুলির
গ্রীবাদেশের ন্যায় লম্বা গ্রীবাধারী পক্ষী সমূহকে প্রেরণ করিবেন, ইহারা উহাদিগকে উঠাইয়া লইয়া আল্লাহ যেস্থানে ইচ্ছা করিয়াছেন তথায় নি?প করিবে। মুছলমানেরা তাহাদের ধনুক, তীর ও তীরদানগুলি সাত বৎসর
জ্বালাইবে।
(৮) উক্ত কেতাবে, ৪৭৪
পৃষ্ঠা :
ثم
يرسل الله مطرا لايكن منه بيت مدر ولاوبر فيغسل الارض حتى يتر كها كالزلقة ثم يقال
للارض انتى ثمر تك وردى بر كتك فيومنذ ياكل العصابة من الرمانة ويستظلون بقحفها
ويسبارك فى الرسل حتى اللقحة من الابل لتكفى لفيأم من الناس واللقحة من البقر
لتكفى القبيلة من الناس واللقحة من الغنم لتكفى الفخذ من الناس فبيناهم كذلك اذ بعت
الله ريحا طيتة فتاخذ هم تحت اباطهم فتقبض روح كل مومن وكل مسلم ويبقى شرار الناس
ويتهارجون فيها تهارج الحمر فعليهم تقوم الساءة رواه مسلم الاالرواية الثانية رواه
الترمذى.
“তৎপরে
মহান আল্লাহ পাক এরূপ বর্ষার পানি প্রেরণ করিবেন যে, কোন
মৃত্তিকা ও লোমের গৃহ উহার প্রতিবন্ধক হইতে পারিবে না, এই পানি
জমিকে ধৌত করিয়া ফেলিবে, এমন কি উহাকে পরিষ্কৃত প্রস্তরের
ন্যায় করিয়া তুলিবে। তৎপরে জমিকে বলা হইবে যে, তুমি
তোমার ফল উৎপন্ন কর ও বরকত ফিরাইয়া আন; সেই সময় একদল লোক একটী ডালিম
ভক্ষণ করিবে এবং উহার ছাল দ্বারা ছায়া গ্রহণ করিবে (অর্থাৎ উহা ছাতা রূপে ব্যবহার
করিবে),
দুগ্ধে বরকত প্রদান করা হইবে, এমন কি
একটী দুগ্ধবতী উষ্ট্রীকার দু-একদল লোকের পথে যথেষ্ট হইবে, একটী
দুগ্ধবতী গাভী লোকের পরিজনের পক্ষ এবং একটী দুগ্ধবতী ছাগী কতকগুলি লোকের পক্ষ
যথেষ্ট হইবে। তাহারা এই অবস্থায় থাকিবেন, হঠাৎ আল্লাহ সুগন্ধি বায়ু
প্রবাহিত করিবেন, উহা তাহাদের বগলের নিম্নদেশে সংক্রামিত হইবে, ইহাতে সমস্ত ইমানদার ও মুছলমানের প্রাণ বাহির করিয়া লওয়া হইবে, বদকার লোকেরা বাকি থাকিয়া তাহারা পৃথিবীতে গর্দ্দভগুলির ন্যায় প্রকাশ্য ভাবে
স্ত্রী-সঙ্গম করিতে থাকিবে, তাহাদের উপর কেয়ামত উপস্থিত হইবে।
দ্বিতীয় রেওয়াতের কয়েকটী শর্ত তেরমেজি, আর সমস্ত কথাগুলি মোছলেম রেওয়াএত
করিয়াছেন।
(৯) মেশকাত, ৪৮০
পৃষ্ঠা :
ثم
يموت فيد فن معى فى قبرى فاقوم انا وعيسى فى قبر واحد بين ابى بكر وعمر رواه ابن
الجوزى.
“হজরত
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলিয়াছেন, তৎপরে
ইছা মৃত্যু প্রায় হইবেন এবং আমার সহিত আমার কবরস্থানে মদফুন (প্রোথিত) হইবেন, আমি ও ইছা একই কবরস্থানে আবুবকর ও ওমারের মধ্যস্থলে পুনরুত্থিত হইব।
এবনোল-জওজি ইহা রেওয়াএত করিয়াছেন।?
(অসমাস্ত)
*******************************************************
খতমে নুবুওওয়াত
প্রচার কেন্দ্র
খতমে নুবুওওয়াত
অস্বীকারকারীরা কাফির
(ইসলামী শরীয়ত
উনার হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত
হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন। এরপর
তওবা না করলে,
তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড।)
(১)
কাদিয়ানি রদ!
(দ্বিতীয় ভাগ)
বাহরুল উলুম, ফখরুল ফুক্বাহা, রইছুল মুহাদ্দেসীন, তাজুল মুফাসসিরীন, হাফেযে হাদীছ, মুফতীয়ে আ’যম, পীরে কামিল, মুর্শিদে মুকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি
আলাইহি কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানি রদ” কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)।
আমরা মাসিক
আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানিদের সম্পর্কে সঠিক
ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফিরক্বা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার
হেফাজত হয়। মহান আল্লাহ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন। আমীন!।
উনার কিতাব
থেকে হুবহু উদ্ধৃতি করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত
ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
(পূর্ব প্রকাশিতের
পর)
মির্জ্জা
গোলাম আহমদ কাদেয়ানি ছাহেব প্রতিশ্রুত ইছা মছিহ হইতে পারেন কিনা?
(১০) ছহীহ তিরমিযী শরীফ :
مكتوب فى التوراة صفت محمد وعيسى بن مريم
يدفن معه.
“তওরাতে (হজরত) মোহাম্মদ ও ইছা বেনে মরয়েমের লক্ষণ
বর্ণনা স্থলে লিখিত আছে, (হজরত) ইছা আলাইহিস সালাম তাঁহার নিকট
মদফুন (প্রোথিত) হইবেন।”
(১১) ছহীহ
মুসলিম :
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا تزال
طائفة من امتى يقاتلون على الحق ظاهرين الى يوم القيمة قال فينزل عيسى بن مريم
فيقول اميرهم تعال صلا لنا فيقول لا ان تعضكم على بعض امراء تكرمة الله هذه الامة.
“রাছুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি বলিয়াছেন,
সর্ব্বদা আমার উম্মতের মধ্যে একদল সত্যের উপর যুদ্ধ করিবেন, ক্বিয়ামত অবধি পরাক্রান্ত থাকিবেন, ইহাতে ইছা ইবনে মরিয়ম নাযিল হইবেন।
তখন উনাদের আমির বলিবেন, আপনি আসুন, আমাদের জন্য নামায পড়ুন। তৎশ্রবণে তিনি
বলিবেন- না, মহান আল্লাহ
এই উম্মতকে সম্মানিত করিয়াছেন, এই হেতু তোমাদের কতক অন্যদের উপর আমির
হইবেন।”
(১২) ছহীহ
মুসলিম :
فيفتحون قسطنطينية فبينا هم يقتسمون الغنائم
قد علقوا سيو فهم الزبتون اذصاح فيهم الشيطان ان المسبح قد خلفهم فى اهليكم فيخر
جون وذالك باطل فاذا جاؤا الشام خرفبينما يقدون للقتال يسون الصفوف اذا اقيمت
الصلوة فينزل عيسى بن مريم فامهم فاذا رأه عدو الله ذاب كما يذوب الملح فى الماء
قلو تر كه لا نذاب حتى يهلك ولكن يقتله الله بيده فيريهم دمه فى حربته.
“তৎপরে উক্ত মদীনার সৈন্যদল কনষ্টান্টিনোপল জয় করিবেন, উনারা জয়তুন বৃক্ষে তরবারিগুলি টাঙ্গাইয়া রাখিয়া লুক্তিতবস্তুগুলি বন্টন করিতে
থাকিবেন,
এমতাবস্থায় শয়তান তাহাদের মধ্যে উচ্চ শব্দ করিয়া বলিবে, নিশ্চয়ই দাজ্জাল তোমাদের পশ্চাতের দিক্ হইতে তোমাদের পরিজনের মধ্যে প্রবেশ করিয়াছে, ইহাতে উনারা তথা হইতে বাহির হইয়া পড়িবেন, অথচ এই সংবাদ
বাতিল প্রমাণিত হইবে। তৎপরে উনারা যখন শামের নিকট উপস্থিত হইবেন, দাজ্জাল বাহির হইবে। উনারা যুদ্ধের আয়োজন করার জন্য ব্যুহ রচনা করিতে থাকিবেন, এমতাবস্থায় নামাযের একামত দেওয়া হইবে, হঠাৎ মরয়েমের
পুত্র ইছা নাজিল হইবেন, তৎপরে তিনি উনাদের সেনাপতি হইবেন, যখন আল্লাহতায়ালা উনার শত্রু উনাকে দেখিবে, বিগলিত হইয়া
যাইবে,
যেরূপ লবন পানির মধ্যে বিগলিত হইয়া যায়। যদি তিনি উক্ত দাজ্জালকে
ঐ অবস্থায় ত্যাগ করিতেন, তবে সে বিগলিত হইয়া ধ্বংস প্রাপ্ত
হইত, কিন্তু মহান আল্লাহ তাহাকে উক্ত নবীর হস্তে নিহত করিবেন, তাহাদিগকে উহার রক্ত নিজের ক্ষুদ্র বল্লমে দেখাইবেন।
(১৩) মিশকাত শরীফ, ৫২৯/৫৩০ পৃষ্ঠা ;-
رايتنى فى جماعة من الانبياء .. و اذا عيسى
قائم يصلى اقرب الناسبه شبها عروة بن المسعود الضقفى رواه مسلم.
হজরত বলিয়াছেন, “আমি নিজেকে
নবীগণের জামায়াতের মধ্যে দেখিলাম, আমি হঠাৎ ইছাকে দাঁড়াইয়া নামায পড়িতে
দেখিলাম,
তিনি আকৃতিতে ওরওয়া বেনে মছউদ ছাকাফির সমধিক নিকট নিকট। মোছলেম
ইহা রেওয়াএত করিয়াছেন।” ইহা মে’রাজের রাত্রির
ঘটনা।
মিশকাত
শরীফ উনার ৫০৮ পৃষ্ঠায় ছহীহ মুসলিমের উক্ত মর্মের অন্য একটি পবিত্র হাদীছ শরীফ লিখিত
আছে।
(১৪) মিশকাত
শরীফ,
৪৮১ পৃষ্ঠা :
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يخرج
الدحال --- فيبعت الله عيسى بن مريم كانه عروة بن مسعود رواه مسلم.
“নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি বলিয়াছেন, দাজ্জাল বাহির হইবে, তৎপরে আল্লাহ ইছা বেনে মরয়েমকে প্রেরণ করিবেন, যেন তিনি
ওরওয়া বেনে মছউদ। মোছলেম ইহা রেওয়াএত করিয়াছেন।”
(১৫) আদ দুররুল মনছুর :
اخرج
احمد وابن ابى شيبة وسعيدبن منصور والبيهقى وابن جرير ووالحاكم وصححه وابن ماجة عن
ابن مسعود رضى قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لقيت ليلة اسرى بى ابراهيم
وموسى وعيسى عليهم الصلام فذكروا امر الساعة فردوا امر هم الى ابراهيم فقال لا علم
لى بها فردوا امرهم الى عيسى فقال اما وجبتها فلم يعلم بها احد الا الله وفيما عهد
الى ربى ان الدجال خارج ومعى فضيبان فاذا رأنى ذاب كما يذوب الرصاص فيهلكه الله.
আহমদ, ইবনে আবি
শায়বা,
ছইদ ইবনে মনছুর, বয়হকি, এবনো জরির, হাকেম ও এবনো-মাজা (হজরত এবনো মছউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হইতে রেওয়াএত করিয়াছেন
এবং হাকেম উহা ছহিহ্ বলিয়াছেন, রছুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলিয়াছেন, যে রাত্রে আমাকে মে’রাজ শরীফ
উনার মধ্যে লইয়া যাওয়া হইয়াছিল, আমি (হজরত) এবরাহিম, মুছা ও ইছা আলাইহিস সালাম উনার সহিত সাক্ষাৎ করিয়াছিলাম, এমতাবস্থায় উনারা কেয়ামতের বিষয় উত্থাপন করিলেন, তাঁহারা তাহাদের
এই ব্যাপারটী (হজরত) এবরাহিম আলাইহিস সালাম উনার নিকট পেশ করিলেন, তদুত্তরে তিনি বলিলেন, এ সম্বন্ধে আমার জ্ঞান নাই। তৎপরে
উনারা উনাদের এই ব্যাপারটী (হজরত) মুছা আলাইহিস সালাম উনার নিকট পেশ করিলেন। তিনিও
তাহাই বলিলেন। তৎপরে উনারা এই বিষয়টী (হজরত) ইছা আলাইহিস সালাম উনারা নিকট উপস্থিত
করিলেন। তদুত্তরে তিনি বলিলেন, উহার নির্দ্দিষ্ট সময় আল্লাহ্ পাক
ব্যতীত কেহই অবগত নহে। আমার প্রতিপালক আমাকে অবগত করাইয়াছেন, যে,
নিশ্চয় দাজ্জাল বাহির হইবে, আমার সঙ্গে
দুইখানা ছড়ি থাকিবে। যখন সে আমাকে দেখিবে, তখন বিগলিত
হইয়া যাইবে,
যেরূপ শীশা বিগলিত হইয়া যায়, ইহাতে মহান
আল্লাহ পাক তাহাকে বিধ্বস্ত করিবেন।”
মূল মন্তব্য, মির্জ্জার মাহ্দী দাবি খন্ডন পুস্তকে লিখিত হইয়াছে যে, হজরত ইছা
আলাইহিস সালাম নাজেল হওয়ার পূর্ব্বে মুছলমান শহরগুলি খ্রিষ্টানদের রাজ্যভুক্ত হইবে, কেবল পবিত্র মদীনা শরীফ মুছলমানগণের আশ্রয় স্থল হইবে। বায়তুল মোকাদ্দেছর সমধিক
উন্নতি হইবে,
মদীনা শরীফ বিরানা (উৎসন্ন) হইবে। খীষ্টানেরা হলবের নিকট ৯,৬০,০০০ সৈন্য লইয়া যুদ্ধের জন্য সমবেত হইবে। এমাম মাহ্দীর
দল এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধে জয়ী হইবেন, তৎপরে উনারা কনষ্টান্টিনোপল অধিকার করিবেন। তৎপরে উনারা শামদেশে প্রত্যাবর্ত্তন
করিলে,
দাজ্জাল বাহির হইবে। মুছলমানেরা দাজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার
ছাজ সরঞ্জাম করিতে থাকিবেন, এমতাবস্থায় হজরত ইছা মছিহ আছমান হইতে
দেমাশকের পূর্ব্বদিকস্ত মিনারার উপর নাযেল হইবেন।
এখনও কনন্টিনোপল
মুছলমানদিগের অধিকারভুক্ত আছে, মদীনা শরীফ উৎসন্ন হয় নাই, ভয়ঙ্কর যুদ্ধ সংঘটিত হয় নাই, কাজেই ইছা বেনে মরয়েম কিরূপে নাযিল
হইবেন?
(অসমাপ্ত)
(২) ইসলামী
শরীয়ত মুতাবিক
পাকিস্তান
সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের কাফির ঘোষণা!
অনুবাদিকা-
শায়লা মুর্শেদ
(পূর্ব প্রকাশিতের
পর)
তাফসীর বর্ণনা
করতে গিয়ে সব মশহুর তাফসীরকারকগণই পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩:৪০ উনার একই রকম অর্থ ব্যাখ্যা
করেছেন,
যাঁরা একটি বিতর্কিত বিষয় আলোচনায় তুলেছেন। মুসলমানদের বিশ্বাস
যে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার পুণরূত্থান দিবসের কিছু পূর্বে আবার আসবেন। পবিত্র
কুরআন মজীদ উনার এবং সুন্নাহ প্রতি অত্যন্ত অশ্রদ্ধা বশতঃ কেউ কেউ এই বলতে চায় যে, মুসলমানদের এটি একটি দূর্বল ধারণা। কিন্তু ধারণাটির মৌলিকত্ব নিয়ে বেশীরভাগই একমত।
উনাদের মতে,
পবিত্র কুরআন মজীদ উনার সঙ্গে মুসলমানদের এই ধারণার কোন বিরোধ
থাকতে পারেনা। কেননা, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম, যিনি মহান
আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার অনেক আগে নবী হিসেবে মনোনিত হয়েছিলেন, যখন কুরআন
শরীফ উনার (উক্ত) পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যেই উল্লেখ আছে, হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর এই নবী উনারই পূনঃআগমন ঘটবে।
তবে উনি আসবেন মুসলিম উম্মার একজন সদস্য এবং একজন ইসলাম উনার শরীয়ত উনার অনুসারী হিসেবে।
এ ব্যাখ্যার উল্লেখযোগ্য তাফসীরের বয়ান এবং মতামতসমূহ এখন উদ্ধৃত করা যেতে পারে-
(১) আল্লামা
ইবন-ই-যারির তাবারি রহমতুল্লাহি আলাইহি (২২৪-৩১০ হিজরী) : উনার প্রসিদ্ধ পবিত্র কুরআন
শরীফ উনার তাফসীরে এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যা এইভাবে করেছেন, “তিনি নুবুওওয়াতের অধ্যায়কে বন্ধ করে তার ইতি টেনেছেন। পূণরূত্থান দিবসের আগে এই
দরজা আর কারো জন্য উন্মুক্ত হবেনা।” [তাফসীর ইবন-ই-যারির, ২২ খন্ড, ১২নং পৃষ্ঠা]
(২) হযরত
ইমাম তাহাবি রহমতুল্লাহি আলাইহি (২৩৯-৩২১ হিজরী) : “আকিদা সালকিয়া” গ্রন্থে ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহহি, ইমাম আবূ
ইউসূফ রহমতুল্লাহি আলাইহহি এবং হযরত ইমাম মুহাম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহহি প্রমুখের মতানুসারে
নুবুওওয়াতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে লিখছেন, “..... এবং যে,
মুহাম্মদ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহান আল্লাহতায়ালা
উনার মনোনিত বান্দা, (উনার) নবী এবং নেতা এবং তিনিই শেষ নবী এবং হক্ব দলের নেতা এবং
নবী ও রসূলগণ উনাদের মধ্যে শ্রেষ্ট্র এবং মহান আল্লাহ তায়ালা উনার পেয়ারা হাবীব।” [শরাহ্ আত্-তাহাভিয়াহ্ ফিল আকিদাতিস সালফিয়া, দার-উল-মায়ারিফ, মিশর পৃষ্ঠাসমূহ- ১৫, ৮৭, ৯৬, ১০০,
১০২]
(৩) আল্লামা
ইবন-ই-হাজর আন্দালাসি রহমতুল্লাহি আলাইহহি (৩৮৪-৪৫৬ হিজরী) লিখেছেন, “সম্পূর্ণ
নিশ্চিত হওয়া যায় যে, রসূলে আকদ্দাস হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
ওফাতের পর থেকে ওহীর মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ওহীসমূহ মানুষের মধ্যে আশা বন্ধ
হয়ে গিয়েছে। কারণ ওহীসমূহ মহান আল্লাহ তায়ালা উনার একমাত্র রসূলগণ উনাদের কাছেই প্রেরণ
করে থাকেন এবং পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ জাল্লা শানুহু তিনি স্বয়ং
সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, “হযরত মুহম্মদ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের মধ্যে
কোন জাতির জনক নন। তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সত্য প্রতিষ্ঠা করনেওয়ালা এবং
শেষ নবী।”
[আল মুযাল্লাহ্/মুয়াল্লাহ্, ১ম খন্ড, ২৬ পৃষ্ঠা]
(৪) ইমাম
গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫০-৫০৫ হিজরী) বলেন : “মুসলিম উম্মা
সাধারণভাবেই একমত যে, রসূলে করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের শেষ
নবী এবং উনার পর আর কোন নবী আসবেন না। .... সমগ্র উম্মাহ একমত যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, এই শব্দদ্বয় দ্বারা কেবল এই অর্থই প্রকাশ করেছেন যে, “উনার পর আর
কোন নবী কিংবা রসূল আসবেন না।” -এই আক্বিদার সঙ্গে যে মতদ্বৈত্যতা
প্রদর্শন করবে,
তার ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। তাছাড়া মুসলিম উম্মার সিদ্ধান্তে গৃহীত
যে, “উক্ত শব্দদ্বয়ের ভিন্ন অর্থ করবে, তার স্থান মুসলিম উম্মার মধ্যে হওয়ার
কোন সুযোগ নেই। কারণ সে মুসলিম উম্মার সিদ্ধান্তকেও অস্বীকার করছে।” [আল ইকতিসাদ ফিল ই’তিক্বাদ, মিশর ১১৪ পৃষ্ঠা]
(৫) মহিয়্যূস্
সুন্নাহ্ বাসভী রহমতুল্লাহি আলাইহি (মৃত্যু- ৫১৬ হিজরীঃ উনার মা’য়ালিম আত্ব ত্বানজীল গ্রন্থে লিখেছেন- “মহান আল্লাহ
পাক নুবুওওয়াতের অধ্যায় সমাপ্ত করে দিয়েছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্য দিয়ে; অতএব তিনিই নবীকূলের শেষ নবী ... এবং
হযরত ইবনে আব্বাস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সর্বশক্তিমান
মহান আল্লাহ পাক তিনি ঘোষণা করে দিয়েছেন (উনার এই পবিত্র শ্বাসতঃ বাণীর মাধ্যমে) যে, উনার (সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর আর কাউকে নুবুওওয়াত দান
করা হবেনা।”
[মা’য়ান আত্ব ত্বানযিল, তৃতীয় খন্ড,
১৫৮ পৃষ্ঠা] (৬) আল্লাম্মা
জামাখশারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৬৭-৫৩৮ হিজরী) : উনার আল কাশশাফ গ্রন্থখানীতে এমন বলেন, “যদি প্রশ্ন করো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি কিভাবে শেষ নবী হতে পারেন? যখন এই বিশ্বাস প্রচলিত আছে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি পূনঃরূত্থান দিবসের পূর্বে এই পৃথিবীতে আসবেন? আমি তো এই উত্তরই করবো- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এই খেয়ালে নবী আলাইহিস সালামগণ উনাদের শেষ নবী যে, উনার পর কোন ব্যক্তিই নুবুওওয়াত প্রাপ্ত হবেন না। কিন্তু হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম
উনার ক্ষেত্রে যা বলার আছে, সেটা হচ্ছে- তিনি হচ্ছেন সেই সফল ব্যক্তিদের
একজন,
যাঁরা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার পূর্বে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে মনোনিত নবী ও রসূল ছিলেন এবং
যখন তিনি আবার আসবেন, হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইসলামী
শরীয়ত উনার অনুসারী হয়েই তিনি আসবেন এবং উনার ক্বিবলার দিকে মুখ করেই মহান আল্লাহ পাক
উনার উদ্দেশ্যে নামায আদায় করবেন। ইসলামী উম্মাহর আর অন্য সদস্য ঠিক যেমন করে থাকেন।” [আল কাশশাফ ২য় খন্ড ২১৫ পৃষ্ঠা]
(৭) কাজী
আইয়াজ (মৃত্যু ৫৪৪ হিজরী) লিখেছেনঃ- “যে নুবুওওয়াত দাবী করে অথবা মনে করে
যে কারো পক্ষে নুবুওওয়াত লাভ করা এবং হৃদয়ের বিশুদ্ধতা অর্জনের মাধ্যমে নুবুওওয়াতের
পদ লাভ করা সম্ভব, এমন সব দার্শনিকরা এবং এমন ধরণের সব উক্তিকারী, এছাড়া এমন কিছু লোক যারা নুবুওওয়াত দাবী না করলেও দাবী করে থাকে যে, তারা ঐশী বাণী প্রাপ্ত হন, তারা সকলেই নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অবিশ্বাসকারী এবং অস্বীকারকারীর
দল। কেননা,
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদেরকে
জানিয়েছেন যে,
উনার পরবর্তী কোন সময়ে কোন নবী বা রসূল আসবেন না এবং তিনিই আমাদের
শেষ নবী,
তিনিই হযরত নবী আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের শেষ নবী এবং পবিত্র
ওহী মুবারক স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার হতেই আগত যে, তিনি নুবুওওয়াতের
অধ্যায় সমাপ্ত করবেন এবং তিনি প্রেরিত হয়েছেন- সকল যুগের মানব সম্প্রদায়ের জন্যে। আর
সমস্ত উম্মাই একমত যে, এই বাণীসমূহ নিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যেও কোন ইখতিলাফ নেই, বাণীগুলো একেবারেই স্পষ্ট অর্থ প্রকাশ করছে। শরীয়ত উনার মতদ্বৈত্যতার কোন অবকাশ
নেই, ইসলামী শরীয়ত উনার অমান্যকারীরা কাফির।” [শিফা, দ্বিতীয় খন্ড পৃষ্টা ২৭০-২৭১]। (অসমাপ্ত)
খতমে নুবুওওয়াত
প্রচার কেন্দ্র
খতমে নুবুওওয়াত
অস্বীকারকারীরা কাফির
(ইসলামী শরীয়ত
উনার হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত
হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন। এরপর
তওবা না করলে,
তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড।)
(১)
কাদিয়ানি রদ!
(দ্বিতীয় ভাগ)
বাহরুল উলুম, ফখরুল ফুক্বাহা, রইছুল মুহাদ্দেসীন, তাজুল মুফাসসিরীন, হাফেযে হাদীছ, মুফতীয়ে আ’যম, পীরে কামিল, মুর্শিদে মুকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি
আলাইহি কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানি রদ” কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)।
আমরা মাসিক
আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানিদের সম্পর্কে সঠিক
ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফিরক্বা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার
হেফাজত হয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন। আমীন!।
উনার কিতাব
থেকে হুবহু উদ্ধৃতি করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত
ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
(পূর্ব প্রকাশিতের
পর)
(পূর্ব
প্রকাশিতের পর)
মির্জ্জা
গোলাম আহমদ কাদেয়ানি ছাহেব প্রতিশ্রুত ইছা মছিহ হইতে পারেন কিনা? পবিতর হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে মরয়েমের পুত্র মছিহ, ইছা, নবিয়ুল্লাহ,
রুহোল্লাহ শব্দ উল্লিখিত হইয়াছে, মির্জ্জা
সাহেবের মাতার নাম কি মরয়েম ছিল? তিনি কি নবি ও রুহোল্লাহ ছিলেন? এমাম বুখারি ছহিহ্ বুখারিতে
প্রথমে কয়েকটী আয়ত উল্লেখ করিয়াছেন- যাহাতে হজরত মছিহ্ ইছা- বেনে মরয়েমের নাম আছে, তৎপরে ইছা বেনে মরয়েমের নাযিল হওয়ার অধ্যায় উল্লেখ করিয়াছেন ইহাতে স্পষ্ট ভাবে
বুঝা যাইতেছে যে, পবিতর কুরআন শরীফ উনার মধ্যে যে ইছরাইল বংশধর ইছা বেনে
মরয়েমের কথা আছে, তিনিই আছমান হইতে নাযিল হইবেন। ১৩/১৪ নম্বর হাদিছে উল্লিখিত
আছে যে,
হজরত ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মে’রাজের রাত্রে ইছা আলাইহিস সালাম উনাকে ওরওয়া বেনে মছউদের আকৃতিতে দেখিয়াছেন, আরও যে হজরত মছিহ, দাজ্জালকে হত্যা করিবেন, তাঁহার
আকৃতিও উক্ত ওরওয়া বেনে মছউদের ন্যায়, ইহাতে স্পষ্ট ভাবে বুঝা যাইতেছে
যে শেষ যুগে যে হজরত ইছা বেনে মরয়েম নাজিল হইবেন, তিনি
ইছরাইলিয় ইছা হইবেন। তিনি পাঞ্জাবের মির্জ্জা সাহেব কিছুতেই নহেন। ১৫ নম্বর হাদিছে
বুঝা যাইতেছে যে, ইছরাইলীয় ইছা বেনে মরয়েম দাজ্জাল হত্যা করিতে আছমান হইতে
দুনইয়ায় নামিবেন। মে’রাজে যে হজরত ইছা আলাইহিস সালাম উনার হজরত নবী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সহিত সাক্ষাৎ ও কথা-বার্ত্তা হইয়াছিল তিনি গুরুদাসপুরের
মির্জ্জা গোলাম আহমদ ছিলেন কি? ১২ নম্বর হাদিছে আছে যে, হজরত ইছা আলাইহিস সালাম দাজ্জাল হত্যা করিবেন, মির্জ্জা সাহেব এজালায় আওহামের ১৩৪ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন, ইউরোপের
উন্নত জাতিগুলি দাজ্জাল। যদি মির্জ্জা ছাহেবের দাজ্জালের ব্যাখ্যাটী সত্য হয়, তবে কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে জিজ্ঞাসা করি, আপনাদের
মির্জ্জা ছাহেব উক্ত উন্নত জাতিদিগকে হত্যা সাধন করিয়াছেন কি? যদি না করিয়া থাকেন, তবে তিনি কিরূপে দাজ্জাল
হত্যাকারী প্রতিশ্রুত ইছা মছিহ্ হইবেন? মির্জ্জা ছাহেব আইয়ামোছ-ছেলেহ কেতাবের ৬১ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন, খ্রীষ্টান্ জাতিরা দাজ্জাল, আরও তিনি উক্ত কেতাবের ১২৯/১৩৮
পৃষ্ঠায় বৃটিশ গভর্ণমেন্টকে খোদার রহমত বলিয়াছেন। তিনি তোহফায় কায়ছারিয়া ও ছেতারায়
কায়ছারিয়ায় বৃটিশ গবর্ণমেন্টের বিশ্বাসী সৈন্য হইয়া থাকার দোয়া করিয়াছেন। মির্জ্জা সাহেব যে জাতিকে অযথা ভাবে দাজ্জাল
বলিয়া অভিহিত করিয়াছেন, আবার তাহাদের ভক্ত অনুগত থাকায়
দোয়া করিতেছেন,
তবে তিনি কিরূপে দাজ্জাল হত্যাকারী মছিহ্ হইবেন? মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল আওহামের
২৭৯/২৮০ পৃষ্ঠায় পাদ্রীদিগকে দার্জ্জাল বলিয়া প্রকাশ করিয়াছেন, কিন্তু আমরা জিজ্ঞাসা করি, তিনি পাদ্রীদিগের কি ধ্বংস
করিয়াছেন?
তিনি নিজেই এজালাতোল আওহামের ২৮১ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন যে, এই শতাব্দীর শেষ ভাগে ৫ লক্ষ লোক হিন্দুস্থানে খীষ্টান হইয়া গিয়াছে। আরও তিনি ২৮২ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন, পাদ্রীরা ২১ বৎসরে ৭ কোটি পুস্তক বিতরণ করিয়াছেন। তিনি মছিহ্ হইয়া ইহার গতিরোধ
কিছু করিতে পারিয়াছেন কি? তিনি লিখিয়াছেন, যদি তোমরা খ্রীষ্টানদিগের নিকট ইছা
আলাইহিস সালামকে মৃত প্রতিপন্ন করিতে পার, তবে
খ্রীষ্টানী মত দুনইয়া হইতে অদৃশ্য হইয়া যাইবে। তিনি
২৫/৩০ বৎসর হইতে হজরত ইছা আলাইহিস সালাম
মরিয়া গিয়াছে বলিয়া চীৎকার করিতেছেন, কিন্তু খ্রীষ্টানি মতের কেশাগ্র
কম্পিত হইল না। বরং খৃষ্টানেরা ইহাতে হাসিতেছেন, এবং
বলিয়া থাকেন যে,
আমাদের কেতাবে হজরত ইছা
আলাইহিস সালাম-এর মরিয়া ‘কাফ্ফারা’ হওয়ার
কথা আছে,
অবশ্য কুরআন শরিফে তাঁহার না মরিবার কথা আছে, কাজেই ইহাতে খৃষ্টানি মতের পৃষ্ঠপোষকতা ও কোরআনি মতের বিলোপ সাধন হয়। কুরআন শরীফ ইয়াহুদী, খৃষ্টান, পারশিক,
পৌত্তলিক ইত্যাদি সমস্ত মতের অসারতা এরূপ ভাবে সপ্রমাণ
করিয়াছে যে,
প্রকৃত পক্ষে সমস্ত মত কেয়ামত অবধি মস্তক উত্তোলন করিতে
পারিবে না। মাওলানা রহমতুল্লাহ সাহেব এজহারোল-হক কেতাবে এবং মাওলানা মোহাম্মদ আলি
সাহেব ‘দাফেয়োত্তলবিছাত’, ‘পয়গামে-মুহম্মদী’ ও ‘তারানায়-হেজাজি’তে এবং অন্যান্য আলেমগণ অন্যান্য কেতাবে পাদ্রিদিগের তীব্র
প্রতিবাদ করিয়াছেন। এই হিসাবে মির্জ্জা
সাহেব পাদ্রিদের বিরুদ্ধে বড় বেশী কিছু করেন নাই। কাজেই মির্জ্জা সাহেব কোন্
হিসাবে ‘মছিহ’
হইবেন? মির্জ্জা সাহেব এজালাতোল-আওহামের
১৫৯/১৬১/১৬৫/ ১৬৬ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন, এবনো-ছাইয়াদ নিশ্চয় প্রতিশ্রুত
দাজ্জাল,
এই ব্যক্তি হজরতের জামানায় ছিল, মুছলমান
হইয়া মরিয়া গিয়াছে। এক্ষণে আমরা কাদিয়ানি
বন্ধুদিগকে জিজ্ঞাসা করি, সাড়ে তের শতাব্দির পূর্ব্বে
দাজ্জাল মরিয়া গিয়াছে, এতকাল পরে আপনাদের মছিহ আসিয়া কি গোর হইতে দাজ্জালকে জীবিত
করিয়া তাহার নিপাত সাধন করিবেন? যদি এবনো-ছাইয়াদ প্রকৃত দাজ্জাল
হয়, তবে মির্জ্জা সাহেব কিছুতেই মছিহ হইতে পারেন না।
১/২
নম্বর হাদিছে আছে যে, হজরত ইছা আলাইহিস
সালাম ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ রূপে আসিবেন, খৃষ্টান ধর্ম লোপ করিবেন। যেরূপ
হজরত এবরাহিম আলাইহিস সালাম ও মোহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা
প্রতিমাগুলি চুর্ণ করিয়াছিলেন, সুরার পাত্রগুলি ভাঙ্গিয়া
দিয়াছিলেন,
আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য দেব-দেবীর পূজার স্থানগুলি উৎসন্ন
করিয়াছিলেন,
পূজার বৃক্ষগুলি কাটিয়া ফেলিয়াছিলেন। হজরত মুছা আলাইহিস সালাম পূজিত গোবৎসকে খন্ড খন্ড
করিয়াছিলেন,
সেইরূপ হজরত ইছা
আলাইহিস সালাম ক্রুশ ভাঙ্গিয়া ফেলিতে আদেশ দিলে ইয়াহুদী ও খ্রীষ্টান উভয়
সম্প্রদায় মিথ্যারূপে হজরত ইছা আলাইহিস সালাম উনার ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার ধারণা করিয়া
লইয়াছে,
এই বাতীল মতের বশবর্ত্তী হইয়া ইয়াহুদীরা তাহাকে
অভিসম্পাতগ্রস্থ ও খ্রীষ্টানেরা তাঁহাকে জগতের কাফ্ফারা বলিয়া থাকে। এই হেতু ইহারা
ক্রুশের সম্মান করিয়া থাকে, হজরত ইছা আলাইহিস সালাম তাহাদের এই মিথ্যা অপবাদ লোপ
করার জন্য ক্রুশ ধ্বংস করার আদেশ দিবেন। তওরাতে শূকর হারাম হইয়াছে, হজরত ইছা আলাইহিস সালাম উনার মতে উহা
হারাম,
এই হেতু তিনি একদল শূকর নষ্ট করিয়াছিলেন, মথি,
৮ অধ্যায়, ৩০-৩২ পদ দ্রষ্টব্য। পৌল স্বপ¦যোগে উহা ভক্ষণ করিয়াছিল, এই হেতু অন্যায় ভাবে উহা হালাল বলিয়া প্রচার করিয়াছিল। হজরত ইছা আলাইহিস সালাম এই মিথ্যা মত ধ্বংস করা এবং
প্রকৃত খৃষ্টানি শরিয়ত নহে, প্রচার করা উদ্দেশ্য শূকর ধ্বংস
করার আদেশ প্রদান করিবেন। মূল কথা, খৃষ্টানি মত ইছলামি শরিয়ত
প্রকাশিত হওয়ার পরে মনছূখ হইয়া গিয়াছিল, কিন্তু খ্রীষ্টানেরা অন্যায় ভাবে
নিজেদের মনছূখ মত আকড়াইয়া ধরিয়া রাখিয়াছিল, এই হেতু
তিনি খ্রীষ্ট-ধর্ম্ম লোপ করিবেন। (অসমাপ্ত )
(২)
ইসলামী
শরীয়ত মুতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের কাফির ঘোষণা!
অনুবাদিকা
- শায়লা মুর্শেদ
(পূর্ব
প্রকাশিতের পর)
(৮) ইমাম
রাজী (৫৪৩-৬০৬ হিজরী) রহমতুল্লাহি আলাইহি ‘খাতামান্
নাবিউন’
কথাটার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে উনার তাফসীর-ই-কাবীরে বলেছেন, এ প্রসঙ্গে
‘খাতামান নাবিউন’ বলার কারণ হচ্ছে এই যে, যদি কোন নবী উনার উত্তরাধিকারী পান, তিনি উনার কিছু সংস্কার/
সতর্কীকরণের কাজ এবং যদি কোন অসম্পূর্ণ কাজ থেকে থাকে, তবে তা
কিভাবে করতে হবে, না করতে হবে সেসব কিছুর বর্ণনা পরবর্তীর জন্য রেখে জান এবং
যিনি আসছেন উনাকে অবশ্যই সেই কাজ সম্পূর্ণ করতে হয়। কিন্তু কোন নবী, যিনি,
কোন নবীকে উত্তরাধিকারী হিসেবে পাবেন না, উনাকে উনার উম্মতের জন্য অনেক বেশী কষ্ট ভোগ করতে হয় এবং উনার দায়িত্ব হয়ে পড়ে
স্পষ্ট অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান প্রণয়ন করা। কেননা, তিনি তো
এমনই এক পিতা সাদৃস্য, যিনি উনার পুত্রদের নিয়ে দূর্শ্চিন্তাগ্রস্থ এই ভেবে যে, উনার পুত্ররা উনার পর তাঁদেরকে দেখাশুনার জন্য আর কোন পৃষ্টপোষক পাবে না এবং
অভিভাবকহীন হয়ে যাবে। [তফসীর-ই-কাবীর, ৬ষ্ট খন্ড, ৫৮১ পৃষ্ঠা] (৯) আল্লামা শাহ্রাস্থানী (মৃত্যু ৫৪৮ হিজরী) (রহঃ) তাঁর আল
মিলাল-ওয়াল-নিহাল গ্রন্থে লিখছেন- এবং এভাবে যে বলে ....... যে, হযরত মুহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পরে (হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম ব্যতীত) অন্য আরেকজন “নবী”
হিসেবে মনোনীত হবেন, সে কাফির
এবং এ প্রসঙ্গে কোন দ্বিমত নেই।” [আল মিলাল-ওয়াল নিহাল, ৩য় খন্ড,
২৪৯ পৃষ্ঠা] (১০) আল্লামা বাইদাওই (মৃত্যু ৬৮৫ হিজরী) (রহঃ), তাঁর তফসীর আনোয়ার-উৎ-তানবিলে লিখেছেন- “সাইয়্যিদুল
মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম হচ্ছেন শেষ নবী, যিনি নবী ও রসূলগণের (আগমনের)
ধারাবাহিকতার মধ্যে ইতি টেনেছেন। অর্থাৎ ইনিই তিনি, যাঁর
মধ্য দিয়ে নবী ও রসূলকূলের ধারাবাহিকতায় সীলমোহর করা হয়েছে। এবং নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বশেষ নবী হওয়ার
ঘটনাকে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম আবার আসবেন তা কোনভাবেই অস্বীকার করেনা, কারণ তিনি যখন আসবেন, তিনি ইসলামী শরীয়ত উনার একজন
অনুসারী হবেন।”
[আনোয়ার-উত-তানযিল, ৪র্থ খন্ড, ১৬৪ পৃষ্ঠা] (১১) আল্লামা হাফিজ উদ্দিন নাসাফি (মৃত্যু ৭১০ হিজরী) রহমতুল্লাহি
আলাইহি উনার তফসীর গ্রন্থ “মাদারিক-উৎ-তানযিল”-এ লিখেছেন,
“নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন, খাতামুন নাবিউন, অর্থাৎ বলা যায় যে, হযরত নবী আলাইহিস সালামগণ তিনি
শেষ, উনার পর অন্য কোন ব্যক্তি নবী হিসেবে মনোনীত হবেন না। প্রসঙ্গক্রমে, (উল্লেখ্য যে,) হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম, তিনি হচ্ছেন উনাদের মধ্যে এমন একজন, যাঁরা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগে নবী
হিসাবে মনোনীত হয়েছিলেন, যখন তিনি দ্বিতীয়বার আসবেন, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার প্রতিষ্ঠিত ইসলামী শরীয়ত উনার অনুসারী হয়ে এবং উনার একজন উম্মত হিসাবে আসবেন।
[মাদারিক-উৎ-তানযিল, ৫ম খন্ড, ৪৭ পৃষ্ঠা] (১২) আল্লামা-আলা-উদ্দীন
বাগদাদী (মৃত্যু ৭২৫ হিজরী) রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার “খাজিন”
নামক তফসীর গ্রন্থে লিখেছেন, “ওয়া
খাতামান নাবীয়্যিন,” যার অর্থ হচ্ছে, আল্লাহু জাল্লা শানুহু, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
উপর হযরত নবী আলাইহিস সালামগণ উনাদের
মনোনয়নের ধারা বন্ধ করে দিয়েছেন। অতঃপর উনার পর যেমন কোন নবী আলাইহিস সালামগণ
উনাদের সাম্রাজ্য নেই, তেমনই নেই কোন সহযোগীতা বা
অংশীদারীত্ব,
উনান সঙ্গে এ বিষয়ে ........ আর এটাতো মহান আল্লাহ পাক উনার
ইলমে আছেই,
তিনি আর কোন নবী পাঠাবেন না।” [লা
তাবাত্ তাওয়াইল ফি মায়ানিত্ তানযিল, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠাসমূহ
৪৭১-৪৭২] (১৩) আল্লামা-ইবনে-কাসির (মৃত্যু ৭৭৪ হিজরী) রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার
প্রসিদ্ধ তফসীর রচনাতে লিখেছেন, সুতরাং, এ বিষয়ে
এ আয়াত হচ্ছে একটি স্পষ্ট ও স্বনির্দিষ্টভাবে বর্ণিত আদেশ যে, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর আর কোন নবী আলাইহিস
সালাম আসবেন না। কারণ রেসালত সুনির্দিষ্ট এবং নুবুওওয়াত সুনির্দিষ্ট নয়। প্রত্যেক হযরত
রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাই হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম, কিন্তু প্রত্যেক
হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনারা হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম নয় .... নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর এই পদ যে দাবী করে, সে হচ্ছে একটি মিথ্যুক, ভন্ড, পথভ্রষ্ট
এবং অবিশ্বাসী,
তার অলৌকিক বিদ্যা চর্চায়, যাদুমন্ত্র, ভেলকিবাজী মায়া বিদ্যার প্রয়োগ যা সে জানে তাতে কিছুই যায় আসে না। ...... এমন
লোক সেও,
ক্বিয়ামতের পূর্বে এই পদ দাবী করবে। [তফসীর-ইবন-ই-কাসির, ৩য় খন্ড পৃষ্ঠা ৪৯৩-৪৯৪] (১৪) আল্লামা জালাল-উদ্দীন সুয়ুতি রহমতুল্লাহি আলাইহি
(মৃত্যু ৯১১ হিজরী)
তাফসীরে জালালাইন শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
وكان الله بكل شئئ عليم
মহান আল্লাহ পাক তিনি
সর্বজ্ঞ,
জ্ঞানী এবং তিনি জানেন যে, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর আর কোন হযরত
নবী আলাইহিমুস সালাম নেই এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইসলামী শরীয়ত উনার অনুসারী হয়েই হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম
তিনি আবার আসবেন।” [জালালাইন পৃষ্ঠা-৭৬৮] (১৫) আল্লামা ইবনে নাযাইম (মৃত্যু ৯৭০ হিজরী) রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার
আল-আশবাহ-ওয়ান-নাজাইর বইটিতে লিখেছেন, “যদি কেউ অবিশ্বাস করে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত
হযরত নবী আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের মধ্যে শেষ নবী, ..... সে
মুসলমান নয়,
কারণ, এই বিশ্বাস ঈমানের অঙ্গ।” [আল আশবাহ-ওয়াল-নাজাইর, পৃষ্ঠা-১৭৯) (১৬) মুল্লাহ্ আলী
ক্বারী (মৃত্যু ১০১৬ হিজরী) রহমতুল্লাহি আলাইহি শারহ্ ফিক্বহে আকবর গ্রন্থখানীতে
লিখেছেন,
“মুসলিম উম্মার সর্বসম্মত গৃহীত মত তো আছেই যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর নুবুওওয়াতের
দাবীদার ব্যক্তি কাফির, পথভ্রষ্ট।” [শারহ্-ফিক্বহ্ আকবর, পৃষ্ঠা-২০২]
(১৭)
শায়েখ ইসমাইল হাক্কি (পবিতর বিছাল শরীফ ১১৩৭ হিজরী) রহমতুল্লাহি আলাইহি উপরোক্ত পবিতর
আয়াত শরীফ উনার বর্ণনা করতে গিয়ে উনার রূহুল বয়ান তফসীর গ্রন্থটিতে লিখেছেন, হযরত ইমাম আসিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি শব্দটির উচ্চারণ করেছেন খাতাম, যা একটি সীল করার যন্ত্র। যা দিয়ে কোন জিনিস সীল করা হয়। শব্দটি এই ইঙ্গিত
দিচ্ছে যে,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি একদম শেষে এসেছিলেন, উনার মধ্য দিয়ে নুবুওওয়াতের ধারা
সমাপ্ত এবং সীলকৃত .....। কেউ কেউ এই শব্দকেই ‘খাতিম’ হিসেবে পড়ে থাকেন। যার অর্থ কিনা, যে ব্যক্তি সীল করে। এভাবেই, খাতিম শব্দটিও খাতাম শব্দের প্রতিশব্দ। অদ্যবধি, উনার
উম্মতের মধ্যে নেককার মু’মিন আলেমগণ ধর্ম সংস্কারক হিসেবে
মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী হিসেবে এসে থাকেন। কারণ, নুবুওওয়াতের
পরম্পরা শেষ করে দেয়া হয়েছে এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত নবী আলাইহিমুস
সালামগণ উনাদের মধ্যে শেষ নবী হওয়ার ব্যাপারটা কোনভাবেই হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার দ্বিতীয়বার আসার ঘটনাকে
দিয়ে প্রভাবিত হয়না। কারণ, খাতাম-উন-নাবীউন অর্থ এই যে, উনার পর কোন নবী আর স্বীকৃত হবেন না। ..... এবং হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার
আগে হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। দ্বিতীয়বারের আসাটা উনার
জন্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
প্রতিষ্ঠিত ইসলামী শরীয়ত উনার অনুসারী হিসেবে হবে। উম্মতি হাবীবী’র মত তিনিও উনার নামায আদায় করবেন ক্বিবলামুখী হয়ে। তিনি হবেন নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খলিফা। এবং আহ্লে
সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনার অনুসারীগণ বিশ্বাস করেন যে, আমাদের
নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর
আর কোন নবী নেই,
কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনিই বলেছেন, “কিন্তু
তিনি হচ্ছেন,
মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল এবং হযরত নবী আলাইহিস সালামগণ
উনাদের মধ্যে শেষ।”
এবং
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঘোষণা করেছেন, “আমার পর
আর কোন নবী নেই।” এখন যে বলে যে, আমাদের নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার পরও আরো নবী আছেন, সে তো স্পষ্টই কাফির। কারণ সে
একটা আক্বায়েদের বিষয়ের বিশ্বাসকে অস্বীকার করলো, আবার সেও
কাফির,
যে এই বিশ্বাসে সন্দেহ পোষণ করলো। কারণ, হক্ব নাহক্ব থেকে পরিস্কারভাবে বিচ্ছিন্ন। রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার পর নুবুওওয়াতের দাবীদার ব্যক্তি ভন্ড, শঠ ছাড়া
আর কি- আর কিছু না। [রূহুল বয়ান, ২২তম খন্ড, পৃষ্ঠা-১৮৮]
(অসমাপ্ত)
আবা-১৮,১৯,২০
0 Comments:
Post a Comment