বিংব্যাগ নামক কোন ঘটনার কোন অস্তিত্ব আদৌ নেই। বিজ্ঞানের বরাত দিয়ে এসব মনগড়া কল্পকাহিনী বা রূপকথার গল্প যারা সাজিয়েছে তারা ভাঁড় আর প্রতারক বৈ কিছুই নয়।

বিংব্যাগ নামক কোন ঘটনার কোন অস্তিত্ব আদৌ নেই। বিজ্ঞানের বরাত দিয়ে এসব মনগড়া কল্পকাহিনী বা রূপকথার গল্প যারা সাজিয়েছে তারা ভাঁড় আর প্রতারক বৈ কিছুই নয়।

 নাস্তিকদের আপত্তি : আল্লাহ যদি পৃথিবী এবং আকাশম-লী ছয় দিনে সৃষ্টি করে থাকেন (Quran 50:38)  [যা মানুষের হিসেবে ১০০০ বছর (Quran 22:47, 32:5 অথবা ৫০০০০ বছর (Quran 70:4)] , তবে বিজ্ঞান কেন বলে বিগব্যাং সংগঠিত হওয়ার পর পৃথিবি তৈরি হতে প্রায় কয়েক বিলিয়ন বছর লেগেছে?

খণ্ডন : মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন ৬ ধাপে। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে এ ব্যাপারে ৭ খানা সুস্পষ্ট আয়াত শরীফ বিদ্যমান রয়েছেন।

اِنَّ رَبَّكُمُ اللهُ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ فِىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُـمَّ اسْتَوٰى عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُوْمَ مُسَخَّرَاتٍ بِاَمْرِهِ اَلَا لَهُ الْـخَلْقُ وَالْاَمْرُ تَبَارَكَ اللهُ رَبُّ الْعَالَمِيْنَ ﴿الأعراف: ٥٤﴾

اِنَّ رَبَّكُمُ اللهُ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ فِىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُـمَّ اسْتَوٰى عَلَى الْعَرْشِ يُدَبِّرُ الْاَمْرَ مَا مِنْ شَفِيْعٍ اِلَّا مِن بَعْدِ إِذْنِهِ ذَٰلِكُمُ اللهُ رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ اَفَلَا تَذَكَّرُونَ ﴿يونس: ٣﴾

وَهُوَ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ فِىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ لِيَبْلُوَكُمْ اَيُّكُمْ اَحْسَنُ عَمَلًا وَلَئِن قُلْتَ إِنَّكُم مَّبْعُوثُونَ مِن بَعْدِ الْمَوْتِ لَيَقُولَنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا اِنْ هَـٰذَا اِلَّا سِحْرٌ مُّبِينٌ ﴿هود: ٧﴾

الَّذِىْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُـمَّ اسْتَوٰى عَلَى الْعَرْشِ الرَّحْـمٰنُ فَاسْاَلْ بِهِ خَبِيرًا ﴿الفرقان: ٥٩﴾

اللهُ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُـمَّ اسْتَوٰى عَلَى الْعَرْشِ مَا لَكُم مِّن دُونِهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا شَفِيعٍ اَفَلَا تَتَذَكَّرُونَ ﴿السجدة: ٤﴾

وَلَقَدْ خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ وَمَا مَسَّنَا مِن لُّغُوْبٍ ﴿ق: ٣٨﴾

هُوَ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ فِىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُـمَّ اسْتَوٰى عَلَى الْعَرْشِ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الْاَرْضِ وَمَا يَـخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنزِلُ مِنَ السَّمَاءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا وَهُوَ مَعَكُمْ اَيْنَ مَا كُنتُمْ وَاللهُ بِـمَا تَعْمَلُونَ بَصِيْرٌ ﴿الحديد: ٤﴾

উপরোক্ত ৭ খানা সুস্পষ্ট আয়াত শরীফ উনাদের কোন আয়াত শরীফ উনার মধ্যেই বলা হয়নি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমান ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। নাস্তিকরা যেহেতু গ-মূর্খ ও ইসলাম বিদ্বেষী তথা সত্য প্রত্যাখ্যানকারী, তাই তারা সর্বাবস্থায় الْاَرْضَ শব্দ মুবারক উনার অর্থ করেছে “পৃথিবী”।

বস্তুত পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ উনাদের মধ্যে বর্ণিত الْاَرْضَ শব্দ মুবারক উনার দ্বারা যমীনকে বুঝানো হয়েছে। আর আসমানের ৭ স্তরের মতো যমীনের স্তরও ৭টি।

আর তাই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعالٰى عَنْهُ قَالَ بَيْنَمَا نَبِيُّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسٌ وَاَصْحَابُهُ اِذْ اَتَى عَلَيْهِمْ سَحَابٌ فَقَالَ نَبِيُّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَلْ تَدْرُوْنَ مَا هَذَا‏ فَقَالُوا اللهُ وَرَسُوْلُهُ اَعْلَمُ‏.‏ قَالَ هٰذَا الْعَنَانُ هٰذِهِ رَوَايَا الاَرْضِ يَسُوْقُهُ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالٰى اِلٰى قَوْمٍ لاَ يَشْكُرُوْنَهُ وَلاَ يَدْعُوْنَهُ‏ ثُـمَّ قَالَ‏ هَلْ تَدْرُوْنَ مَا فَوْقَكُمْ‏ قَالُوا اللهُ وَرَسُوْلُهُ اَعْلَمُ‏ قَالَ فَاِنَّـهَا الرَّقِيْعُ سَقْفٌ مَـحْفُوْظٌ وَمَوْجٌ مَكْفُوفٌ‏ ثُـمَّ قَالَ هَلْ تَدْرُوْنَ كَمْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهَا‏ قَالُوا اللهُ وَرَسُوْلُهُ اَعْلَمُ‏ قَالَ‏ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهَا مَسِيْرَةُ خَمْسِمِائَةِ سَنَةٍ‏ ثُـمَّ قَالَ هَلْ تَدْرُوْنَ مَا فَوْقَ ذَلِكَ‏ قَالُوا اللهُ وَرَسُوْلُهُ اَعْلَمُ‏ قَالَ‏ فَاِنَّ فَوْقَ ذَلِكَ سَـمَاءَيْنِ وَمَا بَيْنَهُمَا مَسِيْرَةُ خَمْسِمِائَةِ عَامٍ‏ حَتّٰى عَدَّ سَبْعَ سَـمَوَاتٍ مَا بَيْنَ كُلِّ سَـمَاءَيْنِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْاَرْضِ ‏ثُـمَّ قَالَ‏ هَلْ تَدْرُوْنَ مَا فَوْقَ ذَلِكَ قَالُوا اللهُ وَرَسُوْلُهُ اَعْلَمُ‏ قَالَ فَاِنَّ فَوْقَ ذٰلِكَ الْعَرْشَ وَبَيْنَهُ وَبَيْنَ السَّمَاءِ بُعْدُ مَا بَيْنَ السَّمَاءَيْنِ‏ ثُـمَّ قَالَ هَلْ تَدْرُوْنَ مَا الَّذِىْ تَـحْتَكُمْ قَالُوا اللهُ وَرَسُوْلُهُ اَعْلَمُ قَالَ‏ فَإِنَّهَا الأَرْضُ‏ ‏ثُـمَّ قَالَ‏ هَلْ تَدْرُونَ مَا الَّذِي تَحْتَ ذَلِكَ‏ قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ قَالَ‏ فَإِنَّ تَحْتَهَا الأَرْضَ الأُخْرَى بَيْنَهُمَا مَسِيرَةُ خَمْسِمِائَةِ سَنَةٍ‏ حَتَّى عَدَّ سَبْعَ أَرَضِينَ بَيْنَ كُلِّ أَرْضَيْنِ مَسِيرَةُ خَمْسِمِائَةِ سَنَةٍ ‏ثُـمَّ قَالَ‏ وَالَّذِي نَفْسُ مُـحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَوْ اَنَّكُمْ دَلَّيْتُمْ رَجُلاً بِـحَبْلٍ اِلَى الأَرْضِ السُّفْلَى لَـهَبَطَ عَلَى اللَّهِ‏ ‏ثُـمَّ قَرَأَ ‏(هو الأَوَّلُ وَالآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ‏)‏

অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন এক সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ও উনার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এক সাথে বসা ছিলেন। হঠাৎ উনাদের উপর মেঘরাশি প্রকাশিত হল। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের সুওয়াল মুবারক করেন, আপনারা জানেন এটা কি? উনারা বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারাই বেশি ভালো জানেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এটা হল যমিনের পানিবাহী উট। মহান আল্লাহ পাক তিনি একে এমন জাতির দিকে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন যারা উনার কৃতজ্ঞতাও আদায় করে না এবং উনার কাছে মুনাজাতও করে না। তিনি আবার সুওয়াল মুবারক করলেন, আপনাদের উপরে কি আছে তা জানেন? উনারা বললেন মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারাই বেশি ভালো জানেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এটা হল সুউচ্চ আকাশ, সুরক্ষিত ছাদ এবং আটকানো তরঙ্গ। তিনি আবার সুওয়াল মুবারক করলেন, আপনাদের এবং এর মাঝে কতটুকু ব্যবধান তা আপনাদের জানা আছে কি? উনারা বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারাই বেশি ভালো জানেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনাদের ও এর মাঝে ৫০০ বছরের পথের ব্যবধান। তিনি আবার সুওয়াল মুবারক করলেন, এর উপরে কি আছে তা আপনারা জানেন কি? উনারা বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারাই বেশি ভালো জানেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এর উপরে দুইটি আকাশ আছে যার মাঝে ৫০০ বছরের দূরত্ব, এমনকি তিনি ৭টি আকাশ গণনা করেন এবং ইরশাদ মুবারক করেন, প্রতি দু’টি আকাশের মাঝে পার্থক্য আকাশ ও যমীনের ব্যবধানের সমপরিমাণ। তিনি আবার সুওয়াল মুবারক করলেন, এর উপরে কি আছে তা কি আপনারা জানেন? উনারা বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারাই বেশি ভালো জানেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এগুলোর উপরে আছে (মহান আল্লাহ পাক উনার) আরশ মুবারক। আরশ মুবারক ও আকাশের মাঝের পার্থক্য দুই আকাশের মধ্যকার দূরত্বের সমান। তিনি আবার ইরশাদ মুবারক করেন, আপনারা কি জানেন আপনাদের নিচে কি আছে? উনারা বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারাই বেশি ভালো জানেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, উহা হল যমীন, তারপর আবার ইরশাদ মুবারক করেন, আপনারা কি জানেন এর নিচে কি আছে? উনারা বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারাই বেশি ভালো জানেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এর নিচে আরো এক ধাপ যমীন আছে এবং এতদুভয়ের মধ্যে ৫০০ বছরের দূরত্ব। তারপর ৭ স্তর যমীন গুণে ইরশাদ মুবারক করেন, প্রতি দুই স্তরের মাঝে ৫০০ বছরের দূরত্ব বর্তমান। তিনি আবার ইরশাদ মুবারক করেন, সেই মহান সত্তা উনার শপথ! যাঁর কুদরতী হাত মুবারক-এ আমার মহাসম্মানিত নূরুল আমর (প্রাণ) মুবারক! আপনারা যদি একটি রশি নিম্নতম যমীনের দিকে ছেড়ে দেন তাহলে তা মহান আল্লাহ পাক উনার পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছবে। তারপর তিনি এ আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করেন, هو الأَوَّلُ وَالآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ অর্থাৎ তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ তিনিই প্রকাশ্য এবং তিনিই গুপ্ত। তিনিই সর্ববিষয়ে সর্বশেষ পরিজ্ঞাত।” (তিরমিযী শরীফ : কিতাবুত তাফসীরিল কুরআন)

সুতরাং এটা সুস্পষ্ট যে, পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে الْاَرْضَ শব্দ মুবারক দ্বারা যমীনকে বুঝানো হয়েছে। 

আর তাই নিম্নোক্ত আয়াত শরীফ উনার অর্থ দাঁড়ায়- 

اللهُ الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَـمَاوَاتٍ وَمِنَ الْاَرْضِ مِثْلَهُنَّ

অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি সেই মহান সৃষ্টিকর্তা, যিনি ৭ আসমান সৃষ্টি করেছেন এবং সমসংখ্যক যমীনও সৃষ্টি করেছেন।” (পবিত্র সূরা ত্বলাক শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১২)

কিন্তু الْاَرْضَ শব্দ মুবারক উনার নাস্তিকীয় অর্থ গ্রহণ করলে উপরোক্ত আয়াত শরীফ উনার অর্থ দাঁড়ায়- 

 “মহান আল্লাহ পাক তিনি সেই মহান সৃষ্টিকর্তা, যিনি ৭ আসমান সৃষ্টি করেছেন এবং সমসংখ্যক পৃথিবীও সৃষ্টি করেছেন।”

অর্থাৎ নাস্তিকীয় অর্থ গ্রহণ করলে এই মহাবিশ্বে ৭টি পৃথিবী থাকার কথা। তাহলে বাকি ৬ টি পৃথিবী কোথায়?

এছাড়াও মহান আল্লাহ পাক উনার কোন কাজই সময়ের সাথে সম্পৃক্ত নয়, বরং সময় মহান আল্লাহ পাক উনার একটি সৃষ্টি মাত্র। তাই ৭ খানা আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে বর্ণিত سِتَّةِ اَيَّامٍ  ‘সিত্তাতি আইয়্যাম’ দ্বারা ৬ দিন বুঝাবে না বরং ৬ ধাপ বা ৬ পর্যায় ইত্যাদি বুঝাবে।

এছাড়া পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে (Quran 22:47, 32:5 ১০০০ বছর অথবা (Quran 70:4)  ৫০০০০ বছরের বর্ণনা রয়েছে।

এখানে বলা হচ্ছে ভূপৃষ্ঠ থেকে সপ্তম আকাশের উপরে সিদরতুল মুনতাহা পর্যন্ত দূরত্বের কথা। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার সর্বোচ্চ গন্তব্য ওই পর্যন্তই। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি ও উনার সহচর ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সিদরতুল মুনতাহা ও পৃথিবীর মধ্যে যাতায়াত করেন অত্যল্প সময়ে। মানুষের হিসেবে এই দূরত্ব ১০০০ থেকে ৫০০০০ বছরে অতিক্রমযোগ্য দূরত্বের সমান। এই দূরত্বের তারতম্যের কারণ হচ্ছে গতির তারতম্য জনিত। গতি দ্রুততর হলে সময় লাগবে ১০০০ বছর আর শ্লথগতি সম্পন্ন হলে সময় লাগবে ৫০০০০ বছর।

অর্থাৎ এখানে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সিদরতুল মুনতাহা ও পৃথিবীর মধ্যে যাতায়াত পথের সাথে মানুষের হিসেবে দুরত্বের তুলনা করা হয়েছে। যা শ্লথগতিতে চললে সর্বোচ্চ ৫০০০০ বছরে আর দ্রুততর গতিতে চললে সর্বনিম্ন ১০০০ বছরে অতিক্রমযোগ্য দূরত্বের সমান।

এই সময়ের সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার ৬ ধাপে আসমান ও যমীন সৃষ্টির কোন তুলনাই গ্রহণযোগ্য নয়, বরং তা মূর্খতা সূচক ও ভণ্ডামী।

আর সৃষ্টিতত্ত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে এটা সুস্পষ্ট যে, আসমান সৃষ্টির পরেই পৃথিবী সৃষ্টি করা হয়েছে। কেননা, মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা নাযিয়াত শরীফ উনার ২৯-৩০ নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

وَاَغْطَشَ لَيْلَهَا وَاَخْرَجَ ضُحَاهَا. وَالْاَرْضَ بَعْدَ ذٰلِكَ دَحَاهَا. 

অর্থ : “তিনি এর রাত্রিকে করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং এর সূর্যোলোক প্রকাশ করেছেন। যমীনকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন।”

 তাই বিংব্যাগ নামক কোন ঘটনার কোন অস্তিত্ব আদৌ নেই। বিজ্ঞানের বরাত দিয়ে এসব মনগড়া কল্পকাহিনী বা রূপকথার গল্প যারা সাজিয়েছে তারা ভাঁড় আর প্রতারক বৈ কিছুই নয়।


0 Comments: