একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-১২

 


একজন কুতুবুজ্জামান উনার দিদারে  মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

 আল্লাহ্ পাক-উনার নিগূঢ় নৈকট্যলাভে হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমাতুল্লাহি আলাইহি-উনার উদ্বেলিত মনোযোগ ও নিরন্তর প্রয়াস-

 কুতুবুজ্জামান, আরিফ বিল্লাহ, আওলাদে রাসূল, হযরতুল আল্লামা, শাহ্ সুফী, আলহাজ্ব সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান, আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাঈশী রহমাতুল্লাহি আলাইহি-উনার শাদী মুবারক সম্পন্ন হয়েছে। মহান আল্লাহ্ পাক-উনার সদয় ইচ্ছায় মাদারজাদ ওলী, আওলাদে রাসুল হযরত সাইয়্যিদাহ মোসাম্মত জাহানারা বেগম, আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাঈশী আলাইহিস সালাম-উনার সাথে পরিণয় সূত্রে  আবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার অন্যতম একটি সুন্নাত পালনে তিনি এখন পরিতুষ্ট। নেককার স্ত্রীর পরিপূরক অবদান, ঘনিষ্ট সাহচর্য ও মমতাময় সান্নিধ্যে সৃষ্ট মানসিক স্থিতি ও প্রশান্তি আল্লাহ্ পাক-উনার নৈকট্য হাসিলের জন্য উনাকে কাঙ্খিত অনুকুল ক্ষেত্র তৈরী করে দিয়েছে। এখন শুধু সামনে এগিয়ে যাবার পালা।

          আল্লাহ্ পাক-উনার মাহবুব ওলীগণ আল্লাহ্ পাক কর্তৃক আকৃষ্ট হওয়া সত্ত্বেও আকর্ষণকারী হতে বাধ্য থাকেন। অবধারিত এ বাধ্যতা আল্লাহ্ পাক-উনারই বিধান এবং মহান দান। আকর্ষিত ব্যক্তির অপরিমেয় নিয়ামতলাভ যতো সহজ, আকর্ষণকারীর পক্ষে ততো কঠিন। একজন মাদারজাদ ওলী পূর্বেই গন্তব্য সোপানে আসীন থেকেও আল্লাহ্ পাক-উনার সৃষ্ট বিধানের অভ্যস্ততায় বান্দা হিসেবে উনাকে উবুদিয়াতের মাকামগুলো কোশেশের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে  পাড়ি দিতে হয়। অবিরাম অনাবিল কোশেশকারীই আকর্ষণকারী অভিধায় সম্মানিত হয়ে থাকেন। মহব্বত ও মারিফত দানের ক্ষেত্রে আল্লাহ্ পাক-উনার উন্মুখ ইচ্ছা এবং যুগপৎ আকর্ষিত ও আকর্ষনকারী বান্দাগণের ব্যাকুলতা ও নিষ্কলুষ অন্তরের নিরন্তর প্রয়াস সমন্তরাল হয়ে থাকে। মাদারজাদ ওলী, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমাতুল্লাহি আলাইহি আল্লাহ্ পাক কর্তৃক আকর্ষিত হওয়া সত্ত্বেও আকর্ষনকারী হওয়া ছাড়া উনার গত্যন্তর এখন একজন মুর্শিদ প্রয়োজন।

মুর্শিদ আলাইহিস সালাম উনার সন্ধানে-

 আওলিয়া-ই-কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম গণেরই মুবারক জীবন চরিত পাঠে জানা যায় যে, যিনি যতো  বেশী নৈকট্যলাভকারী, তিনি ততো বেশী অবনত, নিবেদিত ও আত্মসমর্পিত। এই মর্মে আরিফগণের এমন উচ্চারণ শোনা যায়, “ইশ্কের আগুনে কলিজা কাবাব না হলে ইশ্কের স্রষ্টা আল্লাহ্ পাককে অনুভব করা যায়না।এই অনুভব আত্মপরিচয়ের, আত্মজাগৃতির, আত্মোপলব্ধির। আল্লাহ্ পাক-উনার মহিমা, গরিমা, কুদরত, হিকমত, মুহব্বত ও মারিফাতের পূর্ণতম বিকাশস্থল সাইয়্যিদুল আলম, হাবীবে আযম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ওলী আল্লাহ্গণের আত্মপরিচয় ও আত্মজাগৃতির দ্বার উম্মোচনের আবশ্যিক প্রয়োজনীয়তার জন্য বলেছেন, “মান আরাফা নাফসাহু ফাক্বাদ আরাফা রাব্বাহু (অর্থঃ যার আত্মপরিচয় ঘটেছে, সে তার রবকে চিনে ফেলেছে)।অবিরাম কোশেশের মাধ্যমেই বান্দার আত্মপরিচয়ের সন্ধান মিলে।

          দুনিয়া, নফস ও পরিবার-পরিজনের প্রতি বিরাগ হয়ে পরিপূর্ণরূপে আল্লাহ্ পাক-উনার প্রতি সমর্পিত হওয়াই একজন মুমিনের অভিষ্ট লক্ষ্য। এই লক্ষ্য অর্জনে অনাবিল অন্তরে ইবাদত-বন্দেগী অপরিহার্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একনিষ্ঠ ও যথার্থরূপে অনুকরণ ও অনুসরণ করাই হলো ইবাদত-বন্দেগীর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য। কোন আমল আল্লাহ্ পাক-উনার কাছে তখনই ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়, যখন তা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার নির্দেশিত পন্থায় সম্পাদিত হয়। কামিয়াবীতো সেই মানুষের, যিনি সুন্নাত অনুসরণে আল্লাহ্ পাক-উনার বিধান পালনে ইবাদত-বন্দেগীতে একজন শায়েখ”-উনার কাছে বাইয়াত হয়ে উনার তত্ত্বাবধানে নিবেদিত থাকলে আধ্যাত্ম পথযাত্রীর আত্মআবিস্কার ও আত্মবিকাশের পথ উন্মুক্ত হয়। এমন আত্মপরিচয়লাভকারী মানুষের অন্তরেই আল্লাহ্ পাক ও উনার হাবীব হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার মারিফাত ও মহব্বতের স্থান সংকুলান হয়। তাই পরিপূর্ণ কামিয়াবী অর্জনের অনিবার্য প্রয়োজনে আল্লাহ্ পাক ও হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার আদেশমতে শায়খ”-উনার নিকট বাইয়াত হওয়া ফরজ। এই ফরজ অস্বীকার করা গোমরাহীর নামান্তর। পূর্ববর্তী আওলিয়া-ই-কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের অনুসরণে আওলাদে রাসুল, হযরতুল আল্লামা, সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমাতুল্লাহি আলাইহি এখন বাইয়াত হওয়ার জন্য ব্যাকুল। মনের এই ব্যাকুলতা অভিনব নয়। ধমনীতে প্রবাহিত বুযুর্গ পূর্বপুরুষ রহমাতুল্লাহি আলাইহি গণ-উনার মুবারক রক্তধারা এবং একই বংশজাত উপরিস্থ আওলিয়া-ই-কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহি গণ-উনার মুবারক মন ও মননের হিস্যার যোগ্য ভাগীদার এই মাদারজাদ ওলী কামিয়াবীর শীর্ষ সোপানে উপনীত হওয়ার উদগ্র বাসনায় একজন শায়খ”-উনার মধ্যস্থতা একান্তভাবে অনুভব করেন। এখন তিনি ব্যাপৃত সেই প্রত্যাশিত মুর্শিদ সন্ধানে। (অসমাপ্ত)

আবা-৭১

 

0 Comments: