একজন কুতুবুজ্জামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
মাহবুব ওলীআল্লাহগণের
মাধ্যমে আল্লাহ পাক-উনার আহকাম উনার নির্ধারিত ব্যবস্থায় হুবহু পরিপালন এবং যমীনে
তা বাস্তবায়নের স্থান সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্
নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সদয় ইচ্ছায়
বন্টিত হয়। আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার
পরিপূর্ণ আশিক ওলীগণকে আবশ্যিকভাবে হিম্মতহীন এবং আপন প্রত্যাশা মুক্ত হতে হয়।
মাহবুব ওলী আল্লাহগণের মন ও মননের দায়িমী
হুযূরীতে আপন ইখতিয়ারের প্রশ্ন অবান্তর। দুনিয়ায় দ্বীন ইসলাম আবাদের জন্য আল্লাহ
পাক-উনার লক্ষ্যস্থল প্রত্যেক ওলীআল্লাহ-উনার দায়িত্ব-সম্পৃক্তি বহুতর এবং তা
বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও পরিধিও ভিন্নতর।
আয়াসসাধ্য আয়োজন, আকুতি ও হিদায়াতের কর্মপ্রণালী
একজন থেকে অন্যজনের পৃথক। তবে অনেক ক্ষেত্রে ওলীআল্লাহগণের কর্ম বিভাজন এবং
প্রতিপালনের পদ্ধতি ভিন্নতর হলেও সকলের গন্তব্য ঠিকানা এক ও অভিন্ন। সব ফুলই গন্ধ
বিলায় কিন্তু রং,
সুবাস ও আকর্ষণ আলাদা।
সকলেরই জানা যে, ইমামে আ’যম হযরত
আবূ হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ইল্মে তাছাউফে দীক্ষিত হওয়ার অনিবার্য প্রয়োজনে
আওলাদুর রসূল হযরত ইমাম বাকির রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং অতঃপর উনার সুযোগ্য সন্তান
হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার নিকট বাইয়াতের মাধ্যমে এতো বড় ওলীআল্লাহ
হয়েছিলেন যে, জগৎ-সংসারে উনার তুলনা মেলা ভার। অথচ আল্লাহ পাক বাহ্যিকভাবে উনাকে ফিক্বাহ
শাস্ত্রের ইমাম হিসেবে মশহুর করেছেন। অপরদিকে গাউছূল আ’যম, সাইয়্যিদুল
আউলিয়া, বড় পীর ছাহিব,
হযরত মুহিউদ্দীন আবদুল ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, সুলতানুল
হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ,
হাবীবুল্লাহ, হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চীশ্তী
রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং আফযালুল আউলিয়া, ইমামে রব্বানী, ক্বাইউমে
আউয়াল, মুজাদ্দিদে আলফে সানী, হযরত
শায়খ আহমদ ফারুকী সিরহিন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রত্যেকেই এতো বড় ফক্বীহ ছিলেন যে, জগৎ-সংসারে
উনাদের তুল্য ক’জন? কিন্তু উনাদেরকে আল্লাহ পাক তরীক্বতের ইমাম হিসেবে প্রসিদ্ধিদান করেছেন।
আল্লাহ পাক-উনার
লক্ষ্যস্থল ওলীগণের যে জনপদে যে বিশেষ দায়িত্ব-সংযোগ, উনাদেরকে
সেখানেই সে কাজে আজীবন নিবিষ্ট থাকতে হয়। ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদুর
রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার
দায়িত্ব পালনের নির্ধারিত স্থান উনার দেশে, আপন জনপদে। সেখানে মূল কর্মসংযোগ
হলো উনার একজন মুজাদ্দিদে আ’যম পুত্র সন্তানের পরিচর্যা করা। আল্লাহ পাক-উনার নিবিড়
লক্ষ্যস্থল মাত্র দশ বছর বয়সের কিশোর সন্তানের শিরা, ধমনী, মন
ও মননে মুবারক পূর্বপুরুষ সুত্রে
প্রচ্ছন্নভাবে মিশে থাকা ইমামত ও মুজাদ্দিদিয়াতের কিশলয়গুলো পল্লবিত করে তোলা। আপন কোশেশ, পরিচর্যা তা’লীম ও
তরবিয়তদানে সে মুবারক সন্তানকে বড় করে তোলা।
মহান আল্লাহ পাক-উনার উদ্দিষ্ট ব্যবস্থা এবং উনার
প্রিয়তম হাবীব, রসূলু রব্বিল আলামীন,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সদয় ইচ্ছায়
সে সন্তানের প্রতি পরিপূর্ণ মনোনিবেশ করা; অন্য যাবতীয় কাজের মধ্যে এটি অনন্য। দুনিয়া জুড়ে গজিয়ে উঠা বাতিল
ফিরক্বা ও মতবাদের মূলোৎপাটন, কালের প্রবাহে দ্বীন ইসলামে অবলীলায় ঢুকে পড়া অসংগত দর্শন, চিন্তা, আমল ও
আচরণ ওহীর বাণী ও হাদীছ শরীফের নিয়ন্ত্রনে দূরীভূত করা এবং অবলুপ্ত সুন্নত যিন্দা
করা একজন মুজাদ্দিদের মূল কাজ। কাজেই দুনিয়ায় মুজাদ্দিদের আবির্ভাব অপরিহার্য। এ
মহান লক্ষ্যে সংস্কার কাজে নিরবধি তৎপর ও কামিয়াব ঔরসজাত মুজাদ্দিদে আ’যম
পুত্রকে বিশ্ববাসীর কাছে উপহার দেয়া হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর আলাইহিস
সালাম-উনার মূল কাজ এবং এটি উনার অনন্য কারামত। এ বিষয়ে সবিস্তার আলোচনার স্থান
এখানে নয়। এ সম্পর্কে যথাস্থানে আলোকপাত করা হবে।
(অসমাপ্ত)
আবা-১২৫
0 Comments:
Post a Comment