হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক । (পর্ব- ১০৬০-১২৭৯) (ঘ)


অথবা উক্ত কাজ মুবারকগুলো করবেন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত মাতা হযরত ফাতিমা বিনতে আসাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি। সুবহানাল্লাহ!
 বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি স্বয়ং আগুনের কাছে বসে রুটি মুবারক সেঁকতেন, ঘর মুবারক ঝাড়– দিতেন এবং যাঁতা মুবারক চালাতেন। সুবহানাল্লাহ! অথচ তিনি ছিলেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, তিনি ছিলেন বিদ্বয়াতুম মির রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! অন্যদিকে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি নিজ হাত মুবারকে সংসারের সমস্ত কাজ মুবারক করতেন অথচ উনার ফযীলত বেমেছাল, যা বলার অপেক্ষা রাখে না। সুবহানাল্লাহ!
 উল্লেখ্য যে, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনারা তো হচ্ছেন ‘উসওয়ায়ে হাসানা’। উনারা সমস্ত জিন-ইনসানের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে অনুসরণ-অনুকরণ করা সমস্ত মুসলমান তথা কুল-কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন। কারণ তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহাস সালাম উনাদের মধ্যমণি। সুবহানাল্লাহ!
 মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
قُل لَّا اَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ اَجْرًا اِلَّا الْمَوَدَّةَ فِى الْقُرْبٰى
অর্থ: “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনি (উম্মতদেরকে) বলুন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাই না, অর্থাৎ বিনিময় চাওয়াটা যেমন অস্বাভাবিক, তেমনিভাবে উম্মতের পক্ষে বিনিময় দেয়ার চিন্তা-ফিকির করাটাও কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। তবে উম্মতকে যেহেতু নাজাত লাভ করতে হবে, সেজন্য তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, তারা যেন আমার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত করে, উনাদের খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দেয় এবং উনাদের ইতেয়াত বা অনুসরণ করে” ( পবিত্র সূরা শূরা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ উনাদের মুহব্বত মুবারক, খিদমত ও ইতায়াত করাকে ফরয করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن حضرة ابن عباس رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم احبوا الله لـما يغذوكم من نعمة واحبونى لـحب الله واحبوا اهل بيتى لـحبى.
 অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনাকে তোমরা মুহব্বত করো; কেননা তিনি খাওয়া-পরার মাধ্যমে অনুগ্রহ করে থাকেন। আর আমাকে তোমরা মুহব্বত করো, মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্রতম মুহব্বত হাছিলের জন্য। আর আমার পবিত্রতম আহলু বাইত শরীফ ও আওলাদুর রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে তোমরা মুহব্বত করো আমার পবিত্রতম মুহব্বত মুবারক হাছিলের  জন্যই। সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)
 উল্লেখ্য, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মুহব্বত মুবারক ও সন্তুষ্টি মুবারক ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র মুহব্বত মুবারক অনুসরণ মুবারক ও সন্তুষ্টি মুবারক পাওয়া কখনোই সম্ভব হবে না। কাজেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মুহব্বত মুবারক ও সন্তুষ্টি মুবারক পেতে হলে উনার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করতে হবে, উনাদের অনুসরণ করতে হবে এবং উনাদেরকে সন্তুষ্ট করতে হবে। উনাদের পবিত্র মুহব্বত মুবারক ও সন্তুষ্টি মুবারক যারা অর্জন করতে পারবে কেবল তারাই নাজাত ও কামিয়াবী লাভ করবে। আর উনাদের পবিত্র মুহব্বত মুবারক ও সন্তুষ্টি মুবারক যারা হাছিল করতে পারবে না, তারা হালাক বা ধ্বংস হয়ে যাবে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت زيد ابن ارقم رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم انى تارك فيكم ما ان تـمسكتم به لن تضلوا بعدى احدهما اعظم من الاخر كتاب الله وعترتى اهل بيتى
অর্থ: “হযরত যায়িদ ইবনে আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য রেখে যা”িছ কিছু নিয়ামত মুবারক। তোমরা যদি সে নিয়ামত মুবারকগুলিকে আঁকড়িয়ে থাকতে পারো, দৃঢ়তার সহিত ধরে রাখতে পারো, কস্মিনকালেও আমার পরে তোমরা গোমরাহ হবে না। একটা থেকে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ও মহান। প্রথম হ”েছ কিতাবুল্লাহ তথা মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কুরআন শরীফ। আর দ্বিতীয় হ”েছ, আমার আহলে বাইত শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যাঁরা আহাল-ইয়াল আলাইহিমুস সালাম উনারাই আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। বিশেষ করে উনাদের মধ্যে যিনি মূল তিনি হ”েছন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম।
এ প্রসঙ্গে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তনিি ইরশাদ মুবারক করনে-
عن حضرت ابى ذر رضى الله تعالى عنه انه قال وهو اخذ بباب الكعبة سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول الا ان مثل اهل بيتى فيكم مثل سفينة نوح عليه السلام من ركبها نـجا ومن تـخلف عنها هلك.
র্অথ : হযরত আবূ যর গফিারী রদ্বয়িাল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থকেে র্বণতি। তনিি কা’বা শরীফ উনার দরজা মুবারক ধরে বলছেনে, আমি  নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনছে,ি ুসাবধান! নশ্চিয়ই তোমাদরে জন্য আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহমিুস সালাম উনারা হলনে হযরত নূহ আলাইহসি সালাম উনার কশিতীর ন্যায়। যে তাতে আরোহন করছেে সে রক্ষা পয়েছেে আর যে তা হতে পশ্চাতে থকেছে,ে সে ধ্বংস হয়ছেে বা হবে। (মুসনাদে আহমদ শরীফ, মশিকাত শরীফ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
 عن  حضرت  جميع بن عمير التيمي رضى الله تعالى عنه  قال  دخلت مع عمتي على ام المؤمنين حضرت عائشة  الصديقة عليها السلام فسئلت أي الناس كان أحب إلى رسول الله صلى الله عليه و سلم  قالت سيدة نساء اهل الجنة حضرت  فاطمة عليها السلام  فقيل من الرجال  قالت زوجها
অর্থ: “হযরত জুমাইর ইবনে উমাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আমার ফুফু উনার সাথে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র খিদমত মুবারকে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমার ফুফু জিজ্ঞাসা করেছিলেন উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সবচাইতে প্রিয় ব্যক্তিত্ব কে ছিলেন? উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে সবচাইতে প্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় কে ছিলেন? তিনি বলেন, পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন উনার ছহিব বা আহাল হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহি সালাম তিনি”। সুবহানাল্লাহ!
 অর্থাৎ সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনারা উভয়ে ছিলেন অত্যন্ত বেমেছাল মর্যাদাশীল এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সবচেয়ে বেশি প্রিয় মুহব্বতের। সুবহানাল্লাহ!
পবত্রি হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়ছে-ে
عن ام الـمؤمنين حضرت صديقة عليها السلام قالت ما رايت احدا اشبه سمتا ودالا وهديا برسول الله صلى الله عليه و سلم فى قيامها وقعودها من فاطمة بنت رسول الله صلى الله عليه وسلم.
অর্থ: উম্মু মু’মিনীন আছ ছালিছাহ হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চাল-চলন মুবারক, স্বভাব মুবারক, কার্যক্রম মুবারক এবং মুবারক চলা-ফেরাতে সাইয়্যিদাতুন নিসা আন নূরুর রবি’য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ব্যতিত অন্য কাউকে সাদৃশ্যপূর্ণ দেখিনি। (আবূ দাউদ শরীফ)
অর্থাৎ সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত আন নূরুর রবি’য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ নকশা মুবারক। মুবারক খিদমতে উনার অবদান বেমেছাল।
সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার পর উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্মানিত নতুন হুজরা শরীফ-এ তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!  সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আ’যীম শরীফ সম্পাদন হওয়ার পূর্বে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতেন। ২য় হিজরী সনের সম্মানিত যিলহজ্জ শরীফ মাসে উনাদের সম্মানিত নিসবতে আ’যীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে আলাদাভাবে সম্মানিত হুজরা শরীফ ব্যবস্থা করার জন্য বললেন।
 সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন,
اُطْلُبْ مَنْزِلا فَطَلَبَ حضرت عَلِىٌّ عليه السلام مَنْزِلا فَأَصَابَهُ مُسْتَأْخِرًا عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَلِيلا. فَبَنَى بِهَا فِيهِ فَجَاءَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَيْهَا قَالَ إِنِّي أُرِيدُ أَنْ أُحَوِّلَكِ إِلَيَّ. فَقَالَتْ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَلِّمْ حَارِثَةَ بْنَ النُّعْمَانِ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ أَنْ يَتَحَوَّلَ عَنِّي. تُرِيدُ أَنْ يَتَحَوَّلَ لِي عَنْ مَنْزِلِهِ. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ تَحَوَّلَ حَارِثَةُ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ عَنَّا حَتَّى قَدِ اسْتَحْيَيْتُ. فَبَلَغَ حَارِثَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ فَتَحَوَّلَ وَجَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ  فَقَالَ  يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّكَ تُحَوِّلُ سَيِّدَتنَا حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ إِلَيْكَ وَهَذِهِ مَنَازِلِي وَهِيَ أَسْقَبُ بُيُوتِ بَنِي النَّجَّارِ بِكَ. وَإِنَّمَا أَنَا وَمَالِي لِلَّهِ وَلِرَسُولِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَلَّذِي تَأْخُذُ مِنِّي أَحَبُّ إِلَيَّ مِنَ الَّذِي تَدَعُ. فقال رسول الله صلى الله عليه و سلم صدقت بارك الله عليك فحولها الى بيت حضرت حارثة رضى الله تعالى عنه-
  অর্থ: “(হে হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম!) আপনি সম্মানিত হুজরা শরীফ তথা গৃহ বা বাসস্থান তালাশ করুন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত হুজরা শরীফ তালাশ করতে থাকলেন। তারপর তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার (সম্মানিত হুজরা শরীফ) থেকে কিছুটা দূরে একটি সম্মানিত হুজরা শরীফ (গৃহ) পেলেন। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে সেই সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ ‘সম্মানিত লাইলাতুয যাফাফ শরীফ’ বা সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সম্মানিত প্রথম রাত মুবারক অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার নিকট (উক্ত হুজরা শরীফ বা বাড়ি মুবারক-এ) সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখলেন। তিনি (সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে) ইরশাদ মুবারক করলেন, নিশ্চয়ই আমি আপনাকে আমার কাছাকাছি রাখতে চাই। অর্থাৎ আমি চাই আমার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার পাশাপাশি বা নিকটে আপনার সম্মানিত হুজরা শরীফ হোক। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললেন, তাহলে আপনি হযরত হারিছাহ ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে এই বিষয়ে আলোচনা মুবারক করুন, (কারণ হযরত হারিছাহ ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার তো অনেকগুলো বাড়ি মুবারক সম্মানিত মসজিদে নববী শরীফ উনার পাশে তথা আপনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার পাশে রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!) তিনি যেন আমার জন্য উনার (বাড়ি থেকে) একটি বাড়ি খালি করে দেন। (অর্থাৎ তিনি যেন আমার সম্মানিত হুজরা শরীফ স্থানান্তরের বিষয়ে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য উনার একটি বাড়ি মুবারক আমাকে সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!) আপনি এটা পছন্দ করেন যে, তিনি যেন উনার একটি বাড়ি আমার জন্য খালি করে দেন। (অর্থাৎ তিনি আমাকে উনার একটি বাড়ি মুবারক হাদিয়া মুবারক করে আমার সম্মানিত হুজরা শরীফ স্থানান্তরের বিষয়ে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!) তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হযরত হারিছাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি আমাদের জন্য ইতঃপূর্বে অনেকগুলো বাড়ি মুবারক ছেড়ে দিয়েছেন, আমাদেরকে অনেকগুলো বাড়ি মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তাই আমি এখন উনাকে এই বিষয়ে বলতে লজ্জাবোধ করছি। তারপর (যে কোনোভাবে) হযরত হারিছাহ ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট এই সংবাদ মুবারক পৌঁছলো। তখন তিনি উনার একটি বাড়ি মুবারক খালি করে দিলেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার নিকট এই সম্মানিত সংবাদ মুবারক পৌঁছেছে যে, নিশ্চয়ই আপনি উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে আপনার কাছাকাছি রাখতে চান। এইগুলো হচ্ছে আমার বাড়ি মুবারক। এই বাড়ি মুবারকগুলো বনু নাজ্জার গোত্রের যেকোনো বাড়ি থেকে আপনার তথা আপনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার অধিক নিকটবর্তী। নিশ্চয়ই আমি এবং আমার সমস্ত সম্পদ মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের জন্য। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি আমার যে সম্পদ মুবারক গ্রহণ করবেন, তা আমার নিকট অধিকতর প্রিয় যে সম্পদ আমার জন্য রেখে দিবেন তা থেকে। সুবহানাল্লাহ!
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি সত্য কথাই বলেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে সম্মানিত বরকত মুবারক দান করুন! সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত হারিছাহ ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার একটি বাড়ি মুবারক-এ সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে নিয়ে আসেন।” সুবহানাল্লাহ! (ত্ববাক্বাতে ইবনে সা’দ, তারীখে ত্ববারী শরীফ ইত্যাদি)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি তখন থেকে হযরত হারিছাহ ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার উক্ত বাড়িখানা উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ হিসেবে ক্ববূল করেন এবং সেখানে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
 কাজেই সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ আন নূরুর রবি’য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ হচ্ছে সমস্ত জিন-ইনসান তথা গোটা কুল-কায়িনাতবাসীর জন্য এক বিশেষ ‘ফাল ইয়াফরাহু’ বা খুশির বিষয়। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার মাঝে মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করেছেন। সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহমুস সালাম উনারা খুশি মুবারক প্রকাশ করেছেন, সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাও খুশি মুবারক প্রকাশ করেছেন, সমস্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাও খুশি মুবারক প্রকাশ করেছেন; এমনকি সমস্ত হযরত ফেরেস্তা আলাইহিমুস সালাম এবং সকল জিন-ইনসান সবাই ‘ফাল ইয়াফরাহু’ বা খুশি মুবারক প্রকাশ করেছেন করছেন; অনন্তকাল ধরে খুশি প্রকাশ করতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! মূলত, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ আন নূরুর রবি’য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম। সুবহানাল্লাহ! বিশেষ করে সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি’য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মূল। সুবহানাল্লাহ! উনার প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করা ঈমানের মূল, বিপরীতে উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা কাট্টা কুফরী ও চির জাহান্নামী হওয়ার কারণ।
 পরিশেষে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এই আরজি মুবারক সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ আন নূরুর রবি’য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার উসীলা মুবারকে আমাদের সকলকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ ও ইমাম, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত মামদূহ মুরশিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার এবং উনার পূত-পবিত্র সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী দায়িমী সন্তুষ্টি নিছবত তায়াল্লুক মুবারক এবং অত্র সম্মানিত আর্টিক্যাল দায়িমী লেখার তাওফীক দান করুন। আমীন!

0 Comments: