হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক । (পর্ব- ১০৬০-১২৭৯) (ব)


সম্মানিত বদর জিহাদ সম্পর্কে রচিত বিভিন্ন কবিতা:
 সাইয়্যিদুশ শুহাদা সাইয়্যিদুনা হযরত হামাযা আলাইহিস সালাম উনার রচিত ক্বাছীদা বা কবিতা মুবারক:
 হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সম্মানিত বদর জিহাদ সম্পর্কে যে সব ক্বাছিদা বা কাবিতা রচিত ও আবৃত্তি হয়েছিলেন এবং বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে পরস্পর যে কবিতা প্রতিযোগিতা হয়েছিল, তার মধ্যে সাইয়্যিদুশ শুহাদা আলাইহিস সালাম উনার ক্বাছীদা বা কাবিতা মুবারকও রয়েছে।
 সাইয়্যিদুশ শুহাদা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
 أَلَمْ تَرَ أَمْرًا كَانَ مِنْ عَجَبِ الدّهْرِ ... وَلِلْحَيّنِ أَسْبَابٌ مُبَيّنَةُ الْأَمْرِ
আপনি কি যুগের বৈচিত্র্যময় কালচক্রের প্রতি লক্ষ্য করেননি, আর মৃত্যুর বিভিন্ন উপকরণ রয়েছে যা স্পষ্ট।
 وَمَا ذَاكَ إلّا أَنّ قَوْمًا أَفَادَهُمْ ... فَحَانُوا تَوَاصٍ بِالْعُقُوقِ وَبِالْكُفْرِ
 আর এ ঘটনা ইহা ছাড়া কিছুই ছিল না যে, ক্বওমকে নসীহত করা হয়েছিল। কিন্তু কাফির মুশরিকরা অবাধ্যতা ও অস্বীকারের মাধ্যমে ওয়াদা বা অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে।
 عَشِيّةَ رَاحُوا نَحْوَ بَدْرٍ بِجَمْعِهِمْ ... فَكَانُوا رُهُونًا لِلرّكِيّةِ مِنْ بَدْرِ
 যে সন্ধায় তারা সদলবলে সম্মানিত বদর উনার দিকে এগিয়ে গিয়েছিল, সেদিন তারা সম্মানিত বদরের প্রস্তরময় স্থানে ধ্বংস হয়েছিল।
 وَكُنّا طَلَبْنَا الْعِيرَ لَمْ نَبْغِ غَيْرَهَا ... فَسَارُوا إلَيْنَا فَالْتَقَيْنَا عَلَى قَدْرِ
আমরা শুধু কাফিলার সন্ধানেই বেরিয়েছিলাম। এছাড়া আমাদের আর কোন উদ্দেশ্য ছিল না। আর তারাও আমাদের দিকে এগিয়ে এসেছিল, তখন আমরা তাক্বদির বা ভাগ্যের নির্ধারিত স্থানে পরস্পর মুখোমুখি হয়েছিলাম।
فَلَمّا الْتَقَيْنَا لَمْ تَكُنْ مَثْنَوِيّةٌ ... لَنَا غَيْرَ طَعْنٍ بِالْمُثَقّفَةِ السّمْرِ
 এরপর যখন আমরা পরস্পর মুখোমুখি হই, তখন আমাদের জন্য ধূসর বর্ণের সোজা তীর নিক্ষেপ করা ছাড়া আর কোন গত্যন্তর ছিল না।
وَضَرْبٍ بِبِيضِ يَخْتَلِي الْهَامَ حَدّهَا ... مُشَهّرَةِ الْأَلْوَانِ بَيّنَةِ الْأُثُرِ
 আর শিরñেদকারী ধারাল শ্বেতশুভ্র অস্ত্রে শোভিত ঝলমলে তরবারি দ্বারা আমাদের আক্রমণ করা ছাড়া আর কোন গত্যন্তর ছিল না।
وَنَحْنُ تَرَكْنَا عُتْبَةَ الْغَيّ ثَاوِيًا ... وَشَيْبَةَ فِي الْقَتْلَى تَجَرْجُمُ فِي الْجَفْرِ
 আর আমরা ভ্রান্তির হোতা (উতবাকে) মাটির সাথে মিশিয়ে দেই। আর শায়বাকে বড় কূপে নিহতদের মাঝে উপুড় করে ফেলে দেই।
 وَعَمْرٌو ثَوَى فِيمَنْ ثَوَى مِنْ حُمَاتِهِمْ ... فَشُقّتْ جُيُوبُ النّائِحَاتِ عَلَى عَمْرِو
 তাদের মিত্ররা, যারা মাটির সাথে নিশ্চিন্ন হয়ে গিয়েছে, তার মধ্যে আমরও মাটির সাথে নিশ্চিন্ন হয়ে গিয়েছে, ফলে বিলাপকারিনীদেরও পোশাক আমরের শোকে বিদীর্ণ হয়ে গিয়েছে।
جُيُوبُ نِسَاءٍ مِنْ لُؤَيّ بْنِ غَالِبٍ ... كِرَامٍ تَفَرّعْنَ الذّوَائِبَ مِنْ فِهْرِ
আর তারা ছিলো লুয়াই ইবনে গালিব ও ফিহরের উর্ধতন শাখার সম্ভ্রান্ত মহিলা।
أُولَئِكَ قَوْمٌ قُتّلُوا فِي ضَلَالِهِمْ ... وَخَلّوْا لِوَاءً غَيْرَ مُحْتَضَرِ النّصْرِ
এরা সেই সব লোক, যারা নিজেদের কুফরীর মধ্যে নিহত হয়েছে। আর তাদেরকে এমন অবস্থায় ঝা-া ছাড়তে হয়েছে যে, মৃত্যুর মুহূর্ত পর্যন্ত তাদের কাছে কোন সাহায্যকারী পৌঁছতে পারেনি।
لِوَاءَ ضَلَالٍ قَادَ إبْلِيسُ أَهْلَهُ ... فَخَاسَ بِهِمْ إنّ الْخَبِيثَ إلَى غَدْرِ
 কুফরীর ঝা-া, যে ঝা-াওয়ালাদের নেতৃত্ব  দিচ্ছিল ইবলীস শয়তান। পরিশেষে সে তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। বস্তুত সেই খবীস বিশ্বাসঘাতকতা করেই থাকে।
وَقَالَ لَهُمْ إذْ عَايَنَ الْأَمْرَ وَاضِحًا ... بَرِئْت إلَيْكُمْ مَا بِي الْيَوْمَ مِنْ صَبْرِ
 যখন সে মুসলমানদের সাহায্য প্রাপ্তির বিষয়টি স্পষ্টভাবে দেখতে পেল, তখন সে বলল, আমি তোমাদের থেকে পৃথক হয়ে গেলাম, আজ ধৈর্য্যধারণ করার ক্ষমতা আমার নেই।
فَإِنّي أَرَى مَا لَا تَرَوْنَ وَإِنّنِي ... أَخَافُ عِقَابَ اللّهِ وَاَللّهُ ذُو قَسْرِ
 কেননা আমি যা দেখছি তোমরা তা দেখছ না; আর আমি মহান আল্লাহ পাক উনার শাস্তিকে ভয় করছি, আর মহান আল্লাহ পাক তিনি পরাক্রমশালী।
فَقَدّمَهُمْ لِلْحَيْنِ حَتّى تَوَرّطُوا ... وَكَانَ بِمَا لَمْ يَخْبُرْ الْقَوْمُ ذَا خُبْرِ
 পরিশেষে সে তাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। ফলে তারা সেখানে আটকে গিয়েছে, ঐ কথা সে তাদের জানায়নি, যা সে ভাল করেই জানত।
فَكَانُوا غَدَاةَ الْبِئْرِ أَلْفًا وَجَمْعُنَا ... ثَلَاثُ مِئِينٍ كَالْمُسَدّمَةِ الزّهْرِ
 তারা সেই সম্মানিত বদর কুয়ায় পৌঁছে সকালে এক হাজার ছিল, আর আমাদের দলে ছিলেন তিনশ’রও একটু বেশি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা।
 وَفِينَا جُنُودُ اللّهِ حِينَ يُمِدّنَا ... بِهِمْ فِي مَقَامٍ ثَمّ مُسْتَوْضَحِ الذّكْرِ
 আর আমাদের সাথে ছিলেন মহান আল্লাহ পাক উনার সৈনিক হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের দ্বারা আমাদের বিরোধীদের মুকাবিলায় সাহায্য করছিলেন, তখন লোকেরা আমাদের কাছে জানতে চাইল, উনারা কারা?
فَشَدّ بِهِمْ جِبْرِيلُ تَحْتَ لِوَائِنَا ... لَدَى مَأْزِقٍ فِيهِ مَنَايَاهُمْ تَجْرِي
 মোটকথা, আমাদের পতাকাতলে থেকে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এক সংকীর্ণ স্থানে তাদেরকে এমন কঠোরভাবে পাকড়াও করলেন যে, সেখানে তাদের লাগাতার মৃত্যুই হচ্ছিল।
সাইয়্যিদুশ শুহাদা আলাইহিস সালাম উনার ক্বছীদা বা কবিতা মুবারক উনার জবাবে কাফিরদের পক্ষ থেকে হারিছ ইবনে হিশাম ইবনে মুগীরা বলল:
 أَلَا يَا لَقَوْمِي لِلصّبَابَةِ وَالْهَجْرِ ... وَلِلْحُزْنِ مِنّي وَالْحَرَارَةِ فِي الصّدْرِ
“সাবধান! শোন হে আমার জাতি। মুহব্বত ও বিরহ, আমার দুঃখ ও মনের জ্বালার কথা শোন।
وَلِلدّمْعِ مِنْ عَيْنَيّ جَوْدًا كَأَنّهُ ... فَرِيدٌ هَوَى مِنْ سِلْكٍ نَاظِمُهُ يَجْرِي
 আর আমার চক্ষুদ্বয় থেকে অশ্রুধারা ঝরার অবস্থা শোন, যেটা হচ্ছে ছিঁড়ে যাওয়া মালা, যা থেকে মুক্তা দ্রুত ঝড়ে পড়ছে।
 عَلَى الْبَطَلِ الْحُلْوِ الشّمَائِلِ إذْ ثَوَى ... رَهِينَ مَقَامٍ لِلرّكِيّةِ مِنْ بَدْرِ
 মিষ্টি স্বভাবের, মহান বীর লোকটির জন্য (চক্ষু ক্রন্দন করছে)। কেননা সে বদর প্রান্তরে প্রস্তরময় কূপে আজীবনের জন্য ধ্বংস হয়ে মাটির সাথে মিশে রয়েছে।
 فَلَا تَبْعُدْنَ يَا عَمْرُو مِنْ ذِي قُرَابَةٍ ... وَمِنْ ذِي نَدَمٍ كَانَ ذَا خُلُقٍ غَمْرِ
  হে আমর! তুমি ছিলে উদর স্বভাবের, তুমি আপনজন ও সাথীদের অন্তর থেকে দূরে সরে যেও না।
فَإِنْ يَكُ قَوْمٌ صَادَفُوا مِنْك دَوْلَةً ... فَلَا بُدّ لِلْأَيّامِ مِنْ دُوَلِ الدّهْرِ
ঐ দিন সেই জাতি তোমার উপর জয়ী হয়েছেন, তবে কালের চক্রে যুদ্ধ আবার অবশ্যম্ভাবী।
فَقَدْ كُنْت فِي صَرْفِ الزّمَانِ الّذِي مَضَى ... هَوَانًا مِنْك ذَا سُبُلٍ وَعْرِ
কেননা অতীতের কালচক্রে তুমি বীরত্বের সাথে তাদেরকে অপদস্থতার ভয়ংকর পথ দেখিয়ে আসছিলে।
فَإِلّا أَمُتْ يَا عَمْرُو أَتْرُكْ ثَائِرًا ... وَلَا أُبْقِ بُقْيَا فِي إخَاءٍ وَلَا صِهْرِ
 হে আমর! যদি মরে না যাই, তবে তোমার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিয়ে ছাড়ব এবং কোন আত্মীয়- স্বজনদের প্রতি লক্ষ্য করে কোন প্রকার দয়া করব না।
وَأَقْطَعُ ظَهْرًا مِنْ رِجَالٍ بِمَعْشَرِ ... كِرَامٍ عَلَيْهِمْ مِثْلَ مَا قَطَعُوا ظَهْرِي
 উনারা যেমন আমাদের কোমর ভেঙ্গে দিয়েছে, আমিও উনাদের আত্মীয়- স্বজনকে হত্যা করে উনাদের কোমর ভেঙ্গে দেব।
أَغُرّهُمْ مَا جَمّعُوا مِنْ وَشِيظَةٍ ... وَنَحْنُ الصّمِيمَ فِي الْقَبَائِلِ مِنْ فِهْرِ
  উনারা কতগুলো মাহফূয ব্যক্তি উনাদেরকে জমা করেই মহান খুশিতে মেতে উঠেছেন, আর আমরা হলাম নির্ভেজাল বানূ ফিহর গোত্রীয়।
فَيَالَ لُؤَيّ ذَبّبوا عَنْ حَرِيمِكُمْ ... وَآلِهَةٍ لَا تَتْرُكُوهَا لِذِي الْفَخْرِ
 হে বানূ লুয়াই শোন! নিজ সম্ভ্রম ও উপাস্য দেব- দেবীদের রক্ষা কর এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের হাত মুবারকে তাদের ছেড়ে দিও না।
تَوَارَثَهَا آبَاؤُكُمْ وَوَرِثْتُمْ ... أَوَاسِيّهَا وَالْبَيْتَ ذَا السّقْفِ وَالسّتْرِ
তোমরা এবং তোমাদের পূর্বসূরীরা উত্তরাধিকার সূত্রে তাদের পেয়েছ, আর পেয়েছ মুবারক ছাদ ও পর্দাবিশিষ্ট ঘর (পবিত্র কা’বা শরীফ)।
فَمَا لِحَلِيمِ قَدْ أَرَادَ هَلَاكَكُمْ ... فَلَا تَعْذِرُوهُ آلَ غَالِبٍ مِنْ عُذْرِ
সেই বলিষ্ঠ সুপুরুষ উনাদের কি হলো, যাঁরা তোমাদের ধ্বংসের ইচ্ছা করেছেন। কাজেই হে গালিব বংশীয়রা! তোমরা উনাদেরকে মোটেই অপারগ মনে করো না।
وَجِدّوا لِمَنْ عَادَيْتُمْ وَتَوَازَرُوا ... وَكُونُوا جَمِيعًا فِي التّأَسّي وَفِي الصّبْرِ
উনাদের সাথে তোমরা শত্রুতা করছ, উনাদের মুকাবিলায় সচেষ্ট হও। পরস্পরের সহযোগিতা করো, ধৈর্য্য ও সহ্যের সাথে একতাবদ্ধ থাকো।
لَعَلّكُمْ أَنْ تَثْأَرُوا بِأَخِيكُمْ ... وَلَا شَيْءَ إنْ لَمْ تَثْأَرُوا بِذَوِي عَمْرِو
 সম্ভবত! তোমরা তোমাদের ভাইয়ের প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হবে। তোমরা যদি তার প্রতিশোধ না নাও তবে আমরের সাথে তোমাদের কোন সম্পর্কই থাকবে না।
بِمُطَرّدَاتِ فِي الْأَكُفّ كَأَنّهَا ... وَمِيضٌ تُطِيرُ الْهَامَ بَيّنَةَ الْأُثْرِ
 বিজলীর ন্যায় ঝলসানো, ঝুলানো ও শিরñেদকারী অলংকার শোভিত তরবারি দ্বারা।
كَأَنْ مُدِبّ الذّرّ فَوْقَ مُتُونِهَا ... إذَا جُرّدَتْ يَوْمًا لِأَعْدَائِهَا الْخُزْرِ
 সেই তরবারিকে যখন শত্রুর জন্য উন্মুক্ত করা হয়, তখন উনাদের পৃষ্ঠদেশে সোভিত অলংকারগুলো পিঁপড়ার পদচিহ্ন বলে মনে হয়।


 সম্মানিত বদর জিহাদ সম্পর্কে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার ক্বছীদা বা কবিতা মুবারক:
 হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সম্মানিত বদর জিহাদ সম্পর্কে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি যেসব ক্বছীদা বা কবিতার পংক্তিগুলো রচনা করেছেন, তা হলো-
أَلَمْ تَرَ أَنّ اللّهَ أَبْلَى رَسُولَهُ  صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمْ ... بَلَاءَ عَزِيزٍ ذِي اقْتِدَارٍ وَذِي فَضْلِ
 আপনি কি লক্ষ করেননি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুয়াল্লিম হিসাবে প্রেরণ করেছেন বা তিনি সমস্ত উম্মতকে তা’লীম  দিচ্ছেন। এবং তিনি সমস্ত ফদ্বল করম ও ইজ্জত সম্মানের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!
بِمَا أَنْزَلَ الْكُفّارَ دَارَ مَذَلّةٍ ... فَلَاقَوْا هَوَانًا مِنْ إسَارٍ وَمِنْ قَتْلِ
 যে তা’লীম মুবারক উনার কারণেই কাফির মুশরিকদের নিক্ষেপ করানো হয়েছে লাঞ্চনার স্থানে; অবশেষে তাদের সাক্ষাৎ ঘটেছে বন্দী ও নিহত হওয়ার লাঞ্ছনার সাথে।
فَأَمْسَى رَسُولُ اللّهِ قَدْ عَزّ نَصْرُهُ ... وَكَانَ رَسُولُ اللّهِ أُرْسِلَ بِالْعَدْلِ
 তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতকারী হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্মান অর্জিত হয়েছে।
فَجَاءَ بِفُرْقَانِ مِنْ اللّهِ مُنَزّلٍ ... مُبَيّنَةٌ آيَاتُهُ لِذَوِي الْعَقْلِ
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিতো ইনসাফকারী রূপে প্রেরিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
فَآمَنَ أَقْوَامٌ بِذَاكَ وَأَيْقَنُوا ... فَأَمْسَوْا بِحَمْدِ اللّهِ تَعَالىَ مُجْتَمِعِي الشّمْلِ
 আর তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হক্ব ও বাতিলের মাঝে পার্থক্যকারী কিতাব নিয়ে এসেছেন, যার পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ আক্বলমন্দ বা বিবেকবানদের জন্য সুস্পষ্ট।
وَأَنْكَرَ أَقْوَامٌ فَزَاغَتْ قُلُوبُهُمْ ... فَزَادَهُمْ ذُو الْعَرْشِ خَبْلًا عَلَى خَبْلِ
 যার ফলে কিছু লোক উনার উপর ঈমান এনেছেন ও উনার বিষয়গুলো বিশ্বাস করে নিয়েছেন; আলহামদুলিল্লাহ! এবং উনারা উনাদের বিচ্ছিন্ন শক্তিকে একত্র করতে সক্ষম হয়েছেন।
وَأَمْكَنَ مِنْهُمْ يَوْمَ بَدْرٍ رَسُولَهُ ... وَقَوْمًا غِضَابًا فِعْلُهُمْ أَحْسَنُ الْفِعْلِ
 আর কিছু লোক তা অস্বীকার করেছে; ফলে তাদের অন্তর বক্র হয়ে গেছে; আর আরশের মালিক মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের বিশৃঙ্খলা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন।

بِأَيْدِيهِمْ بِيضٌ خِفَافٌ عَصَوْا بِهَا ... وَقَدْ حَادَثُوهَا بِالْجَلَاءِ وَبِالصّقْلِ
 মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত বদর জিহাদের দিন উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কাফির মুশরিকদের উপর শক্তি হাদিয়া মুবারক করেছেন, আর তিনি শক্তি বন্টন করে দিয়েছেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে, উনাদের কাজ ছিল উত্তম। কেননা কাফিরদের বিদ্বেষ ছিল মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য।
فَكَمْ تَرَكُوا مِنْ نَاشِئٍ ذِي حَمِيّةٍ ... صَرِيعًا وَمِنْ ذِي نَجْدَةٍ مِنْهُمْ كَهْلِ
উনাদের হাতে ছিল চকচকে সাদা হালকা (তরবারি), যা দিয়ে উনারা আক্রমণ করেন। আর সেই তরবারিগুলোকে পোড়াতে এবং শাণিত করতে উনার অনেক সময় ব্যয় করেছেন।
تَبِيتُ عُيُونُ النّائِحَاتِ عَلَيْهِمْ ... تَجُودُ بِإِسْبَالِ الرّشَاشِ وَبِالْوَبْلِ
 ফলে উনারা ভূপতিত করেছেন কত যে বীর সেনা ও শৌর্য-বীর্যের অধিকারীকে তাদের শোকে বিলাপকারিণীরা অশ্রু ঝরিয়েছে, মুষলধারে বৃষ্টির মত তারা রাতভর অশ্রু ঝরিয়ে বদান্যতা দেখিয়েছে।
نَوَائِحَ تَنْعَى عُتْبَةَ الْغَيّ وَابْنَهُ ... وَشَيْبَةَ تَنْعَاهُ وَتَنْعَى أَبَا جَهْلِ
 বিলাপকারিণীরা পথভ্রষ্ট উতবা, তার ছেলে শায়বা ও আবূ জাহিলের মৃত্যুর সংবাদ শুনিয়ে বেড়াচ্ছে।
وَذَا الرّجُلِ تَنْعَى وَابْنَ جُدْعَانَ فِيهُمُ ... مُسَلّبَةً حَرّى مُبَيّنَةَ الثّكْلِ
 আর তারা লেংড়া (আসওয়াদ ইবনে আব্দুল আসাদ মাখযূমী) মৃত্যু সংবাদ শোনাচ্ছে; ইবনে জুদয়ানও তাদের মধ্যে রয়েছে। বিলাপকারিণীরা শোকের কাল পোশাক পরে আছে, তাদের  হৃদয় শোকের আগুন জ্বলছে, আপনজনদের বিরহের বেদনার ছাপ তাদের চেহারায় ষ্পষ্ট।
ثَوَى مِنْهُمْ فِي بِئْرِ بَدْرٍ عِصَابَةٌ ... ذَوِي نَجَدَاتٍ فِي الْحُرُوبِ وَفِي الْمَحْلِ
 আর আপনি তাদের একটি শক্তিশালী যুদ্ধবাজ ও দুর্ভিক্ষে সাহায্যকারী দলকে সম্মানিত বদর জিহাদের কুয়ায় পড়ে থাকতে দেখতে পাবে।
دَعَا الْغَيّ مِنْهُمْ مَنْ دَعَا فَأَجَابَهُ ... وَلِلْغَيّ أَسْبَابٌ مُرَمّقَةُ الْوَصْلِ
 তাদের অনেকেকে গুমরাহীর দিকে আহবান করেছে, আর তারাও সে ডাকে সাড়া দিয়েছে। ভ্রান্তির দিকে আকর্ষণকারী অনেক রশি রয়েছে, যদিও সেগুলোর আকর্ষণ খুবই দুর্বল।
 পরিশেষে তারা আলু-থালু অবস্থায় চীৎকার করতে করতে জাহান্নামের অগ্নি শিখায় দুপুর বেলা পৌঁছে গেছে।

সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার ক্বছীদা বা কবিতার  জবাবে কাফিরদের পক্ষ থেকে হারিছ ইবনে হিশাম ইবনে মুগীরা বলেছিল:
 হারিছ ইবনে হিশাম ইবনে মুগীরা সে বললো,
 عَجِبْت لِأَقْوَامِ تَغَنّى سَفِيهُهُمْ ... بِأَمْرِ سَفَاهٍ ذِي اعْتِرَاضٍ وَذِي بُطْلِ
 আমি আশ্চার্যবোধ করছি ঐ সমস্ত সম্মানিত ব্যক্তি উনাদের ব্যবহারে, উনাদের মধ্যে একজন অন্যতম ব্যক্তি তিনি আলোচিত যোগ্য ও তিনি আমাদের বিরুদ্ধে কতগুলো বিষয় ক্বছীদা বা কবিতার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
 تَغَنّى بِقَتْلَى يَوْمَ بَدْرٍ تَتَابَعُوا ... كِرَامِ الْمَسَاعِي مِنْ غُلَامٍ وَمِنْ كَهْلِ
 সম্মানিত বদর জিহাদের সেই কাফির মুশরিকদের নিহতদের ব্যাপারে কবিতা বলছেন। আর আমাদের তরুণ ও বৃদ্ধদের আচরণ অব্যাহত ছিল।
 مَصَالِيتَ بِيضٍ مِنْ لُؤَيّ بْنِ غَالِبٍ ... مَطَاعِينَ فِي الْهَيْجَا مَطَاعِيمَ فِي الْمَحْلِ
 তারা ছিল বানূ গালিবের উর্ধ্বতন শাখার সাদা চেহারাবিশিষ্ট বীর এবং যুদ্ধে বর্শা নিক্ষেপে পারদর্শী আর দুর্ভিক্ষে আহার প্রদানকারী।
 أُصِيبُوا كِرَامًا لَمْ يَبِيعُوا عَشِيرَةً ... بِقَوْمِ سِوَاهُمْ نَازِحِي الدّارِ وَالْأَصْلِ
 তারা সম্মানের সাথে মৃত্যুবরণ করেছে। নাউযূবিল্লাহ! তারা দূরের ভিন্ন জাতি ও ভিন্ন বংশের লোকদের জন্য নিজ বংশকে বিক্রয় করে দেয়নি।
كَمَا أَصْبَحَتْ غَسّانُ فِيكُمْ بِطَانَةً ... لَكُمْ بَدَلًا مِنّا فَيَا لَك مِنْ فِعْلِ
 বানূ গাসসান আমাদের পরিবর্তে আপনাদের একান্ত আপনজন হয়ে গেলেন! আশ্চার্যের ব্যাপার, এমন ঘটনাও কি ঘটতে পারে!
 عُقُوقًا وَإِنّمَا بَيّنًا وَقَطِيعَةً ... يَرَى جَوْرَكُمْ فِيهَا ذَوُو الرّأْيِ وَالْعَقْلِ
 আপনাদের এ ধরনের কাজ-ন্যায়ের বিরোধিতা, অপরাধ এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার কারণে হয়েছে, যা বিবেক ও বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা সীমালংঘন হিসাবে গন্য করছে। নাউযূবিল্লাহ!
 فَإِنْ يَكُ قَوْمٌ قَدْ مَضَوْا لِسَبِيلِهِمْ ... وَخَيْرُ الْمَنَايَا مَا يَكُونُ مِنْ الْقَتْلِ
 আমাদের যদিও কিছু লোক মারা গিয়েছে তাতে কিছু যায় আসে না, কারণ মৃত্যুর মধ্যে উত্তম মৃত্যু হল হত্যার মাধ্যমে মৃত্যু।
 فَلَا تَفْرَحُوا أَنْ تَقْتُلُوهُمْ فَقَتْلُهُمْ ... لَكُمْ كَائِنٌ خَبْلًا مُقِيمًا عَلَى خَبْلِ
 আপনারা তাদের হত্যা করে খুশি প্রকাশ করবেন না। কেননা তাদের হত্যা আপনাদের জন্য স্থায়ী ধ্বংসের কারণ। নাউযূবিল্লাহ!
 فَإِنّكُمْ لَنْ تَبْرَحُوا بَعْدَ قَتْلِهِمْ ... شَتِيتًا هَوَاكُمْ غَيْرُ مُجْتَمِعِي الشّمْلِ
 কেননা তাদের হত্যার পর আপনারা আপনাদের কাঙ্খিত বস্তু থেকে সর্বদা দূরেই থাকবেন। আর বিছিন্ন শক্তিগুলোকে একত্র করতে পারবে না। নাউযূবিল্লাহ!
بِفَقْدِ ابْنِ جُدْعَانَ الْحَمِيدِ فِعَالُهُ ... وَعُتْبَةَ وَالْمَدْعُوّ فِيكُمْ أَبَا جَهْلِ
 তাদের মধ্যে প্রশংসাযোগ্য কাজের অধিকারী ইবনে জুদয়ান, উতবা এবং তোমাদের মধ্যে আবূ জাহল। নাউযূবিল্লাহ! তাদের নিহত হওয়ায় সামনে আমাদের অনেক অসুবিধা দেখা দিবে।
 وَشَيْبَةَ فِيهُمُ وَالْوَلِيدَ وَفِيّهُمْ ... أُمَيّةُ مَأْوَى الْمُعْتَرِينَ وَذُو الرّجْلِ
 তাদের মাঝে আছে শায়বা, ওলীদ, প্রার্থনা শ্রবণকারীদের আশ্রয়স্থল উমাইয়া, আর এক পা বিশিষ্ট আসওয়াদ।
 أُولَئِكَ فَابْكِ ثُمّ لَا تَبْكِ غَيْرَهُمْ ... نَوَائِحُ تَدْعُو بِالرّزِيّةِ وَالثّكْلِ
 আপনজনের বিচ্ছেদে এবং বিপদে চীৎকার করে বিলাপকারিণীদের উচিত এদের জন্য ক্রন্দন করা। আর এদের পর কারো মৃত্যুতে ক্রন্দন না করা।
 وَقُولُوا لِأَهْلِ الْمَكّتَيْنِ تَحَاشَدُوا ... وَسِيرُوا إلَى آطَامِ يَثْرِبَ ذِي النّخْلِ
 পবিত্র মক্কা শরীফ উনার দু’পাশের বাসিন্দাদের বলে দাও যে, তোমরা সৈন্য- সামন্ত একত্র করে নাও এবং খেজুর বাগানে ঘেরা পবিত্র মদীনা শরীফ শহরের দিকে এগিয়ে চল। নাউযূবিল্লাহ!
جَمِيعًا وَحَامُوا آلَ كَعْبٍ وذَبّبوا ... بِخَالِصَةِ الْأَلْوَانِ مُحْدَثَةِ الصّقْلِ
 সকলে মিলে চল। বানূ কা’বকে ঘেরাও কর। স্বচ্ছ ও পরিস্কার রঙ্গের সদ্য শান দেওয়া তরবারি দ্বারা উনাদের প্রতিহত করো।
وَإِلّا فَبَيّتُوا خَائِفِينَ وَأَصْبِحُوا ... أَذَلّ لِوَطْءِ الْوَاطِئِينَ مِنْ النّعْلِ
 অন্যথায় ভীত- সন্ত্রস্ত অবস্থায় রাত্রি যাপন করো, আর জুতা দিয়ে পদদলিতকারীদের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়ে দিন কাটাও।
 عَلَى أَنّنِي وَاَللّاتِي يَا قَوْمُ فَاعْلَمُوا ... بِكُمْ وَاثِقٌ أَنْ لَا تُقِيمُوا عَلَى تَبْلِ
 হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা! তোমরা একথা জেনে রাখ, লা’ত প্রতিমার ক্বসম! তোমাদের উপর পূর্ণ আস্থা থাকা সত্ত্বেও বলছি যে, তোমরা লৌহ বর্ম চমকানো বর্শা, তীক্ষè- শাণিত তরবারি, আর তীর না নিয়ে শত্রুর মুকাবিলায় দাঁড়াবে না।


বানূ মুহারিব ইবনে ফিহরের লোক যিরার ইবনে খাত্তাব ইবনে মিরদাস সে বদর যুদ্ধ সম্পর্কে বলেছিল:
 عَجِبْت لِفَخْرِ الْأَوْسِ وَالْحَيْنُ دَائِرٌ ... عَلَيْهِمْ غَدًا وَالدّهْرُ فِيهِ بَصَائِرُ
 আমি আশ্চার্যবোধ করি আওসের অহংকার দেখে, অথচ আগামিকাল উনারাও মৃত্যুর চাকায় পিষ্ঠ হবে। আর যামানার মধ্যে রয়েছে অনেক শিক্ষাপ্রদ ঘটনা।
 وَفَخْرِ بَنِي النّجّارِ وَإِنْ كَانَ مَعْشَرٌ ... أُصِيبُوا بِبَدْرِ كُلّهِمْ ثَمّ صَابِرُ
 আরও আশ্চার্য হই বানূ নাজ্জারের অহংকারে, যাদের অহংকার শুধু এ কারণেই যে, বদর যুদ্ধে গোটা একটি বংশ বিপদগ্রস্ত হয়েছে, আর সে সময় তারা অবিচল ছিলো।
 فَإِنْ تَكُ قَتْلَى غُودِرَتْ مِنْ رِجَالِنَا ... فَإِنّا رِجَالٌ بَعْدَهُمْ سَنُغَادِرُ
 এ বংশের মৃতদেহগুলো যদিও ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে, তাতে কিছুই আসে যায় না, কেননা তার পরেও তো আমরা আছি, আমরা অচিরেই বিপদ নিয়ে আসব।
وَتَرْدِي بِنّا الْجُرْدُ الْعَنَاجِيجُ وَسْطَكُمْ ... بَنِي الْأَوْسِ حَتّى يَشْفَى النّفْسَ ثَائِرُ
 হে বানূ আওস! ক্ষুদ্র কেশবিশিষ্ট দীর্ঘ ও তেজস্বী ঘোড়া আমাদের বহন করে আপনাদের মথিত করবে, যাতে প্রতিশোধের মাধ্যমে আমাদের অন্তরে শান্তি আসে।
 وَوَسْطَ بَنِي النّجّارِ سَوْفَ نَكُرّهَا ... لَهَا بِالْقَنَا وَالدّارِعِينَ زَوَافِرُ
 আর অচিরেই সেই ঘোড়াগুলোর সাহায্যে আমরা বানূ নাজ্জারের উপর দ্বিতীয় হামলা চালাব যে ঘোড়াগুলি বর্শা ও বর্মধারীদের ভার-বহনকারীও হবে।
 فَنَتْرُكُ صَرْعَى تَعْصِبُ الطّيْرُ حَوْلَهُمْ ... وَلَيْسَ لَهُمْ إلّا الْأَمَانِيّ نَاصِرُ
 আর আমরা উনাদের এমনভাবে ধরাশায়ী করব যে, পাখির দল উনাদের চারপাশে ঘিরে থাকবে। আর মিথ্যা আকাক্সক্ষা ছাড়া উনাদের আর কোন সাহায্যকারী থাকবে না। নাউযূবিল্লাহ!
 وَتَبْكِيهِمْ مِنْ أَهْلِ يَثْرِبَ نِسْوَةٌ ... لَهُنّ بِهَا لَيْلٌ عَلَى النّوْمِ سَاهِرُ
 উনাদের শোকে কাঁদবে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার নারীগণ, উনারা সেখানে বিনিদ্র রজনী কাটাবেন। নাউযুবিল্লাহ!
وَذَلِكَ أَنّا لَا تَزَالُ سُيُوفُنَا ... بِهِنّ دَمٌ مِمّنْ يُحَارِبْنَ مَائِرُ
 আর সে অবস্থা এজন্য হবে যে, আমাদের তরবারির আঘাতে উনাদের রক্ত সব সময় প্রবাহিত হতে থাকবে, যাদের সাথে এ তরবারি যুদ্ধ করবেন।
فَإِنْ تَظْفَرُوا فِي يَوْمِ بَدْرٍ فَإِنّمَا ... بِأَحْمَدَ صَلَّىْ اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ أَمْسَى جَدّكُمْ وَهُوَ ظَاهِرُ
 যদি আপনারা বদর জিহাদে বিজয়ী হয়ে থাকেন, তবে তার একমাত্র কারণ আমাদেরই এক সুমহান নবী ও রসূল যিনি আখিরী নবী, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আপনাদের মাঝেই অবস্থান মুবারক করছেন।
وَبِالنّفْرِ الْأَخْيَارِ هُمْ أَوْلِيَاؤُهُ ... يُحَامُونَ فِي اللّأْوَاءِ وَالْمَوْتُ حَاضِرُ
আর উনাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা আমাদের আত্মীয়-স্বজন। কিন্তু তিনিও একদিন উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক গ্রহণ করবেন।
 يُعَدّ حَضْرَتْ أَبُو بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامِ وَ َضْرَتْ حَمْزَةُ عَلَيْهِ السَّلَامِ فِيهُمُ ... وَيُدْعَى حَضْرَتْ عَلِيّ عَلَيْهِ السَّلَامِ وَسْطَ مَنْ أَنْتَ ذَاكِرُ
 উনাদের মধ্যে রয়েছেন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম ও সাইয়্যিদুশ শুহাদা আলাইহিস সালাম, আর উল্লিখিত             ব্যক্তিদের মধ্যে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম নামে যিনি পরিচিত, তিনি সর্বশ্রেষ্ঠের অন্যতম।
 وَيُدْعَى أَبُو حَفْصٍ وَعُثْمَانُ مِنْهُمْ ... وَسَعْدٌ إذَا مَا كَانَ فِي الْحَرْبِ حَاضِرُ
 আরও উনাদের মধ্যে, রয়েছেন হযরত আবূ হাফস উমর আলাইহিস সালাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নুরাইান আলাইহিস সালাম ও হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু; যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোন জিহাদ মুবারকে হাযির হন তখন উনারা উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দেন। সুবহানাল্লাহ!
أُولَئِكَ لَا مَنْ نَتّجَبُ فِي دِيَارِهَا ... بَنُو الْأَوْسِ وَالنّجّارِ حِينَ تُفَاخِرُ
 উনারা উনারাই, আর উনাদের কারণেই সম্মানিত বিজয় লাভ সম্ভব হয়েছে, আওস ও নাজ্জার বংশীয়দের কারণে নয়, যাদের অনেক সন্তান-সন্ততি রয়েছেন যা নিয়ে উনারা গর্ব করেন।
 وَلَكِنْ أَبُوهُمْ مِنْ لُؤَيّ بْنِ غَالِبٍ ... إذَا عُدّتْ الْأَنْسَابُ كَعْبٌ وَعَامِرُ
 যখন বানূ কা’ব ও বানূ আমিরের বংশনামা গণনা করা হয়, তখন উনাদের উর্ধতন পুরুষ হবেন লুয়াই ইবনে গালিব।
 هُمْ الطّاعِنُونَ الْخَيْلَ فِي كُلّ مَعْرَكٍ ... غَدَاةَ الْهِيَاجِ الْأَطْيَبُونَ الْأَكَاثِرُ
 উনারা হলেন প্রত্যেক জিহাদেই অশ্বারোহীদের প্রতি বর্শা নিক্ষেপকারী, আর কঠিন বিপদের সময় উনারা উত্তম আচরণকারী ও অনেক পূণ্য অর্জনকারী।


0 Comments: