ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া -পর্ব-১১
“ইসলামের
নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় আল্লাহ পাক-এর দরবারে বেশুমার শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
উল্লেখ্য, হিজরী পঞ্চদশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ ও ইমাম, মুজাদ্দিদে
আ’যম,
আওলাদে রসূল, ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর প্রতিষ্ঠিত ও পৃষ্ঠপোষকতায় প্রকাশিত
যামানার তাজদীদী মুখপত্র ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাত। এ পত্রিকায়
এ যাবৎ যত লিখা বা ফতওয়া প্রকাশ বা পত্রস্থ করা হয়েছে, হচ্ছে ও
হবে তার একমাত্র উদ্দেশ্য মানুষের ঈমান-আক্বীদা ও আমল পরিশুদ্ধ করা। এ জন্যেই
মূলতঃ যুগে যুগে প্রেরিত হয়েছেন এক লক্ষ চব্বিশ হাজার মতান্তরে দুই লক্ষ চব্বিশ
হাজার নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম। এবং সর্বশেষ নবী-রসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন
নবীদের নবী,
রসূলদের রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অতঃপর প্রত্যেক শতাব্দীর মাঝে প্রেরিত হয়ে আসছেন
তাঁর খাছ নায়িব বা ওয়ারিছ তথা যামানার মুজাদ্দিদগণ।
কাজেই, বান্দা ও উম্মত যদি দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দীদার ও সন্তুষ্টি লাভ করতে চায়, রহমত ও
নাজাত পেতে চায়,
হাক্বীক্বী বান্দা ও হাক্বীক্বী উম্মত হতে চায়, প্রকৃত মু’মিন,
মুসলমান ও মুত্তাক্বী হতে চায় তাহলে তার জন্য যামানার
মুজাদ্দিদের অনুসারী হওয়া ব্যতীত বিকল্প কোন পথ নেই। সেটা কাছে থেকে হোক কিংবা
দূরে থেকে হোক। কারণ আল্লাহ পাক তাঁর কালাম পাকে ইরশাদ করেন,
واتبع سبيل من اناب الى.
অর্থঃ- “ঐ ব্যক্তির পথ অনুসরণ করে চলো যিনি
আমার দিকে রুজু রয়েছেন।” (সূরা লুক্বমান-১৫)
স্মরণীয় যে, আজকে মুসলমানরা তাদের আদর্শ-ঐতিহ্য ভুলে গিয়ে বিধর্মী-বিজাতীয়দের তর্জ-তরীক্বা, আচার-আচরণ গ্রহণে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাদের এই নাজুক অবস্থা কাটিয়ে ইসলামী
আদর্শে আদর্শবান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আহবান করছেন যামানার মহান মুজাদ্দিদ মুদ্দা
জিল্লুহুল আলী। সুতরাং তাঁর মুবারক আহবানে সাড়া দেয়ার সময় এখনই। এ লক্ষ্যে ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাত’ পত্রিকার পাঠক, গ্রাহক,
শুভাকাঙ্খী ও শুভানুধ্যায়ীগণ ‘মাসিক আল
বাইয়্যিনাত”-এর আকর্ষণীয় ও উল্লেখযোগ্য বিভাগ “সুওয়াল-জাওয়াব” ও “ফতওয়া”
বিভাগে ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে
শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা জানার জন্য অসংখ্য সুওয়াল প্রেরণ করেন। যেহেতু আল্লাহ পাক
রাব্বুল আ’লামীন কালামে পাকে ইরশাদ করেন,
فسئلوا اه الذكر ان كنتم لا تعلمون.
অর্থঃ- “যদি তোমরা না জান, তবে আহ্লে যিকির বা আল্লাহওয়ালাগণকে জিজ্ঞেস করে জেনে নাও।” (সূরা নহল-৪৩ ও সূরা আম্বিয়া-৭)
তাই প্রেরিত সুওয়ালসমূহের
প্রেক্ষিতে “ইসলামের নামে গণতন্ত্র, নির্বাচন, ভোট ও
তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” ইসলামের দলীল- কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজ্মা ও ক্বিয়াসের দৃষ্টিতে পেশ করা হলো।
প্রকৃত
বন্ধুর পরিচয়
মূলতঃ আমাদের সাথে কারো
যেরূপ বন্ধুত্ব নেই, তদ্রুপ নেই বিদ্বেষ। অর্থাৎ যাদের আক্বীদা ও আমল শরীয়তসম্মত, তাদের সাথে আমাদের কোন প্রকার বিদ্বেষ নেই। আর যাদের আক্বীদা ও আমল শরীয়তের
খিলাফ বা বিপরীত, তাদের সাথে আমাদের কোন প্রকার বন্ধুত্ব নেই। কারণ মুসলমানের
বন্ধুত্ব বা বিদ্বেষ একমাত্র আল্লাহ্ পাক-এর জন্যেই হতে হবে।
এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে
ইরশাদ হয়েছে যে,
عن ابى هريرة رضى اله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من احب ليه وابغض لله واعطى لله واعطى لله ومنع لله فقد استكمل الايمان.
অর্থঃ- “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক-এর (সন্তুষ্টি লাভের) জন্যে মহব্বত বা বন্ধুত্ব করে, বিদ্বেষ পোষণ করে, আদেশ করে, নিষেধ করে, তার ঈমান পরিপূর্ণ।” (আবূ দাউদ, তিরমিযী)
বস্তুতঃ মাসিক আল
বাইয়্যিনাত পত্রিকার প্রতিটি লিখা, বক্তব্য, সুওয়াল-জাওয়াব, ফতওয়া,
প্রতিবাদ, প্রতিবেদন, মতামত ইত্যাদি উপরোক্ত হাদীছ শরীফের মূলনীতির ভিত্তিতেই প্রকাশিত হয়ে থাকে।
কাজেই “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় “ইসলামের নামে গণতন্ত্র, নির্বাচন, ভোট ও
তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” দেয়ার মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হলো
সত্যান্বেষী বা হক্ব তালাশী মুসলমানগণের নিকট সঠিক বা হক্ব বিষয়টি ফুটিয়ে তোলা।
যার মাধ্যমে প্রত্যেকেই তাদের ঈমান-আক্বীদা ও আমল হিফাযতের মাধ্যমে ইহ্লৌকিক ও
পারলৌকিক ইত্মিনান ও নাযাত লাভ করতে পারে।
মূলতঃ মানুষ মাত্রই ভুল
হওয়া স্বাভাবিক,
তাই এক মু’মিন অপর মু’মিনের ভুল ধরিয়ে বা শুধরিয়ে দেয়া ঈমানী দায়িত্ব। হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে যে,
عن ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم المؤمن مرأة المؤمن اذا رأى فيه عيبا اصلحه.
অর্থঃ- “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আল্লাহ
পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, এক মু’মিন অপর মু’মিনের জন্যে আয়না। যখন সে তার মধ্যে কোন দোষত্রুটি দেখবে তখন সে তাকে সংশোধন
করে দিবে।”
(বুখারী, আবূ দাউদ, মিশকাত)
উপরোক্ত হাদীছ শরীফের
আলোকে অসংখ্য,
অগণিত পাঠকগণের পূণঃপূণঃ অনুরোধের প্রেক্ষিতে মুসলমানদের
আক্বীদা ও আমল হিফাযতের লক্ষ্যে ইসলামের নামে গণতন্ত্র, নির্বাচন, ভোট ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া প্রদান করা হলো। যাতে করে
সত্যান্বেষী,
মুসলমানগণ এ সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্যসমূহের সঠিক শরয়ী
ফায়সালা অবগত হন, যার ফলশ্রুতিতে সকলেই উক্ত আপত্তিকর আক্বীদা ও বক্তব্যসমূহ
থেকে নিজেদের ঈমান ও আমলের হিফাযত করে আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর খাছ সন্তুষ্টি হাছিল করতে পারেন।
সুওয়ালকারীদের নাম-ঠিকানা
সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলমগীর
হুসাইন,
ঢাকা
মুহম্মদ আনোয়ার হুসাইন, মুহম্মদপুর,
ঢাকা
মুহম্মদ ছিদ্দীকুল আলম, চান্দিনা,
কুমিল্লা
মুহম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, শালিখা,
মাগুরা
মুহম্মদ আফতাবুদ্দীন, কোনাবাড়ী,
গাজিপুর
মুহম্মদ মুহসিনুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
মুহম্মদ হারুনূর রশীদ, মাহিগঞ্জ,
রংপুর
শাফিয়ী আহমদ, রাজারহাট,
কুড়িগ্রাম
মুহম্মদ সদরুল আমীন
গোলাপগঞ্জ,
সিলেট
মুহম্মদ আশাদুজ্জামান, পলাশবাড়ী,
গাইবান্ধা
মুহম্মদ আশফাকুর রহমান, সিংড়া,
নাটোর
মুহম্মদ ইছহাকুর রহমান, কসবা,
বি.বাড়িয়া
মুহম্মদ শফিকুছ্ ছালেহীন, মতলব,
চাঁদপুর
মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান, প্রভাকরদী,
এন.গঞ্জ
মুহম্মদ হারিছুর রহমান, রাজপাড়া,
রাজশাহী
মুহম্মদ কাওছার হুসাইন, বানারীপাড়া,
বরিশাল
মুহম্মদ হাদীউল ইসলাম, পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম
মুহম্মদ কামরুজ্জামান, কুটিয়াদী,
কিশোরগঞ্জ
মুহম্মদ আবুল কাশেম, আক্কেলপুর,
জয়পুরহাট
মুহম্মদ হাবীবুল্লাহ, কালীহাতি,
টাঙ্গাইল
সুওয়াল:
বর্তমান সময় যে সমস্ত “সংসদ নির্বাচন” অনুষ্ঠিত হয়। তাতে অন্যান্য দলগুলোর মতো নামধারী ইসলামী
দলগুলোও সক্রিয়ভাবে উক্ত নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে তথা প্রার্থী দেয়। ইসলামের নামে
যারা নির্বাচনে অংশ নেয় তারা সাধারণতঃ প্রচার করে থাকে যে, গণতন্ত্র
আর ইসলাম একই বিষয় এবং তারা যে গণতন্ত্র করছে, সেটা
হচ্ছে ইসলামী গণতন্ত্র। তারা গণতন্ত্রের ভিত্তি ভোটকে আমানত, শুপারিশ,
উকিল নিয়োগ, স্বাক্ষ্য ইত্যাদি বলে প্রচার করে
থাকে।
কেউ কেউ আবার ইসলামী দলকে
ভোট দেয়া ফরয-ওয়াজিব বলে থাকে। আরো বলে থাকে যে, ইসলামী
দলের প্রার্থীকে ভোট দিলে জান্নাতের টিকেট
পাওয়া যাবে। যেমন জামাত নেতারা কিছুদিন পূর্বে একটি দৈনিক পত্রিকার সাক্ষাতকারে
বলেছে,
ইসলাম ও গণতন্ত্র একই বিষয়।
বায়তুল মুকাররমের খতীব
ওবায়দুল হক বলেছে, “ভোট দেয়া আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ অর্থাৎ ফরয। আল্লাহ পাক
বলেন,
ভোট একটি আমানত। আল্লাহ পাক-এর হাবীব বলেছেন, সৎ লোককে ভোট দিতে হবে।” (দৈনিক সংগ্রাম ১লা জুলাই-২০০৬)
মাহিউদ্দিন খান তার মাসিক
মদীনা ডিসেম্বর/৯৯ সংখ্যায় নির্বাচন ভিত্তিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ভোট দান
সম্পর্কিত একটি প্রশ্নের উত্তরে লিখেছে, (ক) ছহীহ্ অর্থে মুসলমানদের প্রকৃত শাসক হচ্ছে পবিত্র কুরআন এবং রসূলের
সুন্নাহ্। (খ) প্রচলিত যে কোন শাসন ব্যবস্থায় যদি কুরআন-সুন্নাহ্র প্রাধান্য মেনে
নেয়া হয় তবে তা মুসলিম জনগণ বিনা দ্বিধায় মেনে নিতে পারেন। (গ) ভোটের মাধ্যমে নেতা
বা শাসক নির্বাচনের বর্তমান যে পদ্ধতি এটা অংকুরিত হয়েছে, ইসলামী
শুরা পদ্ধতির মধ্য থেকে। সুতরাং এই পদ্ধতিতে ভোটের রাজনীতি ইসলামে বৈধ নয় এ কথা
বলা যাবে না। (ঘ) এ যুগের ভোট প্রদান বাইয়াতের বিকল্প বিবেচিত হতে পারে।
অনুরূপ হাটহাজারী খারেজী
মাদ্রাসার মুখপত্র মাসিক মুহীনুল ইসলামের সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর’ ০৬ সংখ্যায়ও ভোট-নির্বাচন সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে লিখেছে, (ক)
গণতন্ত্র বা নির্বাচন দুই প্রকার। (১) পাশ্চত্য গণতন্ত্র বা নির্বাচন। (২) ইসলামী
গণতন্ত্র বা নির্বাচন। (খ) খুলাফায়ে রাশেদীন ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছিলেন (গ)
পদপ্রার্থী হওয়া জায়িয। (ঘ) কুরআন সুন্নাহয় ভোটকে স্বাক্ষী, আমানত,
সুপারিশ ও প্রতিনিধি নিয়োগ বলে উল্লেখ করা হয়েছে ইত্যাদি
অনেক ভুল তথ্য তারা উল্লেখ্য করেছে। পটিয়া খারেজী মাদ্রাসার মুখপত্র “আত্ তাওহীদ”
ডিসেম্বর/৯৬, জানুয়ারী/৯৭, জুলাই-আগস্ট/৯৭
সংখ্যায় ভোট-নির্বাচন
এমনকি ভোট বেচা-কেনা করাকেও জায়িয ফতওয়া দিয়েছে।
আর উল্লিখিত বিষয়ে তাদের
নিকট দলীল তলব করলে তারা সাধারণতঃ মুফতী শফীর মা’য়ারিফুল
কুরআন ও ভোটের ইসলামী শরয়ী বিধান এবং শামসুল হক ফরীদপুরী ছাহেবের বক্তব্য তুলে ধরে
বলে থাকে যে,
তারা ভোটকে জায়িয বলেছেন। এখন আমাদের জানার বিষয় হলোঃ
১৫। আজকাল নামধারী প্রতিটি
ইসলামী দলকেই দেখা যায় বিভিন্ন দলের সাথে জোট বা চুক্তি করে থাকে। তাদেরকে এ
ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তারা এটাকে হুদায়বিয়ার সন্ধির সাথে তুলনা করে থাকে।
হুদায়বিয়ার সন্ধির সাথে তাদের উক্ত জোট বা চুক্তিকে তুলনা করা সঠিক ও শরীয়তসম্মত
কিনা?
১৬। যে সকল কথিত মাওলানা, মুফতী,
মুহাদ্দিছ, শাইখুল হাদীছ, খতীব,
পীর, আমীর ইসলামের নামে গণতন্ত্র, ভোট,
নির্বাচন করছে, ভোটকে আমানত, স্বাক্ষ্য ফরয-ওয়াজিব বলছে এবং ক্ষমতার লোভে বাতিলের সাথে আতাত করছে তারা
হক্কানী আলিম কিনা? তাদের পিছনে নামায পড়া জায়িয কিনা? তাদের ব্যাপারে শরীয়তের ফায়ছালা
কি?
১৭। যদি ইসলামের দৃষ্টিতে
গণতন্ত্র,
ভোট, নির্বাচন নাজায়িয হয় তবে রাষ্ট্র
পরিচালিত হবে কিভাবে? এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠিত হবে কিভাবে? রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠা করা কি ফরযে আইন? আর এজন্য কি সশস্ত্র বিপ্লব বা বোমাবাজি, জিহাদ বা
জঙ্গী কার্যকলাপের মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা যাবে?
উপরোক্ত প্রতিটি বিষয়
দলীলভিত্তিক বিস্তারিত জাওয়াব দিয়ে আমাদের ঈমান-আক্বীদা ও আমল হিফাযত করবেন বলে
আমরা আশাবাদি।
জাওয়াবঃ
ইসলামের নামে বা ইসলামের
দোহাই দিয়ে গণতন্ত্র, ভোট, নিবার্চন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া, নিজ দলকে ভোট দেয়া ওয়াজিব ও
জান্নাতের টিকেট লাভের কারণ বলা এবং ভোটকে আমানত, সুপারিশ, স্বাক্ষ্য ইত্যাদি বলা সম্পূর্ণ হারাম ও কুফরী। এটাই কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ,
ইজমা ও ক্বিয়াস তথা শরীয়তের চুড়ান্ত, ছহীহ ও গ্রহণযোগ্য ফতওয়া।
অতএব, বলার অপেক্ষা রাখে না যে, গণতন্ত্র, ভোট, নির্বাচন ও পদপ্রার্থী হওয়া সম্পর্কিত তথাকথিত খতীব উবায়দুল হক, নিজামী,
আহমদ শফী, মাহিউদ্দীন, আমিনী ও আযীযূল হক- ওহাবী, দেওবন্দী ও জামাতীগংদের উপরোক্ত
বক্তব্য সম্পূর্ণ কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও
ক্বিয়াসের খিলাফ বিধায় তা ভুল, অশুদ্ধ, জিহালতপূর্ণ
দলীলবিহীন ও কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
নিম্নে পর্যায়ক্রমে সুওয়ালে উল্লেখিত তাদের
প্রতিটি বক্তব্যের খ-নমূলক জাওয়াব প্রদান করা হলো।
(১৫)
আজকাল
নামধারী প্রতিটি ইসলামী দলকেই দেখা যায় বিভিন্ন দলের সাথে জোট বা চুক্তি করে থাকে।
তাদেরকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তারা এটাকে হুদায়বিয়ার সন্ধির সাথে তুলনা করে
থাকে। হুদায়বিয়ার সন্ধির সাথে তাদের উক্ত জোট বা চুক্তিকে তুলনা করা সঠিক ও
শরীয়তসম্মত কিনা?
উপরোক্ত
প্রশ্নের জবাবে প্রথমত বলতে হয় যে, তাদের
গণতন্ত্রভিত্তিক রাজনৈতিক জোটকে হুদায়বিয়ার সন্ধির সাথে তুলনা করা কাট্টা কুফরীর
অন্তর্ভূক্ত। কারণ তারা যদিও ইসলামী নাম ব্যবহার করে থাকে, হাক্বীক্বত
তারা গণতন্ত্রভিত্তিক রাজনৈতিক দল। কারণ তাদের মধ্যে আর অন্যান্য দলের মধ্যে তেমন
কোনই পার্থক্য নেই। তাদের নীতি ও আদর্শ আর অন্য দলগুলোর নীতি ও আদর্শ একই। যেমন
তারাও গণতন্ত্র করে অন্য দলগুলোও গণতন্ত্রই করে। তারা ভোট-নির্বাচন করে অন্য
দলগুলোও ভোট-নির্বাচন করে। তারা ছবি তোলে অন্য দলগুলোও ছবি তোলে। তারা নারী
নেতৃত্বে বিশ্বাসী, অন্য দলগুলোও নারী নেতৃত্বে বিশ্বাসী। তারা হরতাল করে অন্য
দলগুলোও হরতাল করে। তারাও অন্যদলগুলোর ন্যায় বেপর্দা হয়। অন্যদলগুলোর ন্যায় তারাও
সংবিধানের সকল কুফরী-শিরকী ও হারাম-নাজায়িয কাজগুলোকে স্বীকৃতি দিয়েই রাজনীতি বা
ভোট-নির্বাচন করে থাকে। অর্থাৎ তারা ইসলাম নাম ব্যবহার করলেও কস্মিনকালেও তারা
ইসলাম করেনা বা ইসলাম কায়েমের কোশেশও করে না। বরং তারা ইহুদী-খ্রিষ্টানদের
উদ্ভাবিত ও প্রচারিত মানব রচিত কুফরী মতবাদ গণতন্ত্র করে বা গণতন্ত্র কায়েমের
কোশেশ করে। মূলতঃ তাদের উদ্দেশ্য কখনোই ইসলাম কায়েম করা নয়। বরং ছলে, বলে, কৌশলে গদী দখল করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা করায়ত্ত করা। আর এ
কারণেই তারা যে কারো সাথে যে কোন সময় জোট করতে প্রস্তুত এবং করেও থাকে।
যদি তাই হয়ে থাকে তবে এ
ধরনের জোটকে ‘হুদায়বিয়ার সন্ধির’ মত একটি পবিত্র বিষয়ের সাথে তুলনা
করা কি করে জায়িয ও শরীয়তসম্মত হতে পারে? তাদের জোট বা কর্ম-কা-কে ‘হুদায়বিয়ার সন্ধির’ সাথে তুলনা করার অর্থ এই নয় কি যে, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানব রচিত মতবাদ
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং গদী বা ক্ষমতা দখল করার উদ্দেশ্যে সন্ধি করেছেন।
(নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক)।
মূলতঃ তাদের উল্লেখিত
গণতন্ত্রভিত্তিক রাজনৈতিক জোটকে ‘হুদায়বিয়ার সন্ধির’ সাথে তুলনা করা চরম পর্যায়ের জিহালতী, গোমরাহী, প্রতারণা ও কুফরী বৈ কিছু নয়।
দ্বিতীয়তঃ বলতে হয় যে, তারা ইসলাম সম্পর্কে চরম পর্যায়ের জাহিল বা অজ্ঞ হওয়ার কারণেই ‘হুদায়বিয়ার সন্ধির’ মূল বিষয় বস্তু বা হাক্বীক্বত
উপলব্ধি করতে পারেনি। ‘হুদায়বিয়ার সন্ধির’ মূল হাক্বীক্বত সম্পর্কে যদি তাদের সামন্যতমও ইলম থাকতো তবে তারা কস্মিনকালেও
তাদের কুফরী কর্মকা- বা জোটকে ‘হুদায়বিয়ার সন্ধির’ সাথে তুলনা করার দুঃসাহস দেখাতে পারতোনা। তাই নিম্নে হুদায়বিয়ার সন্ধি
সম্পর্কে সংক্ষিপ্তাকারে কিঞ্চিত আলোচনা পর্যালোচনা করা হলো।
হুদায়বিয়ার
সন্ধি
সুদীর্ঘ ছয়টি বছর
অতিক্রান্ত হতে চলল, স্বীয় মাতৃভূমি ছেড়ে নির্যাতিত মুসলমানগণ মদীনা শরীফে
তাশরীফ গ্রহণ করেছেন। তারা এ ছয়টি বছরে একবারের জন্যও মক্কা শরীফে আসতে পারেননি।
হজ্জব্রত পালনের জন্য মদীনা শরীফের মুসলমানগণও কম আগ্রহী ছিলেন না। তাঁরা একদিন
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা কি
আর কখনও মক্কা শরীফে যেতে পারবো না? হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম একদা স্বপ্ন দেখলেন, মক্কা শরীফে গিয়ে ওমরা পালন করছেন, তাওয়াফ করছেন কা’বা শরীফ। ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের
নিকট তিনি এ মুবারক স্বপ্ন প্রকাশ করলেন। মক্কা শরীফ গমন এবং কা’বা শরীফ যিয়ারত করার জন্য তাঁরা উদগ্রীব ছিলেন। তাঁরা সকলে স্বপ্নের কথা শুনে
কা’বা শরীফ যিয়ারতের জন্য প্রস্তুত হলেন।
পবিত্র যিলক্বদ মাসে প্রাচীন আরবী প্রথা অনুযায়ী যুদ্ধ বিগ্রহ নিষিদ্ধ থাকায় তিনি
পুণ্যভূমি দর্শন ও ওমরা আদায়ের উদ্দেশ্যে চৌদ্দশত ছাহাবী সহকারে মদীনা শরীফ হতে
মক্কাভিমুখে রওয়ানা হলেন। সঙ্গে নেয়া হল কুরবানীর জন্য ৭০টি উটও। হজ্জব্রত পালন
করার জন্য যেহেতু চরম শত্রুকেও সুযোগ দেয়া হয়, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও তাই বাধাপ্রাপ্ত হবেন না মনে করে মক্কা
শরীফের দিকে অগ্রসর হন। মুসলমানগণের আগমনের সংবাদ জানতে পেরে কুরাইশরা তাদের গতি
রোধ করার উদ্দেশ্যে হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত ইকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর নেতৃত্বে
একদল সৈন্য প্রেরণ করে। খুযআ গোত্রের বুদাইল ইবনে ওরাকার নিকট মক্কা শরীফের
সন্নিকটে কুরাইশদের যুদ্ধাভিযানের সংবাদ পেয়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম অন্য পথে এগুলেন এবং মক্কা শরীফের ৯ মাইল অদূরে ‘হুদায়বিয়া’ নামক স্থানে এসে তাঁবু স্থাপন করলেন।
নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বুদাইলের মারফত কুরাইশদেরকে জানালেন যে, তাঁরা যুদ্ধ করতে আসেননি; ওমরা করতে এসেছেন। তারা হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সততায় বিশ্বাস স্থাপন করে সন্ধির প্রস্তাব নিয়ে
আবওয়া ইবনে মাসদূকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট পাঠান; কিন্তু আলোচনা আবওয়ার দুর্ব্যবহারের জন্য ব্যর্থ হয়। কুরাইশদের নিকট সন্ধি
করার জন্য হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রথমে খোবাস এবং পরে হযরত
উছমান যুন্নূরাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে শান্তির প্রস্তাব দিয়ে কুরাইশ
নেতাদের নিকট প্রেরণ করেন। তারা উছমান যুন্নূরাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে আটক
করে রাখলে প্রচার হয়ে যায় যে, হযরত উছমান যুন্নূরাইন
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে কুরাইশরা শহীদ করেছে। মুসলিম যোদ্ধাগণ জীবন উৎসর্গ
করে হযরত উছমান যুন্নূরাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর শাহাদতের প্রতিশোধ গ্রহণ
করার জন্য বাইয়াত হলেন। ইতিহাসে এটাকেই ‘বাইয়াতুর রিদ্বওয়ান’ বলা হয়। কুরাইশগণ ভয়ে হযরত উছমান যিন্নূরাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে
মুক্তি দেয় এবং সুহাইলকে সন্ধি প্রস্তাব দিয়ে পাঠায়। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এ প্রস্তাব সানন্দে গ্রহণ করেন। নিম্নে হুদায়বিয়ার সন্ধির প্রধান
প্রধান শর্তাবলি উল্লেখ করা হল-
১. মুসলমানগণ এ বছর হজ্জ
সম্পাদন না করেই মদীনা শরীফে ফিরে যাবেন।
২. আগামী দশ বছর কুরাইশ ও
মুসলমানগণের মধ্যে যে কোন যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ থাকবে।
৩. মুসলমানগণ পরবর্তী বছর
(৬২৯ খ্রিস্টাব্দ) তিন দিনের জন্য মক্কা শরীফে হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে আগমন করতে
পারবেন। তখন কুরাইশগণ মুসলমানগণের অবস্থানকালে মক্কা নগরী ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয়
নেবে।
৪. মুসলমানগণ আগমনকালে
শুধুমাত্র আত্মরক্ষার জন্য কোষাবদ্ধ তরবারি ব্যতীত কোনো অস্ত্র সাথে আনতে পারবেন
না।
৫. নূরে মুজাস্সাম হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা কুরাইশদের সঙ্গে আরবদের যে কোনো গোত্রের
লোক সন্ধি সূত্রে আবদ্ধ হতে কোন বাধা-নিষেধ নেই।
৬. জনসাধারণের পূর্ণ
নিরাপত্তা চুক্তির মেয়াদকালে রক্ষিত হবে এবং একে অপরের ক্ষতিসাধন করবে না এবং কোন
প্রকার লুণ্ঠন অথবা আক্রমণ চালাবে না।
৭. মদীনা শরীফে কোন
মক্কাবাসী আশ্রয় গ্রহণ করতে চাইলে, মদীনা শরীফের মুসলমানগণ তাকে
আশ্রয় দিতে পারবে না। পক্ষান্তরে মদীনা শরীফ হতে কোন মুসলিম মক্কা শরীফে আগমন করলে
তাকে মক্কাবাসীরা প্রত্যার্পন করতে বাধ্য থাকবে না।
৮. হজ্জের সময় মুসলমানগণের
জানমালের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে এবং মক্কা শরীফের বণিকগণ নির্বিঘেœ মদীনা শরীফের পথ ধরে সিরিয়া, মিশর প্রভৃতি দেশে বাণিজ্য করতে পারবে।
৯. মুসলমানগণের দলে মক্কা
শরীফের কোন নাবালক তার অভিভাবকের অনুমতি ব্যতিরেকে যোগদান করতে পারবে না; করলে তাকে ফেরত দিতে হবে। উভয়পক্ষকে সন্ধির শর্তাবলি পরিপূর্ণভাবে পালন করতে
হবে।
হুদায়বিয়ার
সন্ধির উপরোক্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনা দ্বারা মূল যে বিষয়গুলো সাব্যস্ত হয়েছে তা হলো-
১. আখিরী রসূল হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওহীপ্রাপ্ত হয়েই হুদায়বিয়ার সন্ধি
করেছেন। অর্থাৎ তা ছিল সম্পূর্ণরূপেই আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ।
২. হুদায়বিয়ার সন্ধির
শর্তসমূহের মধ্যে ইসলাম বা শরীয়ত বিরোধী কোন শর্ত ছিলনা।
৩. হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফিরদের নেতৃত্বও মেনে নেননি।
৪. কাফিরদের ধর্ম
নিয়ম-নীতি,
তর্জ-তরীক্বা বা কোন আদর্শকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি বা মেনে
নেয়া হয়নি।
৫. সন্ধির প্রতিটি শর্তই
ছিল পরোক্ষভাবে মুসলমান ও ইসলামের পক্ষে।
পক্ষান্তরে
গণতন্ত্রভিত্তিক তথাকথিত ইসলামী দলগুলো যে জোট করে বা করছে তা সম্পূর্ণই তার
বিপরীত। যেমন-
১. তাদের কথিত জোট ইসলামের
জন্য নয় বরং গণতন্ত্র, ভোট-নির্বাচন করে ক্ষমতা হাছিলের জন্য।
২. তারা জোট করতে গিয়ে
তাদের শরীকদের নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীক্বাকে স্বীকৃতি দেয় বা
মেনে নেয়।
৩. তাদেরকৃত জোটের
শর্তসমূহের মধ্যে সবগুলিই শরীয়ত তথা কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী শর্ত থাকে বা রয়েছে।
৪. তারা পরিপূর্ণভাবেই
অনৈসলামিক দলগুলোর এমনকি শরীয়তে নিষেধকৃত নারী নেতৃত্বকে মেনে নেয় বা নিয়েছে।
অর্থাৎ জোটে তাদের কোনই প্রাধান্য থাকে না বরং সেখানে তাদের অবস্থান গোলামের মত।
৫. তাদেরকৃত জোটের
শর্তসমূহ কোনভাবেই অর্থাৎ পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে ইসলাম ও মুসলমানের পক্ষে নয়।
বরং শর্তগুলো ইসলাম ও মুসলমানের বিপক্ষে। তাই তারা জোট করে ক্ষমতায় যাওয়ার পরও
ইসলামের পক্ষে যেরূপ কোন কাজ করতে পারেনি। তেমনি পারেনি ইসলামের পক্ষে কোন কথা
বলতে। বরং অনৈসলামিক দলগুলোর গোলাম হওয়ার কারণে তাদেরকৃত ইসলাম বিরোধী আইনগুলোকে
গণতন্ত্রভিত্তিক তথাকথিত ইসলামী দলের নেতারা নিঃশর্তে ও নিঃশব্দে সমর্থন দিয়েছে বা
মেনে নিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ মদের লাইসেন্স দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা যেতে পারে।
এখন কথা হলো, এই যদি
হয় তাদের অবস্থা তবে তাদের তথাকথিত জোটকে অর্থাৎ তাদেরকৃত কুফরীমূলক ও শরীয়তবিরোধী
কর্মকা-কে হুদায়বিয়ার পবিত্র সন্ধি যাকে কুরআন শরীফে “ফাতহুম
মুবীন”
বা প্রকাশ্য বিজয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর সাথে তুলনা করা
কি করে শরীয়ত সম্মত হতে পারে? মূলত তথাকথিত জোটকে হুদায়বিয়ার
পবিত্র সন্ধির সাথে তুলনা করা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভূক্ত। কারণ তারা তাদেরকৃত
জোটকে হুদায়বিয়ার সন্ধির সাথে তুলনা করে এটাই প্রমাণ করেছে যে,
১. নূরে মুজাস্সাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গণতন্ত্র, ভোট-নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের জন্য সন্ধি করেছেন।
(নাউযুবিল্লাহ)
২. হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফিরদের নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীকাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন বা
মেনে নিয়েছেন। নাউযুবিল্লাহ।
৩. নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফিরদের নেতৃত্ব মেনে
নিয়েছেন। (নাউযুবিল্লাহ) অর্থাৎ তাদেরকৃত জোটকে হুদায়বিয়ার সন্ধির সাথে তুলনা করে
তারা প্রকৃতপক্ষে নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর প্রতি তোহমত দিয়েছে ও মিথ্যারোপ করেছে। যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভূক্ত ও
জাহান্নামী হওয়ার কারণ। কেননা হাদীছ শরীফে স্পষ্ট ইরশাদ হয়েছে,
عن عبد الله بن عمرو رضى الله تعالى عنه قال قال رسول
الله صلى الله عليه وسلم من كذب على متعمدا فاليتبوأ مقعده من النار.
অর্থঃ “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় আমার নামে মিথ্যা বলবে সে যেন তার স্থান জাহান্নামে
নির্ধারণ করে নিল। অর্থাৎ সে জাহান্নামী।” (বুখারী, মিশকাত)
তৃতীয়তঃ বলতে হয় যে, তারা অনৈসলামিক দলের সাথে জোট করে তাদের নেতৃত্ব ও নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীক্বা মেনে নিয়ে এবং হক্বকে নাহক্বের সাথে মিশ্রিত করে সুস্পষ্টভাবেই কুরআন, সুন্নাহ,
ইজমা ও ক্বিয়াসের খিলাফ কাজ করেছে। কারণ কুরআন শরীফ ও হাদীছ
শরীফের অসংখ্য স্থানেই হক্বকে নাহক্বের সাথে মিশ্রিত করতে ও বেদ্বীন-বদদ্বীনদের
নেতৃত্ব ও নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীকা মেনে নিতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে
আল্লাহ পাক পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ করেন,
ولا
تبسوا الحق بالبا طل.
অর্থঃ “তোমরা হক্বকে নাহক্বের সাথে মিশ্রিত করো না।” (সূরা
বাক্বারা-৪২)
আর কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের নেতৃত্ব, নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীক্বা মেনে নেয়া যে হারাম তা “সূরা
কাফিরূন”-এর তরজমা,
শানে নুযূল ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা আলোচনা করলেই সুস্পষ্টভাবে
প্রমাণিত হবে। মহান আল্লাহ পাক “সূরা কাফিরূন”-এর মধ্যে ইরশাদ করেন,
قل يا
يها الكفرون. لااعبد ما تعبدون. ولا انتم عبدون ما اعبد. ولا انا عابد ما عبدتم.
ولا انتم عبدون ما اعبد. لكم دينكم ولى دين.
অর্থঃ “১. বলুন,
হে কাফিরেরা! ২. আমি ইবাদত করিনা, তোমরা
যার উপাসনা কর। ৩. এবং আমি যার ইবাদত করি, তোমরা
তার ইবাদতকারী নও। ৪. এবং আমি ইবাদতকারী নই, তোমরা
যার উপাসনা কর। ৫. এবং আমি যার ইবাদত করি তোমরা তার ইবাদতকারী নও। ৬. আমার জন্য
আমার দ্বীন এবং তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম।”
‘সূরা
কাফিরূনে’
আল্লাহ পাক এই বিষয়টি স্পষ্ট করে বুুঝিয়ে দিয়েছেন যে, মুসলমান ও কাফিরের তর্জ-তরীক্বা, নিয়ম-নীতি, আইন-কানুন কখনও এক হবে না। আরো বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, কাফির, মুশরিক,
ইহুদী, নাছারা, বেদ্বীন, বদদ্বীন তথা বিধর্মীরা সবসময় হক্বকে ভয় পাবে। অর্থাৎ মুসলানদেরকে ভয় পাবে। যার
কারণে তারা সবসময় চেষ্টা করবে কি করে মুসলমানদেরকে ঈমান ও ইসলাম থেকে তথা ইসলাম
থেকে সরানোর জন্য তাদের ধর্মের সংস্কারের নামে তাদের ধর্মীয় নিয়ম-নীতি ছেড়ে ও তার
কিছু কাটছাট করে নতুন নিয়ম-নীতি প্রণয়ন করে মুসলমানদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে
ইসলামের সংস্কারের নামে মুসলানদের মধ্যে ঐ সমস্ত মনগড়া তর্জ-তরীক্বা প্রবেশ করিয়ে
দেয়ার চেষ্টা করবে।
যেমন বর্তমানে ইসলামের নাম
দিয়ে গণতন্ত্র,
ভোট, নির্বাচনকে জায়িয করার চেষ্টা
করছে। কুরআন শরীফে বর্ণিত পর্দাকে তুলে দেয়ার চেষ্টা করছে। হাদীছ শরীফে বর্ণিত ছবি
তোলা,
আকাঁ, রাখা হারামকে হালাল করার চেষ্টা
করছে। কুরআন শরীফে বর্ণিত “আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একমাত্র আদর্শ অর্থাৎ অনুসরনীয় ও অনুকরণীয়” এ আয়াত শরীফকে গুরুত্ব না দিয়ে
মুসলমান বিদ্বেষী কট্টর জাতি হিন্দু গান্ধীকে অনুসরণ করে হরতাল করছে। লক্ষ লক্ষ
মুসলমানদের শহীদকারী নাস্তিক মাওসেতুংকে অনুসরণ করে লংমার্চ করছে। হিন্দু ও
খ্রিস্টানকে অনুসরণ করে কুশপুত্তলিকা অর্থাৎ মূর্তি তৈরি ও দাহ করছে। ইসলামের
আইন-কানুন বাদ দিয়ে ইহুদী-নাছারাদের প্রবর্তিত ব্লাসফেমী আইন তলব করছে।
আল্লাহ পাক আলিমুল গইব
অর্থাৎ সমস্ত কিছু জানেন। আর আল্লাহ পাক-এর হাবীব নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত ইলম দান করা হয়েছে। সেজন্য
আল্লাহ পাক তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাধ্যম দিয়ে এ
বিষয়টা ‘সূরা কাফিরূনে’ বার বার তাকিদ করেছেন যে, মুসলমানরা
যেন কাফির তথা বিধর্মীদের স্পষ্ট করে বলে দেন, তারা
যাকে মানে বা যার উপাসনা করে, তাদেরকে মুসলমানদের পক্ষে মেনে
নেয়া ও তাদের উপাসনা করা সম্ভব নয়। কারণ তারা মুসলমানদের রব আল্লাহ পাক-এর ইবাদত
করে না। যদি করত তাহলে তারা অবশ্যই তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে মেনে নিত এবং তাদের ঐ সমস্ত উপাস্য অর্থাৎ মূর্তিদের পূজা করতো না। আর
ইহুদী-নাছারারা তাদের আসমানী কিতাব ছেড়ে তাদের মনগড়া বানানো তর্জ-তরীক্বা কখনই
পালন করত না। সেজন্য আল্লাহ পাক তাকিদ করে বলেন, ইহুদী, নাছারা,
কাফির, মুশরিক তথা বিধর্মীদের উপাস্যদের
উপাসনা করা তথা তাদের মনগড়া বানানো তর্জ-তরীক্বা অনুসরণ করা কখনই সম্ভব নয়। কাজেই, তারা যদি এখন তওবা করে ফিরে আসে অর্থাৎ ইসলাম গ্রহণ করে আল্লাহ পাককে ও তাঁর
হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মেনে চলে তাহলে তাদের জন্য খায়ের-বরকত
রয়েছে। আর মুসলমানরা অবশ্যই তাদের দ্বীন ইসলামের উপর দৃঢ়চিত্ত ও ইস্তিক্বামাত
থাকবে। আর বিধর্মীরা যদি দ্বীন ইসলাম না মেনে তাদের মনগড়া বাতিল ধর্মের উপর থাকে
তাহলে সেটা তাদের নিজস্ব মত ও ইখতিয়ার। কাজেই, মুসলমানদের জন্য কখনই ইসলাম ছেড়ে অন্য কোন ধর্ম অনুসরণ করা জায়িয নেই। যদি কেউ
অনুসরণ করে তাহলে সে কাট্টা কাফির ও চিরজাহান্নামী হয়ে যাবে। যেমন কাফিরেরা হবে।
এ সূরার ‘শানে নুযূলে’ বলা হয়েছে, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহুসহ আরো কয়েকজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম বর্ণনা করেন, উমাইয়া বিন খলফ, আছ বিন ওয়ায়িল, ওয়ালিদ বিন মুগীরা, হারিস,
আসওয়াদ প্রমুখ মক্কা শরীফের কুরাইশদের মধ্যে বিশিষ্ট
ব্যক্তিরা আল্লাহ পাক-এর হাবীব নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর কাছে এসে বললো যে, আমরা পরস্পর পরস্পরের সাথে সন্ধি
করে চললে কোন ফিৎনা- ফাসাদ হবে না অর্থাৎ আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারবো। তখন
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আপনারা কি বিষয়ে সন্ধি বা চুক্তি করতে চান? তারা
বললো,
আপনি আমাদের উপাস্যদের এক বছর উপাসনা করবেন আর আমরাও আবার
পরবর্তী এক বছর আপনার রবের ইবাদত করবো। তাতে আপনি আমাদের উপাসিত দেবতার মধ্যে যে
মঙ্গল রয়েছে সেটা লাভ করতে পারবেন। আর আমরাও আপনার রবের মধ্যে যে খায়ের-বরকত রয়েছে
সেটা লাভ করতে পারবো। এতে প্রত্যেকেই প্রত্যেকের দ্বারা ফায়দা হাছিল করতে পারবো।
আর এই শর্ত যদি আপনি মেনে নেন তাহলে আপনাকে আমরা ধন-দৌলত, টাকা-পয়সা
যত পরিমাণ চান তত পরিমাণ দিব। ফলে আপনি মক্কা শরীফের সর্বাধিক ধনাঢ্য ব্যক্তিতে
পরিণত হবেন। আর আপনি যে মহিলাকেই বিয়ে করার ইচ্ছা করবেন তাকেই আপনার কাছে বিবাহ
দেয়া হবে। আর যদি আপনি উপাসনা করতে না চান তাহলে কমপক্ষে আমাদের উপাস্যদের খারাপ
বলবেন না। ইত্যাদি বিষয়গুলির মাধ্যমে যখন কুরাইশ কাফির-মুশরিকরা তাদের কুফরী
মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছিল, তখন আল্লাহ পাক ‘সূরা কাফিরূন’ নাযিল করেন। অর্থাৎ সূরা নাযিল করে জানিয়ে দিলেন, কোন কাফির,
মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের
কোন কুফরী মতবাদ গ্রহণ করে বা স্বীকার করে বা মেনে নিয়ে কোন মুসলমানের পক্ষে সন্ধি
বা চুক্তি করা জায়িয নেই। তখন নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তাদেরকে জানিয়ে দিলেন যে, তোমাদের এ সমস্ত শর্ত-শারায়িত
মেনে নেয়া সম্ভব নয়।
কোন কোন বর্ণনায় রয়েছে, তখন নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন, তোমরা যদি আমার এক হাতে সূর্য এবং আরেক হাতে চন্দ্রও এনে দাও তারপরেও আমার
পক্ষে এ শর্ত মেনে নেয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ আমি কোন অবস্থাতেই আল্লাহ পাক-এর কোন
আদেশ-নির্দেশের খিলাফ করতে পারবো না। তখন কাফিরেরা নিরাশ হয়ে চলে গেল।
কাজেই, এই সূরা থেকে মুসলমানদেরকে এ
শিক্ষাই গ্রহণ করতে হবে, তাদেরকে সব অবস্থায় জাহিরী-বাতিনী, জিসমানী-রূহানী, বাহ্যিক-আভ্যন্তরীন সর্ব হালতে আল্লাহ পাক-এর মতে মত ও তাঁর
হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পথে পথ থাকতে হবে। কোন অবস্থাতেই এর
খিলাফ করা যাবে না। কাফির, মুশরিকদের কোন তর্জ-তরীক্বা কোন
অবস্থাতেই কোন বিষয়েই কোন ভাবেই গ্রহণ করা যাবে না।
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা
অকাট্ট ও সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে, কোন অবস্থাতেই হক্বকে নাহক্বের
সাথে মিশ্রিত করা ও বেদ্বীন-বদদ্বীন, কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারাদের তথা বাতিলপন্থীদের নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীকা ও নেতৃত্ব মেনে নেয়া সম্পূর্ণ হারাম ও শরীয়তের
খিলাফ।
কাজেই বলার অপেক্ষাই রাখে
না যে,
ইসলামের নামে গণতন্ত্র ভিত্তিক আন্দোলনকারী দলগুলো বাতিল
তথা অনৈসলামিক দলগুলোর নিয়ম-নিিত, তর্জ-তরীক্বা মেনে নিয়ে যেরূপ
হারাম,
শরীয়ত বিরোধী তথা কুরআন শরীফ, হাদীছ
শরীফ,
ইজমা ও ক্বিয়াসের খিলাফ করেছে। তদ্রুপ ওহী দ্বারা
ফায়ছালাকৃত ‘ফাতহুম মুবীন’ বা ‘হুদায়বিয়ার সন্ধিকে’ তাদেরকৃত কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কর্মকা-ের সাথে তুলনা করে কাট্টা কুফরী করেছে।
তাদেরকে এর থেকে খালিছ তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে।
অসমাপ্ত
0 Comments:
Post a Comment