২২৯ নং- সুওয়াল : কাজ্বা নামায কয় প্রকার ও কি কি? কাজ্বা নামাযসমূহের নিয়ম কি? এবং কিভাবে নিয়ত করতে হবে। কোন কোন সময় কাজ্বা নামায পড়া যায় না? উমরী কাজ্বা কাকে বলে?


সুওয়াল : কাজ্বা  নামায কয় প্রকার ও কি কি? কাজ্বা নামাযসমূহের নিয়ম কি? এবং কিভাবে নিয়ত করতে হবে। কোন কোন সময় কাজ্বা নামায পড়া যায় না? উমরী কাজ্বা কাকে বলে?
জাওয়াব : কাজ্বা নামায দুপ্রকার- (১) কাজ্বায়ে আদা ও (২) কাজ্বায়ে উমরী।
          কাজ্বায়ে আদা আবার দুধরনের-
প্রথমতঃ যে সমস্ত কাজ্বা নামাযের ক্ষেত্রে তরতীব রক্ষা করতে হয়, আর এর হুকুম হলো  নামায যদি পাঁচ ওয়াক্ত বা তার চেয়ে কম কাজ্বা হয়, তাহলে তরতীব অনুযায়ী কাজ্বা আদায় করে তারপর ওয়াক্তিয়া নামায পড়তে হবে। যেমন কারো যদি ফজর, যোহর, আছর, মাগরীব, ইশার নামায কাজ্বা হয়, তাহলে পরবর্তী ফজরের  নামায পড়ার পূর্বে উক্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামায পর্যায়ক্রমে কাজ্বা আদায় করে তারপর ফজর  নামায পড়তে হবে, অন্যথায় ফজর নামায আদায় হবেনা। আর যদি ফজর থেকে ফজর পর্যন্ত ৬ (ছয়) ওয়াক্ত বা তদুর্ধ নামায কাজ্বা হয়, তাহলে পরবর্তী যোহর পড়ার সময় কাজ্বা নামাযের তরতীব রক্ষা না করলেও চলবে। বরং কাজ্বা  নামায সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী হারাম ওয়াক্ত বাদে যেকোন সময় আদায় করলেই নামায শুদ্ধ হয়ে যাবে। তবে তরতীবওয়ালা নামাযের ক্ষেত্রে কাজ্বা আদায় করতে গেলে যদি ওয়াক্তিয়া নামাযের সময় কম থাকার কারণে ওয়াক্তিয়া নামায ফওত হওয়ার আশঙ্কা হয়, তাহলে তরতীব রক্ষা না করে বরং ওয়াক্তিয়া  নামায পড়ে নিতে হবে। যেমন কারো মাগরিব ও ইশার  নামায কাজ্বা হয়ে গিয়েছে এবং ফজরের ওয়াক্তে এমন সময় ঘুম হতে উঠেছে- সুর্য উদয় হতে ৫/৭ মিনিট বাকী, এখন ওযু করে যদি কাজ্বা নামায আদায় করতে যায়, তাহলে আর ফজরের ফরজ নামায পড়া যায়না, এমতাবস্থায় তরতীব রক্ষা করার প্রয়োজন নেই। বরং ফজরের  নামায পড়ে নিতে হবে।
          এখানে উল্লেখ্য যে, তরতীব তিন কারণে ভঙ্গ হয়- (১) পাঁচ ওয়াক্তের বেশী কাজ্বা থাকলে, (২) ওয়াক্ত কম থাকলে, (৩) তরতীবের কথা ভূলে গেলে।
কাজ্বা নামাযের নিয়ত হলো- আমি ফজরের দুরাকায়াত বা জোহর, আছর, এশার চার রাকায়াত বা মাগরিব, বেত্রের তিন রাকায়াত ফরজ/ওয়াজিব  নামায ক্বিবলামুখী হয়ে কাজ্বা আদায় করতেছি, আল্লাহু আকবার।
          আর উমরী কাজ্বা বলে এমন কাজ্বা নামাযকে- যে নামায থাকা সম্বন্ধে নামাযী ব্যক্তি সন্দেহে রয়েছে, তার কাজ্বা নামায বাকী আছে কিনা? এ সন্দেহের কারণে যে কাজ্বা নামায পড়া হয়, উহাকে উমরী কাজ্বা বলে। উমরী কাজ্বার ক্ষেত্রে মাগরীব ও বিতর নামায তিন রাকায়াতর স্থলে চার রাকায়াত পড়তে হয়। যেমন- মাগরীব এবং বিতর নামায নিয়ম মোতাবেক যথারীতি শেষ করে সালাম ফিরানোর পূর্বে দাঁড়িয়ে আর এক রাকায়াত (চতুর্থ রাকায়াত) নামায সুরা মিলায়ে পড়তে হবে। অতঃপর রুকু সিজদা করে তাশাহুদ, দরূদ শরীফ ও দোয়া মাশুরা পড়ে সালাম ফিরায়ে  নামায শেষ করতে হবে। (আলমগীরী, বাহরুর রায়েক, হিদায়া, ফতহুল ক্বাদীর ইত্যাদি)
আবা-১৮

0 Comments: