স্বামী ও স্ত্রী উভয়ে উভয়ের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে

Image result for কর্তব্যস্বামী ও স্ত্রী উভয়ে উভয়ের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে-
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “তারা (আহলিয়া) তোমাদের আবরণ (পোশাক) এবং তোমরা (আহাল)তাদের আবরণ (পোশাক)।”
হাদীছ শরীফ মধ্যে স্বামীদের সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, “যদি আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত অন্য কাউকে সিজদা করা যেত, তাহলে আমি স্ত্রীদেরকে তাদের স্বামীদের সিজদা করার আদেশ দিতাম।” সুবহানাল্লাহ! আর অন্য হাদীছ শরীফ মধ্যে স্ত্রীদের সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, “তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম, যে তার আহলিয়া তথা স্ত্রীর নিকট উত্তম।” সুবহানাল্লাহ! {কিমিয়ায়ে সাআদাত}
উপরোক্ত আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা সুস্পষ্ট যে আল্লাহ পাক তিনি এবং হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা যেভাবে স্বামীদের মর্যাদা, অধিকার দিয়েছেন ঠিক সেভাবেই স্ত্রীদের মর্যাদা ও অধিকার দিয়েছেন। যা সাধারণ মানুষ বুঝে না। যদিও স্বামীদের মর্যাদা ও অধিকার সম্পর্কে এবং স্বামীদের প্রতি স্ত্রীদের কি কর্তব্য সে সম্পর্কে বহু কিতাবাদিতে রয়েছে কিন্তু স্ত্রীদের মর্যাদা ও অধিকার ও স্ত্রীদের প্রতি স্বামীর কি কর্তব্য তা সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই অজ্ঞ। তাই কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ এর মুবারক আলোকে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর এবং স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কিছু কর্তব্য নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
১. স্ত্রীর সাথে কর্কশ ভাষায় কথা বলবে না, অনুরূপ স্ত্রীও স্বামীর সাথেও কর্কশ বা রুক্ষ ভাষায় কথা বলবে না। যদি উভয়ের মধ্যে একজন রাগবশত কর্কশ বা রুক্ষ ভাষায় কথা বলে অপরজন ধৈর্যধারণ করবে।
এ সম্পর্কে হাদীছ শরীফ এর মধ্যে ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি স্ত্রীর কর্কশ ভাষা সহ্য করবে সে ব্যক্তি হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম উনার বিপদরাশি সহ্য করার সমপরিমাণ সওয়াব পাবে, অনুরূপভাবে কোনো স্ত্রী যদি স্বামীর কর্কশ ভাষা সহ্য করে, সে স্ত্রী ফেরআউনের স্ত্রী হযরত আছিয়া আলাইহাস সালাম উনার সমপরিমাণ সওয়াব পাবে।” সুবহানাল্লাহ!
২. স্ত্রীর ভালো ভালো গুণাবলী বলে স্ত্রীকে উৎসাহিত করা অনুরূপ স্বামীর প্রশংসনীয় দিকগুলো স্বামীর নিকট বর্ণনা করে অনুপ্রাণিত করা।
৩. স্ত্রীর প্রয়োজনীয় বিষয়াদির দিকে ভালোভাবে খেয়াল করা অনুরূপ স্বামীর প্রয়োজনীয় বিষয়াদির দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা।
৪. স্ত্রীর পোশাক, খাওয়া-দাওয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে লক্ষ রাখা ঠিক তদ্রপ স্বামীর উপরোক্ত বিষয়গুলোর উপর লক্ষ্য রাখা। মনে রাখতে হবে উভয় উভয়ের আবরণ এবং দুইজন দুইজনের পরিচয়।

৫. স্ত্রীর যা পছন্দ তা পূরণ করার চেষ্টা করা অনুরূপ স্বামীর যা পছন্দ তা পূরণ করার চেষ্টা করা।
৬. সন্তানের সামনে স্ত্রীর প্রশংসা করা, ভালো গুণাগুণ বলা অনুরূপ স্বামীর প্রশংসা করা, ভালো গুণাগুণ বর্ণনা করা। যাতে সন্তানরা বাবা-মায়ের ভালো গুণগুলো অর্জন করতে সক্ষম হয়। তাদের সামনে উভয় উভয়ের দোষ বর্ণনা করবে না।
৭. স্ত্রীর মাতা-পিতাকে সাধ্য অনুযায়ী হাদিয়া, তোহফা দেয়া অনুরূপ ভাবে স্বামীর পিতা-মাতাকে সাধ্য অনুযায়ী হাদিয়া তোহফা দেয়া।
৮. অভাব অনটন থাকুক বা না থাকুক উভয় অবস্থাতেই স্ত্রীর ভরণ পোষণ দিতে হবে এবং স্ত্রীরাও স্বামীদের অভাব অনটনের সময় সাধ্য অনুযায়ী স্বামীকে সহযোগিতা করবে। এই ক্ষেত্রে উভয় উভয়কেই অনুপ্রাণিত করা, উৎসাহিত করা।
৯. দান খয়রাত ও হাদিয়ার ক্ষেত্রে স্ত্রীকে সহযোগিতা করা অনুরূপ দান খয়রাত ও হাদিয়ার ক্ষেত্রে স্বামীকে সহযোগিতা করা। এই ক্ষেত্রে উভয় উভয়কেই অনুপ্রাণিত করা, উৎসাহিত করা।
১০. উভয় উভয়ের ভুল-ভ্রান্তি মেনে নেয়া এবং তা থেকে ফিরে আসার চেষ্টা করা।
১১. উভয়কে তাদের নিজ অবস্থার উপর সন্তুষ্ট থাকা এবং নিয়ামত এর শুকরিয়া আদায় করা।
১২. পরষ্পর পরষ্পরকে নেক আমলে উৎসাহিত করা। শরিয়তসম্মত জীবন-যাপনে পরষ্পরকে সহযোগীতা করা



0 Comments: