হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম সম্পর্কে অপবাদের জবাব

Image result for জবাবহযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম সম্পর্কে অপবাদের জবাব
যে ঘটনাগুলো নিয়ে হিন্দু ও নাস্তিকেরা সবচেয়ে বেশি মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে থাকে, সেগুলোর মধ্যে উম্মুল মু’মিনীন হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনার বিষয়টি অন্যতম। অন্যদের দেখাদেখি কালীদেবির একনিষ্ঠ ভক্ত সুষুপ্ত পাঁঠাও এরকম মিথ্যাচার করে একটি পোস্ট দিয়েছে।

সুষুপ্ত পাঁঠার লাদির পরিমাণ বেশি হওয়ায় তা সরাসরি কোট করাটা বাহুল্য হয়ে যায় । তবে তার মিথ্যাচারগুলো সংক্ষেপে এরকম-

১) হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন দাসী। নাউযুবিল্লাহ!
২) হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনার সাথে রসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিয়ে হয়নি। নাউযুবিল্লাহ!
৩) হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনাকে কেন্দ্র করে হযরত হাফসা আলাইহাস সালাম উনার সাথে দ্বন্দ্ব হয়েছিলো। হযরত হাফসা আলাইহাস সালামের পিতা হযরত উমর রদ্বিআল্লাহু তায়ালা আনহু তিনিও এর সাথে জড়িত ছিলেন। নাউযুবিল্লাহ!

প্রথমত বলতে হয়, হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালামকে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট প্রেরণ করেছিলেন মিশরের সম্রাট মুকাউকিস। আমরা জানি যে, নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তৎকালীন সময়ের সম্রাটদের নিকট ইসলামের দাওয়াত দিয়ে পত্র ও দূত প্রেরণ করেছিলেন। মিশরের সম্রাট মুকাউকিসের নিকট প্রেরিত পত্রের জবাবে মুকাউকিস লিখেছিলেন-

“আমি আপনার পত্র মুবারক পাঠ করেছি এবং যা কিছু আপনি বলতে চেয়েছেন তা অনুধাবন করেছি। আমার জানা আছে যে, এখনও একজন সম্মানিত নবী উনার আবির্ভাব অবশিষ্ট রয়েছে এবং তিনি আসবেন। কিন্তু আমার ধারণা ছিল যে, তিনি শাম (সিরিয়া) অঞ্চলে তাশরীফ মুবারক আনবেন। আমি আপনার কাসেদ (দূত) উনার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছি। মুবারক হাদিয়া স্বরূপ আপনার জন্য দুজন মেয়ে প্রেরণ করছি। উনারা দুইজন সহোদরা এবং নিতান্ত সম্ভ্রান্ত পরিবারের। এছাড়া দুল দুল নামক একটি বাহন ও কিছু কাপড় হাদিয়া মুবারক হিসেবে পাঠানো হচ্ছে।”

পত্রে উল্লিখিত এই দুজনের একজন ছিলেন হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম, এবং অন্যজন ছিলেন হযরত সীরিন রদ্বিআল্লাহু তায়ালা আনহা। হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন সম্ভ্রান্ত পরিবারের, অনেক বর্ণনায় সম্রাট মুকাউকিসের আপন চাচাতো বোন। হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহিসা সালাম উনাকে হুযূর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে গ্রহণ করেন এবং হযরত সীরিন রদ্বিআল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে বিয়ে দেন হযরত হাসসান বিন সাবিত রদ্বিআল্লাহু তায়ালা আনহুর নিকট।

নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্ত্রী হিসেবে কবুল করার জন্য একজন সম্ভ্রান্ত নারীকে পাঠিয়েছেন একজন শাসক, এখানে নোংরামির কী আছে? কিন্তু হিন্দুরা সব কিছুতেই নোংরামি প্রবেশ করায়, কারণ তারা জাতিগতভাবে নাপাক। সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হযরত মারিয়া আলাইহাস সালাম উনাকে ‘দাসী’ বলার সাথে সাথে এই নাস্তিকেরা আরো মিথ্যাচার করে যে, উনাকে নাকি বিয়ে করা হয়নি। নাউযুবিল্লাহ!

এর উত্তরে বলতে হয়, প্রথম খলীফা হযরত আবু বকর আলাইহিস সালাম ও হযরত উমর ফারুক আলাইহিস সালাম উনাদের নিজ নিজ খিলাফতকালে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনাকে অতিশয় সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করা হয়। খিলাফত থেকে হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনার জন্য ভাতা নির্ধারণ করে দেয়া হয়, যা উনার ওফাত মুবারকের পূর্ব পর্যন্ত তিনি পেতে থাকেন।

এখন বলুন পাঠকেরা, হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনাকে যদি বিয়ে না করা হতো, তাহলে উনার সম্মানার্থে কেন খোদ খলীফা পর্যন্ত ভাতার ব্যবস্থা করবেন? শুধু তাই নয়, হযরত উমর রদ্বিআল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সাথে যে কাল্পনিক ঝগড়ার কথা নাস্তিক ও হিন্দুরা বলে থাকে, সেরকম কিছুর অস্তিত্ব থাকলে নিশ্চয়ই উনার সময়ে এই ভাতা জারি থাকতো না।

হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম তিনি যে নবী পরিবারের একজন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিত্ব ছিলেন, তার প্রমাণ আরো দেয়া যায়। তিনি ছিলেন মিসরের আনসানা অঞ্চলের হাফন নামক গ্রামের বাসিন্দা। নববী পরিবারের অন্যতম সদস্য হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার সুপারিশক্রমে হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হাফন বাসিদের খারাজ (ভূমি কর) মাফ করে দিয়েছিলেন। ইহা উম্মুল মু’মিনীন হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে করা হয়েছিল। সুবহানাল্লাহ!

হিজরী ১৬ সালে পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাসে হযরত মারিয়া আলাইহাস সালাম উনার ওফাত মুবারক হয়। দ্বিতীয় খলীফা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি উনার পবিত্র জানাযার নামায পড়ান। পবিত্র জান্নাতুল বাক্বী শরীফ উনার পবিত্র রওজা শরীফ অবস্থিত। (উসুদুল গাবা, ইছাবা, সিয়ারুস ছাহাবা, অন্যান্য সীরত গ্রন্থ)

নিজ কন্যা হযরত হাফসা আলাইহাস সালাম উনার সাথে যদি ঝগড়া থাকতোই, তাহলে নিশ্চয়ই হযরত উমর রদ্বিআল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত মারিয়া আলাইহাস সালাম উনার জানাযা পড়াতেন না। আরো অনেক খণ্ডনমূলক জবাব দেয়া যায়, কিন্তু হিন্দুরা এরপরও মিথ্যাচার করতেই থাকবে। আসলে জন্মপরিচয়ে সমস্যা থাকলে যা হয়।আর সুষুপ্ত পাঁঠাদের এসব মিথ্যাচারের ফলাফল হবে ভয়াবহ। পাহাড়ে যখন সেনা কর্মকর্তাদের সাথে পাহাড়িরা দুর্ব্যবহার করে ও গায়ে হাত তোলে, তখন তারা কিছু করতে পারে না। কারণ উপর থেকে পাহাড়িদের জামাই আদরের নির্দেশ দেয়া আছে। আমার পরিচিত একজন বলেছিলেন, করতে দাও। কারণ সময় হলে পাহাড়িদের উপর নিষ্ঠুরতা দেখাতে কারো হাত কাঁপবে না।

ঠিক সেভাবেই এই বেজন্মা হিন্দু আর নাস্তিকদের নির্মূল করতেও মুসলমানদের হাত কাঁপবে না। হিন্দু বেজন্মার দল বোঝে না, এসব সুষুপ্ত পাঁঠাদের নিয়োগ দিয়ে তারা নিজেদের চিতায় নিজেরাই ঘি ঢালছে।

সুষুপ্ত পাঁঠার মিথ্যাচার: https://www.facebook.com/alaminsusupto/posts/497114027160672



0 Comments: