ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছাহিবে সিমে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
খাজিনাতুর রহমত, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সদয় অনুমতিতে দেশে ফেরা -
হক্ব মত ও পথে দায়িম ও ক্বায়িম থাকা
নফসের খিলাফ। একমাত্র আল্লাহ পাক-উনার মাহবুব ওলীগণ ব্যতীত অন্য কারো পক্ষে পরিপূর্ণরূপে
গায়রুল্লাহ বিবর্জিত মানসিকতায় ঈমান, আক্বীদা, ইলম্ ও অনুভবে ইবাদত-বন্দেগী ও যিকির-ফিকিরে
ষোলআনা দখল জমিয়ে অনুক্ষণ নিয়োজিত থাকা আদৌ সম্ভব নয়। সাধারণ মানুষের পক্ষে এ মর্যাদা
ও মর্তবায় উপনীত হওয়া দুরূহ। বিশেষতঃ দুনিয়ালোভী আলিমদের কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা
ও ক্বিয়াস বিরোধী আমল, আখলাক্ব এবং বিরূপ কর্মানুষ্ঠান সাধারণ মুসলমানদের পক্ষে হক্ব
মত ও পথে অধিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসলাম ধর্মের ক্ষতি সাধনে কাফির
ও মুশরিকদের তুলনায় দুনিয়াদার আলিমদের ঘৃণ্য ভূমিকাই প্রকট। তারা দুনিয়ার সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব। বিপর্যস্ত ঈমান ও আক্বীদায়
তাদের স্বেচ্ছাচারী আমল ও আচরণে মানুষ পথভ্রষ্ট ও লক্ষ্য বিচ্যূত হয়। সময়ের অতিক্রান্তিতে
তাওহীদ ও রিসালত পরিপন্থী আবহে মানুষ গোমরাহীতে নিপতিত হয়। দুনিয়া লোভী আলিমদের সংস্পর্শে
সামগ্রিক পরিম-লে ভ্রান্ত আক্বীদা, নৈতিক অবক্ষয়, সুন্নত অনুসরণের অনীহা এবং বিরূপ জীবনাচরণে ক্রমান্বয়ে বিদয়াত জন্ম নেয়।
পরিণতিতে আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সন্তুষ্টি
লাভের জন্য উদ্দিষ্ট মানুষ শিরক ও কুফরীর তমসায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। এমন তমসায় মানুষের
ঈমান ও আক্বীদা নবায়ন, অনৈসলামিক আমল, আচরণ ও অনুভবের মূলোৎপটন এবং মানুষকে সুন্নত
পালনে অভ্যস্ত করে তুলে আল্লাহ মুখী করে দেয়া অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। এই আয়াসসাধ্য দায়িত্ব
যিনি পালন করেন,উনাকে মুজাদ্দিদ (সংস্কারক) বলা হয়। প্রতি শতাব্দীতেই দুনিয়ায় মুজাদ্দিদ-উনার
আগমন ঘটে।
এ মর্মে সাইয়্যিদুল মুরসারীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্
নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,নিশ্চয়ই
আল্লাহ পাক এ উম্মতের (হিদায়েতের) জন্য প্রত্যেক হিজরী শতকের প্রারম্ভে এমন একজন মহান ব্যক্তি (মুজাদ্দিদ) পাঠাবেন, যিনি দ্বীনের
তাজদীদ (সংস্কার) করবেন।” (আবূ দাঊদ শরীফ) এমন মুজাদ্দিদ-উনার দায়িত্ব অপার। উনার জীবনের আয়োজন, কোশেশ ও
কামিয়াবীর পন্থাও ব্যাপকতর। মুজাদ্দিদ-উনার লব্ধ নিয়ামত এবং কামিয়াবীর সোপান উনার নিজস্ব
সম্পদ হওয়া সত্ত্বেও তিনি আত্মকেন্দ্রিক হতে পারবেনা। তাজদীদ (সংস্কার কাজ)-উনার লক্ষ্য
ও ক্ষেত্র কোন জনপদ বা নির্দিষ্ট ভৌগলিক সীমানায় আবদ্ধ থাকেনা। তাজদীদ-উনার মূল লক্ষ্য
ও ক্ষেত্র মানুষের মন ও মনন। মুজাদ্দিদ-উনার
কাজের আঞ্জাম দুনিয়া জুড়ে। যিনি যতো বড়, উনার কাজের পরিধিও ততো ব্যাপক। প্রেক্ষিত কারণে
তাই সহজেই অনুমেয় যে, একজন মুজাদ্দিদে আ’যম-উনার কর্ম পরিধি জগৎ-সংসারের সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। এ ক্ষেত্রে
জানা আবশ্যক যে, ইসলাম রাষ্ট্রসীমা স্বীকার করেনা। জনসমষ্টি, সরকার ও সার্বভৌমত্ব ভিত্তিক
কোন সুনির্দিষ্ট একক ভূখ-ের মধ্যে ইসলাম সীমাবদ্ধ নয়।
আল্লাহ পাক-উনার সদয় অনুমোদন ও অবারিত রহমত এবং ছাহিবু
ওয়ামা আরসালনাকা ইল্লা রহমতুল্লিল আলামীন,
রউফুর রহীম, নবীয়ে আক্বদাস, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে নিগূঢ়
সংযোগ সাধন ব্যতিরেকে আপন কোশেশ ও প্রয়াসে মুজাদ্দিদ হওয়া যায়না। যিনি মুজাদ্দিদে আ’যম, আল্লাহ পাক-উনার পূর্ব
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি জন্মলগ্ন থেকেই মুজাদ্দিদে আ’যম। সাধারণত: কৈশোর অতিক্রান্তিকাল
থেকেই মুজাদ্দিদসুলভ আচরণের প্রকাশ ও বিকাশ ঘটতে শুরু করে। মন ও মননের গভীরে প্রচ্ছন্নভাবে
মিশে থাকা মুজাদ্দিয়াতকে জাগিয়ে তুলতে হয় এবং উনার বিকাশ ঘটাতে হয়। নিরন্তর এ কাজের
তদারকি ও পরিচর্যা দরকার। আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, মাশুকে মাওলা, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সদয় ইচ্ছায় আশিকে নবী, আওলাদে রসূল, হযরতুল
আল্লাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম পূর্বেই জেনে গেছেন যে, উনার
কিশোর পুত্র মুজাদ্দিদে আ’যম। তিনি জগৎ আলোড়িত করবেন এবং বাতিল ধ্বংস করবেন। উনার তাজদীদ হবে দুনিয়াব্যাপী।
পিতার সান্নিধ্য ও সাহচর্য এই মুবারক পুত্রের
জন্য এখন জরুরী। (অসমাপ্ত)
আবা-১২৯
0 Comments:
Post a Comment