একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
খাজিনাতুর রহমত, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সদয় অনুমতিতে দেশে ফেরা -
দেশে রেখে আসা স্ত্রী-পুত্র-কন্যা,
অপরাপর আপনজন, বৈভব ও বিষয় নিয়ে কোন উৎকণ্ঠা ও দুশ্চিন্তা নেই। থাকার কথাও নয়। কারণ
অতি শৈশবকালেই মনের গভীরে ঠাঁই পেয়েছে দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি। আল্লাহ পাক-উনার সদয়
ইচ্ছা এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, রহমাতুল্লিল আলামীন, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-উনার অপরিমেয় বখ্শিশে ক্রমান্বয়ে মন ও মননে স্থায়ীভাবে বাসা বেঁধেছে আল্লাহ
পাক এবং মাশুকে মাওলা, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার মারিফাত ও মুহব্বত।
প্রত্যাশা পূরণে পূর্ণ মাত্রায় কামিয়াবী হাছিলের পর জগৎ-সংসার এবং তৎসংশ্লিষ্ট যাবতীয়
বিষয়-কর্মই ওলীআল্লাহগণের নিকট মূল্যহীন হয়ে পড়ে। এমনকি প্রত্যাশিত কামিয়াবী অর্জনের
সহায়ক উপাদানগুলোর উপযোগিতাও তখন গৌণ হয়ে যায়। আল্লাহ পাক-উনার রহমতে পরিপূর্ণরূপে
দুনিয়া বিমুখতায় “আপন ঘরে পরবাস” থাকার অপরিসীম ক্ষমতা উনারা
অর্জন করেন, উনারাই তো আল্লাহ পাক-উনার মাহবুব ওলী। মুহব্বত ও মারিফাতের অথৈ পারাবারে
উনারা অনুক্ষণ নিমজ্জিত থাকেন। আবাল্য স্বাধীন, অনুপম ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যে সমুজ্জল,
মিথ্যা নির্মূল ও সত্য প্রচারে খাছ নায়িবে নবীর ভূমিকায় সমর্পিত, আল্লাহ পাক-উনার মত
এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সুন্নত প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত প্রাণ পুরুষ
ওলীয়ে মাদারজাদ, ফখরুল আউলিয়া, লিসানুল হক্ব, কুতুবুয্যামান, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা
সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছূর রহমান আলাইহিস সালাম-উনার বিবেচনায় জগৎ-সংসার তুচ্ছ। উনার
দুনিয়া বিরাগী এ মানসিকতা তৈরী হয়েছে জন্ম
লগ্ন থেকেই। ক্রমান্বয়ে তা পরিনতি লাভ করেছে অগণিত মাক্বামের ধাপে ধাপে। লদ্ধ নিয়ামতরাজির
সমৃদ্ধিতে পূর্ণতায় অধিষ্ঠিত হয়েও আরো পাবার সীমাহীন বেদনায় মুহ্যমান প্রিয়তম আওলাদকে
খাজিনাতুর রহমত, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিকট সান্নিধ্যে ডেকে নিয়েছেন
ইতমিনান (প্রশান্তি) দান করতে। এ প্রশান্তি এমন, যা কেবল বেদনার প্রবৃদ্ধি ঘটায়। আখিরাতে
দিদারলাভের পূর্বে যার নিবৃত্তি কখনোই ঘটেনা। মহামিলনের এমন মধুর নিমজ্জনে বেদনা-বিমুগ্ধ
অনুভবে দেশে রেখে আসা স্বজন, পরিচিত জনপদ, পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং জগৎ-সংসার মনে আসার
প্রশ্ন অবান্তর। তবে দেশে থাকা মুজাদ্দিদে আ’যম কিশোর পুত্রের ভাবনা মনকে আলোড়িত করে। সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার
সদয় নির্দেশেই ভাবনাগুলো মুজাদ্দিদে আ’যম পুত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। ঐ মুবারক পুত্রের জন্যইতো
এতো তাড়াতাড়ি দেশে ফেরার আদেশ। কারণ ঐ মুবারক পুত্র আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, মাশুকে
মাওলা, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার প্রিয়তম আওলাদ,
উনার ক্বায়িম-মক্বাম, উনার নয়নের মণি, আদরের দুলাল, খোলাফা-ই-রাশিদার মহান প্রতিবিম্ব,
অবলুপ্ত সুন্নত যিন্দাকারী, বিদ্য়াত ধ্বংসকারী। দুনিয়ায় ইসলাম ধর্ম আবাদের জন্য তিনি
আল্লাহ পাক-উনার লক্ষ্যস্থল। একান্ত সাক্ষাতে রহমাতুল উম্মাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অবিলম্বে দেশে রওয়ানা হবার সদয় আদেশ দান করলেন। সাক্ষাতের
অনুপম ক্ষণে প্রিয়তম আওলাদ অবনত মস্তকে নিরব, নিথর। মন বলে মুবারক সাক্ষাতের এ অনুপম
আবেশ অনাদি-অনন্তকালব্যাপী প্রলম্বিত হোক। প্রিয়তম আওলাদ সকল নিয়ামত ও বখ্শিশে পরিপূর্ণ।
অন্তরে ইশকের প্রজ্জ্বলন। অব্যক্ত বেদনায় কলিজায় দুঃসহ দহন। তবু বিদায় অনিবার্য। অবশেষে
কদমবুছী এবং নিগূঢ় নৈকট্য ও সংযোগ শেষে বিদায় নিলেন আশিকে নবী হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ
মুহম্মদ মুখলেছূর রহমান আলাইহিস সালাম। (অসমাপ্ত)
আবা-১৩০
0 Comments:
Post a Comment