৬৪৯ নং- সুওয়াল : যে ইমাম বা খতীব ছাহেবের স্ত্রী-পরিজন পর্দা করেনা, তার পিছনে কি নামায পড়া জায়িয হবে?


সুওয়াল : যে ইমাম বা খতীব ছাহেবের স্ত্রী-পরিজন পর্দা করেনা, তার পিছনে কি নামায পড়া জায়িয হবে?

জাওয়াব : পর্দা করা ফরয। পর্দার খিলাফ করা কবীরা গুণাহ। যদি কোন ইমাম বা খতীব ছাহেব উনার স্ত্রী-পরিজনের পর্দা না করে, তাহলে সে দাইয়ুসের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে। আর দাইয়ুস সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন যে, “বেহেস্তের দরজায় লিখা আছে-   
الديوث لا يدخل الجنة
অর্থ : দাইউস বেহেস্তে প্রবেশ করবে না।
অতএব কোন ইমাম বা খতীব ছাহেব যদি তার স্ত্রী-পরিজনের পর্দা না করে, তাহলে সে দাইয়ুসের অন্তর্ভূক্ত হবে। তার পিছনে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী।
আর যদি ইমাম বা খতীব ছাহেব তার স্ত্রী-পরিজনকে পর্দা করার জন্য সর্বপ্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন এবং তাগীদও করেন, যার কারণে স্ত্রী-পরিজন তার উপস্থিতিতে পর্দা করে কিন্তু তার অজান্তে ও অনুপস্থিতিতে পর্দা করেনা, সেজন্য সে ইমাম বা খতীব সাহেব সম্পূর্ণরূপে দায়ী নন। তবে অবশ্যই ইমাম বা খতীব সাহেবের এতটুকু ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ, যাতে তার অজান্তে ও অনুপস্থিতিতে বেপর্দা হতে না পারে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
يا ايها الذين امنوا قوا انفسكم واهليكم نارا.
অর্থ : হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের ও তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও।
অর্থাৎ শুধু ইমাম বা খতীব ছাহেবই নয়, প্রত্যেক মুসলমান দায়ীত্বশীল ব্যক্তির দায়ীত্ব ও কর্তব্য হবে- সে তার স্ত্রী অথবা অধিনস্থ মহিলাদের পর্দার গুরুত্ব, ফযীলত, তাৎপর্য ও আহকাম সম্পর্কে কমপক্ষে ফরয পরিমাণ তালীম দেয়া তার উপর ফরয, ওয়াযিবের অন্তর্ভূক্ত। আর এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,   
الا كلكم راع وكلكم مسؤل عن رعيته فا لا ما مالذى على الناس راع وهو مسؤل عن رعيته والرجل راع على اهل بيته وهو مسنول عن رعيته والمرأة راعية على اهل بيت زوجها وهى مسنولة عنهم وعبدالرجل راع على مال سيده وهو مسؤل عنه الا كلكم راع وكلكم مسؤل عن رعيته.
অর্থ : তোমরা প্রত্যেকেই রক্ষক এবং প্রত্যেকেই তার রক্ষিত বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।ইমাম বা আউিনার বা কোন স্থান বা প্রতিষ্ঠানের প্রধান সে তার অধীনস্থ লোকদের রক্ষক এবং সে তার রক্ষিত বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে এবং প্রত্যেক ব্যক্তিই তার আহলে বায়েত বা পরিবার-পরিজনের রক্ষক এবং সে তার রক্ষিত বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। এবং স্ত্রী তার স্বামীর বাড়ীর আহল বা অধিনস্থদের রক্ষীকা এবং সে তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিতা হবে। আর গোলাম তার মনীবের মালের রক্ষক এবং সে তার রক্ষিত বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।
অতএব, প্রত্যেকেরই সতর্ক থাকা উচিৎ তার নিজের ও অধিনস্থদের ব্যাপারে।” (ফতওয়ায়ে আযীযী, আমিনীয়া, বোখারী শরীফ, ফতহুল বারী, তফসীরে কুরতুবী ইত্যাদি)
আবা-৩৫

0 Comments: