৬৩৫ ন-সুওয়াল : প্রচলিত তাবলীগ জামায়াতের কেউ কেউ অনেক সময় বলে থাকে যে, প্রচলিত তাবলীগ জামায়াতের লোকেরা ছাড়া আর সকলেই গোউনারাহ। অর্থাৎ একমাত্র তারাই হিদায়েতের উপর রয়েছে। শরীয়তের দলীলের ভিত্তিতে উপরোক্ত বক্তব্যের জাওয়াব দানে বাধিত করবেন।


সুওয়াল : প্রচলিত তাবলীগ জামায়াতের কেউ কেউ অনেক সময় বলে থাকে যে, প্রচলিত তাবলীগ জামায়াতের লোকেরা ছাড়া আর সকলেই গোউনারাহ। অর্থাৎ একমাত্র তারাই হিদায়েতের উপর রয়েছে। শরীয়তের দলীলের ভিত্তিতে উপরোক্ত বক্তব্যের জাওয়াব দানে বাধিত করবেন।

জাওয়াব : এই কথাটিও সম্পূর্ণই বানানো, মনগড়া, উদ্ভট ও পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ পরিপন্থী হওয়ার কারণে কুফরীর অন্তর্ভূক্ত। অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের কোথাও উল্লেখ নেই যে, প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ছাড়া সকলেই গুমরাহ।
কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আছে, “কাউকে যখন কাফির ফতওয়া দেয়া হয়, সে কথাটা আকাশে উঠে। তখন আকাশের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। অতঃপর তা জমিনে নামে, তখন জমিনের দরজাও বন্ধ করে দেয়া হয়। অতঃপর সে কথাটা যাকে বলা হয়েছে, তার উপর পড়তে চায়। যদি সে যোগ্য হয়, তবে তার উপরই পড়ে। আর যদি যোগ্য না হয়, তবে যে বলেছে, তার উপর পড়ে এবং সে মৃত্যুর সময় ঈমানহারা হয়ে মারা যায়। (আলমগীরী)
কাজেই যারা বলবে, প্রচলিত তাবলীগ ছাড়া আর সকলেই গুমরাহ, একথা বলার কারণে তারাই সেই গোউনারাহদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে, কারণ গোউনারাহ বলতে বুঝায় পথভ্রষ্ট। আর গুমরাহর বিপরীত হলো- হিদায়েত প্রাপ্ত। আর হিদায়েত প্রাপ্তগণের সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যায় মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
الذين يؤمنون بالغيب ويقيمون الصلوة ومما وزقناهم ينفقون والذين يؤمنوبما انزل اليك وما انزل من قبلك وبالاخرة هم يوقنون- اولئك على هدى من ربهم واولئك هم المفلحون.
অর্থ : যারা অদৃশ্যের উপর ঈমান আনে, নামায কায়িম করে এবং আমার তরফ থেকে তাদের প্রতি দানকৃত রিযিক থেকে দান করে, যারা ঈমান আনে আপনার প্রতি যা নাযিল করেছি ও আপনার পূর্বে যা নাযিল করেছি তার উপর এবং যারা পরকালের প্রতি এক্বীন রাখে। তারাই তাদের রবের হিদায়েতের উপর রয়েছে এবং তারাই কামিয়াব।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ)
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ ও তার সমপর্যায়ের আরো অনেক পবিত্র আয়াত শরীফ রয়েছে, যাতে হিদায়েত প্রাপ্তদের আলামত বর্ণনা করা হয়েছে।
আর মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
ما انا عليه واصحابى.
অর্থ : আমি এবং আমার ছাহাবায়ে ক্বিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম যে পথে কায়িম আছি।” (সেটাই হক্ব মত, হক্ব পথ) (আহমদ, আবূ দাউদ, মেশকাত, উেনারকাত)
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা মুতাবিক যারা মহান আল্লাহ পাক ও উনার রাসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান এনেছেন, কিম্বা উনাদের মতে মত ও পথে পথ হয়েছে, তারাই হিদায়েত প্রাপ্ত।
আবারো উল্লেখ্য যে, ইলমে তাসাউফ ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক উনার মতে মত এবং মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথে পথ হওয়া কখনই সম্ভব নয়, যা প্রদত্ত ফতওয়ায় সামনে বিস্তারিতভাবে আলোচিত হবে।
অতএব, তাবলীগ জামায়াতের বক্তব্য- ছয় উছূলের বাইরে যারা রয়েছেন, তারা হক্বের মধ্যে নয় বা তারা গুমরাহ। তাদের একথা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের প্রকাশ্য বর্ণানার খিলাফ হওয়ার দরুণ এবং ফিক্বাহর প্রনিধানযোগ্য ফতওয়া ঈমানদার উনাদেরকে কাফিরের গণ্ডিভূত করা কুফরীউনার ভিত্তিতে প্রকাশ্য কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
আবা-৩৫

প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ-  



0 Comments: