সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হিজরত মুবারক:
আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র নুবুওওয়াত শরীফ
প্রকাশের ত্রয়োদশ বর্ষে পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার মধ্যে ইয়াওমুল ইছনাইনিল
আযীম বা পবিত্র সোমবার শরীফ সুমহান পবিত্র হিজরত মুবারক সংঘটিত হয়। এজন্য হযরত
ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আপনাদের যিনি নবী ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেন ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম
বা পবিত্র সোমবার শরীফ। পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে
পবিত্র হিজরত মুবারক করেন ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা পবিত্র সোমবার শরীফ। উনার
আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র নুবুওওয়াত শরীফ প্রকাশ হয় ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা পবিত্র
সোমবার শরীফ। তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে প্রবেশ করেন ইয়াওমুল ইছনাইনিল
আযীম বা পবিত্র সোমবার শরীফ। এবং তিনি পবিত্র বিছাল শরীফ লাভ করেন ইয়াওমুল
ইছনাইনিল আযীম বা পবিত্র সোমবার শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
স্মরণীয় যে, হযরত মুহম্মদ ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট পবিত্র হিজরত
মুবারক-এর অনুমতি চাইলে তিনি বলেন,
لاتعجل لعل الله يجعل لك صاحبا
“আপনি তাড়াহুড়া করবেন না (বরং ধৈর্যধারণ
করুন এবং অপেক্ষা করতে থাকুন) মহান আল্লাহ পাক তিনি নিশ্চয়ই আপনার জন্যে একজন
সঙ্গীর ব্যবস্থা করবেন।”
আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূত-পবিত্র জবান
মুবারক থেকে এ কথা মুবারক শুনে তিনি আশা পোষণ করেন যে, নিশ্চয়ই আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং উনার সঙ্গী হবেন। তিনি দুটি সাওয়ারী
মুবারক ক্রয় করেন। সেগুলো নিজ গৃহে রেখে হিজরত মুবারক-এর জন্য প্রস্তুতির
উদ্দেশ্যে সেগুলোকে সযতেœ লালন-পালন করেন। (আল বিদায়া
ওয়ান নিহায়া)
হযরত ওয়াকিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি
বলেন, হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি আটশ দিরহামের বিনিময়ে সাওয়ারী দুটি
ক্রয় করেছিলেন।
“আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় জিলদ ১৭৮, ১৭৯ পৃষ্ঠায়, সীরাতুন নবী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বিতীয় খন্ড ১৪১ ও ১৪২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
اخرج حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه عن حضرت عروة بن الزبير رضى الله تعالى عنه عن حضرت عائشة أم المؤمنين عليها السلام أنها قالت كان لا يخطئ رسول الله صلى الله عليه وسلم أن يأتى بيت حضرت أبى بكر عليه السلام أحد طرفى النهار، إما بكرة، وإما عشية. حتى إذا كان اليوم الذى أذن الله فيه رسوله صلى الله عليه وسلم فى الهجرة والخروج من مكة من بين ظهرى قومه أتانا رسول الله صلى الله عليه وسلم بالهاجرة فى ساعة كان لا يأتى فيها، قالت فلما راه حضرت أبو بكر عليه السلام قال ما جاء رسول الله صلى الله عليه وسلم فى هذه الساعة إلا لأمر حدث! قالت فلما دخل تأخر له حضرت أبو بكر عليه السلام عن سريره فجلس رسول الله صلى الله عليه وسلم وليس عند رسول الله صلى الله عليه وسلم أحد إلا أنا وأختى حضرت أسماء بنت أبى بكر عليها السلام،
অর্থ : হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি
আলাইহি তিনি নির্ভরযোগ্য সূত্রে হযরত উরওয়া ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনার থেকে, তিনি উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রতিদিন সকালে বা
বিকালে বা দিনের কোনো এক প্রান্তে এক বেলায় হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম
উনার ঘর মুবারকে তাশরীফ নিতে ভুলতেন না। অর্থাৎ তিনি তাশরীফ নিতেন। কিন্তু যেদিন
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পবিত্র হিজরত মুবারক করার এবং পবিত্র মক্কা
শরীফ থেকে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে সবাইকে হিজরত করার অনুমতি দিলেন।
উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, এ দিন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুপুরে আমাদের
গৃহে আগমন করেন। এটা ছিলো এমন এক সময় যে সময় তিনি সাধারণতঃ আমাদের গৃহে আসতেন না।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখে হযরত
ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, নিশ্চয়ই কোনো ঘটনা ঘটেছে, যে জন্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ মুহূর্তে আগমন করেছেন। উম্মুল মু’মিনীন
হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখে হযরত
ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনার খাট মুবারক থেকে সরে বসেন। তখন
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খাট মুবারকে
উপবেশন করলেন। এ সময় সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আমি ও আমার
বোন হযরত আসমা বিনতে আবু বকর আলাইহাস সালাম তিনি ছাড়া অন্য কেউ ছিলেন না।
فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم أخرج عنى من عندك قال يارسول الله صلى الله عليه وسلم إنما هما ابنتاى، وما ذاك فداك أبى وأمى؟ قال إن الله قد أذن لى فى الخروج والهجرة. قالت فقال حضرت أبو بكر عليه السلام الصحبة يارسول الله صلى الله عليه وسلم؟ قال الصحبة قالت فو الله ما شعرت قط قبل ذلك اليوم أن أحدا يبكى من الفرح حتى رأيت حضرت ابا بكر عليه السلام يومئذ يبكى- ثم قال يا نبى الله صلى الله عليه و سلم ان هاتين راحلتين كنت اعددتهما لهذا، فاستأجرا عبد الله بن أرقد
তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার নিকট থেকে অন্যান্যদের বের করে দিন। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম
তিনি বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া
হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উনারা উভয়েই আমার কন্যা (অন্য কেউ
নন)। আমার পিতা-মাতা আপনার জন্যে কুরবান হোন। কি সংবাদ? মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে হিজরত মুবারক এবং (পবিত্র মক্কা শরীফ
থেকে) বের হওয়ার অনুমতি মুবারক দিয়েছেন।” হযরত উম্মুল মু’মিনীন ছিদ্দীক্বা আলাইহাস
সালাম তিনি বলেন, তখন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর
আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া
হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি কি আপনার সঙ্গীরূপে থাকবো? সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করলেন, হ্যাঁ, আপনি আমার সঙ্গে থাকবেন।
উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস
সালাম তিনি বলেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম!
এ দিনের আগে আমি কখনো ভাবতে পারিনি যে, কোনো ব্যক্তি আনন্দেও কাঁদতে
পারেন যতক্ষণ না এদিন আমি হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে কাঁদতে
দেখেছি।”
এরপর হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম
তিনি বললেন, ইয়া হাবীবাল্লাহ, ইয়া নাবীয়াল্লাহ! ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এ দুটি সাওয়ারী আমি এ
উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করে রেখেছি। এরপর উনারা দু’জনে আব্দুল্লাহ ইবনে আরকাদ নামক এক
ব্যক্তিকে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে পথপ্রদর্শক হিসেবে নিযুক্ত করে নেন।
قال حضرت ابن هشام رحمة الله عليه ويقال عبد الله بن أريقط. رجلا من بنى الدئل بن بكر، وكانت أمه من بنى سهم عمرو، و يدلهما على الطريق ودفعا اليه راحلتيهما، فكانتا عنده يرعاهما لميعادهما
হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি
বলেন, কারো কারো মতে তাকে আব্দুল্লাহ ইবনে আরীকাত বলা হয়। এ ব্যক্তি ছিলো বনূ দাউল
ইবনে বকর গোত্রের লোক আর তার মা ছিলো বনূ সাহম ইবনে আমর-এর। লোকটি উনদের দু’জনকে
পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো। উনারা উভয়ে দুটি উট লোকটির হাতে অর্পণ করেন। উট দুটি তার
কাছেই ছিলো এবং সে নির্ধারিত সময়ের জন্য সেগুলোর লালন-পালন করে।”
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম, হযরত মূর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস
সালাম উনার পূতঃপবিত্র জবান মুবারক-এ বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে রাত্রি মুবারক-এ
পবিত্র হিজরত মুবারক করলেন ওই রাত্রি মুবারক-এ যখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বীয় হুজরা শরীফ উনার থেকে বের হয়ে হযরত
ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার বাড়িতে গিয়ে উনার ঘরের দরজায় খটখটি দিলেন।
খটখটি দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে দরজা মুবারক খুলে গোলো। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, হে ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম!
আপনি কি ঘুমাননি? তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি যে দিন হিজরত মুবারক উনার কথা বলেছেন সেদিন থেকে আমি
বিছানায় ঘুমাই না। কারণ আমি যদি বিছানায় ঘুমিয়ে যাই আর আপনি এসে যদি ডাকেন আপনার
ডাকে সাড়া দিতে হয়তো দেরি হয়ে যেতে পারে তাই আমি ওই দিন থেকে দরজায় হেলান দিয়ে
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নেই। যাতে করে আপনি আমার দরজায় শব্দ করার সঙ্গে সঙ্গে
দরজা খুলে দিতে পারি এবং আপনি কষ্ট না পান। সুবহানাল্লাহ!
বর্ণিত রয়েছে,
قال حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه ولم يعلم- فيما بلغنى – بخروج رسول الله صلى الله عليه وسلم احد حين خرج إلا حضرت على بن أبى طالب عليه السلام و حضرت أبو بكر الصديق عليه السلام وال أبى بكر عليه السلام ، أما حضرت على عليه السلام فان حضرت رسول الله صلى الله عليه وسلم أمره أن يتخلف حتى يؤدى عن رسول الله صلى الله عليه وسلم الودائع التى كانت عنده للناس، وكان رسول الله صلى الله عليه وسلم وليس بمكة أحد عنده شئ يخشى عليه إلا وضعه عنده لما يعلم من صدقه وأمانته.
অর্থ : “হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি
আলাইহি তিনি বলেন, আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন পবিত্র মক্কা
শরীফ থেকে মদীনা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে বের হন, তখন এ সম্পর্কে হযরত আলী ইবনে
আবূ ত্বলিব আলাইহিস সালাম, হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস
সালাম এবং উনার পরিবারের লোকজন ছাড়া আর কেউ তা জানতেন না। আর হযরত আলী
কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহি সালাম উনাকে তো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নায়িব বা
স্থলাভিষিক্ত করে যান এবং উনার নিকট লোকজনের যে সব আমানত ছিলো, তা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিয়ে যান। পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে কারো নিকট কোনো
দুর্মূল্য ও পছন্দনীয় বস্তু থাকলে তা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আমানত রাখা হতো। কারণ তারা উনার
সত্যবাদিতা ও আমানতদারী সম্পর্কে অবগত ছিলো।”
উল্লেখ্য যে, মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউছুল আ’যম, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, রঈসুল মুহাদ্দিসীন ওয়াল মুফাসসিরীন ওয়াল ফুকাহা, বাহরুল উলুম, হাবীবে আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, কাফির মুশরিকরা যখন
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফ
উনার মধ্যে প্রবেশ করে দেখতে পেলো, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূতঃপবিত্র কম্বল মুবারক গায়ে দিয়ে একজন শুয়ে
রয়েছেন। এ দিকে তারা কম্বল মুবারক ধরে টানাটানি করতে লাগলো। আর হযরত আলী ইবনে আবূ
ত্বলিব আলাইহিস সালাম তিনি কম্বল মুবারক খুবই শক্তি করে ধরে রেখেছেন যাতে করে
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো দীর্ঘ পথ
অতিক্রম করতে পারেন। সুবহানাল্লাহ! কাফির মুশরিকরা কম্বল মুবারক টানাটানি করতে
করতে সকাল হয়ে গেলো। অনেকক্ষণ পর তারা কম্বল মুবারক টেনে নিয়ে দেখতে পেলো
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন, বরং কম্বল মুবারক-এর ভিতরে যিনি শুয়ে ছিলেন তিনি হচ্ছেন হযরত আলী ইবনে আবূ
ত্বলিব আলাইহিস সালাম। কাট্টা কাফির আবূ জাহিল উনার গাল মুবারক-এ একটা আঘাত করে
পবিত্র হুজরা শরীফ থেকে বের হলো সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খোঁজার জন্য। নাঊযুবিল্লাহ!
বর্ণিত রয়েছে,
قال حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه فلما أجمع رسول الله صلى الله عليه وسلم (الخروج) أتى حضرت أبا بكر بن أبى قحافة عليه السلام فخرجا من خوخة لأبى بكر عليه السلام فى ظهر بيته.
অর্থ: হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি
আলাইহি তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন পবিত্র
হিজরত মুবারক-এর জন্যে পবিত্র হুজরা শরীফ থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা মুবারক
করলেন তখন তিনি হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর ইবনে কুহাফা আলাইহিস সালাম উনার নিকটে আসেন
এবং উনারা দু’জনে গৃহের পেছন দিক থেকে খিড়কির পথে বের হলেন।
قال حضرت محمد بن اسحاق رحمة الله عليه. قال بلغنى أن رسول الله صلى الله عليه وسلم لما خرج من مكة مهاجرا لى الله يريد المدينة قال الحمد لله الذى خلقنى ولم أك شيئا، اللهم أعنى على هول الدنيا، وبوائق الدهر، ومصائب الليالى والأيام. اللهم اصحبنى فى سفرى. واخلفنى فى أهلى، وبارك لى فيما رزقتنى ولك فذللنى. وعلى صالح خلقى فقومنى، واليك رب فحببنى، وإلى الناس فلا تكانى، رب المستضعفين وأنت ربى أعوذ بوجهك الكريم الذى أشرقت له السموات والأرض، وكشفت به الظلمات وصلح عليه أمر الأولين والا خرين، أن تحل على غضبك، وتنزل بى سخطك، أعوذ بك من زوال نعمتك، وفجأة نقمتك، وتحول عافيتك وجميع سخطك. لك العقبى عندى خير ما استطعت، لاحول ولا قوة إلا بك.
অর্থ: হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি
আলাইহি তিনি বলেন, আমি জানতে পেরেছি যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন পবিত্র মক্কা
শরীফ থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশক্রমে পবিত্র হিজরত মুবারক-এর উদ্দেশ্যে
পবিত্র মদীনা শরীফ উনার পথে বের হলেন তখন তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আলহামদুলিল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্যে। যিনি আমাকে
সর্বপ্রথম সৃষ্টি করেছেন। আমাকে সৃষ্টি করার পূর্বে কোনো কিছুই সৃষ্টি হয়নি। হে
বারে ইলাহী মহান আল্লাহ পাক! দুনিয়ার ভয়াবহতা, কালের কঠোরতা এবং দিবা-রাত্রির বিপদাপদ থেকে আমাকে হিফাযত করুন। হে মহান
আল্লাহ পাক ছফরে আপনি আমাকে সঙ্গ দান করুন। আমার আহাল পাক উনাদের আপনি আমার পক্ষ
থেকে অভিভাবক হোন, আপনি আমাকে যে রিযিক হাদিয়া
করেছেন তাতে বরকত দান করুন, আর আপনি আমাকে কেবল আপনারই
অনুগত করুন এবং সর্বোত্তম সুন্দরতম আখলাক মুবারক-এর উপর আমাকে ইস্তিকামত বা দৃঢ়
রাখুন। হে বারী তায়ালা! মহান আল্লাহ পাক আমি আপনার নিকট নিজকে সমর্পণ করেছি, কাজেই আমাকে সবচেয়ে আপনার মাহবুব বানান। আর আমাকে মানুষের নিকট সমর্পণ করবেন
না। হে দুর্বল ব্যক্তিদের রব পালনকর্তা! আপনিই তো আমার পালনকর্তা। আপনার নূরানীময়
মেছালী চেহারা মুবারক-এর উসীলায় পানাহ চাই, যাঁর আলোকে নূরময় হয়েছে
আসমান-যমীন, যাঁর দ্বারা দূরীভূত হয়েছে সব
রকম অন্ধকার, যাঁর কারণে সুস্থ-সুন্দর
হয়েছে পূর্ববর্তী আর পরবর্তীদের কর্মকা-, আমি আপনার নিকট পানাহ চাই।
আমার নিকট আপনার গযব আপতিত হওয়া থেকে। আমি পানাহ চাই আমার উপর আপনার গোসসা আপতিত
হওয়া থেকে। আমি আপনার নিকট আরো পানাহ চাই আপনার নিয়ামতের অবসান থেকে। আপনার শাস্তি
আপতিত হওয়া থেকে। আপনার প্রদত্ত শান্তি বিদূরিত হওয়া থেকে এবং পানাহ চাই আপনার
যাবতীয় অসন্তুষ্টি থেকে। আমার বিশ্বাস আপনিই তো পরকালের মালিক। আর আমার নিকট আছে
আমার সর্বোত্তম আমল। আপনি ব্যতিত কোনো শক্তি নেই, নেই কোনো সাধ্য।”
(মূলতঃ উক্ত বিষয়গুলো উম্মতের জন্যে
প্রযোজ্য। কারণ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন
হাবীবুল্লাহ তথা মহান আল্লাহ পাক উনার সবচেয়ে প্রিয় পছন্দনীয়। আর উনার
সম্মান-মর্যাদা বলার অপেক্ষাই রাখে না। কাজেই, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বান্দা বা উম্মতকে উক্ত দোয়া মুবারক শিক্ষা
দিয়েছেন।)
আরো বর্ণিত রয়েছে,
قال حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه ثم عمدا إلى غار بثور- جبل بأسف مكة – فدخلاه، وأمر حضرت أبو بكر الصديق عليه السلام ابنه حضرت عبد الله رضى الله تعالى عنه أن يتسمع لهما ما يقول الناس فيهما نهاره، ثم يأتيهما اذا أمسى بما يكون فى ذلك اليوم من الخبر. وأمر حضرت عامر بن فهيرة رضى الله تعالى عنه مولاء أن يرعى غنمه نهاره، ثم يريحها عليهما إذا أمسى فى الغار. فكان حضرت عبد الله بن أبى بكر رضى الله تعالى عنه يكون فى قريش نهاره معهم يسمع ما يأتمرون به، وما يقولون فى شأن رسول الله صلى الله عليه وسلم و حضرت أبى بكر عليه السلام، ثم يأتيهما إذا أمسى فيخبرهما الخبر. وكان حضرت عامر بن فهيرة رضى الله تعالى عنه يرعى فى رعيان أهل مكة، فاذا أمسى أراح عليهما غنم حضرت أبى بكر عليه السلام فاحتلبا و ذبحا. فاذا غدا حضرت عبد الله بن أبى بكر رضى الله تعالى عنه من عندهما إلى مكة أتبع حضرت عامر بن فهيرة رضى الله تعالى عنه أنره بالغنم يعفى عليه.
অর্থ: “হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি
আলাইহি তিনি বলেন, এরপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ও খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর
আলাইহিস সালাম উনারা দু’জন পবিত্র মক্কা শরীফ উনার নি¤œভূমিতে অবস্থিত ছাওর পাহাড়ের
একটি গুহায় তাশরিফ গ্রহণের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। দু’জনেই উনারা গুহায় প্রবেশ
করলেন। আর হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার পুত্র হযরত আব্দুল্লাহ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে নির্দেশ মুবারক দিয়ে যান তাদের সম্পর্কে লোকজন কি
বলাবলি করছে দিনের বেলা তা মনোযোগ সহকারে শুনে এবং সন্ধ্যায় সারাদিনের খবরাখবর
নিয়ে যেন উনাদের নিকট আসেন। আর উনারা আযাদকৃত গোলাম হযরত আমীর ইবনে ফুহাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে নির্দেশ দান
করেন দিনের বেলা উনার মেষ চরাবার জন্য। আর সন্ধ্যায় যেন তিনি মেষ উনাদের নিকট
গুহায় নিয়ে আসেন। সুতরাং হযরত আব্দুল্লাহ ইবেন আবূ বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনি দিনের বেলা কুরাইশের কাফির, মুশরিকদের মধ্যে অবস্থান করে
তারা কি পরামর্শ করছে তা শুনতেন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাদের
সম্পর্কে তারা কি বলছে তিনি তাও শুনতেন এবং রাত্রিবেলা উনাদের নিকট এসে সেসব উনাদেরকে অবহিত করতেন। আর হযরত আমীর ইবনে
ফুহায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি দিনের বেলা পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে
রাখালদের সাথে মেষ চরাতেন। আর রাতের বেলা উনাদের নিকট মেষ নিয়ে আগমন করতেন। হযরত
ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি দুধ মুবারক দোহন করতেন এবং মেষ যবেহ করে
আহারের ব্যবস্থা করতেন। ভোরে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ছিদ্দীক্বে আকবর রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনি উনাদের নিকট থেকে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে আগমন করলে হযরত
আমীর ইবনে ফুহায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার মেষ নিয়ে উনাকে অনুসরণ
করতেন এবং উনার পদচিহ্ন মুবারক মুছে ফেলতেন।
قال حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه وكانت حضرت أسماء بنت أبى بكر رضى الله تعالى عنها تأتيهما من الطعام إذا أمست بما يصلحهما، قالت حضرت اسماء رضى الله تعالى عنها ولماخرج رسول الله صلى الله عليه و سلم و حضرت أبو بكر عليه السلام أتانا نفر من قريش فيهم ابو جهل بن هشام فوقفوا على باب حضرت أبى بكر عليه السلام ، فخرجت اليهم فقالوا أين أبوك يا ابنة حضرت أبى بكر عليه السلام ؟ قالت قلت لا أدرى والله أين أبى. قالت فرفع أبو جهل يده – وكان فاحشا خبيثا – فلنطم خدى لطمة طرح منها قرطى ثم انصرفوا.
অর্থ : হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি
আলাইহি তিনি আরো বলেন, হযরত আসমা বিনতে ছিদ্দীক্বে
আকবর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি সন্ধ্যায় উনাদের জন্যে যথোপযুক্ত খাদ্য নিয়ে
আসতেন। এ প্রসঙ্গে হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছিদ্দীক্বে
আকবর আলাইহিস সালাম উনারা পবিত্র হিজরতের উদ্দেশ্যে ঘর মুবারক থেকে বের হওয়ার পর
কুরাইশ কাফিরদের একদল লোক আমার নিকট আসে। তাদের মধ্যে কাট্টা কাফির আবূ জাহল ইবনে
হিশামও ছিলো। তারা এসে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার ঘর মুবারক-এর
দরজায় দাঁড়ালে আমি গৃহ থেকে বেরিয়ে আসি। তারা জিজ্ঞাস করলো, হে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার তনয়া! আপনার পিতা কোথায়? তিনি বর্ণনা করেন যে, আমি বললাম, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আব্বা কোথায় আছেন আমার জানা নেই। হযরত আসমা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বললেন (এ কথা শ্রবণ করার পর আবূ জাহল ছিলো খবীছ, বজ্জাত, সে হাত উঠিয়ে সজোরে আমার মুখ
মুবারক-এ এমন এক চপেটাঘাত করে যাতে আমার কান মুবারক-এর বালী (দুল মুবারক) পড়ে যায়।
নাঊযুবিল্লাহ! তারপর তারা চলে যায়।
‘সীরাতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম’ গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে যে, হযরত ইবনে ইসহাক্ব
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার কাছে হযরত আব্দুল্লাহ
ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পৌত্র হযরত ইয়াহইয়া ইবনে আব্বাদ
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেছেন যে, উনার পিতা হযরত আব্বাদ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পিতামহ হযরত আসমা বিনতে ছিদ্দীক্বে আকবর
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন-
خرج حضرت أبو بكر عليه السلام معه، احتمل حضرت أبو بكر عليه السلام ماله كله معه خمسة الاف درهم – أو ستة الاف درهم – فانطلق بها معه، قالت فدخل علينا جدى أبو قحافة- وقد ذهب بصره – فقال والله إنى لأراه قد فجعكم بماله مع نفسه؟ قالت قلت كلا يا ابة إنه قد ترك لنا خيرا كثيرا، قالت وأخذت أحجارا فوضعتها فى كوة فى البيت الذى كان أبى يضع ماله فيها، ثم وضعت عليها ثوبا، ثم أخذت بيده فقلت يا ابة ضع يدك على هذا المال. قالت فوضع يده عليه فقال لا بأس إذ كان قد ترك لكم هذا فقد أحسن وفى هذا بلاغ لكم، ولا والله ما ترك لنا شيئا ولكن أردت أن اسكن الشيخ بذلك.
অর্থ: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম
তিনি বের হন। তিনি উনার সমস্ত সম্পদ নিয়ে বের হন যার পরিমাণ ছিলো ৫/৬ হাজার
দিরহাম। এ সম্পদ তিনি সঙ্গে নিয়ে যান। হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি
বলেন, এরপর দাদা আবূ কুহাফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আমাদের ঘরে আসেন। আর
ইতোমধ্যে তিনি দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমি তো দেখছি, তিনি তো নিজের এবং অর্থসম্পদের দিক থেকেও আপনাদের বিপদে ফেলে গেছেন।
নাঊযুবিল্লাহ! তিনি বলেন যে, আমি বললাম, না, তা তো হতে পারে না, দাদা। তিনি আমাদের জন্য অনেক
সম্পদ রেখে গেছেন। তিনি বলেন, আব্বাজান ঘরে যে পাত্রে টাকা
কড়ি রেখেছেন সে পাত্রে আমি প্রস্তুর খ- রেখে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেই এবং তাতে
দাদাজানের হাত রেখে বলি, দাদাজান! এ মালের উপর আপনি
হাত বুলিয়ে দেখুন। তিনি বলেন, দাদা আবূ কুহাফা সে পাত্রে
হাত রেখে বলেন, কোনো অসুবিধা নেই। তিনি
আপনাদের জন্য এ সম্পদ রেখে দিয়ে ভালই করেছেন। এতে আপনাদের ব্যয় নির্বাহ হবে। হযরত
আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বলেন, আসলে মহান আল্লাহ পাক উনার
ক্বসম! তিনি কোনো সম্পদ রেখে যাননি। কেবল বৃদ্ধ দাদাকে প্রবোধ দেয়ার জন্যই আমি
এমনটি করেছি।
0 Comments:
Post a Comment