৬৯৫ নং- সুওয়াল : অন্তরের রোগ ব্যাধির ঔষুধ কি? ইসলাম এ ব্যাপারে কি দিক নির্দেশনা প্রদান করে জানতে চাই।

 

সুওয়াল : অন্তরের রোগ ব্যাধির ঔষুধ কিইসলাম এ ব্যাপারে কি দিক নির্দেশনা প্রদান করে জানতে চাই

জাওয়াব : মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কালামে পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক ফরমান,

كلا بل ران على قلوبهم ما كانوا يكسبون.

অর্থ : কখনো নয়, বরং তাদের বদ আমলের কারণেই তাদের অন্তরে মরিচা জমে গেছে।অর্থাৎ মানুষের বদ আমলের কারণেই তাদের অন্তর ব্যাধিগ্রস্থ হয়ে যায়। (পবিত্র সূরা মুতাফফিফীন শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪)

এছাড়া স্বভাবতই মানুষের অন্তরে হিংসা-বিদ্বেষ, রিয়া-অহংকার, গীবত ইত্যাদি বদ খাসলত থেকে থাকে, যা দূর না হওয়া পর্যন্ত পরিশুদ্ধ হয় না। আর অন্তর পরিশুদ্ধ না হলে ঈমান-আক্বীদা, আমল-আখলাক্ব, সীরত-ছূরত কোন কিছুই শুদ্ধ হয় না। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে-

فى ان الجسد مضغة اذا صلحت صلح الجسد كله واذا فسدت فسد الجسد كله الا وهى القلب.

অর্থ : নিশ্চয়ই মানুষের শরীরে এক টুকরা গোশত রয়েছে। সেটি যখন শুদ্ধ হবে, তখন শরীরের সব কিছুই শুদ্ধ হয়ে যায়। আর তা বরবাদ বা অশুদ্ধ হলে, শরীরের সব কিছুই বরবাদ হয়ে যায়। সাবধান! তা হলো- ক্বালব বা অন্তর।” (বুখারী শরীফ)

মূলত ক্বালব বা অন্তর শুদ্ধ হলে সব কিছুই শুদ্ধ, আর ক্বালব অশুদ্ধ বা ব্যাধিগ্রস্ত হলে সব কিছুই বরবাদ হয়ে যায়।

কাজেই প্রত্যেকের জন্যই অন্তরের যাবতীয় ব্যাধিকে দূরিভত করে অন্তর পরিশুদ্ধ করা ফরয। আর অন্তর পরিশুদ্ধ করার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির। যে সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক নিজেই উনার পবিত্র কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

الا بذكر الله تطمنئن القلوب.

অর্থ : সাবধান! মহান আল্লাহ পাক উনার যিকিরের দ্বারাই অন্তর প্রশান্ত ও পরিশুদ্ধ হয়।” (পবিত্র সূরা রাআ শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ২৮)

আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে যে, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

لكل شيى صقالة وصقالة القلوب ذكر الله.

অর্থ : প্রত্যেকটি জিনিস পরিষ্কার বা পরিশুদ্ধ করার যন্ত্র রয়েছে এবং ক্বআলব বা অন্তর পরিশুদ্ধ করার যন্ত্র হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির।” (পবিত্র মিশকাত শরীফ)

মূলত উক্ত হাদীছ শরীফের যে যিকিরের কথা বলা হয়েছে, তা হচ্ছে ক্বালবি যিকির, যা সম্পূর্ণরূপে ইলমে তাছাউফের অন্তভুক্ত। যে ইলমে তাছাউফ শিক্ষা দিয়ে থাকেন শায়েখ বা হক্কানী পীর সাহেবগণ।

অতএব উনাদের নিকট বাইয়াত হয়ে ইলমে তাছাউফ হাছিল তথা ক্বালবী যিকির-আযকার এবং রিয়াজত-মুশাককাত করে অন্তর পরিশুদ্ধ করতে হবে।

আবা -৩৯

0 Comments: