পিডিএফ লিংক- https://drive.google.com/open?id=1umo8c6MnYMfK07E3v5CvZ7RMmdfA3FIF
‘সম্মানিত গাযওয়াতু যাতির রিক্বা’ উনার জিহাদ মুবারক:
মহাস্মানিত
ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ جَابِرٍ
رَضِيَ اللهُ
تَعَالَى عَنْهُ
قَالَ "صَفّنَا
رَسُولُ اللهِ
صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
صَفّيْنِ فَرَكَعَ
بِنَا جَمِيعًا،
ثُمّ سَجَدَ
رَسُولُ اللهِ
صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَسَجَدَ الصّفّ
الْأَوّلُ فَلَمّا
رَفَعُوا سَجَدَ
الّذِينَ يَلُونَهُمْ
بِأَنْفُسِهِمْ ثُمّ
تَأَخّرَ الصّفّ
الْأَوّلُ وَتَقَدّمَ
الصّفّ الْآخَرُ
حَتّى قَامُوا
مَقَامَهُمْ ثُمّ
رَكَعَ النّبِيّ
صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
بِهِمْ جَمِيعًا
ثُمّ سَجَدَ
النّبِيّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ وَسَجَدَ
الّذِينَ يَلُونَهُ
مَعَهُ فَلَمّا
رَفَعُوا رُءُوسَهُمْ
سَجَدَ الْآخَرُونَ
بِأَنْفُسِهِمْ فَرَكَعَ
النّبِيّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ بِهِمْ
جَمِيعًا، وَسَجَدَ
كُلّ وَاحِدٍ
مِنْهُمَا بِأَنْفُسِهِمْ
سَجْدَتَيْنِ.
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের দু’কাতারে বিন্যস্ত করে আমাদের সকলকে নিয়ে প্রথম রাকয়াতের
রুকু করলেন। তারপর তিনি পবিত্র সিজদা মুবারকে গেলেন এবং প্রথম কাতারের লোকেরাও
উনার অনুসরণ করলেন। উনারা পবিত্র সিজদা মুবারক হতে মাথা তুললে পরবর্তী কাতারের
লোকেরা নিজ নিজ সিজদা মুবারক আদায় করলেন। এরপর প্রথম কাতার পিছনে সরে আসলেন এবং
পিছনের কাতার সামনে উনাদের স্থানে চলে গেলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সকলকে নিয়ে রুকু’ মুবারক করলেন। তারপর তিনি
পবিত্র সিজদা মুবারকে গেলেন এবং উনার কাছের লোকেরাও পবিত্র সিজদা মুবারক করলেন।
উনারা পবিত্র সিজদা মুবারক হতে মাথা মুবারক তুললে পিছনের কাতারের লোকেরা নিজেদের
সিজদা মুবারক সম্পন্ন করলেন। এভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের সকলকে নিয়ে একসাথে রুকু’ মুবারক করলেন
এবং উভয় কাতারই দু’টি পবিত্র সিজদা মুবারক নিজ নিজভাবে আদায় করলেন।” সুবহানাল্লাহ!
(রওদ্বুল উনূফ, সীরাতুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৪২)
‘সম্মানিত গাযওয়াতু যাতির রিক্বা’ উনার জিহাদ মুবারক:
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ ابْنِ
عُمَرَ رَضِيَ
اللهُ تَعَالَى
عَنْهُ، قَالَ
يَقُومُ الْإِمَامُ
وَتَقُومُ مَعَهُ
طَائِفَةٌ، وَطَائِفَةٌ
مِمّا يَلِي
عَدُوّهُمْ، فَيَرْكَعُ
بِهِمْ الْإِمَامُ
وَيَسْجُدُ بِهِمْ،
ثُمّ يَتَأَخّرُونَ
فَيَكُونُونَ مِمّا
يَلِي الْعَدُوّ،
يَتَقَدّمُ الْآخَرُونَ
فَيَرْكَعُ بِهِمْ
الْإِمَامُ رَكْعَةً،
وَيَسْجُدُ بِهِمْ،
ثُمّ تُصَلّي
كُلّ طَائِفَةٍ
بِأَنْفُسِهِمْ رَكْعَةً،
فَكَانَتْ لَهُمْ
مَعَ الْإِمَامِ
ركعة ركعة،
وصلّوا بأنفسهم
ركعة ركعة.
অর্থ: “হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, পবিত্র ছলাতুল
খাওফে’ একদল হযরত মুজাহিদ ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা দাঁড়াবেন, আরেক দল থাকবেন শত্রুর মুখোমুখী। ইমাম উনাদের নিয়ে সিজদাসহ
এক রাকয়াত নামায আদায় করবেন। এরপর সে দল পিছনে সরে শত্রুর মুখোমুখী হবেন এবং
অন্যদল সামনে চলে আসবেন। ইমাম উনাদেরসহ সিজদাহসহ এক রাকয়াত নামায আদায় করবেন। এরপর
উভয় দল আলাদা-আলাদা ভাবে এক রাকয়াত নামায আদায় করে নিবেন। এভাবে উনাদের ইমামের
সাথে হবে এক রাকয়াত এবং ইমাম থেকে আলাদা ভাবে হবে এক রাকয়াত।” সুবহানাল্লাহ!
সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ
ক্বিবলা আলাইহিস সালাম! (সীরাতুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম
রহমতুল্লাহি আলাইহি, আর রওদ্বুল
উনুফ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৪৩)
‘সম্মানিত গাযওয়াতু যাতির রিক্বা’ উনার জিহাদ মুবারক:
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার কাছে হযরত আমর ইবনে উবাইদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি
হযরত হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি হযরত জাবির ইবনে
আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেছেন-
أَنَّ رَجُلًا
مِنْ بَنِي
مُحَارِبٍ، يُقَالُ
لَهُ: غُوْرَثُ،
قَالَ لِقَوْمِهِ
مِنْ غَطَفَانَ
وَمُحَارِبٍ أَلَا
أَقْتُلُ لَكُمْ
حَضْرَتْ مُحَمَّدًا
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟
قَالُوا: بَلَى،
وَكَيْفَ تَقْتُلُهُ؟
قَالَ: أَفْتِكُ
بِهِ. قَالَ
فَأَقْبَلَ إلَى
رَسُولِ اللَّهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَهُوَ جَالِسٌ،
وَسَيْفُ رَسُولِ
اللَّهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ فِي
حِجْرِهِ، فَقَالَ
يَا حَضْرَتْ
مُحَمَّدُ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ، أَنْظُرُ
إلَى سَيْفِكَ
هَذَا؟ قَالَ:
نَعَمْ وَكَانَ
مُحَلًّى بِفِضَّةِ،
فِيمَا.
অর্থ: “নিশ্চয়ই বানূ মুহারিব গোত্রের গাওরাছ
নামক জনৈক ব্যক্তি গাতফান ও মুহারিব গোত্রকে বলল, আমি তোমাদের পক্ষ থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শহীদ করে ফেলব কি? নাউজুবিল্লাহ! নাউজুবিল্লাহ! নাউজুবিল্লাহ! তারা বলল, অবশ্যই, তবে কি উপায়ে? সে বলল, আতর্কিত আক্রমণ
করে। রাবী বলেন, তখন লোকটি দুরভিসন্ধি নিয়ে নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে হাযির
হলো। আর এ সময় তিনি বসা ছিলেন এবং উনার মহাসম্মানিত তরবারি মুবারক খানা ছিলেন উনার
নূরুল আযহার তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারকের উপরে। সুবহানাল্লাহ! সে বলল, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম! আপনার তরবারি মুবারক দেখতে পারি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। উনার মহাসম্মানিত তরবারি
মুবারক খানা ছিলেন রূপার কারুকার্য খচিত। সুবহানাল্লাহ! (হযরত হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও এরূপ
বলেছেন)।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৪৪)
‘সম্মানিত গাযওয়াতু যাতির রিক্বা’ উনার জিহাদ মুবারক:
তিনি আরো বলেন,
فَأَخَذَهُ فَاسْتَلَّهُ،
ثُمَّ جَعَلَ
يَهُزُّهُ، وَيَهُمُّ
فَيَكْبِتُهُ اللَّهُ،
ثُمَّ قَالَ
يَا مُحَمَّدُ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ،
أَمَا تَخَافَنِي؟
قَالَ لَا،
وَمَا أَخَافُ
مِنْكَ؟ قَالَ
أَمَا تَخَافَنِي
وَفِي يَدِي
السَّيْفُ؟ قَالَ
لَا، يَمْنَعُنِي
(اللَّهُ) مِنْكَ.
ثُمَّ عَمَدَ
إلَى سَيْفِ
رَسُولِ اللَّهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ،
فَرَدَّهُ عَلَيْهِ.
অর্থ: “মহাসম্মানিত তরবারি মুবারক খানা হাতে
নিয়ে সে ঘুরাতে লাগলো। কিন্তু যখনই সে আক্রমণ করতে উদ্যত হয়, তখনই মহান আল্লাহ পাক তিনি তার অন্তরে ভীতি সঞ্চার করেছেন।
শেষ পর্যন্ত সে বলল, ইয়া রসূলাল্লাহ!
ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি আমাকে ভয় পান না? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, না। কেন আমি তোমাকে ভয় পাবো? সে বলল, বাহ! আমার হাতে তরবারি রয়েছে আর আপনি আমাকে ভয় পাচ্ছেন না? তিনি বললেন, না মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে তোমার হাত থেকে রক্ষা করবেন। অবশেষে সে
বিনাবাক্যে মহাসম্মানিত তরবারি মুবারক খানা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুল মাগফিরাহ তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হাত মুবারকে ফিরিয়ে দিলো।” সুবহানাল্লাহ! (সীরাতুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম
রহমতুল্লাহি আলাইহি)
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র
কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
يَا
أَيُّهَا الَّذِينَ
آمَنُوا اذْكُرُوا
نِعْمَتَ اللَّهِ
عَلَيْكُمْ إِذْ
هَمَّ قَوْمٌ
أَنْ يَبْسُطُوا
إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ
فَكَفَّ أَيْدِيَهُمْ
عَنْكُمْ وَاتَّقُوا
اللَّهَ وَعَلَى
اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ
الْمُؤْمِنُونَ.
অর্থ: “হে মু’মিনগণ! তোমাদের প্রতি মহান আল্লাহ
পাক উনার বেশুমার অনুগ্রহের কথা স্মরণ করো, যখন এক সম্প্রদায় তোমাদের বিরুদ্ধে হাত তুলতে চেয়েছিল। তখন মহান আল্লাহ পাক
তিনি তাদের হাত সংযত করেছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো; আর মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি মু’মিনগণ তাওয়াক্কুল বা
নির্ভর করুক।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ- ১১)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৪৫)
‘সম্মানিত গাযওয়াতু যাতির রিক্বা’ উনার জিহাদ মুবারক:
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দানকারী বা উনাকে
শহীদ করার জন্যে ষড়যন্ত্রকারীদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রতিহত করেছিলেন। স্বয়ং
খ¦লিক মালিক রব
মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের হাতকে সংযত করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আর ঈমাদারদেরকে
সম্বোধন করে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার প্রদত্ত অপার নিয়ামতের কথা স্মরণ করতে বলেছেন।
অতএব এ বিষয় মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো এবং উনারই প্রতি তায়াল্লুক করো। অর্থাৎ
ঈমানদারদের জন্য ফরয পরিপূর্ণরূপে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি তায়াক্কুল বা
নির্ভরশীল হওয়া। কারণ তিনিই সমস্ত কিছুই কল্যাণদাতা এবং তিনিই অকল্যাণ থেকে প্রকৃত
হিফাযতকারী। সুবহানাল্লাহ!
কেউ কেউ বলেন, উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফ বানূ নাযীর গোত্রের আমর ইবনে জিহাশ যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার সাথে চক্রান্ত করেছিল সে সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। এ আয়াত শরীফ
নাযিলের ব্যাপারে অনেক মতও রয়েছে।
হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একটি দুর্বল উটে সাওয়ার হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নাখলের সম্মানিত যাতুর রিক্বা’ জিহাদের
উদ্দেশ্যে বের হই। সম্মানিত জিহাদ শেষে যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ফিরে আসলেন, তখন আমার সাথীরা দ্রুত এগিয়ে যেতে লাগলেন, আর আমি পেছনে পড়ে যেতে লাগলাম। আমার উটটি ছিলো দুর্বল। পেছন দিক থেকে নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এসে আমাকে
ধরে ফেললেন।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৪৬)
‘সম্মানিত গাযওয়াতু যাতির রিক্বা’ উনার জিহাদ মুবারক:
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞাসা
করলেন,
مَالك
يَا حَضْرَتْ
جَابِرُ رَضِيَ
اللهُ تَعَالَى
عَنْهُ؟ قَالَقُلْتُ
يَا رَسُولَ
اللَّهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ، أَبْطَأَ
بِي جَمَلِي
هَذَا، قَالَ
أَنِخْهُ، قَالَ
فَأَنَخْتُهُ، وَأَنَاخَ
رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ،
ثُمَّ قَالَ
أَعْطِنِي هَذِهِ
الْعَصَا مِنْ
يَدِكَ، أَوْ
اقْطَعْ لِي
عَصًا مِنْ
شَجَرَةٍ، قَالَ
فَفَعَلْتُ. قَالَ
فَأَخَذَهَا رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ فَنَخَسَهُ
بِهَا نَخَسَاتٍ،
ثُمَّ قَالَ
ارْكَبْ، فَرَكِبْتُ،
فَخَرَجَ، وَاَلَّذِي
بَعَثَهُ بِالْحَقِّ،
يُوَاهِقُ نَاقَتَهُ
مُوَاهَقَةً.
“হে হযরত জাবির
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনার কি অবস্থা? আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার এই উটটি পেছনে পড়ে যাচ্ছে। তিনি বললেন, উটটি বসান। তখন আমি আমার উটকে বসালাম। তিনিও উনার নিজ উটটি
বসালেন। তারপর বললেন, আপনার হাতের এই
লাঠিটা আমাকে দিন, কিংবা গাছ থেকে
আমার জন্য একটি লাঠি কেটে আনুন। আমি উনার নির্দেশ মুবারক পালন করলাম। তিনি লাঠিটি
নূরুল মাগফিরাহ (হাত মুবারক)-এ নিয়ে উটটিকে কয়েকটি খোঁচা মারলেন। এরপর বললেন, এবার তার পিঠে সাওয়ার হন। আমি সাওয়ার হলাম। উটটি এবার ছুটে
চলল। সেই খ¦লিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! যিনি উনাকে হক্ব বা সত্য হিসাবে
পাঠিয়েছেন, তখন আমার উটটি উনার সম্মানিত উট
মুবারকের সাথে চলতে লাগলো।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার কথাপোকথন হচ্ছিল। তিনি বললেন, হে হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনার এ উটটি কি
আমার কাছে বিক্রি করবেন? আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম! বরং আমি এটি আপনাকে হাদিয়া মুবারক দিতে চাই।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৪৭)
‘সম্মানিত গাযওয়াতু যাতির রিক্বা’ উনার জিহাদ মুবারক:
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করলেন,
না তার চাইতে আমার কাছে বিক্রি করুন। আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম! দয়া করে, আপনি এর দাম
বলুন। তিনি বললেন, এটি আমি এক
দিরহামে কিনব। আমি বললাম, তা হবে না। এতে
আমার ঠকা হবে। তিনি বললেন, তা হলে দুই
দিরহাম দিব? আমি বললাম, তাতেও হবে না। তিনি ক্রমাগত দাম মুবারক বাড়াতে থাকলেন এবং
শেষ পর্যন্ত এক উকিয়া (চল্লিশ দিরহাম) পর্যন্ত পৌঁছলেন। তখন আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম! আপনি এই দামে খুশী আছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, তা হলে এই উটটি আপনি নিতে পারেন। তিনি বললেন, আমি নিলাম। সুবহানাল্লাহ!
এরপর বললেন, হে হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি নিকাহ বা বিয়ে করেছেন? আমি বললাম, হ্যাঁ, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম! আমি বিয়ে বা নিকাহ করেছি। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কুমারী না বিধবা? আমি বললাম, তিনি বিধবা। তিনি বললেন, কুমারী বিয়ে করলেন না কেন, তা হলে পরস্পর বেশ খুশি প্রকাশ করতে পারতেন? আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা সম্মানিত উহুদ জিহাদে পবিত্র শাহাদতী
শান মুবারক করেছেন। তিনি সাত জন মেয়ে রেখে গেছেন। তাই আমি একটি পূর্ণ বয়স্কা
অভিজ্ঞা মহিলা বিয়ে করেছি, যাতে তিনি
উনাদের সকলের দায়-দায়িত্ব ও লালন-পালনের ভার নিতে পারেন। তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছায় আপনি ঠিকই করেছেন। শুনুন! আমরা
যদি ছিরার (পবিত্র মদীনা শরীফ থেকে তিন মাইল দূরে একটি জায়গার নাম) পৌঁছতে পারি, তাহলে সেখানে কয়েকটি উট যাবেহ করতে বলব এবং তা যাবেহ করা
হবে। আমরা সেদিন সেখানেই কাটিয়ে দিব। আপনার আহলিয়া আমাদের আগমনের সংবাদ শুনে
আমাদের জন্য গদিগুলো ঝেড়ে নিবেন। আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ
পাক উনার ক্বসম! আমাদেরতো কোন গদি নেই। তিনি বললেন, শীঘ্রই ব্যবস্থা হবে। এখন না থাকলেও তখন থাকবে। সুবহানাল্লাহ! আপনি যখন আপনার
আহলিয়ার নিকট যাবেন, তখন হিকমতপূর্ণ
কাজ করুন।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৪৮)
‘সম্মানিত গাযওয়াতু যাতির রিক্বা’ উনার জিহাদ মুবারক:
আমরা যখন
ছিরার নামক স্থানে পৌঁছলাম, তখন নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত
নির্দেশ মুবারকে কয়েকটি উট যাবেহ করা হলো। সেদিন সেখানেই অবস্থান করলাম।
সন্ধ্যাকালে তিনি পবিত্র মদীনা শরীফে প্রবেশ করলেন। আমরাও উনার অনুসরণ মুবারক
করলাম। আমি আমার আহলিয়াকে গিয়ে সব ঘটনা জানালাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে যা-যা বলেছেন তাও উনাকে শুনালাম।
সব শুনে তিনি বললেন, তা হলে আমার কথা
শুনুন! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
কথা মুবারক শিরোধার্য করাই আমাদের কর্তব্য। সুবহানাল্লাহ!
সকাল বেলা আমি উটের লাগাম ধরে অগ্রসর হলাম এবং
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুজরা
শরীফের দরজা মুবারকের সামনে নিয়ে বাঁধলাম। এরপর সম্মানিত মসজিদে নববী শরীফ মুবারকে
গিয়ে বসলাম। এ সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত হুজরা শরীফ থেকে বের হয়ে বাহিরে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ
করেন এবং উটটি দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটি কার উট? হযরত ছাহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা জবাব দিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এ উটটি হযরত
জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি কোথায়? এই বলে তিনি আমাকে ডেকে পাঠালেন। তিনি বললেন, হে ভাতিজা! উটের লাগাম হাতে নিন এবং এটি নিয়ে যান। এটি এখন
আপনার। তারপর হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে ডেকে বললেন, হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে এক উকিয়া (৪০
দিরহাম) দিয়ে দিন। আমি উনার সাথে গেলাম। তিনি আমাকে এক উকিয়া দিলেন এবং আরও কিছু
বেশি দিলেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! এরপরেও উট মুবারক দ্বারা
এভাবেই আমাদের সমৃদ্ধি সাধিত হতে থাকলো। আমাদের পরিবারে এটাকে বিশেষ মর্যাদার চোখে
দেখা হত। শেষ পর্যন্ত সেটি র্হারার হৃদয়-বিদারক ঘটনার দিন মারা যায়। সুবহানাল্লাহ!
সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ
ক্বিবলা আলাইহিস সালাম! (ফাতহুল বারী, শরহে ক্বুসত্বলানী, জামিউল উছুল, সীরাতুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম
রহমতুল্লাহি আলাইহি, আল বিদায়া ওয়ান
নিহায়া)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৪৯)
‘সম্মানিত গাযওয়াতু যাতির রিক্বা’ উনার জিহাদ মুবারক:
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ جَابِرِ
بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ الْأَنْصَارِيِّ
رَضِيَ اللهُ
تَعَالَى عَنْهُ،
قَالَ خَرَجْنَا
مَعَ رَسُولِ
اللَّهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ فِي
غَزْوَةِ ذَاتِ
الرِّقَاعِ مِنْ
نَخْلٍ، فَأَصَابَ
رَجُلٌ امْرَأَةَ
رَجُلٍ مِنْ
الْمُشْرِكِينَ، فَلَمَّا
انْصَرَفَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ قَافِلًا،
أَتَى زَوْجُهَا
وَكَانَ غَائِبًا،
فَلَمَّا أُخْبِرَ
الْخَبَرَ حَلَفَ
لَا يَنْتَهِي
حَتَّى يُهْرِيقَ
فِي أَصْحَابِ
مُحَمَّدٍ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ دَمًا،
فَخَرَجَ يَتْبَعُ
أَثَرَ رَسُولِ
اللَّهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ، فَنَزَلَ
رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
مَنْزِلًا، فَقَالَ:
مَنْ رَجُلٌ
يَكْلَؤُنَا لَيْلَتَنَا
(هَذِهِ)؟
قَالَ: فَانْتَدَبَ
رَجُلٌ مِنْ
الْمُهَاجِرِينَ، وَرَجُلٌ
آخَرُ مِنْ
الْأَنْصَارِ، فَقَالَا:
نَحْنُ يَا
رَسُولَ اللَّهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ،
قَالَ: فَكُونَا
بِفَمِ الشِّعْبِ.
قَالَ وَكَانَ
رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَأَصْحَابُهُ قَدْ
نَزَلُوا إلَى
شِعْبٍ مِنْ
الْوَادِي، وَهُمَا
حَضْرَتْ عَمَّارُ
بْنُ يَاسِرٍ
رَضِيَ اللهُ
تَعَالَى عَنْهُ
وَ حَضْرَتْ
عَبَّادُ بْنُ
بِشْرٍ رَضِيَ
اللهُ تَعَالَى
عَنْهُ،
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে নাখলের সম্মানিত যাতুর রিক্বা’ জিহাদে বের হই। এ
সময় আমাদের এক ব্যক্তি জনৈক মুশরিক ব্যক্তির আহলিয়াকে বন্দি করে। সম্মানিত জিহাদ
শেষে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
যখন মহাসম্মানিত মদীনা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে ফিরছিলেন তখন ওই মুশরিকের বাড়ী পড়ল।
মহিলাটিকে বন্দি করার সময় তার আহাল বাড়ীতে ছিলনা। বাড়ীতে এসে সে তার আহলিয়ার বন্দী
হবার ঘটনা শুনতে পায়। তখন সে ক্ষিপ্ত হয়ে ক্বসম করে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মাঝে
রক্তপাত না ঘটিয়ে সে ক্ষান্ত হবে না। নাউযুবিল্লাহ! এ বলে সে নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণে বের হয়ে পড়ল।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
পথিমধ্যে এক জায়গায় ছফর মুবারক বিরতি করলেন। তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আজ রাতে কে আমাদের পাহারা দিবেন? তখন একজন মুহাজির ও একজন আনছার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহুমা উনারা একযোগে সাড়া দিয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা পাহারা
দিব। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
নির্দেশ মুবারক দিলেন, আপনারা গিরিপথের
মুখে অবস্থান মুবারক গ্রহণ করবেন। হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের নিয়ে
একটি গিরিপথে যাত্রা বিরতি করেছিলেন। উক্ত হযরত ছাহাবীদ্বয় রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহুমা উনাদের একজন ছিলেন, হযরত আম্মার
ইবনে ইয়াসির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং অপরজন ছিলেন হযরত আব্বাদ ইবনে বিশর
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৫০)
‘সম্মানিত গাযওয়াতু যাতির রিক্বা’ উনার জিহাদ মুবারক:
“হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন, উনারা দু’জন গিরিপথের মুখে পৌছলে হযরত আনছার ছাহাবী
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত মুহাজির ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনাকে বললেন, আমি কি প্রথম রাতে পাহারা দেব, না শেষ রাতে, কোনটা আপনার পছন্দ? হযরত মুহাজির
ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, আপনি প্রথম রাতে দিন। সেমতে হযরত মুহাজির ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
তিনি ঘুমিয়ে গেলেন। আর হযরত আনছার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পবিত্র
নামাযে দাঁড়িয়ে গেলেন। এমনি মুহূর্তে মুশরিকটি সেখানে উপস্থিত হলো। সে একটি ছায়া
দেখে বুঝে ফেললো তিনি মুসলমান একজন প্রহরী তথা পাহারাদার। সে উনাকে লক্ষ্য করে
একটি তীর ছুঁড়ল। তীরটি উনার দেহ মুবারকে বিদ্ধ হলো। তিনি সেটি টেনে বের করে পাশে
রেখে দিলেন এবং আগের মত পবিত্র নামায আদায় করার জন্য স্থির থাকলেন। মুশরিকটি আরও
একটি তীর ছুঁড়ল এবং এটিও উনার দেহ মুবারক ভেদ করল। তিনি এ তীরটিও টেনে বের করে ফেললেন এবং পাশে রেখে দিয়ে
পবিত্র নামায আদায়ে অবিচল থাকলেন। ঘাতক তৃতীয় তীর ছুঁড়ল এবং সেটিও উনাকে বিদ্ধ
করল। তিনি এবারও তা টেনে বের করলেন এবং পাশে রেখে দিয়ে রুকু- সিজদা মুবারকের
মাধ্যমে পবিত্র নামায শেষে করলেন। তারপর সঙ্গীকে ঘুম থেকে জাগালেন। তিনি বললেন, আপনি ঘুম থেকে উঠুন আমি মারাত্মক আহত হয়েছি। এ কথা মুবারক
শুনে হযরত মুহাজির ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ধড়ধড় করে উঠে বললেন।
এদিকে মুশরিকটি উনাদের দু’জনকে কথা বলতে দেখে বুঝে নিল যে উনারা তাকে ধরার জন্য
পরামর্শ করছেন। সঙ্গে সঙ্গে সে দ্রুত পালিয়ে গেল। যখন আনছার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনি দেখলেন যে, হযরত মুহাজির
ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার দেহ মুবারক থেকে রক্ত মুবারক ঝরছে।
সুবহানাল্লাহ! তখন তিনি বললেন, ভাই আপনি আমাকে
প্রথমেই কেন ডাকলেন না। তিনি বললেন, আমি একটি পবিত্র সূরা শরীফ তিলওয়াত করছিলেন, তা শেষ না করে থামতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু মুশরিকটি যখন ক্রমাগত তীর নিক্ষেপ
করতেই থাকল, তখন অগত্যা রুকু-সিজদা মুবারক শেষ
করে আপনাকে জাগালাম। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে যে পাহারার দায়িত্ব মুবারক দিয়েছেন, তা বিঘিœত হওয়ার আশংকা না থাকলে আমি কিছুতেই তিলওয়াত মুবারক ক্ষান্ত
করতাম না,
তা হয় আমি শেষ হতাম, নয়ত সূরা শরীফ শেষ হত। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সম্মানিত যাতুর রিক্বা’ জিহাদের শেষে নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ
উনার মধ্যে ফিরে আসলেন।” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাউদ শরীফ, জামিউল উছূল, সীরাতুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি
আলাইহি,
হায়াতুছ ছাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)
0 Comments:
Post a Comment