সূওয়াল : ইদানীংকালে আমার পঠিত এক
পত্রিকায় “কম্পিউটারের রায় আল কুরআন মানব রচিত নয়” শীর্ষক
এক আর্টিকেলে ১৯ সংখ্যার জটির জাল বিন্যাসে কুরআন শরীফ মানব রচিত হতে হলে, (৬২৬-এর পর ২৪টি শুন্য) বছর লাগত কম্পিউটার প্রদত্ত এই তথ্য দ্বারা কুরআন মানব
রচিত নয় বা কুরআন শরীফ-এর সত্যতার ক্ষেত্রে কম্পিউটারকে ও তার রায়কে বিশেষভাবে
মূল্যায়িত করা হয়েছে। আর ১৯-এর রহস্যময় গাণিতিক বন্ধনকে বিধর্মীরা যে হঠাৎ বা
আচমকা ভাবে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে, লেখক তার বিরুদ্ধে তেমন কোন
মন্তব্য করতে পারেনি এবং নিজেও থিউরী অব প্রোবাবিলিটি অনুযায়ী (সাম্ভব্যতা
সাপেক্ষে) তা হতে পারে বলে স্বীকার করেছে।
এ
প্রেক্ষিতে আমার সুওয়াল হলো- কম্পিউটার প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মাহাত্ম মূল্যায়ণ করা এবং তার
উপর নির্ভর করা কি যথার্থ হয়েছে? সঠিক সিদ্ধান্ত জানিতে বাসনা
রাখি।
জাওয়াব : আপনার পঠিত পত্রিকায় প্রকাশিত ‘কম্পিউটারে রায় আল কুরআন মানব রচিত নয়, শীর্ষক
আর্টিকেলের বক্তব্য যথার্থ হয়নি। গভীরভাবে অনুধাবন করলে বোঝা যাবে যে, এতে কম্পিউটারের রায় দ্বারা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার
মাহাত্ম ফুটিয়ে তোলার বিপরীতে মূলত পবিত্র কুরআন শরীফ উনার
অবমাননাই করা হয়েছে। কারণ কম্পিউটার কোন স্বতস্পূর্ত বা স্বয়ংভূ যন্ত্র নয়, মানুষই তাকে তৈরী করেছে এবং মানুষ কম্পিউটারকে তাদের ইচ্ছানুযায়ী পরিচালিত
করে। কম্পিউটারের বিশেষ অংশের মধ্যে রয়েছে ইনপুট ও আউটপুট। সুতরাং ইনপুটে যে
মেকানিজম ও সিস্টেম ঢোকানো থাকে আউট পুট তাই হবে। এক্ষেত্রে কম্পিউটারের যা করণীয়
মানুষই তার .. বা ..... করে দেয়। ম্পিউটার শুধুঅত্যন্ত দ্রুততার সাথে সে ......
বাস্তবায়ন করে,
অর্থা ..... দেয়। সুতরাং আজকে বিধর্মীরা মুসলমানদের সাময়িক
চমকিত করার জন্য ১৯ সংখ্যার জটির, জাল বিন্যাসে যে আউটপুট বা তথ্য
বের করেছে,
কিছুদিন পরে হতে পারে তারা সেখানে এমন তথ্য ও মেকানিজম
ইনপুট করবে যে,
তখন দেখা যাবে এইজটিল জাল বিন্যাস আর থাকছে না। তখন
বিধর্মীরা খুব ফলাও করে প্রচার করবে যে, আসলে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার সত্যতা বা মাহাত্ম কিছু নেই।
লক্ষণীয় ইতিমধ্যেই বিধর্মীরা মন্তব্য করে বসেছে যে, ১৯
সংখ্যার জটিল জাল বিন্যাস আচমকাভাবে হয়েছে।
স্মরণীয়, আবিস্কৃত কম্পিউটার বললেই যে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার
মাহাত্ম অধিক স্বীকৃত হবে, আর না বলরে তা হবে না, এরূপ মানসিকতা আদৌ পোষণ করা ঠিক নয়। কারণ এটি অনেক সময় বিধর্মীদের চক্রান্ত যে, তারা মুসলমানদের কোন বিষয়কে প্রথমে শ্রেষ্ঠ বলে, পরে আবার
সে বিষয়কেই অন্য কারণে শ্রেষ্ঠ নয় বলে মন্তব্য করে। মূলত ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব
ইসলামই। আর ইসলামই হলো বিজ্ঞানের আসল ও পূর্ণ প্রকাশ। অপরদিকে মানুষের আবিষ্কৃত
বিজ্ঞান হচ্ছে- নাকেছ এবং যা সতত: পরিবর্তনশীল। যে জন্য বলা হয়, বিজ্ঞান সদা সুতিকা বা প্রসূতির গৃহে। তাই এই নাকেছ ও শিশু বিজ্ঞানের স্বীকৃতি
ব্যতীতই ইসলাম মহা বিজ্ঞানময়। এবং কুরআন শরীফ হচ্ছে- মহা বিজ্ঞানময় কালাম।
মূলত পবিত্র কুরআন শরীফ উনার সত্যতা ও মাহাত্ম সম্পর্কে মহান
আল্লাহ পাক তিনি বলার পরও কম্পিউটারের কথায় উৎফুল্ল
হওয়ার অর্থ হচ্ছে- কম্পিউটারের কথায় অধিক আস্থা পোষণ করা। অথচ মহান আল্লাহ পাক নিজেই বলেন “এটি সে কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই।”
অতএব পবিত্র কুরআন শরীফ উনার শ্রেষ্ঠত্বের ক্ষেত্রে, বিধর্মীদের দেয়া কম্পিউটার তথ্যকে প্রাধান্য দেয়া সমঝদারের পরিচয় নয় এবং যা
সঠিকও নয়।
আবা-৩৯
0 Comments:
Post a Comment