৩৭০ নং- সুওয়াল - ‘যার পীর নেই, তার পীর শয়তান’- এ উক্তিটি কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর কোথায়ও আছে কি? জানতে ইচ্ছুক।

সুওয়াল - ‘যার পীর নেই, তার পীর শয়তান’- এ উক্তিটি কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর কোথায়ও আছে কি? জানতে ইচ্ছুক। 

জাওয়াব - হ্যাঁ, কথাটা সরাসরি কুরআন শরীফের আয়াত বা হাদীছ শরীফ নয়, তবে অবশ্যই এটা অনুসরণীয় বুযুর্গানে দ্বীনের কথা। মূল আরবীতে হলো-
من ليس له شيخ فشيخه شيطان.
অর্থঃ- যার শায়খ (পীর) নেই, তার শায়খ (পীর) শয়তান। হযরত বায়েজীদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত জোনায়েদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রমুখ বুযুর্গানে দ্বীন একথা বলেছেন, যা ওনাদের সীরত গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।
উপরোক্ত কাওলের ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়, যদি কোন ব্যক্তি, কোন হাক্কানী আল্লাহ্ ওয়ালা পীর ছাহেব (শায়খ) উনার (তথাকথিত নয়) মুরীদ হয়, তাহলে তার পক্ষে মহান আল্লাহ পাক উনার মতে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার  পথে কায়েম থাকা সম্ভব। কারণ মহান আল্লাহ্ পাক  কুরআন শরীফে বলেন,
وما ينطق عن الهواء ان هوالا وحى يوحي.
অর্থঃ- “তিনি (হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি ওহী ব্যতীত নিজ থেকে কোন কথা বলেন না।”
এ আয়াত শরীফের তফসীরে হাদীছে কুদসীতে উল্লেখ করা হয়,
لايزال العبد يشقرب الى بالنوافل حتى احبه فاذا احببت كنت كنت سمعه الذى يسمع به كنت بصره الذى يبصربه- كنتلسائه الذى ينطق به- كنت يده الذى يبطش بها كنت رجله الذى يمشى بها- فاذا سئلنى اعطيته.
অর্থঃ- “বান্দা অতিরিক্ত আমল (সুন্নতে যায়েদা, মোস্তাহাব, নফল, মোবাহ্ ইত্যাদি) করতে করতে আমার এতটুকু নৈকট্য লাভ করে যে, আমি তাকে মহব্বত করি। আমি যখন তাকে মহব্বত করি, তখন আমি তার কান হই, সে আমার কানে শুনে। আমি তার চক্ষু হই, সে আমার চোখে দেখে। আমি তার জবান হই, সে আমার জবানে কথা বলে। আমি তার হাত হই, সে আমার হাতে ধরে। আমি তার পা হই, সে আমার পায়ে চলে। যখন সে আমার কাছে কিছু চায়, তা অবশ্যই আমি তাকে দান করি এবং তখন অবশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দান করি।”
অর্থাৎ বান্দা কখনও মহান আল্লাহ্ পাক হয় না, আবার মহান আল্লাহ্ পাকও কখনও বান্দা হন না। মূল কথা হলো- বান্দা মহান আল্লাহ্ পাক উনার আনুগত্যতা করতে করতে এতটুকু অনুগত হয় যে, তখন তার কান, চোখ, যবান, হাত, পা ইত্যাদি সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং সে নিজেও মহান আল্লাহ্ পাক উনার হুকুমের খেলাফ কোন কাজ করে না। কাজেই কোন ব্যক্তি যদি কোন হক্কানী পীর সাহেব (শায়খ) উনার নিকট বাইয়াত (মুরীদ) হয়, তাহলে সে তার পীর ছাহেবের কথামত চলবে এবং এর কারণেই আল্লাহ্ পাক উনার মত এবং হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার  পথের উপর কায়েম থাকবে। আর যদি কোন পীর সাহেবের কাছে বাইয়াত না হয়, তাহলে সে অবশ্যই নফসের তথা শয়তানের পায়রবী করবে এবং শয়তানই তার একমাত্র উপদেষ্টা হবে। কারণ, তার নফস এছলাহ্ বা সংশোধন হয়নি। কাজেই “যার পীর নেই, তার পীর হচ্ছে শয়তান” কথাটা শুদ্ধ এবং যারা এটাকে অসুদ্ধ বলে তাদের কথাই মুলতঃ অশুদ্ধ।
আবা-২৪

0 Comments: