সুওয়াল - কাযা নামায কয় প্রকার ও কি কি? কাযা নামাযসমূহের নিয়ম কি এবং কিভাবে নিয়ত করতে হবে? কোন কোন সময় কাযা নামায পড়া যায় না? উমরী কাযা কাকে বলে?
জাওয়াব - কাযা নামায দু’প্রকার- (১) কাযায়ে আ’দা ও (২) কাযায়ে উমরী। কাযায়ে আ’দা আবার দু’ধরণের-
প্রথমতঃ যে সমস্ত কাযা নামাযের ক্ষেত্রে তরতীব রক্ষা করতে হয়, আর এর হুকুম হলো- নামায যদি পাঁচ ওয়াক্ত বা তার চেয়ে কম কাযা হয়, তাহলে তরতীব অনুযায়ী কাযা আদায় করে তারপর ওয়াক্তিয়া নামায পড়তে হবে। যেমন কারো যদি ফজর, যোহর, আছর, মাগরীব, এশার নামায কাযা হয়, তাহলে পরবর্তী ফজরের নামায পড়ার পূর্বে উক্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামায পর্যায়ক্রমে কাযা আদায় করে তারপর ফজর নামায পড়তে হবে, অন্যথায় ফজর নামায আদায় হবেনা। আর যদি ফজর থেকে ফজর পর্যন্ত ৬(ছয়) ওয়াক্ত বা তদুর্ধ নামায কাযা হয়, তাহলে পরবর্তী যোহর পড়ার সময় কাযা নামাযের তরতীব রক্ষা না করলেও চলবে। বরং কাযা নামায সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী হারাম ওয়াক্ত বাদে যেকোন সময় আদায় করলেই নামায শুদ্ধ হয়ে যাবে। তবে তরতীবওয়ালা নামাযের ক্ষেত্রে কাযা আদায় করতে গেলে যদি ওয়াক্তিয়া নামাযের সময় কম থাকার কারণে ওয়াক্তিয়া নামায ফওত হওয়ার আশঙ্কা হয়, তাহলে তরতীব রক্ষা না করে বরং ওয়াক্তিয়া নামায পড়ে নিতে হবে। যেমন কারো মাগরিব ও এশার নামায কাযা হয়ে গিয়েছে এবং ফজরের ওয়াক্তে এমন সময় ঘুম হতে উঠেছে- সুর্য উদয় হতে ৫/৭ মিনিট বাকী, এখন ওযু করে যদি কাযা নামায আদায় করতে যায়, তাহলে আর ফজরের ফরজ নামায পড়া যায়না, এমতাবস্থায় তরতীব রক্ষা করার প্রয়োজন নেই। বরং ফজরের নামায পড়ে নিতে হবে।
এখানে উল্লেখ্য যে, তরতীব তিন কারণে ভঙ্গ হয়- (১) পাঁচ ওয়াক্তের বেশী কাযা থাকলে, (২) ওয়াক্ত কম থাকলে, (৩) তরতীবের কথা ভূলে গেলে।
কাযা নামাযের নিয়ত হলো- আমি ফজরের দু’রাকায়াত বা জোহর, আছর, এশার চার রাকায়াত বা মাগরিব, বেত্রের তিন রাকায়াত ফরজ/ওয়াজিব নামায ক্বিবলামুখী হয়ে কাযা আদায় করতেছি, আল্লাহু আক্বার।
আর উমরী কাযা বলে এমন কাযা নামাযকে- যে নামায থাকা সম্বন্ধে নামাযী ব্যক্তি সন্দেহে রয়েছে, তার কাযা নামায বাকী আছে কিনা? এ সন্দেহের কারনে যে কাযা নামায পড়া হয়, তাকে উমরী কাযা বলে। উমরী কাযার ক্ষেত্রে মাগরীব ও বিত্র নামায তিন রাকায়াতর স্থলে চার রাকায়াত পড়তে হয়। যেমন- মাগরিব এবং বিত্র নামায নিয়ম মোতাবেক যথারীতি শেষ করে সালাম ফিরানোর পূর্বে দাঁড়িয়ে আর এক রাকায়াত (চতুর্থ রাকায়াত) নামায সুরা মিলায়ে পড়তে হবে। অতঃপর রুকু সিজ্দা করে তাশাহুদ, দরূদ শরীফ ও দোয়া মাশুরা পড়ে সালাম ফিরায়ে নামায শেষ করতে হবে। (আলমগীরী, বাহ্রুর রায়েক, হিদায়া, ফতহুল ক্বাদীর ইত্যাদি) (আমীন)
আবা-২৩
0 Comments:
Post a Comment