একজন কুতুবুজ্জামান-উনার
দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
নিজ শায়খের সাথে আনুগত্যপূর্ণ অন্তরঙ্গ সম্বন্ধ স্থাপন করা সালেকের জন্য
অত্যাবশ্যক। ইচ্ছা অথবা অনিচ্ছায় শায়খের আদেশ নির্দেশের প্রতি অনীহা প্রদর্শন, উনার
ইচ্ছার অবমাননা, উনার সিদ্ধান্তের বিপরীত নিজস্ব কোন মতামত গ্রহণ, এমনকি
অন্তরে বিরুদ্ধ কোন ধ্যান-ধারণা পোষণ করাও মুরীদের পক্ষে জায়েয নেই। কথা, কাজ, আচরণ, মনোভাব, চিন্তা ও
ধ্যানে মুর্শিদের প্রতি নাখোশ হওয়া, খারাপ আক্বীদা পোষণ করা, তা সে
বিষয় যতো ক্ষুদ্র অথবা তুচ্ছই হোক, নাজায়েয এবং মুরীদের জন্য অবধারিত
হলাহল তুল্য। মুর্শীদের যে কোন অসন্তুষ্টি মুরীদের সর্বনাশ ডেকে আনে। এসব অবাঞ্ছিত
আচরণ থেকে পরহেজ করার মূল উদ্দেশ্য হলো, মুর্শীদের ‘‘জাত’’-উনার
সাথে মুরীদের আপন “জাত” (সত্ত্বা) অবিভাজ্যরূপে মিলিয়ে দেয়া। আল্লাহ্ পাক-উনার মাহবুব ওলী-উনার সাথে
এমন মধুর সম্মিলন সালেকের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার নিশ্চিত নিয়ামক। এমন অবস্থায়, অন্য
মুর্শীদের সাক্ষাতে অথবা সোহ্বতে যেতে মুরীদের অভিপ্রায় থাকার প্রশ্ন অবান্তর। যদি
থাকে তবে বুঝতে হবে,
সে মুরীদ অকৃত্রিম নয়, মেকী। তার জন্য চুড়ান্ত সর্বনাশ
অপেক্ষায় থাকে। প্রাণের আঁকা নিজ পীর সাহেব ক্বিবলা-উনার বিনা অনুমতিতে অন্য পীর
সাহেবের নিকট বাইয়াত হলে ঐ লক্ষ্যভ্রষ্ট সালেক ত্বরীকত বিনষ্টকারী এবং স্বেচ্ছায়
নিজেকে ধ্বংসকারী হিসেবে গণ্য হয়। তবে, তিনটি কারণে একজন মুরীদ অন্য
মুর্শীদের নিকট বাইয়াত হতে পারে।
কারণ তিনটি হলো-
(১) নিজ মুর্শীদের
ইন্তিকাল হলে,
(২) মুরীদ তার মুর্শীদ থেকে
দূরবর্তী অবস্থানে থাকলে। অধিক দূরত্বের জন্য মুর্শীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা
সম্ভব না হলে এবং
(৩) আল্লাহ্ পাক না করুন, মুর্শীদ
গোমরাহ হয়ে গেলে। মুর্শীদের সোহ্বত এখ্তিয়ার-উনার অভাবে (মুরীদ পূর্ণতায় পৌঁছে না
থাকলে) কামিয়াবী হাছিলের ক্ষেত্রে এই তিনটি কারণই অন্তরায় সৃষ্টি করে থাকে। এমন
পরিস্থিতিতে নতুন মুর্শীদের নিকট বাইয়াত হওয়া জায়েয। ক্ষেত্রভেদে জরুরীও বটে।
হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমাতুল্লাহি আলাইহি-উনার
অবস্থা অবশ্য এক্ষেত্রে ভিন্ন। হযরত ছাওয়াল পীর সাহেব ক্বিবলা রহমাতুল্লাহি আলাইহি-উনার
নিকট বাইয়াত হওয়ার পর ইতোমধ্যে দশ বছর অতিবাহিত হয়েছে। মুর্শীদ বিহনে উনার
বেদনাঘেরা একাকীত্ব আর ভালো লাগেনা। একজন নতুন মুর্শীদের সান্নিধ্যে যাবার ব্যাকুল
অপেক্ষা এখন। কিন্তু কোথায় সে মুর্শীদ! দীর্ঘ অনুসন্ধানে কাঙ্খিত মুর্শীদের সন্ধান
মিলে। উনার নাম মুবারক হযরত শেখ বোরহানুদ্দিন ফরাজী কান্দি রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
আল্লাহ্ পাক-উনার সদয় মর্জিতে উনার মুবারক হাতে বাইয়াত হওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত
গ্রহণের সময় এখন। (অসমাপ্ত)
আবা-৭৮
0 Comments:
Post a Comment