নছীহতে উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম -(১ম খণ্ড)নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান এনে উনার আনুগত্য করা ফরয-পর্ব-৫

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান এনে উনার আনুগত্য করা ফরয-পর্ব-৫

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا ﴿۲۵﴾ وَدَاعِيًا إِلَى اللَّهِ بِإِذْنِهِ وَسِرَاجًا مُنِيرًا ﴿٢٦﴾ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ بِأَنَّ لَهُمْ مِّنَ اللَّهِ فَضْلًا كَبِيرًا (٢٧) سورة الاحزاب

হে নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে উপস্থিত বা হাযির-নাযির, সুসংবাদ প্রদানকারী, সতর্ককারী এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুমে উনার দিকে আহবানকারী ও উজ্জ্বল প্রদীপ রূপে প্রেরণ করেছি। আপনি মু'মিনদেরকে এ বিষয়ে সুসংবাদ প্রদান করুন যে, (আপনি) উনাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে বিরাট অনুগ্রহ। [সূরা আহযাব শরীফ: ৪৫-৪৭]

আর পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ رَبِيعَةَ الْجُرَشِيِّ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقِيلَ لَهُ لِتَنَّمْ عَيْنُكَ وَلِتَسْمَعْ أُذُنُكَ وَلِيَعْقِلْ قَلْبُكَ قَالَ فَنَامَتْ عَيْنَى وَ سَمِعَتْ أَذْنَايَ وَعَقَلَ قَلْبِي قَالَ فَقِيْلَ لِي سَيِّدٌ بَنَى دَارًا فَصَنَعَ فِيْهَا مَأْدُبَةً وَأَرْسَلَ دَاعِيًا فَمَنْ أَجَابَ الدَّاعِيَ دَخَلَ الدَّارَ وَأَكَلَ

مِنَ الْمَأْدُبَةِ وَرَضِيَ عَنْهُ السَّيِّدُ وَمَنْ لَمْ يُجِبِ الدَّاعِيَ لَمْ يَدْخُلِ الدَّارَ وَلَمْ يَأْكُلْ مِنَ الْمَأْدُبَةِ وَسَخَطَ عَلَيْهِ السَّيِّدُ قَالَ فَاللَّهُ السَّيِّدُ وَ مُحَمَّدٌ النَّاعِي وَالدَّارُ الْإِسْلَامُ وَالْمَأْدُبَةُ الْجَنَّةُ. (رواه الدارمي)

হযরত রবিয়াতাল জুরাশি রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কতিপয় হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আসলেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলা হলো, আপনার চোখ মুবারক যেন ঘুমিয়ে থাকেন, আপনার কান মুবারক যেন শুনতে থাকেন, আপনার অন্তর মুবারক যেন বুঝতে থাকেন। তিনি বললেন, অতঃপর আমার চক্ষু মুবারক ঘুমিয়ে রইলেন, আমার কর্ণদ্বয় মুবারক শুনতে থাকলেন এবং আমার অন্তর মুবারক উপলব্ধি করতে থাকলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, আমাকে বলা হলো, একজন সাইয়্যিদ (বাড়ির মালিক) তিনি একটি বাড়ি তৈরী করলেন। সেখানে তিনি খাবারের আয়োজন করলেন এবং একজন আহবানকারী প্রেরণ করলেন। অতঃপর যে ব্যক্তি আহবানকারীর ডাকে সাড়া দিবে, সেই ব্যক্তি ঘরে প্রবেশ করবে এবং খাদ্য খাবে এবং যিনি সাইয়্যিদ (বাড়ির মালিক) তিনি তার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন। আর যে ব্যক্তি আহবানকারীর ডাকে সাড়া দিবে না, সে ব্যক্তি ঘরে প্রবেশ করবে না এবং খাদ্যও খাবে না। সাইয়্যিদ তিনি তার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন না। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন "সাইয়্যিদ", আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন "আহবানকারী”, এবং ঘর হচ্ছে 'ইসলাম', আর খাবার হচ্ছে "জান্নাত”। সুবহানাল্লাহ! [দারিমী শরীফ]

উপরোক্ত আয়াত শরীফ এবং হাদীছ শরীফ দ্বারা যে বিষয়টি বোঝানো হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারকেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দিকে আহবানকারী। যারা উনার সম্মানিত দাওয়াত মুবারক গ্রহণ করে পরিপূর্ণভাবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে প্রবেশ করবেন, উনারাই জান্নাত উনার মধ্যে প্রবেশ করে জান্নাতী নিয়ামত মুবারক ভোগ করতে পারবেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করাই হলো, মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার আনুগত্য করা। সুবহানাল্লাহ! কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

مَنْ يُطِعِ الرَّسُوْلَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ وَمَنْ تَوَلَّى فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيْظًا (۸۰) سورة النساء

যে ব্যক্তি রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করল, সে মূলতঃ মহান আল্লাহ পাক উনারই আনুগত্য করল। আর যারা (আনুগত্য করা থেকে) ফিরে যাবে, আমি আপনাকে তাদের হিফাযতকারী হিসেবে পাঠাইনি। [সূরা নিসা শরীফ: ৮০]

অর্থাৎ যারা আনুগত্য না করে ফিরে যাবে তাদের কোনো দায়িত্ব গ্রহণ করা হবেনা। প্রসঙ্গত, পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে কয়েকজন লোক আসলেন, তিনি উনাদেরকে এক আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান আনার দাওয়াত দিলেন, (অতঃপর তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন)

قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتَدْرُوْنَ الْإِيْمَانُ بِاللَّهِ وَحْدَهُ قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ قَالَ شَهَادَةُ إِلَّا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. (متفق عليه)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আপনারা কি জানেন, এক আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান কি? (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম) উনারা বললেন, মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারাই সর্বাধিক জ্ঞাত। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, এক আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান হচ্ছে সাক্ষ্য দেয়া যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। [বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ]

অতএব, কেউ যদি শুধু "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" বলে তাহলে এক আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান আনা শুদ্ধ হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত "মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)" না বলবে। অনুরূপভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করা ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক উনার প্রকৃত আনুগত্য করাও হবে না।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ لَا يَسْمَعُ بِيْ أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الْأُمَّةِ يَهُودِي وَلَا نَصْرَانِي ثُمَّ يَمُوْتُ وَلَمْ يُؤْمِنُ بِالَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ إِلَّا كَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ. (رواه مسلم)

হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কসম। ঐ মহান আল্লাহ পাক উনার, যার কুদরতি হাত মুবারকে আমার প্রাণ মুবারক রয়েছে। এই উম্মতের যে কেউ হোক অথবা ইহুদী অথবা নাছারা যেই আমার কথা শুনে অতঃপর আমি যা নিয়ে এসেছি সে বিষয়ের প্রতি ঈমান না এনে মারা যায়; সে অবশ্যই জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ! [মুসলিম শরীফ]

মূলত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনা এবং উনাকে মুহাব্বত করে উনার আনুগত্য করা ব্যতীত কেউ মু'মিনে কামিল হতে পারবে না।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ. (متفق عليه)

হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে আমাকে তার নিজের পিতা-মাতা, সন্তান-সন্তুতি এমনকি সমস্ত মানুষ হতে অধিক মুহাব্বত না করবে। [বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ]

অপরদিকে যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে রসূল হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট থাকবে অর্থাৎ উনার আনীত দ্বীন ইসলাম উনার পরিপূর্ণ অনুসরণ করবে, সেই ব্যক্তিই ঈমান উনার স্বাদ লাভ করবে অর্থাৎ সে ব্যক্তিই মু'মিনে কামিল হতে পারবে।

এ প্রসঙ্গে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

عَنِ الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاقَ طَعْمَ الْإِيْمَانِ مَنْ رَضِيَ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَسُوْلًا . (رواه مسلم)

হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ঐ ব্যক্তিই ঈমান উনার স্বাদ পেয়েছে; যে ব্যক্তি মহান রব্বুল আলামীন উনাকে রব হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট রয়েছে, সম্মানিত ইসলাম উনাকে দ্বীন হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট রয়েছে এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে রসূল হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট রয়েছে।

[মুসলিম শরীফ]

উল্লেখ্য, যখন বলা হবে, 'মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি ঈমান আনলাম বা উনাদেরকে বিশ্বাস করলাম' তখন মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতিটি বিষয় বিনা চু-চেরায় মেনে নিতে হবে এবং সে বিষয়গুলোর উপর আমল করতে হবে। কেননা, মানুষ যখন কাউকে বিশ্বাস করে তখন (যাকে বিশ্বাস করে) সে ব্যক্তি যা বলে, সেটাই সে বিশ্বাস করে মেনে নেয়। যে বিষয় থেকে নিষেধ করে, সে বিষয় থেকে বিরত থাকে। সুতরাং যারা মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে বিশ্বাস করবেন, উনারা মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের তর্জ-তরীক্বা মুবারক ব্যতীত অন্য কারো তর্জ-তরীক্কা গ্রহণ করবেন না।

সত্য প্রকাশিত হওয়ার পর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের উভয়ের প্রতি ঈমান এনে উনাদের অনুসরণ করবে সে ইহকাল ও পরকালে ফায়দা লাভ করবে। আর যে উনাদের মধ্যে একজনকে অস্বীকার করবে, সে কুফরী করবে, ফলে তাকে জাহান্নামের আযাব ভোগ করতে হবে। নাউযুবিল্লাহ!

কুফরীর শাস্তি প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা কাহাফ শরীফ-এর ২৯ নং আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন,

وَقُلِ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّكُمْ فَمَنْ شَاءَ فَلْيُؤْمِنْ وَمَنْ شَاءَ فَلْيَكْفُرْ إِنَّا أَعْتَدْنَا لِلظَّالِمِينَ نَارًا أَحَاطَ بِهِمْ سُرَادِقُهَا ، وَإِنْ يَسْتَغِيْثُوْا يُغَاثُوْا بِمَاءٍ كَالْمُهْلِ يَشْوِي الْوُجُوهَ ، بِئْسَ الشَّرَابُ وَسَاءَتْ مُرْتَفَقًا (٢٩) سورة الكهف

আপনি বলুন, সত্য তোমাদের রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সুতরাং যার ইচ্ছা সে ঈমান আনুক আর যার ইচ্ছা সে কুফরী করুক। নিশ্চয়ই আমি যালিমদের জন্য জাহান্নামের আগুন প্রস্তুত করে রেখেছি। তাদেরকে আগুনের তাবু বেষ্টন করে নিবে। যখন তারা পানি চাবে, তাদেরকে (শাস্তির কারণে তাদের শরীর থেকে নির্গত) গলিত পুঁজের ন্যায় পানি দেয়া হবে। যা তাদের চেহারাকে জ্বালিয়ে দিবে। কতইনা নিকৃষ্ট পানীয় এবং কতইনা নিকৃষ্ট আবাসস্থল!

অর্থাৎ যারা কুফরী করবে, তারাই যালিম সাব্যস্ত হবে। তাদের জন্য থাকবে জাহান্নামে আগুনের তাবু। যখন তারা পানি চাবে, তখন আযাবের কারণে তাদের শরীর থেকে নির্গত গলিত পুঁজের ন্যায় পানি তাদেরকে দেয়া হবে। যা তাদের চেহারাকে জ্বালিয়ে দিবে। নাঊযুবিল্লাহ!

আর মু'মিনদের প্রতিদান সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন,

بَشِّرِ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أَنَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ (۲۵) سورة البقرة

আপনি উনাদেরকে সুসংবাদ প্রদান করুন যারা ঈমান এনেছেন এবং আমলে ছলেহ করেছেন। নিশ্চয়ই তাদের জন্য রয়েছে এমন জান্নাত যার নিম্নদেশ দিয়ে নহর প্রবাহিত হয়। [সূরা বাক্কারা শরীফ: ২৫]

কাজেই, সমস্ত উম্মাহর জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা ব্যতীত যা কিছু রয়েছে সবকিছুর মুহাব্বত ত্যাগ করে একমাত্র মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি হাক্বীক্বীভাবে ঈমান এনে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ আনুগত্য করা। তাহলেই হাক্বীক্বী মু'মিন হওয়া এবং দুনিয়া ও আখিরাতে খায়ের-বরকত, সম্মান-ইজ্জত, মুহাব্বত-মা'রিফত, কুরবত, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক হাছিল করা সম্ভব হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে মু'মিনে কামিল হওয়ার তাওফীক দান করুন। (আমীন)










0 Comments: