হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক । (পর্ব- ৪৮১-৫৮৪) (ছ)

ونعبده ونخلع ما كنا نعبد نحن واباؤنا من دونه من الحجارة والاوثان، وأمرنا بصدق الحديث وأداء الامانةوصلة الارحام وحسن الجوار والكف عن المحارم والدماء، ونهانا عن الفواحش وقول الزور وأكل مال اليتيم وقذف المحصنة، وأمرنا أن نعبد الله ولا نشرك به شيئا، وأمرنا بالصلاة والز كاة والصيام. قال  فعدوا عليه أمور الاسلامفصدقناه وامنا به واتبعناه على ماجاء به من عند الله، فعبدنا الله وحده لاشريك له ولم نشرك به شيئا، وحرمنا ماحرم علينا واحلنا ماأحل لنا، فعدا علينا قومنا
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে হযরত যিয়াদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন যে, হযরত জা’ফর ইবনে আবূ ত্বলিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আরো বলেন, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আদেশ করেন আমরা যেনো মহান আল্লাহ পাক উনার একত্ববাদ মেনে নেই। উনার ইবাদত বন্দেগী করি আর আমাদের পূর্বপুরুষরা যে মূর্তিপূজা ও পাথরপূজা করতো তা যেনো পরিহার করি। তিনি আমাদেরকে সত্য কথা বলার জন্যে, আমানত পরিশোধের জন্যে, আত্মীয়তা রক্ষার জন্যে, সৎ প্রতিবেশীর সাথে সুলভ আচরণ করার জন্যে এবং হারাম কাজ ও খুন-খারাবী থেকে বেঁচে থাকার জন্যে নির্দেশ দেন। অশ্লীলতা, মিথ্যাচার, ইয়াতীমের সম্পদ আত্মসাৎ, সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করতে তিনি বারণ করেন। তিনি আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন আমরা যেনো মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত করি। উনার সাথে কোনো কিছুকে শরীক না করি। নামায আদায় করি, যাকাত দেই এবং রোযা পালন করি।
বর্ণনাকারী বলেন, এভাবে ইসলামের বিধি-বিধানের কথা উনারা এক এক করে বাদশাহর নিকট পেশ করলেন। অতঃপর আমরা সেই আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সত্য বলে গ্রহণ করেছি। উনার প্রতি ঈমান আনয়ন করেছি। মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট থেকে তিনি যা নিয়ে এসেছেন আমরা তা অনুসরণ করি। এ প্রেক্ষিতে আমরা একক, অনন্য লা-শরীক মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত করতে থাকি। উনার সাথে কাউকে শরীক করা থেকে বিরত থাকি। তিনি আমাদের জন্যে যা হারাম বলে ঘোষণা করেছেন আমরা সেগুলোকে হারামরূপে বর্জন করতে থাকি এবং তিনি যা হালাল ঘোষণা দিয়েছেন তা হালালরূপে গ্রহণ করি। এ পরিস্থিতিতে আমাদের সম্প্রদায়ের লোকজন আমাদের শত্রু হয়ে উঠে।
فعذبونا ليفتنونا عن ديننا ويردونا الى عبادة الاوثان من عبادة الله، وأن نستحل ما كنا نستحل من الخبائث، فلما قهرونا وظلمونا وضيقوا علينا وحالوا بيننا وبين ديننا خرجنا الى بلادك واخترناك على من سواك ورغبنا فى جوارك ورجونا أن لانظلم عندك أيها الملك. قالت فقال حضرت النجاشى رحمة الله عليه هل معك شئ مما جاء به؟ وقد دعا اساقفته فأمرهم فنشروا المصاحف حوله. فقال له حضرت جعفر رضى الله تعالى عنه! نعم قال هلم فاتل على مما جاء به، فقرأ عليه صدرا من كهيعص فبكى والله حضرت النجاشى رحمة الله عليه حتى أخضلت لحيته وبكت أساقفته حتى أخضلوا مصاحفهم. ثم قال إن هذا الكلام ليخرج من المشكاة التى جاء بها حضرت موسى عليه السلام، انطلقوا راشدين لا والله لا أردهم عليكم ولا أنعمكم عينا.
আমাদেরকে আমাদের দ্বীন থেকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্যে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত ছেড়ে মূর্তিপূজায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে আমাদের উপর তারা যুলুম-নির্যাতন চালাতে থাকে। আমরা পূর্বে যেমন নাপাক ও অপবিত্র কাজগুলো হালাল মনে করতাম এখনো যেনো তা করি সে জন্যে তারা আমাদেরকে দুঃখ কষ্ট দিতে থাকে। তারা যখন আমাদের উপর যুলুম নির্যাতন চালালো আমাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুললো এবং আমাদের দ্বীন পালনে বাধা সৃষ্টি করলো তখন আমরা আপনার রাজ্যে হিজরত করে এসেছি। অন্য সকলের পরিবর্তে আপনাকেই আমরা বেছে নিয়েছি। অন্যদের পরিবর্তে আপনাকে প্রতিবেশী হিসেবে অগ্রাধিকর দিয়েছি। হে বাদশাহ! একান্ত আমাদের আশা যে, আপনার আশ্রয়ে আসার পর কেউ আমাদের উপর যুলুম-নির্যাতন করতে পারবে না।
রাবী বলেন, তখন হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আপনাদের রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা নিয়ে এসেছেন তার কোনো কপি বা অংশ আপনাদের নিকট আছে কি? ইতোমধ্যে তিনি উনার খ্রিস্টান পাদ্রীদেরকে ডেকে এনেছেন। উনার পাশে বসে তারা তাদের ধর্মগ্রন্থ খুলে বসলো। হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, হ্যাঁ, মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম পাকের কিছু আয়াত শরীফ রয়েছে। বাদশাহ তিনি বললেন, তা নিয়ে আসুন এবং আমাদেরকে তিলাওয়াত করে শুনান। হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ‘সূরা মারইয়াম’-এর শুরু থেকে কিছু অংশ তিলাওয়াত করলেন। তা শুনে হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কাঁদতে শুরু করলেন। চোখের পানিতে উনার দাঁড়ি মুবারক ভিজে গোলো। ধর্মযাজক তথা পাদ্রীরাও কেঁদে কেঁদে তাদের ধর্মগ্রন্থ ভিজিয়ে ফেললো। এবার বাদশাহ বললেন, এই কালাম নিশ্চয়ই সেই নূরময় বা জ্যোতির্ময় উৎস থেকে উৎসারিত হয়েছে, যেখান থেকে হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কালাম উৎসারিত হয়েছিলো। কুরাইশদের প্রতিনিধিদেরকে তিনি বললেন, তোমরা সোজা চলে যাও। আমি উনাদেরকে তোমাদের হাতে তুলে দিবো না এবং এ বিষয়ে আমি তোমাদেরকে খুশি করতে পারবো না।
فخرجنا من عنده وكان أبقى الرجلين فينا عبد الله بن ربيعة. فقال عمرو بن العاص والله لا تينه غدا بما استأصل به خضراء هم، ولأ خبرنه أنهم يزعمون ان إلهه الذى يعبد حضرت عيسى بن مريم عليه السلام عبد. فقال له عبد الله بن أبى ربيعة لاتفعل فانهم وان كانوا خالفونا فان لهم رحماولهم حقا. فقال والله لافعلن! فلما كان الغد دخل عليه فقال أيها الملك إنهم يقولون فى حضرت عيسى عليه السلام قولا عظيما، فارسل اليهم فسلهم عنه. فبعث والله اليهم ولم ينزل بنا مثلها، فقال بعضنا لبعض ماذا تقولون له فى حضرت عيسى عليه السلام ان هو يسألكم عنه؟ فقالوا نقول والله الذى قاله الله فيه، والذى أمرنا نبينا ان نقوله فيه فدخلوا عليه وعنده بطارقته فقال ما تقولون فى حضرت عيسى بن مريم عليه السلام؟ فقال له حضرت جعفر رضى الله تعالى عنه نقول هو عبد الله ورسوله وروحه وكلمته القاها الى مريم العذراء البتول. فدلى حضرت النجاشى رحمة الله عليه يده الى الارض فأخذ عودا بين أصبعيه فقال ماعدا حضرت عيسى بن مريم عليه السلام مما قلت هذا العويد.
 (বর্ণনাকারী বলেন) এরপর আমরাও ওখান থেকে বেরিয়ে এলাম। তাদের দু’জনের মধ্যে আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ রাবীয়া আমাদের প্রতি অনেকটা সহানুভূতিশীল ছিলো। এরপর আমর ইবনে আস বললো, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! পরের দিন আমি আবার বাদশাহর দরবারে যাবো এবং এমন একটি কাজ করবো যে, এই সবুজ শ্যামল দেশ থেকে আমি উনাদেরকে সমূলে উৎপাটিত করে দিবো। আমি বাদশাহকে বলবো, বাদশাহ যে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার ইবাদত আপনি করে থাকেন সেই নবী হযরত ঈসা আলাইহি সালাম উনাকে মুসলমানগণ ‘আবদ’ বলে বিশ্বাস করেন। আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ রবীয়া তাকে বললো তুমি এরূপ করো না। কারণ উনারা আমাদের বিরোধিতা করলেও উনারাতো আমাদের আত্মীয়। আমাদের উপর উনাদেরও একটা হক্ব রয়েছে। সে বললো, না, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমি ওই কাজ করবই।
পরের দিন আমর ইবনে আস সে বাদশাহর দরবারে উপস্থিত হয়ে বললো, বাদশাহ উনারা হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে গুরুতর কথা বলেন। উনাদেরকে ডেকে এনে হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে আক্বীদা বা বিশ্বাসের কথা জিজ্ঞেস করুন।
বাদশাহ পুনরায় আমাদের নিকট লোক পাঠালেন। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! এ সময়ে আমরা যে বিপদের সম্মুখীন হই ইতঃপূর্বে আর তেমনটি হইনি। আমরা একে অন্যকে বললাম, হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি যা বলেছেন এবং আমাদের রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদেরকে যা বলার নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা তাই বলবো। তখন উনারা সকলেই বাদশাহর নিকট গিয়ে উপস্থিত হলেন। উনার সেনাপতিরা তখন উনার পাশে উপবিষ্ট। আমাদের উদ্দেশ্যে তিনি বললেন, হযরত ঈসা রূহুল্লাহ ইবনে মারইয়াম আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে আপনারা কি বলেন? সবার পক্ষ থেকে হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, আমরা এটা বলি বা বিশ্বাস করি যে, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার আবদ, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল আলাইহিস সালাম। মহান আল্লাহ পাক উনার রূহ এবং মহান আল্লাহ পাক উনার কালিমা, সতী-সাধ্বী কুমারী মারইয়াম আলাইহাস সালাম উনার প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনাকে নিক্ষেপ করেছেন। এ কথা শুনে বাদশাহ হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি গত দিনের ন্যায় যমীনের দিকে হাত নামালেন এবং দু’আঙ্গুলের মাঝে একটি ছোট শুকনো কাষ্ঠখ- তুলে নিয়ে বললেন, আপনি হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে যা বলেছেন, হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তা থেকে আর বেশি কিছু নন।
فتناخرت بطراقته. فقال وان تناخرتم والله! اذهبوا فانتم سيوم فى الارضالسيوم الا منون فى الارض، من سبكم غرم، من سبكم غرم، ثلانا ماأحب أن لى دبرا وإنى اذيت رجلا منكموالدبر بلسانهم الذهب. وقال حضرت زياد رحمة الله عليه عن حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه ما احب أن لى دبرا من ذهب. قال حضرت ابن هشام رحمة الله عليه ويقال زبرا وهو الجبل بلغتهم. ثم قال حضرت النجاشى رحمة الله عليه فوالله ماأخذ الله منى الرشوة حين رد على ملكى، ولا أطاع الناس فى فاطيع الناس فيه. ردوا عليهما هداياهم فلا حاجة لى بها. واخرجا من بلادى فخرجا مقبوحين مردودا عليهما ماجابه. قالت فاقمنا مع خير جار فى خير دار،
বাদশাহর কথা শুনে সেনাপতিদের মধ্যে গুঞ্জরণ সৃষ্টি হয়। তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! তোমরা গুঞ্জরণ করো আর অসন্তুষ্ট হও আমি যা বলেছি তাই সঠিক। মুসলমানগণদের উদ্দেশ্য করে তিনি বললেন, আপনারা যেতে পারেন। এ রাজ্যে আপনারা সম্পূর্ণ নিরাপদ। কেউ আপনাদেরকে গালি দিলে জরিমানা দিতে হবে। কেউ আপনাদেরকে গালি দিলে জরিমানা দিতে হবে। কেউ আপনাদেরকে গালি দিলে জরিমানা দিতে হবে। একে একে তিনবার তিনি এ ঘোষণা দিলেন। আপনাদের কাউকে কষ্ট দিয়ে আমি স্বর্ণখ-ের অধিকারী হবো তা আমি পছন্দ করি না। হযরত ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে হযরত যিয়াদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বর্ণনায় আছে, আমি স্বর্ণের মালিক হই তা আমি পছন্দ করি না। ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, বাদশাহ তখন স্বর্ণখ-ের পরিবর্তে ‘স্বর্ণের পাহাড়’ শব্দ বলেছিলেন।
এরপর হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন আমাকে রাজত্ব ফিরিয়ে দিলেন, তখন তিনি আমার থেকে কোনো বিনিময় নেননি আর তখন লোকজন আমার আনুগত্য করেনি।
তাহলে আমি তাদের কথা মানতে যাবো কেন? তারপর তিনি উনার লোককে বললেন, কুরাইশ কাফির, মুশরিকদের প্রতিনিধিদের দেয়া উপঢৌকন সামগ্রী ফিরিয়ে দাও।
ওই সবের প্রয়োজন আমার নেই। আর তাদেরকে বলবে, আমার রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে। এরপর তারা যা নিয়ে এসেছিলো তাসহ ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে চলে গেলো। আমরা উত্তম দেশে উত্তম মানুষের প্রতিবেশী সেখানে বসবাস করতে থাকি।

فلم نشب أن خرج عليه رجل من الحبشة ينازعه فى ملكة، فوالله ما علمنا حزنا حزنا قط هو أشد منه، فرقا من أن يظهر ذلك الملك عليه فيأتى ملك لايعرف من حقنا ما كان يعرفه، فجعلنا ندعوا الله ونستنصره للنجاشى رحمة الله عليه فخرج اليه سائرا فقال أصحاب رسول الله صلى الله عليه بعضهم لبعض من يخرج فيحضر الوقعة حتى ينظر على من تكون؟ وقال حضرت الزبير رضى الله تعالى عنهوكان من أحدنهم سناأنا، فنفخوا له قربة فجعلها فى صدره، فجعل يسبح عليها فى النيل حتى خرج من شقه الا خر الى حيث التقى الناس، فحضر الوقعة فهزم الله ذلك الملك وقتله، وظهر حضرت النجاشى رحمة الله عليه. فجائا الزبير فجعل يليح لنا بردائه ويقول ألا فابشروا، فقد اظهر الله حضرت النجاشى رحمة الله عليه. قلت فوالله ما علمنا أننا فرحنا بشئ قط فرحنا بظهور حضرت النجاشى رحمة الله عليه ثم اقمنا عنده حتى خرج من خرج منا الى مكة، وأقام من أقام.
ইতোমধ্যে আবিসিনিয়ার জনৈক বিদ্রোহী ব্যক্তি হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রাজ্য কেড়ে নিতে উদ্যত হয়। এতে আমরা ভীষণ দুঃখ পাই। আমরা এ জন্যে শঙ্কিত হয়ে পড়ি যে, সে লোক যদি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়, তবে হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আমাদের যেরূপ ক্বদর করেছেন ওই ব্যক্তি তা নাও কারতে পারে। আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জন্যে দোয়া ও সাহায্য প্রার্থনা করতে থাকি। হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হলেন। আমরা আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করলাম যে, আমাদের মধ্য থেকে ঘটনাস্থলে কে যাবে এবং কে দেখবে কোন পক্ষ বিজয়ী হন। হযরত যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বয়স মুবারকে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন বটে। কিন্তু তিনি বললেন, আমি যাবো। উপস্থিত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা চামড়ার একটি মশক ফুলিয়ে উনার বুক মুবারকের নিচে বেঁধে দেন। ওই মশকে ভর করে সাঁতার দিয়ে তিনি নীল নদ পার হন। তিনি নদীর অপর তীরের যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে পৌঁছেন। শেষ পর্যন্ত রাজত্বের দাবিদার বিদ্রোহী লোকটি পরাস্ত ও নিহত হয়। হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিজয় লাভ করেন। হযরত যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ফিরে আসেন। দূর থেকে চাদর নেড়ে তিনি আমাদেরকে বিজয়ের সুসংবাদ জানিয়ে বলেন, সুসংবাদ গ্রহণ করুন, মহান আল্লাহ পাক তিনি  হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বিজয় দান করেছেন। আমি বললাম, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিজয়ে আমরা যা খুশি হয়েছিলাম অন্য কোনো বিষয়ে তেমন খুশি হয়েছি বলে আমাদের জানা নেই। এরপর আমরা সেখানে বসবাস করতে থাকি। ইতোমধ্যে আমাদের কেউ কেউ পবিত্র মক্কা শরীফ-এ ফিরে আসেন এবং কেউ কেউ ওখানে থেকে যান।
হযরত উরওয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন হযরত উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি আমাকে বলেছেন যে, হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পিতা আবিসিনিয়ার বাদশাহ ছিলেন। হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছাড়া উনার আর কোনো পুত্র ছিলেন না। বাদশাহর ভাই অর্থাৎ হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চাচার বারটি পুত্র সন্তান ছিলো। একবার আবিসিনিয়াবাসীদের এ ধারনার উদ্রেক হলো যে, হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তো উনার পিতার একমাত্র পুত্র আর বাদশাহর ভাইয়ের অধিক সন্তান। এজন্যে উচিত, বাদশাহকে হত্যা করে তার ভাই অর্থাৎ হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চাচাকে বাদশাহ বানানো, যাতে দ্বীর্ঘদিন পর্যন্ত এ বংশেই বাদশাহর ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। কাজেই তারা বাদশাহকে হত্যা করে বাদশাহর ভাইকে বাদশাহ বানালো। আর হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার চাচার তত্ত্বাবধানে এসে গেলেন। হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি খুবই বুদ্ধিমান ও সমঝদার ব্যক্তি ছিলেন। এ জন্যে চাচার দৃষ্টিতে হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার যে মর্যাদা রয়েছে অন্য কারো তা ছিলো না। সুযোগ এ পর্যন্ত পৌঁছলো যে, বাদশাহর প্রতিটি কাজেই হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অন্তর্ভুক্তি দেখা যেতে লাগলো। আবিসিনিয়াবাসী উনার বেমেছাল মেধা দেখে সন্দেহ পোষণ করছিলো যে, না জানি তিনি উনার পিতৃ হত্যার প্রতিশোধ নিয়ে নেন। এ জন্যে তারা বাদশাহর কাছে আবেদন জানালো যে, উনাকে হত্যা করা হোক। বাদশাহ বললেন, কাল তোমরা উনার পিতাকে হত্যা করেছ আর আজ উনার পুত্রকে হত্যা করতে বললে, এটা আমার দ্বারা সম্ভব নয়। বড়জোর এটা হতে পারে যে, উনাকে এখান থেকে পৃথক করে দেয়া যেতে পারে।
লোকেরা এটা অনুমোদন করলো এবং হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বাদশাহর নিকট থেকে নিয়ে এক ব্যবসায়ীর কাছে ছয়শত দিরহামে বিক্রি করে ফেললো। ব্যবসায়ী হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি উনাকে নিয়ে রওয়ানা হলো। সেই দিনের সন্ধ্যায়ই এক দুর্ঘটনা ঘটল যে, বাদশাহর উপর বজ্রপাত হলো। বাদশাহ বজ্রপাতের সাথে সাথেই মৃত্যুবরণ করলো, তখন লোকজনের মধ্যে হৈ চৈ পড়ে গেলো, এবার কাকে বাদশাহ বানানো যায়। বাদশাহর বারোটি পুত্রের মধ্যে কেউই মসনদে আরোহনের উপযুক্ত বলে মনে হলো না। প্রথম থেকে শেষেরটি পর্যন্ত সবাই ছিলো বোকা ও নির্বোধ। এতে লোকজন এ সিদ্ধান্ত নিলো যে, যদি দেশের কল্যাণ চাও তবে হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে খুঁজে এনে সিংহাসনে বসাও। জনগণ হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জন্যে ব্যবসায়ীর খোঁজে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়লো। তারা ওই ব্যবসায়ীর নিকট থেকে হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ফিরিয়ে এনে সিংহাসনে বসালো। সিংহাসনে আরোহনের পর ওই ব্যবসায়ী এসে প্রদত্ত মূল্য ফেরত চাইলো হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তাকে ছয়শত দিরহাম ফেরত দিয়ে দিলেন। হযরত উম্মুল মু’মিনীন ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কুরাইশ প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে করে বললেন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন আমাকে আমার রাজত্ব ফিরিয়ে দেন, তখন লোকজন তো মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য করেনি। এ কথা বলার উদ্দেশ্য ছিলো উক্ত ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত দেয়া।
হযরত উরওয়া ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত যে, হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বললেন, আমি মক্কা শরীফ-এর ওই কাফির মুশরিকদের কয়েকটি প্রশ্ন করতে চাই। আপনি তাদের থেকে এর উত্তর শুনে নিন,
১. আমরা কি কারো গোলাম যে, নিজেদের মালিক থেকে পলায়ন করে এসেছি? যদি এমনটি হয় তবে অবশ্যই আমরা ফিরিয়ে দেয়ার উপযুক্ত।
হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, এরা কি কারো গোলাম? হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন,
بل اجرار كرام
গোলাম নন, বরং উনারা মুক্ত এবং সম্ভ্রান্ত।’
২. হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বললেন, আপনি তাদের এটাও জিজ্ঞেস করুন যে, আমরা কি সেখানে কাউকে খুন করে এসেছি? যদি আমরা কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে এসে থাকি তাহলে আপনি নির্দ্বিধায় নিহতের অভিভাবকের হাতে আমাদেরকে সোপর্দ করুন।
হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
هل احرقوا دما بغيرحقه
এরা কি অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে এসেছে?’ হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন,
لاقطرة من دم
এক ফোটা রক্তও নয়।’
৩. হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বললেন, আপনি ওদেরকে এটাও জিজ্ঞেস করুন যে, আমরা কি কারো ধন-সম্পদ নিয়ে পালিয়ে এসেছি? অবশ্যই আমরা যদি কারো মাল নিয়ে এসে থাকি, তবে তা পরিশোধ করে দেয়ার জন্য আমি প্রস্তুত।
হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, যদি মুসলমানগণ কারো মাল-সম্পদ নিয়ে এসে থাকেন। তবে আমি উনাদের অভিভাবক ও যিম্মাদার হিসেবে তা পরিশোধের দায়িত্ব নিচ্ছি। হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন,
ولا قيراط
উনারাতো কারো এক কীরাত অর্থাৎ একটি পয়সাও নিয়ে আসেননি।’
হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কুরাইশ প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে বললেন, তা হলে তোমাদের উদ্দেশ্য কি?
হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন, আমরা এবং উনারা একই দ্বীনে বা ধর্মে ছিলাম। আমরা আমাদের ধর্মের উপর অটল রয়েছি আর উনারা একটি নতুন দ্বীন বা ধর্ম গ্রহণ করেছেন। (সীরাতুল মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১ম খ- ২৪০ ও ২৪১ পৃষ্ঠা)

উল্লেখ্য যে, হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বর্ণনায় আছে যে, কুরাইশ কাফির, মুশরিকদের প্রতিনিধি হিসেবে হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ রাবীয়াকে প্রেরণ করা হয়েছিলো। পক্ষান্তরে হযরত মূসা ইবনে উকবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত উমাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং অন্যান্যদের বর্ণনায় এসেছে যে, কুরাইশ মুশরিকদের প্রতিনিধি হিসেবে হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং আম্মারা ইবনে ওয়ালীদ ইবনে মুগীরাকে আবিসিনায়ায় প্রেরণ করেছিলো।
আবার কেউ কেউ বলেন, হিজরতকারী মুসলমানগণের ফেরত পাঠানোর জন্যে কুরাইশ কাফির মুশরিকরা দু’দফা হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলো। একবার পাঠিয়েছিলো হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও আম্মারা ইবনে ওয়ালীদকে। দ্বিতীয়বার পাঠিয়েছিলো হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও আব্দুল্লাহ ইবনে আবু রবীয়াকে। হযরত আবূ নায়ীম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘দালাইল’ গ্রন্থে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)
আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ কিতাবের ২য় জিলদ ৭৬ ও ৭৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
وقد ذكر حضرت زياد رحمة الله عليه عن حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه: أن أبا طالب لما رأى ذلك من صنيع قريش كتب إلى حضرت النجاشى رحمة الله عليه أبياتا يحضه فيها على العدل وعلى الاحسان إلى من نزل عنده من قومه:
অর্থ: হযরত ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে হযরত যিয়াদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উল্লেখ করেছেন যে, মুসলমানগণ উনাদের ফেরত আনার জন্যে কুরাইশ কাফির মুশরিকদের কূট-কৌশল, ধূর্ততা সম্বন্ধে জানার পর আবূ ত্বলিব তিনি হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট কয়েকটি কবিতার চরণ লিখে পাঠান। হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের নিকট হিজরতকারী ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি ইনসাফ প্রদর্শন ও সদয় আচরণ করার জন্যে তিনি উৎসাহিত করেন।
ক্বাছীদার চরণগুলো এই-
ألا ليت شعرى كسف فى النأى جعفر + وعمرو وأعداء العدو الاقارب
অর্থ : * আহ! আমি যদি জানতে পারতাম ওই দূর দেশে কেমন আছেন হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং কেমন আছেন আমার নিকটাত্মীয় শত্রুর শত্রুরা।
وما نالت افعال النجاشى جعفرا + وأصحابه أو عاق ذلك شاغت
* হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সদাচরণ ও সহানুভূতি কি হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও উনার সাথীগণদের নছীবে জুটেছে? নাকি কোনো বিরোধী পক্ষের ষড়যন্ত্র উনাদেরকে ওই সহানুভূতি থেকে বঞ্চিত করেছে।
نعلم ابيت اللمن أنك ماجد + كريم فلا يشقى اليك المجانب
* আমি জানি ‘আপনার জয় হোক’ আপনি একজন সম্মানিত ও মর্যাদাবান ব্যক্তি। দূর-দূরান্ত থেকে আগত পথিক আপনার নিকট থেকে দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হয় না।
ونعلم بان الله زادك بسطة + وأسباب خير كلها بك لازب
* আমি এও জানি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে শক্তি ও প্রাচুর্য দান ও অনুগ্রহ দানে ধন্য করেছেন এবং সর্ব প্রকার মঙ্গল ও কল্যাণ অর্জনের উপায় উপকরণ আপনার নিকট মওজুদ রয়েছে।
وعن حضرت يونس رحمة الله عليه عن حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه: حدثنى حضرت يزيد بن رومان رحمة الله عليه عن حضرت عروة بن الزبير رضى الله تعالى عنه- قال: إنما كان يكلم حضرت النجاشى رحمة الله عليه حضرت عثمان بن عفان عليه السلام، والمشهور أن حضرت جعفرا رضى الله تعالى عن هو حضرت المترج رضى الله تعالى عنه
অর্থ: হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে হযরত ইউনুস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেছেন যে, হযরত ইয়াযীদ ইবনে রূমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত উরওয়া ইবনে যুবাইর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কথাবার্তা বলেছিলেন হযরত উসমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে। তবে প্রসিদ্ধ মত হলো, তিনি কথা বলেছিলেন হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সঙ্গে।”
ثم إن حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه سرد الخارجين صحبة حضرت جعفر رضى الله تعالى عنه. وهم حضرت عمرو بن سعيد بن العاص رضى الله تعالى عنه وامرأته حضرت فاطمة بنت صفوان بن أمية بن محرث بن شق الكنانى رضى الله تعالى عنها. وأخود حضرت خالد رضى الله تعالى عنه. وامرأته حضرت أمينة بنت خلف بن أسعد الخزاعى رضى الله تعالى عنها. وولدت له بها حضرت سعيدا رضى الله تعالى عنه، وأمة التى تزوجها بعد ذلك حضرت الزبير رضى الله تعالى عنه، فولدت له حضرت عمرا رضى الله تعالى عنه وحضرت خالدا رضى الله تعالى عنه. قال وحضرت عبد الله بن جحش بن رئاب رضى الله تعالى عنه، وأخوه حضرت عبيد الله رضى الله تعالى عنه، ومعه امرأته حضرت أم حبيبة بنت أبى سفيان رضى الله تعالى عنها، وحضرت قيس بن عبد الله رضى الله تعالى عنه من بنى أسد بن خزيمة، وامرأته حضرت بركة بنت يسار رضى الله تعالى عنها مولاة حضرت أبى سفيان رضى الله تعالى عنه، وحضرت معيقيب بن أبى فاطمة رضى الله تعالى عنها. وهو من موالى سعيد بن العاص. قال حضرت ابن هشام رضى الله تعالى عنه وهو من دوس.
হযরত জা’ফর ইবনে আবূ ত্বলিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সঙ্গী হিসেবে যাঁরা আবিসিনিয়ায় হিজরত করেছিলেন, হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের নাম মুবারক উল্লেখ করেছেন। উনারা হলেন- হযরত আমর ইবনে সায়ীদ ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, উনার সহধর্মিনী হযরত ফাতিমা বিনতে সাফওয়ান ইবনে উমাইয়া ইবনে মুহরিছ ইবনে শাক আল কিনানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ভাই হযরত খালিদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত খালিদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আহলিয়া হযরত আমীনা বিনতে খালফ ইবনে আসয়াদ আল খুযায়ী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা, সেখানে উনাদের পুত্র সন্তান হযরত সায়ীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেন। উনার মাতা পরবর্তীতে হযরত যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বিবাহ করেন এবং উনার ঔরসে হযরত উমর ও হযরত খালিদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনারা বিলাদত শরীফ লাভ করেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জাহশ ইবনে রিয়াব রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু। উনার ভাই হযরত উবায়দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। উনার সাথে উনার সহধর্মিনী হযরত উম্মু হাবীবাহ বিনতে আবী সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, বনূ আসাদ ইবনে খুযাইমা গোত্রের হযরত কায়স ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। উনার আহলিয়া হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আযাদকৃত গোলাম হযরত বারকাহ বিনতে ইয়াসার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা। হযরত মুআইকীব ইবনে আবূ ফাতিমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যিনি ছিলেন সাইদ ইবনে আসের আযাদকৃত গোলাম। তবে হযরত হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত মু’আইকীব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ছিলেন দাওস গোত্রের। 

0 Comments: