সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে এলকোহল কি?


সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে এলকোহল
মুহম্মদ রুহুল হাসান

একজন ধার্মিক মাত্রেই এলকোহল ভীতি রয়েছে। এলকোহল বা মদ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে নিষিদ্ধ হবার পর থেকেই বিবেকবান মানুষের কাছে এটা পরিত্যাজ্য। কিন্তু এ এলকোহলের ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য কি? এলকোহল মাত্রেই কি হারাম! মদতো একটি বিশেষ শ্রেণীর এলকোহল। এ ছাড়াতোও রয়েছে অসংখ্য এলকোহল, তাহলে সব এলকোহলই কি হারাম? এ নিয়ে অসংখ্য প্রশ্ন আমাদের মনে। এলকোহল সম্পর্কে যাদের ধারণা নেই তাদেরতো কথাই নেই, যারা জানেন তাদের মনেও হাজারো প্রশ্নের উঁকি ঝুঁকি। সে কারণেই আমাদের এবারের আলোচনা ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে এলকোহল
রসায়নের দৃষ্টিতে এলকোহল হলো সে সব যৌগ, যা কিনা হাইড্রোকার্বনের এক বা একাধিক হাইড্রোজেন পরমাণুকে অনুরূপ সংখ্যক হাইড্রক্সিলমূলক দ্বারা প্রতিস্থাপিত করলে যা পাওয়া যায়। যেমন-
          (মিথেন) মিথাইল এলকোহল। (ইথেন) ইথাইল এলকোহল। (প্রোপেন) প্রোপোইল এলকোহল। মূলকের সংখ্যানুযায়ী এলকোহলকে আবার নীচের কয়েকটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। ১। মনোহাইড্রিক এলকোহল। ২। ডাইহাইড্রিক এলকোহল। ৩। ট্রাইহাইড্রিক এলকোহল। ৪। পলি হাইড্রিক এলকোহল।      
কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের সকল ক্ষেত্রেই --- বলতে ইথাইল এলকোহলকেই বোঝানো হয়েছে। অন্যান্য এলকোহলের ক্ষেত্রে তারা সম্পূর্ণ নাম ব্যবহার করলেও এলকোহলের আলোচনায় শুধুমাত্র ইথাইল এলকোহল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যার প্রমাণ
---
সুতরাং রসায়নের সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত এলকোহল হারাম হলে হারাম হবে গ্লিসারিন প্রোপাইলিন গ্লাইকল, ম্যানিটল ইত্যাদি। যেগুলো বহুদিন যাবৎ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা নয়। কেননা সেসব এলকোহলই হারাম বলে বিবেচিত হবে যেগুলোতে নেশাকর প্রকৃতি আছে এবং তা অল্পতেই হোক বা বেশীতেই হোক এবং তা এক ফোটাই হোক বা অধিক পরিমাণেই হোক। তাহলে এটা স্পষ্ট শরীয়ত নিষিদ্ধ করেছে যে, এলকোহল তা ইথাইল এলকোহল এবং ইথাইল এলকোহল সহযোগে প্রস্তুতকৃত দ্রব্যসমূহ। এটাও নিশ্চিত যে, নির্দিষ্ট মাপকাঠির বিচারে এ মদকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। যার উপস্থিতি অন্য কোন এলকোহলে পাওয়া গেলে তাও হারাম বলেই বিবেচিত হবে।
---- তে ইথাইল এলকোহল সম্পর্কে বলা হয়েছে,
---
এ ইথাইল এলকোহল বা ইথানল যা নেশাকর পাণীয়তে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, তা সামান্য পরিমাণও হারাম হিসেবে বিবেচিত হবে। শরীরের কোন স্থানে লাগলে তা নাপাকী হিসেবে শরীয়তে চিহ্নিত হবে। এরূপ অন্যকোন এলকোহল যা খাওয়ার উপযুক্ত বা অনুপযুক্ত কিন্তু তার বৈশিষ্ট্যে নেশাকর প্রকৃতি রয়েছে তাও ইথাইল এলকোহলের আইনের অন্তর্ভূক্ত।
          এখানে প্রশ্ন হতে পারে, খাওয়ার অনুপযুক্ত এলকোহল (যাতে নেশাকর প্রকৃতি আছে) কেন হারাম হবে। এর জবাব এভাবে দেয়া যেতে পারে, যদি কোন ফলের রসের সঙ্গে ইথাইল এলকোহল মেশানো হয়, তবে তা হারাম হবে। শুধু ইথাইল এলকোহল হারাম বলে ঠিক তেমনি কোন বিষাক্ত দ্রব্যের সঙ্গে ইথাইল এলকোহল মেশালে তা খাওয়ার অনুপযুক্ত হলেও যদি তাতে ইথাইল এলকোহলের মূল বৈশিষ্ট্য আবিকৃতই থেকে যায়। তবে তা হারাম এবং নাপাকী হিসেবে ধরা হবে। বাজারে অনেক প্রিপারেশনে ইথাইল এলকোহল ব্যবহৃত হলেও ইথাইল এলকোহলকে ব্যবহারের পূর্বে পানের অনুপযুক্ত করে নেয়া হয়। একে ডিনেচারড এলকোহল বলে।
---
এ বলা হয়েছে,
---
সাধারণত দুধরণের ডিনেচারড এলকোহল ব্যবহৃত হয়। একটিকে বলা হয়,
---
এক্ষেত্রে একটি বিষয় স্পষ্ট হওয়া উচিত তা হচ্ছে- এ সকল এলকোহল কখনও সরাসরি কখনও বা প্রসেসিং-এ ব্যবহৃত হয়। যেমন পেকটিন, ভিটামিন্স, হরমোন্স এন্টিবায়োটিক, এলকালয়েড এবং ব্লাড প্রোডাক্ট প্রভৃতি দ্রব্য প্রসেসিং এ ও.ঊ ইফডমদমফ ব্যবহৃত হয় কিন্তু মূল পদার্থে ইফডমদমফ এর কোন উপস্থিতি থাকে না। সুতরাং সেগুলো হারামও নয়, নাপাকীও নয়। কিন্তু যেখানে এর বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে যেমন ক্লিনিং সলিউশন, ভিনেগার, ---- ইত্যাদির ব্যবহার জায়েয কিন্তু নাপাকীর হুকুমের আওতাভূক্ত। যে সকল ---- বা --- ব্যবহৃত হবে, সে সকল ফ্লেভার কাপড়ে লাগলে তাও নাপাকীর হুকুমের অন্তর্ভূক্ত হবে।           মিথাইল এলকোহল প্রসঙ্গে জানা যায় যে, এর সামান্য পরিমাণ নেশা সৃষ্টিকারক বৈশিষ্ট্য আছে। যদিও এটা অতিমাত্রায় বিষাক্ত বলে খাওয়ার অনুপযুক্ত। মিথাইল এলকোহল প্রসেঙ্গ -

---

          মিথাইল এলকোহল প্রয়োগে মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে পারে। দেখা গেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার সামরিক বাহিনীর ছয় ভাগ লোকের অন্ধত্বের কারণ ছিল মিথানল। মিথাইল এলকোহলের এই নেশাকর প্রভাবের জন্য এটি
---
এর আইনের অন্তর্ভূক্ত। অর্থাৎ ব্যবহারযোগ্য কিন্তু নাপাকের হুকুম বর্তাবে, যেমন বার্নিশ স্পিরিট। এছাড়া এমাইল এলকোহল, বেনজাইল এলকোহল, আইসো প্রোপাইল এলকোহল, ফার্মাসিউটিক্যাল প্রিপারেশন্স এবং কমার্শিয়ালি ব্যবহৃত হলেও এদের
-----
হিসেবে কোন বৈশিষ্ট্য নেই। সুতরাং এমনি যে সকল এলকোহলে মাদকতার বৈশিষ্ট্য নেই সেগুলো ব্যবহারযোগ্য এবং নাপাকীর হুকুম থেকেও মুক্ত, কিন্তু পানের অনুপযুক্ত। যেমন জঁন হিসেবে
---

। সুতরাং --- মাত্রই আবার নাপাকও নয়। এ ব্যাপারে আমাদের ধারণাকে স্পষ্ট রাখা উচিত। তবে তাকওয়া অর্জনকারীদের মূল বৈশিষ্ট্য হবে সন্দেহজনক বস্তু থেকে রিবত থাকা 
আবা-১৩

0 Comments: