সম্মানিত যাকাত কাকে দিবেন। পর্ব-১৪


No photo description available.সম্মানিত যাকাত কাকে দিবেন
মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত যাকাত পাওয়ার হক্বদারদের ব্যাপারে অর্থাৎ যে খাতে যাকাতের অর্থ ব্যয় করা ফরয সে খাতগুলো সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّـمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِيْنِ وَالْعَامِلِيْنَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوْبُـهُمْ وَفِي الرّقَابِ وَالْغَارِمِيْنَ وَفِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَابْنِ السَّبِيْلِ ط فَرِيْضَةً مّنَ اللهِ ط وَاللهُ عَلِيْمٌ حَكِيْمٌ.
অর্থ : “নিশ্চয়ই সম্মানিত যাকাত কেবল ফক্বীর, মিসকীন ও সম্মানিত যাকাত আদায়কারী কর্মচারীদের জন্যে, যাদের মন আকর্ষণ করা প্রয়োজন তাদের জন্যে অর্থাৎ নও মুসলিমের জন্য, গোলাম বা বাঁদীদের মুক্তির জন্য, ঋণে জর্জরিত ব্যক্তিদের ঋণমুক্তির জন্য, মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় জিহাদকারী এবং মুসাফিরদের জন্য। এটা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্ধারিত বিধান এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।” (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৬০)
যাকাত পাওয়ার হক্বদারদের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা :
১. ফক্বীর : ফক্বীর ওই ব্যক্তি যার নিকট খুবই সামান্য সহায় সম্বল আছে।
২. মিসকীন : মিসকীন ওই ব্যক্তি যার আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি এবং আত্মসম্মানের খাতিরে কারো কাছে হাত পাততে পারে না। আবার কেউ কেউ ফক্বীরকে মিসকীন এবং মিসকীনকে ফক্বীর অর্থে উল্লেখ করেছেন।
৩. আমিল বা সম্মানিত যাকাত আদায় ও বিতরণের কর্মচারী।
৪. মন জয় করার জন্যে নও মুসলিম : অন্য ধর্ম ছাড়ার কারণে পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিকভাবে বঞ্চিত হয়েছে। অভাবে তাদের সাহায্য করে পবিত্র ইসলামে সুদৃঢ় করা।
৫. ঋণমুক্তির জন্যে : জীবনের মৌলিক বা প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্যে সঙ্গতকারণে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিদের ঋণ মুক্তির জন্যে সম্মানিত যাকাত আদায় করা যাবে।
৬. গোলাম বা বাঁদী মুক্তি : কৃত গোলাম বা বাঁদী মুক্তির জন্য।
৭. ফী সাবীলিল্লাহ বা জিহাদ : পবিত্র দ্বীন ইসলাম যমীনে কায়িম বা বিজয়ী করার লক্ষ্যে যারা কাফির বা বিধর্মীদের সাথে জিহাদে রত সে সকল মুজাহিদদের প্রয়োজনে সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে এবং তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করার কাজেও ব্যয় করা যাবে।
৮. মুছাফির : মুছাফির অবস্থায় কোন ব্যক্তি বিশেষ কারণে অভাবগ্রস্ত হলে ওই ব্যক্তির বাড়িতে যতই ধন-সম্পদ থাকুক না কেন তাকে সম্মানিত যাকাত আদায় করা যাবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : সম্মানিত আওলাদুর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা অভাবগ্রস্ত হলে উনাদের জন্যে যাকাত, ফিত্বরা ইত্যাদি গ্রহণ যদিও জায়িয নেই। তারপরও উলামায়ে মুতাআখখেরীন উনাদের ফতওয়া মুতাবিক ক্ষেত্র বিশেষে জায়িয রয়েছে। তথাপি উম্মতের জন্যে করণীয় হচ্ছে উক্ত দান-ছদক্বার পরিবর্তে উনাদেরকে হাদিয়া মুবারক করা। এটা উম্মতের জন্যে দুনিয়া ও আখিরাতে কামিয়াবী ও সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের সর্বোত্তম উসীলা।
খাতসমূহের মধ্যে যাদেরকে যাকাত দেয়া অধিক উত্তম :
সম্মানিত যাকাত প্রদানের আট প্রকার খাতের মধ্যে তিন প্রকার খাতে সম্মানিত যাকাত দেয়া উত্তম। যেমন,
১। নিকটতম গরীব আত্মীয়-স্বজন : নিকটতম গরীব আত্মীয়-স্বজন যদি তাদের আক্বীদা, আমল বিশুদ্ধ থাকে। তা খেয়ে পরে যদি মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া আদায় করে। এর ব্যতিক্রমধর্মী ব্যক্তিকে সম্মানিত যাকাত দিলে তা আদায় হবে না। যদিও নিকটতম গরীব আত্মীয়-স্বজন হোক না কেন।
২। গরীব প্রতিবেশী : এ ক্ষেত্রেও উক্ত ১নং শর্তের অনুরূপ।
৩। গরীব ত্বলিবুল ইলম : যারা দ্বীনি ইলম্ অন্বেষণ করে। তাদেরকে সম্মানিত যাকাত দেয়া অতি উত্তম এবং অধিক ফযীলতের কারণ। তবে এ ক্ষেত্রেও উক্ত ১নং শর্তের অনুরূপ শর্তের ভিত্তিতে তাদেরকেও যাকাত দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে একদশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ, আফদ্বালুল আউলিয়া, ক্বইয়্যুমে আউওয়াল, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহ তিনি উনার মাকতুবাত শরীফ-এ উল্লেখ করেন সম্মানিত যাকাত আদায়ের খাতসমূহের মধ্যে গরীব ত্বলিবুল ইলম্দের সম্মানিত যাকাত, ফিত্বরা, উশর, মান্নত, কুরবানীর চামড়া বা চামড়ার টাকা দেয়া সর্বত্তোম এবং বেশি ছাওয়াব ও ফযীলত অর্জিত হবে।
ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে যে সমস্ত খাতগুলো যাকাত আদায়ের খাত নয় :
১. নিছাব পরিমাণ মালের অধিকারী বা ধনী ব্যক্তিকে সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে না। এদেরকে সম্মানিত যাকাত দিলে আবার তা নতুন করে আদায় করতে হবে।
২. মুতাক্বাদ্দিমীন অর্থাৎ পূর্ববর্তী আলিমগণ উনাদের মতে কুরাঈশ গোত্রের বনু হাশিম উনাদের বংশধরের জন্যে সম্মানিত যাকাত গ্রহণ বৈধ নয়। তবে মুতাআখখিরীন অর্থাৎ পরবর্তী আলিমগণ উনাদের মতে বৈধ।
৩. সম্মানিত যাকাত অমুসলিম ব্যক্তিকে দেয়া যাবে না।
৪. যে সমস্ত মাদরাসায় ইয়াতীমখানা ও লিল্লাহ বোডিং আছে সেখানে সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে এবং যে সমস্ত মাদরাসায় লিল্লাহ বোডিং নেই সেখানে সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে না।
৫. দরিদ্র পিতামাতাকে এবং উর্ধ্বতন পুরুষ অর্থাৎ দাদা-দাদী, নানা-নানীকে সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে না।
৬. আপন সন্তানকে এবং অধঃস্তন পুরুষ অর্থাৎ নাতি-নাতনীদেরকে সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে না।
৭. আহাল-আহলিয়া (স্বামী-স্ত্রী) পরস্পর পরস্পরকে সম্মানিত যাকাত দিতে পারবে না।
৮. প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ইয়াতীমখানা লিল্লাহ বোডিংয়ের জন্যে সম্মানিত যাকাত আদায়কারী নিযুক্ত হলে তাকে সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে না।
৯. উপার্জনক্ষম ব্যক্তি যদি উপার্জন ছেড়ে দিয়ে সম্মানিত নামায-রোযা ইত্যাদি নফল ইবাদতে মশগুল হয়ে যায় তাকে সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে না। তবে সে যদি উপার্জন না থাকার কারণে সম্মানিত যাকাত পাওয়ার উপযুক্ত হয় তবে যাকাত দেয়া যাবে।
১০. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের অনুযায়ী যারা আমল করেনা অর্থাৎ যারা পবিত্র শরীয়ত উনার খিলাফ আমল ও আক্বীদায় অভ্যস্ত তাদেরকে সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে না।
১১. যারা সম্মানিত যাকাত গ্রহণ করে উক্ত যাকাতের টাকা দিয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নাফরমানীমূলক কাজে মশগুল হয় তাদেরকে সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে না।
যেমন এ প্রসঙ্গে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
تَعَاوَنُوْا عَلَى الْبِرِّوَالتَّقْوٰى ۖ وَلَا تَعَاوَنُوْا عَلَى الْاِثْـمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ
অর্থ : “আপনারা নেকী ও পরহেযগারী কাজে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করুন এবং পাপ ও সীমালঙ্ঘন কাজে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করবেন না।” (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২)
১২. বেতন বা ভাতা হিসেবে নিজ অধীনস্ত ব্যক্তি বা কর্মচারীকে সম্মানিত যাকাত উনার টাকা দেয়া যাবে না।
১৩. যাদের আক্বীদা ও আমল আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াত বহির্ভুত তাদেরকে সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে না। যারা হারাম কাজে অভ্যস্ত তাদেরকেও সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে না।
১৪. জনকল্যাণমূলক কাজে ও প্রতিষ্ঠানে সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে না। যেমন : আমভাবে লাশ বহন ও দাফন, রাস্তা-ঘাট নির্মাণ, সেতু নির্মাণ, হাসপাতাল নির্মাণ, বৃক্ষরোপন, পানির ব্যবস্থাকরণ ইত্যাদি জাতীয় প্রতিষ্ঠানে সম্মানিত যাকাত দেয়া যাবে না।
যাকাত প্রদান করুন


মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা উনার একাউন্ট নাম্বার সমূহ-

Account no.1
Muhammadia Jamia Shareef Madrasa & yatimkhana

A/C-200007569
Sonali Bank Limited, Malibag Branch
Dhaka, Bangladesh



Account no.2
name:-MD. Mufizul Islam

A/C-1020335489001 Naya-paltan branch
IFIC Bank Limited, Dhaka, Bangladesh
Swift Code: IFICBDDH



Account no.3
name:-MD. Mufizul Islam

A/C-108101277050 Shantinaghar branch
Dutch Bangla Bank Limited, Dhaka, Bangladesh
Swift Code: DBBLBDDH



Account no.4
Dutch Bangla mobile Banking-017187407422

Account no.5
Bkash-(parsonal) 01718740742, 01876043934, 01990770065
Bkash-(Agent)- 01709672605



0 Comments: