মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্যসমূহ- খেজুর-আযওয়া খেজুর , খুরমা ও নাবীয

মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্যসমূহ- খেজুর-আযওয়া খেজুর , খুরমা ও নাবীয

৩১. খেজুর (تَـمْرٌ) তামর

খেজুর একটি তাল (Palm) জাতীয় ফল। যা মরুভূমি অঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। বিশেষভাবে পবিত্র মদীনা শরীফ খেজুরের জন্য বিখ্যাত।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْـقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ‏‏‏ بَـيْتٌ لَا تَـمْرَ فِيْهِ جِيَاعٌ أَهْلُهٗ

অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ঘরে খেজুর নেই, সেই ঘরের অধিবাসীগণ ক্ষুধার্ত অর্থাৎ সেই ঘরে যেন কোন খাবারই নেই।” (আবূ দাঊদ শরীফ: হাদীছ শরীফ নং ৩৮৩১)

অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ‏‏‏ يُـفْطِرُ قَـبْلَ اَنْ يُصَلِّيَ عَلٰى رُطَبَاتٍ فَإِنْ لَـمْ تَكُنْ رُطَبَاتٌ فَـتُمَيْـرَاتٍ فَإِنْ لَـمْ تَكُنْ تُـمَيْـرَاتٌ حَسَا حَسَوَاتٍ مِنْ مَّاءٍ‏.

অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নামায আদায়ের আগে কিছু তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার মুবারক করতেন। যদি তাজা খেজুর উপস্থিত না থাকতো, শুকনা খেজুর দিয়ে ইফতার মুবারক করতেন। যদি শুকনা খেজুরও উপস্থিত না থাকতো, কয়েক চুমুক পানি পান করে নিতেন।” (তিরমিযী শরীফ: কিতাবুছ ছওম: হাদীছ শরীফ নং ৬৯৬)

বিভিন্ন পর্যায়ের খেজুর:

বালাহ: সাধারণভাবে কাঁচা বা সবুজ খেজুরকে বালাহ (بلح) বলে।

বুসর: খেজুর পাঁকার পূর্বের অবস্থাকে বুসর (بسر) বলে।

রুত্বাব: পাঁকা খেজুরকে রুত্বাব (رُطَبٌ) বলে। পাঁকা খেজুর (رُطَبٌ) প্রসঙ্গে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

وَهُزِّيْٓ اِلَيْكِ بِـجِذْعِ النَّخْلَةِ تُسَاقِطْ عَلَيْكِ رُطَبًا جَنِيًّا

অর্থ: “আর আপনি (হযরত উম্মু রূহিল্লাহ আলাইহাস সালাম) নিজের দিকে খেজুর গাছের কাণ্ডে নাড়া দিন, তা থেকে আপনার উপর সুপক্ক খেজুর পতিত হবে।” (পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৫)

শুকনা খেজুর বা খুরমা: খেজুরকে শুকানো হলে শুষ্ক হয়ে যায়, একে খুরমা (تـمر) বলে।

বিভিন্ন প্রকারের খেজুর:

গুচ্ছ খেজুর: মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَالنَّخْلَ بَاسِقَاتٍ لَّـهَا طَلْعٌ نَّضِيْدٌ

অর্থ: “এবং লম্বমান খেজুর বৃক্ষ, যাতে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ খেজুর।” (পবিত্র সূরা ক্বফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১০)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

وَزُرُوْعٍ وَنَـخْلٍ طَلْعُهَا هَضِيْمٌ

অর্থ: “শস্যক্ষেত্রের মধ্যে এবং মঞ্জুরিত খেজুর বাগানের মধ্যে।” (পবিত্র সূরা শু‘য়ারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪৮)

প্রায় ১০০০ ধরণের খেজুর আছেতার মধ্যে বরনী খেজুর, আযওয়া খেজুর, মরিয়াম খেজুর, আম্বার খেজুর বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য

৩১(১) বরনী খেজুর (اَلْبَـرْنِـيْ): পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضرَتْ اَبِىْ سَعِيْدِنِ الْـخُدْرِيَّ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ جَاءَ حَضرَتْ بِلَالٌ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ اِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِتَمْرٍ بَـرْنِـيٍّ فَـقَالَ لَهٗ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ اَيْنَ هٰذَا قَالَ حَضرَتْ بِلَالٌ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ كَانَ عِنْدَنَا تَـمْرٌ رَدِيٌّ فَبِعْتُ مِنْهُ صَاعَيْنِ بِصَاعٍ لِنُطْعِمَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَـقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَ ذَلِكَ اَوَّهْ اَوَّهْ عَيْنُ الرِّبَا عَيْنُ الرِّبَا لَا تَـفْعَلْ وَلٰكِنْ اِذَا اَرَدْتَ اَنْ تَشْتَرِيَ فَبِعِ التَّمْرَ بِبَـيْعٍ اٰخَرَ ثُـمَّ اشْتَرِهٖ

অর্থ : “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি কিছু বরনী খেজুর (উন্নত মানের খেজুর) নিয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুবারক খিদমতে আসেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন, এগুলো কোথায় পেলেন? হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, আমাদের কাছে কিছু নিকৃষ্ট মানের খেজুর ছিল। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে পেশ করার উদ্দেশ্যে তা দুই ছা’ বিনিময়ে এক ছা’ কিনেছি। এ কথা শুনে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হায়! হায়! এটাতো একেবারে সূদ! এটাতো একেবারে সূদ! এরূপ করো না। যখন আপনি উৎকৃষ্ট খেজুর কিনতে চান, তখন নিম্নমানের খেজুর ভিন্নভাবে বিক্রি করে দিন। তারপর সেই মূল্যের বিনিময়ে উৎকৃষ্ট খেজুর কিনে নিন।” (বুখারী শরীফ: কিতাবুল ওয়াকিলাত: হাদীছ শরীফ নং ২৩১২)

খেজুরের উপকারিতা: খেজুরের অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। যেমন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি গর্ভধারিনী মায়েদের খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عَلِيِّ بْنِ اَبِـيْ طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَطْعِمُوْا نِسَاءَكُمُ الْوُلَّدَ الرُّطَبَ فَاِنْ لَـمْ يَكُنْ رُطَبٌ فَالتَّمْرُ وَلَيْسَ مِنَ الشَّجَرِ اَكْرَمُ عَلَى اللهِ مِنْ شَجَرَةٍ نَزَلَتْ تَـحْتَهَا مَرْيـَمُ بِنْتُ عِمْرَانَ عَلَيْهَا السَّلَامُ.

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের সন্তান-সম্ভবা আহালিয়াদেরকে তাজা খেজুর খাওয়াও৷ যদি তাজা খেজুর পাওয়া না যায় তাহলে অন্তত খুরমা যেন খেতে দেয়া হয়৷ জেনে রেখো, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সেই বৃক্ষের চেয়ে উত্তম কোন বৃক্ষ নেই, যে বৃক্ষের নীচে হযরত উম্মু রূহিল্লাহ আলাইহাস সালাম তিনি অবতরণ করেছিলেন৷” (আবূ ইয়ালা শরীফ ১ম খণ্ড ৩৫৩ পৃষ্ঠা: হাদীছ শরীফ নং ৪৫৫; তাফসীরে ইবন আবী হাতিম: সূরা মারইয়াম; তাফসীরে ইবনে কাছির ৫ম খণ্ড ২২৫ পৃষ্ঠা; হিলইয়াতুল আউলিয়া ৬ষ্ঠ খণ্ড ১২৩ পৃষ্ঠা)

মূলত খেজুর মায়ের বুকের দুধের পুষ্টিগুণ আরও বাড়িয়ে দেয় এবং শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অন্তঃসত্ত্বা নারীর সন্তান জন্মের সময় জরায়ুর গোশতপেশির দ্রুত সংকোচন-প্রসারণ ঘটিয়ে, সন্তান ভূমিষ্ঠ হতে সাহায্য করে। এবং প্রসব-পরবর্তী কোষ্ঠকাঠিন্য ও রক্তক্ষরণ কমিয়ে দেয়।

১. শিশুদের রোগবালাই প্রতিরোধে: শিশুদের জন্যও খেজুর খুব উপকারী। খেজুর শিশুদের মাড়ি শক্ত করতে সাহায্য করে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডায়রিয়াও প্রতিরোধ করে।

২. ক্যান্সার প্রতিরোধ: খেজুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং প্রাকৃতিক আঁশে পূর্ণ। এক গবেষণায় দেখা যায়, খেজুর পেটের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। আর যাঁরা নিয়মিত খেজুর খান, তাঁদের বেলায় ক্যান্সারের ঝুঁকিটাও অনেক কম থাকে।

৩. মুটিয়ে যাওয়া রোধে: মাত্র কয়েকটি খেজুর খাওয়ার ফলে শরীরের এমন পুষ্টি যোগায় যা ক্ষুধার তীব্রতা কমিয়ে দেয় এবং পাকস্থলীকে কম খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। এই কয়েকটি খেজুরই কিন্তু শরীরের প্রয়োজনীয় শর্করার ঘাটতি পূরণ করে।

৪. হাড় গঠনে: ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়ক। আর খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, যা হাড়কে মজবুত করে।

৫. হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়াতে: খেজুর হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। তাই যাদের হৃদপিণ্ড দুর্বল, খেজুর হতে পারে তাদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ওষুধ।

৬. অন্ত্রের গোলযোগ রোধে: অন্ত্রের কৃমি ও ক্ষতিকারক পরজীবী প্রতিরোধে খেজুর অনেক সহায়ক এবং খেজুর অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরী করে।

৭. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে: খেজুর দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। সেই সঙ্গে রাতকানা রোগ প্রতিরোধেও খেজুর সহায়ক। তাই চোখের সমস্যায় ভোগা রোগীরা খেজুর খেতে পারেন।

৮. কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে: খেজুরে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ, যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে।

৯. সংক্রমণ প্রতিরোধে: যকৃতের সংক্রমণে খেজুর উপকারী। এ ছাড়া গলা ব্যাথা, বিভিন্ন ধরণের জ্বর, সর্দি এবং ঠান্ডায় খেজুর উপকারী।

১০. বিষক্রিয়া রোধে: খেজুর অ্যালকোহলজনিত বিষক্রিয়া প্রতিরোধে বেশ উপকারী। ভেজানো খেজুর খেলে বিষক্রিয়া প্রতিরোধে দ্রুত কাজ করে।

এছাড়াও খেজুরে রয়েছে আরো কিছু্ উপকারিতা-

১. খেজুরে খাদ্য শক্তি থাকায় শারীরিক দূর্বলতা দূর হয়।

২. স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধি করে।

৩. খেজুরে অনেক গ্লুকোজ থাকায় গ্লুকোজের ঘাটতি পূরণ হয়।

৪. রক্ত উৎপাদনকারী।

৫. হজম শক্তি বর্ধক, যকৃৎ ও পাকস্থলীর শক্তিবর্ধক।

৬. রুচি বাড়ায়।

৭. ত্বক ভালো রাখে।

৮. আঁশ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্যকারী।

৯. পক্ষঘাত এবং সব ধরণের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য উপকারী।

১০. ফুসফুসের সুরক্ষার পাশাপাশি মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধ করে।

১১. গলা ব্যাথা, সর্দি ও যেকোন জ্বরে খেজুর খুবই উপকারী।

  ৩১(২) আযওয়া খেজুর

আযওয়া খেজুরের কার্যকারিতা: পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আযওয়া খেজুরের কার্যকারীতা সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ عَامِرُ بْنُ سَعْدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ اَبِيْهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ‏‏‏ مَنْ تَصَبَّحَ كُلَّ يَـوْمٍ سَبْعَ تَـمَرَاتٍ عَجْوَةً لَـمْ يَضُرُّهٗ فِيْ ذٰلِكَ الْيَوْمِ سُمٌّ وَلَا سِحْرٌ.‏‏‏‏

অর্থ: “হযরত ‘আমির ইবনে সা‘দ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সে দিন বিষ এবং জাদু তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ: কিতাবুত ত্বয়ামাহ: হাদীছ শরীফ নং ৫৪৪৫)

হৃদরোগে: হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন,

قَالَ مَرِضْتُ مَرَضًا أَتَانِيْ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ‏‏‏ يَعُوْدُنِيْ فَـوَضَعَ يَدَهٗ بَيْنَ ثَدْيَـىَّ حَتّٰى وَجَدْتُ بَـرْدَهَا عَلٰى فُـؤَادِيْ فَـقَالَ اِنَّكَ رَجُلٌ مَفْئُـوْدٌ اِئْتِ حَضْرَت الْـحَارِثَ بْنَ كَلَدَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اَخَا ثَقِيْفٍ فَاِنَّهٗ رَجْلٌ يَـتَطَـبَّبُ فَلْيَأْخُذْ سَبْعَ تَـمَرَاتٍ مِنْ عَجْوَةِ الْمَدِيْـنَةِ فَلْيَجَأْهُنَّ بِنَـوَاهُنَّ ثُـمَّ لِيَـلُدَّكَ بِـهِنَّ.‏

“একদা আমি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে দেখতে তাশরীফ মুবারক নিলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নূরুল মাগফিরাহ মুবারক (হাত মুবারক) উনার শীতলতা আমার অন্তর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি হৃদরোগে আক্রান্ত। হযরত হারিস ইবনে কালাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যিনি সাক্বিফী গোত্রের ভাই, উনার কাছে যান। কারণ তিনি একজন চিকিৎসক। তিনি যেন পবিত্র মদীনা শরীফ উনার সাতটি আজওয়া খেজুর নিয়ে বিচিসহ পিষে আপনার মুখে ঢেলে দেন।(আবূ দাঊদ শরীফ: কিতাবুত ত্বিব: হাদীছ শরীফ নং ৩৮৭৫)

বিষক্রিয়া বন্ধে: আজওয়া খেজুর বিষের কার্যক্ষমতা কমাতে বিশেষভাবে কার্যকর। এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـيْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ‏‏‏ ‏‏الْعَجْوَةُ مِنَ الْـجَنَّةِ وَفِيْـهَا شِفَاءٌ مِنَ السُّمِّ‏‏.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আজওয়া সম্মানিত জান্নাত উনার ফল। এর মধ্যে বিষের নিরাময় রয়েছে।” (তিরমিযী শরীফ: কিতাবুত ত্বিব: হাদীছ শরীফ নং ২০৬৬)

শক্তি বর্ধনে: আযওয়া খেজুর শারীরিক ও মানসিক শক্তিবর্ধক। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য উপাদান যা শারীরিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধিসহ হজম শক্তি, শারীরিক শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে।

ডায়রিয়া বন্ধে: আযওয়া খেজুরে বিদ্যমান পটাশিয়াম, সোডিয়াম, জিংক ও অন্যান্য খনিজ লবণ ডায়রিয়া বন্ধে উপকারী। এটা খাদ্যশক্তি শারীরিক দুর্বলতা দূর করে। এ ছাড়াও খেজুরের বীজ ডায়রিয়া, আমাশয় বন্ধে কার্যকর।

ব্যাথানাশক: ibuprofen, aspirin, celebrex Ges naproxen এর উপাদান। এতে এন্টি-অক্সিডেন্টের উপাদানও রয়েছে।

ক্যান্সার নিরাময়ে: আযওয়া খেজুরে রয়েছে cyclo-oxygenase উপাদান, যা মরনঘাতক ক্যান্সার নিরাময়ে অধিকতর সহায়ক।

এছাড়া সাধারণ খেজুরেও রয়েছে ক্যালসিয়াম, সালফার, আয়রন, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি-৬, ফলিক এসিড, আমিষ, শর্করাসহ রোগ নিরাময়ক অতীব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।


৩২. খুরমা (تَـمْرَةٌ) তামরাহ্

খুরমা বিষয়ে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

وَثَـبَتَ عَنْهُ اَكَلَ التَّمَرَ بِالزَّبَدِ وَاَكَلَ التَّمَرَ بِالْـخُبْزِ وَاَكَلَهٗ مُفْرَدًا

অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুষ্ক খেজুর (খুরমা) মাখনের সাথে, রুটি দিয়ে এবং কোন কিছু ছাড়া অর্থাৎ শুধু খুরমা আলাদাভাবে খেয়েছেন। (যাদুল মা’য়াদ ৪র্থ খণ্ড ২৬৩ পৃষ্ঠা)

বিবাহ-শাদীতে খুরমা ছিটানো সুন্নত। সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এ প্রসঙ্গে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتِ الْـحَسَنِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَنَّهُ كَانَ لَا يَرَى بَأْسًا بِالنِّثَارِ فِي الْعُرُسَاتِ وَالْوَلَائِمِ.

অর্থ: “হযরত হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত যে, তিনি বিবাহ ও অলীমা অনুষ্ঠানে খাবার ছিটিয়ে বিতরণ করাকে আপত্তিকর মনে করতেন না অর্থাৎ বৈধ মনে করতেন।” (ইবনে আবী শায়বা শরীফ: হাদীছ শরীফ নং ২১১১৮)

৩৩. নাবীয (نَبِيْذٌ)

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অত্যন্ত প্রিয় পানীয় হচ্ছে নাবীয।

নাবীয সম্পর্কিত কতিপয় পবিত্র হাদীছ শরীফ এখানে পেশ করা হলো-

عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْـقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ اَنَّـهَا كَانَتْ تَـنْبِذُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غُدْوَةً فَاِذَا كَانَ مِنَ الْعَشِيِّ فَـتَـعَشّٰى شَرِبَ عَلٰى عَشَائِه وَاِنْ فَضَلَ شَىْءٌ صَبَـبْـتُهٗ اَوْ فَـرَغْتُهٗ ثُـمَّ تَـنْبِذُ لَهٗ بِاللَّيْلِ فَاِذَا اَصْبَحَ تَـغَدّٰى فَشَرِبَ عَلٰى غَدَائِه قَالَتْ نَـغْسِلُ السِّقَاءَ غُدْوَةً وَعَشِيَّةً فَـقَالَ لَـهَا اَبِـيْ مَرَّتَـيْنِ فِيْ يَـوْمٍ قَالَتْ نَـعَمْ‏.‏

অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সকালে নাবীয তৈরী করতেন। যখন রাত হতো তিনি তা পান করতেন। যদি কোন কিছু অবশিষ্ট থাকতো তাহলে তা রেখে দিতাম অথবা ফেলে দিতাম। অতঃপর তিনি রাতে নাবীয তৈরী করতেন। যখন সকাল হতো তিনি তা পান করতেন। ‘উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি সকাল-সন্ধ্যায় নাবীয পাত্র ধুয়ে নিতাম। হযরত মুকাতিল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার পিতা উনার খিদমতে প্রশ্ন রাখেন, দৈনিক দুইবার? তিনি জওয়াব মুবারক দিয়ে বলেন, হ্যাঁ।” (আবূ দাঊদ শরীফ: কিতাবুশ শারাবাহ: হাদীছ শরীফ নং ৩৭১২)

শাহিদুন নবী, মুত্তালা আলাল গ্বইব, হায়াতুন নবী, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তৈরীকৃত নাবীয কতো দিন পর্যন্ত পান করতেন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ كَانَ يُـنْـبَذُ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَـيَشْرَبُهٗ يَوْمَهٗ ذٰلِكَ وَالْغَدَ وَالْيَـوْمَ الثَّالِثَ فَاِنْ بَقِيَ مِنْهُ شَىْءٌ اَهْرَاقَهٗ اَوْ اَمَرَ بِه فَاُهْرِيْقَ.

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য নাবীয তৈরী করা হতো এবং তিনি তা ওই দিন অথবা পরের দিন সকাল অথবা তৃতীয় দিন পর্যন্ত পান করতেন। তৃতীয় দিন পান করার পর এর কিছু অংশ অবশিষ্ট থাকলে তিনি তা ঢেলে ফেলে দিতেন অথবা ঢেলে ফেলার নির্দেশ মুবারক দিতেন।” (ইবনে মাজাহ শরীফ: কিতাবুশ শারাবাহ: হাদীছ শরীফ নং ৩৩৯৯)

 নাবীয তৈরীতে সতর্কতা বিষয়ে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـيْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ‏ لَا تَـنْبِذُوا التَّمْرَ وَالْبُسْرَ جَـمِيْـعًا وَانْبِذُوْا كُلَّ وَاحِدٍ مِنْـهُمَا عَلٰى حِدَتِه‏‏

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা কাঁচা খেজুর ও শুকনা খেজুর একত্রে ভিজিয়ে নাবীয তৈরী করো না, তবে এর প্রতিটি পৃথকভাবে ভিজিয়ে নাবীয তৈরী করতে পারো।” (ইবনে মাজাহ: কিতাবুশ শারাবাহ: হাদীছ শরীফ নং ৩৩৯৬)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـيْ سَعِيدٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ اَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ‏ نَـهَى عَنِ الْبُسْرِ وَالتَّمْرِ اَنْ يُـخْلَطَ بَيْنَهُمَا وَنَـهَى عَنِ الزَّبِيْبِ وَالتَّمْرِ اَنْ يُـخْلَطَ بَيْنَهُمَا.

অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (নাবীয বানানোর উদ্দেশ্যে) কাঁচা ও পাকা খেজুর একসাথে মিশাতে নিষেধ করেছেন। আর তিনি কিশমিশ ও পাকা খেজুর একসাথে মিশাতেও নিষেধ করেছেন।” (তিরমিযী শরীফ: কিতাবুশ শারাবাহ্: হাদীছ শরীফ নং ১৮৭৭)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ بُـرَيْدَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ اَبِيْهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ‏ نَـهَيْـتُكُمْ عَنْ ثَلَاثٍ وَاَنَا اٰمُرُكُمْ بِـهِنَّ نَـهَيْـتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ الْقُبُـوْرِ فَـزُوْرُوْهَا فَاِنَّ فِيْ زِيَارَتِـهَا تَذْكِرَةً وَنَـهَيْـتُكُمْ عَنِ الْاَشْرِبَةِ اَنْ تَشْرَبُـوْا اِلَّا فِيْ ظُرُوْفِ الْاَدَمِ فَاشْرَبُـوْا فِيْ كُلِّ وِعَاءٍ غَيْـرَ اَنْ لَا تَشْرَبُـوْا مُسْكِرًا وَنَـهَيْـتُكُمْ عَنْ لُـحُوْمِ الْاَضَاحِيْ اَنْ تَأْكُلُوْهَا بَعْدَ ثَلَاثٍ فَكُلُوْا وَاسْتَمْتِعُوْا بِـهَا فِيْ اَسْفَارِكُمْ‏.‏

অর্থ: “হযরত ইবনে বুরাইদাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তোমাদেরকে তিনটি বিষয় হতে বিরত থাকতে বলেছিলাম। এখন আমি সেসব বিষয়ে তোমাদেরকে অনুমতি দিচ্ছি। আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা তা যিয়ারত করো। কেননা তা যিয়ারতে (মৃত্যুকে) স্মরণ হয়। আমি তোমাদেরকে পানপাত্র সম্পর্কে নিষেধ করেছিলাম যে, তোমরা চামড়ার পাত্রে নাবীয পান করবে। এখন তোমরা যে কোন পাত্রে পান করতে পারো। কিন্তু তোমরা কখনও মাদক দ্রব্য পান করো না। আমি তোমাদের উপর কুরবানীর গোশতের ব্যাপারে তা তিন দিনের পর না খেতে বলেছিলাম। এখন তোমরা তা (দীর্ঘদিন) খেতে পারো এবং তোমাদের সফরে তা কাজে লাগাতে পারো।” (আবূ দাঊদ: কিতাবুশ শারাবাহ: হাদীছ শরীফ নং ৩৬৯৮)

নাবীয প্রস্তুত প্রণালী

উপাদান: ১. খেজুর (৫০০ গ্রাম)/কিশমিশ এবং ২. পানি

তৈরীর পদ্ধতি: খেজুরের বিচি ফেলে ১০-১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর পানি থেকে খেজুর আলাদা করতে হবে। খেজুরের এই পানি-ই হচ্ছে নাবীয।

৩৩(১) নাবীয চা বা খুরমা চা: খুরমা চূর্ণকে পানিতে মিশ্রিত করে পরিমাণমত জাল দিয়ে নবীয চা তৈরী করা হয়।

নির্দেশিকা: গরম পানিতে খুরমা চূর্ণ মিশিয়ে পানির সাথে মিশে যাওয়া পর্যন্ত নাড়তে হবে। চুলা থেকে নামিয়ে চায়ের কাপে পরিবেশন করা যাবে। চিনির প্রয়োজন হবে না। সব বয়সের মানুষ এবং রোগীরাও পান করতে পারে।

উপকারিতা: হাড় ও পেশীর ব্যাথা উপশম করে, শক্তিবর্ধক, পাকস্থলীর এসিডিটি দূর করে, হজমশক্তি বৃদ্ধি করে, শরীর থেকে বিপাকীয় বর্জ্য বের করে দেয়, স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করেমনমরা ভাব দূর করেলিভার, গলা, বুক, প্রোস্টেটের জন্য উপকারী। এনথ্রাইটিস ও ইউরিক এসিডের রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী।



0 Comments: