বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া ( ৪ নং )

তারাবিহ ২০ রাকাত
পিডিএফ লিংক - https://drive.google.com/open?id=1a1HeE3IicD8BG6kLtzUs7G88JJAPC8aR

বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া ( ৪ নং ) 
বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায ও তার সংশ্লষ্টি বিষয় সর্ম্পকে ফতওয়া
গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ
( পূর্ব প্রকাশিতের পর )

          [ সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আ’লামীন উনার এবং অসংখ্য দরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। মহান আল্লাহ্ পাক উনার অশেষ রহ্মতে আমাদের গবেষণা কেন্দ্র, “মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ”-এ ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে, বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে টুপির ফতওয়া, অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান, নিয়ত করে মাযার শরীফ জিয়ারত করা, ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া, জুমুয়ার নামায ফরজে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া, মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া, কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ফরজ নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ইনজেকশন নেয়া রোজা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া প্রকাশ করার পর দ্বাদশ ফতওয়া হিসাবে ২৫তম সংখ্যা হতে তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া প্রকাশ করে আসতে পারায় মহান আল্লাহ্ পাক উনার দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া।]

বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীলসমূহ

(১৭৫)

والذى صح انهم كانوا يقومون على عهد عمر بعشرين ركعة ..... وقال ابن حجر وقول بعض ائمتنا انه صلى بالناس عشرين ركعة لعله اخذه مما فى مصنف بن ابى شيبة- انه كان يصلى فى رمضان عشرين ركعة سوى الوتر- ومما رواه البيهقى- انه صلى بهم عشرين ركعة بعشر تشليمات ليتينولم يخرج فى الثالث- لكن روايتان ضعيفتان رفى صحيح ابن خزيمة وابن حبان- انه صلى بهم ئمان ركعات والوتر- لكن اجمع الصحابة على ان التراويح عشرون ركعة= مرقاة المفاتيح شرح مشكوة المصابيح ج صفه ১৯৪.

অর্থঃ- সহীহ্ মত হলো- হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ, হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েন। .... আর ইব্নে হাজর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমাদের কোন কোন ইমামের বক্তব্য হলো- নিশ্চয়ই হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, লোকদের নিয়ে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েন। সম্ভবতঃ উহা গ্রহণ করা হয়েছে, নিম্নোক্ত হাদীছ শরীফদ্বয়ের উপর ভিত্তি করে, যা মুছান্নেফ ইব্নে আবী শায়বায় বর্ণিত আছে, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- রমযান মাসে বিত্র ব্যতীত বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েন এবং যা বায়হাক্বী বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয়ই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুই রাত্র দশ সালামে বিশ রাকায়াত নামায পড়েন, তৃতীয় রাত্রে বের হননি। কিন্তু উল্লিখিত বর্ণনাদ্বয় জঈফ। আর সহীহ্ ইব্নে খোযায়মাহ্ ও ইব্নে হাব্বানে বর্ণিত আছে যে, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকলকে নিয়ে আট রাকায়াত নামায পড়েন। কিন্তু বিশ রাকায়াতের উপরই হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনার ইজ্মা (ঐক্যমত) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ্ শরহে মিশকাতুল মাছাবীহ্ ৩য় জিঃ পৃষ্ঠা-১৯৪)

          মিরকাত শরীফ’-এর উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, বিখ্যাত মুহাদ্দিস, হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতেও তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত।

(১৭৬-১৮২)



ঊদূ লেখা ঢুকবে.....................................................................................

অর্থঃ- তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত হওয়ার ব্যাপারে সকল ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ একমত হয়েছেন। যেমন- মিরকাত, আশয়াতুল লুম্য়াত ইত্যাদি কিতাবে উল্লেখ আছে। তাছাড়াও তিবরানী, বায়হাক্বী, ইব্নে আবী শায়বা, ইমাম বাগবী ও মালেক প্রমুখ ইমামগণ (উনাদের কিতাবে) হযরত ইব্নে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, সাইব ইব্নে ইয়াযীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, ইয়াযীদ ইব্নে রোমান রহমতুল্লাহি আলাইহি, উবাই ইব্নে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও আবু আব্দুর রহ্মান সালামী হতে (বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায) বর্ণনা করেন। বরং তিব্রানী, বায়হাক্বী আব্দ ইব্নে হুমাইদ, ইবনে আবী শায়বা ও অন্যান্যগণ, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণনা করেন যে, স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিত্র ব্যতীত বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়তেন। যদিও উক্ত হাদীছ শরীফ উনার রাবীগণ উনাদের মধ্যে হযরত ওসমান ইব্নে ইব্রাহীম (কারো কারো মতে) ছেক্কাহ্ রাবী নন, কিন্তু যেহেতু ওসমান ইব্নে ইব্রাহীম রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমামে আযম, হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অনেক পরে জন্মগ্রহণ করেন, সেহেতু উক্ত হাদীছ শরীফ, ইমামে আ’যম, হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট সহীহ্ হিসাবেই এসেছে। পরবর্তী রাবীর দুর্বলতা। পূর্ববর্তীগণের জন্যে কোন প্রকার ক্ষতির কারণ নয়। (মিরআতুল মানাজীহ্ শরহে মিশকাতুল মাফাতীহ্ ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-২৯৩)

(১৮৩) ঊদূ লেখা ঢুকবে.....................................................................................



অর্থঃ- সুতরাং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এগার রাকায়াত নামাযও পড়েন, যা তাঁর তাহাজ্জুদ নামাযে পড়ার অভ্যাস ছিল। তবে উক্ত রেওয়ায়েতকে বলা হয়েছে। কেননা ছহীহ্ মত হলো- হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়া হতো। (আশয়াতুল লোময়াত শরহে মিশকাত ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৫৪৭)

(১৮৪)

ঊদূ লেখা ঢুকবে.....................................................................................

অর্থঃ- আলিমগণ লিখেন যে, সহীহ্ভাবে পৌঁছেছে যে, হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর খিলাফতকালে লোকেরা বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়তেন। (মোযাহেরে হক্ব শরহে মিশকাত ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৪২১)

(১৮৫-১৯০)



ঊদূ লেখা ঢুকবে.....................................................................................



অর্থঃ- কিন্তু, ইমাম আ’যম, আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম আহ্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট তারাবীহ নামায বিশ রাকায়াত। কাজী আয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন যে, জমহুর আলেমগণের মায্হাব অনুযায়ী তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত। এটার প্রমান হলো- যা বায়হাক্বী সহীহ্ সনদে হযরত সাইব ইব্নে ইয়াযীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণনা করেন- তিনি বলেন, সকলেই হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার সময় বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়তেন। অনুরূপ হযরত ওসমান আলাইহিস সালাম উনার ও হযরত আলী  আলাইহিস সালাম উনার সময়ও বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়তেন। অতএব, উক্ত হাদীছ শরীফ দ্বারাও বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায প্রমাণিত হলো। ....... ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইস্হাক রহমতুল্লাহি আলাইহি, যিনারা বিশ রাকায়াত ব্যতীত অন্য মতকে গ্রহণ করেছেন, তার জবাব হলো এই যে, সকল ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, তাবেয়ীন রহমতুল্লাহি আলাইহিগণের শেষ আমল নিয়মিত বিশ রাকায়াতের উপরই ছিল, তাই বিশ রাকায়াতের মতটি অগ্রগণ্য ও গ্রহণযোগ্য। অনুরূপ বর্ণনা- আইনী, বজলুল মাজহুদ, ফতহুল বারী, তা’লীকুল হাসান ও বাদায়েতে রয়েছে। (তান্যীমুল আশতাত্ শরহে মিশ্কাত ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-২৪০)

(১৯১-১৯২)

ويكفينا ما رواه اليهقى فى المعرفه باسناد صحيح عن سائب بن يزيد قال- كنا تقوم فى زمن عمر بن الخطاب بعشرين ركعة والوتر فهذا كالا جماع من غير منكر فى هذا لا جماع وقدورد عليكم بسنتى وسنة الخلفاء الراشدين بعدى- ثم الظاهر من كلام ابن عباس انه صلى الله عليه وسلم كان يصلى عشرين ركعة فى ليالى رمضان من ادلها وكلام عائشة مشير الى صلوة التهد كما بينته بقولها يصلى اربعا..... طحاوى شرح معانى الاثار ج صفه ২০৬.

অর্থঃ- আমাদের নিকট (বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের) দলীলের জন্যে ইহাই যথেষ্ট, যা বায়হাক্বী সহীহ্ সনদে হযরত সাইব ইব্নে ইয়াযীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন- আমরা হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার খিলাফতকালে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েছি ও বিত্র পৃথক আদায় করেছি। আর এটাই মূলতঃ ইজ্মা, এ ইজ্মার বিরোধিতা কেউ করেননি। তাছাড়া হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “তোমাদের জন্যে আমার সুন্নত ও আমার পর খোলাফা-ই-রাশেদীন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণের সুন্নত অবশ্য পালনীয়।” অতঃপর হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত হাদীছ শরীফ, “নিশ্চয় সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রমযান মাসে রাত্রি বেলায় বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়তেন।” এটা তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত হওয়ার একটি স্পষ্ট দলীল। আর হযরত আশেয়া সিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, (আট রাকায়াতের) হাদীছ শরীফ দ্বারা তাহাজ্জুদ নামাযের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। যেমন তিনি বলেন, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উহা চার চার রাকায়াত করে পড়তেন। (তাহাবী শরহে মায়ানিয়িল আছার ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-২০৬)

          উপরোক্ত কিতাবের বর্ণনা দ্বারাও প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযান মাসে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়তেন এবং বিশ রাকায়াতের উপরই হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণের ইজ্মা (ঐক্যমত) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর সাথে সাথে এটাও প্রমাণিত হলো যে,  হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহিস সালাম উনার হতে বর্ণিত, আট রাকায়াতের বর্ণনাটি তাহাজ্জুদ নামাযের সাথে সম্পৃক্ত।

(১৯৩)

لم يقل احد من الائمة الاربعة باقل من عشرين ركعة واليه جمهور الصحابة= تقرير الترمذى المعروف بعرف الشذى جصفه ৩২৯.

অর্থঃ- চার ইমাম তথা ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম আহ্মদ ইব্নে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহিগণ উনাদের কেউ বিশ রাকায়াতের কম তারাবীহ্ নামাযের কথা বর্ণনা করেননি। আর জমহুর ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণের মতও বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের পক্ষে। (তাকরীরুত তিরমিযী আল মা’রুফ বিউরফিশ শাযী ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৩২৯)

          উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, চার মায্হাবের ইমামগণের মতে তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত। অর্থাৎ উনারা তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত হওয়ার ব্যাপারে একমত।

(১৯৪)

والر واياب فى هذا الباب كشيرة صريحة فى ان النبى صلى الله عليه وسلم- صلاها- والصحابة كانوا يصلونها اوزاعا متفر قين من زمائه صلى الله عليه وسلم- الى زمان عمرين الخطاب ثم استقر امر فى خلافته على عشرين ركعة ..... قال فى حواشى والروضة فقد واظبت الصحابة على فعلها كذالك من عهد عمرين المطاب ولم يخالف احد منهم ذالك فصار اجماعا- ولا تحبتمع الصحابة على امر الا اذا كان معلوما لد يهم فعله صلى الله عليه وسلم- فمستند الاجماع فعله صلى الله عليه وسلم. (اوجز المسالك شرح مؤطا مالك ج صفه ২৯৮)

অর্থঃ- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তারাবীহ্ নামায আদায় করার ব্যাপারে (তারাবীহ্-এর) অধ্যায়ে বহু ছরীহ্ বর্ণনা রয়েছে এবং হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যামানা হতে হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার যামানা পর্যন্ত তারাবীহ্ নামায পৃথক পৃথকভাবে আদায় করেন। অতঃপর হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে (তারাবীহ্ নামাযের জামায়াত) বিশ রাকায়াত নির্ধারিত হয় এবং হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার যামানা হতে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নিয়মিতভাবে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায আদায় করে আসছেন। উনাদের মধ্য হতে একজনও বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের বিরোধিতা করেননি। সুতরাং বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের উপর ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। আর হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারা এরূপ কোন কাজের উপর ইজমায় উপনিত হননা, যে কাজের স্বপক্ষে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হতে কোন প্রকার প্রমাণ পাওয়া যায়না। অতএব, বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের উপর হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদের ইজমা, এ কথাই প্রমাণ করে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েছেন। (আওযাযুল মাসালিক শরহে মুয়াত্তায়ে মালিক ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-২৯৮)

(১৯৫-১৯৯)

وقيل عشرون وحكاه الترمذى عن اكشر اهل العلم وروى عن عمر رضى الله عنه وعلى رضى الله عنه وغير هما من الصحابة وهو قول اصحابنا الحنفية- قلت- بل هو قول الائمة الاربعة- قال العينى- واما القائلونبه من التابعين- فشتير بن شكل وابن ابى مليكه والحارث الهمدانى وعطاءبن رباح وابو البخترى وسعيد بن ابى الحسن اخوالحسن البصرى وعبد الر حمنبن ابوبكر- وعمران العبدى- قال اين عبد البر هو قول جمهور العلماء- ربه قال الكوفيون والشافعى واكثر الفقهاء وهو الصحيح ... ثم قال والمختار عند ابى عبد الله فيها عشرون ركعة وبهذا قال الثورى وابو حنيفة والشافعى- اوجز المسالك شرح مؤطا امام مالك ج صفه ৩০৩ وكذا فى عمدة القارى شرح البخارى تحفة الاحوذى شرح الترمذى، المفنى لابن القدامة اعلاء السنن.

অর্থঃ- ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি অধিকাংশ আলেমগণ হতে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের কথা বর্ণনা করেন। যা হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম, হযরত আলী আলাইহিস সালাম ও অন্যান্য ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদের হতে বর্ণিত হয়েছে। আর আমাদের হানাফী ইমামগণ উনাদের বক্তব্যও এটাই, অর্থাৎ তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত। আমি বলি, বরং ওটা চার ইমামগণেরই মত বা বক্তব্য। আল্লামা আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তাবেয়ীন রহমতুল্লাহি আলাইহিগণ উনাদের মধ্য হতে হযরত শুতাইর ইব্নে শেকাল, ইব্নে আবী মুলাইকাহ্, হারিছুল হাম্দানী, আ’তা ইব্নে রিবাহ্, আবুল বোখতারী, সাঈদ ইব্নে আবিল হাসান যিনি হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ভাই, আব্দুর রহ্মান ইব্নে আবু বকর এবং ইমরানুল আব্দী রহমতুল্লাহি আলাইহিগণ উনার বক্তব্য বা মত বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের পক্ষে। হাফিজুল হাদীছ, ইব্নে আব্দুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, জমহুর আলেম, কুফাবাসী আলেম, শাফেয়ী ও অধিকাংশ ফক্বীহ্গণর বক্তব্য হলো- তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত, আর এটাই ছহীহ্ মত। .............

তিনি আরো বলেন, তারাবীহ্ নামাযের ব্যাপারে হযরত আবু আব্দুল্লাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট বিশ রাকায়াতের মতটিই গ্রহণযোগ্য। ইমাম সুফিয়ান ছাওরী, ইমামে আযম, হযরত আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতেও তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত। (আওযাযুল মাসালিক শরহে মুয়াত্তায়ে মালিক ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-৩০৩ = অনুরূপ ওমদাতুল ক্বারী, তোহ্ফাতুল আহ্ওয়াযী, আল্ মুগনী ও ই’লাউস্ সুনানে কিছু বর্ণনা উল্লেখ আছে।

২০০)

فيصلى بهم اى بالناس امامهم خمس ترويحات الترويحات جمع ترويحة وكذالك الشراويح وهى فى الاصل اسم للجلسة وسميت لالتراويح با ستراحة اناس بعد اربع وكعات لا لجلسة ثم يسميت كل اربع رككعات تروبحة مجازا ........ فى كل تروبحة تسليمات- فيصير الجملة عشرين ركعة وهو مذهبنا وبه قال الشافعى واحمد ونقله القاضى عن جمهور العلماء= البناية فى شرح الهداية المعروف العينى شرح الهداية جصفه ৮৬৭.

অর্থঃ- ইমাম সাহেব মুছল্লীদের সাথে পাঁচ তারবীহা (বিশ রাকায়াত) নামায পড়বে। আত্ তারবীহাত বহুবচন হলো তারবীহাতুন এর। অনুরূপ তারাবীহ্ মূলতঃ জল্সা বা বিশ্রাম নেওয়ার নাম। অতঃপর প্রতি চার রাকায়াত পর পর লোকেরা বসে বিশ্রাম নেয় বিধায় উহাকে তারাবীহ্ বলে। আর প্রতি চার রাকায়াত নামাযকে এক তারবীহা বলে। ........ প্রত্যেক তারবীহাতে দুই সালাম। সুতরাং তারাবীহ্ নামায মোট বিশ রাকায়াত সাব্যস্ত হলো। আর এটাই আমাদের মায্হাব, অনুরূপ ইমাম শাফিয়ী ও আহ্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহিও (বিশ রাকায়াতের) প্রবক্তা। ইমাম ক্বাজ্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি ইহা জমহুর আলেমগণ হতে বর্ণনা করেন। (আল বেনায়া ফী শরহিল হেদায়াহ্ আল মারুফুল আইনী ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৮৬৭)

২০১-২০২)

وفى جامع الجوامع- التراويح سنة مؤكدة ومن لم يرها سنة فهو رافضى يقاتل كمن لم يرالجماعة- وقال اهل السنة والجماعة انها سنة رسول ل الله صلى الله عليه وسلم فعلها ئلاث ليال وقالت الروافض انها سنة عمر رضى الله عنه وقد صلاها رسول الله صلى الله عليه وسلم عشرين ركعة بعشر تسليمات= الفتاوى التاتار خانية ج صفه ৬৫৩.

অর্থঃ- “জামিউল জাওয়ামে” নামক কিতাবে উল্লেখ আছে যে, তারাবীহ্ নামায পড়া সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্। যে ব্যক্তি এটাকে সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্ মনে করেনা সে ব্যক্তি রাফেজী, সে কতলের উপযুক্ত। যেমন জামায়াতকে সুন্নত বলে অস্বীকারকারী কতলের উপযুক্ত। আহ্লে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মতে তারাবীহ্ নামায সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত, তিনি তা তিন রাত্র জামায়াতে পড়েন। আর রাফেজীদের মতে ওটা হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার সুন্নত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তারাবীহ্ নামায দশ সালামে বিশ রাকায়াত আদায় করেন। (ফতওয়ায়ে তাতার খানিয়াহ্ ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৬৫৩)

(২০৩)

سن التراريح عشرين ركعة بعد العشاء قبل الوتر وبعده خمس ترويحات لكل ترويحة تسليمات وجلسة بعد هما قدر ترويحة= (شرح الوقاية ج صله ১৪৬)

অর্থঃ- এশার নামাযের পর বিত্র নামাযের পূর্বে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়া সুন্নত করা হয়েছে। অর্থাৎ পাঁচ তারবীহাত, প্রত্যেক তারবীহা হলো- দুই সালামে আর প্রত্যেক তারবীহার পর এক তারবীহা পরিমাণ বিশ্রাম নিবে। (শরহুল বেক্বায়া, ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১৪২)

(২০৪-২০৫)  

يستحب ان يجتمع الناس فى شهر رمضان بعد العثاء فيصلى بهم امامهم خمس رويحات كل ترويحة بتسلمتين ويجلس بين كل ترويحتين مقدار ترويحة ثم يوتربهم ذكر لفظ الاستحباب والاصح انها سنةز (عين الهداية ج صفه ৭২১، اشرف الهداية ج صفه ২৩০)

অর্থঃ- রমযান মাসে ইশার নামাযের পর সকলে একত্রিত হওয়াকে মোস্তাহাব করা হয়েছে। সুতরাং ইমাম সাহেব উক্ত মুছল্লীদের নিয়ে পাঁচ তারবীহাত (বিশ রাকায়াত) নামায পড়বে, প্রত্যেক তারবীহা দুই সালামে। আর প্রত্যেক চার রাকায়াত পর এক তারবীহা পরিমাণ বসবে (বিশ্রাম নিবে)। অতঃপর মুছল্লীদের নিয়ে বিত্র (জামায়াতে) পড়বে। (অত্র ইবারতে) মোস্তাহাব শব্দ উল্লেখ আছে। মূলতঃ অধিক সহীহ্ মত হলো- তারাবীহ্ জামায়াতে আদায় করা সুন্নতে কেফায়া) (আইনুল হেদায়া, ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৭২১, আশ্রাফুল হেদায়া ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-২৩০)

২০৬)

فانها عشرون ركعة سوى الوتر- عندنا وقال ملك رحمه الله تعالى السنة فيها ستة وثلاثون قيل من ارا ان يعمل بقول مالك رحمه الله تعالى وبسلك مسلكه ينبغى ان يفعل كما قال ابو حنيفة رحمه الله تعالى يصلى عشرين ركعة كما هو السنة ويصلى الباقى قراداى كل تسلمتين اربع ركعة وهذا مذا مذهبنا= (المبسوط للسرخسى ج صفه ১৪৪)

অর্থঃ- আমাদের (হানাফী মায্হাব) মতে তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত বিত্র ব্যতীত। ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ছত্রিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায সুন্নত। বলা হয় যে, যারা ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ক্বওল বা মায্হাব মোতাবেক আমল করতে চায়, তবে তার উচিত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বক্তব্যকে অনুসরণ করা। (উনি বলেন) বিশ রাকায়াত যেটা সুন্নতে মুয়াক্বাদার অন্তর্ভূক্ত। যথারীতি তা জামায়াতে আদায় করবে, আর বাকীগুলো আলাদাভাবে চার রাকায়াত করে আদায় করবে, মূলতঃ এটাই আমাদের মায্হাব। (আল্ মাব্ছূত লিস্ সারাখসী, ২য় জিঃ পৃষ্ঠাা১৪৪)

          উক্ত কিতাবে যদিও বলা হয়েছে যে, ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতে তারাবীহ্ নামায ছত্রিশ রাকায়াত, মূলতঃ এটা উনার পূর্ববর্তী মত। কেননা অসংখ্য আলেমগণ উনাদের মতে ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি বিশ রাকায়াতেরই ক্বায়েল বা প্রবক্তা।

(২০৭-২০৮)

واختلقوا فى المختار من عدد الر كعات التى يقوم بها الناس فى رمضان- فاختار مالك فى احد قوليه وابو حنيفة والشافعى واحمد وداود رحمهم الله تعالى- القيام بعشرين ركعة سوى الوتو .... وذالك ان مالكاروى عن يزيد بن رومان قال كان الناس يقومون فى زمن عمر بن الخطاب بثلاث وعشرين ركعة، (بداية المجتهد ونهاية المقنصد ج صفه ২৫৮، وكذا فى اوجالمسالك)

অর্থঃ- রমযান মাসে লোকেরা যে তারাবীহ্ নামায পড়েন, উহার গ্রহণযোগ্য রাকায়াত সংখ্যার ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। তবে ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম শাফিয়ী, ইমাম আহ্মদ, ইমাম দাউদ ও ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের দু’টি মতের মধ্য হতে একটি মত গ্রহণ করেন, (অর্থাৎ) উনাদের সকলের মতেই তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত বিত্র ব্যতীত। ........ এটার দলীল হলো- ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত হযরত ইয়াযীদ ইব্নে রোমান রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, লোকেরা হযরত ওমর ইব্নুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার যামানায় (বিত্রসহ) তেইশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েন। (বিদায়াতুল মুজ্তাহিদ ওয়া নেহায়াতুল মুকতাছিদ ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-২৫৮, অনুরূপ আওযাযুল মাসালিকে উল্লেখ আছে)

২০৯)

ঊদূ লেখা ঢুকবে.....................................................................................



অর্থঃ- আল্লামা আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন যে, আমাদের (হানাফী), শাফেয়ী, ও আহ্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মায্হাব মোতাবেক তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত। ক্বাজ্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি এটা জমহুর আলেমগণের ক্বওল হিসাবে বর্ণনা করেন। ইব্নে কুদামাহ্ হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন যে, হযরত আলী কাররা মাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনাকে এক ব্যক্তিকে রমযান মাসে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়ার আদেশ দেন। তিনি আরো বলেন, এটা মূলতঃ ইজমার নামান্তর। (আইনুল হেদায়া ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৭২৩)

২১০)

واما قدرها فعشرون ركعة فى عشر تسليمات فى خمس ترويحات كل تسليمتين ترويحة وهذا قول عامة العلماء وقال مالك فى قول سنة و ثلاثون ركعة وفى قول ستة وعشرون ركعة- والصحيح قول العامة- لماروى ان عمر رضى الله عنه جمع اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم فى شهر رمضان على ابى بن كعب فصلى بهم فى كل ليلة عشرين ركعة ولم ينكر عليه احد فيكون اجماعا منهم على ذالك. (بدائح الصنائع فى تربيب الشرائع ج صفه ২৮৮)

অর্থঃ- মূলতঃ তারাবীহ্ নামায হলো দশ সালামে বিশ রাকায়াত অর্থাৎ পাঁচ তারবীহাত, আর প্রত্যেক দুই সালামে (চার রাকায়াতে) এক তারবীহা। এটাই অধিকাংশ আলেমগণের মত বা বক্তব্য। আর ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এক মতে তারাবীহ্ নামায ছত্রিশ রাকায়াত, আরেক মতে ছাব্বিশ রাকায়াত। মূলতঃ অধিকাংশ আলেমগণের (বিশ রাকায়াতের) মতটিই সহীহ্ বা বিশুদ্ধ। কেননা বর্ণিত আছে যে, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি রমযান মাসে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণকে হযরত উবাই ইব্নে বা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর পিছনে একত্রিত করেন, অতঃপর তিনি তাদেরকে নিয়ে প্রত্যেক রাত্রে বিশ রাকায়াত নামায পড়েন। তখন কেউ ওটার বিরোধিতা করেননি। সুতরাং তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত হওয়ার ব্যাপারে উনাদের (ছাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণের) মধ্যে ইজমা (ঐক্যমত) প্রতিষ্ঠা লাভ করে। (বাদায়েউস্ সানায়ে ফী তারতীবিশ শারায়ে ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-২৮৮)

২১১)



ঊদূ লেখা ঢুকবে.....................................................................................



অর্থঃ- সুতরাং বর্ণিত আছে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওযা সাল্লাম, রমযানের এক রাত্রে বের হলেন এবং বিশ রাকায়াত নামায আদায় করলেন। যখন দ্বিতীয় রাত্র আসলো, লোকজন (ছাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ) একত্রিত হলেন, অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বের হয়ে আসলেন এবং তাঁদেরকে নিয়ে বিশ রাকায়াত (তারাবীহ্) নামায পড়লেন। যখন তৃতীয় রাত্র আসলো, লোক সংখ্যা অত্যাধিক বৃদ্ধি পেল। তখন আর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (নামাযের জন্যে) বের হলেন না, (বরং) তিনি বললেন, তোমাদের একত্রিত হওয়ার (উদ্দেশ্য) আমি জানতে পেরেছি কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে, তোমাদের উপর এটা (তারাবীহ্ নামায) ফরজ হয়ে যায় কিন। সুতরাং এরপর হতে হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার সময় পর্যন্ত লোকেরা একাকী তারাবীহ্ নামায পড়েন। (আশ্রাফুল হেদায়া ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-২৩১)

২১২)

وصح ان الناس كانوا سصلون على عهد عمر وعشمان وعلى رضى الله عنهم عشرين ركعة وهورأى جمهورالفقهاء من الحنفية والحنابلة وداود- قال الترمذى واكثر اهل العلم على ماروى عن عمر وعلى وغير هما من اصحاب النبى صلى الله عليه وسلم عشرين ركعة وهو قول الثورى وابن المبارك والشافعى وقال هكذا ادركت الناس بمكة يصلون عشرين ركعة. (فقه النسنة ج صفه ২০৬.

অর্থঃ- সহীহ্ মত হলো, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম, হযরত ওসমান আলাইহিস সালাম ও হযরত আলী আলাইহিস সালাম উনাদের খিলাফতকালে লোকেরা বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়তেন। হানাফী, হাম্বলী ও দাউদী মতাবলম্বী জমহুর ফক্বীহ্গণের এটাই অভিমত। ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদের মধ্য হতে হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম, হযরত আলী আলাইহিস সালাম ও অন্যান্যগণ উনাদের হতে তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত হওয়ার যে বর্ণনা পাওয়া যায়, অধিকাংশ আলেমগণ উহাই গ্রহণ করেন। আর ইমাম সুফিয়ান ছাওরী, ইবনুল মোবারক, শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহিগণের এটাই অভিমত, অর্থাৎ তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত। তিনি আরো বলেন, আমি মক্কা শরীফে লোকদেরকে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়া অবস্থায় পেয়েছি। (ফিক্বহুস্ সুন্নাহ্ ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-২০৬)

(২১৩-২১৬)

يستحب ان يجتمع الناس بعد العشاء فى رمضان فيصلى بهم اما مهم خمس تروبحات-الاصل فيه ماروى ان النبى صلى الله عليه وسلم خرج ليلة فى سهر رمضان فصلى بهم عشرين ركعات ... والترويحة ههنا اسم لكل اربع ركعات فكانت جملتهاعشرين ركعة وهذا عندنا وعند الشافعى رحمهما الله. (فتح القدير جصفه ৪০৬،  وكذا الكفاية، شرح النقاية، شرح الالياس)

অর্থঃ- রমযান মাসে ইশার নামাযের পর সকলে একত্রিত হওয়া মোস্তাহাব (সুন্নতে মুয়াক্বাদায়ে কেফায়া)। অতঃপর ইমাম সাহেব একত্রিত লোকদেরকে নিয়ে পাঁচ তারবীহাত (বিশ রাকায়াত) নামায পড়বে। এ ব্যাপারে দলীল হলো- যেটা বর্ণিত আছে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রমযান মাসের এক রাত্রে বের হয়ে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদেরকে নিয়ে বিশ রাকায়াত (তারাবীহ্) নামায পড়েন। ..... এখানে তারবীহাতুন বলতে প্রত্যেক চার রাকায়াতকে বুঝানো হয়েছে। সুতরাং তারাবীহ্ নামায মোট বিশ রাকায়াত সাব্যস্ত হলো। এটা আমাদের (হানাফী মায্হাব) ও ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট। (ফাত্হুল ক্বাদীর ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৪০৬, অনুরূপ আল কেফায়া, শরহুন্ নিক্বায়া, শরহুল ইল্ইয়াসে উল্লেখ আছে)

(২১৭-২১৮)

وسن فى رمضان رمضان عشرون ركعة بعد بعد العشاء قيل الوتر وبعده بجماعة والختم مرة بجلسه بعد كل اربع بقدرها.

(بحرالرائق ج صفه ৬৬، وكذا فى منحة المخالق)

অর্থঃ- রমযান মাসে ইশার পর বিত্র নামাযের পূর্বে বিশ রাকায়াত (তারাবীহ্) নামায পড়া সুন্নত করা হয়েছে। উহার পর বিত্র জামায়াতে আদায় করবে। প্রত্যেক চার রাকায়াত শেষ হওয়ার পর এক তারবীহা পরিমাণ বিশ্রাম নিবে। (বাহ্রুর রায়িক ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-৬৬, অনুরূপ মিন্হাতুল খালেকে উল্লেখ আছে)

(২১৯)

وابما ثبت العشرون بمو الظية الخلفاء الراشدين ...... وبا لجملة فهىسنة رسول الله صلى الله عليه وسلم- سنها لنا وندينا اليها وكيف لا وقد قال صلى الله عليه وسلم- عليكم بسنتى وسنة الملفاء الراشدين المهديين من بعدى عضوا عليهابالنواجذ وروى ابو نعيم من جديث عروبة الكندى- ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ستحدث تعدى اشياء فاحبها الى ان تلز موا مااحدث عمر. (طحطاوى على مراقى الفلاح صفه ২৭০)

অর্থঃ- নিশ্চয় হযরত খোলাফা-ই-রাশেদীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদের মোয়াযেবাত বা নিয়মিত আমলের দ্বারা বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায প্রমাণিত হয়েছে। ....... মোটকথা হলো- তারাবীহ্ নামায সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নতের অন্তর্ভূক্ত। তারাবীহ্ নামায আমাদের জন্যেও সুন্নত করা হয়েছে। সুন্নত হবেইনা বা কেন? হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো বলেছেন, তোমাদের জন্যে আমার সুন্নত ও আমার হিদায়েত প্রাপ্ত খোলাফা-ই-রাশেদীনগণ উনাদের সুন্নত অবশ্য পালনীয়। তোমরা ওটা মাড়ীর দাঁত দিয়ে আঁকড়িয়ে ধর। আর আবূ নাঈম, হযরত আরুবাহ্ হতে বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয় রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, অতি শিঘ্রই আমার পর কিছু নতুন বিষয় উৎপত্তি লাভ করবে, তন্মধ্যে হযরত ওমর আলাইহিস সালাম উনার কর্তৃক যে নতুন বিষয়সমূহ উৎপত্তি লাভ করবে, উহা অনুসরণ করা তোমাদের জন্যে সর্বোত্তম। (তাহ্তাবী আলা মারাকিউল ফালাহ্ পৃষ্ঠা-২৭০)

(২২০)

وسن ان يجتمع الناس فى شهر رمضان بعد العشاء فيصلى بهم امامهم (التراوبح) عشرين ركعة. (شرح النقاية جصفه ২৩৯)

অর্থঃ- রমযান মাসে ইশার পর সকলে একত্রিত হওয়া সুন্নত। সুতরাং তাদের ইমাম তাদের সাথে বিশ রাকায়াত (তারাবীহ্) নামায পড়বে। (শরহুন্ নেক্বায়া ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-২৩৯)

(২২১-২২২)



ঊদূ লেখা ঢুকবে.....................................................................................



অর্থঃ- “মাবছূত” কিতাবে বর্ণিত আছে যে, রাফেজী ফেরকা ব্যতীত মুসলিম মায্হাবের সকলেই তারাবীহ্ নামায শরীয়তসম্মত হওয়ার ব্যাপারে একমত। তারাবীহ্ নামায পড়ার পদ্ধতি হলো- ইশার ফরজ আদায় করার পর পুরুষ অথবা মহিলা সকলে মসজিদ অথবা কোন ঘরে একত্রিত হয়ে জামায়াতে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়বে। বিশ রাকায়াতের চেয়ে বেশী জামায়াতে পড়া মাকরূহ্। (নূরুদ্ দেরায়া ফী শরহিল হেদায়া হিঃ ১০ পৃষ্ঠা-৫৩)

২২৩)



ঊদূ লেখা ঢুকবে.....................................................................................



অর্থঃ- অর্থাৎ নফল ইবাদতসমূহ হলো, ফরজসমূহের পুর্ণতা দানকারী। আর যেহেতু পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের ফরজসমূহ বিত্রসহ বিশ রাকায়াত, এজন্যে তারাবীহ্ নামাযও বিশ রাকায়াত হয়েছে। তাই তারাবীহ্ নামায হলো পুর্ণতা দানকারী। আর ফরজ ও বিত্রসমূহ হলো পুর্ণতা লাভকারী, এটা মূলতঃ (তারাবীহ্ নামাযের) আক্বলী দলীল। আর নক্বলী দলীল হলো এই যে, ইব্নে আবী শায়বা রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত ইব্নে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে (কারো কারো মতে) জঈফ সনদে বর্ণনা করেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রমযান মাসে বিশ রাকায়াত (তারাবীহ্) ও বিত্র নামায পড়তেন। (গায়াতুল আওতার শরহে রদ্দুল মোহ্তার ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৩২৬)

(২২৪)

وبندب التراويح وهى كل ليلة من رمضان عشرون ركعة فى الجماعة ويسلم من ك ركعتين نملو صلى اربعا بتسليمة لم تصح ويوتر بعدها- (فيض الاله المالك فى حل الفاظ عمدة السالك وعة الناسك ج صفه ১৪২)

অর্থঃ- রমযান মাসের প্রতি রাত্রে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায জামায়াতে পড়া মোস্তাহাব (সুন্নতে মুয়াক্বাদায়ে কেফায়া)। আর দুই রাকায়াত পর সালাম ফিরাবে, এক সালামে চার রাকায়াত পড়া শুদ্ধ হবেনা। আর তারাবীহ্ নামাযের পর বিত্র (জামায়াতে) আদায় করবে। (ফায়জুল ইলাহিল মালিক ফী হাল্লি আলফাযি ওমদাতিস্ সালিক ওয়া ইদ্দাতিন্ নাসিক ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১৪২)

১২৫)

وقدبين فعل عمر رضى الله عنه ان عددها عشرون حيث انه جمع الناس اخيرا على هذا العدد فى المسجد و=روافته الصحابة على ذالك ولم يوجد لهم مخالف ممن بعدهم من الخلفاء الراشدين- وقد قال النبى صلى الله عليه وسلم- عليكم بسنتى وسنة الخلفاء الراشدين المهديين- عضوا عليها بالنواجذ وقد سئل ابو حنيفة عما فعله عمر رضى الله عنه فقال التراويح سنة مؤكدة ولم يتخرجه عمر من تلقاء نفسه ولم يكن فيه مبتدعا ولم يأمربه الا عن اصل لديه وعهد من رسول الله صلى الله عليه وسلم. (كتاب الفقه على مذاهب الاربعة جصفه ৩৪১)

অর্থঃ- আমীরুল মু’মিনীন, হযরত উমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার আমল দ্বারা নিশ্চিত প্রমাণিত হয় যে, তারাবীহ্ নামাযের রাকায়াত সংখ্যা হলো বিশ। কেননা তিনি সর্বশেষ মসজিদে যখন লোকদের একত্রিত করেন, তখন বিশ রাকায়াতই পড়া হয়েছিল। আর সকল ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উহা অবগত ছিলেন, উনার পর খোলাফা-ই-রাশেদীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদের কেউ উহার বিরোধী ছিলেন না। আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের জন্যে আমার সুন্নত ও হিদায়েত প্রাপ্ত খোলাফাগণের সুন্নত অবশ্য পালনীয়, তোমরা মাড়ীর দাঁত দিয়ে উহা আঁকড়িয়ে ধর। ইমামে আ’যম, হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাহিস সালাম উনার কর্তৃক (বিশ রাকায়াত) তারাবীহ্ নামাযের জামায়াত প্রতিষ্ঠা হওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়। তখন তিনি বলেন, তারাবীহ্ নামায হলো সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্। আর হযরত ওমর আলাইহিস সালাম উনারা উহা নিজ থেকে উদ্ভাবন করেননি এবং এ ব্যাপারে তিনি বিদ্য়াতের প্রবর্তকও নন। আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হতে এ ব্যাপারে কোন দলীল-প্রমাণ না পেয়ে তিনি উহার নির্দেষ দেননি (বরং দলীল পেয়েছেন বিধায় নির্দেষ দিয়েছেন)। (কিতাবুল ফিক্বাহ্ আলা মাযাহিবিল আরবা ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৩৪১)

২২৬-২২৮)

صلاة التراويح سنة مؤكدة عشرون ركعة بعشر تسليمات فى كل ليلة من رمضان. (انوار الساظعة وكذا فى اوجز المسالك، اشباه والنظائر)

অর্থঃ- রমযান মাসের প্রতি রাত্রে দশ সালামে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়া সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্। (আনোয়ারুস্ সাতেয়া, অনুরূপ আওযাযুল মাসালিক, আশবাহু ওয়ান্ নাযায়ির-এ উল্লেখ আছে)

(২২৯-২৩০)

التراويح سنة مؤكدة عشرون ركعة برمضان ولاصل فى مسنونيتها الاجماع. (نيل المارب، اوجزالمسالك)

অর্থঃ- রমযান মাসে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্, তারাবীহ্ নামাযের উপর ইজমা প্রতিষ্ঠিত হওয়া তারাবীহ্ নামায সুন্নত হওয়ার দলীল। (নাইলুল মায়ারিব, আওযাযুল মাসালিক)

(২৩১-২৩৩)

التراوبح سنة مؤكذة عشرونركعة لماروى عن اين عباس- ان النبى صلى الله عليه وسلم- كان يصلى فى رمضان عشرين ركعة. (روض المربع، اوجز المسالك، ررض الرياض)

অর্থঃ- বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়া সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্। কেননা, হযরত ইব্নে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযান মাসে বিশ রাকায়াত (তারাবীহ্) নামায পড়েন। (রওজুল মারবা, আওযাযুল মাসালিক, রওজুর রিয়াজ)

(২৩৪)

التراويح وهى عشرون ركعة يقوم بها فى رمضان فى جماعة وبوتر بعدها فى الجماعة. (المقنع صفه ৩৪)

অর্থঃ- তারাবীহ্ মূলতঃ বিশ রাকায়াত, উহা রমযান মাসে জামায়াতে আদায় করবে, এরপর বিত্র জামায়াতে আদায় করবে। (আল্ মুকান্না পৃঃ-৩৪)

(২৩৫)

قال علامة الحلبى= علممن هذه المسئلة ان التراويح عندنا عشرون ركعة بعشر تسليمات وهو مذهب الجمهور وعند مالك ستة وثلشون ركعة احتدادا بعمل اهل المدينة وللجمهور مارواه البيهقى باسناد صحيح عن السائب بن يزيد قال كانوا يقومون على عهد عمررضى الله عنه بعشرين ركعة وعشمان على مثله وهذا كالاجماع. (كبيرى صفه ৩৮৮)

অর্থঃ- আল্লামা হালবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এ মাসয়ালা থেকে জানা গেল যে, নিশ্চয় আমাদের (হানাফী মায্হাবের) নিকট তারাবীহ্ নামায দশ সালামে বিশ রাকায়াত, আর এটা মূলতঃ জমহুর আলেমগণেরও মায্হাব বা অভিমত। আর ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট মদীনা শরীফের অধিবাসীগণের আমলের দলীলের ভিত্তিতে তারাবীহ্ নামায ছত্রিশ রাকায়াত। জমহুরগণের দলীল হলো- যা বায়হাক্বী সহীহ্ সনদে হযরত সাইব ইব্নে ইয়াযীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণনা করেন যে, লোকেরা হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সময় বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়তেন। অনুরূপ হযরত ওসমান ও হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সময়ও বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়া হতো। আর এটাই মূলতঃ ইজমা। (কবীরী পৃষ্ঠা-৩৮৮)

২৩৬-২৩৭)

وقيام شهر رمضان عشرون ركعة يعنى صلاة التراريح وهى سنة مؤكدة. (المغنى لا بن قدامة، وكذا فى اعلاء السئن)

অর্থঃ- রমযান মাসে তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত। অর্থাৎ (বিশ রাকায়াত) তারাবীহ্ নামায পড়া সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্। (আল্ মুগনী লি ইব্নে কুদামাহ্, অনুরূপ এ’লাউস্ সুনানে উল্লেখ আছে)

(অসমাপ্ত

0 Comments: