বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া ( ৫ নং )

পিডিএফ লিংক- https://drive.google.com/open?id=1a1HeE3IicD8BG6kLtzUs7G88JJAPC8aR
তারাবিহ ২০ রাকাত বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া ( ৫ নং ) 
বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায ও তার সংশ্লষ্টি বিষয় সর্ম্পকে ফতওয়া
গবেষণা কেন্দ্র - মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
 [সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আ’লামীন উনার এবং অসংখ্য দরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে আমাদের গবেষণা কেন্দ্র, “মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-এর ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে, বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে টুপির ফতওয়া, অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান, নিয়ত করে মাজার শরীফ জিয়ারত করা, ছবি ও তার সংশি¯œষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া, জুময়ার নামায ফরজে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া, মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া, কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ফরজ নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ইনজেকশন নেওয়া রোজা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া প্রকাশ করার পর দ্বাদশ ফতওয়া হিসাবে ২৫তম সংখ্যা হতে ২৯তম সংখ্যা পর্যন্ত তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া প্রকাশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া।]

বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীলসমূহ :

 (২৩৮)        

وبالجملة المواظبة التشريعة ثابئة من الصحابة فن بعد هم على حسن اداء التراويح عشرين ركعة بالجماعة= (التعليق الممجد على مؤطامحمد صفه ১৪৩)

অর্থঃ- মোটকথা হলো- বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায জামায়াতে আদায় করা উত্তম (সুন্নত) হওয়ার ব্যাপারে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু ও তার পরবর্তীগণের শরয়ী মোয়াযেবাত (নিয়মিত আমল) প্রমাণিত রয়েছে। (তা’লীকুল মুমাজ্জাদ আলা মুওয়াত্তায়ে মুহম্মদ পৃষ্ঠা-১৪৩)

(২৩৯-২৪০)

فالمسنون عند ابى خيفة والشافعى واحمد عشرون ركعة وحكى عن مالك ان التراويح ست وثلاثون ركعة. (رحمة الامة صفه ২৩. وكذا فى اعلاء السنن)

অর্থঃ- ইমামে আ’যম, হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম আহ্মদ ইব্নে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়া সুন্নত। আর হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে ছত্রিশ রাকায়াত বর্ণিত হয়েছে। (রহ্মাতুল উম্মাহ্, অনুরূপ ইলাউস্ সুনানে উল্লেখ আছে)

(২৪১-২৪৩)

ان عمر رضى الله عنه امر بفعلها ثلاثا وعشرين ركعة ثلاثا منها وتر- واستقر الامر على ذالك فى الامصار. (كشف الغمة جصفه ১৬৭ وكذا فى او جز المسالك، وسائل الاركان)

অর্থঃ- নিশ্চয়ই, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তেইশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়ার নির্দেশ দেন, তম্মধ্যে তিন রাকায়াত বিত্র। আর সমস্ত শহরগুলোতে ঐ বিশ রাকায়াত নামাযই নির্ধারিত হয়। (কাশফুল গুম্মাহ্ ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১৬৭, অনুরূপ আওযাযুল মাসালিক, রাসায়িলুল আরকানে উল্লেখ আছে)

২৪৪-২৪৫)    

التراويح سنة مؤكدة وهى عشرون ركعة ياجماع الصحابة رضى الله عنهم بعشر تسليمات كما هوا المتوارت. (مراقى الفلاح صفه ২৭১ ركذا فى تحفة الاخيار)

অর্থঃ- নিশ্চয়ই, তারাবীহ্ নামায সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্, আর উহা মূলতঃ দশ সালামে বিশ রাকায়াত, যা হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহুগণের ইজ্মা দ্বারা সাব্যস্ত। যেমন উহা তাওয়ারাছ বা নিয়মিতভাবে আদায়া হয়ে আসছে। (মারাক্বিউল ফালাহ্ পৃষ্ঠা-২৭১, অনুরূপ তোহ্ফাতুল আখ্ইয়ারে উল্লেখ আছে)

(২৪৬)

ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................



অর্থঃ- আল্লামা সুবকী শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন যে, তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত সুন্নত হওয়াই আমাদের মাস্লাক বা অভিমত, যা সহীহ্ সনদ দ্বারা প্রমাণিত। (শরহুল মিন্হাজ)

(২৪৭-২৪৮)

ويستحب ان يجتمع الناس فى شهر رمضان بعد العشاء فيصلى بهم امامهم خمس ترويحات فى كل ترويحة تسليمتان ويجلس بين كل ترويحتين مقدار ترويحة ثم يوتر بهم ولا يصلى الو تربجماعة فى غير شهر رمضان. (المصباح النورى فى شرح مختصر القدورى صغه ৪৯ وكذا فى الجوهرة النيرة صفه ১২৫)

অর্থঃ- রমযান মাসে এশার পর সকলে একত্রিত হওয়া মুস্তাহাব (সুন্নতে কেফায়া)। অতঃপর তাদের ইমাম তাদেরকে নিয়ে পাঁচ তারবীহাত (বিশ রাকায়াত) নামায পড়বে, প্রত্যেক তারবীহা হলো- দুই সালামে, অর্থাৎ চার রাকায়াতে। আর প্রত্যেক চার রাকায়াতের পর এক তারবীহা পরিমাণ সময় বসবে (বিশ্রাম নিবে)। অতঃপর সকলে জামায়াতে বিত্র আদায় করবে, রমযান মাস ব্যতীত বিত্র নামায জামায়াতে আদায় করবেনা। (আল্ মিছবাহুন্ নূরী ফী শরহে মুখতাছিরিল কুদূরী পৃষ্ঠা-৪৯, অনুরূপ আল্ জাওহারাতুন্ নাইয়্যারাতে উল্লেখ আছে)

(২৪৯-২৫২)

(التراويح) وهى خمس ترويحات كل ترويحة اربح ركعات بتسلمتين- كذا فى السراجية ولو زاد على خمس ترويحات بالجماعة يكره عندنا هكذافى الخلاصة. (الفتاوى العالمكيرية جصفه ১১৫ وكذا فى الفتاوى الهندية)

অর্থঃ- তারাবীহ্ নামায হলো- পাঁচ তারবীহাত (বিশ রাকায়াত) প্রত্যেক তারবীহা হলো- দুই সালামে চার রাকায়াত, অনুরূপ ফতওয়ায়ে সিরাজিয়াতে উল্লেখ আছে। আর যদি বিশ রাকায়াতের বেশী জামায়াতে আদায় করে, তবে আমাদের মতে মাকরূহ্ তাহ্রীমী হবে। ইহা খোলাসাতে উল্লেখ আছে। (ফতওয়ায়ে আলমগীরী ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১১৫, অনুরূপ ফতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে উল্লেখ আছে)

(২৫৩)

يصلون فى مسجد هم خمس ترويحات ويؤمهم رجل ريسلم فى كل ركعتين وكلما يصلى تروبحة اننظربين الترويحتين قدر ترويحة ..... وهى عشرون ركعة- ولوزاد على العشرين بالجماعة يكره عندنا. (خلاصة الفتاوى جصفه ৩৬)

অর্থঃ- মুছল্লীগণ তাদের মসজিদে পাঁচ তারবীহাত নামায পড়বে, আর তাদের ইমাম হবে পুরুষ লোক। প্রত্যেক দুই রাকায়াত পর সালাম ফিরাবে এবং যখন চার রাকায়াত পড়া শেষ করবে, তখন চার রাকায়াত পরিমাণ সময় অপেক্ষা করবে। ...... আর তারাবীহ্ নামায হলো বিশ রাকায়াত। যদি বিশ রাকায়াতের বেশী জামায়াতে আদায় করে, তবে আমাদের মতে মাকরূহ্ তাহ্রীমী হবে। (খোলাছাতুল ফতওয়া ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৬৩)

(২৫৪-২৫৫)

وقول المصنف عشرين ركعة بيان لكميتها- وهوقول الجمهور لمافى المؤ عن يزيد بن رومان- قال كان الناس يقومون على عهد عمربن الخطاب- بثلاث وعشرين ركعة وعليه عمل الناس شرقا وغربا- وشيخ الاسلام بدر الدين العينى درمنحة السلوك شرح عفة الملوك تحرير بفرمايد- التراويح عشرون ركعة وعند مالك ست وثلاثون- لنا ماروى البيهقى باسناه صحيح- انهم كانوا يقومون على عهد عمر بعشرين ركعة وعلى عهد عشمان وعلى مصل ذالك فصار اجماعا. (مجموعة الفتاوى جصفه ১২১)

 অর্থঃ- মুছান্নেফ রহমতুল্লাহি আলাইহি “বিশ রাকায়াত” এর দ্বারা তারাবীহ্ নামাযের রাকায়াত সংখ্যার বর্ণনা দিয়েছেন। আর এটা মূলতঃ জমহুর আলেমগণের বক্তব্য। কেননা মুয়াত্তা শরীফে হযরত ইয়াযীদ ইব্নে রোমান রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- লোকেরা হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে তেইশ রাকায়াত নামায পড়েন। আর ইহার উপরই পূর্ব ও পশ্চিমের সকল লোকের আমল রয়েছে। শায়খুল ইসলাম, বদরুদ্দীন আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি “মিন্হাতুস্ সুলূক শরহে ইফ্যাতিল মুলূক” কিতাবে লিখেন যে, তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত, আর ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট ছত্রিশ রাকায়াত। আমাদের (বিশ রাকায়াতের) দলীল হলো- যেটা বায়হাক্বী সহীহ্ সনদে বর্ণনা করেন। তাঁরা (হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু) হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার সময় বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েন, অনুরূপ হযরত ওসমান ও হযরত আলী আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালেও বিশ রাকায়াত পড়া হতো। সুতরাং (বিশ রাকায়াতের) উপর ইজ্মা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। (মাজ্মুয়াতুল ফতওয়া ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১২১)

(২৫৬)

قوله- وهى عشرون ركعة هو قول الجمهور وعليه عمل الناس شرقا وغربا. (الفتاوى الشامى جصفه ২৫)

অর্থঃ- মুছান্নেফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বক্তব্য হলো- তারাবীহ নামায বিশ রাকায়াত। এটা মূলতঃ জমহুর আলেমগণের বক্তব্য। আর পূর্ব ও পশ্চিমের সকল মানুষেরই বিশ রাকায়াতের উপর আমল রয়েছে। (ফতওয়ায়ে ইব্নে আবেদীন শামী ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৫২)

(২৫৭)

ولاشك ان احدا من الانمة لم يقل بما قاله ابن الهمام- بل اتفق كلهم على سنية العشرين غير ان مالكا زاد عليها ستة عشر اخرى- ولم يذهب احد منهم الى النقص من عشرين. (اعلاء السنن ج صفه ২০)

অর্থঃ- ইব্নে হুমাম রহমতুল্লাহি আলাইহি যে বলেছেন (তারাবীহ্ আট রাকায়াত সুন্নত, আর বাকী বার রাকায়াত মুস্তাহাব) এরূপ কথা নিঃসন্দেহে কোন ইমাম বলেননি। বরং উনাদের প্রত্যেকেই তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে একমত, শুধু ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি ব্যতীত। তিনি বিশ রাকায়াতের পর আরো ১৬ রাকায়াত বৃদ্ধি করেছেন। তবে তাদের মধ্যে কেউ বিশ রাকায়াতের কম বর্ণনা করেননি। (ইলাউস্ সুনান ৭ম জিঃ পৃষ্ঠা-৬০)

(২৫৮)

فانه قد ئبت ان ابى بن كعب كان يقوم بالناس عشرين ركعة فى رمضان ويوتر بثلاث-

فراى كشير من العلماء ان ذالك هوالسنة لائه قام بين المهاجرة والانصار ولم ينكره منكرا. (الفتاوىالكيرى جصفه ১৯১)        

অর্থঃ- সুতরাং প্রমাণিত হয়েছে যে, নিশ্চয় হযরত উবাই ইব্নে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু রমযান মাসে লোকদের সাথে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েন ও তিন রাকায়াত বিত্র পড়েন। আর অধিকাংশ আলেমগণের মতে উহাই মূলতঃ সুন্নত। কেননা হযরত উবাই ইব্নে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু, আনছার ও মুহাজির ছাহাবীগণের উপস্থিতিতেই বিশ রাকায়াত নামায পড়েন, অথচ কেউ ওটার বিরোধিতা করেননি। (ফতওয়ায়ে কোবরা ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১৯১)

(২৫৯)

(قال غوث الاعظم) وهى عشرون ركعة يجلس عقيب كل ركعتين ويسلم ............. وينوى فى كل ركعتين اصلى ركعتى التراويح المسنونة. (غنية الطالبين ج صفه১০-১১)

অর্থঃ- (গাউসুল আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন) তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত। প্রত্যেক দুই রাকায়াতের পর বসবে এবং সালাম ফিরাবে। ........ আর প্রত্যেক দুই রাকায়াত পর নিয়ত করবে, আমি দুই রাকায়াত সুন্নত তারাবীহ্ নামায পড়ছি। (গুনিয়াতুত্তালেবীন ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-১০-১১)

(২৬০)

قوله عشرون ركعة بيان لكميتها- وهو قول الجمهور لما فىالمؤطا عن يزيد بن رومان قال كان الناس يقومون فى زمن عمر بن الخطاب رضى الله عنه بثلاث وعشرين ركعة. (احياء العلوم الدين جصفه ২২)

অর্থঃ- মুছান্নেফ রহমতুল্লাহি আলাইহি “বিশ রাকায়াত” এ বক্তব্য দ্বারা তারাবীহ্ নামাযের রাকায়াত সংখ্যার বর্ণনা দিয়েছেন আর এটাই জমহুর আলেমগণের বক্তব্য। কেননা “মুওয়াত্তা শরীফে” হযরত ইয়াযীদ ইব্নে রোমান বলেন, লোকেরা হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু উনার সময় (বিত্রসহ) তেইশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়তেন। (ইহ্ইয়াউ উলূমিদ্দীন ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৬৬)

(২৬১)

(قال الشيخ عبدالحق) فعندنا هى عشرون ركعة لماروى البيهقى ياسناد صحيح الى ان قال- وروى ابن عباس انه صلى رسول الله صلى الله عليه وسلم- عشرين ركعة فى رمضان واوتر بعدها بثلاث. (مائبت بالسنة)

অর্থঃ- (শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন) আমাদের মতে তারাবীহ্ নামায হলো- বিশ রাকায়াত। যেটা বায়হাক্বী সহীহ্ সনদে বর্ণনা করেন। আর হযরত ইব্নে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু হতে বর্ণিত যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রমযান মাসে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েন ও উহার পর তিন রাকায়াত বিত্র আদায় করেন। (মা-ছাবাতা বিস্সুন্নাহ্)

(২৬২-২৬৪)

سال ابو يوسف ابا خيفة رحمهما الله تعالى- هل كان لعمر رضى الله عنه عهد من النبى صلى الله عليه وسلم فى  عشرين ركعة- فقال له ابو حنيفة رحمه الله تعالى- لم يكن عمر رضى الله عنه مبتدعا= (فيض البارى فى شرح البخارى ج صفه. ৪২، وكذا فى مراقى الفلاح- بحرالرائق)

অর্থঃ- ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমামে আযম আবূ হানীফা রদ্বিয়াল্লাহুকে প্রশ্ন করলেন যে, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু উনার নিকট সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ হতে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের কোন প্রমাণ রয়েছে কি? তখন ইমামে আ’যম, আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বললেন যে, এ ব্যাপারে হযরত ওমর ইবনুল আলাইহিস সালাম তিনি বিদ্য়াতের উদ্ভাবক নন। অর্থাৎ নিশ্চয়ই উনার নিকট বিশ রাকায়াতের প্রমাণ রয়েছে। (ফায়জুল বারী ফী শরহিল বুখারী ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-৪২০, অনুরূপ মারাক্বিউল ফালাহ্, বাহ্রুর রায়েকে উল্লেখ আছে)

(২৬৫)

التراويح وهى عشرون ركعة وكيفيتها مشهورة وهى سنة مؤكدة= (احياء العلوم الدين جصفه ২০৮)

অর্থঃ- তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত এবং উহার নিয়ম প্রসিদ্ধ রয়েছে। আর তারাবীহ্ নামায হলো- সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্। (ইহ্ইয়াউ উলূমিদ্দীন ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-২০৮)

২৬৬)

والصحابة حينئذ متوافرون منهم عشمان وعلى وابن مسعود والعباس وابنه وطلحة وزبير ومعاذ وغيرهم رضى الله عنهم من المهاجرين والانصار وما رد علمه واحدمنهم بل ساعدوه ووافقوه وامروه بذالك وواطبوا عليها حتى ان عليا اثنى عليه ودعاله بالخبر وقال نور الله مضجع عمر كما نور مساجدنا وقد قال النبى صلى الله عليه وسلم- عليكم بسنتى وسنة الخلقا ء الراشدين من بعدى وعى عشرون ركعة= (مجالس الابرار صفه ১৯৭)

অর্থঃ- (আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু যখন বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েন) তখন মুহাজির ও আনছারগণের মধ্য হতে হযরত ওসমান আলাইহিস সালাম, হযরত আলী আলাইহিস সালাম, হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু, হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু, হযরত ইব্নে আব্বাস আলাইহিস সালাম, হযরত তাল্হা রদ্বিয়াল্লাহু, হযরত যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু ও হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রদ্বিয়াল্লাহুগণসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। অথচ উনাদের মধ্য হতে কেউ ওটার বিরোধিতা করেননি। বরং সকলেই এ ব্যাপারে একে অন্যের সাহায্য-সহযোগীতা করেছেন। উহার উপর দৃঢ় ছিলেন এবং বিশ রাকায়াত নামায পড়ার আদেশ দিয়েছেন, আর নিয়মিত বিশ রাকায়াত নামায আদায় করেছেন। সর্বপোরী হযরত আলী আলাইহিস সালাম (বিশ রাকায়াত তারাবীহ্-এর জামায়াত প্রতিষ্ঠা করার কারণে) হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার প্রসংশা করেন, উনার জন্যে নেক দোয়া করেন। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম মাযার শরীফকে আলোকিত করুন, যেমন তিনি আমাদের মসজিদকে আলোকিত করেছেন। আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “তোমাদের জন্যে আমার পর আমার সুন্নত ও আমার খোলাফা-ই-রাশেদীনগণের সুন্নত অবশ্য পালনীয়। আর বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায মূলতঃ উক্ত সুন্নতেরই অন্তর্ভূক্ত। (মাজালিসুল আবরার, মজলিস নং-২৮, পৃষ্ঠা-১৮৭)

২৬৭)

صحابهء كرام اور تابعين .. زمانه مين تراويح كى بيس ركعت مقرر هوئى تهين= (حجة الله البالغة ج صفه ৬৭)

অর্থঃ- হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু ও তাবেয়ীন রহমতুল্লাহি আলাইহিগণ উনাদের যুগেই তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত নির্ধারিত হয়। (হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগাহ্ ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-৬৭)

(২৬৮)

فقيام رمضان بعشرين ركعة والوتر هو السنة مؤكدة يضلل تار كها ويلام من نقص عنها= (اعلاء المنن ج صفه ৪৭)

অর্থঃ- তারাবীহ্ নামায হলো- বিশ রাকায়াত, এটা সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্। তারাবীহ্ নামায তরককারী পথভ্রষ্ট। আর বিশ রাকায়াতের চেয়ে কম আদায়কারী মালামতের উপযুক্ত। (ই’লাউস্ সুনান ৭ম জিঃ পৃষ্ঠা-৪৭)

(২৬৯-২৭০)

والذى استقر عليه امر رتشنخر كم تلصابة والتابعين ومن بعد هم هوالعشرون= (ماثيت بالسنة، وكذا فى اوجر المسالك ج صفه ৩০৫)

অর্থঃ- হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু, তাবেয়ীন রহমতুল্লাহি আলাইহি ও অন্যান্যগণ হতে তারাবীহ্ নামাযের যে রাকায়াত সংখ্যা নির্ধারিত হয় ও প্রসিদ্ধি লাভ করে, তা হলো বিশ রাকায়াত। (মা-ছাবাতা বিস্সুন্নাহ্ অনুরূপ আওযাযুল মাসালিক ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-৩০৪-এ উল্লেখ আছে)

(২৭১-২৭২)   

قال علامة العينى- احتج اصحاب الشافعىواحمد بما روى اليهقى با سناد صحيح عن السائب بن يزيد قال كانوا يقومون على عهد عمر بعشرين ركعة وعلى عهد عثمان وعلى مثله والمغنى عن على انه امر رجلاان يصلى رمضان بعشرين ركعة قال وهذا كالاجماع. (فتح الر حمانى وكذا فى اوجز المسالك)

 অর্থঃ- (বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের পক্ষে) শাফিয়ী ও হাম্বলীগণ উনাদের দলীল হলো- যা বায়হাক্বী সহীহ সনদে হযরত সাইব ইবনে ইয়াযীদ রদ্বিয়াল্লাহু হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, লোকেরা হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে বিশ রাকায়াত নামায পড়েন। অনুরূপ হযরত ওসমান আলাইহিস সালাম উনার ও হযরত আলী আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালেও বিশ রাকায়াত পড়েন। ‘মুগনী’ কিতাবে হযরত আলী আলাইহিস সালাম উনার হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি এক ব্যক্তিকে রমযান মাসে বিশ রাকায়াত নামায পড়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, আর এটাই মূলতঃ ইজ্মা। (ফাতহুর রহ্মানী, অনুরূপ আওযাযুল মাসালিকে উল্লেখ আছে)

২৭৩)

قوله عشرون ركعة بيان لكميتها وهو قول الجمهور لما فى المزطا عن يزيد بن رومان قال كان الناس يقومون فى زمن عمرين الخطان بثلاث وعشرين ركعة وعليه عمل الناس شرقارغربا= (بحرالرائق ج صفه ৬৬)

অর্থঃ- লেখক “বিশ রাকায়াত” এ বক্তব্য দ্বারা তারাবীহ্ নামাযের রাকায়াত সংখ্যার বিবরণ দিয়েছেন। আর এটা মূলতঃ জম্হুর আলেমগণের বক্তব্য। কেননা “মুয়াত্তা শরীফে” হযরত ইয়াযীদ ইব্নে রোমান রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত আছে যে, লোকেরা হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম খিলাফতকালে (বিত্রসহ) তেইশ রাকায়াত নামায পড়েন। আর এটার উপরই পূর্ব-পশ্চিমের সকল লোকের আমল। (বাহ্রুর রায়েক ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-৬৬)

(২৭৪-২৭৬)

وسن فى رمضان عشرون ركعة بعشر تسليمات بعد العشاء قبل الوتر- (كنز الدقائق وكذا فى معدن الحقائق صفه ১৫৮، وكشف الحقائق)

অর্থঃ- রমযান মাসে এশার নামাযের পর বিত্রের পূর্বে দশ সালামে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়া সুন্নত করা হয়েছে। (কানযুদ্ দাক্বায়েক্ব, অনুরূপ মা’দানুল হাক্বায়েক্ব ও কাশফুল হাক্বায়েক্ব-এ উল্লেখ আছে)

২৭৭)

ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................

অর্থঃ- জমহুর আলেমগণের মায্হাব এটাই যে, তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত। আর এটাই হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত। বায়হাক্বী ছহীহ্ সনদে হযরত সাইব ইব্নে ইয়াযীদ রদ্বিয়াল্লাহু হতে বর্ণনা করেন যে, লোকেরা ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম খিলাফকালে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়তেন। অনুরূপ হযরত ওসমান আলাইহিস সালাম ও হযরত আলী আলাইহিস সালাম উনাদের খিলাফতকালেও বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়া হতো। (বাহারে শরীয়ত হিঃ ৪, পৃষ্ঠা-২৬)

(২৭৮-২৭৯)

جماعت درنفل مكروه است مكردر رمضان سنت است كه بست ركعت بده سلام بكزارد با جماعت ........ ويعد هرجهار ركعت بمقدار ان جهار ركعت جلسه كند وبذكر مشغول باشد واين راتراويح كويند وبعد تراوبح وترباجماعت كزاره وسوا... رمضان وترباجماعة مكروه است. مالابده منه وكذا فى انوار محموده صفه ৬৭.

অর্থঃ- নফল নামায জামায়াতে আদায় করা মাকরূহ্ তাহ্রীমী। কিন্তু রমযান মাসে (তারাবীহ্) জামায়াতে আদায় করা সুন্নত। বিশ রাকায়াত দশ সালামে জামায়াতের সাথে আদায় করবে। আর প্রতি চার রাকায়াত পর, চার রাকায়াত সময় পরিমাণ বসবে এবং যিকিরে মশগুল থাকবে। আর এটাকেই তারাবীহ্ নামায বলে। তারাবীহ্ নামাযের পর বিত্র নামায জামায়াতে আদায় করবে। রমযান মাস ব্যতীত তারাবীহ্ নামায জামায়াতে আদায় করা মাকরূহ্ (তানযীহী)। (মা-লা-বুদ্দাহ্ মিনহু, অনুরূপ আনোয়ারে মাহ্মুদাহ্ পৃষ্ঠা-৬৭-তে উল্লেখ আছে)

(২৮০)

من بعد عدد بست وسه را اخيار كردند درين عده ادماع شده بود. (مجموعهء فتاو .. عزيزى جصفه ১২৬)

অর্থঃ- অতঃপর (বিত্রসহ) তেইশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযকেই গ্রহণ করা হয়। আর উহার উপরই ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়। (মজমূয়ায়ে ফতওয়ায়ে আযীযী ১ম জিঃ পৃষ্ঠাঃ-১২৬)

২৮১)

 ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................

অর্থঃ- হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার নিজ খিলাফতকালে নিয়মিত বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের জামায়াতের ব্যবস্থা করেন। আর উক্ত বিশ রাকায়াতের উপর হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহুগণ উনাদের ঐক্যমত (ইজ্মা) রয়েছে। (ফতওয়ায়ে নঈমিয়াহ্ পৃষ্ঠা-১৩১)

(২৮২)

ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................

অর্থঃ- হানাফী মায্হাবের অনুসারীগণ বিত্র ব্যতীত বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েন। অথচ হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার হতে ছহীহ্ সনদে বর্ণিত আছে যে, নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রমযান ও রমযান ব্যতীত অন্য মাসে এগারো রাকায়াতের বেশী নামায পড়তেন না। তাহলে তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত, এ কথার দলীল কি?

জবাবঃ- হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা আলাইহিস সালাম হতে বর্ণিত হাদীছ শরীফখানা তাহাজ্জুদ নামাযের সাথে সম্পর্কযুক্ত। একারণেই রমযান ও গায়রে রমযানে একই সমান ছিল। আর উক্ত এগার রাকায়াত বিত্রসহ পড়তেন। ....... (সিহাহ্ সিত্তায় বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের কথা উল্লেখ নেই) কিন্তু মুছান্নেফ ইব্নে আবী শায়বা এবং সুনানে বায়হাক্বীতে হযরত ইব্নে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু হতে বর্ণিত আছে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযান মাসে একাকী বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ ও বিত্র (আলাদা) আদায় করেন। আর বায়হাক্বী উনার সুনানে, সহীহ্ সনদে হযরত সাইব ইব্নে ইয়াযীদ রদ্বিয়াল্লাহু হতে বর্ণনা করেন যে, লোকেরা রমযান মাসে হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায আদায় করেন। (ফতওয়ায়ে আব্দুল হাই লৌক্ষ্মবী পৃষ্ঠা-২২০)

(২৮৩-২৮৫)

ঊদূ লেখা ঢুকবে...........................................

অর্থঃ- প্রশ্ন- তারাবীহ্ নামায কত রাকায়াত?

জবাব- পাঁচ তারবীহাতে বিশ রাকায়াত। আর প্রত্যেক তারবীহা দুই সালামে চার রাকায়াত। (আলমগীরী, দুররুল মুখ্তার, রকুনুদ্দীন ফী শরহে ইমাদুদ্দীন পৃষ্ঠা-৯১)

২৮৬-২৮৭)

 ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................

অর্থঃ- তারাবীহ্ নামায ইজ্মা দ্বারা সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্ প্রমাণিত। উহা তরক করা জায়েয নেই এবং তারাবীহ্ নামায দশ সালামে বিশ রাকায়াত পড়বে। অর্থাৎ প্রত্যেক দুই রাকায়াত পর সালাম ফিরাবে। (রদ্দুল মোহ্তার, সুন্নী বেহেশ্তী জিওর ১ম হিঃ পৃষ্ঠা-৯২)

(২৮৮)

ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................

 অর্থঃ- মোটকথা এই যে, হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহুগণের ইজ্মার ভিত্তিতে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায সাব্যস্ত করেন। ফিকিরের বিষয় এই যে, বিনা দলীলে হযরত ওমর আলাইহিস সালাম (বিশ রাকায়াত নামাযের) আদেশ কি করে দিতে পারেন? (উক্ত আদেশ দলীলের ভিত্তিতেই দিয়েছেন) মুছান্নেফ ইব্নে আবী শায়বা, তিবরানী ও বায়হাক্বী শরীফে এ হাদীছ শরীফ উল্লেখ্য। যা হযরত আব্দুল্লাহ্ ইব্নে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযান মাসে বিত্র ব্যতীত বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েন। একজন রাবী, যিনি নিশ্চিতভাবে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহুগণ উনাদের পরবর্তী যুগের, উনার কারণে উক্ত হাদীছ শরীফকে জঈফ সাব্যস্ত করে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযকে অস্বীকার করা কোনভাবেই জায়েয হবেনা। হযরত আয়িশা আলাইহিস সালাম উনার হতে বর্ণিত হাদীছ শরীফ, যা রমযান ও গায়রে রমযান উভয়ের সাথে সম্পর্কিত, উহাকে দলীল হিসাবে পেশ করা কোনভাবেই জায়েয নয়, কেননা তারাবীহ্ নামায মাত্র দুই, তিন রাত্র পড়া হয়েছিল। আর উক্ত বিশ রাকায়াত সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ-এর উপর হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহুগণ উনাদের ইজ্মা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর এটা স্বীকৃত যে, আট রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের বিদ্য়াত, মায্হাব বিরোধীরা (গায়রে মুকাল্লিদরা) একশত বৎসর যাবৎ চালু করেছে। এটার পূর্বে কোথাও আট রাকায়াত তারাবীহ্ নামায জামায়াতে পড়া হয়েছে বলে প্রমাণিত নেই। (ফতওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ, ৪র্থ জিঃ পৃষ্ঠা-২৪১)

(২৮৯)



ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................

অর্থঃ- জমহুর হানাফীগণের সকলেই বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়া সুন্নত বলেছেন। আর মূলতঃ এটাই বিশুদ্ধ ও প্রাধান্যপ্রাপ্ত মত। এ কারণেই জমহুর হানাফীগণের বক্তব্যের বিপরীতে আল্লামা ইব্নে হুমাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বক্তব্য (আট রাকায়াত সুন্নত, বাকি বার রাকায়াত মুস্তাহাব) মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। (ফতওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ ৪র্থ জিঃ পৃষ্ঠা-২৪১)

(২৯০-২৯২)

ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................

অর্থঃ- বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহুগণ উনাদের ইজ্মা দ্বারা প্রমাণিত। প্রত্যেক দু’রাকায়াত এক সালামে, বিশ রাকায়াত দশ সালামে পড়বে। (দুররুল মোখ্তার, বাহ্রুর রায়েক, ইল্মুল ফিক্বাহ্ ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-১৭৯)

(২৯৩)

ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................

অর্থঃ- তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত। চার ইমামের কেউ বিশ রাকায়াতের চেয়ে কম বলেননি বা বর্ণনা করেননি। ..... আট রাকায়াতের বর্ণনাগুলো তাহাজ্জুদ নামাযের সাথে সম্পর্কযুক্ত। আর তারাবীহ্ ও তাহাজ্জুদ পৃথক পৃথক নামায। মুওয়াত্তায়ে মালেকে ইহা বর্ণিত আছে, হযরত ইয়াযীদ ইব্নে রোমান রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, লোকেরা হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে রমযান মাসে (বিত্রসহ) তেইশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েন। (কিফাইয়াতুল মুফ্তী ৩য় জিঃ পৃষ্ঠা-৩৬২)

(২৯৪)

ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................


অর্থঃ- মোটকথা হলো- হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতের শেষদিকে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহুগণ উনাদের ইজ্মা দ্বারা বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায প্রমাণিত হয়। সুতরাং উহা (উক্ত বিশ রাকায়াত নামায আদায় করা) সুন্নত। আর যে ব্যক্তি উক্ত সুন্নতকে অস্বীকার করলো, সে ভুল (গুণাহ) করলো। (লাতায়েফে কাসেমী পৃষ্ঠা-১৮)

(২৯৫-২৯৭)

ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................

অর্থঃ- উপরোক্ত কিতাবসমূহের অকাট্য বর্ণনা দ্বারা যখন দিবালোকের ন্যায় প্রমাণিত হলো যে, যদিও প্রথম দিকে কিছুটা মতভেদ ছিল, কিন্তু হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের উপর ইজ্মা প্রতিষ্ঠিত হয়। হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার পর অন্যান্য খোলাফা-ই-রাশেদীনগণ উনাদের (হযরত ওসমান গনী আলাইহিস সালাম এবং হযরত আলী আলাইহিস সালাম) উনাদের খিলাফতকালে (বিশ রাকায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত ইজ্মা) আরো শক্তিশালী বা মজবুত হয়। তাই এখন মুহাদ্দিস ও ফক্বীহ্গণের নিম্নোক্ত বক্তব্যে আশ্চর্য না হওয়া চাই। মুসলিম শরীফ-এর ব্যাখ্যাকার- আল্লামা নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “তারাবীহ্ নামায শেয়ারে ইসলাম-এর অন্তর্ভূক্ত এবং ঈদের নামাযের সাদৃশ্য।” (শরহে মুসলিম ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-২৫৯)    

          সুতরাং তারাবীহ্ নামায আট রাকায়াত আদায়কারী সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্ তরককারীর অন্তর্ভুক্ত হবে। (তা’লীকাতে হেদায়া ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১৩১, ফতওয়ায়ে রহীমিয়াহ্ ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-২৯৮)

(২৯৮)

ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................

অর্থঃ- প্রশ্ন- যদি কোন ব্যক্তি শারীরিক দূর্বলতা অথবা অন্যান্য অসুস্থতার কারণে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায না পড়তে পারে, শুধু আট রাকায়াত অথবা বার রাকায়াত পড়ে, তবে গুণাহ্গার হবে কি?

উত্তর ঃ- বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়া সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্ লেখা হয়েছে। উহার চেয়ে কম আদায়কারী সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্-এর তরককারী হবে। সুতরাং যে ওযর সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্ ছেড়ে দেয়ার জন্যে গ্রহণযোগ্য, তা তারাবীহ্ নামাযের ক্ষেত্রেও গ্রহণযোগ্য। নতুবা যদি দাঁড়ায়ে আদায় করা কষ্টকর হয়, তবে কষ্টের পরিমাণ অনুপাতে বসে নামায পড়বে। (ইমদাদুল ফতওয়া ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৪৯৫)

(২৯৯-৩০০)



ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................


অর্থঃ- হানাফীগণের নিকট সম্পূর্ণ তারাবীহ্ নামায হলো বিশ রাকায়াত। আর তা জামায়াতে আদায় করা সুন্নতে ক্বেফায়া। যদি মহল্লার সকলে তারাবীহ্ নামায ছেড়ে দেয়, তবে সকলেই সুন্নত তরক করার গুণাহে গুণাহ্গার হবে। (ফতওয়ায়ে মাহ্মূদীয়াহ্ ২য় জিঃ পৃঃ-৩৪৫, অনুরূপ কবীরীতে উল্লেখ আছে)

৩০১)


 ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................


অর্থঃ- প্রশ্ন- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তারাবীহ্ নামাযের জন্যে দু’একবার মসজিদে আসা ও আট রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়া জানা যায়। রমযানের বাকী রাত্রগুলো কি ঘরে আদায় করেছেন? আর রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হতে বিশ রাকায়াতের প্রমাণ রয়েছে কি?

উত্তর ঃ- হ্যাঁ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কয়েক রাত্র ব্যতীত তারাবীহ্ নামায জামায়াতে পড়েননি। আর উহার কারণও বলে দিয়েছেন যে, এই নামায (তারাবীহ্) মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অনেক প্রিয়, আমার উহা গুরুত্বের সাথে আদায় করার মধ্যে আশঙ্কা হচ্ছে যে, উহা ফরজ হয়ে যায় কিনা। সুতরাং প্রত্যেকেই নিজ ঘরে তারাবীহ্ নামায আদায় করে নেন। উহার দ্বারা এটা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও আবশ্যিকভাবে ঘরে তারাবীহ্ নামায আদায় করে নিতেন। আর হযরত ইব্নে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু উনার হতে স্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়েন। ইহা ইব্নে আবী শায়বা বর্ণনা করেন। ই’লাউস সুনানে এটাকে হাসান সহীহ্ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। (ইমদাদুল আহ্কাম ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৫৭১)

(৩০২)



ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................


অর্থঃ- মোটকথা হলো- বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হতেই প্রমাণিত আছে। আর হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও উনাদের পরবর্তীগণ এবং চার ইমাম ও অন্যান্যগণ এ ব্যাপারে একমত যে, তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াতের কম নয়। অতএব, উহার বিপরীত বক্তব্য পেশ করা গোমরাহী ও পথভ্রষ্টতা। (আহ্সানুল ফতওয়া ৩য় জিঃ পৃষ্ঠা-৫৪৮)

(৩০৩)

ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................


অর্থঃ- বরকতময় রমযান মাসে এশার ফরজ ও সুন্নত নামাজের পর বিশ রাকায়াত (তারাবীহ্) নামায পড়া সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্। (জাওয়াহিরুল ফিক্বাহ্ ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৩৮১)

(৩০৪)

ঊদূ লেখা ঢুকবে..............................................................................


অর্থঃ- তারাবীহ্ নামাযের বর্ণনা- রমযান মাসে এশার নামাজের পর ও বিত্র নামাযের পূর্বে দশ সালামে বিশ রাকায়াত (তারাবীহ্) নামায পড়া সুন্নত। বিত্র নামাযের পরে পড়ার কথাও এসেছে। আর তারাবীহ নামায জামায়াতে আদায় করা সুন্নতে ক্বেফায়া।  কুরআন শরীফ একবার খতম করা সুন্নতে ক্বেফায়া। প্রত্যেক চার রাকায়াত পর চার রাকায়াত পরিমাণ বসা সুন্নত। আর বিত্র নামায শুধুমাত্র রমযান মাসে জামায়াতে আদায় করবে (রমযান ব্যতীত অন্য মাসে জামায়াতে আদায় করবে না)। (আহ্সানুল মাসায়িল পৃষ্ঠা-৪৫)

          প্রিয় পাঠকবৃন্দ! আমাদের বহুল প্রচারিত, বাতিলের আতঙ্ক, সত্যের অতন্দ্র প্রহরী- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে ২৫ হতে ২৯তম সংখ্যা পর্যন্ত “বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” শেষ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া- আল্হাম্দুলিল্লাহ্।

          উপরোক্ত সংখ্যাগুলোতে উল্লেখিত দলীল ভিত্তিক বিস্তারিত আলোচনা দ্বারা ও অসংখ্য, অকাট্য, নির্ভরযোগ্য ও বিশ্ববিখ্যাত সর্বজন স্বীকৃত ও অনুসরণীয়- হাদীছ শরীফ, হাদীছ শরীফ-এর শরাহ্, ফতওয়া ও ফিক্বাহের কিতাবসমূহের বর্ণনা দ্বারা এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে,

১। রমযান মাসে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়া পুরুষ-মহিলা উভয়ের জন্যেই সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্। এটা সহীহ্ হাদীছ শরীফ, ইজ্মায়ে আযীমত, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু ও অনুসরণীয় ইমাম, মুজ্তাহিদগণের আমল ও ক্বাওল দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত।

২। তারাবীহ্ নামায আট রাকায়াত, এ দাবী সম্পূর্ণই মনগড়া, বানোয়াট, কাল্পনিক, অজ্ঞতাপ্রসূত ও গোমরাহীর নামান্তর। উপরন্ত ছহীহ্ হাদীছ শরীফ ও ইজ্মায়ে আযীমতকে অস্বীকার করার শামিল, যেটা সম্পূর্ণই কুফরীর অন্তর্ভূক্ত।

৩। তারাবীহ্ ও তাহাজ্জুদ ভিন্ন ভিন্ন নামায, এ দু’টোকে একই নামায বলা জিহালত বৈ কিছুই নয়। কেননা তারাবীহ্ জামায়াতে আদায় করা সুন্নতে ক্বেফায়া কিন্তু তাহাজ্জুদ নামায ঘোষণা দিয়ে জামায়াতে আদায় করা মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্।

৪। বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায শুধুমাত্র পুরুষের জন্যেই সুন্নতে মুয়াক্বাদায়ে ক্বেফায়া।

৫। মহিলাদের জন্যে তারাবীহ্ নামাযসহ সকল নামায মসজিদে গিয়ে জামায়াতে আদায় করা সর্বসম্মতিক্রমে মাকরূহ্ তাহ্রীমী।

৬। তারাবীহ্ নামাযে অন্ততঃ একবার কুরআন শরীফ খতম করা সুন্নতে ক্বেফায়া।, সুন্নতে মুয়াক্বাদাহ্ নয়।

৭। সময় ও স্থান নির্ধারণ করে দেয়ার শর্তে তারাবীহ্ নামাযে ও অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম বা পাঠ করে উজরত গ্রহণ করা ফতওয়াগ্রাহ্য মতে জায়েয।

৮। তারাবীহ্ নামাযের প্রতি চার রাকায়াতের পর বিশ্রাম নেয়া সুন্নত এবং প্রতি চার রাকায়াত পর পর উভয় হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয ও মুস্তাহাব।

৯। মুহাদ্দিসগণের মতে- হযরত আয়েশা সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার হতে বর্ণিত এগারো রাকায়াতের বর্ণনাটি তাহাজ্জুদ নামাযের সাথে সম্পর্কিত। সাথে সাথে এটাও প্রমাণিত হলো যে, সিহাহ্ সিত্তায় তারাবীহ্ নামাযের বিশেষ করে এগারো রাকায়াতের কোন বর্ণনাই নেই।

১০। হযরত ইব্নে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু হতে বর্ণিত, বিশ রাকায়াতের রেওয়ায়েতটি মুহাদ্দিসগণের মতে সহীহ্ ও হাসান পর্যায়ের, যদিও কেউ কেউ মতভেদ করেছেন।

১১। ছহীহ্ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযান মাসে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায পড়তেন।

১২। আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ওমর ইব্নুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের উপর হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহুগণের ইজ্মা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং উনারা সকলেই নিয়মিতভাবে বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামায আদায় করতেন।

১৩। চার ইমামসহ সকল ইমাম, মুজ্তাহিদ, মুহাদ্দিস ও ফক্বীহ্গণ বিশ রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের ক্বায়েল বা প্রবক্তা। উনাদের মধ্য হতে কেউ তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াতের কম বর্ণনা করেননি। অতএব, তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত হওয়ার ব্যাপারে উনাদের মধ্যেও ইজ্মা বা ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

১৪। মোটকথা হলো- ৩০৪ খানা অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীলের ভিত্তিতে সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে, আমাদের আহ্লে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত তথা হানাফী, শাফেয়ী, মালেকী ও হাম্বলী মায্হাবের মতানুসারে তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত। যেটা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু, ইমাম, মুজ্তাহিদ, আওলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিগণ উনাদের আমল ও ক্বাওল দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত।

          মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে উক্ত ফতওয়া মোতাবেক আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন!

[বিঃ দ্রঃ উল্লেখিত ৩০৪ খানা দলীল ছাড়াও আরো অনেক দলীল আমাদের নিকট রয়েছে, ফতওয়ার কলেবর অত্যাধিক বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কায় সেগুলো উল্লেখ করা হলোনা। তবে প্রয়োজনে আমরা তা পেশ করতে পারবো ইন্শাআল্লাহ।]


0 Comments: