হযরত
যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি দু’রাকয়াত পবিত্র নামায আদায় করলেন। সে
লোকটি উনাকে শহীদ করতে আসছে দেখে তিনি পাঠ করলেন,
يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ
অর্থ: ‘হে মহাসম্মানিত সর্বাধিক দয়ালু মহান
আল্লাহ পাক!’ তিনি এ ইসমে আ’যম মুবারক বলার সাথে সাথে গায়েবী আওয়াজ শোনা গেল, উনাকে শহীদ করো না। লোকটি হঠাৎ এ আওয়াজ শুনে বেশ ভয় পেয়ে
গেল এবং এদিক সেদিক কাউকে দেখতে না পেরে বেশ ঘাবড়ে গেল। কিছুক্ষণ পর পুনরায় এ
অপকর্মের ইচ্ছায় যখন সামনে এগিয়ে এলো তখণ হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
তিনি পুনরায় পাঠ করলেন,
يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ
অর্থ: ‘হে মহাসম্মানিত সর্বাধিক দয়ালু মহান
আল্লাহ পাক!’ লোকটি আবার গায়েবী আওয়াজ শুনতে পেল এবং পিছনে সরে গেল। তৃতীয় দফা
আবার যখন সামনে এগিয়ে আসতে লাগল, হযরত যায়িদ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পুনরায় পাঠ করলেন,
يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ
অর্থ: ‘হে মহাসম্মানিত সর্বাধিক দয়ালু মহান
আল্লাহ পাক!’
তৃতীয়বার ‘ইয়া আরহামার রহিমীন’ বলার সাথে সাথে
দেখা গেল,
এক ঘোড়সাওয়ার কোথা থেকে এসে সেই খচ্চরওয়ালা লোকটিকে বর্শা
দিয়ে আঘাত করলো, সেই বর্শা মুহূর্তের মধ্যে তার
বুক ভেদ করে পিঠ দিয়ে বের হয়ে গেল, সঙ্গে সঙ্গে লোকটি মারা গেল। এরপর সেই ঘোড়াওয়ালা হযরত যায়িদ ইবনে হারিছ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বলল, প্রথমবার আপনি যখন ‘ইয়া আরহামার রহিমীন’ এই সম্মানিত বাক্য মুবারক পাঠ করেছেন, তখন আমি ছিলাম সপ্তম আসমানে। দ্বিতীয়বার যখন আপনি পাঠ করলেন
তখন আমি প্রথম আসমানে এবং তৃতীয়বার যখন আপনি তা পাঠ করেন তখন আমি আপনার সামনে চলে
এলাম। সুবহানাল্লাহ! (সুনানে তিরমিযী শরীফ, মা’রিফাতুস সুনান, মুসতাদরিকে
হাকিম,
আদ দুয়ায়ে লিত-ত্ববারানী, শুয়াইবুল ঈমান, মা’রিফাতুস
সাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম,মাজালিসুল উলামা)
আল্লামা সুহাইলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, এ ঘটনাটি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আনুষ্ঠানিক দুনিয়াবী হায়াত মুবারকের সময়ই
সংঘটিত হয়েছিল। সুবহানাল্লাহ! সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম! সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
এক সম্মানিত নারী বলেন,
وَاللهِ مَا رَأَيْتُ أَسِيرًا قَطُّ خَيْرًا مِنْ حَضْرَتْ خُبَيْبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ وَاللهِ لَقَدْ وَجَدْتُهُ يَوْمًا يَأْكُلُ قِطْفًا مِنْ عِنَبٍ فِي يَدِهِ وَإِنَّهُ لَمُوثَقٌ بِالْحَدِيدِ وَمَا بِمَكَّةَ مِنْ ثَمَرَةٍ وَكَانَتْ تَقُولُ إِنَّهُ لَرِزْقٌ رَزَقَهُ اللهُ.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! হযরত খুবাইব
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার চেয়ে ভালো বন্দী আমি আর কখনো দেখি নাই। মহান
আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমি একদা উনার নিজ হাতে খেজুর ছড়া হতে খেজুর খেতে দেখেছি, অথচ তখন পবিত্র মক্কা শরীফে কোন ফলই পাওয়া যাচ্ছিল না। আর
তিনি ছিলেন সে দিনগুলোতে বন্দী ও বেঁড়িবাধা। আর এসব খেজুর দূর থেকে নিয়ে আসারও কোন
সুযোগ ছিল না। সুবহানাল্লাহ! কেউ কেউ বলেন, নিশ্চয়ই ইহা ছিলো মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এক প্রদত্ত বিশেষ রিযিক।”
সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, দালায়িলুন
নুবুওওয়াহ, সুনানে নাসায়ীল কুবরা, ইবনে হাব্বান, মুসনাদে আহমদ, হুলিয়াতুল
আউলিয়া,
উমদাতুল ক্বরী, হায়াতুস সাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, সীরতে মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ أَبِي أُمَامَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " إِنَّ لِلَّهِ مَلَكًا مُوَكَّلًا بِمَنْ يَقُولُ: يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ، فَمَنْ قَالَهَا ثَلَاثًا قَالَ الْمَلَكُ: إِنَّ أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ قَدْ أَقْبَلَ عَلَيْكَ فَاسْأَلْ"
অর্থ: “হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেছেন, নিশ্চয়ই মহান
আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে একজন সম্মানিত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম নিয়োজিত রয়েছেন।
উনার দায়িত্ব মুবারক হচ্ছে, যদি কোন বান্দা
মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারকের উদ্দেশ্যে, ‘ইয়া আরহামার রহিমীন’, তিনবার পাঠ করে, তখন নিশ্চয়ই সেই সম্মানিত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি তার
জবাবে বলেন, ‘আরহামুর রহিমীন’ আপনার প্রতিও
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার রহমত মুবারক বর্ষণ করতেছেন, আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে আবেদন করুন, দোয়া করুন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরিকে হাকিম, সীরতে মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সীরতে মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হযরত আবু মুয়াল্লাক আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু উনার জীবন মুবারকে এমন একটি ওয়াক্বীয়া মুবারক উল্লেখ করা হয়। বিশিষ্ট ছাহাবী
হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত আনাস ইবনে মালিক
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা বর্ণনা করেছেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহুম উনাদের মাঝে হযরত আবু মুয়াল্লাক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি
ছিলেন বড়ই ইবাদতগোজার, পরহেযগার ও
আল্লাহওয়ালা। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন একজন সম্মানিত ব্যবসায়ী ব্যক্তি। তিনি
ব্যবসা উপলক্ষে মাঝে মাঝেই ছফর মুবারক করতেন। এমনি এক ছফরে উনার পথরোধ করে দাঁড়ায়
এক ডাকাত। সেই ডাকাত ছিলো তীর তরবারি দ্বারা সজ্জিত।
ডাকাত
উনাকে বলল, টাকা-পয়সা, মাল-সামানা সব এখানে রাখুন, আমি এখনই আপনাকে শহীদ করবো। হযরত আবূ মুয়াল্লাক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
তিনি বললেন, এই নাও সকল সম্পদ ও টাকা, তোমারতো এগুলোর চাহিদা, আর সবই এখানে রয়েছে, তুমি এসব নিয়ে
নাও। আমার জানের ক্ষতি করার কি দরকার? ডাকাত বলল, আপনার জানেরই দরকার আমার। হযরত
আবূ মুয়াল্লাক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ডাকাতের এ জবাব শুনে বললেন, ঠিক আছে, তবে তুমি আমাকে
পবিত্র দু’রাকাত নামায পড়ার সুযোগ দাও। ডাকাত বলল, পবিত্র নামায আপনি যত পড়তে চান পড়তে পারেন। হযরত আবু মুয়াল্লাক রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনি তার কথা শুনে দু’রাকয়াত পবিত্র নামায আদায় করলেন।
হযরত আবূ মুয়াল্লাক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
তিনি পবিত্র নামায আদায়ের পর দোয়া মুবারকও করলেন,
يَا وَدُودُ يَا ذَا الْعَرْشِ الْمَجِيدُ، يَا فَعَّالًا لِمَا تُرِيدُ، أَسْأَلُكَ بِعِزِّكَ الَّذِي لَا يُرَامُ، وَمُلْكِكَ الَّذِي لَا يُضَامُ، وَبِنُورِكَ الَّذِي مَلَأَ أَرْكَانَ عَرْشِكَ أَنْ تَكْفِيَنِي شَرَّ هَذَا اللِّصِّ، يَا مُغِيثُ أَغِثْنِي،
অর্থ: “হে পরমপ্রিয় মহান আল্লাহ পাক! হে
মহাসম্মানিত আরশে মুয়াল্লা উনার অধিকারী। হে কার্যসম্পাদনকারী! আপনি যা ইচ্ছা পোষণ
করেন তা সম্পাদন করেন। আমি আপনার নিকট এমন সম্মান-ইজ্জত আরজী করছি যার মধ্যে ক্ষয়
নেই,
আপনার কাছে এমন ক্ষমতা চাচ্ছি যার মধ্যে কোন জুলুম নেই, আপনার কাছে এমন নূর মুবারক চাচ্ছি যা দ্বারা পূর্ণ করেছেন
মহাসম্মানিত আরশে মুয়াল্লার স্তম্ভ সমূহ। আর এটাই এই ক্ষতিসাধনকারীর ক্ষতিসাধন
থেকে আমাকে রক্ষা করবে। হে আশ্রয়দানকারী! আমাকে আশ্রয় দান করুন।” (আত তারগীব
ফিদ-দুয়া,
সীরাতুল হালাবিয়্যাহ)
তিনি উক্ত দোয়া মুবারক তিনবার করলেন। দোয়া শেষ
হতেই দেখলেন, হাতে বর্শা নিয়ে এক ঘোড়সাওয়ার ঐ
ডাকাতের দিকে এগিয়ে গেল এবং বর্শা দিয়ে ডাকাতের কর্মকান্ডের অবসান ঘটিয়ে দিলেন।
হযরত আবূ মুয়াল্লাক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, আপনি কে? বর্শাধারী
ব্যক্তি বললেন, আমি চতুর্থ আকাশের এক সম্মানিত
ফেরেশতা আলাইহিস সালাম । সুবহানাল্লাহ! (কারামাতুল আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহিম, আত-তারগীব ফিদ-দুয়া’, সীরাতুল হালাবিয়্যাহ, উসুদুল গবা, হায়াতুস সাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, সীরতে মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
অর্থাৎ কেউ বিপদগ্রস্ত হলে কোন বান্দা এবং উম্মত
যদি মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে ডাকে তাহলে সেই বান্দা ও উম্মতের ডাকে উনারা সারা দিয়ে থাকেন এবং সর্বপ্রকার
বিপদ-আপদ,
বালা-মুছীবত দূর করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপ ভাবে
স্বীয় মুর্শিদ বা শায়েখ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে বিপদ-আপদ বা যে কোন মুছীবতে
ডাকলে সেই সম্মানিত শাইখ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিও সেই মুরীদের ডাকে সাড়া দিয়ে
থাকেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
হযরত
ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, এ সম্মানিত রাজী’র ঘটনা প্রসঙ্গে যিনি খ¦লিক যিনি মালিক মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার পবিত্র
কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র আয়াত শরীফও নাযিল করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত যায়িদ ইবনে ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু উনার পরিবারের জনৈক আযাদকৃত ব্যক্তি, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার পরাধীন থেকে স্বাধীন হযরত
ইকরিমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অথবা হযরত সায়ীদ ইবনে জুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনাদের থেকে বর্ণনা করেন যে, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, হযরত মারসাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত আসিম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা যে অভিযানে ছিলেন এবং উনারা যখন কঠিন অবস্থার
সম্মুখীন হলেন তখন মুনাফিকরা বলতে লাগলো, ধিক ঐ পাগলদের জন্য যারা বিপদগ্রস্ত। নাউযূবিল্লাহ! না উনারা ঘরে বসে থাকলেন, আর না উনারা উনাদের সরদারদের বার্তা পৌঁছাতে পারলেন। যখন
মুনাফিকরা এসব বলাবলি করতেছিল তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি মুনাফিকদের এই উক্তি এবং
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্মানিত শাহাদতী শান
মুবারক উনার বিনিময়ে যে সুমহান মর্যাদা-মর্তবা মুবারকের অধিকারী উনারা হলেন সে
সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
وَمِنَ النَّاسِ مَن يُعْجِبُكَ قَوْلُهُ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيُشْهِدُ اللَّـهَ عَلَىٰ مَا فِي قَلْبِهِ وَهُوَ أَلَدُّ الْخِصَامِ.
অর্থ: মানুষের মধ্যে এমন লোক রয়েছে, পার্থিব জীবন সম্পর্কে যার কথাবার্তা (অর্থাৎ যার মৌখিক
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশ) আপনাকে চমৎকৃত করে এবং তারা
অন্তরে যা আছে সে সম্বন্ধে মহান আল্লাহ পাক উনাকে স্বাক্ষী রাখে (বস্তুত তাদের
অন্তর তাদের মৌখিক কথার পরিপন্থী)। আসলে সে কিন্তু ঘোর বিরোধী। (অর্থাৎ আপনার সাথে
যখন কথাবার্তা ও আলোচনা করে তখন তর্ক-বিতর্কের আশ্রয় নেয়)। নাউযূবিল্লাহ!
নাউযূবিল্লাহ! নাউযূবিল্লাহ! (পবিত্র সূরা বাকারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-২০৪)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ খানা রাজী’র মর্মান্তিক
ঘটনার সময় নাযিল হয়। এখানে মুনাফিকরা পার্থিব জীবন সম্বন্ধে কথা-বার্তা বলে
মুসলমান উনাদেরকে চমৎকৃত করতে চায়।
অর্থাৎ মুনাফিকদের কথা চাতুরতামূলক হয়ে থাকে আর সেটা তাদের কাছে সুমিষ্ট ও
আকর্ষণীয় বলে মনে হয়। কিন্তু তাদের কথাগুলোর মধ্যে কোন প্রকার উপকারিতা নেই। তাদের
কাছে এসব মনোমুগ্ধকর হলেও মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে এসবের কোনই মূল্য নেই। আর মুনাফিকদের কথা কেবল
পার্থিব স্বার্থ, মিথ্যাচারিতায়
ভরপুর হয়ে থাকে। আর তারা কথায় কথায় মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারকে
ক্বসম খেয়ে থাকে। নাউযূবিল্লাহ! প্রকৃত পক্ষে মুনাফিক তথা সমস্ত কাফির মুশরিকরা
মুসলমান উনাদের ঘোর বিরোধী ও বড় শত্রু। নাউযূবিল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত
রয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهِ السَّلَامُ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَبْغَضُ الرِّجَالِ إِلَى اللهِ الأَلَدُّ الْخَصِمُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা উম্মুল মু’মিনীন আছ
ছালিছাহ হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ওই ব্যক্তি সবচেয়ে ঘৃণ্য যে ‘আলাদ্দুল খছিম’ তথা
চরম কলহপ্রিয়।” নাউযূবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, নাসায়ী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
হযরত কাতাদা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি ‘আলাদ্দুল খছিম’ যে আবাধ্যতায় দৃঢ়, বাকচাতুর্যে দক্ষ এবং মিথ্যাচারে সুপ্রতিষ্ঠিত।
নাউযূবিল্লাহ! এজন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র, মুনাফিকদেরকে পশুর থেকেও অধম বা নিকৃষ্ট বলে দিয়েছেন। উল্লেখ্য রাজী’র ঘটনার
সময় মুনাফিকদের বদস্বভাব সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। (কাজেই মুনাফিকদের
সম্পর্কে সকল মুসলমানদেরকে সতর্ক থাকা খুবই জরুরী। কারণ এরা সম্মানিত ঈমান
বিধ্বংসকারী) (তাফসীরে মাযহারী)
স্মরণীয়
যে,
পবিত্র মক্কা শরীফের কাফির মুশরিকরা হযরত খুবাইব
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে শহীদ করার পর শুলিতে ঝুলিয়ে রাখে। নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত যুবাইর
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত মিকদাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে পাঠালেন
হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সম্মানিত জিসম মুবারক নিয়ে আসার জন্য।
উনারা যখন হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জিসম মুবারক খোঁজ করতে
করতে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার নিকটবর্তী তানয়ীম নামক এলাকায় পেীঁছলেন, তখন জানতে পারলেন চল্লিশজন কাফির মুশরিক হযরত খুবাইব
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জিসম মুবারক পাহারা দিচ্ছে। রাত্র যখন গভীর তখন এই
সমস্ত পাহারাদারেরা ঘুমিয়ে পড়লো। হযরত যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত
মিকদাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা দু’জন পাহারাদারদের ঘুমন্ত দেখে শুলি থেকে
হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জিসম মুবারক নামিয়ে ঘোড়ার উপর রাখলেন।
তখনো উনার সম্মানিত জিসম মুবারক তরতাজা ও সজীব ছিলো। সুবহানাল্লাহ! অথচ ততদিনে
হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সম্মানিত শহাদতী শান মুবারক প্রকাশের
চল্লিশ দিন গত হয়ে গেছে। কাফির মুশরিকরা এদিকে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেলো হযরত
খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জিসম মুবারক নেই, তখন তারা খোঁজ করতে নেমে পড়লো। তারা শেষ পর্যন্ত হযরত
যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত মিকদাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের
সন্ধান পেয়ে গেলো। যখন কাফির মুশরিকরা উক্ত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা
উনাদেরকে ধরার জন্য পিছু পিছু ছুটতে লাগলো তখন উনারা হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার জিসম মুবারক মাটিতে নামিয়ে রাখলেন। দেখা গেল, হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জিসম মুবারক
মাটিতে রাখার সাথে সাথে মাটি বিদীর্ণ হয়ে উনার সম্মানিত জিসম মুবারক মাটি আত্মস্থ
করে ফেললো। সুবহানাল্লাহ! এজন্য হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে
‘বালীউল আরদ’ তথা মাটি উনাকে গলাধঃকরণ করেছে বলা হয়ে থাকে। সুবহানাল্লাহ! (আল
বিদায়া ওয়ান নিহায়া, সীরতে মুস্তফা
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে শুলিতে চড়িয়ে
শহীদ করার পর উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক ক্বিবলামুখী হয়ে যায়। কাফির মুশরিকরা
উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক সম্মানিত ক্বিবলা মুখ থেকে অন্য দিকে ফিরিয়ে দিলে
পুনরায় উনার চেহারা মুবারক ক্বিবলার দিকে ফিরে যায়। এভাবে বার বার সম্মানিত
ক্বিবলার দিকে ফিরতে থাকলে কাফির মুশরিকরা শেষ পর্যন্ত অপারগ হয়ে যায় এবং তারা তা
করতে সক্ষম হয়নি। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি যখন শুনলেন
কাফির মুশরিকরা উনাকে শূলবিদ্ধ করতে সমবেত হচ্ছে তখন তিনি যে কবিতার পংক্তিগুলো
আবৃত্তি করেছিলেন তা নিম্মে উল্লেখ করা হলো,
لَقَدْ جَمّعَ الْأَحْزَابُ حَوْلِي وَأَلّبُوا ... قَبَائِلَهُمْ وَاسْتَجْمَعُوا كُلّ مَجْمِعِ
আমার পাশে (কাফির মুশরিকদের) সমস্ত
সম্প্রদায়গুলো সমবেত হয়েছে। তারা তাদের সকল গোত্রকে এখানে একত্রিত করেছে।
وَكُلّهُمْ مُبْدِي الْعَدَاوَةَ جَاهِدٌ ... عَلَيّ لِأَنّي فِي وِثَاقٍ بِمَضْبَعِ
তারা সকলে আমার প্রতি শত্রুতা প্রকাশ করছে, তারা করছে আমার উপর চরম জুলুম-নির্যাতন, নিশ্চয়ই আমি যে তাদের যজ্ঞস্থলে বন্দী।
وَقَدْ جَمَعُوا أَبْنَاءَهُمْ وَنِسَاءَهُمْ ... وَقُرّبْت مِنْ جِذْعٍ طَوِيلٍ مُمَنّعِ
তারা তাদের সন্তান-সন্ততি ও নারীদেরকেও জমায়েত
বা একত্রিত করেছে এবং আমাকে (শূলে চড়ানোর জন্য) দীর্ঘ, মজবুত ডালের নিকটবর্তী করা হয়েছে। নাউযূবিল্লাহ!
إلَى اللّهِ أَشْكُو غُرْبَتِي ثُمّ كُرْبَتِي ... وَمَا أَرْصَدَ الْأَحْزَاب لِي عِنْدَ مَصْرَعِي
আমার একাকিত্ব ও বিপদের ফরিয়াদ শুধু মহান আল্লাহ
পাক উনাকে (ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনাকেই) জানাই, আর শত্রুদল ও
যজ্ঞস্থলে আমার জন্য আয়োজন করেছে তারই।
فَذَا الْعَرْشِ صَبّرْنِي عَلَى مَا يُرَادُ بِي ... فَقَدْ بَضّعُوا الْحُمّى وَقَدْ يَاسَ مَطْمَعِي
অতঃপর যিনি মহাসম্মানিত আরশে মুয়াল্লা উনার
মালিক। আমার প্রতি তাদের যে অভিপ্রায়, তাতে আমার ছবর তথা ধৈর্য্য ধারণ করার ক্ষমতা দিন। তারাতো আমার জিসম মুবারকের
গোশতকে টুকরো টুকরো করার ইরাদা বা ইচ্ছা করেছে, এখন আমার জীবনের আশা নিরাশার রূপান্তরিত হয়েছে।
وَذَلِكَ فِي ذَاتِ الْإِلَهِ وَإِنْ يَشَأْ ... يُبَارِكْ عَلَى أَوْصَالِ شِلْوٍ مُمَزّعِ
আর এ সবতো মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি
মুবারকের উদ্দেশ্যে, তিনি চাইলে আমার
ছিন্ন ভিন্ন দেহেও বরকত দিতে পারেন। সুবহানাল্লাহ!
وَقَدْ خَيّرُونِي الْكُفْرَ وَالْمَوْتَ دُونَهُ ... وَقَدْ هَمَلْت عَيْنَايَ مِنْ غَيْرِ مَجْزَعِ
তারা আমাকে কুফরী কিংবা সম্মানিত শাহদতী শান
মুবারক প্রকাশ করা এর যে কোন একটি বেছে নিতে বলেছে। আর আমার দু’চোখ অশ্রু বহাচ্ছে, তবে তা ইন্তেকালের ভয়ে না (বরং মহান আল্লাহ পাক উনার এবং
উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার ভয়ে)। সুবহানাল্লাহ!
وَمَا بِي حِذَارِ الْمَوْتِ أَنّي لَمَيّتٌ ... وَلَكِنْ حَذَارِي جَحْمَ نَارٍ مُلَفّعِ
আমি মৃত্যুকে ভয় করি না, আমিতো একদিন ইন্তেকাল করবই, আমিতো জাহান্নামের লেলিহান আগুনকে ভয় করি, যা (কাফির মুশরিকদেরকে) আচ্ছন্ন করবে।
فَوَاَللّهِ مَا أَرْجُو إذَا مُتّ مُسْلِمًا ... عَلَى أَيّ جَنْبٍ كَانَ فِي اللّهِ مَصْرَعِي
মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমি কিছুই পরওয়া
করি না,
আমি আশা করি, মুসলমান তথা সম্মানিত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হিসাবে শাহাদতী শান
মুবারক প্রকাশ করছি। যে দিকেই মুখ করে থাকি না কেন, মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারকের উদ্দেশ্যেই আমার এ বিদায়।
সুবহানাল্লাহ!
فَلَسْت بِمُبْدٍ لِلْعَدُوّ تَخَشّعًا ... وَلَا جَزَعًا إنّي إلَى اللّهِ مَرْجِعِي
আমি
শত্রুর সামনে কোন ধরনের দুর্বলতা ও অস্থিরতা প্রকাশকারী নই, নিশ্চয়ই খ¦লিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার কাছেই আমার
প্রত্যাবর্তন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম! (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ, উমদাতুল ক্বরী শরহে ছহীহ বুখারী, সীরাতুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম
রহমতুল্লাহি আলাইহি, শরহে কুসত্বলানী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, রহমাতুল্লিল আলামীন, হায়াতুছ ছাহাবা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, আল বিদায়া ওয়ান
নিহায়া)
হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু তিনি হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার প্রতি এভাবে শোক প্রকাশ
করেন,
مَا بَالُ عَيْنَيْك لَا تَرْقا مَدَامِعُهَا ... سُحّا عَلَى الصّدْرِ مِثْلَ اللّؤْلُؤِ الْقَلِقِ
আপনার চোখের কি হলো? অশ্রুপাত করছেন না কেন? বিক্ষিপ্ত মুক্তোর ন্যায় অশ্রু ঝরছে না কেন বুকের উপর?
عَلَى حَضْرَتْ خُبَيْبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ فَتَى الْفِتْيَانِ قَدْ عَلِمُوا ... لَا فَشَلّ حِينَ تَنَقّاهُ وَلَا نَزِقِ
অশ্রু ঝরছেনা কেন হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার জন্যে? তিনিতো এক
নওজোয়ান,
টগবগে সম্মানিত যুবক। উনার সাক্ষাতে (কাফির মুশরিক) তারা
জেনে ফেলেছে যে, তিনি কাপুরুষও নন, দুর্বলও নন।
فَاذْهَبْ حَضْرَتْ خُبَيْبُ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ جَزَاك اللّهُ طَيّبَةً ... وَجَنّةُ الْخُلْدِ عِنْدَ الْحَوَرِ فِي الرّفُقِ
হে হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি
চলে যান। মহান আল্লাহ পাক তিনি বিনিময়ে আপনাকে উত্তম পুরুস্কার দিবেন এবং
চিরস্থায়ী সম্মানিত জান্নাত দিবেন যেখানে সাথী হবেন ও খিদমত করবেন পবিত্র
হূর-গিলমান।
مَاذَا تَقُولُونَ إنْ قَالَ حَضْرَتْ النّبِيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَكُمْ ... حِينَ الْمَلَائِكَةُ عَلَيْهِمُ السَّلَامِ الْأَبْرَارُ فِي الْأُفُقِ
উনার সম্পর্কে আপনারা আর কি বলবেন, যেখানে আপনাদের নবী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, উনার সম্মানে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা চারিদিক
থেকে উনার নিকট এসে পেীঁছেছেন। সুবহানাল্লাহ!
فِيمَ قَتَلْتُمْ شَهِيدَ اللّهِ فِي رَجُلٍ ... طَاغٍ قَدْ أَوْعَثَ فِي الْبُلْدَانِ وَالرّفَقِ
হে শত্রুপক্ষ! মহান আল্লাহ পাক উনার পথের এই
সম্মানিত ব্যক্তিকে কেন তোমরা শহীদ করলে? তোমরা উনাকে শহীদ করেছ এমন এক লোকের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে যে ছিল শহরে নগরে
এবং বন্ধু বান্ধবদের মধ্যে একজন কাট্টা খোদাদ্রোহী তথা কাট্টা কাফির। (সীরাতুন
নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, আর রওদ্বুল উনূফ)
হযরত
ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন। হযরত হাসসান বিন ছাবিত
রদ্বিায়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার
সম্মানিত শাহদতী শান মুবারক প্রকাশে ক্রন্দন করে আরও বলেন,
يَا عَيْنُ جُودِي بِدُفَعِ مِنْك مُنْسَكِبِ ... وَأَبْكِي حَضْرَتْ خُبَيْبًا رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ مَعَ الْفَتَيَانِ لَمْ يَؤُبْ
صَقْرًا تَوَسّطَ فِي الْأَنْصَارِ مَنْصِبَهُ ... سَمْحَ السّجِيّةِ مَحْضًا غَيْرَ مُؤْتَشِبِ
হে চোখ!
অশ্রু বহাও অবিশ্রান্ত ধারায়। হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জন্য
কাঁদ,
মর্যাদায় তিনি ছিলেন হযরত আনসার ছাহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মধ্যমণি। আর অত্যন্ত উদার চরিত্রের এবং
নির্ভেজাল কুলীন। সুবহানাল্লাহ!
قَدْ هَاجَ عَيْنِي عَلَى عِلّاتِ عَبْرَتُهَا ... إذْ قِيلَ نُصّ إلَى جِذْعٍ مِنْ الْخَشَبِ
কেঁদে
কেঁদে তো আমার চোখ শুকিয়ে গেছে, কিন্তু যখন বলা
হলো,
হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে শূলে চড়ান
হয়েছে,
তখন আবার সে শুকনো চোখে অশ্রুর জোয়ার এলো।
يَا أَيّهَا الرّاكِبُ الْغَادِي لِطِيّتِهِ ... أَبْلِغْ لَدَيْك وَعِيدًا لَيْسَ بِالْكَذِبِ
হে ভোরের যাত্রী! তুমি সে ইতরদের নিকট আমার এ
বার্তা পৌঁছে দাও, যা মিথ্যা নয়।
بَنِي كُهَيْبَةَ أَنّ الْحَرْبَ قَدْ لَقِحَتْ ... مَحْلُوبَهَا الصّابُ إذْ تُمْرَى لِمُحْتَلِبِ
হে বানী কুহাইবাহ! নিশ্চয়ই জিহাদের আগুন জ্বলবেই
এবং দুধ হবে হানজাল (ফল) অপেক্ষাও তিতা, যখন দোহনকারী তা দোহাবে।
فِيهَا أُسُودُ بَنِي النّجّارِ تَقْدُمُهُمْ ... شُهُبُ الْأَسِنّةِ فِي مُعْصَوْصَبٍ لَجِبِ
সে জিহাদে নাজ্জার গোত্রের দু’টি সিংহ থাকবে, যাদের সামনে থাকবে উল্কাপিন্ডতুল্য তীর ও তরবারিধারী এক
বিশাল সেনাবাহিনী। (সীরাতুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম
রহমতুল্লাহি আলাইহি, দালায়িলুন
নুবুওওয়াহ)
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আরোও
বলেন,
لَوْ كَانَ فِي الدّارِ قَرَمٌ مَاجِدٌ بَطَلُ ... أَلْوِي مِنْ الْقَوْمِ صَقْرٌ خَالُهُ حَضْرَتْ أَنَسُ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ
যদি এ জনবসতিতে সম্প্রদায়ের কোন মর্যাদাবান ও
সাহসী ব্যক্তি থাকতো! বাজপাক্ষীর মত ক্ষীপ্র হতেন তিনি আর উনার আক্রমণ এবং যিনি
হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ভাগ্নে,
إذَنْ وَجَدْت حَضْرَتْ خُبَيْبًا رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ مَجْلِسًا فَسِحًا ... وَلَمْ يُشَدّ عَلَيْك السّجْنُ وَالْحَرَسُ
তা হলে হে হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু! আপনি পেতেন এক প্রশাস্ত অবস্থান। কেউ আপনাকে বন্দী করতে আসতো না এবং আপনি
অন্তরীণ হতেন না।
وَلَمْ تَسُقْك إلَى التّنْعِيمِ زَعْنَفَةٌ ... مِنْ الْقَبَائِلِ مِنْهُمْ مَنْ نَفَتْ عُدَسُ
আপনাকে তানয়ীম নামক স্থানে টেনে হেঁচড়ে নিতে
পারত না,
সেই সব লোক যারা নিজেদের মিথ্যা বংশ পরিচয় দেয় (তারা বলে
আমরা আদাস গোত্রীয়) অথচ আদাস গোত্রের প্রধান পুরুষরা তাদের অস্বীকার করে।
دَلّوك غَدْرًا وَهُمْ فِيهَا أُولُو خُلُفٍ ... وَأَنْتَ ضَيْمٌ لَهَا فِي الدّارِ مُحْتَبَسُ
তারা আপনাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আসলে
বিশ্বাসঘাতকতাই তাদের চরিত্র। আহা, বন্দী অবস্থায় আপনিতো তাদের মাঝে অসহায় হয়ে পরেন। (আর রওদ্বুল উনূফ, সীরাতুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম
রহমতুল্লাহি আলাইহি)
হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার
সঙ্গে হুযাইল গোত্রের লোকেরা যে, আচরণ করেছিল, সে সম্পর্কে হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু তিনি তাদের প্রতি নিন্দা জানিয়ে বলেন,
أَبْلِغْ بَنِي عَمْرٍو بِأَنّ أَخَاهُمْ ... شَرَاهُ امْرِئِ قَدْ كَانَ لِلْغَدْرِ لَازِمَا
বানূ
আমরকে জানিয়ে দাও, নিশ্চয়ই তাদের
লোককে এমন এক লোক বিক্রি করেছে, বিশ্বাসঘাতকতা
করাই যার চরিত্র।
شَرَاهُ زُهَيْرُ بْنُ الْأَغَرّ وَجَامِعٌ ... وَكَانَا جَمِيعًا يَرْكَبَانِ الْمَحَارِمَا
উনাকে বিক্রি করেছে যুহাইর ইবনে আগার ও জামি’, অন্যায় অপরাধে লিপ্ত হওয়াই তাদের চরিত্র।
أَجَرْتُمْ فَلَمّا أَنْ أَجَرْتُمْ غَدَرْتُمْ ... وَكُنْتُمْ بِأَكْنَافِ الرّجِيعِ لَهَاذِمَا
তোমরা তাদের নিরাপত্তা দিলে, কিন্তু পরে নিরাপত্তা দিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করলে। তোমরা
রাজী’র প্রান্তরে ঘাপটি মেরে ছিলে শাণিত তরবারি হাতে নিয়ে।
فَلَيْتَ حَضْرَتْ خُبَيْبًا رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ لَمْ تَخُنْهُ أَمَانَةٌ ... وَلَيْتَ حَضْرَتْ خُبَيْبًا رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ كَانَ بِالْقَوْمِ عَالِمَا
হায়! হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
তিনি যদি বিশ্বাসঘাতকতার শিকার না হতেন। হায়! তিনি যদি শক্রদের সম্পর্কে ওয়াকিফহাল
থাকতেন। (সীরাতুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি
আলাইহি,
আর রওদ্বূল উনূফ)
হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যুহাইর ইবনে আগার ও জামি হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু উনাকে বিক্রি করেছিল। তারা উভয়ে হুযাইল গোত্রের লোক ছিলো।
হযরত
হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আরো বলেন,
إنْ سَرّك الْغَدْرُ صِرْفًا لَا مِزَاجَ لَهُ ... فَأْتِ الرّجِيعَ فَسَلْ عَنْ دَارِ لِحْيَانَ
তোমার অন্তর নিখাঁদ গাদ্দারীতে ভর্তি। (সেখানে
প্রতিশ্রুতি পালনের লেশমাত্রও নেই) তুমি রাজী’ অঞ্চলে যাও এবং লিহইয়ান গোত্র
সম্পর্কে জিজ্ঞেস কর।
قَوْمٌ تَوَاصَوْا بِأَكْلِ الْجَارِ بَيْنَهُمْ ... فَالْكَلْبُ وَالْقِرْدُ الْإِنْسَانُ مِثْلَانِ
ওরা এমন
এক সম্প্রদায় যে নিজেদের প্রতিবেশীকে খাওয়ার জন্যে একে অন্যকে ডেকে এনেছে। মূলতঃ
কুকুর,
বানর এবং ওই মানুষগুলো একই পর্যায়ের।
لَوْ يَنْطِقُ التّيْسُ يَوْمًا قَامَ يَخْطُبُهُمْ ... وَكَانَ ذَا شَرَفٍ فِيهِمْ وَذَا شَأْنِ
বন্য (পাঁঠা) যদি কখনো কথা বলতে পারত তবে সে
দাঁড়িয়ে তাদেরকে বক্তৃতা শুনাত এবং ওই ছাগল তাদের মধ্যে মর্যাদাবান ও সম্মানের
যোগ্য হতো। (সীরাতুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, আল মুফাছছাল ফি-তারীখিল আরব)
হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত আবূ যায়িদ আনসারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আমাকে
শুধুমাত্র শেষের পংক্তিটি আবৃত্তি করে শুনিয়েছেন।
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বানূ
হুযাইলের নিন্দায় আরোও বলেন,
سَالَتْ هُذَيْلٌ رَسُولَ اللّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاحِشَةً ... ضَلّتْ هُذَيْلٌ بِمَا سَالَتْ وَلَمْ تُصِبْ
হুযাইল গোত্রের লোকেরা নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে ব্যাভিচারের
অনুমতি চেয়েছিল তাদের এ প্রার্থনা সঠিক ছিলো না, এটা তাদের বিভ্রান্তি বৈ কিছুই ছিলো না। নাউযূবিল্লাহ!
سَالُوا رَسُولَهُمْ مَا لَيْسَ مُعْطِيهِمْ ... حَتّى الْمَمَاتِ وَكَانُوا سُبّةَ الْعَرَبِ
তারা তাদের রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে এমন বিষয় সুওয়াল করলো বা চাইল
যা তিনি দিবেন না, এমনকি মৃত্যুর
সম্মুখীন হতে হলেও না। এরাতো আরব জাতির কুলাঙ্গার।
وَلَنْ تَرَى لِهُذَيْلٍ دَاعِيًا أَبَدًا ... يَدْعُو لِمَكْرُمَةِ عَنْ مَنْزِلِ الْحَرْبِ
আপনি
হুযাইল গোত্রের মাঝে এমন কোন লোক দেখতে পাবেন না যে, লুট-তরাজ ছেড়ে সাধুপন্থা অবলম্বনের আহবান জানাবে।
لَقَدْ أَرَادُوا خِلَالَ الْفُحْشِ وَيْحُهُمْ ... وَأَنْ يَحِلّوا حَرَامًا كَانَ فِي الْكُتُبِ
ওরা অশ্লীলতার অনুমোদন চায়। নাউযূবিল্লাহ! ছিঃ
ওরা কিতাবে বর্ণিত হারামকে হালাল করার অভিলাষী।
হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু তিনি বানূ হুযাইলের নিন্দা করে আরোও বলেন,
لَعَمْرِي لَقَدْ شَانَتْ هُذَيْلُ بْنُ مُدْرِكٍ ... أَحَادِيثُ كَانَتْ فِي حَضْرَتْ خُبَيْبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ وَ حَضْرَتْ عَاصِمِ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ
আমার জীবনের ক্বসম! হুযাইল গোত্রকে কলঙ্কিত
করেছে সেই আচরণ যা তারা হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত আসিম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের প্রতি করেছে।
أَحَادِيثُ لِحْيَانٍ صَلّوْا بِقَبِيحِهَا ... وَلِحْيَانُ جَرّامُونَ شَرّ الْجَرَائِمِ
লিহয়ান
গোত্র দুস্কৃতির পক্ষে জড়িয়ে গেছে। আসলে এ গোত্রটি একটি জঘন্যতম অপরাধী।
أُنَاسٌ هُمْ مِنْ قَوْمِهِمْ مِنْ صَمِيمِهِمْ ... بِمَنْزِلَةِ الزّمْعَانِ دُبْرَ الْقَوَادِمِ
এরাতো
সেই লোক,
যাদের শ্রেষ্ঠ কুলীনদের মূল্য চতুস্পদ জানোয়ারের সামনের
পায়ের পেছনের পশম তুল্য।
هُمْ غَدَرُوا يَوْمَ الرّجِيعِ وَأَسْلَمَتْ ... أَمَانَتُهُمْ ذَا عِفّةٍ وَمَكَارِمِ
রাজী’র
ঘটনার দিন তারা চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তাদের বিশ্বস্ততার অবস্থা এই ছিল যে তারা
একজন সচ্চরিত্র উচ্চ সম্মানিত ব্যক্তির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে অসহায়ভাবে উনাকে
ছেড়ে দিয়েছে। নাউযূবিল্লাহ!
رَسُولُ رَسُولِ اللّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غَدْرًا وَلَمْ تَكُنْ ... هُذَيْلٌ تَوَفّى مُنْكَرَاتِ الْمَحَارِمِ
তারা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতিনিধির সাথে
গাদ্দারী করেছে। প্রকৃতপক্ষে হুযাইল গোত্রের লোকেরা ঘৃণ্যতম অপরাধ থেকেও বেঁচে
থাকে না।
فَسَوْفُ يَرَوْنَ النّصْرَ يَوْمًا عَلَيْهِمْ ... بِقَتْلِ الّذِي تَحْمِيهِ دُونَ الْجَرَائِمِ
অচিরেই
তারা দেখবে, তাদের বিরুদ্ধে অন্যদের সাহায্য
করা হচ্ছে, সেই মহান ব্যক্তিকে শহীদ করার
পরিণতিতে,
উনারা উনার জিসম মুবারককে কাফিরদের হাত থেকে হিফাযত
করেছিলেন।
أَبَابِيلُ دُبْرٍ شُمّسٍ دُونَ لَحْمِهِ ... حَمَتْ لَحْمَ شَهّادٍ عِظَامَ الْمَلَاحِمِ
ঝাঁকে
ঝাঁকে বোলতা। তারা উনার জিসম মুবারকের পক্ষে রুখে দাঁড়ায়। তারা রক্ষা করে সেই মহান
সিপাহীর সম্মানিত জিসম মুবারককে, যিনি বড় বড়
রণক্ষেত্রে নৈপুণ্য দেখিয়ে ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
لَعَلّ هُذَيْلًا أَنْ يَرَوْا بِمُصَابِهِ ... مَصَارِعَ قَتْلَى أَوْ مَقَامًا لِمَأْتَمِ
নিশ্চয়ই তারাও উনাকে শহীদ করার পরিণামে দেখতে
পাবে নিজেদের লোকদের হত্যা স্থল, কিংবা সেই জায়গা, যেখানে তাদের জন্য বিলাপ করবে শোকাতুরা রমণীকুল।
وَنُوقِعُ فِيهِمْ وَقْعَةً ذَاتَ صَوْلَةٍ ... يُوَافِي بِهَا الرّكْبَانُ أَهْلَ الْمَوَاسِمِ
আমরা
তাদের উপর হানব এমন কঠিন আঘাত, যা দ্বারা
চিহ্নিত উষ্ট্রারোহীদের পরিপূর্ণ বদলা হয়ে যাবে।
قَبِيلَةٌ لَيْسَ الْوَفَاءُ يُهِمّهُمْ ... وَإِنْ ظَلَمُوا ثُمّ يَدْفَعُوا كَفّ ظَالِمٍ
তারা
একটি ক্ষুদ্র গোত্র। তাদের অন্তরে ওয়াদা পালনের কোন গুরুত্ব নেই। তাদের প্রতি
যুলুম করা হলে, তারা যালিমের হাত প্রতিহত করতে
পারে না।
إذَا النّاسُ حَلّوا بِالْفَضَاءِ رَأَيْتهمْ ... بِمَجْرَى مَسِيلِ الْمَاءِ بَيْنَ الْمَخَارِمِ
মানুষ যখন রণক্ষেত্রে নেমে আসবে তখন আপনি তাদের
নিম্ন ভূমিতে পানির নালার ধারে পড়ে থাকতে দেখবেন।
مَحْلُهُمْ دَارُ الْبَوَارِ وَرَأْيُهُمْ ... إذَا نَابَهُمْ أَمْرٌ كَرَأْيِ الْبَهَائِمِ
তাদের ঠিকানা হবে ধ্বংসস্থল, তাদের উপর যখন বিপদ আসবে, তখন তাদের সিন্ধান্ত হবে চতুস্পদ জন্তুর সিদ্ধান্তের মত।
بِأَمْرِ رَسُولِ اللّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إنّ رَسُولَهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ... رَأَى رَأْيَ ذِي حَزْمٍ بِلِحْيَانَ عَالَمِ
আমরা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ
মুবারকে এ কাজ করবো। (ইনশায়াল্লাহ!) জেনে রাখ, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
বানূ লিহয়ান সম্পর্কে ওয়াকিফহাল। তাদের সম্পর্কে উনার এ সিদ্ধান্ত চির অটল।
সুবহানাল্লাহ! (সীরাতুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম
রহমতুল্লাহি আলাইহি, উসদুল গবা, ওয়াকয়াতু ছফীন, উয়ূনুল আছার, আল বিদায়া ওয়ান
নিহায়া)
قَبِيلَةٌ لَيْسَ الْوَفَاءُ يُهِمّهُمْ ... وَإِنْ ظَلَمُوا ثُمّ يَدْفَعُوا كَفّ ظَالِمٍ
তারা
একটি ক্ষুদ্র গোত্র। তাদের অন্তরে ওয়াদা পালনের কোন গুরুত্ব নেই। তাদের প্রতি
যুলুম করা হলে, তারা যালিমদের হাত প্রতিহত করতে
পারে না।
إذَا النّاسُ حَلّوا بِالْفَضَاءِ رَأَيْتهمْ ... بِمَجْرَى مَسِيلِ الْمَاءِ بَيْنَ الْمَخَارِمِ
মানুষ
যখন যুদ্ধ ক্ষেত্রে নেমে আসবে তখন আপনি তাদেরকে নি¤œ ভূমিতে নালার ধারে পড়ে থাকতে
দেখবেন।
مَحْلُهُمْ دَارُ الْبَوَارِ وَرَأْيُهُمْ ... إذَا نَابَهُمْ أَمْرٌ كَرَأْيِ الْبَهَائِمِ
তাদের
ঠিকানা হবে ধ্বংসস্থল, তাদের উপর যখন
বিপদ আসবে, তখন তাদের সিদ্ধান্ত হবে চতুস্পদ
জন্তুর সিদ্ধান্তের মত। নাউযূবিল্লাহ! (সীরাতুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম- ইবনে হিশার রহমতুল্লাহি আলাইহি, আর রওদ্বুল উনূফ)
হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু তিনি হুযাইল গোত্রের নিন্দায় বলেন,
لَحَى اللّهُ لِحْيَانًا فَلَيْسَتْ دِمَاؤُهُمْ ... لَنَا مِنْ قَتِيلِي غَدْرَةٍ بِوَفَاءِ
লিহয়ান গোত্রকে মহান আল্লাহ পাক তিনি চরম শাস্তি
দিন। তাদের সকলের রক্ত আমাদের কাছে সেই দু’জন উনাদের রক্তের সমান নয়, উনাদের সাথে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করে উনাদেরকে শহীদ করেছে।
নাউযূবিল্লাহ!
هُمُو قَتَلُوا يَوْمَ الرّجِيعِ ابْنَ حُرّةٍ ... أَخَا ثِقَةٍ فِي وُدّهِ وَصَفَاءِ
রাজী’র
দিন তারা শহীদ করেছে এমন এক সম্মানিত ব্যক্তিকে, যিনি ছিলেন এক সম্মানিত স্বাধীন নারীর সম্মানিত পুত্র সন্তান। সুবহানাল্লাহ!
মুহব্বত ও নিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত বিশ্বাসভাজন। সুবহানাল্লাহ!
فَلَوْ قُتِلُوا يَوْمَ الرّجِيعِ بِأَسْرِهِمْ ... بِذِي الدّبْرِ مَا كَانُوا لَهُ بِكِفَاءِ
রাজী’র
ঘটনায় নিহত যু’দ-দাবর (অর্থাৎ কাফির মুশরিকদের হাত থেকে হযরত আসিম রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার জিসম মুবারক হিফাযতে মহান আল্লাহ পাক তিনি এক ঝাঁক বোলতা নিযুক্ত
করেছিলেন। তাই উনার লক্বব মুবারক যু’দ দাবর হয়েছে) উনার একার বদলে যদি তাদের
সকলকেও হত্যা করা হয়, তবুও তার
বিন্দুমাত্র প্রতিকার বা প্রতিশোধ হবে না। সুবহানাল্লাহ!
قَتِيلٌ حَمَتْهُ الدّبْرُ بَيْنَ بُيُوتِهِمْ ... لَدَى أَهْلِ كُفْرٍ ظَاهِرٍ وَجَفَاءِ
তিনি
শাহাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর বোলতার ঝাঁক তাদের এলাকাতেই তাদের চোখের সামনে
উনার জিসম মুবারক হিফাযত করেছিল। বস্তুুতঃ তাদের কুফরী গোপন নয়, বরং তারা প্রকাশ্য পাপাচারী।
فَقَدْ قَتَلَتْ لِحْيَانُ أَكْرَمَ مِنْهُمْ ... وَبَاعُوا حَضْرَتْ خُبَيْبًا رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ وَيْلَهُمْ بِلِفَاءِ
লিহয়ান
গোত্র শহীদ করেছে তাদের চাইতে সর্বত্তোম ব্যক্তিকে। আর তারা বিক্রয় করেছে হযরত
খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে তুচ্ছ বিনিময়ে, কাজেই তারা শোচনীয়ভাবে ধ্বংস হোক।
فَأُفّ لِلِحْيَانَ عَلَى كُلّ حَالِهِ ... عَلَى ذِكْرِهِمْ فِي الذّكْرِ كُلّ عِفَاءِ
ধিক্কার সর্বাবস্থায় বানূ লিহইয়ানের জন্য, ইতিহাসের পাতা হতে তাদের স্মৃতি মুছে যাক।
قَبِيلَةٌ بِاللّؤْمِ وَالْغَدْرِ تَغْتَرِي ... فَلَمْ تَمَسّ يَخْفِي لَوْمُهَا بِخِفَاءِ
এরা একটি
নীচাশয় গোত্র, যারা বিশ্বাসঘাতকতায় একে অপরকে উৎসাহ যোগায়। নাউযূবিল্লাহ! ফলে তাদের নীচতা আর মোটেই গোপন থাকে
না।
فَلَوْ قُتِلُوا لَمْ تُوفِ مِنْهُ دِمَاؤُهُمْ ... بَلَى إنّ قَتْلَ الْقَاتِلِيهِ شِفَائِي
তাদের
সকলকে যদি হত্যা করা হয়, তবুও তাদের
সকলের রক্ত দ্বারা উনার পবিত্র রক্তের ক্ষতিপূরণ হবে না। হ্যাঁ, সে ঘাতকদের হত্যা করতে পারলে আমার অন্তর কিছু শান্তি পেত।
فَإِلّا أَمُتْ أَذْعَرُ هُذَيْلًا بِغَارَةِ ... كَغَادِي الْجَهَامِ الْمُغْتَدِي بِإِفَاءِ
আমার যদি
বিদায় না হয়, তবে আমি এক প্রত্যুষে এই গোত্রের
উপর এমন এক আক্রমণ চালাব, যা হবে
মুষলধারায় বর্ষণের মত। তারপর আমি গনীমতের মাল নিয়ে ফিরে আসব।
بِأَمْرِ رَسُولِ اللّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالْأَمْرُ أَمْرُهُ ... يَبِيت لِلِحْيَانَ الْخَنَا بِفِنَاءِ
আর তা
করবো মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ মুবারকে। উনার নির্দেশ মুবারকই চূড়ান্ত নির্দেশ
মুবারক। লিহইয়ান গোত্রের বিশ্বাসঘাতকেরা খোলা মাঠে রাত কাটাচ্ছিল।
يُصْبِحُ قَوْمًا بِالرّجِيعِ كَأَنّهُمْ ... جِدَاءَ شِتَاءٍ بِتْنَ غَيْرَ دِفَاءِ
প্রভাত হতেই তারা রাজী’তে এসে সেই মহান বক্তির
উপর হামলা করে। তখন তাদের মনে হচ্ছিল তারা শীতকালীন ছাগ ছানা তুল্য কাপুরুষ, যারা সারারাত একটুও তাপের পরশ পায়নি। (সীরাতুন নাবী
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি, উসদুল গবা, ওয়াকয়াতু ছফীন, উয়ূনুল আছার, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)
হযরত
হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তাদেরকে ব্যঙ্গ করে আরও বলেন,
فَلَا وَاَللّهِ مَا تَدْرِي هُذَيْلٌ ... أَصَافٍ مَاءُ زَمْزَمَ أَمْ مَشُوبُ
না, না- মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! বানূ হুযাইল জানে না পবিত্র যমযমের পানি মুবারক
পরিস্কার না ঘোলা।
وَلَا لَهُمْ إذَا اعْتَمَرُوا وَحَجّوا ... مِنْ الْحِجْرَيْنِ وَالْمَسْعَى نَصِيبُ
নিস্ফল তাদের হজ্জ ও উমরা এবং পবিত্র হাজরে
আসওয়াদ চুম্বন, বৃথা তাদের মাকামে ইবরাহীমে ছলাত
আদায় এবং সাফা-মারওয়া প্রদক্ষিণ।
وَلَكِنّ الرّجِيعَ لَهُمْ مَحَلّ ... بِهِ اللّؤْمُ الْمُبَيّنُ وَالْعُيُوبُ
হ্যাঁ রাজী’তে তারা বেশ কামিয়েছে, অনেক নিন্দাবাক্য, প্রচুর কলঙ্ক, দেদার কলঙ্ক।
তারাতো গৃহকোণে লুকিয়ে রাখে রাতের খাবার তুল্য (এক লোকমাতেই যা সাবাড় হয়ে যায়)।
كَأَنّهُمْ لَدَى الكّنّات أُصْلًا ... تُيُوسٌ بِالْحِجَازِ لَهَا نَبِيبُ
আর তারা
যখন হিজায তথা সম্মানিত মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদীনা শরীফে আসে তখন পবিত্র কুরবানীর
বকরীর মত চিৎকার করতো।
هُمْ غَرّوا بِذِمّتِهِمْ حَضْرَتْ خُبَيْبًا رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ ... فَبِئْسَ الْعَهْدُ عَهْدُهُمْ الْكَذُوبُ
তারা
প্রতিশ্রুতি দেয়া সত্ত্বেও হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সাথে
প্রতারণা করেছে। তাদের অঙ্গীকার অতি নিকৃষ্ট, তাতো নির্জলা মিথ্যা।
হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, শেষোক্ত পংক্তিটি হযরত আবূ যায়িদ আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার।
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত
খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ও উনার সঙ্গীদের প্রতি শোক প্রকাশ করে আরো
বলেন,
صَلّى الْإِلَهُ عَلَى الّذِينَ تَتَابَعُوا ... يَوْمَ الرّجِيعِ فَأُكْرِمُوا وَأُثِيبُوا
মহান
আল্লাহ পাক উনার রহমত বর্ষণ করুন উনাদের প্রতি, উনারা রাজী’ দিবসে একের পর এক সম্মানিত শাহাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, পরিণামে উনারা হয়েছেন মর্যাদাপ্রাপ্ত ও পুরস্কৃত।
সুবহানাল্লাহ! সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সুবহানা
মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
رَأْسُ السّرِيّةِ حَضْرَتْ مَرْثَدٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ وَأَمِيرُهُمْ ... وَ حَضْرَتْ ابْنُ الْبُكَيْرِ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ إمَامُهُمْ وَ حَضْرَتْ خُبَيْبُ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ
উনাদের মধ্যে দলের আমীর ছিলেন হযরত মারসাদ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি, আর উনাদের মধ্যে
ইমাম ছিলেন হযরত ইবনে বুকাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত খুবাইব
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা।
وَ وَ حَضْرَتْ ابْنٌ لِطَارِقِ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ وَ وَ حَضْرَتْ ابْنُ دَثْنَة رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ مِنْهُمْ ... وَافَاهُ ثَمّ حِمَامُهُ الْمَكْتُوبُ
উনাদের
মধ্যে হযরত ইবনে তারিক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত ইবনে দাসিনা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুও ছিলেন। উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় প্রতিশ্রুতি
রক্ষা করে পরিশেষে অবধারিত সম্মানিত শহাদাতী শান মুবারক গ্রহণ করেছেন।
وَ حَضْرَتْ الْعَاصِمُ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ الْمَقْتُولُ عِنْدَ رَجِيعِهِمْ ... كَسَبَ الْمَعَالِيَ إنّهُ لَكَسُوبُ
রাজী’
প্রান্তরে আরও শাহাদাতী শান মুবারক গ্রহণ করেছেন হযরত আসিম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু তিনি, আর লাভ করেছেন উচ্চাসন এবং
এক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অত্যন্ত তৎপর।
مَنَعَ الْمَقَادَةَ أَنْ يَنَالُوا ظَهْرَهُ ... حَتّى يُجَالِدُ إنّهُ لَنُجِيبُ
তিনি
কোনরূপ নমনীয়নতা ও দুর্বলতার প্রশ্রয় দেননি, যতক্ষণ না তিনি মুকাবিলা করেছেন সাহসিকতার সাথে; বস্তুত তিনি ছিলেন একজন শরীফ ব্যক্তি ছিলেন।
(সীরাতুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি, উয়ূনুল আছার, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)
0 Comments:
Post a Comment