ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া ( ১ নং )


ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া

গবেষণা কেন্দ্র- মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ

بسم الله الرحمن الرحيم
          মহান আল্লাহ পাক উনার অসীম শুকরিয়া ও রহমত যে, মহান আাল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ উনার গবেষণা পরিষদের পক্ষ থেকে যথাক্রমে টুপি, অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান ও নিয়ত করে মাজার শরীফ জিয়ারতের পর বর্তমানে ছবি সংক্রান্ত বিষয়ে চতুর্থ ফতওয়া প্রকাশ করার তাওফিক এনায়েত করেছেন। প্রদত্ত ফতওয়া বিভিন্ন আকলী এবং নকলী দলীল-আদীল্লার ভিত্তিতে দেয়া হয়েছে। ছবি সম্পর্কে যাদের ছহীহ বুঝ নেই তাদের উচিৎ হবে প্রদত্ত ফতওয়া বুঝে তদানুযায়ী আমল করা। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
فس علو اهل الذكر ان كنتم لا تعلمون.
অর্থ:- সুতরাং অভিজ্ঞ লোকদের নিকট জিজ্ঞাসা করে দেখ, যদি তোমাদের জানা না থাকে।(পবিত্র সুরা নহল শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-৪৩)    
কিছু কিছু লোক কিল্লাত ইলম কিল্লাত ফাহম অর্থাৎ কম জ্ঞান, কম বুঝের কারণে ছবি সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে না পেরে সমাজে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। অথচ মহান আল্লাহ পাক উনার রসুল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
 عن ابى هريرة رضى الله تعلى عنه قال قال رسول الل صلى الل عليه وسلم من افتى بغير علم كان اثمه على من افتا (رواة ابو دادود)

অর্থ:- হযরত আবু হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তিকে ইলম ব্যতীত ফতওয়া দেয়া হয়েছে, অতঃপর সে তদানুযায়ী কাজ করেছে, তার গোনাহ যে তাকে ফতওয়া দিয়েছে তার উপরই পড়বে। (আবু দাউদ শরীফ)      সুতরাং উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা বোঝা যাচ্ছে ফতওয়া সব সময় পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র কিয়াস শরীফ উনাদের ভিত্তিতে দিতে হবে। মনগড়াভাবে দেয়া যাবেনা। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক ফরমান,
قل هاتوابرها نكم ان كنتم صد قين.
অর্থ:- আপনি বলে দিন, নিজ নিজ দলীল আন-যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক ।
          আমাদের আলোচ্য ফতওয়ার মূল বিষয় হচ্ছে ছবি। কোনটা ছবি আর কোনটা ছবি নয়; অনেকে অনেক ইখতিলাফ (মতভেদ) করেছেন। মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ রহমত মুবারক উনার দ্বারা আমরা ছবির একটি পবিত্র শরীয়ত সম্মত সংজ্ঞা দিতে সক্ষম হয়েছি।
ছবির সংজ্ঞা: আলোর প্রতিফলণ বা প্রতিসরণ ব্যতীত অন্য যে কোন পদ্ধতিতেই হোক না কেন, যদি কোন বস্তু বা জীব যে কোন স্থানে আকার আকৃতিতে দৃশ্যমান হয়, তবে সেই আকার আকৃতিটিকে পবিত্র শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে উহার ছবি বলে। পক্ষান্তরে পবিত্র শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে কোন বস্তু বা জীব যেখানেই যে অবস্থায়ই থাকুক, আলোর প্রতিফলণ বা প্রতিসরণ বা উভয়ের মাধ্যমে যদি তা যে কোন স্থানে আকার আকৃতিতে দৃশ্যমান হয় তবে সেই আকার আকৃতিটি ছবি নয়। কোন জানদার বা প্রাণীর ছবি আকাঁ, ছবি তোলা, ছবি তৈরী করা, রাখা, দেখা পবিত্র শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে নাজায়েয, হারাম। ছবির ধারনাকে ভালভাবে বোঝানোর জন্য আনুষাঙ্গিক কিছু আলোচনা করা হলো।
(ক) আলোর  প্রতিফলন:- আলোকরশ্মি যখন বায়ু বা অন্য কোন স্বচ্ছ মাধ্যমের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় অন্য কোন মাধ্যমে বাধা পায়, তখন দুই মাধ্যমের বিভেদ তল থেকে কিছু পরিমাণ আলো প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে। আলোর বাধা পেয়ে এই ফিরে আসাকে আলোর প্রতিফলণ বলে।  আরও সুক্ষ্মভাবে ব্যাখ্যা করলে বলা যায় যে আলো হচ্ছে এক প্রকার ঊষবপঃৎড়সধমরহবঃরপ ডধাব  এই ডধাব এর নির্দিষ্ট ঋৎবয়ঁবহপ থাকে।
আলোর ক্ষুদ্রতম অংশকে বলে ফোটন (ঢ়যড়ঃড়হ)। এই আলো যখন কোন বস্তুর উপর পড়ে তখন সেই বস্তু থেকে অসংখ্য প্রতিফলিত ফোটন বের হয়। যাদের ঋৎবয়ঁবহপু ভিন্ন রকম। ফলে আমরা বস্তুটির বিভিন্ন অংশকে বিভিন্ন রকম দেখতে পাই। অর্থাৎ বস্তুটিকে আমরা হুবহু ঐ বস্তুর মত দেখতে পাই। আলোর এই প্রতিফলণ নির্ভর করে প্রতিফলকের গুণাগুণের উপর। এগুলো হলো (১) প্রতিফলকের স্বচ্ছতা ও মসৃনতা (২) আলোর গতিপথে বাধা সৃষ্টি করা এবং (৩) প্রতিফলকটির আলো শোষণ না করার ক্ষমতা । অর্থাৎ কোন বস্তু যত বেশী স্বচ্ছ ও মসৃণ হবে এবং সেটাতে যদি আলো ভেদ না করতে পারে এবং আলো শোষণ করার ক্ষমাতা যত কম হবে, সেই বস্তু তত ভাল আলোর প্রতিফলণ ঘটাতে পারে। আলোর প্রতিফলণ যত ভাল হবে প্রতিফলিত আলোর ঋৎবয়ঁবহপু তত কাছাকছি হবে। (খ) আলোর প্রতিসরণ ঃ- আলোকরশ্মি এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে প্রবেশ করার সময় দুই মাধ্যমের বিভেদ তলে আলোকরশ্মি দিক পরিবর্তন করে। একে আলোর প্রতিসরণ বলে। একই মাধ্যমে ঘনত্বের তারতম্যের কারণেও প্রতিসরণ হয়ে থাকে। আলোর প্রতিফলন ও প্রতিসরনের ব্যবহার ঃ- (১) আয়না, স্থির পানি, মসৃণ ধাতব পৃষ্ঠ ইত্যাদিতে আলোর প্রতিফলন হয়। স্থির পানি, মসৃন ধাতব পৃষ্ঠ (যেমনঃ- চকচকে লোহা) ইত্যাদি প্রতিফলকের চেয়ে রূপালী প্রলেপ দেয়া আয়না বেশী ভাল প্রফিলকের কাজ করে। ফলে সূর্যের আলো আয়নার মধ্যে পড়ে অনেকটা একই
  তে প্রতিফলিত হয়। (অবশ্য ১০০% নয়)। মূলতঃ আয়না এত ভাল প্রতিফলক যার মধ্যে অল্প আলো পড়লেও সেটা প্রতিফলিত হতে পারে। ফলে সূর্যের আলো যখন কোন বস্তুর উপর পড়ে, তখন সে বস্তু থেকে যে বিভিন্ন ভৎবয়ঁহপু এর ফোটন বের হয়। সেটা যদি আবার আয়নার মধ্যে পড়ে তবে এই পুনরায় প্রতিফলিত আলোর ফোটনের ভৎবয়ঁহপু একই হয়। ফলে কোন বস্তুকে সরাসরি যে রকম দেখি, আয়নার মধ্যে সেটাকে একই রকম দেখি। মূল কথা হল, কোন বস্তুকে সরাসরি দেখা এবং আয়নার মধ্যে দেখার মধ্যে মৌলিক কোন পার্থক্য নেই। এক্ষেত্রে  শুধুমাত্র প্রতিফলণের সংখ্যা একবার বৃদ্ধি পায়। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে, মহান আল্লাহ পাক উনার রসুল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি গামলার পানির মধ্যে এবং দর্পনে নিজ চেহারা মুবারক দেখেছেন।      
কাজেই আয়না, পানি এবং এ জাতীয় মসৃণ পৃষ্ঠে আামরা যা দেখি, তা কখনও ছবি হতে পারেনা।
(২) পেরিস্কোপের মাধ্যমে দূরবর্তী বস্তু বা জীবকে কাছে বা বড় এবং স্পষ্ট দেখা যায়। এই যন্ত্র আলোর প্রতিফলণ ও প্রতিসরণ উভয়টিই ব্যবহৃত হয়। ম্যাগনিফাইং গ্লাসে এবং চশমার মাধ্যমে যথাক্রমে ক্ষুদ্র বস্তুকে বড় করে দেখা এবং অস্পষ্ট বস্তুকে স্পষ্ট করে দেখা হয়। এখানেও আলোর প্রতিসরণ ব্যবহৃত হয়।
অনুবীক্ষণ যন্ত্রেও (গরপৎড়ংপড়ঢ়ব) আলোর প্রতিসরণের কারণে বস্তুর আসল আকারের চেয়ে অনেক বড় একটি চুড়ান্ত অবাস্তব প্রতিবিম্ব পাওয়া যায়।  দূরবীক্ষণ যন্ত্র (ঞবষবংপড়ঢ়ব) যার দ্বারা অনেক দূরবর্তী বস্তু খালী চোখে দেখা যায়, তাতে আলোর প্রতিফলণ ও প্রতিসরণ দুপদ্ধতিই প্রয়োগ করা যায়। এজন্য দূরবীক্ষণ যন্ত্র দুপ্রকার- (১) প্রতিসরণ দূরবীক্ষণ যন্ত্র (জবঃৎধপঃরহম ঞবষবংপড়ঢ়ব) (২) প্রতিফলক দূরবীক্ষণ যন্ত্র (জবভষবপঃরহম ঞবষবংপড়ঢ়ব)  (গ)  প্রতিবিম্ব ঃ- কোন বিন্দু থেকে নিঃসৃত আলোকরশ্মিগুচ্ছ প্রতিফলিত বা প্রতিসরিত হয়ে যদি দ্বিতীয় কোন বিন্দুতে মিলিত হয় বা দ্বিতীয় কোন বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়, তাহলে ঐ দ্বিতীয় বিন্দুকে প্র্রথম বিন্দুর (ওসধমব) প্রতিবিম্ব বলে।  (ঘ) ক্যামেরা ঃ- এই যন্ত্রের মাধ্যমে প্রথমে বস্তুর নেগেটিভ চিত্র পাওয়া যায়। যাকে পরে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার দ্বারা পজিটিভ বা প্রকৃতচিত্র তৈরী করা হয়। (ঙ) টেলিভিশনঃ- টেলিভিশনের মাধ্যমে শব্দ শোনার সাথে সাথে বস্তুর ছবি দেখতে পাওয়া যায়। বৃটিশ বিজ্ঞানী লজি বেয়ার্ড ১৯২৩ সালে প্রথম টেলিভিশন আবিষ্কার করেন। ১৯৪০ সালে টি,ভি বর্তমান অবস্থায় উন্নত হয়। 
ঞ.ঠ/ঈষড়ংবফ ঈরৎপঁঃঃ ঞ.ঠ/ঠরফবড় ঈধংংবঃঃব জবপড়ৎড়ফবৎ/ঠরফবড় ঈধংংবঃঃব ঢ়ষধুবৎ ইত্যাদির কার্যাবলীকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।
যথা:- (১) ঞৎধহংসরংংরড়হ প্রেরন (২) গবফরঁস মাধ্যম (৩) জবপবঢ়ঃরড়হ গ্রহন টিভি এবং ভিসিআর বা ভিসিপি-এর ক্ষেত্রে প্রথমে কোন বস্তুর ছবি তুলে সেই ছবির বিভিন্ন অংশের, আর ঈষড়ংবফ পরৎপঁরঃ এর ক্ষেত্রে কোন বস্তুর সরাসরি বিভিন্ন অংশের প্রতিফলিত ফোটনের  ঋৎবঢ়ঁবহপু আনুযায়ী একধরনের ঊষবপঃৎরপধষ ঝরমহবষ তৈরী হয়। সেই ঝরমহবষ কে আরও চৎড়পবংংরহম এর পর ঞৎধহংসরঃ করা হয়। ঞ.ঠ এর ক্ষেত্রে ঞৎধহংসরঃ করা হয় বাতাসে। আর ঠ.ঈ.জ এবং ঈষড়ংবফ ঈরৎপঁরঃ ঞ.ঠ এর ক্ষেত্রে তারের মধ্যে। মাধ্যম বাতাসই হোক আর তারই হোক সেটা ৎবপবরাবৎ (অর্থাৎ ঞ.ঠ) এ যখন আসে তখন সেটা ৎবপবরাব করার পর কিছু চৎড়পবংংরহম করা হয়, এই ঝরমহবষ গুলো ঞ.ঠ তে অবস্থিত একটি ঊষবপঃৎড়হরপ এঁহ কে নিয়ন্ত্রন করে। ফলে এই এঁহ টি ঞ.ঠ. এর পর্দার যে অংশে যতটুকু ঞৎধহংসরঃ ছাড়লে হুবহু ঞৎধহংসরঃ করা ছবির মত হবে সে অংশে ততটুকু ইলেকট্রন ছাড়ে। এই ঊষবপঃৎড়হ গুলো রাসায়নিক প্রলেপ পতিত হয়ে উজ্জল ও অনুজ্জল বিন্দুর সমম্বয়ে ছবি তৈরী করে। এই ছবি ঞ.ঠ এর পর্দায় দেখা যায়। অর্থাৎ ঊ ঞ.ঠ/ঠ.ঈ.জ/ঠ.ঈ.চ/ঈষড়ংবফ ঈরৎপঁরঃ ঞ.ঠ সবক্ষেত্রেই পর্দায় যা আসছে সেটা সুস্পষ্ট এবং বিশেষভাবে অঙ্কিত ছবি ।     অনেকে টেলিভিশনকে পানি ও আয়নার সাথে তুলনা করেছেন। মূলতঃ টেলিভিশন পানি ও আয়নার মত নয়। তারা টেলিভিশনে কিভাবে ছবি আসে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা না থাকার কারণে অজ্ঞতাপ্রসূত ফতওয়া দিয়েছেন। তাদের ফতওয়া নেহায়েতই গ্রহনযোগ্য নয়।
সিনেমা/চলচ্চিত্র/ছায়াছবিঃ- মুই ব্রীজ নামক বিজ্ঞানী ১৮৭২ সালে প্রথম চলচ্চিত্র তৈরী করেন। তিনি একটি চলমান ঘোড়ার বিভিন্ন অবস্থানের ২৪টি ছবি তৈরী করেন। ছবিগুলোকে যখন দ্রুত চালানো হত, তখন ঘোড়াটা দৌড়াচ্ছে বলে মনে হত। ১৮৯৩ সালে টমাস এডিসন মুইব্রীজের আবিষ্কারকে আরও উন্নত করেন। তিনিই সর্বপ্রথম সবাক চলচ্চিত্র আবিষ্কার করেন। চলচ্চিত্র প্রকৃতপক্ষে আলোকচিত্রেরই উন্নত সংস্করণ। কোন জিনিসের অনেকগুলো স্থির ছবি ধারাবাহিকভাবে এক প্রকার স্বচ্ছ পদার্থের উপর সাজান হয়। যন্ত্রের (চৎড়লবপঃড়ৎ) মাধ্যমে আলোর প্রক্ষেপণের দ্বারা এই সকল ছবি বৃহত্তররূপে প্রতিবিম্বত হয়ে পর্দার (ঝপৎবহ) উপর পড়ে। প্রতিটি ছবি সেকেন্ডের সামান্যতম অংশ সময়ের জন্য স্থিরভাবে পর্দায় পড়ে এবং এটা মুছে যাওয়ার সাথে সাথে আর একটা পর্দার উপর পড়ে এবং এভাবে ক্রমাগত পড়তে থাকে।        
চোখের মাধ্যমে যদি আমাদের মস্তিষ্কে কোন বস্তুর প্রতিবিম্ব অনুভূত হয়, তবে সেটা মুছে যেতে যতটুকু সময়ের প্রয়োজন তার পূর্বেই যদি আর একটা প্রতিবিম্ব তৈরী হয়, তবে এই প্রতিবিম্বগুলোর পার্থক্য নির্ণয় করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। একারণেই চলচ্চিত্রের স্থির ছবিগুলোর পার্থক্য দর্শকের কাছে ধরা পড়েনা। দর্শকের কাছে মনে হয় একই ছবি এবং ছবিতে যা দেখান হয় তা বুঝি চলমান।       মূলতঃ তা ঠিক নয়, বরং স্থির ছবিই একটার পর একটা আসে যায়। যে জন্য একে চলচ্চিত্র বলে। ছবির উপর আলোর প্রক্ষেপণের মাধ্যমে এর (ছবির) ছায়া পর্দার উপর নিক্ষিপ্ত হয়, সেজন্য চলচ্চিত্রকে ছায়াছবিও বলে।          
উপরোক্ত আলোচনার পর বলা যায় যে, শরীয়তের দৃষ্টিতে সচলতা বা স্থিরতা, ঊ উরৎবপঃ ঞবষব ঈধংঃ বা ওহফরৎবপঃ ঞবষব ঈধংঃ, ঋরষস এর দ্বারা তৈরী বা  ওহফরৎবপঃ ঞবষব ঈধংঃ, ঋরষস ব্যতীত তৈরী, স্থায়ীত্বতা বা অস্থায়িত্বতা ইত্যাদি কোনটাই ছবি হওয়ার জন্য শর্ত নয়।       ছবিকে আরবীতে مصوبر , ইংরেজীতে চযড়ঃড়, চরপঃঁৎব, ওসধমব ইত্যাদি বলা হয়।     কিন্তু যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন, এবং যে কোন পদ্ধতিতেই তৈরী, আঁকা বা তোলা হোক না কেন পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র কিয়াস শরীফ অর্থাৎ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনাদের আকীদা মোতাবেক সমস্ত প্রাণীর ছবিই তৈরী করা, তোলা, আঁকা, দেখা রাখা ইত্যাদি নাযায়েয, হারাম। প্রাণীর ছবি হারাম হওয়ার ব্যাপারে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনাদের মধ্যে কোন প্রকার ইখতিলাফ (মতভেদ) নেই। কেননা ছবি হারাম হওয়ার ব্যাপারে একাধিক সহীহ পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার শরাহ, সমস্ত মশহুর ফিকাহ ও ফতওয়ার কিতাবে সরাসরি উল্লেখ রয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে অনেকে বলতে পারেন যে, আমাদের ব্যবহারিক জীবনের ক্ষেত্রে যেমন॥ চাকরী, ব্যবসার প্রয়োজনে, পড়াশোনার জন্য, ব্যাঙ্কে একাউন্ট করতে, জমি ক্রয়-বিক্রয়ে ড্রাইভিং এবং অনেক প্রকার লাইসেন্স, পারমিট ও পাসপোর্ট করতে ছবির প্রয়োজন হয়। তার মাসআলা কি? আলোচ্য মাসআলার জবাবে অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, বর্তমান বিশ্বের কোথাও খিলাফত বা ইসলামী শাসন ব্যবস্থা নেই। খিলাফত না থাকাতে অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের মাজুর হতে হয়। পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ, পবিত্র কিয়াস শরীফ উনার দৃষ্টিতে যে সকল কাজ ফরজ, ওয়াজিবের অর্ন্তভূক্ত তা পালন করার পূর্বশর্ত হিসাবে যদি কোন ব্যক্তিকে অনিচ্ছাসত্ত্বেও পবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার খেলাফ কাজ করতে হয়, তখন সে পবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মাজুর (অপরাগ) বলে গন্য হয়। ইসলামী শরীয়ত বিরোধী রাষ্ট্রীয় ও আর্ন্তজাতিক ব্যবস্থার কারণে আমরা বহুক্ষেত্রে মাজুর। আর্ন্তজাতিক ব্যবস্থার কারণে আজকাল বিদেশে যেতে হলে ছবিসমেত পাসপোর্ট করতে হয়। অথচ ছবি তোলা ইসলামী শরীয়ত উনার আইনে সম্পূর্ণ নাজায়েয হারাম। কাজেই কোন ব্যক্তির উপর যখন হজ্ব ফরজ হয়, তখন রাষ্ট্রীয় ও আর্ন্তজাতিক ইসলামী শরীয়ত উনার বিরোধী আইন অনুযায়ী সে ব্যক্তি ছবি সমেত পাসপোর্ট করতে বাধ্য হয়। আবার যেহেতু হালাল উপার্জন করা ফরজ, সেহেতু আজকাল চাকরী বা ব্যবসা বাণিজ্যে ছবির বাধ্যবাধকতার কারণে ছবি তোলা মাজুর হিসেবে গণ্য হবে। যেহেতু চাকরী, ব্যবসা ইত্যাদির জন্য যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজকাল লেখাপড়া করতে ছবির দরকার হয়, তাই এক্ষেত্রেও ছবি তোলা মাজুরের হুকুম হবে। এ প্রসঙ্গে কিতাবে একটা উসুল উল্লেখ করা হয়-
الضر ورات بتح المحظو رات.
 অর্থঃ জরুরত হারামটাকে হালাল করে দেয়।        একইভাবে নিরাপত্তার জন্য ব্যাঙ্কে একাউন্ট খুলতে, জমি ক্রয়-বিক্রয়ে ইত্যাদি আবশ্যকীয় বিবিধ ক্ষেত্রে শরীয়তবিরোধী আইনের কারণে আমাদেরকে ছবি তুলতে বাধ্য করা হয়। এগুলো মাজুরের হুকুমেই পড়বে। এসবক্ষেত্রে পবিত্র ইসলামী শরীয়ত বিরোধী আইন প্রণেতাগণও আইন প্রয়োগকারী প্রশাসন যারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের বিপক্ষে আইন প্রণয়ন করেছেন, করেন ও করবেন তারা প্রত্যেকেই কঠিণ গুনাহে গুনাহ্গার হবেন। এবং সমুদয় গুনাহই তাদের উপর বর্তাবে। এরপর বলা যায় যে, টেলিভিশনে অনেক ইসলামী প্রোগ্রাম হয় বা ওয়াজ ভিডিও করে দেখা যায়, তাতে কি আমাদের ইলমে দ্বীন হাছিল হয়না?         এসব কথার জাওয়াব মূলতঃ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যেই আছে। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক ফরমান-
يسعلونك عن الخمر والميسر قل فيهما اثم كبير ومنا فع للناس.
অর্থঃ হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনাকে প্রশ্ন করা হয় মদ ও জুয়া সম্পর্কে। আপনি বলে দিন, মদ ও জুয়ার মধ্যে মানুষের জন্য ফায়দা রয়েছে। তবে ফায়দার চেয়ে গুনাহই বড়। কাজেই এগুলি হারাম।
এখানে লক্ষণীয় যে, আল্লাহ্ পাক তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন যে, মদ ও জুয়ার মধ্যে ফায়দা রয়েছে। মদ পান করলে স্বাস্থ্য ভাল হয়, জুয়া খেললে রাতারাতি অনেক টাকা পাওয়া যায়। তথাপি এগুলোর মধ্যে ফায়দার চেয়ে গুনাহ বেশী বলে এগুলোকে হারাম করা হয়েছে। সুতরাং মদ ও জুয়ার মধ্যে উপকারীতা থাকা সত্ত্বেও এগুলো গ্রহনযোগ্য নয়, এগুলো হারাম। মদ ও জুয়ার মধ্যে উপকারীতার জন্য কেউ যদি এটাকে জায়েয মনে করে তবে সে কুফরী করল। ঠিক তদ্রুপ ছবির উপকারীতার জন্য যদি কেউ এটাকে (ছবিসহ ইসলামী প্রোগ্রামকে) জায়েয মনে করে, তবে সেও কুফরী করল।      সুতরাং টেলিভিশন, ভিসিআর ইত্যাদির মধ্যে যদি ইসলামী প্রোগ্রাম হয়ও কিন্তু তার মূলই হল ছবি যা স্পষ্টত হারাম, নাজায়েয। (এছাড়াও বর্তমানে টেলিভিশনের অন্যান্য অশ্লীলতার কারণেও এগুলো ইসলামী শরীয়ত উনার; দৃষ্টিতে হারামের পর্যায়ে পড়ে) কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক ফরমান-
ولا تلبس الحق بالباطل.
অর্থঃ তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করোনা। অন্যত্র মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
افتؤ منون ببعض الكتاب رتكفرون ببعض.
অর্থঃ তোমরা কিতাবের কিছু অংশ মানবে, আর কিছু অংশ মানবে না, তা হবেনা। সুতরাং টিভিতে বা ভিসিআর এ ইসলামী বা জ্ঞানমূলক অনুষ্ঠান প্রচার বা দেখার মধ্যে কিছু উপকারীতা থাকা সত্ত্বেও যেহেতু এসবের মূল হচ্ছে ছবি; যার ফায়দার চেয়ে গুনাহই বড়। তাই টিভি এবং ভিডিওতে কোন অনুষ্ঠান করা বা দেখা অবশ্যই হারাম, নাজায়েয। তবে হ্যাঁ টেলিভিশন, ভিসিআর ইত্যাদির মাধ্যমে কোন জানদার প্রাণীর ছবি ব্যতীত যদি ইসলামী তালিম বা ইলমে দ্বীণ শিক্ষা দেওয়া হয়, তবে তা নাজায়েয নয়। যেমন এখানে নদী -নালা, পাহাড়-পর্বত বা কারিগরি শিক্ষা পদ্ধতি দেখানো যেতে পারে। বলাবাহুল্য কাফেররা হল মুসলমানের খাদেম। তারা অনেক কিছু আবিষ্কার করে থাকে। যেমন, (ফ্যান, মাইক, টিভি, ভিসিআর) ইত্যাদি। মুসলমানগণ যখন দেখেন কাফেরদের খেদমত শরীয়তের খেলাফ নয়, তখন তারা ইচ্ছা করলে তা গ্রহণ করতে পারেন। আর ইসলামী শরীয়ত উনার খেলাফ হলে অবশ্যই তা বর্জন করতে হবে। অবশ্য কোন মুসলমানও যদি ইসলামী শরীয়ত উনার খেলাফ কিছু আবিষ্কার করে তবে সেটাও গ্রহণযোগ্য নয়।          অনেকে বলে থাকেন যে, আজকাল অনেক পীর সাহেব, মুফতী সাহেব, মোফাচ্ছের সাহেব, মোহাদ্দেছ সাহেব, মাওলানা সাহেব, হাফেয সাহেব, ক্বারী সাহেব, ওয়ায়েজ, ইসলামী চিন্তাবিদ, ইসলামী রাজনৈতিক নেতা, আলেম, জালেম, সুফি, দরবেশ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ টেভিভিশন, ভিসিআর বা ছবি সংশ্লিষ্ট পদ্ধতিতে ইসলামী প্রোগ্রাম করেন এবং পেপারে পত্রিকায় ছবি তোলেন। তাদের সম্পর্কে ফায়সালা কি?          মূলত এর জবাবে সংক্ষেপে এতটুকু বললেই চলে যে, ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে কোন ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র বা অধিকাংশ লোককে দলীল (আদর্শ) হিসেবে গ্রহণ করা যাবেনা। যতক্ষণ পর্যন্ত সে ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র বা অধিকাংশ লোক পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র কিয়াস শরীফ উনার উপর কায়েম না থাকবে। অর্থাৎ যে কেউ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার খেদমত করলেই যে, সে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ বা দলীল বলে গণ্য হবে তা নয়।     
অতএব যেহেতু পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র কিয়াস শরীফ উনার অকাট্য দলীল দ্বারা ছবি আঁকা, তৈরী করা, দেখা, রাখা ইত্যাদি সব হারাম প্রমাণিত কাজেই এর বিপরীত কোন মত পথ গ্রহণ করা যাবেনা। আমাদের একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার কাজ অনেক সময় ফাসেক ও কাফের লোকদের দ্বারাও হয়। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,
ان الله ليويد هذالدين برجل فاجر
অর্থঃ নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এই দ্বীন উনার খিদমত নিবেন ফাসিক ফুজ্জার (কাফির) লোকের দ্বারা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় আবু তালেব সুদীর্ঘ ৪২ বৎসর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খেদমত করেছিল। কিন্তু তার ঈমান নসীব হয়নি। অর্থাৎ সে কাফির অবস্থাতেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার খেদমত করেছিল। অনুরূপ হিন্দু গিরিশ চন্দ্র সেন সম্পূর্ণ পবিত্র কুরআন শরীফ বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে প্রথম প্রকাশ করে দ্বীন ইসলাম উনার খেদমত করে। আবার পকিদ্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে হরকত সংযোজন করেছিল হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ। সে চরম জালিম হওয়া সত্ত্বেও মহান আল্লাহ পাক উনার দ্বারা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার খেদমত নিয়েছেন। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
السعد من وعظ بغيره (الحديث(
অর্থঃ নেককার ঐ ব্যক্তি, যে অপরকে নসীহত করা হলে- সেই নসীহত নিজে গ্রহন করে। বাংলাদেশ তথা সারাবিশ্বে ছবি সম্পর্কে যে ফিৎনা পয়দা হয়ে এখনও জারি আছে এবং তাতে মানুষের ঈমানের যে ক্ষতি হচ্ছে- আমরা আশা করি, আমাদের এ ফতওয়া প্রদানের পর ইনশাল্লাহ তার অবসান ঘটবে ও এর উছিলায় মানুষ ইসলাহ  (সংশোধন)  প্রাপ্ত  হবে এবং তাদের ঈমান হিফাজত হবে। মূলতঃ আমাদের আলোচ্য ফতওয়ায় জ্ঞানীগণের জ্ঞানমূলক জিজ্ঞাসার জবাব রয়ে গেছে অর্থাৎ সমজদারের জন্য ইশারাই যথেষ্টঃ
العاقل تكفيه الاشارة
          এখন  আমরা  মহান আল্লাহ পাক উনার  রসুল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছহীহ পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার শরাহ, মশহুর ফিকাহ ও ফতওয়ার কিতাব থেকে প্রাণীর ছবি আঁকা, তৈরী করা, দেখা, রাখা, তোলা ইত্যাদি হারাম হওয়ার ব্যাপারে ধারাবাহিকভাবে দলীল বর্ণনা করব ইনশাল্লাহ। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের রহমত করুন ও তাওফিক এনায়েত করুন। 
(১) 
عن ابى طلحة قال قال النبى صلى الله عليه وسلم لا تدخل المعكة بيتا فيه كلب ولا تصاوبر (بخارى كتاب اللباس باب التصاوي جصفة. ৮৮)
 অর্থঃ হযরত আবু তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা  হতে বর্ণিত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “ঐ ঘরে রহমতের ফেরেস্তা প্রবেশ করে না, যে ঘরে প্রাণীর ছবি বা কুকুর থাকে।(বুখারী শরীফ: কিতাবুল লিবাছ, বাবুত তাছাবীর, ২য় জিঃ ৮৮০ পৃষ্ঠা)
(২)
 قال حدثنا الا عمش عن مسلم قال كنا مع مسروف فى دار يساربن غير- فرأى فى صفته تما ثيل- فقال سمعت عبدا الله قال سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون: (بخارى ج صفه. ৮৮)
অর্থঃ হযরত আমাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা মুসলিম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা উনার সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম, তিনি উনার ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্র নিকট শুনেছি, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “নিশ্চয়ই মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।(বুখারী ২য় জিঃ, পৃঃ ৮৮০)
(৩)
عن عبدا الله بن عمر اخبره ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال- ان الذين يصنعون هذه الصور يعذبون يوم القيمة- يقال لهم احيوا ما خلقتم- (بخارى جصفه. ৬৬)
অর্থঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা হতে বর্ণিত- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যারা প্রাণীর ছবি তৈরী করবে, ক্বিয়ামতের দিন তাদের কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। এবং তাদেরকে বলা হবে- যে ছবিগুলো তোমরা তৈরী করেছ, সেগুলোর মধ্যে প্রাণ দান কর।(বুখারী ২য় জিঃ, পৃঃ ৮৮০, মুসলিম ২য় জিঃ, পৃঃ ২০১)
 (৪) 
عن عائشة حدثته ان النبى ه صلى الله عليه وسلم لم يكن يترك فى بيته شيعا فيه بص ليب الا نقضه- (بجرى ج صعه. ৮৮، مشكواه صفه
 অর্থঃ হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম বর্ণনা করেন যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘরে প্রাণীর ছবি বা ছবিযুক্ত সকল জিনিস (থাকলে) ধ্বংস করে ফেলতেন। (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ৮৮০, মিশকাত পৃঃ ৩৮৫)
(৫) 
عن ابى زرعة قال دخلت مع ابى هريرة داربا مدينة فوأى ها اعلاها مصو رايصور قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول من اظلم لمن ذهب يخلق كخلقى- فيخلقو احبة وليخلقوا ذرة. (بخارى ج  صفه. ৮৮-مسلم جصفه ২০২)
অর্থঃ হযরত আবু যুরয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা বলেন, আমি হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা উনার সঙ্গে মদীনা শরীফ উনার এক ঘরে প্রবেশ করলাম, অতঃপর তিনি ঘরের উপরে এক ছবি অংকনকারীকে ছবি অঙ্কন করতে দেখতে পেলেন, এবং বললেন আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন, মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তি অধিক অত্যাচারী, যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত সৃষ্টি করে। তাকে বলা হবে একটি দানা সৃষ্টি কর অথবা একটি কনা সৃষ্টি কর। (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ ৮৮০, মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০২)
 (৬) 
عن عاءشة قالت قدم رسول الله صلى الله عليه وسلم من سفر وقد سترت بعرام لى على سهرة لى فيه تماثيل فلما رأه رسول الله صلى عليه وسلم هتكه وقال اشدا لناس عذابايوم القيمة الذين يضاهون بخلق الله- قالت فجعلناه وسادة او سادتين.
وفى راية اخراى قالت قدم النبى صلى الله عليه وسلم من سفر ةعلقت درنو كافيه تماتيل فامرنى ان انزعه فنزعته- (بخارى ج صفه. ৮৮ مسلم جصفه
অর্থঃ হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোন এক সফর থেকে ঘরে তাশরীফ আনলেন, এবং আমি ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা পর্দা লাগিয়েছিলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওটা দেখে ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেন, “ক্বিয়ামতের দিন ঐ সমস্ত মানুষের কঠিন আযাব হবে যারা মহান আল্লাহ  পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত সৃষ্টি করে।অতঃপর আমি ওটা দ্বারা একটা অথবা দুইটা বালিশ বানালাম। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সফর থেকে বাড়ী ফিরলেন, এবং আমি ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা পর্দা ঝুলিয়েছিলাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে ওটা সরায়ে ফেলার আদেশ দিলেন, অতঃপর আমি ওটা সরাইয়া ফেললাম। (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ ৮৮০, মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ,পৃঃ ২০১)
(৭) 
عن قاسم عن عاء شة انها اشترت تمر قة فيها تصاوير فقام النبى صلى الله عليه وسلم ب لباب فلم يدخل فقلت اتوب الى الله مما اذنبت قال ما هذه النمرفة قلت لتجلس عليها وتوسد ها قال ان اصحاب هذه النمرقة قلت لتجلس عليها وتو سد ها قال ان اصحاب هدو الصور يعذبون يوم القيمة يعال لهم احيواما خلقتم- وان الملءكة لا تد خل بيتا فيه الصور- (بخارى ج صقه ৮৮১- مسلم جصفه ২০১)
অর্থঃ হযরত কাসিম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার হতে বর্ণনা করেন, হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি একখানা আসন খরীদ করলেন। যার মধ্যে প্রাণীর অনেক ছবি ছিল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (ওটা দেখে) ঘরে প্রবেশ না করে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর আমি বললাম আমি আমার ভুলের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট তওবা করছি, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “এই আসনটি কি জন্য?” আমি বললাম, আপনার বসার ও হেলান দেওয়ার জন্য। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “নিশ্চয় প্রাণীর ছবি তৈরীকারীদের ক্বিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি হবে। এবং তাদেরকে বলা হবে তোমরা যে প্রাণীর ছবি তৈরী করেছ, তার মধ্যে প্রাণ দাও এবং নিশ্চয় ঐ ঘরে রহমতের ফেরেস্তা প্রবেশ করেনা, যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে।(বুখারী শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ৮৮১, মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০১)
(৮) 
عنابى حجيفة عن ابه ان النبى صلى الله عليه وسلم نهى عن ثمن الدم وثمن الكلب وكسب البغى ولعن اكل الربى ومو كله والو اشمة والمستو شمة والمصور- (بخارى ج صفه ৮৮১)
 অর্থঃ হযরত আবু হুজায়ফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পিতা হতে বর্ণনা করেন, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রক্তের দাম, ও কুকুরের দাম নিতে এবং যেনাকারীনীর উপার্জন নিষেধ করেছেন, এবং যে ঘুষ খায়, যে ঘুষ দেয়, যে অংগে উলকি আঁকে এবং যে আঁকায়, আর যে ছবি অংকন করে, এদের সবার ওপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি লানত দিয়েছেন।(বুখারী শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ৮৮১)
 (৯)
 عبد الرحمن عن عائشة انها قالت عد رسول الله صلى الله عليه وسلم جبراء يل عليه السلام فى ساعة يا تيه فيها فجاءت تلك الساعة ولم يا ته وفى يده عصا فالقاها من يده وقال ما يخلف الله وده ولا رسله ثم التفت فا ذا جروكلب تحت سرير فقال يا عا ئشة متى دخل هذا الكلب مهنا فقالت والله ما دريت فامر به فاخرج-
فجاء جبراءيل عليها لسلام فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم وعد تنى فجلست لك فلم تات فقال منعنى الكلب ولا صورة (مسلم كتاب للباس باب تحر يم التصا ويرج صفه ১৯৯)
অর্থঃ হযরত আব্দুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা হযরত আয়েশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার হতে বর্ণনা করেন। হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম নির্দিষ্ট সময়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ওয়াদা করলেন, কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি আসলেন না। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাতে একখানা লাঠি ছিল, তিনি ওটা ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসুলগণ উনারা ওয়াদা খেলাফ করেন না।অতঃপর লক্ষ্য করলেন চৌকির নীচে একটি কুকুরের বাচ্চা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন হে আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম! এই কুকুরটি এখানে কখন প্রবেশ করল?” তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কছম! আমি জানিনা। অতঃপর নূরে মুজসাসম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুকুমে কুকুরটি বের করে দেয়া হলো। অতঃপর জিব্রাইল আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসুল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আসলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “হে ভাই জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম! আপনি আমার সাথে সাক্ষাৎ করার ওয়াদা করেও সাক্ষাৎ করলেন না অথচ আমি আপনার অপেক্ষায় বসে আছি।হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আপনার ঘরের কুকুরটি আমার প্রবেশে বাঁধা দিয়েছে, কেননা আমরা রহমতের ফেরেস্তারা ঐ ঘরে প্রবেশ করিনা, যে ঘরে কুকুর বা প্রাণীর ছবি থাকে। (মুসলিম কিতাবুল লিবাছ বাবুত তাহরীমুত তাছাবীর ২য় জিঃ পৃঃ ১৯৯)
 (১০) 
قال ابن عباس قال اخبر تنى مسمونة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم اسبح يو ما واحما فقالت ميمونة يا رسول الله صلى الله عليه وسلم لقد استنكرت هينتك منذاليوم قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان جبرائيل كان وعدنى يلقانى الليلة فلم يلقنى ام والله ما خلفنى قال فظل رسوا الله صلى الله عليه وسلم يومه ذلك على ذلك- ثم وقع فى نفسه جرو كلب فسطا ط لنا فامربه فاخرج ثم اخذ بيده ماء فنضح مكانه فلما امسى لقيه جبرائيل عليه السلام فقال له قد كنت وعد تنس ان تلقانى البارحة قال اجل ولكنا لاندخل بيتا فيه كلب ولاصورة (مسلم ج صفه ১৯৯- مشكوة صف
অর্থঃ হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত মায়মুনাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদিন ভোরে চিন্তিত অবস্থায় আসলেন, অতঃপর মায়মুনাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, ইয়া রসুলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আজকে আপনাকে খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি আমার সাথে রাত্রে সাক্ষাৎ করার ওয়াদা করেছিলেন কিন্তু রাত্রে সাক্ষাৎ করলেন না। অথচ মহান আল্লাহ পাক উনার কছম! তিনি আমার সাথে ওয়াদা খেলাফ করেন না।হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাস, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঐ দিন ঐ অবস্থায়ই অতিবাহিত করলেন। অতঃপর উনার খেয়াল হলো চাদরের নীচে একটি কুকুরের বাচ্চা। মহান আল্লাহ পাক উনার রসুল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুকুমে উহা বের করে দেয়া হলো। অতঃপর পানি দিয়ে ঐ স্থানটি পরিস্কার করে দেয়া হলো। যখন সন্ধ্যা হলো হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “আপনিতো গত রাত্রে আমার সাথে সাক্ষাৎ করার ওয়াদা করেছিলেন।তিনি বললেন, হাঁ কিন্তু আমরা রহমতের ফেরেস্তারা ঐ ঘরে প্রবেশ করিনা, যে ঘরে কুকুর বা প্রাণীর ছবি থাকে। (মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ১৯৯, মিশকাত পৃঃ ৩৮৫)
 (১১)
عن ابى طلحة انه قال- ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الملئكة لا تدخل بيتافيه ضورة- قال بسر ثم اشبكى زيد فعد ناه فاذاعلى بابه ستر فيه صورة قال فقلت لعبيد الله الخر لا نى ربيب مسمونة زوج النبى صلى الله عليه وسلم الم يخبرنا زيد عن الصوريوم الاول فقال عبيد الله الم تسمعه حين قال الارقما فى ثوب. (مسلم ج صفه ২১৯)
অর্থঃ হযরত আবু তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “নিশ্চয়ই রহমতের ফেরেস্তারা ঐ ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে।” হযরত বুসর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, অতঃপর হযরত যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। আমি উনার খেদমত করার জন্য গেলাম, উনার ঘরের দরজায় একখানা ছবিযুক্ত পর্দা দেখলাম। এবং উম্মুল মুমিনীন হযরত মায়মুনা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা পালিত পুত্র হযরত উবাইদুল্লাহ্ উনাকে বললাম, হযরত যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি কি আমাদের সর্ব প্রথম ছবি সম্পর্কে সংবাদ দেন নাই? উবায়দুল্লাহ বললেন, আপনি কি তখন তাকে বলতে শুনেন নাই যে, তিনি কাপড়ের লতাপাতার ছবি বাদ দিয়ে বলেছেন। অর্থাৎ কাপড়ে গাছপালা বা প্রাণহীন জিনিসের ছবি নিষেধ করেন নাই। (মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২০০, নাসাঈ শরীফ পৃঃ ২৯৯, আবু দাউদ শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২১৯)
(১২)
عن عائشة قالت كان لنا ستر فيه تمنال طامر وكان الداخل اذادخل استقبله فقال لى رسول الله صلى الله على وسلم حولى هذا فانى كلما دملت قرايته ذكرت الدنيا. (مسلم ج صفه ২০০) 
 অর্থঃ হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের পাখির ছবি যুক্ত একখানা পর্দা ছিল। প্রত্যেক লোক প্রবেশ করতেই উহা তাদের নজরে পড়ত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে পর্দাটি সরিয়ে ফেলতে বললেন। কেননা, আমি যতবার ঘরে প্রবেশ করি ততবারই ওটা দেখে আমার দুনিয়ার স্মরণ হয়। (মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২০০)
(১৩)
 عن عائشة قالت دخل على رسول الله صلى الله عليه وسلم وانا مسترة بقرام فيه صورة فتلون وجهه ثم نناول الستر فهتكه ثم قال ان من اشد الناس عذابا يوم القيمة الذين يشبهون بخلق الله تعالى. (مسلم ج صفه ২০০)
অর্থঃ হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার নিকট আসলেন। প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা চাদর গায়ে দেয়া ছিলাম। এটা দেখে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চেহারা মোবারক রঙ্গিন হয়ে গেল। অতঃপর তিনি চাদর খানা নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেন ক্বিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য (কোন প্রাণীর ছুরত) সৃষ্টি করে(মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২০০)
(১৪)
عن ابى كريب عن ابى معاوية ان من اشد اهل الناريوم القيمة عذابا المصورون. (مسلم جصفة ২০১)
অর্থঃ হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা উনার হতে বর্ণিত, “নিশ্চয়ই ক্বিয়ামতের দিন দোযখবাসীদের মধ্যে ঐ ব্যক্তির কঠিন আযাব হবে, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি আঁকে বা তোলে।(মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২০১)
(১৫)
عن سعيد قال داء رجل الى ابن عباس فقال انى رجل اصور هذه الصور فافتنى فيها.
فقال له ادن منى فدنا منه ثم قال ادن منى فدنا حتى وضع يده على راسه وقال انب ءك بما سمعت من رسول الله صلى الله عليه وسلم وسمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول كل مصور فى النار يجعل له جكل صورة صورها نفسا فتعذبه فى دهنم وقال ان كنت لا بد فا علا فاصنع السجرومالا نفس له. (مسلمجصفه ২০২)
অর্থঃ হযরত সাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা  বলেন, এক ব্যক্তি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট এসে বলল, আমি এমন এক ব্যক্তি যে প্রাণীর ছবি অংকন করি, সুতরাং এ ব্যাপারে আমাকে ফতওয়া দিন। হযরত ইবনে আব্বাস  রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন, তুমি আমার নিকটবর্তী হও। সে ব্যক্তি উনার  নিকটবর্তী হল। পুণরায় বললেন, তুমি আরো নিকটবর্তী হও। সে আরো নিকটবর্তী হলে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তার মাথায় হাত রেখে বললেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এ ব্যাপারে যা বলতে শুনেছি তোমাকে তা বলব। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “প্রত্যেক প্রাণীর ছবি তৈরীকারীই জাহান্নামে যাবে। এবং আল্লাহ্ পাক তিনি প্রত্যেকটি ছবিকে প্রাণ দিবেন এবং সেই ছবি গুলো তাদেরকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবে।এবং ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, তোমার যদি ছবি আঁকতেই হয় তবে, গাছ-পালা বা প্রাণহীন বস্তুর ছবি আঁক। (মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২০২)
 (১৬)
 عن ابن عباس اتهه رجل من اهل العراق فقال انى اصور هذه التصاويو فما تقول فيها فقال ادنه ادئه ادنه سمعت محمد صلى الله عليه وسلم يقول من صورصورة فى الدنيا كلف يوم القيمة ان ينفخ فيها الروح وليس بنا فخ (نسائ شريف كتابالزبنة باب التصاوير ج صفة ৩০০)
 অর্থঃ হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি ইরাক থেকে আসল এবং বলল, আমি এরকম প্রাণীর ছবি আঁকি। এ ব্যাপারে আপনি কি বলেন? হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা  তিনি বললেন তুমি আমার নিকটবর্তী হও, সে ব্যক্তি উনার নিকটবর্তী হলো। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন, “যে ব্যক্তি দুনিয়ায় কোন প্রাণীর ছবি তৈরি করবে, তাকে ক্বিয়ামতের দিন ঐ ছবির মধ্যে প্রাণ দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হবে। কিন্তু সে ওটার মধ্যে প্রাণ দিতে পারবে না।(নাসাঈ শরীফ কিতাবুজ জিনাত বাবুত তাছাবীর ২য় জিঃ পৃঃ ৩০০)
(১৭)
 عن ابى طلحة ان النبى صلى الله عليه وسلم قال لا تدخل الملئكة بيتا فيه كلب ولا صورة. (نسائ ج صفه ২৯৯)
অর্থঃ হযরত আবু তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “ঐ ঘরে রহমতের ফেরেস্তা প্রবেশ করেনা, যে ঘরে কুকুর বা প্রাণীর ছবি থাকে।(নাসাঈ শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২৯৯)
(১৮)
 عن عبيد الله بن عبد الله انه دخل على ابى طلحة الا نصارى يعوده فوجد عنده سهل بن خيف فامر ابو طلحة انسانا يتزع نمطا تحته فقال له سهل لم تنزع قال لان فيه تصا وبر وقد قال فيها رسول الله ما قد علمت قال الم يقل الا ما كان رقما فى ثوب قال بلى ولكنه اطيب نفسى- ( نساى ج صقه ২৯৯- تر مذى جصفه ২০৮- موطا امام محمد ৩৮২)
অর্থঃ হযরত উবাইদুল্লাহ বিন আব্দুল্লাহ তিনি বর্ণনা করেন, তিনি অসুস্থ আবু তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা উনার খেদমত করার জন্য উনার নিকট গেলেন। সেখানে উনার নিকট হযরত সাহল বিন হুনাইফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা উনাকে পেলেন। অতঃপর আবু তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি কোন এক ব্যক্তিকে তার বিছানার চাদরখানা সরিয়ে ফেলার আদেশ মুবারক দিলেন।   হযরত সাহল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, কেন চাদরখানা সরানো হবে? হযরত আবু তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি বললেন, কেননা এটার মধ্যে ছবি রয়েছে। হযরত আবু তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ ব্যাপারে কি বলেছেন, আপনার কি জানা নেই?         হযরত সাহল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কি গাছপালা প্রাণহীন বস্তুর কথা বাদ দিয়ে বলেন নাই? হযরত আবু তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি বললেন, হ্যাঁ। তবে এটা ত্যাগ করাও আমার জন্য উত্তম হবে। (নাসাঈ শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২৯৯, তিরমিযি শরীফ ১ম জিঃ পৃঃ ২০৮, মুয়াত্তা শরীফ পৃঃ ৩৮২)
(১৯)
عن على قال صنعت طعاما فدعوت ....... النبى صلى الله عليه وسلم فجاء فد خل فراى ستوا فيه تصاويو- فخرج وقال ان الممكة لا تد خل بيتا فيه تصاوير- (نساى د صفه ৩০০).
অর্থঃ হযরত আলী আলাইহিস সালাম উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি খাদ্য তৈরী করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দাওয়াত দিলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এসে, ঘরে প্রবেশ করে প্রাণীর ছবিযুক্ত একটি পর্দা দেখে, ঘর হতে বের হয়ে গেলেন। এবং বললেন, “নিশ্চয়ই হযরত ফেরেশতা ঐ ঘরে প্রবেশ করেনা, যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে।(নাসাঈ শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ৩০০)
(২০)
عن عائشة قالت قدم رسول الله صلى الله عليه وسلم من سفر وقد سترت بقرام على سهوة لى فيه تصا وير فنرعه وقال اشد الناس عذابا يوم القبمة الذين يضاهون بخلق الله. (نسائ صفه ৩০০)
অর্থঃ উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম আনহু বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সফর থেকে আসলেন, আর আমি ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা পর্দা লাগিয়েছিলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওটা সরিয়ে ফেললেন এবং বললেন, “ক্বিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত তৈরী করে।(নাসাঈ শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ৩০০)
(২১) 
عن عائشة زوج النبى صلى الله عليه وسلم قالت دخل على رسول الله صلى الله عليه وسلم وقد سترت بقرام فيه تمائيل فلما راه تلمون وجهه ثم هتكه بيده وقال ان اشد الناس عذابا يوم القيمة الذين يشبهون بخلق الله. (نسائ ج صفه ৩০০)
অর্থঃ উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার ঘরে প্রবেশ করলেন। আর আমি ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা পর্দা লাগিয়েছিলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন ওটা দেখলেন, তখন উনার চেহারা মুবারক রঙ্গিন হয়ে গেল। এবং পর্দাখানা নিজ হাতে ছিঁড়ে ফেললেন। এবং বললেন, নিশ্চয়ই ক্বিয়ামত দিবসে ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে, যে মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত তৈরী করে। (নাসাঈ শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ৩০০)
(২২)
 عن ابن عمر ان النبى صلى الله عليه وسلم قال ان اصحاب هذه الصور الذين يصنعون ها بعذ بون يوم القيمة و يقال لهم احيوام خلقتم. (نسائ ج صفه ৩০০)
অর্থঃ হযরত ইবনে উমর ফারুক আলাইহিস সালাম উনার হতে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “নিশ্চয় প্রাণীর ছবি তৈরীকারীদের ক্বিয়ামাতের দিন শাস্তি দেয়া হবে এবং তাদেরকে বলা হবে, তোমরা যে ছবিগুলো তৈরী করেছ, তার মধ্যে প্রাণ দান কর।(নাসাঈ শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ৩০০) 
(২৩) 
 عن زيد بن اسلم قال حدثنى ابى انه بنى على اخيه فدخل ابن عمر. فرأى صورة فى البيت فمحا ها او حكها ثم قال سمعت رسول الله صلى عليه وسلم يقول لا تدخل اللمكة بيتا فيه صورة ولا كلب. (مصنف ابن ابى شيته، جصفه ২৯২)
অর্থঃ হযরত যায়েদ ইবনে আসলাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তার থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন তার পিতা তার ভাইয়ের জন্য একখানা ঘর নির্মাণ করেন। অতঃপর হযরত ইবনে উমর ফারুক আলাইহিস সালাম ঘরে প্রবেশ করে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর তিনি ওটাকে ধ্বংস করে ফেললেন অথবা নিশ্চিহ্ন করে ফেললেন এবং বললেন আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, “ঐ ঘরে রহমতের হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি প্রবেশ করেনা, যে ঘরে প্রাণীর ছবি বা কুকুর থাকে। (মুছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা  শরীফ ৮ম জিঃ পৃঃ ২৯২)
(২৪)
عن مسمونة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم اصبع يوما واجما وقال ان جبرائيل كان ةعد ئى ان يلع نى الليلة قلم يلقنى ام والله ما اخلفنى ثم وقع فى نفسه جروكلب تحت فسطاط له فا مربه فاخرج ثم اخذ بيده ماء فنضح مكائه فلما امسى لقيه جبرائيل فقال لقد كنت وعد تنى ان تلقا نى البارحة قال اجل ولكنالا ندخل بيتا فيه كلب ولا صورة. (مشكوة صفه ৩৮৫)
অর্থঃ হযরত মায়মুনাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন চিন্তিত অবস্থায় আসলেন এবং বললেন, “হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি রাত্রে আমার সাথে দেখা করার ওয়াদা করেছিলেন, কিন্তু রাত্রে দেখা করেন নাই। অথচ মহান আল্লাহ পাক উনার কছম! হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম! কখনো আমার সাথে ওয়াদা খেলাফ করেন না। অতঃপর খেয়াল হলো- উনার চাদরের নীচে একটি কুকুরের বাচ্চা, ওটাকে বের করে দেয়া হলো।  
অতঃপর নিজ হাতে পানি দিয়ে ঐ স্থানটি পরিষ্কার করে দিলেন। যখন সন্ধ্যা হলো, হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসুল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাকে বললেন, “আপনিতো গত রাত্রে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ওয়াদা করেছিলেন?” হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হ্যাঁ। কিন্তু আমরা রহমতের হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনারা ঐ ঘরে প্রবেশ করিনা, যে ঘরে কুকুর অথবা প্রাণীর ছবি থাকে। (মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৩৮৫)
(২৫)
 عن عائشة قالت اشتريت منوفة فيها تصاوير فلما راها رسول الله صلى الله عليه وسلم قام على الباب قلم يدخل فعرفت فى وجهه الكراهية قالت فقلت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم اتوب الى الله رسوله ماذا اذنبت فقال مابال هذه النمرقة قلت اشتر يتهالك لتقعد عليها وتوسدها فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان اصحاب هذه الصور يغنبون يوم القيمة يقال لهم احيواما خلقتم وقال ان البيت الذى فيه الصورة لا تدخله ململئكة (مشكواة صفه ৩৮৫)
অর্থঃ হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি প্রাণীর ছবিযুক্ত একটি আসন ক্রয় করেছিলাম, যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওটা দেখলেন, তখন ঘরের ভিতরে প্রবেশ না করে দরজায় দাঁড়িয়ে গেলেন। হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চেহারা মুবারকে অসন্তোষের ভাব লক্ষ্য করে বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নিকট তওবা করছি। আমার কি অপরাধ? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আসনটি কেন ক্রয় করেছ? হযরত আয়িশা  ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, আপনার বসার অথবা হেলান দেয়ার জন্য এটা ক্রয় করেছি। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, নিশ্চয়ই ক্বিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি তৈরীকারীদের শাস্তি দেয়া হবে। এবং তাদেরকে বলা হবে- তোমরা যে ছবিগুলো তৈরী করেছ, তার মধ্যে প্রাণ দাও। এবং আরো বললেন ঐ ঘরে রহমতের হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনারা প্রবেশ করেনা, যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে। (মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৩৮৫)
(২৬)
عن عائشة قالت اشتريت غمز فة فيها تصاوير فلما راها رسول الله صلى الله عليه وسلم قام على الباب قلم يدخل فعرفت فى جهه الكراهية قالت فقلت يارسول الله صلى الله عليه وسلم اتوب الى الله ورسوله ماذا اذنبت فقال ما بال هذه النمر فة قلت اشتريتها لك لتقعد عليها وتو سدها فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان اصحاب هذه الصرر يعلبون يوم القيمة يعال لهم احيواما خلقتم وقال ان البيت الذى فيه الصورة لا تدخله الملمكة. (مشكواة صفه ৩৮৫)
অর্থঃ হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা  তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি- তিনি বলেছেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তি অধিক অত্যাচারী, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত তৈরী করে। তাদেরকে বলা হবে- তাহলে তোমরা একটি কনা অথবা একটি শস্য অথবা একটি গম তৈরী করে দাও।(মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৩৮৫)
(২৭)  
عن عائشة عن النبى صلى الله عليه وسلم قال ان اشدالناس عذابا يوم القيمة الذين يضاهون يخلق الله (مشكواة صفه ৩৮৫)
অর্থঃ হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার হতে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই ক্বিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত তৈরী করবে।(মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৩৮৫)
(২৮)
عن عبد الله بن مسعود قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول اشدا الناس عذابا عند الله المصورون (مشكواة سفه ৩৮৫)
অর্থঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি- তিনি বলেছেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ ব্যক্তিকে কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে। (মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৩৮৫)
(২৯) 
عن ابن عباس قال سمعت رسوا الله صلى الله عليه وسلم يقول كل مصورفى النار يجعل له بكل صورة صورها نفسا فيعذبه فى جهنم قال ابن عباس فان كنت لا بد فاعلافاصع الشجر وما لا روح فيه (مشكواة صفه ৩৮২)
অর্থঃ হযরত ইবনে আব্বাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি- তিনি বলেছেন, “প্রত্যেক প্রাণীর ছবি তৈরীকারী জাহান্নামে যাবে। এবং প্রত্যেকটি ছবিকে প্রান দেওয়া হবে, সেগুলো তাদেরকে জাহান্নামের মধ্যে শাস্তি দেবে।হযরত ইবনে আব্বাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি বলেন, যদি ছবি তৈরী করতেই হয় তবে, গাছপালা অথবা প্রানহীন বস্তুর ছবি তৈরী কর। (মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৩৮৬)
(৩০) 
عن ابن عباس سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يثول من صورصورة عذب وكلف ان ينفخ فيها وليس بنافخ. (مشكواة صفه ৩৮৬)
অর্থঃ হযরত ইবনে আব্বাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা  বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি- তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তৈরী করে, তাকে শাস্তি দেয়া হবে। এবং তাকে ছবির মধ্যে প্রাণ দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হবে, কিন্তু সে প্রাণ দিতে সক্ষম হবে না। (মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৩৮৬)
(৩১)
عن خالد ابن سعيد قال دعاتى ابو سعود الى طعام فرأى فى البيت صورة فلم يدخل حتى كسرتথ (مصنف ابن ابى شيبا جصفه ৯১২)
অর্থঃ হযরত খালেদ ইবনে সাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি বলেন, আমাকে হযরত আবু মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা দাওয়াত করলেন। তিনি আবু মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা উনার ঘরে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, তিনি ওটা না ভাঙ্গা পর্যন্ত ঘরের ভিতরে প্রবেশ করলেন না। (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৮ম জিঃ পৃঃ ২৯১) (৩২)
عن ابى هريرة قال قال رسوالله صلى الله عليه وسلم يخرج عنق من الناريوم القيمة لها عينان تبصران اذنان تسمعان ولسان ينطق يقول انى وكلت بثئة بكل جبارعنيد وكل من دعامع الله انها اخر وبا لمصورين. (مشكورة صفه ৩৮৭) 
অর্থঃ হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা হতে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, ক্বিয়ামতের দিন এমন একখানা আগুনের গর্দান বের হবে, যার দুটো চক্ষু থাকবে। যদ্বারা সে দেখতে পাবে। দুটো কান থাকবে, যদ্বারা সে শুনতে পাবে। একটি মূখ থাকবে, যদ্বারা সে কথা বলবে। গর্দানটি বলবে- নিশ্চয়ই আমাকে তিন ব্যক্তির অভিভাবক বানান হয়েছে- (১) প্রত্যেক অহংকারী অত্যাচার লোকের (২) যারা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে অন্যকেও প্রভু ডাকে (৩) যারা প্রাণীর ছবি তৈরী করে। (মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৩৮৬)
(৩৩)
سعيد ابن ابى الحسن قال كنت عند ابن عباس اذجاءه رجاءه رجل فقال يا ابن عباس انى رجل انما معيثتى من صنعة يدى وانى اصنع هذه التصاوير- فقال ابن عباس لا احدثك الا ما سمعت من رسول الله صلى الله عليه وسلم سمعته يقول من صور صورة فان الله معذ به حتى ينفغخ فيه الروح وليس بنا فخ فيها ابدافربا الرجل ربوة شد يدة واصفر وجهه فقال ويحك ان ابيت الا ان تصنع فعليك بهدا الشجر وكل شئ ليس فيه روح (مشكواة صفه ৭৮৩)
অর্থঃ হযরত সাঈদ ইবনে আবুল হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি বলেন, আমি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা উনার নিকট ছিলাম। এমতাবস্থায় এক ব্যক্তি উনার নিকট আসল এবং বললো, হে ইবনে আব্বাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা! আমি এমন এক ব্যক্তি, যে তার হাতের কাজের দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করে। এবং আমি এরকম প্রাণীর ছবি তৈরী করি। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি বললেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট যা শুনেছি; তা কি তোমাকে বলবনা? আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোন প্রাণীর ছবি তৈরী করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে ঐ ছবির মধ্যে প্রাণ না দেয়া পর্যন্ত শাস্তি দিতে থাকবেন। কিন্তু সে কখনো ওটার মধ্যে প্রাণ দিতে সক্ষম হবে না।সুতরাং সে ব্যক্তি খুব লজ্জিত হলো এবং তার চেহারা হলুদ হয়ে গেলো।     অতঃপর হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি বললেন, তোমার যদি ছবি তৈরী করতেই হয় তবে, গাছপালা ইত্যাদি অথবা প্রাণহীন বস্তুর ছবি তৈরী করতে পার। (মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৩৮৬)
(৩৪)
عن ابن عباس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من صورصورة عذبه الله حتى ينفخ فيها يعنى الروح وليس بنا فخ فيها. (ترمذى جصفه ২০৮)
অর্থঃ হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা হতে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোন প্রাণীর ছবি তৈরী করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে ঐ ছবির মধ্যে প্রাণ না দেয়া পর্যন্ত শাস্তি দেবেন কিন্তু সে ওটার মধ্যে প্রাণ দিতে সক্ষম হবে না।(তিরমীযি শরীফ, ১ম জিঃ পৃষ্ঠা ২০৮)
(৩৫) 
عن جابر قال نهى رول الله صلى الله عليه وسلم عن الصورة فى البيت ونهى ان يصنع ذلك. (ترمذى جصفه ২০৭)
অর্থঃ হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি রাখতে নিষেধ করেছেন এবং ওটা তৈরী করতেও নিষেধ করেছেন। (তিরমীযি শরীফ, ১ম জিঃ পৃষ্ঠা ২০৭)
(৩৬) 
عن عائشة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان لا يترك فى بيته شيئافيه تصليب الا فضبه (ابو داود جصفه ২১৯)
অর্থঃ হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঘরের মধ্যে ছবিযুক্ত সব জিনিস ধ্বংস করে ফেলতেন। (আবু দাউদ শরীফ, ২য় জিঃ পৃষ্ঠা ২১৮)
(৩৭)
 عن على عن النبى صلى الله عليه وسلم قال لا تد خل الملئكة بيتا فيه صورة ولا كلب وجنب. (ابو داود ج صفه ২১৯)
 অর্থঃ হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “রহমতের ফেরেস্তা ঐ ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে প্রাণীর ছবি, কুকুর বা নাপাকী থাকে।(আবু দাউদ শরীফ, ২য় জিঃ পৃষ্ঠা ২১৯)
(৩৮)
 عن جابر ان النبى صلى الله عليه وسلم امر عمربن الخطاب زمن الفتح وهو با لبطحاء ان ياتى الكعبة فيمحو كل صورة فيها فلم يد خلها النبى صلى الله عليه وسلم حتى محيت كل صورة فيها. (ابواداوه ج صفه ২১৯)
অর্থঃ হযরত জাবের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের সময় হযরত উমর ফারুক আলাইহিস সালাম উনাকে হুকুম করলেন। তিনি যেন পাথর দিয়ে পবিত্র কাবা  শরীফ ঘরের সমস্ত মূর্তিগুলি ধ্বংস করে দেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কাবা ঘরের মুর্তিগুলো ধ্বংস না করা পর্যন্ত কাবা ঘরে প্রবেশ করলেন না। (আবু দাউদ শরীফ, ২য় জিঃ পৃষ্ঠা ২১৯)
 (৩৯)
  عن ابى طلحة قال النبى صلى الله عليه وسلم لا تدخل الملمكة بينا فيه كلب وتمئال. (ديلمى جصفه ১০৯
অর্থঃ হযরত আবু তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা হতে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “ঐ ঘরে রহমতের ফেরেস্তা আলাইহিস সালাম উনারা প্রবেশ করেনা, যে ঘরে কুকুর বা প্রাণীর ছবি থাকে।(দায়লামী শরীফ, ৫ম জিঃ পৃষ্ঠা ১০৯)
 (৪০) 
عن عائشة قالت وعد رسول الله صلى الله عليه وسلم جبراءيل عليه اسلم فى ساعة يا تيه فيها فراث عليه فخرج النبى صلى الله عليه وسلم فاذاهو بجبرائيل قاعم على الباب فقال ما منعك ان تدخل قال ان فى البيت كلبا ولا صورة. (ابن ماجه صفه ২৬৮)
অর্থঃ- হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম নির্দিষ্ট সময়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ওয়াদা করেছিলেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে গেল সাক্ষাৎ হলনা। অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঘর থেকে বের হয়ে দেখলেন, হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম দরজায় দাঁড়ানো। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “আপনাকে ভিতরে প্রবেশ করতে কে নিষেধ করল?” হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ঘরের ভিতর একটা কুকুর ছিল। আমরা রহমতের ফেরেস্তারা ঐ ঘরে প্রবেশ করিনা, যে ঘরে কুকুর বা প্রাণীর ছবি থাকে।(ইবনে মাযাহ শরীফ, পৃষ্ঠা ২৬৮) (অসমাপ্ত)

0 Comments: