গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া
জামিয়া শরীফ
[সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ রব্বুল আলামীনের জন্যে এবং অসংখ্য দরূদ ও সালাম আল্লাহ্
পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি। মহান আল্লাহ্ পাক-এর অশেষ রহ্মতে
আমাদের গবেষণা কেন্দ্র,
“মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-এর ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে, বহুল
প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী,
বাতিলের আতঙ্ক ও আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায়
বিশ্বাসী একমাত্র দলীল ভিত্তিক মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায়
যথাক্রমে টুপির ফতওয়া,
অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান, নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা, ছবি ও
তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া, জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া,
মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী
সম্পর্কে ফতওয়া, কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া
মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ফরয
নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ইন্জেকশন
নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তারাবীহ্-এর
নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়েয ও
তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার
সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে
ফতওয়া, প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, আযান ও
ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর
শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, খাছ
সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া এবং নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া প্রকাশ করার পর ১৯তম
ফতওয়া হিসেবে “ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়াটি” পেশ করতে
পারায় মহান আল্লাহ্ পাক-এর দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া।]
ইমামাহ্ বা পাগড়ীর ফাযায়েল
ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া
দেয়ার কারণ
সুন্নতের মূর্ত প্রতীক,
হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা
জাহান থেকে কুফরী,
শেরেকী ও বিদ্য়াতের মুলৎপাটনকারী, বাতিলের
আতঙ্ক এবং আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক
মূখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত”
পত্রিকায় যত লিখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে, তার
প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মকছুদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাতে” এমন সব
লিখাই পত্রস্থ করা হয়,
যা মানুষের আক্বীদা ও আমল ইসলাহ্ করনে একান্ত আবশ্যক।
এ ধারাবাহিকতায় “মাসিক আল বাইয়্যিনাতে”
ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে
ফতওয়া দেয়ার পেছনেও একই কথা। কারণ অধিকাংশ মুসলমানই পাগড়ীর সঠিক আহ্কাম ও ফযীলত
সম্পর্কে জ্ঞাত নয়। যার ফলে তারা পাগড়ী সম্পর্কিত বিষয়ে সঠিক আক্বীদা পোষণ করতে
যেরূপ ব্যর্থ, তদ্রুপ পাগড়ী পড়ার ন্যায় একখানা গুরুত্বপূর্ণ ও ফযীলতপূর্ণ দায়িমী সুন্নত
পালনেও ব্যর্থ। যা অবশ্যই মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রেজামন্দী
হাছিলের ক্ষেত্রে বিরাট অন্তরায়।
এছাড়া অনেকে পাগড়ীকে অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার কারণে পাগড়ী পরিহিত
ব্যক্তিকে ঠাট্টা বা বিদ্রুপ করে থাকে। অথচ এটা সুস্পষ্ট কুফরীর অন্তর্ভূক্ত।
কেননা আক্বাইদের ইমামগণের মতে শুধু পাগড়ী নয় বরং যে কোন সুন্নতের অবজ্ঞাই কুফরীর
কারণ। এ প্রসঙ্গে আক্বাইদের কিতাবে উল্লেখ আছে যে, اهانة السنة كفر.
অর্থঃ- “সুন্নতের
অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য কুফরীর অন্তর্ভূক্ত।”
পাগড়ী পরিধান করা নামাযের বাইরে ও ভিতরে উভয়
অবস্থায়ই সুন্নত ও ফযীলতের কারণ। যেমন, নামাযের মধ্যে পাগড়ী পরিধান করার
ফযীলত সম্পর্কে উক্ত কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে যে,
ان ركعتين مع العمامة افضل من سبعين ركعة بدونها.
অর্থঃ- “নিশ্চয়ই
পাগড়ী পরিধান করে দু’রাকায়াত নামায আদায় করা, পাগড়ী ছাড়া ৭০ রাকায়াত নামায আদায় করার চেয়ে অধিক
ফযীলতপূর্ণ।” (হাশিয়ায়ে শামাইলুত্ তিরমিযী/৮)
আর নামাযের বাইরে পাগড়ী পরিধান করা সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে হাদীস শরীফের সহীহ্
কিতাব “তিরমিযী শরীফের”
হাশিয়ায় উল্লেখ আছে,
ان لبس العمامة سنة.
অর্থঃ- “নিঃসন্দেহে
পাগড়ী পরিধান করা (দায়িমী) সুন্নত।”(হাশিয়ায়ে শামাইলুত্ তিরমিযী/৮)
পাগড়ীর উল্লিখিত ফযীলত থেকে যেন উম্মত মাহরুম না হয়, সে জন্যে
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উম্মতদেরকে নির্দেশ
দিয়েছেন যে,
عليكم بالعمائم فانها سيماء الملئكة.
অর্থঃ- “তোমাদের
জন্যে পাগড়ী অবধারিত,
কেননা তা ফেরেশ্তাগণের নিদর্শন স্বরূপ।” (মিশকাত
শরীফ/৩৩৭, ফাইদুল ক্বদীর ৪র্থ জিঃ ৪৫৪ পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম
জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা)
মহান আল্লাহ্ পাক পবিত্র
কালাম পাকে ইরশাদ করেন,
قل ان كنتم تحبون الله فاتبعونى يحببكم الله ويغفرلكم ذنوبكم والله غفور رحيم.
অর্থঃ- “হে হাবীব
(ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি বলুন, যদি তোমরা মহান আল্লাহ্ পাক-এর
ভালবাসা চাও, তবে আমাকে (আমার সুন্নতকে) অনুসরণ কর, তবেই আল্লাহ্ পাক তোমাদেরকে
ভালবাসবেন এবং তোমাদের সকল গুণাহ্-খতা ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ্ পাক ক্ষমাশীল ও
দয়ালু।” (সূরা আলে ইমরান/৩১)
অতএব বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, নামাযের ভিতরে ও বাইরে পাগড়ীর মত
দায়িমী সুন্নতের আমলের দ্বারা বান্দা অবশ্যই মহান
আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ রেজামন্দী
লাভ করতে পারবে। অথচ আজকাল অনেকেই পীর, ছুফী, দরবেশ, মুফতী, মুহাদ্দিস, মুফাস্সির, আল্লামা, আশেকে
রসূল কত কি দাবি করে। কিন্তু “পাগড়ী” দায়িমীভাবে পরিধান করা তো দূরের কথাই নামাযের সময়ও পরিধান
করেনা।
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধান
করা দায়িমী সুন্নত হওয়ার অকাট্য প্রমাণ
কেউ কেউ বলে থাকে যে, ইমামাহ
বা পাগড়ী পরিধান করা দায়িমী সুন্নত নয়। কারণ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
সর্বদা পাগড়ী মুবারক পরিধান করেননি যেমন- ঘুম, গোসল ও অন্যান্য অনেক সময়। যদি
তাই হয়ে থাকে তবে পাগড়ী পরিধান করা দায়িমী সুন্নত হয় কি ভাবে? তাদের
উক্ত বক্তেব্যের জবাব হলো,
এখানে ‘দায়িমী’ বলতে اكثر الوقت বা অধিকাংশ সময়কেই বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার হায়াত মুবারক উনার অধিকাংশ সময়ই ইমামাহ
বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করতেন। আর মশহুর বা প্রসিদ্ধ উছূল রয়েছে, الاكثر حكم الكل. অর্থাৎ “অধিকাংশটি
সম্পূর্ণটারই হুকুম রাখে।”
সুতরাং হায়াত মুবারক উনার
অধিকাংশ সময় ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধান করার অর্থই হচ্ছে দায়িমী বা সর্বদা পরিধান
করা। এ প্রসঙ্গে ইমামুল আইম্মা, হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিম্মোক্ত ঘটনাটি
বিশেষভাবে উল্লেখ যোগ্য।
“হযরত ইমাম মুহম্মদ বিন জারীর
তাবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি
তিনি তখনো হযরত ইমাম মারেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছাত্র ছিলেন। একদিন হযরত ইমাম
মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি দর্স দিচ্ছিলেন, এমতাবস্থায় এক পাখি বিক্রেতা এসে
উনাকে একটা মাসয়ালা জিজ্ঞেস করলো। মাসয়ালাটি হলো- “আমি পাখি বিক্রেতা, পাখিকে
কথা শিখিয়ে বিক্রি করি। এক ব্যক্তির নিকট একটি পাখি বিক্রি করি এ শর্তে যে, পাখিটি
খুব কথা বলে। লোকটি পাখিটা খরিদ করে নিয়ে যায় এবং পরে ফেরত দেয় এই বলে যে, পাখিটি
কোনই কথা বলে না।
একথা শুনে আমার খুব রাগ হলো। কারণ, আমি নিশ্চিতভাবে জানতাম পাখিটি
কথা বলে। তখন তার সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আমি উত্তেজিত হয়ে বলি-
পাখিটি কখনো নীরব থাকে না,
আমি যদি মিথ্যা বলে থাকি এবং পাখিটি যদি নীরব থাকে, তবে আমার
স্ত্রী তালাক। তখন ক্রেতা বলে যে, তোমার পাখি বিক্রির ব্যাপারে আলোচনা পরে হবে, প্রথমে
তোমার স্ত্রী তালাক হওয়া না হওয়ার ব্যাপারে ফায়সালা করো। তাই এসেছি আপনার কাছে, এ
মাসয়ালার ফায়সালা করার জন্য যে, এতে আমার স্ত্রী তালাক হয়েছে কি? যেহেতু
আপনি মদীনা শরীফের মধ্যে অন্যতম আলিম ও ফক্বীহ্।
এ মাসয়ালা শুনার পর হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “তাহলে তোমার স্ত্রী তালাক হয়ে
গেছে।” তখন সে ব্যক্তি নিরাশ হয়ে, দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বিষন্ন মনে ফিরে যাচ্ছিল।
এমতাবস্থায় হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি
(তিনি খুব মনযোগ সহকারে মাসয়ালাটি শুনেছিলেন) দর্সগাহ্ থেকে বের হয়ে এসে
খানিকদূর পাখি বিক্রেতার পিছনে পিছনে যাওয়ার পর লোকটিকে ডাক দিলেন। বললেন, আচ্ছা
বলতো- তোমার পাখিটি বেশী সময় কথা বলে, না বেশীরভাগ সময় নীরব থাকে? লোকটি
বললো- কথাই বেশী বলে,
তবে মাঝে মাঝে কিছু সময়ের জন্য বিরত থাকে। হযরত ইমাম শাফিয়ী
রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, “তুমি
নিশ্চিন্ত থাক, স্ত্রী তোমার ঠিকই আছে,
সে তালাক প্রাপ্তা হয়নি।” তবে তুমি আরেকবার ইমাম ছাহেবের
কাছে যাও। গিয়ে বল যে,
তিনি যেন তাঁর প্রদত্ত ফতওয়া সম্বন্ধে আরেকটু চিন্তা-ভাবনা
করেন। শুনে লোকটি কিছুটা আশ্চর্যাম্বিত হয়ে হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি
-এর নিকট গিয়ে বললেন,
হুজুর আমার ব্যাপারে আপনাকে আরেকবার চিন্তা করে দেখার জন্য
অনুরোধ করছি। একথা শুনে হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, “তোমার স্ত্রী তালাক হয়ে গেছে, চিন্তার
কোন অবকাশ নেই। তখন লোকটি বললো, আপনার মজলিসের এ ছাত্রটি (হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি
আলাইহি যিনি তখন হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ছাত্র ছিলেন) বলছে- “আমার
স্ত্রী তালাক হয়নি।”
শুনে হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি একটু আশ্চর্যবোধ করলেন এবং বললেন, “তুমি
কিভাবে এরকম ফতওয়া দিতে পারো? এখানে পরিমাপ করার মত দলীল আছে কি?” তখন হযরত
ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, “আপনি
আমাদেরকে একটি হাদীস শরীফ শিক্ষা দিয়েছেন, যা হযরত আব্দুল্লাহ্ বিন জিয়াদ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত।
তা হলো- “হযরত ফাতিমা বিনতে কায়েস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা একদিন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর খিদমতে হাযির হয়ে আরয করেছিলেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম! হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত আবু জাহাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু উভয়ে আমাকে শাদী করতে ইচ্ছুক।
এমতাবস্থায় আমি কাকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করবো?” এর জাওয়াবে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন, “আবূ জাহাম তো কখনো কাঁধ হতে কাঠের বোঝা নামায় না।” ইমাম
শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিশ্চয়ই জানতেন যে, হযরত আবু
জাহাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু শয়ন করেন, খানাপিনা
করেন এবং অন্যান্য কাজ-কর্মও করেন। সুতরাং তাঁর কথার অর্থ হলো- “হযরত আবূ
জাহাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অধিকাংশ
সময় কাঠের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। পাখিওয়ালার মাসয়ালাটিও ঠিক তাই, “পাখিটি
কখনো নীরব থাকেনা। এর অর্থ বেশীরভাগ সময় বা অধিকাংশ সময় কথা বলে, তবে সময়
সময় নীরবও থাকে। একথা প্রচলিত অর্থেই বলা হয়েছে এবং এ অর্থই গ্রহণ করতে হবে। অতএব
বর্ণিত মাসয়ালার ক্ষেত্রে পাখিওয়ালার স্ত্রী তালাক হয়েছে বলে আমার মনে হয়না।
হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি
স্বীয় ছাত্র,
হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি -এর ফতওয়া সম্পর্কে
সূক্ষ্ম চিন্তা ও বুদ্ধিমত্তা দেখে খুশী হলেন এবং প্রশ্নকারী- পাখি ওয়ালাকে বললেন, “আমার
ছাত্র এ যুবকের কথাই ঠিক,
তোমার স্ত্রী তালাক হয়নি।” (তাফসীরে তাবারী, সীরাতে
ইমাম মালিক ও ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহিমা)
উপরোক্ত ঘটনা থেকেও প্রমাণিত হয় যে, অধিকাংশ সম্পূর্ণটারই হুকুম রাখে।
অর্থাৎ অধিকাংশ সময় করার অর্থ হলো সর্বদা বা দায়িমী ভাবে করা। কাজেই আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্, ছহিবে
ইল্মে গাইব, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু তাঁর হায়াত মুবারকের অধিকাংশ
সময়েই ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করেছেন সেহেতু ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করা অবশ্যই
দায়িমী সুন্নত।
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া-ই ওয়াল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম হায়াত মুবারকের অধিকাংশ সময় ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করার প্রমাণ
আমরা যদি আখিরী রসূল,
হাবীবুল্লাহ্, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর দৈনন্দিন আমল মুবারকের দিকে তাকাই তবেই দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট হয়ে
যাবে যে, তিনি অধিকাংশ সময়ই পাগড়ী পরিধান করতেন। আর এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ক্ষেত্র গুলো
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যেমন- (১) ঘরে অবস্থানের সময় (২) মুক্বীমী অবস্থায়, (৩)
মুসাফির অবস্থায় বা সফরের সময়, (৪) সুস্থতার সময়
(৫) অসুস্থতার সময়, (৬) ওযু করার সময়, (৭) নামায
আদায়ের সময়, (৮) মসজিদে অবস্থানের সময় ও খুৎবা দানের সময়, (৯) জিহাদের সময়, (১০)
বিদেশী মেহমানগণের সাথে সাক্ষাতের সময়, (১১) ইস্তিঞ্জা করার সময় ইত্যাদি।
উল্লেখিত ক্ষেত্রগুলো আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুজুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দৈনন্দিন আমল মুবারকের সাথে একান্তভাবেই জড়িত।
আর উল্লিখিত প্রতি ক্ষেত্রে বা অবস্থাতেই তাঁর মাথা মুবারকে ইমামাহ্ বা পাগড়ী
মুবারক শোভা পেত বলে কিতাবে স্পষ্ট ভাবে বর্ণিত রয়েছে। নিম্নে পর্যায়ক্রমে এ
সম্পর্কিত দলীল আদিল্লাহ্ সমূহ উল্লেখ করা হলো-
(১) সাইয়্যিদুল আম্বিয়া-ই ওয়াল
মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন,
হাবীবুল্লাহ, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম- ঘরের মধ্যে ও সাধারণ সময়ে ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করার প্রমাণ-
[১০১০-১০১১]
وكان عمامته صلى الله عليه وسلم فى اكثر الاحيان ثلاثة اذرع شرعية وفى الصلاة الخمس سبعة اذرع. (عرف الشاذى حاشية الترمذى الجلد الاول ص ৩০৪- الطبرانى الشريف)
অর্থঃ- “হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাধারণভাবে (ঘরের মধ্যে) ব্যবহৃত পাগড়ী ছিল
তিন হাত। পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে ব্যবহার করতেন সাত হাত পাগড়ী। (উরফুশ শাজী হাশিয়ায়ে
তিরমিযী ১ম জিঃ ৩০৪ পৃষ্ঠা,
তাবরানী শরীফ)
[১০১২-১০১৭]
قال النووى رحمة الله عليه ان عمامة النبى صلى الله عليه وسلم فى اكثر الاوقات كانت ثلاثة اذرع. (فيض البارى الجلد الرابع ص ৩৭৫)
অর্থঃ- “হযরত
ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, নিশ্চয়ই হযরত নবী করীম
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর (ঘরের ভিতরে) অধিকাংশ সময়ের পাগড়ী মুবারক ছিল
তিন হাত। (ফাইদ্বুল বারী ৪র্থ জিঃ, ৩৭৫ পৃষ্ঠা, অনুরূপভাবে
নিম্নোক্ত কিতাবগুলিতে বর্ণিত আছেঃ আউনুল মা’বূদ ৪র্থ জিঃ ৯৬ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল্
আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১৪ পৃষ্ঠা,
জামউল ওয়াসাইল ১ম জিঃ ২০৭ পৃষ্ঠা, মিরকাত
৮ম জিঃ ২৫০ পৃষ্ঠা,
হাশিয়ায়ে মিশকাত শরীফ ৩৭৪ পৃষ্ঠা)
আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উল্লিখিত তিন হাত
পাগড়ী মুবারক সাধারণতঃ ঘরের মধ্যেই ব্যবহার করতেন। অতএব, প্রমাণিত
হয় যে, তিনি ঘরের মধ্যেও ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করেছেন।
(২) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, রাউফুর রহীম,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুক্বীম
অবস্থায় ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করার প্রমাণ-
[১০১৮]
عن ابى امامة رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم كان يمسح على الخفين والعمامة ثلاثا فى السفر ويوما وليلة فى الحضر. (نيل الاوطار الجلد الاول ص ১৮২)
অর্থঃ- হযরত আবু উমামা
রদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফরে
থাকাবস্থায় তিনদিন এবং মুক্বীম অবস্থায় একদিন ও একরাত মোজা এবং পাগড়ীর উপর মাসেহ
করতেন। (নাইলুল আউতার ১ম জিঃ ১৮২ পৃষ্ঠা)
[১০১৯]
قال السخاوى فى فتاوى رايت من نسب لعائشة عمامته فى السفر بيضاء والحضر سوداء. (الزرقانى الجلد السادس ص ২৫৭)
অর্থঃ- হযরত সাখাবী
রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ফতওয়ার কিতাবে লিখেছেন যে, আমি ঐ ব্যক্তিকে দেখেছি, যিনি ঐ
বর্ণনাটিকে হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর দিকে সম্পৃক্ত করে
বর্ণনা করেছেন যে,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সফর অবস্থায়
সাদা পাগড়ী ছিল এবং মুক্বীম অবস্থায় কালো পাগড়ী ছিল।” (যুরকানী
৬ষ্ঠ জিঃ ২৫৭ পৃষ্ঠা)
উপরোক্ত বর্ণনায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্, নূরে
মুজাস্সাম, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুক্বীমী অবস্থায় ইমামাহ্ বা পাগড়ী
মুবারক পরিধান করেছেন।
(৩) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, সাইয়্যিদুল কাওনাইনি ওয়াস সাক্বালাইন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম সফর অবস্থায় ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করার প্রমাণ-
[১০২০]
عن ابى امامة رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم كان يمسح على الخفين والعمامة ثلاثا فى السفر ويوما وليلة فى الحضر. (نيل الاوطار الجلد الاول ص ১৮২)
অর্থঃ- “হযরত আবু
উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই নবী করীম ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফরে থাকাবস্থায় তিনদিন এবং মুক্বীম অবস্থায় একদিন ও একরাত
মোজা এবং পাগড়ীর উপর মাসেহ করতেন।” (নাইলুল আউতার ১ম জিঃ ১৮২ পৃষ্ঠা)
[১০২১-১০৩৮]
قال السخاوى فى فتاوى رايت من نسب لعأشة عمامته فى السفر بيضاء. (الزرقانى الجلد السادس ص ২৫৭)
অর্থঃ- “হযরত
সাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ফতওয়ার কিতাবে লিখেছেন যে, আমি ঐ
ব্যক্তিকে দেখেছি যিনি ঐ বর্ণনাটিকে হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহা-এর দিকে সম্পৃক্ত করে বর্ণনা করেছেন যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর সফরবস্থায় সাদা পাগড়ী ছিল।” (যুরকানী ৬ষ্ঠ জিঃ ২৫৭ পৃষ্ঠা, সফর অবস্থায়
ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধানের দলীল নিম্নোক্ত কিতাব সমূহে আরো বর্ণিত আছে; যেমনঃ
মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ১৩৪ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশ্রহিন্ নববী, ফতহুল মুলহিম, শরহুল
উবাই ওয়াস্ সিনূসী,
আল মুফহিম, নাসায়ী শরীফ ১ম জিঃ ৩০ পৃষ্ঠা, নাসায়ী
বিশরহিস্ সূয়ূত্বী,
হাশিয়ায়ে সিনদী, সুনানূল্ কুবরা লিন্ নাসায়ী, মিশকাত
শরীফ ৫৩ পৃষ্ঠা, মিরকাত, শরহুত্ ত্বীবী,
আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ, লুময়াত, আশয়াতুল
লুময়াত, মুযাহিরে হক্ব,
মিরয়াতুল্ মানাজীহ্)
উল্লিখিত বর্ণনা দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হয় যে, সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন, ছহিবে বশীর ও নাযীর হুজুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসাফির বা সফর অবস্থায় ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
পরিধান করেছেন।
মাসয়ালা
হযরত আবূ উমামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত উপরোক্ত হাদীস শরীফ ও
অন্যান্য হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে যে, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মোজা ও পাগড়ীর
উপর মাসেহ্ করেছেন। কিন্তু আমাদের হানাফী মাযহাবের ফতওয়া মুতাবিক মোজার উপর মাসেহ্
করা জায়েয কিন্তু পাগড়ীর উপর মাসেহ্ করা জায়েয নেই। কেননা হানাফীদের মতে উক্ত আমল
পরবর্তীতে মানসুখ হয়ে গেছে। তবে অন্যান্য মাযহাবের ইমামগণের মতে পাগড়ীর উপর মাসেহ্
করাও জায়েয।”
(৪) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন,রহমতুল্লিল আলামীন,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুস্থাবস্থায়
ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করার প্রমাণ-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম সুস্থাবস্থায় কখনো পাগড়ী পরিধান করা পরিত্যাগ করেননি। এমনকি যখন তিনি
অসুস্থ থাকতেন, তখন যদি পাগড়ী পরিধান করতে কষ্ট অনুভব হত, তবুও পাগড়ীর পরিবর্তে মাথায়
কাপড়ের টুকরা বা পট্টি বেঁধে নিতেন। এরদ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম সুস্থাবস্থায় সর্বদাই ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করতেন। এ সম্পর্কিত
দলীল-আদিল্লাসমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
[১০৩৯-১০৫৬]
عن ابن عمر رضى الله عنهما قال كان النبى صلى الله عليه وسلم اذا اعتم سدل عمامته بين كتفيه- (ترمذى الجلد الاول ص ২০৭- تحفة الاحوذى المجلد الخامس ص ৪১১- عارضة الاحوذى الجزء السابع ص ২৪৩- شمائل الترمذى ص ৯- جمع الوسائل الجزء الاول ص২০৬- المواهب اللدنية على الشمائل المحمدية ص ১০১- شمائل بشرح المناوى الجلد الاول ص ২০৪ خصائل نبوى صلى الله عليه وسلم ص ৯৩- مشكوة ص ৩৭৪- مرقاة الجلد الثامن ص ২৪৯- شرح الطيبى الجلد الثامن ص ২১৬- التعليق الصبيح الجزء الرابع ص ৩৮৮- اشعة اللمعات الجلد الثالث ص ৫৪৪- مظاهر حق جلد سوم ص ৫৩৪- فتح البارى الجلد العاشر ص ২৭৩- فتح البارى الجلد الحادى والعشرون ص ৩০৭- ارشاد السارى الجلد الثامن ص ৪২৮- نيل الاوطار الجلد الثانى ص ১১১)
অর্থঃ- “হযরত
আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন হুজুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন পাগড়ী মুবারক পরতেন তখন তাঁর পাগড়ীর শামলা উভয়
কাঁধের মাঝে ঝুলিয়ে রাখতেন।” (তিরমিযী শরীফ ১ম জিঃ ২০৭ পৃষ্ঠা, তুহ্ফাতুল
আহ্ওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১১ পৃষ্ঠা, আরিদাতুল আহ্ওয়াযী ৭ম খন্ড ২৪৩ পৃষ্ঠা, শামাইলুত্ তিরমিযী ৯ পৃষ্ঠা, জামউল
ওয়াসাইল ১ম খন্ড ২০৬ পৃষ্ঠা, আল মাওয়াহিবুল্ লাদুন্নিয়া আলাশ্ শামাইলিল মুহম্মদিয়া
১০১পৃষ্ঠা, শামাইলু বি শরহিল মানাবী ১ম জিঃ ২০৪ পৃষ্ঠা, খছাইলে নববী ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম ৯৩ পৃষ্ঠা,
মিশকাত শরীফ ৩৭৪ পৃষ্ঠা, মিরকাত ৮ম জিঃ ২৪৯ পৃষ্ঠা, শরহুত্
তীবী ৮ম জিঃ ২১৬ পৃষ্ঠা,
আত্ তালীকুছ ্ছবীহ্ ৪র্থ খন্ড ৩৮৮ পৃষ্ঠা, আশয়াতুল
লুময়াত ৩য় জিঃ ৫৪৪ পৃষ্ঠা,
মুযাহিরে হক্ব ৩য় জিঃ ৫৩৪ পৃষ্ঠা, ফতহুল
বারী ১০ জিঃ ২৭৩ পৃষ্ঠা,
ফতহুল বারী ২১ জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, ইরশাদুস্ সারী ৮ম জিঃ ৪২৮ পৃষ্ঠা, নাইলুল আউতার ২য় জিঃ ১১১ পৃষ্ঠা)
[১০৫৭-১০৮০]
عن ابى سعيد الخدرى رضى الله عنه قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا استجد ثوبا سماه باسمه اما قميصا اوعمامة ثم يقول اللهم لك الحمد انت كسوتنيه اسألك من خيره وخير ما صنع له واعوذ بك من شره وشر ما صنع له. (ابو داؤد الجلد الثانى ص ২০২- بذل المجهود المجلد الرابع ص ৭৪- ترمذى الجلد الاول ص ২০৯- تحفة الاحوذى المجلد الخامس ص ৪৬০- عارضة الاحوذى الجزء السابع ص ২৬৭- شمائل الترمذى ص ৬- جمع الوسائل الجزء الاول ص ১৩৯- شمائل بشرح المناوى الجزء الاول ص ১৩৯ خصائل نبوى صلى الله عليه وسلم ص ৫২- مسند احمد بن حنبل الجلد الثالث ص ৩০- ৫০- مشكوة ص ৩৭৫- مرقاة الجلد الثامن ص ২৫২- شرح الطيبى الجلد الثامن ص ২১৭- التعليق الصبيح الجزء الرابع ص ৩৮৯- اشعة اللمعات الجلد الثالث ص ৫৪৫- مظاهر حق جلد سوم ص ৫৩৫)
অর্থঃ- “হযরত আবু
সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন নতুন কাপড় পরিধান করতেন তখন তার নাম জামা অথবা
পাগড়ী ইত্যাদি উল্লেখ করে এই দোয়া পাঠ করতেন,
اللهم لك الحمد انت كسوتنيه اسألك من خيره وخير ما صنع له واعوذ بك من شره وشر ما صنع له.
অর্থঃ- “আয়
আল্লাহ্ পাক! সমস্ত প্রশংসা আপনারই, আপনিই আমাকে এই কাপড় পরিধান
করিয়েছেন। আমি আপনার কাছে এর কল্যাণ এবং ঐ সমস্ত কল্যাণ কামনা করছি, যে
উদ্দেশ্যে একে তৈরি করা হয়েছে। অনুরূপভাবে এর অকল্যাণ এবং ঐ সমস্ত অকল্যাণ থেকে
আশ্রয় প্রার্থনা করছি,
যে উদ্দেশ্যে এটা তৈরি করা হয়েছে।” (আবু দাউদ
২য় জিঃ ২০২পৃষ্ঠা,
বযলুল মাজহুদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৩৯ পৃষ্ঠা, আউনুল মা’বুদ ৪র্থ
জিঃ ৭৪ পৃষ্ঠা, তিরমিযী শরীফ ১ম জিঃ ২০৯পৃষ্ঠা, তুহ্ফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম জিঃ ৪৬০
পৃষ্ঠা, আরিদাতুল আহ্ওয়াযী ৭ম খন্ড ২৬৭ পৃষ্ঠা, শামাইলুত্ তিরমিযী ৬পৃষ্ঠা, জামউল
ওয়াসাইল ১ম খন্ড ১৩৯ পৃষ্ঠা, শামাইল বি শরহিল্ মানাবী ১ম খন্ড ১৩৯ পৃষ্ঠা, খছাইলে
নববী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৫২ পৃষ্ঠা, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ৩য় জিঃ
৩০,৫০ পৃষ্ঠা, মিশকাত ৩৭৫ পৃষ্ঠা,
মিরকাত ৮ম জিঃ ২৫২ পৃষ্ঠা, শরহুত তীবী ৮ম জিঃ ২১৭ পৃষ্ঠা, আত্ তা’লীকুছ
ছবীহ্ ৪র্থ খন্ড ৩৮৯ পৃষ্ঠা, আশ্য়াতুল্ লুময়াত ৩য় জিঃ ৫৪৫ পৃষ্ঠা, মুযাহিরে
হক্ব ৩য় জিঃ ৫৩৫ পৃষ্ঠা,
সুস্থাবস্থায় ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান সম্পর্কে নিম্নোক্ত
কিতাবসমূহে আরো দলীল বিদ্যমান আছে, নাসায়ী শরীফ ২য় জিঃ ২৯৯ পৃষ্ঠা, নাসায়ী
বি শরহিস্ সূয়ূতী ৮ম জিঃ ২১১ পৃষ্ঠা, হাশিয়াতুস্ সিনদী, আস্
সুনানুল কুবরা লিন্ নাসায়ী ৫ম জিঃ ৪৯৮ পৃষ্ঠা, উমদাতুল্ কারী ২১ জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল্
আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১২ পৃষ্ঠা,
আল্ আওসাত্ব লিত্ তাবারানী)
উপরোক্ত হাদীস শরীফ দ্বারা মূলতঃ আখিরী রসূল হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর সুস্থাবস্থায় ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করারই প্রমাণ বহন করে।
(৫) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন,
শাফিউল উমাম, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর অসুস্থাবস্থায় ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করার প্রমাণ-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম অসুস্থাবস্থায়ও দায়িমীভাবে পাগড়ী পরিধান করার চেষ্টা করতেন। এমনকি
অসুস্থাবস্থায় কাছে যখন পাগড়ী থাকতনা অথবা পাগড়ী বাঁধতে কষ্ট অনুভব হত, তখন
পাগড়ীর পরিবর্তে চাদরের প্রান্ত বা কাপড়ের পট্টি (যাকে عصابة বলা হয়) মাথায় বেঁধে নিতেন। এটা থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, রসূলুল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দায়িমীভাবে পাগড়ী পরিধান করতেন। নিম্নে এসম্পর্কিত
দলীল-আদিল্লাসমূহ উপস্থাপন করা হলো-
[১০৮১-১০৮৬]
عن ابن عباس رضى الله عنهما يقول خرج رسول الله صلى الله عليه وسلم عليه ملحفة منعطفا بها على منكبيه وعليه عصابة دسماء حتى جلس على المنبر فحمد الله واثنى عليه. (بخارى شريف المجلد الاول ص ৫৩৬- فتح البارى المجلد السابع ص ১২১- عمدة القارى الجزء السادس عشر ص ২৬৬- عمدة القارى الجزء الحادى والعشرون ص ৩০৮- ارشاد السارى المجلد السادس ص ১৫৭- تيسير البارى جلد بنجم ص ১১৩)
অর্থঃ- “হযরত
আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা বলেন। একদা রসূলুল্লাহু ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম(তাঁর অন্তিম
অসুস্থতা কালে) একখানা চাদর গায়ে জড়িয়ে চাদরের প্রান্তদ্বয় দু’ঘাড়
মুবারকে পেঁচিয়ে এবং মাথা মুবারকে একটি কালো পাগড়ী বেঁধে (ঘর থেকে) বেড়িয়ে এলেন
এবং মিম্বরের উপর গিয়ে বসলেন। তারপর তিনি আল্লাহ্র প্রশংসা ও গুনকীর্তণ করলেন।
(তৎপর ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের উদ্দেশ্যে নসীহত করলেন)।” (বুখারী
শরীফ ১ম জিঃ ৫৩৬ পৃষ্ঠা,
ফতহুল বারী ৭ম জিঃ ১২১ পৃষ্ঠা, উমদাতুল
ক্বারী ১৬তম জিঃ ২৬৬ পৃষ্ঠা, উমদাতুল ক্বারী ২১তম জিঃ ৩০৮ পৃষ্ঠা, ইরশাদুস্
সারী ৬ষ্ঠ জিঃ ১৫৭ পৃষ্ঠা,
তাইসীরুল বারী ৫ম জিঃ ১১৩ পৃষ্ঠা)
[১০৮৭-১০৯২]
عن ابن عباس رضى الله عنهما قال صعد النبى صلى الله عليه وسلم المنبر وكان اخر مجلس جلسه متعطفا ملحفة على منكبيه قد عصب رأسه بعصابة دسمة. (بخارى شريف الجلد الاول ص ১২৭- فتح البارى المجلد الثانى ص ৪০৪- عمدة القارى الجزء السادس ص ২২৭- ارشاد السارى المجلد الثانى ص ১৮৫- شرح الكرمانى الجزء السادس ص ৩৭- تيسير البارى جلد دوم ص ৩১)
অর্থঃ- “হযরত
আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একদিন
অসুস্থাবস্থায়) নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিম্বরে আরোহন করলেন। আর
এটাই ছিল তাঁর শেষ মজলিস,
যাতে তিনি বসেছিলেন। তখন তাঁর দু’কাঁধের
উপর একটি বড় চাদর জড়ানো ছিল এবং মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা ছিল।” (বুখারী
শরীফ ১ম জিঃ ১২৭পৃষ্ঠা,
ফতহুল বারী ২য় জিঃ ৪০৪ পৃষ্ঠা, উমদাতুল
ক্বারী ৬ষ্ঠ জিঃ ২২৭ পৃষ্ঠা, ইরশাদুস সারী ২য় জিঃ ১৮৫ পৃষ্ঠা, শরহুল
কিরমানী ৬ষ্ঠ জিঃ ৩৭ পৃষ্ঠা, তাইসীরুল বারী ২য় জিঃ ৩১ পৃষ্ঠা)
[১০৯৩-১১০০]
ربما لم تكن العمامة فيشد العصابة على رأسه. (احياء علوم الدين الجلد الثانى ص ৩৭৫- حاشية احياء علوم الدين الجلد الثانى ص ৩৭৬- سيرة الشامى الجلد السابع ص ৩৩০)
অর্থঃ- “যখনই
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে পাগড়ী থাকতনা, তখনই
তিনি তাঁর মাথা মুবারকে পট্টি বা কাপড়ের টুকরা বেঁধে নিতেন।”(ইহইয়াউ
উলূমিদ্দীন ২য় জিঃ ৩৭৬ পৃষ্ঠা, হাশিয়ায়ে ইহইয়াউ উলূমিদ্দীন ২য় জিঃ ৩৭৬ পৃষ্ঠা, সীরাতুশ্
শামী ৭ম জিঃ ৩৩০ পৃষ্ঠা,
অসুবস্থায় ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধানের দলীল নিম্নোক্ত কিতাব
সমূহে আরো উল্লেখ আছে,
যেমনঃ বুখারী শরীফ ১ম জিঃ ৫৩৬ পৃষ্ঠা, ফতহুল
বারী ৭ম জিঃ ১২০ পৃষ্ঠা,
উমদাতুল ক্বারী ১৬তম জিঃ ৬৫ পৃষ্ঠা, ইরশাদুস্
সারী ৬ষ্ঠ জিঃ ১৫৬ পৃষ্ঠা,
তাইসীরুল্ বারী ৫ম জিঃ ১১২ পৃষ্ঠা)
উপরোক্ত বর্ণনা মূলতঃ একথাই প্রমাণ করে যে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্, হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসুস্থাবস্থায়ও ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
পরিধান করতেন।
(৬) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন,
শাফিউল মুযনিবীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর ওযুর সময় ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করার প্রমাণ-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসারীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, শাফিউল
মুযনিবীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ওযু করতেন তখনও তাঁর মাথা
মুাবারকে পাগড়ী শক্তভাবে বাঁধা থাকত। মাথা মুবারক মাসেহ্র সময় পাগড়ীর নীচ দিয়ে হাত
ঢুকিয়ে মাসেহ্ করতেন। তবুও পাগড়ী খুলে বা ভেঙ্গে যেতনা। নিম্নে এ সম্পর্কিত দলীল
সমূহ উল্লেখ করা হলো-
[১১০১-১১০৮]
عن انس بن مالك رضى الله عنه قال رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم يتوضأ وعليه عمامة قطرية فادخل يده من تحت العمامة فمسح مقدم رأسه فلم ينقض العمامة. (ابو داؤد الجلد الاول ص ২২- بذل المجهود الجلد الاول ص ৮৮- عون المعبود الجزء الاول ص ৫৬- شرح ابى داؤد لبدر الدين العينى المجلد الاول ص ৩৪৬- معالم السنن الجزء الاول ص ৫০ ابن ماجة ص ৪১- فتح المنان الجلد الرابع ص ২৪৭- اخلاق النبى صلى الله عليه وسلم)
অর্থঃ- “হযরত
আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ওযু করতে দেখেছি, যখন তাঁর
মাথা মুবারকে কাতারের পাগড়ী বাঁধা ছিল। অতঃপর তিনি তাঁর হাত মুবারক পাগড়ীর নীচ
দিয়ে প্রবেশ করিয়ে মাথার সম্মুখভাগ মাসেহ করলেন। কিন্তু এতে পাগড়ী ভেঙ্গে যায়নি।” (আবু দাউদ
শরীফ ১ম জিঃ ২২ পৃষ্ঠা,
বযলুল মাজহুদ ১ম জিঃ ৮৮ পৃষ্ঠা, আউনুল মা’বুদ ১ম
খন্ড ৫৬ পৃষ্ঠা, শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী ১ম জিঃ ৩৪৬ পৃষ্ঠা, মায়ালিমুস্
সুনান ১ম খন্ড ৫০ পৃষ্ঠা,
ইবনে মাজাহ শরীফ ৪১ পৃষ্ঠা, ফতহুল মান্নান ৪র্থ জিঃ ২৪৭
পৃষ্ঠা, আখলাকুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
[১১০৯-১১২২]
عن ابن المغيرة بن شعبة عن ابيه قال بكر وقد سمعت من ابن المغيرة ان النبى صلى الله عليه وسلم توضأ فمسح بناصيته وعلى العمامة وعلى الخفين. (مسلم شريف الجلد الاول ص১৩৪- مسلم بشرح النووى المجلد الثانى ص ১৭৪- شرح الابى والسنوسى الجزء الثانى ص ৯৩ فتح المنان الجلد الرابع ص ২৪৬)
অর্থঃ- “হযরত
ইবনে মুগীরাহ ইবনে শু’বাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন। হযরত বকর
রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
আমি হযরত ইবনে মুগীরাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর কাছ
থেকে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন,
নিশ্চয়ই নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওযুর সময়
মাথার নাছিয়া পরিমাণ স্থান (মাথার সম্মুখভাগে এক চতুর্থাংশ), পাগড়ীর
উপর এবং মোজা দ্বয়ের উপর মাসেহ্ করেছেন।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ১৩৪পৃষ্ঠা, মুসলিম
বি শরহিন নববী ২য় জিঃ ১৭৪ পৃষ্ঠা, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনুসী ২য় জিঃ ৯৩ পৃষ্ঠা, মসনাদু
আহমদ ইবনে হাম্বল ৫ম জিঃ ২৮১ পৃষ্ঠা, ওযুর সময় ইমামাহ্ বা পাগড়ী
পরিধানের প্রমাণ নিম্নোক্ত কিতাবগুলিতে আরো উল্লেখ আছে, যেমনঃ
বুখারী শরীফ ১ম জিঃ ৩৩ পৃষ্ঠা, ফতহুল বারী ১ম জিঃ ৩০৮ পৃষ্ঠা, উমদাতুল
ক্বারী ৩য় জিঃ ১০০ পৃষ্ঠা,
ইরশাদুস্ সারী ১ম জিঃ ২৭৯ পৃষ্ঠা, শরহুল
কিরমানী ৩য় জিঃ ৫৩ পৃষ্ঠা,
তাইসীরুল বারী ১ম জিঃ ১৫৬ পৃষ্ঠা, ফাইদুল
বারী ১ম জিঃ ৩০৩ পৃষ্ঠা,
মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ৫ম জিঃ ২৮১ পৃষ্ঠা, নাইলুল
আউতার ১ম জিঃ ১৮১ পৃষ্ঠা,
ফতহুল মান্নান ৪র্থ জিঃ ২৪৬ পৃষ্ঠা)
উপরোক্ত হাদীস শরীফ থেকে জানা গেল যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, আহমদে মুজতবা,
মুহম্মদ মুস্তফা, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম ওযুর সময়েও মাথা মুবারকে ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক রেখেছেন।
(৭) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নামাযের সময়
ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করার প্রমাণ-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযের বাইরে ও নামাযে উভয় অবস্থাতেই পাগড়ী
ব্যবহার করতেন। নিম্নে তার দলীল-আদিল্লা পেশ করা হলো-
[১১২৩-১১২৪]
وكان عمامته صلى الله عليه وسلم فى اكثر الاحيان ثلاثة اذرع شرعية وفى الصلوة الخمس سبعة اذرع. (عرف الشذى حاشية ترمذى الجلد الاول ص ৩০৪- الطبرانى)
অর্থঃ- “হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অধিকাংশ সময়ের (ঘরের ভিতরে) ব্যবহৃত পাগড়ী
ছিল তিন হাত। পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে ব্যবহার করতেন সাত হাত পাগড়ী।” (উরফুশ্
শাযী হাশিয়ায়ে তিরমিযী ১ম জিঃ ৩০৪ পৃষ্ঠা, তাবরানী শরীফ)
[১১২৫]
وكان عمامة النبى صلى الله عليه وسلم فى عامة الاحيان ثلاثة اذرع شرعية وفى الصلوة الخمس سبعة اذرع وفى الجمع والاعياد وحين الوفود اثنى عشر ذراعا. (انوار المحمود الجلد الثانى ص ৪৪২)
অর্থঃ- “সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন, হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর অধিকাংশ সময়ের (ঘরের ভিতরে) ব্যবহৃত পাগড়ী ছিল তিন হাত দীর্ঘ। পাঁচ
ওয়াক্ত নামাযে ব্যবহৃত পাগড়ী ছিল সাত হাত। আর জুমুয়া, ঈদের দিন
এবং কোন দেশের প্রতিনিধির সাথে সাক্ষাতের সময় ব্যবহার করতেন বার হাত লম্বা পাগড়ী।” (আনওয়ারুল
মাহমুদ ২য় জিঃ ৪৪২ পৃষ্ঠা)
[১১২৬-১১২৭]
عن جابر رضى الله عنه قال كان للنبى صلى الله عليه وسلم عمامة سوداء يلبسها فى العيدين ويرخيها خلفه- (نيل الاوطار الجلد الثانى ص১১১- تحفة الاحوذى الجلذ الخامس ص ৪১২)
অর্থঃ- “হযরত
জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কালো পাগড়ী ছিল, যা তিনি
দু’ঈদের নামাযে পরিধান করতেন এবং এর দু’প্রান্ত (শামলা) পিছনে পিঠের উপর
ঝুলাতেন।” (নাইলুল আউতার ২য় জিঃ ১১১পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ
৪১২পৃষ্ঠা)
উপরোক্ত নির্ভরযোগ্য বর্ণনা দ্বারা সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হয় যে, হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাঁচ ওয়াক্ত, জুমুয়া ও ঈদ ইত্যাদি সব নামাযেই ইমামাহ্
বা পাগড়ী পরিধান করতেন।
(৮) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মসজিদে
অবস্থানকালে ও খুত্ববাহ্ দানকালে ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করার প্রমাণ-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর খুত্ববাহ্ দানকালে এবং মসজিদে অবস্থানের সময়ও মাথা মুবারকে পাগড়ী
মুবারক শোভা পেত। নিম্নে এ সম্পর্কিত দলীল সমূহ উল্লেখ করা হলো-
[১১২৮-১১৩৫]
عن جعفر بن عمروبن حريث عن ابيه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم خطب الناس وعليه عمامة سوداء – (مسلم شريف ج১ ص ৪৩৯- مسلم بشرح النووى ج৫ ص১৩৩- شرح الابى والسنوسى ج ৪ ص ৪৬৭- مسند احمد بن حنبل ج ৪ ص ৩০৭ – شمائل الترمذى ص ৯- جمع الوسائل ج ১ ص ২০৫- شمائل بشرح المناوى ج ১ ص ২০৫- المواهب اللدنية على الشمائل المحمدية ص ১০০)
অর্থঃ- “হযরত জা’ফর ইবনে
আমর ইবনে হুরাইস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাঁর পিতা (হযরত আমর ইবনে হুরাইস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই
রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষগণের (ছাহাবাগণের) উদ্দেশ্যে
খুত্ববাহ্ দিচ্ছিলেন,
তখন তাঁর মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী ছিল।” (মুসলিম
শরীফ ১ম জিঃ ৪৩৯ পৃষ্ঠা,
মুসলিম বি শরহিন নববী ৫ম জিঃ ১৩৩ পৃষ্ঠা, শরহুল
উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৪র্থ জিঃ ৪৬৭ পৃষ্ঠা, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ৪র্থ
জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, শামাইলুত্ তিরমিযী ৯পৃষ্ঠা, জামউল ওয়াসাইল ১ম জিঃ ২০৫ পৃষ্ঠা, শামাইলু
বি শরহিল মানাবী ১ম জিঃ ২০৫ পৃষ্ঠা, আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া আলাশ্
শামাইলিল মুহম্মদিয়া ১০০পৃষ্ঠা।
[১১৩৬-১১৫২]
عن جعفر بن عمرو بن حريث عن ابيه قال كانى انظر الى رسول الله صلى الله عليه وسلم على المنبر وعليه عمامة سوداء. (مسلم شريف ج ১ ص ৪৪০- مسلم بشرح النووى ج ৫ ص ১৩৩- شرح الابى والسنوسى ج ৪ ص ৪৬৭- ابو داؤد شريف ج২ ص ২০৯- بذل المجهود ج ৬ ص ৫১- عون المعبود ج ৪ ص ৯৫- شرح ابى داؤد لبدر الدين العينى- نسائى شريف ج ২ ص ২৯৯- نسائى بشرح السيوطى ج ৮ ص ২১১- السنن الكبرى للنسائى ج৫ ص ৪৯৮- فتح البارى ج ১০ ص ২৭৩- اللباس والزينة ص ১৩৩)
অর্থঃ- “হযরত জা’ফর ইবনে
আমর ইবনে হুরাইস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাঁর পিতা (হযরত আমর ইবনে হুরাইস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই
আমার চোখে সেই দৃশ্য এখনো ভেসে আসে, যখন আমি রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামকে (মসজিদের ভিতরে) মিম্বরে খুত্ববাহ্ দিতে দেখেছি। তখন তাঁর
মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা ছিল।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৪৪০ পৃষ্ঠা, মুসলিম
বি শরহিন নববী ৫ম জিঃ ১৩৩পৃষ্ঠা, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূনী ৪র্থ জিঃ ৪৬৭পৃষ্ঠা, আবু দাউদ
শরীফ ২য় জিঃ ২০৯ পৃষ্ঠা,
বযলুল মাজহুদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৫১ পৃষ্ঠা, আউনুল মা’বুদ ৪র্থ
জিঃ ৯৫ পৃষ্ঠা,শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী, নাসায়ী শরীফ ২জিঃ ২৯৯ পৃষ্ঠা, নাসায়ী
বি শরহিস্ সুয়ূতী ৮ম জিঃ ২১১ পৃষ্ঠা, আস্সুনানুল কুবরা লিন্ নাসায়ী ৫ম
জিঃ ৪৯৮ পৃষ্ঠা, ফতহুল বারী শরহে বুখারী ১০ম জিঃ ২৭৩ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১৩৩
পৃষ্ঠা, খুত্ববাহ্ দানকালে ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধানের প্রমাণ নিম্নেবর্ণিত কিতাবগুলোতে
আরো উল্লেখ আছে, শামাইলুত্ তিরমিযী ৯পৃষ্ঠা, জামউল ওয়াসাইল ১ম জিঃ ২০৯ পৃষ্ঠা, শরহুল
মানাবী ১ম জিঃ ২০৯ পৃষ্ঠা,
খছাইলে নববী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আখলাকুন্
নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
উল্লিখিত বর্ণনা দ্বারা মূলতঃ দু’টি বিষয়ই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত
হয়, (১) মসজিদে ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকসহ অবস্থান, (২) খুত্ববাহ্ দানকালে পাগড়ী
মুবারক পরিধান করা। কেননা,
খুত্ববাহ্ সাধাণতঃ মসজিদে অবস্থিত মিম্বরে দাঁড়িয়ে দেয়া হয়।
(৯) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জিহাদ অবস্থায়
ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করার প্রমাণ-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিহাদ অবস্থায়ও তাঁর মাথা মুবারকে
পাগড়ী মুবারক রাখতেন। যেমন,
মক্কা বিজয়ের দিন, তাবুক যুদ্ধে, খন্দক
যুদ্ধে, সানিইয়াতুল হানযাল এবং অপরাপর যুদ্ধে। নিম্নে এসম্পর্কিত দলীলসমূহ উপস্থাপন
করা হলো-
[১১৫৩-১১৬৬]
عن جابربن عبد الله رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم دخل يوم فتح مكة وعليه عمامة سوداء بغير احرام. (مسلم شريف ج ১ ص ৪৩৯- مسلم بشرح النووى ج৫ ص ১৩৩- شرح الابى والسنوسى ج ৪ ص ৪৬৭- ترمذى شريف ج ১ ص ২০১، ২০৭- تحفة الاحوذى ج৫ ص ৩২৭، ৪১০- عارضة الاحوذى ج ৭ ص ২৪৩- نسائى شريف ج ২ ص ২৯، ২৯৯- نسائى بشرح السيوطى ج৫ ص ২০১ ج ৭ ص ২১১- السنن الكبرى للنسائى ج ৫ ص ৪৯৭- ابن ماجة ص ২০৮، ২৬৪- مسند احمد بن حنبل ج ৩ ص ৩৬৩، ৩৮৭- الدارمى ج ২ ص ১০১- شعب الايمان للبيهقى ج ৫ ص ১৭৩- اللباس والزينة ص ১৩০)
অর্থঃ- “হযরত
জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয়ই যখন
নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিবস ইহরাম ছাড়াই মক্কা
শরীফে প্রবেশ করেন,
তখন তাঁর মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী ছিল।” (মুসলিম
শরীফ ১ম জিঃ ৪৩৯ পৃষ্ঠা,মুসলিম বি শরহিন নববী ৫ম জিঃ ১৩৩পৃষ্ঠা, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৪র্থ জিঃ
৪৬৭ পৃষ্ঠা, তিরমিযী শরীফ ১ম জি ২০১,২০৭ পৃষ্ঠা, তুহ্ফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৩২৭, ৪১০
পৃষ্ঠা, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী ৭ম জিঃ ২৪৩ পৃষ্ঠা, নাসায়ী শরীফ ২য় জিঃ ২৯, ২৯৯
পৃষ্ঠা, নাসায়ী বি শরহিস্ সুয়ূতী ৫ম জিঃ ২০১, ৭ম জিঃ ২১১ পৃষ্ঠা, আস্
সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ৫ম জিঃ ৪৯৭ পৃষ্ঠা, ইবনে মাজাহ্ ২০৮, ২৬৪
পৃষ্ঠা, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ৩য় জিঃ ৩৬৩, ৩৮৭ পৃষ্ঠা, দারিমী
২য় জিঃ ১০১ পৃষ্ঠা,
শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৩ পৃষ্ঠা, আল্
লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১৩০ পৃষ্ঠা)
[১১৬৭]
عن ابى امامة رضى الله عنه عند الطبرانى. بلفظ مسح رسول الله صلى الله عليه وسلم على الخفين والعمامة فى غزوة تبوك. (نيل الاوطار ج ১ ص ১৮২)
অর্থঃ- “হযরত আবু
উমামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসটি ইমাম তিরবানী রহমতুল্লাহি
আলাইহি শব্দগত দিক থেকে এভাবে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তাবুক যুদ্ধে মোজা এবং পাগড়ীর উপর মাসেহ্ করেছিলেন।” (নাইলুল
আউতার ১ম জিঃ ১৮২ পৃষ্ঠা)
[১১৬৮-১১৭৭]
عن جابر بن عبد الله رضى الله عنه قال كانت عمامة رسول الله صلى الله عليه وسلم سوداء يوم ثنية الحنظل وذلك يوم الخندق. (شعب الايمان للبيهقى ج ৫ ص ১৭৩)
অর্থঃ- “হযরত
জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘সানিইয়াতুল্
হানযাল’ এর দিবসে রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পাগড়ী ছিল কালো রংয়ের
এবং অনুরূপভাবে খন্দক যুদ্ধের দিবসেও (কালো পাগড়ী) ছিল।” (শুয়াবুল
ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৩ পৃষ্ঠা, জিহাদ অবস্থায় ইমামাহ্ বা পাগড়ী
পরিধানের প্রমাণ নিম্নোক্ত কিতাবসমূহে আরো পরিলক্ষিত হয়, যেমনঃ
আবূ দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ২০৯ পৃষ্ঠা, বযলুল মাজহুদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৫১ পৃষ্ঠা, আউনুল মা’বূদ ৪র্থ
জিঃ ৯৫ পৃষ্ঠা, শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী, ইবনু মাজাহ্ শরীফ ২৬৪ পৃষ্ঠা, দারিমী
২য় জিঃ ১০১ পৃষ্ঠা,
মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ৩য় জিঃ ৩৬৩, ৩৮৭
পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৩ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১২৪, ১২৮
পৃষ্ঠা)
উপরোক্ত হাদীস শরীফে সুস্পষ্ট বর্ণিত আছে যে, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম জিহাদের ময়দানেও ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করেছেন।
উপরোক্ত দলীল ভিত্তিক আলোচনা দ্বারা অকাট্য ও সুস্পষ্ট ভাবেই প্রমাণিত হয় যে, আখিরী
রসূল, হাবীবুল্লাহ্ ওয়া খলীলুল্লাহ্, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তাঁর হায়াত মুবারকের অধিকাংশ সময়ই ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করেছেন।
অতএব বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করা হচ্ছে “দায়িমী
সুন্নত।”
ইমামাহ্ বা পাগড়ী দায়িমী
সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে
মুহাদ্দিছ বা
হাদীস বিশারদগণের অভিমত
অনুস্মরণীয় মুহাদ্দিছ বা হাদীস বিশারদগণ তাঁদের ব্যাখ্যাগ্রন্থসমূহে আখিরী
রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ্, সিরাজুম্
মুনীরা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উল্লিখিত দৈনন্দিন আমল মুবারক
ও عليكم بالعمائم অর্থাৎ তোমাদের জন্য পাগড়ী অবধারিত, এ হাদীস শরীফের উপর ভিত্তি করে
অভিমত পেশ করেন যে,
ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করা দায়িমী সুন্নত। নিম্নে এ
সম্পর্কিত কতিপয় দলীল আদিল্লাহ্ উল্লেখ করা হলো-
[১১৭৮-১১৯৫]
عن عبادة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم عليكم بالعمائم فانها سيماء الملائكة وارخوها خلف ظهوركم. (مشكوة شريف ص ৩৭৭- مرقاة ج৮ ص ২৬৫- شرح الطيبى ج ৮ ص ২২৮- التعليق الصبيح ج ৪ ص ৩৯৫- اشعة اللمعات ج ৩ ص ৫৫৬- مظاهر حق ج ৩ ص ৫৪৩- مرأة المناجيح- تحفة الاحوذى ج ৫ ص ৪১৪- شعب الايمان للبيهقى ج ৫ ص ১৭৬- فيض القدير ج ৪ ص ৪৫৪- المعجم الكبير ج ১২ ص২৯৩- جامع المسانيد والسنن ج ২৯ ص ৩৮৩- اللباس والزينة ص ১২৭ مجمع الزوائد ج ৫ ص ১২০- الكبير ج ১২ ص ৩৮৩- الميزان ج ৪ ص ৩৯৬- الضعيفة ج ২ ص ১১৯- كشف الخفاء ومزيل الالباس ج২ ص ৬৭)
অর্থঃ- “হযরত
উবাদা ইবনে সামিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের জন্য পাগড়ী পরিধান
অবধারিত। কেননা তা ফেরশ্তাগণের নিদর্শণ স্বরূপ। আর এর (পাগড়ীর) শামলা তোমাদের
পিছনে পিঠের উপর ছেড়ে দাও।”
(মিশকাত শরীফ ৩৭৭ পৃষ্ঠা, মিরকাত ৮ম জিঃ ২৬৫ পৃষ্ঠা, শরহুত্
ত্বীবী ৮ম জিঃ ২২৮ পৃষ্ঠা,
আত্ তা’লীকুছ ছবীহ ৪র্থ জিঃ ৩৯৫ পৃষ্ঠা, আশয়াতুল্
লুময়াত ৩য় জিঃ ৫৫৬ পৃষ্ঠা,
মুযাহিরে হক্ব ৩য় জিঃ ৫৪৩ পৃষ্ঠা, মিরয়াতুল
মানাজীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১৪ পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাক্বী ৫ম
জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা, ফাইদ্বুল ক্বদীর ৪র্থ জিঃ ৪৫৪ পৃষ্ঠা, আল মু’জামুল
কবীর ১২ জিঃ ২৯৩ পৃষ্ঠা,
জামিউল্ মাসানীদি ওয়াস্ সুনান ২৯ জিঃ ৩৮৩ পৃষ্ঠা, আল্
লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১২৭ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২০ পৃষ্ঠা, আল কবীর
১২ জিঃ ৩৮৩ পৃষ্ঠা,
আল মীযান ৪র্থ জিঃ ৩৯৬ পৃষ্ঠা, আদ্
দ্বঈফাহ ২য় জিঃ ১১৯ পৃষ্ঠা,
কাশফুল খফা ওয়া মুযীলুল ইলবাস ২য় জিঃ ৬৭ পৃষ্ঠা)
উক্ত হাদীস শরীফের ব্যাখ্যায় পাগড়ী পরিধান করা
দায়িমী সুন্নত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। যেমন কিতাবে বর্ণিত আছে যে,
[১১৯৬]
(عليكم بالعمائم) اى داوموا لبسها. (فيض القدير شرح الجامع الصغير للمناوى ج ৪ ص ৪৫৪)
অর্থঃ- “(عليكم بالعمائم ‘তোমাদের
উপর পাগড়ী পরিধান অবধারিত) অর্থাৎ তোমরা উহা (পাগড়ী) দায়িমী বা সার্বক্ষণিকভাবে
পরিধান কর।” (ফাইদুল ক্বাদীর শরহে জামিউছ ছগীর লিল্ মানাবী ৪র্থ জিঃ ৪৫৪ পৃষ্ঠা)
উক্ত ইবারত থেকে বুঝা যায় যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাগড়ী দায়িমী
ভাবে পরিধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন। যেহেতু তিনি নিজেও দায়িমীভাবে পাগড়ী পরিধান
করতেন। তাই পাগড়ী দায়িমী সুন্নতের অন্তর্ভূক্ত।
[১১৯৭]
(عليكم بالعمائم) برشماباد بوشيدن دستا رها. (اشعة اللمعات ج ৩ ص ৫৫৬)
অর্থঃ- “(عليكم بالعمائم ‘তোমাদের
উপর পাগড়ী পরিধান অবধারিত) অর্থাৎ তোমাদের মাথার উপর দায়িমী বা সার্বক্ষণিকভাবে
পাগড়ী বেঁধে রাখ।”(আশয়াতুল্ লুময়াত ৩য় জিঃ ৫৫৬ পৃষ্ঠা)
[১১৯৮] উর্দু কম্পোজ করতে হবে
অর্থঃ- “(عليكم بالعمائم তোমাদের উপর পাগড়ী পরিধান অবধারিত) অর্থাৎ হামেশা বা দায়িমীভাবে
পাগড়ী পরিধান কর। এমনকি নামাযের সময়ও পাগড়ী বাঁধ।” (মিরয়াতুল্ মানাজীহ্ ৬ষ্ঠ জিঃ ১২১
পৃষ্ঠা)
[১৯০০-১২০০]
উর্দু কম্পোজ করতে হবে
অর্থঃ- “ইমামাহ্
বা পাগড়ী পরিধান করা সুন্নতে মুস্তামাররা তথা দায়িমী সুন্নত। হযরত নবী করীম
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে পাগড়ী বাঁধার হুকুম (নির্দেশ) এভাবে এসেছে যে, তোমরা
পাগড়ী বাঁধ। এতে গাম্বীর্যতা ও সহনশীলতা বৃদ্ধি পাবে। ” (ফতহুল
বারী, খছাইলে নববী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৯১ পৃষ্ঠা)
[১২০১]
পাগড়ী পড়া (দায়িমী) সুন্নত। রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রায়শঃই
(সর্বদাই তথা দায়িমীভাবে) পাগড়ী পড়তেন। তিনি পাগড়ী পরতে উৎসাহিত করতেন।” (আখলাকুন্
নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৮০ পৃষ্ঠা)
[১২০২-১২০৩]
جاء رجلى الى ابن عمر رضى الله عنه فقال يا اباعبد الرحمن العمامة سنة؟ فقال نعم. (عمدة الفارى ج ২১ ص ২০৭ خصائل نبوى صلى الله عليه وسلم ص ৯১)
অথঃ- “ একদা এক
ব্যক্তি হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে এসে জিজ্ঞাসা করল, হে আবু
আব্দুর রহমান (যা ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর অপর নাম) পাগড়ী পরা কি
সুন্নত? তিনি উত্তরে বললেন,
হাঁ পাগড়ী পড়া (দায়িমী) সুন্নত।” (উমদাতুল
ক্বারী ২১ জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা,
খছাইলে নববী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৯১ পৃষ্ঠা)
[১২০৪]
العمامة سنة الرأس وعادة الانبياء والسادة. (عارضة الاحوذى ج ৭ ص ২৪৩)
অর্থঃ- “পাগড়ী
মাথায় পরিধান করা (দায়িমী) সুন্নত এবং সমস্ত আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালাম ও
সর্দারগণের অভ্যাসগত আমল।”
(আরিদ্বাতুল্ আহওয়াযী ৭ম জিঃ ২৪৩ পৃষ্ঠা)
[১২০৫]
عمامة سنت ست. (حاشية الترمذى ج ১ ص ২০৭)
অর্থঃ- “পাগড়ী
পরিধান করা (দায়িমী) সুন্নত।” (হাশিয়ায়ে তিরমিযী শরীফ ১ম জিঃ ২০৭ পৃষ্ঠা)
[১২০৬]
ان لبس العمامة سنة. (حاشية شمائل الترمذى ص ৮)
অর্থঃ- “নিশ্চয়ই
পাগড়ী পরিধান করা (দায়িমী) সুন্নত।” (হাশিয়ায়ে শামাইলুত্ তিরমিযী ৮
পৃষ্ঠা)
[১২০৭]
السنة ان تلبس القلنسوة والعمامة. (عارضة الاحوذى ج ৭ ص ২৪৪)
অর্থঃ- “টুপি এবং
পাগড়ী পরিধান করা (দায়িমী) সুন্নত।” (আরিদ্বাতুল্ আহওয়াযী ৭ম জিঃ ২৪৪
পৃষ্ঠা)
[১২০৮-১২০৯]
قال ابن الجوزى قال بعض العلماء السنة ان يلبس القلنسوة والعمائم. (جمع الوسائل ج ১ ص ২০৪، مرقاة ج ৮ ص ২৫০)
অর্থঃ- “হযরত
ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, অধিকাংশ উলামা-ই-কিরাম
রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের মতে, টুপি এবং পাগড়ী পরিধান করা (দায়িমী) সুন্নত।” (জামউল
ওয়াসাইল ১ম জিঃ ২০৭ পৃষ্ঠা,
মিরকাত ৮ম জিঃ ২৫০ পৃষ্ঠা)
[১২১০]
قال ابن الجوزى والسنة ان يلبس القلنسوة والعمامة. (شمائل بشرح المناوى ج ১ ص ২০৩)
অর্থঃ- “হযরত
ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, টুপি এবং পাগড়ী পরিধান করা
(দায়িমী) সুন্নত।”
(শামাইলু বি শ্রহিল্ মানাবী ১ম জিঃ ২০৩ পৃষ্ঠা)
[১২১১-১২১২]
العمامة سنة لاسيما للصلاة. (شمائل شرح المناوى ج১ ص ২০৩- المواهب اللدنية على الشمائل المحمدية ص ৯৯)
অর্থঃ- “পাগড়ী
পরিধান (দায়িমী) সুন্নত। বিশেষ করে নামাযের সময়।” (শামাইলু বি শ্রহিল্ মানাবী ১ম জিঃ
২০৩ পৃষ্ঠা, আল্ মাওয়াহিবুল্ লাদুন্নিয়া আলাশ্ শামাইলিল্ মুহম্মদিয়া ৯৯ পৃষ্ঠা)
উল্লেখ্য যে,
উপরোক্ত হযরত ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর উক্তিতে একই
সাথে টুপি এবং পাগড়ীকে (দায়িমী) সুন্নত বলা হয়েছে। এ সম্পর্কে বলতে হয় যে, সকল ইমাম, মুজতাহিদ
রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের ঐক্যমতে টুপি পরিধান করা দায়িমী সুন্নত। একই ইবারতে টুপি
ও পাগড়ীকে উল্লেখ করার অর্থ হল এবিষয়টি প্রমাণ করা যে, টুপি
যেমন দায়িমী সুন্নত,
অনুরূপভাবে পাগড়ীও দায়িমী সুন্নত।
সুতরাং স্পষ্টভাবে
প্রমাণিত হয় যে, ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করা দায়িমী সুন্নত। (অসমাপ্ত)
0 Comments:
Post a Comment