সুন্নতের মূর্ত প্রতীক,
হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা
জাহান থেকে কুফরী,
শেরেকী ও বিদ্য়াতের মুলৎপাটনকারী, বাতিলের
আতঙ্ক এবং আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক
মূখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত”
পত্রিকায় যত লিখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে, তার
প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মকছুদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাতে” এমন সব
লিখাই পত্রস্থ করা হয়,
যা মানুষের আক্বীদা ও আমল ইসলাহ্ করনে একান্ত আবশ্যক।
এ ধারাবাহিকতায় “মাসিক আল বাইয়্যিনাতে”
ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে
ফতওয়া দেয়ার পেছনেও একই কথা। কারণ অধিকাংশ মুসলমানই পাগড়ীর সঠিক আহ্কাম ও ফযীলত
সম্পর্কে জ্ঞাত নয়। যার ফলে তারা পাগড়ী সম্পর্কিত বিষয়ে সঠিক আক্বীদা পোষণ করতে
যেরূপ ব্যর্থ, তদ্রুপ পাগড়ী পড়ার ন্যায় একখানা গুরুত্বপূর্ণ ও ফযীলতপূর্ণ দায়িমী সুন্নত
পালনেও ব্যর্থ। যা অবশ্যই মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রেজামন্দী
হাছিলের ক্ষেত্রে বিরাট অন্তরায়।
এছাড়া অনেকে পাগড়ীকে অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার কারণে পাগড়ী পরিহিত
ব্যক্তিকে ঠাট্টা বা বিদ্রুপ করে থাকে। অথচ এটা সুস্পষ্ট কুফরীর অন্তর্ভূক্ত।
কেননা আক্বাইদের ইমামগণের মতে শুধু পাগড়ী নয় বরং যে কোন সুন্নতের অবজ্ঞাই কুফরীর
কারণ। এ প্রসঙ্গে আক্বাইদের কিতাবে উল্লেখ আছে যে, اهانة السنة كفر.
অর্থঃ- “সুন্নতের
অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য কুফরীর অন্তর্ভূক্ত।”
পাগড়ী পরিধান করা নামাযের বাইরে ও ভিতরে উভয়
অবস্থায়ই সুন্নত ও ফযীলতের কারণ। যেমন, নামাযের মধ্যে পাগড়ী পরিধান করার
ফযীলত সম্পর্কে উক্ত কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে যে,
ان ركعتين مع العمامة افضل من سبعين ركعة بدونها.
অর্থঃ- “নিশ্চয়ই
পাগড়ী পরিধান করে দু’রাকায়াত নামায আদায় করা, পাগড়ী ছাড়া ৭০ রাকায়াত নামায আদায় করার চেয়ে অধিক
ফযীলতপূর্ণ।” (হাশিয়ায়ে শামাইলুত্ তিরমিযী/৮)
আর নামাযের বাইরে পাগড়ী পরিধান করা সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে হাদীস শরীফের সহীহ্
কিতাব “তিরমিযী শরীফের”
হাশিয়ায় উল্লেখ আছে,
ان لبس العمامة سنة.
অর্থঃ- “নিঃসন্দেহে
পাগড়ী পরিধান করা (দায়িমী) সুন্নত।” (হাশিয়ায়ে শামাইলুত্ তিরমিযী/৮)
পাগড়ীর উল্লিখিত ফযীলত থেকে যেন উম্মত মাহরুম না হয়, সে জন্যে
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উম্মতদেরকে নির্দেশ
দিয়েছেন যে,
عليكم بالعمائم فانها سيماء الملئكة.
অর্থঃ- “তোমাদের
জন্যে পাগড়ী অবধারিত,
কেননা তা ফেরেশ্তাগণের নিদর্শন স্বরূপ।” (মিশকাত
শরীফ/৩৩৭, ফাইদুল ক্বদীর ৪র্থ জিঃ ৪৫৪ পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম
জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা)
মহান আল্লাহ্ পাক পবিত্র
কালাম পাকে ইরশাদ করেন,
قل ان كنتم تحبون الله فاتبعونى يحببكم الله ويغفرلكم ذنوبكم والله غفور رحيم.
অর্থঃ- “হে হাবীব
(ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি বলুন, যদি তোমরা মহান আল্লাহ্ পাক-এর
ভালবাসা চাও, তবে আমাকে (আমার সুন্নতকে) অনুসরণ কর, তবেই আল্লাহ্ পাক তোমাদেরকে
ভালবাসবেন এবং তোমাদের সকল গুণাহ্-খতা ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ্ পাক ক্ষমাশীল ও
দয়ালু।” (সূরা আলে ইমরান/৩১)
অতএব বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, নামাযের ভিতরে ও বাইরে পাগড়ীর মত
দায়েমী সুন্নতের আমলের দ্বারা বান্দা অবশ্যই মহান
আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ রেজামন্দী
লাভ করতে পারবে। অথচ আজকাল অনেকেই পীর, ছুফী, দরবেশ, মুফতী, মুহাদ্দিস, মুফাস্সির, আল্লামা, আশেকে
রসূল কত কি দাবি করে। কিন্তু “পাগড়ী” দায়িমীভাবে পরিধান করা তো দূরের কথাই নামাযের সময়ও পরিধান
করেনা।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণে হযরত
ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ দায়িমীভাবে ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান
করতেন
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল
আলামীন, হাবীবুল্লাহ্ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং দায়িমীভাবে
ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করতেন এবং সমস্ত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহুমগণকে পাগড়ী পরিধান করতে আমর বা নির্দেশ দিতেন। যা আমরা ইতিপূর্বে ২৯১ থেকে
৩৩১ নম্বর অর্থাৎ ৪০টি নির্ভরযোগ্য দলীল-আদিল্লার মাধ্যমে প্রমাণ করেছি।
স্মর্তব্য, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পাগড়ী পরিধানের ব্যাপারে
বরকতপূর্ণ আমর বা নির্দেশ পাওয়া এবং তাঁরই ইত্তিবা তথা অনুসরণ-অনুকরণের গুরুত্ব
উপলব্ধি করে সমস্ত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ দায়িমীভাবে
ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করতেন।
এ বিষয়ের উপর গত সংখ্যায় ৩৩২ থেকে ৩৮১ পর্যন্ত অর্থাৎ ৪৯টি নির্ভরযোগ্য, অকাট্য ও
অখন্ডনীয় দলীল-আদিল্লাহ্ পেশ করা হয়েছে। অবশিষ্ট দলীলগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
হযরত আর্ব্দু রহমান ইবনে
আউফ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
[৩৮২-৩৯৬]
عن عبد الرحمن بن عوف رضى الله عنه يقول عممنى رسول الله صلى الله عليه وسلم فسدلها من بين يدى ومن خلفى. (ابو داؤد ج২ ص২০৯- بذل المجهود ج৬ ص৫২- عون المعبود ج৪ ص৯৬- شرح ابى داؤد لبدر الدين العينى- مشكوة شريف ص৩৭৪- مرقاة ج৮ ص২৪৯- شرح الطيبى ج৮ ص২১৬- التعليق الصبيح ج৪ ص৩৮৮- اللمعات ج২ ص৫৪৪- اشعة اللمعات ج৩ ص৫৪৪- مظاهر حق جلد ৩ ص৫৩৪- مراة المناجيح شعب الايمان للبيهقى ج৫ ص১৭৪- نيل الاوطار ج২ ص১১২ تحفة الاحوذى ج৫ ص৪১২)
অর্থঃ- “হযরত
আর্ব্দু রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা
রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার মাথায় পাগড়ী বেঁধে দিলেন। অতঃপর
তার এক প্রান্ত (শামলা) আমার সামনের দিকে এবং অপর প্রান্ত (শামলা) পিছনে (পিঠের
উপর) ঝুলিয়ে রাখলেন।”
(আবু দাউদ ২য় জিঃ ২০৯ পৃষ্ঠা, বযলুল মাজহুদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৫২ পৃষ্ঠা, আউনুল মা’বুদ ৪র্থ
জিঃ ৯৬ পৃষ্ঠা, শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী, মিশকাত শরীফ ৩৭৪ পৃষ্ঠা, মিরকাত
৮ম জিঃ ২৪৯ পৃষ্ঠা,
শরহুত ত্বীবী ৮ম জিঃ ২১৬ পৃষ্ঠা, আত্ তা’লীকুছ্
ছবীহ্ ৪র্থ জিঃ ৩৮৮ পৃষ্ঠা,
লুময়াত ৩য় জিঃ ৫৪৪ পৃষ্ঠা, আশয়াতুল্ লুময়াত ৩য় জিঃ ৫৪৪
পৃষ্ঠা, মুযাহিরে হক্ব ৩য় জিঃ ৫৩৪ পৃষ্ঠা, মিরয়াতুল্ মানাজীহ্, শুয়াবুল
ঈমান লিল্ বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৪ পৃষ্ঠা, নাইলুল আউতার ২য় জিঃ ১১২ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল
আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১২ পৃষ্ঠা)
[৩৯৭]
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لعبد الرحمن بن عوف اذهب فاسدل عليك ثيابك والبس سلاحك ففعل ثم اتى النبى صلى الله عليه وسلم فقبض ماسدل بنفسه ثم عممه فسدل من بين يديه ومن خلفه. (عمدة القارى شرح بخارى ২১ ص৩০৭)
অর্থঃ- “সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
একদা হযরত আর্ব্দু রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন, ‘তুমি যাও
এবং তোমার মাথায় পাগড়ী বাঁধ ও যুদ্ধাস্ত্র পরিধান কর।’ তিনি তা
করলেন এবং নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে আসলেন। অতঃপর তিনি যা
বেঁধেছিলেন তা তিনি (হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুলে ফেললেন। তৎপর
তাঁকে পাগড়ী বেঁধে দিলেন এবং পাগড়ীর একটি শামলা তাঁর সামনে অপরটি পিছনে (পিঠের
উপর) ঝুলালেন।” (উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী ২১ জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা)
[৩৯৮-৪০১]
عن عثمان بن عطاء الخراسانى عن ابيه ان رجلا اتى ابن عمر وهو فى مسجد منى فسأله عن ارخاء طرف العمامة فقال له عبد الله ان رسول الله صلى الله عليه وسلم بعث سرية وأمر عليها عبد الرحمن بن عوفى وعقد لواء. فذكر الحديث الى ان قال وعلى عبد الرحمن بن عوف عمامة من كرابيس مصبوغة بسواد فدعاه رسول الله صلى الله عليه وسلم فحل عمامته ثم عممه بيده والفضل عمامته موضع اربع اصابع اونحو ذلك فقال هكذا فاعتم فانه احسن واجمل- (شعب الايمان للبيهفى ج৫ ص১৭৪- اللباس والزينة ص১২৬- مجمع الزوائد ج৫ ص১২০، الاوسط)
অর্থঃ- “হযরত
উসমান ইবনে আত্বা আল্ খুরাসানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর পিতা (হযরত আত্বা আল্
খুরাসানী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বলেন, “নিশ্চয়ই একদা এক ব্যক্তি হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর কাছে আসলেন। আর তখন তিনি মসজিদে মিনায়
অবস্থান করছিলেন। অতঃপর সে ব্যক্তি তাঁকে পাগড়ীর শামলা ঝুলানোর পরিমাণ সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করলো। উত্তরে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাকে বললেন, একদা
হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি সারিয়াহ্ প্রেরণ করলেন এবং
হযরত আর্ব্দু রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে তার আমীর নিযুক্ত করে পতাকা
প্রদান করলেন।” অতঃপর (হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু) অন্য হাদীস বর্ণনা করে
বলেন, (সারিয়াহ প্রেরণের প্রাক্কালে) হযরত আর্ব্দু রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু
আনহু-এর মাথায় সূতী কাপড়ের কালো রং করা ইমামাহ্ বা পাগড়ী বাঁধা ছিল। অতঃপর হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে ডাকলেন এবং তাঁর মাথা থেকে পাগড়ী খুলে
আবার তাঁর নিজ হাত মুবারক দ্বারা তা তাঁর মাথায় বেঁধে দিলেন। পাগড়ীর শামলা চার
আঙ্গুল পরিমাণ বা তার অনুরূপ ঝুলালেন। তৎপর ইরশাদ করলেন, অনুরুপভাবে
পাগড়ী পরিধান কর। কেননা ইহাই অতি উত্তম এবং সুন্দরতম পদ্ধতি।” (শুয়াবুল
ঈমান লিল্ বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৪ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১২৬
পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২০ পৃষ্ঠা, আল্ আওসাত্ব)
[৪০২-৪০৩]
عن ابن عمر رضى الله عنه قال عمم رسول الله صلى الله عليه وسلم ابن عوف بعمامة سوداء كرابيس وارخوها من خلفه قدر اربع اصابع وقال هكذا فاعتم- (عمدة القارى ج২১ ص৩০৭- تحفة الاحوذى ج৫ ص৪১২)
অর্থঃ- “হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা হযরত
আর্ব্দু রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে সূতী কাপড়ের কালো রংয়ের পাগড়ী বেঁধে
দিলেন এবং তার শামলা তাঁর পিছনে (পিঠের উপর) চার আঙ্গুল পরিমাণ ঝুলিয়ে রাখলেন।
অতঃপর বললেন, অনুরুপভাবে পাগড়ী পরিধান কর।” (উমদাতুল ক্বারী ২১তম জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল
আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১২ পৃষ্ঠা)
[৪০৪-৪০৫]
عن عائشة رضى الله عنها ان رسول الله صلى الله عليه وسلم عمم عبد الرحمن بن عوف بعمامة سوداء من قطن وافصا له من بين مثل هذه- (عمدة القارى ج১ ص৩০৭- تحفة الاحوذى ج৫ ص৪১২)
অর্থঃ- “হযরত
আয়িশা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আর্ব্দু রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে সূতী কালো
কাপড়ের পাগড়ী বেঁধে দিলেন এবং উহা (পাগড়ী) যেভাবে বেঁধেছিলেন ঠিক সেভাবেই খুললেন।
অর্থাৎ যেভাবে পেঁচ দিয়ে বেঁধেছিলেন ঠিক সেভাবেই খুলেছেন।” (উমদাতুল
ক্বারী ২১তম জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১২ পৃষ্ঠা)
[৪০৬]
عن عطاء قال رأيت على عبد الرحمن بن عوف عمامة سوداء- (مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৩৭)
অর্থঃ- “হযরত
আত্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আর্ব্দু রহমান ইবনে আউফ
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখেছি।” (মুছান্নাফু
ইবনে আবী শাইবাহ্ ৮ম জিঃ ২৩৭ পৃষ্ঠা)
[৪০৭]
عن حسين بن يونس قال رايت على عبد الرحمن بن عوف عمامة سوداء- (مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৩৭)
অর্থঃ- “হযরত
হুসাইন ইবনে ইউনুস রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
আর্ব্দু রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখেছি।” (মুছান্নাফু
ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৭ পৃষ্ঠা)
হযরত আর্ব্দু রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ‘দু’মাতুল
জানদাল’ অভিযানে প্রেরিত হন ৬ষ্ঠ হিজরী সনের শা’বান মাসে। প্রেরণ করার সময় হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে পাগড়ী বেঁধে দিয়েছিলেন। তার প্রমাণ
নিম্ন বর্ণিত হাদীস শরীফটি-
[৪০৮-৪১৪]
ان النبى صلى الله عليه وسلم دعا عبد الرحمن بن عوف – فاقعده بين يديه وعممه بيده وقال اغز بسم الله وفى سبيل الله فقاتل من كفر بالله لاتغل ولاتغدر ولاتقتل وليدا. (المنتظم فى تاريخ الملوك والامم ج৩ ص২৫৯- المغازى للواقدى ج২ ص৫৬০- طبقات ابن سعد ج১-২ ص৬৪- تاريخ الطبرى ج২ ص ৬৪২- الكامل ج২ ص৯৩- سيرة ابن هشام ص১২০- عشرة مبشرة ص২৩০-২৩১)
অর্থঃ- “সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (৬ষ্ঠ হিজরীর শা’বান মাসে
‘দু’মাতুল জানদাল’
অভিযানে প্রেরণের প্রাক্কালে) হযরত আর্ব্দু রহমান ইবনে আউফ
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে ডেকে তাঁর সামনে নিলেন এবং তাঁর মুবারক হাতদ্বয় দ্বারা তাঁকে
ইমামাহ্ বা পাগড়ী বেঁধে দিয়ে বললেন-
اغز بسم الله وفى سبيل الله.
(আল্লাহ্ পাক-এর নামে আল্লাহ্ পাক-এর পথে অভিযান শুরু কর।) আর যারা আল্লাহ্
পাককে অস্বীকার (কুফরী) করে তাদেরকে হত্যা কর। তবে বিদ্বেষ পোষণকারী, বিশ্বাস
ভঙ্গকারী হবেনা এবং তাদের সদ্ব্যপ্রসূত সন্তান বা বালক-বালিকাদেরকে হত্যা করবে না।” (আল্
মুনতাযাম ফী তারীখিল মুলূকি ওয়াল উমাম ৩য় জিঃ ২৫৯ পৃষ্ঠা, আল্
মাগাযী লিল্ ওয়াকিদী ২য় জিঃ ৫৬০ পৃষ্ঠা, ত্ববাকাতু ইবনে সা’দ ১ম ও
২য় জিঃ ৬৪ পৃষ্ঠা,
তারীখুত্ ত্ববারী ২য় জিঃ ৬৪২ পৃষ্ঠা, আল্
কামিল ২য় জিঃ ৯৩ পৃষ্ঠা,
সীরাতু ইবনে হিশাম ১২০ পৃষ্ঠা, আশারায়ে
মুবাশ্শারাহ ২৩০-২৩১ পৃষ্ঠা)
হযরত ইমাম হাসান ইবনে আলী
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা-এর ইমামাহ্
বা পাগড়ী মুবারক
[৪১৫]
حدثنا ديناربن عمرو قال رأيت على الحسن عمامة سوداء. (مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৩৫)
অর্থঃ- “হযরত
দীনার ইবনে আমর রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
ইমাম হাসান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর মাথায় কালো পাগড়ী বাঁধা দেখেছি।” (মুছান্নাফু
ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৫ পৃষ্ঠা)
[৪১৬]
عن سليمان قال رأيت الحسن يعتم بعمامة سوداء قد ارخاها طرفها خلفه. (مصنف ابن ابى سيبة ج৮ ص২৪০)
অর্থঃ- “হযরত
সুলাইমান রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত, তিনি বলেন। আমি হযরত ইমাম হাসান
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে পাগড়ী বাঁধা অবস্থায় দেখেছি যে, তাঁর
পাগড়ীর শামলা পিছনে (পিঠের উপর) ঝুলন্ত ছিল।” (মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্ ৮ম
জিঃ ২৪০ পৃষ্ঠা)
হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা-এর ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক
[৪১৭]
عن ابى رزين قال خطبنا الحسين بن على يوم الجمعة وعليه عمامة سوداء. (مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৩৭)
অর্থঃ- “হযরত আবু
রঝীন রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা জুমুয়ার দিনে আমাদের উদ্দেশ্যে খুত্ববাহ্ দিচ্ছিলেন, এমতাবস্থায়
যে, তাঁর মাথায় কালো পাগড়ী বাঁধা ছিল।” (মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম
জিঃ ২৩৭ পৃষ্ঠা)
খাদিমুন্ নবী, হযরত
আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক
[৪১৮]
عن مسلم بن زياد قال رأيت اربعة من اصحاب النبى صلى الله عليه وسلم انس بن مالك وفضالة بن عبيد وابا المنيب وفروخ بن سيار او سياربن فروخ يرخون العمائم من خلفهم وثيابهم الى الكعبين. (شعب الايمان للبيهقى ج৫ ص১৭৬)
অর্থঃ- “হযরত
মুসলিম ইবনে যিয়াদ রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চারজন ছাহাবী (১) হযরত আনাস বিন মালিক
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু,
(২) হযরত ফুযাইল ইবনে উবাইদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, (৩) হযরত
আবুল মুনীব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এবং (৪) হযরত ফুররুখ ইবনে সিয়ার অথবা হযরত সিয়ার
ইবনে ফুররুখ রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা সকলকেই এ অবস্থায় দেখেছি যে, তাঁরা
তাঁদের পাগড়ীর শামলা পিছনে (পিঠের উপর) ঝুলিয়ে রাখতেন এবং তাঁদের পোশাক (কাপড়)কে
দু’পায়ের গিড়ার উপর পর্যন্ত ঝুলাতেন।” (শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম
জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা)
[৪১৯]
عن عاصم قال رأيت انس بن مالك بال ثم قام فتوضأ فمسح على خفيه وعلى عمامته ثم قام فصلى صلاة مكتوبة. (المصنف لعبد الرزاق ج১ ص১৮৯)
অর্থঃ- “হযরত
আছিম রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আনাস বিন মালিক
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে দেখেছি যে, তিনি পেশাব করলেন এবং তা থেকে অবসর হয়ে উযু করে তাঁর
মোজাদ্বয় ও পাগড়ীর উপর মাসেহ্ করলেন। অতঃপর দাঁড়িয়ে ফরয নামায আদায় করলেন।” (আল্
মুছান্নাফু লি আব্দির রয্যাক ১ম জিঃ ১৮৯ পৃষ্ঠা)
[৪২০]
عن عاصم قال رأيت انسا يمسح على الخفين والعمامة. (مصنف ابن ابى شيبة ج১ ص২২)
অর্থঃ- “হযরত
আছিম রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু
কে মোজাদ্বয় এবং পাগড়ীর উপর মাসেহ করতে দেখেছি।” (মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ১ম
জিঃ ২২ পৃষ্ঠা)
মাসয়ালা
হানাফী মাযহাব মতে,
পাগড়ীর উপর মাসেহ্ করা জায়েয নেই। কারণ, পরবর্তীতে
এ আমল মানসুখ হয়ে গেছে।
[৪২১]
عن عبد السلام بن شداد ابى طالوت قال رأيت على انس بن مالك عمامة خز. (مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৩৮)
অর্থঃ- “হযরত
আব্দুস্ সালাম ইবনে শাদ্দাদ আবু ত্বালুত রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর মাথায় পশমী কাপড়ের পাগড়ী দেখেছি।” (মুছান্নাফু
ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৮ পৃষ্ঠা)
[৪২২]
عن سلمة بن وردان قال رأيت على أنس عمامة قدارخاها من خلفه. (مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৩৯)
অর্থঃ- “হযরত
সালামাহ্ ইবনে ওয়ারদান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
আনাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর মাথায় পাগড়ী দেখেছি। যার শামলা তাঁর পিছনে (পিঠের উপর)
ঝুলানো ছিল।” (মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৯ পৃষ্ঠা)
[৪২৩-৪২৪]
حدثنا سلمة بن وردان قال رأيت على انس عمامة سوداء على غير قلنسوة وقد ارخاها من خلفه نحوا من ذراع. (مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৩৫- طبقات ابن سعد ج৭-১ ص১১)
অর্থঃ- “হযরত
সালামাহ্ ইবনে ওয়ারদান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
আনাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে টুপি ছাড়া কালো রংয়ের পাগড়ী পরিধান করতে দেখেছি (তবে
পরবর্তীতে তিনি টুপির উপর পাগড়ী পরেছেন।) তিনি তাঁর পাগড়ীর শামলা পিছনে (পিঠের
উপর) একহাত পরিমাণ ঝুলন্ত রাখতেন।” (মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্ ৮ম
জিঃ ২৩৫ পৃষ্ঠা, ত্ববাক্বাতু ইবনে সা’দ ১ম ও ৭ম জিঃ ১১ পৃষ্ঠা)
আশেকে সুন্নত হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
[৪২৫-৪২৯]
عن عبد الله بن دينار عن عبد الله بن عمر ان رجلا من الاعراب لقيه بطريق مكة فسلم عليه عبد الله وحمله على حمار كان يركبه واعطاه عمامة كانت على رأسه. (مسلم شريف ج২ ص৩১৪- مسلم بشرح النووى ج৮ ص১০৯- شرح الابى والسنو سى على مسلم ج৮ ص৪৯৬- فتح الملهم ج৫- مسند احمدبن حنبل ج২ ص৯১)
অর্থঃ- “হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু
আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে,
একদা মক্কা শরীফের এক রাস্তায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর সঙ্গে এক বেদুঈন ব্যক্তির সাক্ষাত হল। হযরত আব্দুল্লাহ
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে সালাম দিলেন এবং তিনি যে গাধার পিঠে আরোহন করেছিলেন, তাকেও
সেই গাধায় আরোহন করে নিলেন। অতঃপর তিনি তাঁর মাথার পাগড়ী তাঁকে দান করলেন।” (মুসলিম
শরীফ ২য় জিঃ ৩১৪ পৃষ্ঠা, মুসলিম বি শরহিন নববী ৮ম জিঃ ১০৯
পৃষ্ঠা, শরহুল্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী আলা মুসলিম ৮ম জিঃ ৪৯৬ পৃষ্ঠা, ফতহুল
মুলহিম ৫ম জিঃ, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ২ম জিঃ ৯১ পৃষ্ঠা)
[৪৩০-৪৩৫]
عن عبد الله بن دينار عن ابن عمر انه كان اذا خرج الى مكة كان له حمار يتروح عليه اذامل ركوب الراحلة وعمامة يشدبها رأسه فبينا هو يوما على ذلك الحمار اذ مربه اعرابى فقال الست ابن فلان بن فلان قال بلى فاعطاه الحمار وقال اركب هذا والعمامة قال اشددبها رأسك فقال له بعض اصحابه غفر الله لك اعطيت هذا الاعرابى حمارا كنت تروح عليه وعمامة كنت تشدبها رأسك فقال انى سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ان من ابر البر صلة الرجل اهل ود ابيه بعد ان يولى وان اباه كان صديقا لعمر. (مسلم شريف ج২ ص৩১৪- مسلم بشرح النووى ج৮ ص১১০- شرح الابى والسنوسى على مسلم ج৮ ص৪৯৭- فتح الملهم ج৫- المفهم من تخليص مسلم للقرطبى ج৬ ص৫২০- مسند احمدبن حنبل ج২ ص৯১)
অর্থঃ- “হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু
আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে,
যখন তিনি মক্কা শরীফের অভিমুখে রওয়ানা হতেন, তখন তাঁর সঙ্গে একটি গাধা থাকত। উটের সাওয়ারীতে
ক্লান্ত হয়ে পড়লে ক্ষণিক স্বস্তি লাভের জন্য তাতে আরোহন করতেন। আর তাঁর সাথে একটি
পাগড়ী (ইমামাহ্) থাকত,
যা দিয়ে তিনি তাঁর মাথা বেঁধে নিতেন। একদা তিনি উক্ত গাধায়
আরোহন করে যাচ্ছিলেন,
তখন তাঁর কাছ দিয়ে একজন বেদুঈন অতিক্রম করছিল। তিনি তাঁকে
জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি অমুকের পুত্র অমুক নও? সে ব্যক্তি বলল, হাঁ। তখন
তিনি তাকে গাধাটি দিয়ে দিলেন এবং বললেন, এতে আরোহন কর। তিনি তাঁকে তাঁর
পাগড়ীটিও দান করে বললেন এটি দ্বারা তোমার মাথা বাঁধ। তখন তাঁর সাথীগণের কেউ কেউ
তাঁকে বললেন, আল্লাহ্ পাক আপনাকে ক্ষমা করুন। আপনি এই বেদুঈনকে গাধাটি দিলেন যার উপর আরোহন
করে আপনি স্বস্তি লাভ করতেন এবং পাগড়ীটিও দান করলেন যার দ্বারা আপনার মাথা
বাঁধতেন। তখন তিনি বললেন,
আমি রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছ থেকে
শুনেছি যে, তিনি বলেছেন,
সর্বোত্তম সদ্ব্যবহার হল কোন ব্যক্তির পিতার ইন্তিকালের পর
তার বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে সদ্ভাব রাখা। আর এই বেদুঈনের পিতা ছিলেন হযরত উমর
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর অন্তরঙ্গ বন্ধু।” (মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ ৩১৪ পৃষ্ঠা, মুসলিম
বি শরহিন্ নববী ৮ম জিঃ ১১০ পৃষ্ঠা, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূসী আলা মুসলিম
৮ম জিঃ ৪৯৭ পৃষ্ঠা,
ফতহুল মুলহিম ৫ম জিঃ, আল্ মুফহিমু মিন তাখলীসি মুসলিম
লিল্ কুরতুবী ৬ষ্ঠ জিঃ ৫২০ পৃষ্ঠা, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ২য় জিঃ
৯১ পৃষ্ঠা)
[৪৩৬]
عن مغيرة بن زياد عن ابى عمر مولى اسماء قال رأيت ابن عمر رضى الله عنهما اشتر عمامة لها علم. (ابن ماجة ص২৬৫)
অর্থঃ- “হযরত
মুগীরাহ্ ইবনে যিয়াদ রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আবু উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু যিনি
আসমা-এর মনিব ছিলেন,
তাঁর থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদা আমি
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমাকে একটি পাগড়ী ক্রয় করতে দেখলাম, যার
মধ্যে চিহ্ন ছিল। (ইবনে মাজাহ ২৬৫ পৃষ্ঠা)
[৪৩৭-৪৩৮]
عن محمدبن قيس قال رايت ابن عمر معتما قد ارخى العمامة بين يديه ومن خلفه ولا ادرى ايها اطول. (مصنف بن ابى شيبة ج৮ ص২৪০- جمع الوسائل ج১ ص২০৭)
অর্থঃ- “হযরত
মুহম্মদ ইবনে ক্বাইস রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমাকে পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখেছি যে, উহার
একপ্রান্ত তাঁর সম্মুখভাগে এবং অপরপ্রান্ত বা শামলা পিছনে (পিঠের উপর) ঝুলন্ত
থাকত। (রাবী বলেন),
আমি জানি না যে, উহা (পাগড়ীর শামলা) কতটুকু লম্বা
ছিল।” (মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্ ৮ম জিঃ ২৪০ পৃষ্ঠা, জামউল্ ওয়াসাইল ১ম জিঃ ২০৭
পৃষ্ঠা)
[৪৩৯-৪৪০]
قال نافع رأيت عبد الله يسدل عمامته من خلفه. (شعب الايمان للبيهقى ج৫ ص১৭৪- عبدة القارى ج২১ ص৩০৭)
অর্থঃ- “হযরত
ইমাম নাফে’ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমাকে
দেখেছি, তিনি পাগড়ীর শামলা পিছনে (পিঠের উপর) ঝুলাতেন।” (শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাক্বী ৫ম
জিঃ ১৭৪ পৃষ্ঠা, উমদাতুল ক্বারী ২১ জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা)
[৪৪১-৪৪২]
عن نافع ان ابن عمر كان اذا تعمم ارخى عمامته بين كتفيه. (شعب الايمان للبيهقى ج৫ ص১৭৫- مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৩৯)
অর্থঃ- “হযরত
ইমাম নাফে’ রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই যখন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে
উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু পাগড়ী পরতেন, তখন পাগড়ীর শামলা দু’কাঁধের
মধ্যবর্তীস্থানে ঝুলিয়ে রাখতেন।” (শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৫ পৃষ্ঠা, মুছান্নাফু
ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৯ পৃষ্ঠা)
[৪৪৩]
عن ابى وائل قال رأيت عبد الله بن عمر معتما قد ارخى عمامته من قبل ظهره- (شعب الايمان للبيهقى ج৫ ص১৭৫)
অর্থঃ- “হযরত আবু
ওয়াইল রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমাকে পাগড়ী পরিহিত দেখেছি যে, তাঁর পাগড়ীর শামলা তাঁর পিঠ
পর্যন্ত প্রলম্বিত ছিল। (পিঠ ছাড়িয়ে অতিরিক্ত ঝুলন্ত ছিল না)।” (শুয়াবুল
ঈমান লিল্ বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৫ পৃষ্ঠা)
[৪৪৪]
عن نافع عن ابن عمر انه كان لايمسح على العمامة. (مصنف ابن ابى شيبة ج১ ص২৩)
অর্থঃ- “হযরত
ইমাম নাফে’ রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা
করেন যে, নিশ্চয়ই তিনি (হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু) পাগড়ীর উপর
মাসেহ্ করতেন না।”
(মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্ ১ম জিঃ ২৩ পৃষ্ঠা)
[৪৪৫]
عن نافع ان ابن عمركان يكره ان يسجد على كور عمامته حتى يكشفها. (المصنف لعبد الرزاق ج১ ص৪০১)
অর্থঃ- “হযরত
ইমাম নাফে’ রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা তাঁর পাগড়ীর পেঁচের উপর সিজদাহ করতে অপছন্দ (মাকরূহ মনে) করতেন।
যতক্ষণ না (ললাট বা কপালকে) পেঁচ হতে উন্মুক্ত করা না হত।” (মুছান্নাফু
লি আব্দির রায্যাক ১ম জিঃ ৪০১ পৃষ্ঠা)
[৪৪৬]
عن نافع قال كان ابن عمر رضى الله عنهما لايسجد على كور العمامة. (مصنف ابن ابى شيبة ج১ ص২৬৮)
অর্থঃ- “হযরত
ইমাম নাফে’ রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা পাগড়ীর পেঁচের উপর সিজদাহ্ করতেন না।” (মুছান্নাফু
ইবনে আবী শাইবাহ ১ম জিঃ ২৬৮ পৃষ্ঠা)
[৪৪৭]
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
অর্থঃ- “হযরত
ইমাম নাফে’ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা তাঁর
(অর্থাৎ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর) অনুরূপ পাগড়ী বাঁধতেন।
(হায়াতুছ ছহাবা রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম ২য় জিঃ ৭ম হেচ্ছা, ৮৩৫
পৃষ্ঠা)
[৪৪৮]
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
অর্থঃ- “(হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা) খুবই সাধাসিধে পোশাক পরিধান করতেন। তবে
সাধারণতঃ ক্বমীছ (কোর্তা),
ইযার (লুঙ্গি) ও কালো রংয়ের ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধান করে
থাকতেন। (সিয়ারুছ্ ছহাবা রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম ২য় জিঃ ২য় হেচ্ছা ৪৮ পৃষ্ঠা)
হযরত আম্মার রদ্বিয়াল্লাহু
আনহু-এর ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক
[৪৪৯-৪৫০]
عن ملحان بن ثروان قال رأيت على عمار عمامة سوداء. (مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৩৫- طبقات ابن سعد ج৬ ص১৫১)
অর্থঃ- “হযরত
মিলহান ইবনে সারওয়ান রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
আম্মার রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখেছি। (মুছান্নাফু ইবনে
আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৫ পৃষ্ঠা, ত্ববাক্বাতু ইবনে সা’দ ৬ষ্ঠ জিঃ ১৫১ পৃষ্ঠা)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে
আতীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক
[৪৫১-৪৫৫]
হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ
ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আতীক্ব আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু
আনহুকে আমীর বানিয়ে তাঁর নেতৃত্বে আনছারগণের কিছু সংখ্যক ছাহাবা-ই-কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমকে ইহুদী আবু রাফি’র হত্যার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেন।
আবু রাফি’ রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দুশমন ছিল। সে সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর নামে নানা অপবাদ রটনা করে কষ্ট দিতো এবং তাঁর শত্রুদেরকে সাহায্য
সহযোগিতা করত। হিজায ভূমিতে তার একটি দূর্গ ছিল যেখানে সে বসবাস করত। অপবাদ রটনার
অপরাধে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন হুজুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তরফ থেকে তাকে হত্যার নির্দেশ পেয়ে যে সময়
তাঁরা (ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণের দল) তার দূর্গের কাছে গিয়ে
পৌঁছলেন তখন সূর্য ডুবে গিয়েছিল। সন্ধা নেমে আসার কারণে লোকজন তাদের পশুপাল নিয়ে
আপন আপন বাড়ির দিকে রওয়ানা হয়েছে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আতীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু
তাঁর সঙ্গীদের বললেন,
তোমরা এখানে বসে অপেক্ষা কর। আমি গিয়ে দ্বার রক্ষীর কাছে
কৌশল করে ভিতরে প্রবেশ করাব চেষ্টা করব। তারপর তিনি দরজার কাছে গেলেন এবং কাপড়
দিয়ে নিজেকে এমনভাবে ঢাকলেন যেন প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণ করছেন। দূর্গের সবাই ভিতরে
প্রবেশ করলে দ্বার রক্ষী তাঁকে লক্ষ্য করে বলল, হে আল্লাহ্র বান্দা! ভিতরে প্রবেশ
করতে চাইলে প্রবেশ করুন। আমি এখনেই দরজা বন্ধ করব। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আতীক্ব
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
আমি তখন ভিতরে প্রবেশ করলাম এবং আত্ম গোপন করে থাকলাম।
সকলেই প্রবেশ করা শেষ হলে দ্বাররক্ষী দরজা বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দিল এবং (দেয়ালে
প্রোথিত) একটি পেরেকের সাথে চাবি ঝুলিয়ে রাখল। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আতীক্ব
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
(দ্বাররক্ষী ঘুমিয়ে পড়লে) আমি উঠে চাবি নিয়ে দরজা খুললাম।
এদিকে আবু রাফি’র কাছে রাত্রে গল্পের আসর বসত। এ সময়ে সে তার উপরের তলার রুমে বসে কিচ্ছা
কাহিনী শুনছিল। গল্পের আসরের লোকজন চলে গেলে আমি সিঁড়ি ভেঙ্গে তার কাছে পৌঁছলাম। এ
সময়ে আমি একটি করে দরজা খুলছিলাম এবং ভিতর থেকে বন্ধ করে দিচ্ছিলাম যেন লোকজন আমার
আগমন বুঝতে পারলেও আমি আবু রাফি’কে হত্যা না করা পর্যন্ত আমার কাছে পৌঁছতে না পারে। এভাবে
আমি তার কাছে পৌঁছলাম যে,
সে অন্ধকার ঘরে তার ছেলে-মেয়ের মাঝে শুয়ে আছে। কিন্তু সে
ঘরের কোন জায়গায় শুয়ে আছে তা বুঝতে পারলাম না। (তার অবস্থান জানার জন্য) আমি তাকে
ডাকলাম “আবু রাফি’।” সে জওয়াব দিল,
কে ডাকছো? তখন আমি আওয়াজ লক্ষ্য করে এগিয়ে গিয়ে তরবারী দ্বারা
প্রচন্ডভাবে আঘাত করলাম। আমি তখন কাঁপছিলাম। এ আঘাতে আমি তার কোন ক্ষতিই করতে
পারলাম না। সে চিৎকার করে উঠলে আমি ঘরের বাইরে চলে আসলাম এবং একটু পরেই প্রবেশ করে
বললাম, আবু রাফি’ চিৎকার করলে কেন?
সে আমাকে আপন লোক মনে করে বলল, তোমার
মায়ের সর্বনাশ হোক। একটু আগেই ঘরের মধ্যে কে যেন আমাকে তরবারী দ্বারা আঘাত করেছে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আতীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি আবার
তাকে প্রচন্ড আঘাত করে ঘায়েল করে ফেললাম। কিন্তু তখনো হত্যা করতে পারি নাই। তাই, তরবারীর
মাথা তার পেটের উপর চেপে ধরলাম এবং পিঠ পার করে দিলাম। এরপর তাকে হত্যা করতে
পেরেছি বলে আমি নিশ্চিত হলাম। সুতরাং একটি একটি করে দরজা খুলে নিচে নামতে থাকলাম।
অবশেষে সিঁড়ির শেষপ্রান্তে পৌঁছলাম। আমি মনে করেছিলাম সিঁড়ির সকল ধাব অতিক্রম
করেছি। কিন্তু তখনো একটি ধাপ অবশিষ্ট ছিল। তিনি বলেন,
فوضعت رجلى وانا ارى انى قد انتهيت الى الارض فوقعت فى ليلة مقمرة قانكسرت سافى فعصبتها بعمامة.
অর্থঃ- “আমি আমার
পাঁ রাখতেই নিচে মাটিতে পড়ে গেলাম। আর রাত্রিটি ছিল জ্যোৎস্মা রাত্রি। (মাটিতে
পড়ে) আমার পায়ের গোছা ভেঙ্গে গেল। তাই আমার মাথার ইমামাহ বা পাগড়ী খুলে পাঁ বেধে
ফেললাম।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ ৫৭৭ পৃষ্ঠা, ফতহুল বারী ৭ম জিঃ ৩৪১ পৃষ্ঠা, উমদাতুল
ক্বারী ১৭ জিঃ ১৩৫ পৃষ্ঠা,
ইরশাদুস্ সারী ৬ষ্ট জিঃ ২৮৭ পৃষ্ঠা, তাইসীরুল
বারী ৫ম জিঃ ২৯৮ পৃষ্ঠা)
হযরত উবাইদুল্লাহ ইবনে আদী
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক
[৪৫৬-৪৬০]
عن جعفربن عمروبن امية الضمرى قال خرجت مع عبيد الله بن عدى بن الخيار فلما قدمنا حمص قال لى عبيد الله هل لك فى وحشى نسأله عن قتل حمزة قلت نعم وكان وحشى يسكن حمص فسالنا عنه فقيل لنا هو ذاك فى ظل قصرة كانه حميت قال فجئنا حتى وقفنا عليه بيسير فسلمنا فرد السلام قال وعبيد الله معتجر بعمامته مايرى وحشى الا عينيه ورجليه. (بخارى شريف ج২ ص ৫৭৩- فتح البارى ج৭ ص৩৬৭- عمدة القارى ج১৭ ص১৫৭ ارشاد السارى ج৬ ص৩০৪- تيسير البارى ج৫ ص৩২২)
অর্থঃ- “হযরত
জাফর ইবনে আমর ইবনে উমাইয়া দ্বামিরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
উবাইদুল্লাহ ইবনে আদী ইবনে খিয়ার রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর সঙ্গে সফরে ছিলাম। আমরা
হিম্সে থাকাকালীন হযরত উবাইদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু আমাকে বললেনঃ চলেন, আমরা
হযরত ওয়াহশী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর নিকট গিয়ে তাঁর কাছ থেকে হযরত হামযা
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর শহীদ হওয়ার ঘটনা জিজ্ঞাসা করে জেনে নেই। আমি বললামঃ ঠিক আছে, চলেন।
হযরত ওয়াহশী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু সে সময় হিম্সেই বসবাস করতেন। আমরা তাঁর (বাসস্থান)
সম্পর্কে (লোকদেরকে) জিজ্ঞাসা করলাম। আমাদেরকে বলা হল, ঐ দেখেন
তিনি তাঁর প্রাসাদের ছায়ায় মশকের মত স্ফীত হয়ে বসে আছেন। হযরত জা’ফর
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আমরা গিয়ে তাঁর থেকে অল্প দূরে
থাকতেই সালাম দিলাম। তিনি সালামের জওয়াব দিলেন। হযরত জা’ফর
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, সেই সময় হযরত উবাইদুল্লাহ ইবনে
আদী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এমনভাবে মাথায় ইমামাহ বা পাগড়ী বেঁধে ছিলেন যে, হযরত
ওয়াহশী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু শুধু মাত্র তাঁর দুঁচোখ ও দু পাঁ দেখতে পাচ্ছিলেন।
(বুখারী শরীফ ২য় জিঃ ৫৮৩ পৃষ্ঠা, ফতহুল বারী ৭ম জিঃ ৩৬৭ পৃষ্ঠা, উমদাতুল
ক্বারী ১৭তম জিঃ ১৫৭ পৃষ্ঠা, ইরশাদুস্ সারী ৬ষ্ঠ জিঃ ৩০৪ পৃষ্ঠা, তাইসীরুল্
বারী ৫ম জিঃ ৩২২ পৃষ্ঠা)
হযরত আবু দারদা
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
[৪৬১]
عن سالم قال رأيت على ابى الدرداء عمامة سوداء- (مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৩৬)
অর্থঃ- “হযরত
সালিম রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আবু দারদা রদ্বিয়াল্লাহু
আনহুকে কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখেছি। (মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৬
পৃষ্ঠা)
[৪৬২]
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
অর্থঃ- “(হযরত আবু
দারদা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু) মাথায় পাগড়ী বেঁধে রাখতেন। ... আর তাঁর পাগড়ীর শামলা
পিছনে (পিঠের উপর) লটকানো বা ঝুলন্ত থাকত। (সিয়ারুছ্ ছাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম
৩য় জিঃ ১ম হেচ্ছা ১৭৪ পৃষ্ঠা)
হযরত আবু দাজানাহ্
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
[৪৬৩]
ان ابادجانه كان يعلم بعصابة حمراء- (حاشية الجلالين ص৬০)
অর্থঃ- “(বদর
যুদ্ধের দিবস) হযরত আবু দাজানাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর চিহ্ন ছিল গন্ধম রংয়ের
পাগড়ী। (হাশিয়ায়ে জালালাইন/৬০ পৃষ্ঠা)
হযরত ফুযালাহ্ ইবনে উবাইদ, আবুল
মুনীব, ফুররুখ ইবনে সিয়ার অথবা সিয়ার ইবনে ফুররুখ রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণের ইমামাহ্ বা
পাগড়ী মুবারক
[৪৬৪]
عن مسلم بن زياد قال رأيت اربعة من اصحاب النبى صلى الله عليه وسلم انس بن مالك وفضالة بن عبيد وابا المنيب وفروخ بن سيار او سيار بن فروخ يرخون العمائم من خلفهم وثيابهم الى الكعبين- (شعب الايمان للبيهقى ج৫ ص১৭৬)
অর্থঃ- “হযরত
মুসলিম ইবনে যিয়াদ রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চারজন ছাহাবী (১) হযরত আনাস ইবনে
মালিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু,
(২) হযরত ফুযালাহ ইবনে উবাইদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, (৩) হযরত
আবুল মুনীব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এবং (৪) হযরত ফুররুখ ইবনে সিয়ার অথবা সিয়ার ইবনে
ফুররুখ রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা সকলকেই এ অবস্থায় দেখেছি যে, তাঁরা
তাঁদের পাগড়ীর শামলা পিছনে (পিঠের উপর) ঝুলিয়ে রাখতেন এবং তাঁদের পোশাক (কাপড়) কে
দু’পায়ের গিরার উপর পর্যন্ত ঝুলাতেন।” (শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাক্বী ৫ম
জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা)
হযরত ওয়াসিলাহ ইবনুল
আসক্বা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর ইমামাহ্ বা
পাগড়ী মুবারক
[৪৬৫]
عن عمربن يحيى قال رأيت واثلة بن الاسقع معتما قد ارخى عمامته من خلفه ذراعا- (شعب الايمان للبيهقى ج৫ ص১৭৫)
অর্থঃ- “হযরত উমর
ইবনে ইয়াহ্ইয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
ওয়াসিলাহ্ ইবনুল আসক্বা রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখেছি যে, তাঁর
পাগড়ীর শামলা পিছনে (পিঠের উপর) একহাত পরিমাণ প্রলম্বিত ছিল।” (শুয়াবুল
ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৫ পৃষ্ঠা)
[৪৬৬]
عن حسين بن يونس قال رأيت على واثلة عمامة سوداء. (مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৩৭)
অর্থঃ- “হযরত
হুসাইন ইবনে ইউনুস রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
ওয়াসিলাহ্ ইবনুল আসক্বা রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখেছি।” (মুছান্নাফু
ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৭ পৃষ্ঠা)
হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর ইমামাহ্ বা পাগড়ী মোবারক
[৪৬৭]
হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে ইয়ামান প্রদেশের গভর্ণর হিসেবে প্রেরণের সিদ্ধান্ত নিলেন।
পাঠানোর প্রাক্কালে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত বিলাল
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে স্বীয় পাগড়ী আনতে নির্দেশ দিলেন। অতঃপর তিনি হযরত মুয়ায
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর মাথায পাগড়ী বেঁধে দিয়ে ইয়ামান অভিমুখে প্রেরণ করলেন।
(আফযালুল মাওয়াইয ১০ পৃষ্ঠা (ইমাম ইব্রাহীম দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি)
হযরত বারা ইবনে আযিব
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
[৪৬৮]
حدينا الخثعمى قال رأيت على البراء عمامة سوداء. (مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৩৭)
অর্থঃ- “হযরত
খুসা’মী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন। আমি হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু
আনহুকে কালো রংয়ের পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখেছি। (মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম
জিঃ ২৩৭ পৃষ্ঠা)
হযরত আসওয়াদ রদ্বিয়াল্লাহু
আনহু-এর ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক
[৪৭০-৪৭১]
عن اسماعيل بن ابى خالد قال رأيت على الاسود عمامة سوداء. (مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৩৬- طبقات ابن سعد ج৬ ص৪৯)
অর্থঃ- “হযরত
ইসমাঈল ইবনে আবু খালিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
আসওয়াদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখেছি।” (মুছান্নাফু
ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৬ পৃষ্ঠা, ত্ববাক্বাতু ইবনে সা’দ ৬ষ্ঠ
জিঃ ৪৯ পৃষ্ঠা)
হযরত যায়িদ বিন্ সাবিত
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক
[৪৭৫]
عن ثابت ابن عبيد قال رأيت زيد بن ثابت وعليه ازار ورداء وعمامة. (مصنف ابن ابى شيبة ج৮ ص২৪১)
অর্থঃ- “হযরত
সাবিক ইবনে উবাইদ রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
যায়িদ বিন সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে দেখেছি যে, তাঁর (পড়নে) লুঙ্গি, (গায়ে)
চাদর ও (মাথায়) পাগড়ী ছিল।”
(মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৪১ পৃষ্ঠা) (অসমাপ্ত)
0 Comments:
Post a Comment