গবেষণা
কেন্দ্র- মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ
بسم الله الر حمن الرحيم
গত সংখ্যায়ও আমরা ছবির ফতওয়া ছাপিয়েছিলাম, কিন্তু ফতওয়াটি সম্পূর্ণ না হওয়ায়
ধারাবাহিকভাবে ছাপাতে হচ্ছে। যেহেতু অনেকে গত সংখ্যাটি নাও পেতে পারেন, সে জন্য
গত সংখ্যার দলীলগুলো বাদে শুধু মূল ফতওয়াটি আবারও ছাপানো হলো, যাতে করে
সবার পক্ষে অন্ততঃ মূল ফতওয়াটি জানা সম্ভব হয়, আর সম্পূর্ণ দলীল পেতে হলে সব
সংখ্যারই দরকার।
মহান
আল্লাহ পাক উনার অসীম শুকরিয়া ও রহমত যে, মহান আাল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে
মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ উনার গবেষণা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যথাক্রমে টুপি, অঙ্গুলী
চুম্বনের বিধান ও নিয়ত করে মাযার শরীফ জিয়ারতের পর বর্তমানে ছবি সংক্রান্ত বিষয়ে
চতুর্থ ফতওয়া প্রকাশ করার তাওফিক এনায়েত করেছেন। প্রদত্ত ফতওয়াটি বিভিন্ন আকলী এবং
নকলী দলীল-আদিল্লার ভিত্তিতে দেয়া হয়েছে। ছবি সম্পর্কে যাদের ছহীহ বুঝ নেই তাদের
উচিৎ হবে প্রদত্ত ফতওয়া বুঝে তদানুযায়ী আমল করা।
কেননা
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
فسء لو اهل الذكر ان كنتم لا تعلمون.
অর্থঃ- “সুতরাং
অভিজ্ঞ লোকদের নিকট জিজ্ঞাসা করে দেখ, যদি তোমাদের জানা না থাকে।” (পবিত্র
সুরা নহল শরীফ, ৪৩ নং পবিত্র আয়াত শরীফ) কিছু কিছু
লোক কিল্লাত ইলম কিল্লাত ফাহম (কম জ্ঞান, কম বুঝ) এর কারণে ছবি সম্পর্কে
সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পেরে সমাজে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। অথচ মহান আল্লাহ
পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন,
عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من افتى
بغير علم كان اثمه على من افتا. (رواة ابو دادرد(
অর্থঃ- “হযরত আবু
হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “যে ব্যক্তিকে ইলম ব্যতীত ফতওয়া
দেয়া হয়েছে, অতঃপর সে তদানুযায়ী কাজ করেছে, তার গুনাহ যে তাকে ফতওয়া দিয়েছে
তার উপরই পড়বে।” (আবু দাউদ শরীফ)
সুতরাং উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা বোঝা যাচ্ছে, ফতওয়া সব
সময় পবিত্র কুরআন শরীফ,
পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র কিয়াস
শরীফ উনাদের ভিত্তিতে দিতে হবে। মনগড়াভাবে দেয়া যাবেনা।
পবিত্র
করআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
قل ها توابرها نكم ان كنتم
صدقين.
অর্থঃ- “আপনি বলে
দিন, নিজ নিজ দলীল পেশ করো,
যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক।”
আমাদের
আলোচ্য ফতওয়ার মূল বিষয় হচ্ছে ছবি। কোনটা ছবি আর কোনটা ছবি নয়; অনেকে
অনেক ইখতিলাফ (মতভেদ) করেছেন। মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ রহমতে আমরা ছবির একটি
শরীয়ত সম্মত সংজ্ঞা দিতে সক্ষম হয়েছি।
ছবির সংজ্ঞাঃ
আলোর
প্রতিফলণ বা প্রতিসরণ ব্যতীত অন্য যে কোন পদ্ধতিতেই হোক না কেন, যদি কোন
বস্তু বা প্রাণী (যেমন মানুষ,পশু পাখি, মাছ ইত্যাদি) যে কোন স্থানে আকার আকৃতিতে দৃশ্যমান হয়, তবে সেই
আকার আকৃতিটিকে শরীয়তের দৃষ্টিতে উহার ছবি বলে। পক্ষান্তরে ইসলামী শরীয়ত উনার
দৃষ্টিতে কোন বস্তু বা প্রাণী (যেমন মানুষ, পশু পাখি, মাছ
ইত্যাদি) যেখানেই যে অবস্থায়ই থাকুক, আলোর প্রতিফলণ বা প্রতিসরণ বা
উভয়ের মাধ্যমে যদি তা যে কোন স্থানে আকার আকৃতিতে দৃশ্যমান হয় তবে সেই আকার
আকৃতিটি ছবি নয়। কোন জানদার বা প্রাণীর ছবি আকাঁ, ছবি তোলা, ছবি তৈরী
করা, রাখা, দেখা শরীয়ত অনুযায়ী নাজায়িয, হারাম। ছবির ধারনাকে ভালভাবে বোঝানোর জন্য আনুষাঙ্গিক কিছু
আলোচনা করা হলো।
(ক) আলোর প্রতিফলন:- আলোকরশ্মি যখন বায়ু বা অন্য কোন
স্বচ্ছ মাধ্যমের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় অন্য কোন মাধ্যমে বাধা পায়, তখন দুই
মাধ্যমের বিভেদ তল থেকে কিছু পরিমাণ আলো প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে। আলোর বাধা পেয়ে
এই ফিরে আসাকে আলোর প্রতিফলন বলে। ছবি দিতে হবে আরও সুক্ষ্মভাবে ব্যাখ্যা করলে বলা
যায় যে, আলো হচ্ছে এক প্রকার ঊষবপঃৎড়সধমহবঃরপ এই ডধাব এর নির্দিষ্ট ঋৎবয়ঁহপু থাকে।
আলোর
ক্ষুদ্রতম অংশকে বলে ফোটন চযড়ঃড়হ। এই আলো যখন কোন বস্তুর উপর পড়ে তখন সেই বস্তু
থেকে অসংখ্য প্রতিফলিত ফোটন বের হয়। যাদের ঋৎবয়ঁহপু ভিন্ন রকম। ফলে আমরা বস্তুটির
বিভিন্ন অংশকে বিভিন্ন রকম দেখতে পাই। অর্থাৎ বস্তুটিকে আমরা হুবহু ঐ বস্তুর মত
দেখতে পাই। আলোর এই প্রতিফলন নির্ভর করে প্রতিফলকের গুণাগুণের উপর।
এগুলো
হলো- (১) প্রতিফলকের স্বচ্ছতা ও মসৃনতা (২) আলোর গতিপথে বাধা সৃষ্টি করা এবং (৩)
প্রতিফলকটির আলো শোষণ না করার ক্ষমতা ।
অর্থাৎ
কোন বস্তু যত বেশী স্বচ্ছ ও মসৃণ হবে এবং সেটাতে যদি আলো ভেদ না করতে পারে এবং আলো
শোষণ করার ক্ষমতা যত কম হবে, সেই বস্তু তত ভাল আলোর প্রতিফলন ঘটাতে পারে। আলোর প্রতিফলন
যত ভাল হবে প্রতিফলিত আলোর ঋৎবয়ঁহপু তত কাছাকছি হবে।
(খ) আলোর প্রতিসরণ:
আলোকরশ্মি এক স্বচ্ছ
মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে প্রবেশ করার সময় দুই মাধ্যমের বিভেদ তলে
আলোকরশ্মি দিক পরিবর্তন করে। একে আলোর প্রতিসরণ বলে। একই মাধ্যমে ঘনত্বের
তারতম্যের কারণেও প্রতিসরণ হয়ে থাকে।
ছবি দিতে হবে
আলোর
প্রতিফলন ও প্রতিসরনের ব্যবহার:
(১) আয়না, স্থির
পানি, মসৃণ ধাতবপৃষ্ঠ ইত্যাদিতে আলোর প্রতিফলন হয়। স্থির পানি, মসৃণ
ধাতবপৃষ্ঠ (যেমন- চকচকে লোহা) ইত্যাদি প্রতিফলকের চেয়ে রূপালী প্রলেপ দেয়া আয়না
বেশী ভাল প্রতিফলকের কাজ করে। ফলে সূর্যের আলো আয়নার মধ্যে পড়ে অনেকটা একই
ঋৎবয়ঁহপু তে প্রতিফলিত হয়। (অবশ্য ১০০% নয়)।
মূলতঃ আয়না এত ভাল
প্রতিফলক, যার মধ্যে অল্প আলো পড়লেও সেটা প্রতিফলিত হতে পারে। ফলে সূর্যের আলো যখন কোন
বস্তুর উপর পড়ে, তখন সে বস্তু থেকে যে বিভিন্ন ঋৎবয়ঁহপু এর ফোটন বের হয়। সেটা যদি আবার আয়নার
মধ্যে পড়ে, তবে এই পুণরায় প্রতিফলিত আলোর ফোটনের ঋৎবয়ঁহপু একই হয়। ফলে কোন বস্তুকে সরাসরি
যে রকম দেখি, আয়নার মধ্যে সেটাকে একই রকম দেখি। মূল
কথা হলো, কোন বস্তুকে সরাসরি দেখা এবং আয়নার মধ্যে দেখার মধ্যে মৌলিক কোন পার্থক্য নেই।
এক্ষেত্রে শুধুমাত্র প্রতিফলণের সংখ্যা
একবার বৃদ্ধি পায়। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে, মহান
আল্লাহ পাক উনার রসুল,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি গামলার পানির মধ্যে এবং দর্পনে নিজ চেহারা
মুবারক দেখেছেন। কাজেই আয়না, পানি এবং
এ জাতীয় মসৃণ পৃষ্ঠে আামরা যা দেখি, তা কখনও ছবি হতে পারেনা। (২)
পেরিস্কোপের মাধ্যমে দূরবর্তী বস্তু বা জীবকে কাছে বা বড় এবং স্পষ্ট দেখা যায়। এই
যন্ত্র আলোর প্রতিফলণ ও প্রতিসরণ উভয়টিই ব্যবহৃত হয়। ম্যাগনিফাইং গ্লাসে এবং চশমার
মাধ্যমে যথাক্রমে ক্ষুদ্র বস্তুকে বড় করে দেখা এবং অস্পষ্ট বস্তুকে স্পষ্ট করে
দেখা হয়। এখানেও আলোর প্রতিসরণ ব্যবহৃত হয়। অনুবীক্ষণ যন্ত্রেও (গরপৎড়ংপড়ঢ়ব) আলোর
প্রতিসরণের কারণে বস্তুর আসল আকারের চেয়ে অনেক বড় একটি চুড়ান্ত অবাস্তব প্রতিবিম্ব
পাওয়া যায়। দূরবীক্ষণ যন্ত্র (ঞবষবংপড়ঢ়ব) যার দ্বারা অনেক দূরবর্তী বস্তু খালী
চোখে দেখা যায়, তাতে আলোর প্রতিফলণ ও প্রতিসরণ দু’পদ্ধতিই প্রয়োগ করা যায়।
এজন্য দূরবীক্ষণ যন্ত্র দু’প্রকার:
(১) প্রতিসরণ দূরবীক্ষণ যন্ত্র (জবভৎধপঃরহম ঞবষবংপড়ঢ়ব) (২) প্রতিফলক দূরবীক্ষণ যন্ত্র (জবভষবপঃরহম ঞবষবংপড়ঢ়ব)
(গ) প্রতিবিম্ব: কোন বিন্দু থেকে নিঃসৃত আলোক:
রশ্মিগুচ্ছ প্রতিফলিত বা প্রতিসরিত হয়ে যদি দ্বিতীয় কোন বিন্দুতে মিলিত হয় বা
দ্বিতীয় কোন বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়, তাহলে ঐ দ্বিতীয় বিন্দুকে প্র্রথম
বিন্দুর প্রতিবিম্ব (ওসধমব) বলে। ছবি
দিতে হবে
(ঘ) ক্যামেরা (ঈধসবৎধ): এই
যন্ত্রের মাধ্যমে প্রথমে বস্তুর নেগেটিভ চিত্র পাওয়া যায়। যাকে পরে রাসায়নিক
প্রক্রিয়ার দ্বারা পজিটিভ বা প্রকৃতচিত্র তৈরী করা হয়।
(ঙ) টেলিভিশন (ঞবষবারংরড়হ):
টেলিভিশনের মাধ্যমে শব্দ শোনার সাথে সাথে বস্তুর ছবি দেখতে পাওয়া যায়। বৃটিশ
বিজ্ঞানী লজি বেয়ার্ড ১৯২৩ সালে প্রথম টেলিভিশন আবিষ্কার করেন। ১৯৪০ সালে টি.ভি
বর্তমান অবস্থায় উন্নত হয়। ঞ.া/ঈষড়ংবফ ঈরৎপৎরঃ ঞ.া/ঠরফবি ঈধংংবঃঃব জবপড়ৎফবৎ/ঠরফবড়
ঈধংংবঃঃব ঢ়ষধুবৎ ইত্যাদির কার্যাবলীকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।
যথাঃ- (১)
ঞৎধহংসরংংরড়হ বা প্রেরণ (২) গবফরঁস বা
মাধ্যম (৩) জবপবঢ়ঃরড়হ বা গ্রহন ঞ.া এবং ঠ.ঈ.জ বা ঠ.ঈ.চ এর ক্ষেত্রে প্রথমে কোন
বস্তুর ছবি তুলে সেই ছবির বিভিন্ন অংশের, আর ঈষড়ংবফ ঈরৎপরঃ ঞ.া এর ক্ষেত্রে
কোন বস্তুর সরাসরি বিভিন্ন অংশের প্রতিফলিত ফোটনের ঋৎবয়ঁহপু অনুযায়ী একধরনের
ঊষবপঃৎরপধষ ঝরমহধষ তৈরী হয়। সেই ঝরমহধষ কে আরও চৎড়পবংংরহম এর পর ঞৎধহংসরঃ করা
হয়। ঞ.া এর ক্ষেত্রে ঞৎধহংসরঃ করা হয় বাতাসে। আর ঠ.প.ৎ এবং ঈষড়ংবফ ঈরৎপঁরঃ ঞ.া এর
ক্ষেত্রে তারের মধ্যে। মাধ্যম বাতাসই হোক আর তারই হোক সেটা ৎবপবরাবৎ (অর্থাৎ ঞ.া)
এ যখন আসে তখন সেটা ৎবপবরাব করার পর কিছু ঢ়ৎড়পবংংরহম করা হয়, এই
ঝরমহধষ গুলো ঞ.া তে অবস্থিত একটি ঊষবপঃৎড়হরপ এঁহ কে নিয়ন্ত্রন করে। ফলে এই এঁহ টি
ঞ.া এর পর্দার যে অংশে যতটুকু ছাড়লে হুবহু
ঞৎধহংসরঃ করা ছবির মত হবে সে অংশে ততটুকু ইলেকট্রন ছাড়ে। এই ঊষবপঃৎড়হ গুলো
রাসায়নিক প্রলেপ পতিত হয়ে উজ্জল ও অনুজ্জল বিন্দুর সমম্বয়ে ছবি তৈরী করে। এই ছবি
ঞ.া এর পর্দায় দেখা যায়। অর্থাৎ ঞ.ঠ/ঠ.ঈ.জ/ঠ.ঈ.চ/ঈষড়ংবফ পরৎপঁঃ ঞ.ঠ সবক্ষেত্রেই
পর্দায় যা আসছে সেটা সুস্পষ্ট এবং বিশেষভাবে অঙ্কিত ছবি । অনেকে টেলিভিশনকে পানি ও আয়নার সাথে তুলনা করেছেন। মূলতঃ টেলিভিশন
পানি ও আয়নার মত নয়। তারা টেলিভিশনে কিভাবে ছবি আসে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা না
থাকার কারণে অজ্ঞতাপ্রসূত ফতওয়া দিয়েছেন। তাদের ফতওয়া নেহায়েতই গ্রহনযোগ্য নয়।
সিনেমা/চলচ্চিত্র/ছায়াছবিঃ মুই ব্রীজ নামক বিজ্ঞানী ১৮৭২ সালে প্রথম চলচ্চিত্র তৈরী করে। সে একটি চলমান
ঘোড়ার বিভিন্ন অবস্থানের ২৪টি ছবি তৈরী করে। ছবিগুলোকে যখন দ্রুত চালানো হত, তখন
ঘোড়াটা দৌড়াচ্ছে বলে মনে হত। ১৮৯৩ সালে টমাস এডিসন মুইব্রীজের আবিষ্কারকে আরও
উন্নত করে। সেই সর্বপ্রথম সবাক চলচ্চিত্র আবিষ্কার করে। চলচ্চিত্র প্রকৃতপক্ষে আলোকচিত্রেরই উন্নত সংস্করণ। কোন জিনিসের
অনেকগুলো স্থির ছবি ধারাবাহিকভাবে এক প্রকার স্বচ্ছ পদার্থের উপর সাজান হয়।
যন্ত্রের (চৎড়লবপঃড়ৎ) মাধ্যমে আলোর প্রক্ষেপণের দ্বারা এই সকল ছবি বৃহত্তররূপে
প্রতিবিম্বত হয়ে পর্দার (ঝপৎববহ) উপর পড়ে।
প্রতিটি ছবি সেকেন্ডের
সামান্যতম অংশ সময়ের জন্য স্থিরভাবে পর্দায় পড়ে এবং এটা মুছে যাওয়ার সাথে সাথে আর
একটা পর্দার উপর পড়ে এবং এভাবে ক্রমাগত পড়তে থাকে। চোখের
মাধ্যমে যদি আমাদের মস্তিষ্কে কোন বস্তুর প্রতিবিম্ব অনুভূত হয়, তবে সেটা
মুছে যেতে যতটুকু সময়ের প্রয়োজন তার পূর্বেই যদি আর একটা প্রতিবিম্ব তৈরী হয়, তবে এই
প্রতিবিম্বগুলোর পার্থক্য নির্ণয় করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। একারণেই চলচ্চিত্রের
স্থির ছবিগুলোর পার্থক্য দর্শকের কাছে ধরা পড়েনা। দর্শকের কাছে মনে হয় একই ছবি এবং
ছবিতে যা দেখান হয় তা বুঝি চলমান। মূলতঃ
তা ঠিক নয়, বরং স্থির ছবিই একটার পর একটা আসে যায়। যে জন্য একে চলচ্চিত্র বলে। ছবির উপর
আলোর প্রক্ষেপণের মাধ্যমে এর (ছবির) ছায়া পর্দার উপর নিক্ষিপ্ত হয়, সেজন্য
চলচ্চিত্রকে ছায়াছবিও বলে।
উপরোক্ত আলোচনার পর বলা
যায় যে, পবিত্র শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে সচলতা বা স্থিরতা, উরৎবপঃ ঞবষব ঈধংঃ এর দ্বারা তৈরী
বা ঞ.া ওহফরৎবপঃ ঞবষব ঈধংঃ ঋরষস ব্যতীত তৈরী, স্থায়ীত্বতা বা ঋরষস অস্থায়িত্বতা
ইত্যাদি কোনটাই ছবি হওয়ার জন্য শর্ত নয়। ছবিকে
আরবীতে تصوير ইংরেজীতে চযড়ঃড়, চরপঃৎঁৎব, ওসধমব
ইত্যাদি বলা হয়। কিন্তু যে নামেই অভিহিত
করা হোক না কেন, এবং যে কোন পদ্ধতিতেই তৈরী, আঁকা বা তোলা হোক না কেন পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও পবিত্র কিয়াস
অর্থাৎ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনাদের আকীদা মোতাবেক সমস্ত প্রাণীর ছবিই তৈরী
করা, তোলা, আঁকা, দেখা, রাখা ইত্যাদি নাযায়েয,
হারাম।
প্রাণীর
ছবি হারাম হওয়ার ব্যাপারে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মধ্যে কোন প্রকার ইখতিলাফ
(মতভেদ) নেই। কেননা ছবি হারাম হওয়ার ব্যাপারে একাধিক সহীহ পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র
হাদীছ শরীফ উনার শরাহ,
সমস্ত মশহুর ফিকাহ ও ফতওয়ার কিতাব উনাদের মধ্যে সরাসরি
উল্লেখ রয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে অনেকে
বলতে পারেন যে, আমাদের ব্যবহারিক জীবনের ক্ষেত্রে যেমন- চাকরী, ব্যবসার প্রয়োজনে, পড়াশোনার
জন্য, ব্যাঙ্কে একাউন্ট করতে,
জমি ক্রয়-বিক্রয়ে, ড্রাইভিং এবং অনেক প্রকার
লাইসেন্স, পারমিট ও পাসপোর্ট করতে ছবির প্রয়োজন হয়। তার মাসআলা কি?
আলোচ্য
মাসআলার জবাবে অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, বর্তমান বিশ্বের কোথাও খিলাফত বা
ইসলামী শাসন ব্যবস্থা নেই। খিলাফত না থাকাতে অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের মাজুর হতে হয়।
পবিত্র
কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র
ইজমা ও পবিত্র কিয়াস উনাদের দৃষ্টিতে যে সকল কাজ ফরজ-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত তা পালন
করার পূর্বশর্ত হিসাবে যদি কোন ব্যক্তিকে অনিচ্ছাসত্ত্বেও পবিত্র শরীয়ত উনার খেলাফ
কাজ করতে বাধ্য করা হয়,
তখন সে পবিত্র শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মাজুর (অপারগ) বলে গন্য
হয়।
পবিত্র শরীয়ত
উনার বিরোধী রাষ্ট্রীয় ও আর্ন্তজাতিক ব্যবস্থার কারণে আমরা বহুক্ষেত্রে মাজুর।
আর্ন্তজাতিক ব্যবস্থার কারণে আজকাল বিদেশে যেতে হলে ছবিসহ পাসপোর্ট করতে হয়। অথচ
ছবি তোলা পবিত্র শরীয়ত উনার আইনে সম্পূর্ণ নাজায়েয হারাম।
কাজেই কোন ব্যক্তির উপর
যখন হজ্ব ফরজ হয়,
তখন রাষ্ট্রীয় ও আর্ন্তজাতিক শরীয়ত বিরোধী আইন অনুযায়ী সে
ব্যক্তি ছবিসহ পাসপোর্ট করতে বাধ্য হয়। আবার যেহেতু হালাল উপার্জন করা ফরজ, সেহেতু
আজকাল চাকরী বা ব্যবসা বাণিজ্যে ছবির বাধ্যবাধকতার কারণে ছবি তোলা মাজুর হিসেবে
গণ্য হবে। যেহেতু চাকরী,
ব্যবসা ইত্যাদির জন্য যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজকাল লেখাপড়া
করতে ছবির দরকার হয়,
তাই এক্ষেত্রেও ছবি তোলা মাজুরের হুকুম হবে।
এ প্রসঙ্গে কিতাবে একটা উসুল
উল্লেখ করা হয়-الضرو رات تبح المحظو
رات.
অর্থঃ জরুরত হারামটাকে হালাল করে দেয়। একইভাবে নিরাপত্তার জন্য ব্যাঙ্কে একাউন্ট
খুলতে, জমি ক্রয়-বিক্রয়ে ইত্যাদি আবশ্যকীয় বিবিধ ক্ষেত্রে শরীয়তবিরোধী আইনের কারণে
আমাদেরকে ছবি তুলতে বাধ্য করা হয়। এগুলো মাজুরের হুকুমেই পড়বে। এসবক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়ত উনার বিরোধী আইন
প্রণেতাগণও আইন প্রয়োগকারী প্রশাসন যারা
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিপক্ষে আইন প্রণয়ন করেছেন, করেন ও
করবেন তারা প্রত্যেকেই কঠিণ গুনাহে গুনাহ্গার হবেন। এবং সমুদয় গুনাহই তাদের উপর
বর্তাবে। যদি মাজুর না হয় তবে যারা ছবি সংক্রান্ত বিষয়ে জড়িত থাকবে, গুনাহ্
তাদের উপরও বর্তাবে। এরপর বলা যায় যে, টেলিভিশনে অনেক ইসলামী প্রোগ্রাম
হয় বা ওয়াজ ভিডিও করে দেখা যায়, তাতে কি আমাদের ইলমে দ্বীণ হাছিল হয়না?
এসব কথার
জাওয়াব মূলতঃ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার
মধ্যেই আছে। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক
ফরমান,
يسعلو نك عن
الخمر والميسر قل فيهما اثم كبير ومنافع للناس.
অর্থঃ “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম! আপনাকে প্রশ্ন করা হয় মদ ও জুয়া সম্পর্কে। আপনি বলে দিন, মদ ও
জুয়ার মধ্যে মানুষের জন্য ফায়দা রয়েছে। তবে ফায়দার চেয়ে গুনাহই বড়। কাজেই এগুলি
হারাম।”
এখানে
লক্ষণীয় যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন যে, মদ ও জুয়ার মধ্যে ফায়দা রয়েছে। মদ
পান করলে স্বাস্থ্য ভাল হয়,
জুয়া খেললে রাতারাতি অনেক টাকা পাওয়া যায়। তথাপি এগুলোর
মধ্যে ফায়দার চেয়ে গুনাহ বেশী বলে এগুলোকে হারাম করা হয়েছে। সুতরাং মদ ও জুয়ার
মধ্যে উপকারীতা থাকা সত্ত্বেও এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়, এগুলো হারাম। মদ ও জুয়ার মধ্যে
উপকারীতার জন্য কেউ যদি এটাকে জায়েয মনে করে তবে সে কুফরী করল। ঠিক তদ্রুপ ছবির
উপকারীতার জন্য যদি কেউ এটাকে (ছবিসহ ইসলামী প্রোগ্রামকে) জায়েয মনে করে, তবে সেও
কুফরী করল।
সুতরাং
টেলিভিশন, ভিসিআর ইত্যাদির মধ্যে যদি ইসলামী প্রোগ্রাম হয়ও কিন্তু তার মূলই হল ছবি যা
স্পষ্টত হারাম, নাজায়েয। (এছাড়াও বর্তমানে টেলিভিশনের অন্যান্য অশ্লীলতার কারণেও এগুলো ইসলামী
শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হারামের পর্যায়ে পড়ে) কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র
কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক ফরমান,
ولا تلبس الحق با لباطل.
অর্থঃ “তোমরা
সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করোনা।”
অন্যত্র
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
افتؤ منون ببعض الكتاب وتكفرون ببعض.
অর্থঃ “তোমরা
কিতাবের কিছু অংশ মানবে,
আর কিছু অংশ মানবে না, তা হবেনা।”
সুতরাং
টিভিতে বা ভিসিআর এ ইসলামী বা জ্ঞানমূলক অনুষ্ঠান প্রচার বা দেখার মধ্যে কিছু
উপকারীতা থাকা সত্ত্বেও যেহেতু এসবের মূল হচ্ছে ছবি; যার ফায়দার চেয়ে গুনাহই বড়। তাই
টিভি এবং ভিডিওতে কোন অনুষ্ঠান করা বা দেখা অবশ্যই হারাম, নাজায়েয।
তবে
হ্যাঁ টেলিভিশন, ভিসিআর ইত্যাদির মাধ্যমে কোন জানদার প্রাণীর ছবি ব্যতীত যদি ইসলামী তা’লীম বা
ইলমে দ্বীন শিক্ষা দেয়া হয়,
তবে তা নাজায়েয নয়। যেমন এখানে নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত
বা কারিগরি শিক্ষা পদ্ধতি দেখানো যেতে পারে।
বলাবাহুল্য, কাফেররা
হল মুসলমানের খাদেম। তারা অনেক কিছু আবিষ্কার করে থাকে। যেমন, (ফ্যান, মাইক, টিভি, ভিসিআর)
ইত্যাদি। মুসলমানগণ যখন দেখেন কাফেরদের খেদমত শরীয়ত উনার খেলাফ নয়, তখন তারা
ইচ্ছা করলে তা গ্রহণ করতে পারেন। আর ইসলামী শরীয়ত উনার খেলাফ হলে অবশ্যই তা বর্জন
করতে হবে। অবশ্য কোন মুসলমানও যদি শরীয়ত উনার খেলাফ কিছু আবিষ্কার করে তবে সেটাও
গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
تعا ونوا على اابر والتقوىص ولا تعا ونو على الاثم والعد وان. (২ الما عدة)
অর্থঃ “তোমরা
নেকী এবং পরহেযগারীর মধ্যে পরস্পর পরষ্পরকে সাহায্য কর। পাপ এবং শত্রুতার মধ্যে
পরষ্পর পরষ্পরকে সাহায্য করো না।” শুধু তাই নয়। বরং কোন প্রকার সাহায্য সহযোগীতা বা সমর্থনও করা যাবে না। তাই
মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اذا عملت الخطيعة فى الارض من شهدها فكرهها كان كمن غاب عنها- ومن عاب فر ضيها كان كمن شهدها.
অর্থঃ “পৃথিবীতে যখন কোন অন্যায় বা পাপ
সংগঠিত হয়, তখন যে ব্যক্তি ঐস্থানে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও উহাকে ঘৃণা করে সে যেন সেস্থানে
উপস্থিত ছিল না। আর যে ব্যক্তি অনপুস্থিত থাকিয়াও পাপের প্রতি সন্তুষ্ট থাকে, সে যেন
তথায় উপস্থিত ছিল।”
অনেকে
বলে থাকেন যে, আজকাল অনেক পীর সাহেব,
মুফতী সাহেব, মোফাচ্ছের সাহেব, মোহাদ্দেছ
সাহেব, মাওলানা সাহেব,
হাফেজ সাহেব, ক্বারী সাহেব, ওয়ায়েজ, ইসলামী
চিন্তাবিদ, ইসলামী রাজনৈতিক নেতা,
আলেম, জালেম, ছূফী, দরবেশ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ টেভিভিশন, ভিসিআর
বা ছবি সংশ্লিষ্ট পদ্ধতিতে ইসলামী প্রোগ্রাম করেন এবং পেপারে পত্রিকায় ছবি তোলেন।
তাদের সম্পর্কে ফায়সালা কি?
মূলতঃ এর জবাবে সংক্ষেপে
এতটুকু বললেই চলে যে,
ইসলামী শরীয়ত উনার কোন ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র
বা অধিকাংশ লোককে দলীল (আদর্শ) হিসেবে গ্রহণ করা যাবেনা। যতক্ষণ পর্যন্ত সে
ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র বা অধিকাংশ লোক পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ,
পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের উপর কায়েম
না থাকবে। অর্থাৎ যে কেউ ইসলামের খেদমত করলেই যে, সে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ বা দলীল
বলে গণ্য হবে তা নয়। অতএব যেহেতু পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র
ইজমা ও পবিত্র কিয়াসের অকাট্য দলিল দ্বারা ছবি আঁকা, তৈরী করা, দেখা, রাখা
ইত্যাদি সব হারাম প্রমাণিত। কাজেই এর বিপরীত কোন মত পথ গ্রহণ করা যাবেনা। আমাদের
একটা কথা মনে রাখতে হবে যে,
দ্বীন ইসলাম উনার কাজ অনেক সময় ফাসেক ও কাফের লোকদের
দ্বারাও হয়। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
ان الله ليو يد هذ الدين
برجل فاجر.
অর্থঃ নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক এই দ্বীনের খেদমত
নিবেন ফাছেক ফুজ্জার (কাফির) লোকের দ্বারা। উদাহরণস্বরূপ
বলা যায়, আবু তালেব সুদীর্ঘ ৪২ বৎসর নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খেদমত করেছিল। কিন্তু তার ঈমান নসীব হয় নাই। অর্থাৎ সে
কাফির অবস্থাতেই ইসলাম উনার খেদমত করেছিল। অনুরূপ হিন্দু গিরিশ চন্দ্র সেন
সম্পূর্ণ পবিত্র কুরআন শরীফ বাংলা ভাষায়
অনুবাদ করে এবং প্রথম প্রকাশ করে ইসলাম উনার খেদমত করে। আবার পবিত্র কুরআন শরীফ
উনার মধ্যে হরকত সংযোজন করেছিল হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ। সে চরম জালেম হওয়া সত্ত্বেও
মহান আল্লাহ পাক তার দ্বারা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার খেদমত নিয়েছেন। পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
السعيد من وعظ
بغيرة (الحديث
অর্থঃ নেককার ঐ ব্যক্তি, যে অপরকে
নসীহত করা হলে সেই নসীহত নিজে গ্রহণ করে।
বাংলাদেশ তথা সারাবিশ্বে
ছবি সম্পর্কে যে ফিৎনা পয়দা হয়ে এখনও জারি আছে এবং তাতে মানুষের পবিত্র ঈমান উনার
যে ক্ষতি হচ্ছে- আমরা আশা করি, আমাদের এ ফতওয়া প্রদানের পর ইনশাল্লাহ তার অবসান ঘটবে ও এর
উছিলায় মানুষ ইসলাহ (সংশোধন) প্রাপ্ত
হবে এবং তাদের ঈমান হিফাজত হবে।
মূলতঃ
আমাদের আলোচ্য ফতওয়ায় জ্ঞানীগণের জ্ঞানমূলক জিজ্ঞাসার জবাব রয়ে গেছে অর্থাৎ
সমজদারের জন্য ইশারাই যথেষ্টঃ
العاقل تكفيه الاشارة.
এখানে আমরা মহান আল্লাহ
পাক উনার রসুল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
ছহীহ পবিত্র হাদীছ শরীফ,
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার শরাহ, মশহুর ফিকাহ ও ফতওয়ার কিতাব থেকে
প্রাণীর ছবি আঁকা,
তৈরী করা, দেখা, রাখা, তোলা ইত্যাদি হারাম হওয়ার ব্যাপারে ধারাবাহিকভাবে দলীল
বর্ণনা করে আসছি ইনশাল্লাহ। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের রহমত করুন ও তাওফিক
ইনায়েত করুন।
(উল্লেখ্য
যে, গত সংখ্যায় পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে ফতওয়ার ৫০টি দলীল দেয়া হয়েছে। কিন্তু
মুদ্রনজনিত ত্রুটির কারণে ক্রমিক সংখ্যা ৫০ এর স্থলে ৪০ ছাপা হয়েছিল। কাজেই এ সংখ্যায়
ক্রমিক নম্বর ৫১ থেকে শুরু করা হলো।)
(৫১-৫৪)
عن انس رضى الله عنه قال كان قرام لعا مشة سترت به جائب بيتها، فقال النبى صلى الله عليه وسلم اميطى عنى لا تزال تصاوير- تعرض لى فى صلاتى.
(فتح البارىج ১০ صفه ৩৯১، عمدة
القاوى ج ২২ صفه ৭৪، المعجم المفهرس ج ৬ صفه. ৪৪، بخارى ج ২ صفه ৮৮১)
অর্থঃ হযরত আনাস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন
হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার একখানা (প্রাণীর ছবিযুক্ত) পর্দা ছিল, যা তিনি
উনার ঘরের এক পাশে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “হে আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম!
পর্দাটি আমার থেকে দূরে সরিয়ে নাও। কারণ এর ছবিগুলো নামাযে আমার দৃষ্টি ও মন
আকৃষ্ট করে।”
(ফাতহুল বারী ১০ম জিঃ, পৃষ্ঠা
৩৯১, উমদাতুল কারী ২২তম জিঃ পৃষ্ঠা ৭৪, মুজামুল মুফহারিস ৩য় জিঃ পৃষ্ঠা
৪৪০, বুখারী ২য় জিঃ পৃষ্ঠা ৮৮১)
(৫৫-৫৮)
عن ابن عمر قال- وعد النبى صلى الله عليه وسلم جبرائل فراث عليه حتى اشتد على لنبى صلى الله عليه وسلم فخرج النبى صلى الله عليه وسلم فلقيه فشكا اليه ماوجد- فقال له انا لاندخل بيتا فيه صورة ولا كلب. (فتح البارى ج ১০ صفه ৩৯১، عمدة القرى ج ২২ صفه ৭৫، رياض الصا لحين صفه ৬১২، بخارى
ج২ صفه ৮৮১)ৎ
অর্থঃ হযরত ইবনে উমর আলাইহিস
সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সাথে সাক্ষাৎ করার ওয়াদা করলেন কিন্তু সাক্ষাৎ হলোনা। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি ঘর হতে বের হয়ে আসলেন,
তখন হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাক্ষাৎ হল।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার নিকট মনে
কষ্ট পাওয়ার কথা বল্লেন। অতঃপর হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমরা
রহমতের ফেরেস্তারা ঐ ঘরে প্রবেশ করিনা, যে ঘরে প্রাণীর ছবি ও কুকুর থাকে।
(ফাতহুল বারী ১০ম জিঃ পৃঃ ৩৯১, উমদাতুল কারী ২২ জিঃ পৃঃ ৭৫
রিয়াজুস ছালেহীন পৃঃ ৬১২, বুখারী ২য় জিঃ পৃঃ ৮৮১)
(৫৯-৬৭)
عن قتادة قال كنت عند ابن عباس وهم يسعلونه- ولا يذكر النبى صلى الله عليه وسلم حتى سعل فقال سمعت محمدا صلى الله عليه وسلم يقول من صورصورة فى الدنيا كلف يوم القيامة ان ينفخ
فيها الروح. (فتح البارى ج ১০ صفه ৩৯৩، عمدة
القارى ج ২২ صفه ৭৫، مسند احمد ج২ صفه ২১৭، رياض الصالحين صغه ৬১১ فقه السنه ج ৩ صفه ৪৯৮، المعجم المفهرس ج ৩ صفه ৪৩৭، بخارى ج ২ صفه ৮৮১، مسلم ج ২ صفه ২০২ نساى ج ২ صفه ৩০০)
অর্থঃ হযরত কাতাদাহ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে
বর্ণিত। তিনি বলেন,
আমি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট
ছিলাম। লোকজন উনাকে বিভিন্ন প্রকার প্রশ্ন করছিল। কিন্তু তিনি উত্তরে নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোন উল্লেখ করলেন
না। (অর্থাৎ পবিত্র হাদীছ উনাদের থেকে কোন দলীল দিচ্ছিলেন না) অতঃপর সে ব্যাপারেই
উনাকেই প্রশ্ন করা হলো। তখন তিনি বললেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন, “যে
ব্যক্তি দুনিয়াতে কোন প্রাণীর ছবি তৈরী করবে, তাকে ক্বিয়ামতের দিন ঐ ছবির মধ্যে
প্রাণ দেয়ার জন্য বলা হবে।”
(ফাতহুল বারী ১০ম জিঃ পৃঃ ৩৯৩, উমদাতুল কারী ২২তম জিঃ পৃঃ ৭৫, মসনদে আহমদ ২য় জিঃ পৃঃ ২১৭, রিয়াজুস ছালেহীন পৃঃ ৬১১ ফিকহুস সুন্নাহ ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৯৮, মুজামুল মুফ্হারিস ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৩৭, বুখারী ২য় জিঃ পৃঃ ৮৮১, মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০২, নাসাঈ ২য় জিঃ পৃঃ ৩০০)
(৬৮-৭২)
عن عائشة قالت قدم رسول الله صلى الله عليه وسلم من سفر
وقد سترت على بابى درنو كا فيه الخيل ذوات الا جنحة- فا مرنى فنزعته. (شرح النووى ج ৭ صفه ৮৭ شرح سيوطى فى سنن النساى ج ৮ صفه ২১৩ حا شية السندى النسائ ج ৮ صفه ২১৩ مسلم ج ২ صفه ২০০، نساى ح২ صفه ৩০০)
অর্থঃ উম্মুল মু’মিনীন
হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সফর থেকে ফিরে আসলেন, আর আমি
দরজায় পাখা বিশিষ্ট ঘোড়ার ছবিযুক্ত একখানা পর্দা ঝুলিয়েছিলাম, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে ওটা সরিয়ে ফেলার আদেশ দিলেন, আমি ওটা
সরিয়ে ফেললাম। (শরহে নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৮৭, শরহে
সুয়ুতী নাসাঈ ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৩, হাশিয়ায়ে সিন্দী ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৩)
মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০০, নাসাঈ ২য় জিঃ পৃঃ ৩০০।)
(৭৩-৭৮)
عن عا ئشة انه كان لهاثوب فيه تصاو ير مهدود الى سهوة فكان النبى صلى الله عليه وسلم يصلى اليه فقال اخريه عنى- قالت فاخرته فجعلته وساعد. شرح النورى ج ৭ صفه ৯১ شرح سيوطى فى نسائ ج৮ صفه ২১৩ حا شية السندى النساى ج ৮ صفه ২১৩ المعجم المفهرس ج ৩ صفه ৪৪০، مسلم ج২ صفه ২০১ نساى ج২ صفه ৩০০.
অর্থঃ উম্মুল মু’মিনীন
হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, উনার
একটি প্রাণীর ছবিযুক্ত কাপড় ছিল, যা ঘরের এক কোণে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নামায পড়ার সময় ওটা সামনে পড়ত।
তিনি বললেন, কাপড়টি আমার নিকট থেকে দূরে সরিয়ে নাও। অতঃপর আমি ওটা সরিয়ে নিলাম এবং ওটা
দিয়ে (উল্টিয়ে) বালিশ তৈরী করলাম। (শরহে নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৯১, শরহে সুয়ূতী ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৩, হাশিয়ায়ে সিন্দী ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৩, মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০১, নাসাঈ ২য় জিঃ পৃঃ ৩০০)
(৭৯-৮০)
عن عائشة قالت ذخل النبى صلى الله عليه وسلم على وقد سترت نمطا فيه تصا وير- فنحاه فاتخذت منه وسادتين. شرح النووى ج৭ صفه ৯২، مسلم
ج ২ صفه ২০১.
অর্থঃ উম্মুল মু’মিনীন
হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার নিকট আসলেন, আর আমি
প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা পর্দা লাগিয়েছিলাম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি ওটা ছিঁড়ে ফেললেন এবং আমি ওটা দিয়ে (উল্টিয়ে) দু’টি বালিশ
তৈরী করলাম। (শরহে নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৯২, মুসলিম
২য় জিঃ পৃঃ ২০১)
(৮১-৮২)
عن مسلم بن صبيح قال كنا مح مسروق فى بيت فيه تمائيل مريم- فقال مسروق هذا تما ثيل مريم- فقال مسروق اما انى سمعت عبد الله بن مسعود يقول- قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اشد الناس عذابا يوم القيامة المصورون. شرح النووى ج ৭ صفه ৯৩، مسلم
ج ২ صفه ২০১
অর্থঃ হযরত মুসলিম বিন
সবীহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং
হযরত মাসরুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি কোন এক গৃহে ছিলাম। সেখানে হযরত মরিয়ম
আলাইহাস সালাম উনার ছবি ছিল। হযরত মাসরুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, এটা
বাদশাহ কেসরার ছবি। আমি বললাম না এটা মরিয়মেরই ছবি। অতঃপর হযরত মাসরুক
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, সাবধান! আমি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে
মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “ক্বিয়ামতের
দিন মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তির কঠিন আযাব হবে, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তৈরী করে।” (শরহে নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৯৩, মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০১)
(৮৩-৮৭)
عن ابى هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا تدخل الملعكة بيتا فيه تما ثيل او تصاو ير. شرح النووى ج ৭ صقه ৯৪، فقه
السنة ج ৩ صفه ৫০১، موطامالك صقه ৩৮১، اوجز
المسالك ج ১৫ صفه ১৪২، مسلم ج২ صفه ২০২
অর্থঃ হযরত আবু হুরায়রা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে
বর্ণিত। তিনি বলেন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “ঐ ঘরে
রহমতের ফেরেস্তা প্রবেশ করেনা, যে ঘরে প্রাণীর মূর্তি অথবা প্রাণীর ছবি থাকে।” (শরহে নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৯৪, ফিকহুস সুন্নাহ ৩য় জিঃ পৃঃ ৫০১, মোয়াত্তায়ে মালেক পৃঃ ৩৮১, আওজাযুল মাসালিক ১৫তম জিঃ পৃঃ ১৪২, মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০২)
(৮৮)
عن ابن عباس قال لا يصلى
فى بيت فيه تماثيل. مصنف بن ابى شيبة ج ২ صفه ৪৬.
অর্থঃ হযরত ইবনে আব্বাস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, “ঐ ঘরে নামায পড়োনা যে ঘরে প্রাণীর
মূর্তি বা ছবি থাকে।”
(মোছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা ২য় জিঃ পৃঃ ৪৬)
(৮৯)
عن عيسى بن حميد قال سعل عقبة الحس قال ان فى مسجدنا
ساحة فيها تصاوير- قال انحروها. مصنف ابن ابى شيبة ج ২ صفه ৪৬.
অর্থঃ হযরত ঈসা বিন হুমাউদ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত
ওকবাতুল হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বললেন, আমাদের
মসজিদে প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা কাপড় রয়েছে। তখন হযরত ঈসা বিন হুমাঈদ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, তুমি (মসজিদ থেকে) ওটা সরিয়ে ফেল।
(মোছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা ২য় জিঃ পৃঃ ৪৬)
(৯০)
عن ابى عثمان قال حدثنى لبابة عن امها
وكانت تخدم عثمان بن عفان-
ان عثمان ابن عفان كان يصلى الى تابوت فيه تماثيل فامربه فحك. مصف ابن ابى شيبة ج ৭ صفه ৪৬.
অর্থঃ হযরত আবু ওছমান যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোবাবাহ তার মাতা হতে আমার নিকট
বর্ণনা করেন যে, তার মাতা হযরত ওছমান আলাইহিস সালাম উনার খেদমতে ছিলেন, আর হযরত
ওছমান আলাইহিস সালাম উনার প্রাণীর
ছবিযুক্ত একটি সিন্দুকের দিকে নামায পড়ছিলেন। অতঃপর হযরত ওছমান আলাইহিস সালাম উনার
আদেশে ওটা নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হলো। (মোছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা ২য় জিঃ পৃঃ ৪৬)
(৯১)
عن خالد بن سعيد قال دعانى ابو مسعود الى طعام قواى فى البيت صورة فل يدخل حتى كشرت. مسنف ابن ابى شيبة ج ৮ صفه ২৯১
অর্থঃ হযরত খালেদ বিন সাঈদ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন,
হযরত আবু মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আমাকে খানা
খাওয়ার জন্য ডাকলেন। অতঃপর তিনি ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, তিনি ওটা
নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত ঘরের ভিতরে প্রবেশ করলেন না। (মোছান্নেফ ইবনে আবী
শায়বা ৮ জিঃ পৃঃ ২৯১)
(৯২)
عن ام رافع
قال جبرائيل يستأذن على النبى صلى الله عليه وسلم- فابط عليه- فاخذ رسول الله صلى الله عليه وسلم ردا فقام اليه- وهو بالباب- فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم قد اذنا
لك- قال اجل رلكزا لا ندخل بيتا فيه كلب ولا صورة. مصنف ابن ابى شيبة ج ৮ صفه ২৯১.
অর্থঃ হযরত উম্মে রাফে’ রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত
জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সাক্ষাৎ করার
অনুমতি চাইলেন, কিন্তু হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম উনার সাক্ষাৎ করতে দেরি হয়ে গেলো। অতঃপর
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরজায় গেলেন, হযরত
জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি সেখানে দাঁড়ানো। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “আমি তো
আপনাকে অনুমতি দিয়েছিলাম।”
হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম বললেন, হ্যাঁ, কিন্তু
আমরা রহমতের ফেরেস্তারা ঐ ঘরে প্রবেশ করিনা, যে ঘরে কুকুর এবং প্রাণীর ছবি
থাকে।” (মোছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা ৮ম জিঃ পৃঃ ২৯১)
(৯৩-৯৫)
عن عائشة قالت دخل على النبى صلى الله عليه وسلم وقد سترت بقرام فيه تماثيل فلما رأه تغير لونه وهتكه بيده- ثم قال ان اشدا لناس عذابا يوم القيامة الذين يشبهون بخلق الله مصنف ابن ابى شيبة ج ৮ صفه ২৯৫، شرح
سيوطى النساى ج৮ صفه ২১৪، حاشية
السندى ج৮ صفه ২১৪.
অর্থঃ উম্মুল মু’মিনীন
হযরত আয়শা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার নিকট আসলেন, আর আমি প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা
পর্দা ঝুলিয়েছিলাম। যখন তিনি পর্দাটি দেখলেন, তখন উনার চেহারা মোবারক পরিবর্তন
হয়ে গেল। অতঃপর তিনি নিজ হাতে পর্দাটি ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেন, “নিশ্চয়
ক্বিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে, যে ব্যক্তি
মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত সৃষ্টি করে।” (মোছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা ৮ম জিঃ পৃঃ ২৯৫, শরহে সুয়ূতী নাসাঈ ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৪, হাশিয়ায়ে সিন্দী ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৪)
(৯৬-৯৭)
عن اسامة قال دخلت مح النبى
صلى الله عليه وسلم الكعبة- فرايت فى البيت
صورة فامرنى فاتيته، بد لومن
الماء- فجعل يضرت تلك الصورة- ويقول قاتل الله قوما يصورون ما لا يخلقون. مصنف ابن ابى شيبة ج৮ صفه ২৯৬، طحاوى
ج২ صفه ৩৬৩.
অর্থঃ হযরত উসামা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে পবিত্র কা’বা শরীফ
ঘরে প্রবেশ করলাম। অতঃপর আমি ক্বাবা ঘরের ভিতরে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলাম। অতঃপর
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুকুমে আমি পাত্রে
করে পানি নিয়ে আসলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ ছবিগুলিতে পানি নিক্ষেপ করলেন এবং বললেন, “মহান
আল্লাহ পাক তিনি ঐ গোত্রের সাথে জ্বিহাদ ঘোষণা করেছেন, যে গোত্র
এরূপ প্রাণীর ছুরত তৈরী করে। যা সে তৈরী করতে অক্ষম অর্থাৎ জীবন দিতে পারেনা।” (মোছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা ৮ম জিঃ পৃঃ
২৯৬, তাহাবী ২য় জিঃ পৃঃ ৩৬৩)
(৯৮-১০২)
عن عائشة- ان ام حبيبة وام سلمة ذكرتا- كنيسة رأينا ها بالحبشة فيها تصاوير فذكر تا ذلك النبى صلى الله عليه وسلم فقال ان اولعك اذا كان فيهم الرجل الصالح فمات بنو على قيره مسجذا وصورروا فيه تلك الصورة- فاولعك شرارالخلق عندا الل يوم القيامة- عمدة القارىج ৪ صفه ১৭৩، مظاهر
حق ج ৪ صفه ২৫৩، اشعة اللمعات ج৩ صفه ৫৯৬، فتح الملهم ج২ صفه ১২১، المعجم المفهرس ج ৩ صفه ৪৪০.
অর্থঃ উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা
আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,
হযরত উম্মে হাবীবাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা এবং হযরত
উম্মে সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনারা উভয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট খৃষ্টানদের উপাসনালয় সম্পর্কে
বর্ণনা করেন, উনারা বলেন, আমরা হাবশায় খৃষ্টানদের উপাসনালয়ে প্রাণীর ছবিসমূহ দেখেছি। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “তাদের
স্বজাতির মধ্যে যাদেরকে তারা ধার্মিক লোক মনে করে তাদের কারো মৃত্যু হলে তার কবরের
উপর তারা উপাসনালয় তৈরী করে এবং কবরের উপর মৃত ব্যক্তির ছবি স্থাপন করে। ঐ সকল লোক
ক্বিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট নিকৃষ্টতম জীবরূপেই গণ্য হবে।” (উমদাতুল কারী ৪র্থ জিঃ পৃঃ ১৭৩, মোযাহেরে হক ৪র্থ জিঃ পৃঃ ২৫৩, আশআতুল লোমআত ৩য় জিঃ পৃঃ ৫৯৬, ফাতহুল মুলহিম ২য় জিঃ পৃঃ ১২১, মুজামুল মুফহারিস ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৪০)
(১০৩-১০৯)
عن سعيد بن ابى الحسن قال كنت عند ابن عباس اذااتاه رجل فقال يا ابن
عباس- انى انسان انما معيشتى من صنعة يدى وانى اصنح هذه الصورة فقال ابن عباس لا احدثك
الا ما سمعت من رسول
الله صلى الله عليه وسلم سمعته يقول من صور صورة فان الله معذ به حتى ينفخ فيها الروح- وليس بنافخ فيها ابدا. فتح البارى ج ৪ صفه ৪১৬، فقه
السنن ولاثار صفح ৩৪৬ مظاهر هق ج ৪ صفه ২৫২، اشعة اللمعات ج ৩ صفه ৫৯৫، طحاوى ج ২ صفه ৩৬৫، تحفة الا حوذى ج৫ صفه ৪৩১، المعجم
المفهرس ج ৩ صفه ৪৩৭.
অর্থঃ হযরত সাঈদ ইবনে আবুল
হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত
ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট ছিলাম। ইতিমধ্যে এক ব্যক্তি উনার
নিকট আসল এবং বলল,
হে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আমি এমন এক ব্যক্তি, যে তার
হাতের কাজের দ্বারা জিবিকা নির্বাহ করে, যা প্রাণীর ছবি তৈরী করার কাজ।
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, আমি নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যা বলতে শুনেছি
তোমাকে তাই বলব। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি বলেছেন, “যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তৈরী করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে ঐ ছবির
মধ্যে প্রাণ না দেয়া পর্যন্ত শাস্তি দিতে থাকবেন। কিন্তু সে ওটার মধ্যে কখনো প্রাণ
দিতে পারবে না। (ফাতহুল বারী ৪র্থ জিঃ পৃঃ ৪১৬, ফিকহুস সুনানে ওয়াল আছার পৃঃ ৩৪৬, মোযাহেরে হক্ব ৪র্থ জিঃ পৃঃ ২৫২, আশআতুল লোমআত ৩য় জিঃ পৃঃ ৫৯৫, তাহাবী ২য় জিঃ পৃঃ ৩৬৫, তোহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ পৃঃ ৪৩১, মুজামুল মুফহারিস ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৩৭)
(১১০-১২০)
عن ابى طلحة قال قال النبى صلى الله عليه وسلم- لا تدخل
الملعكة بيتا فيه كلب ولا تصاوير. فتح البارى ১০ج صفه ৩৮০. فقه السنن ولاثار صفه ৩৪৫، عمدة
القارى ج ২২ صفه ৬৯، مظاهر حق ج৪ صفه ২৪৪، تنظيم الاشتات ج৪ صفه ১৭৭، اشعة
اللمعات ج ৩ صفه ০৫৯، فيض البارى ج৪ صفه ৩৮২، بذل المجهود ج ৬ صفه ২৮ تحفة الاحوذى ج ه
صفه ৪২৮، المعجم
المهرس ج ৩ صفه ৪৪০، صحيح مسلم ج ২ صفه ২০২.
অর্থঃ হযরত আবু তাল্হা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে
বর্ণিত। তিনি বলেন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “ঐ ঘরে রহমতের ফেরেস্তা প্রবেশ
করেনা যে ঘরে কুকুর বা প্রাণীর ছবি থাকে।” (ফাতহুল বারী ১০ম জিঃ পৃঃ
৩৮০, ফিকহুস সুনানে ওয়াল আছার প্রঃ ৩৪৫, উমদাতুল ক্বারী ২২তম জিঃ পৃঃ ৬৯, মোযাহেরে হক্ব ৪র্থ জিঃ পৃঃ ২৪৪, তানযীমুল ইশ্তাত ৪র্থ জিঃ পৃঃ ১৭৭, আশআতুল লোমআত ৩য় জিঃ পৃঃ ৫৯০, ফয়জুল বারী ৪র্থ জিঃ পৃঃ ৩৮২, বযলুল মাজ্হুদ ৬ষ্ঠ জিঃ পৃঃ ৬৮, তোহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ পৃঃ ৪২৮, মুজামুল মুফহারিস ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৪০, মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০২)
(১২১-১২৩)
عن مسلم قال كنا مح مسروق فى دار
يسارين تمير- فراى فى صغته
تما ثيل- فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول ان اشدا اناس عذابا عند الله يوم القيامة المصورون. فتح البارى ১০ج صفه ৩৮২، عمدة
القارى ج ২২ صفه ৬৯ مسلم ج ২ صفه ২০১.
অর্থঃ হযরত মুসলিম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আমরা হযরত মাসরুক রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনিসহ হযরত ইয়াসার ইবনে নুমাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ঘরে
ছিলাম। অতঃপর সে ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেয়ে বললেন, আমি
আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বলতে শুনেছি, তিনি
বলেছেন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
বলেছেন, “নিশ্চয়ই ক্বিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ পাক তিনি মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে কঠিন
শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তৈরী করে।” (ফাত্হুল বারী ১০ম জিঃ পৃঃ
৩৮২, উমদাতুল ক্বারী ৩৩তম জিঃ পৃঃ ৬৯, মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০১)
(১২৪-১৩৩)
عن عا ئشة
قالت ان النبى صلى الله عليه وسلم لم يكن يترك فى بيته شيأ فيه تصاليب الا نقضه. فتح البارى ج ১০ صفه. ৩৮৫، فقه
السنن والاثار صفه ৩৪৫، عمدة القارى ج ২২ صفه ৮১، مظاهر حق ج৪ صفه ২৪৫، مسنراحمد ج ২ صفه ২১৮، اشعة اللمعات ج ৩ صفه ৫৯১، فقه السنه ج ৩ صفه ৫০১، بذل المجهود ج ৬ صفه ২৮، مسلم ج২ صفه. ২০، ابو داود ج ২ صفه ২১৯.
অর্থঃ “উম্মুল
মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ঘরে প্রাণীর ছবিযুক্ত কোন জিনিস
রাখতেন না বরং তা ধ্বংস করে ফেলতেন।” (ফাত্হুল বারী ১০ম জিঃ পৃঃ
৩৮৫), ফিকহুস সুনানে ওয়াল আছার পৃঃ ৩৪৫, উমদাতুল ক্বারী ২২তম জিঃ পৃঃ ৮১, মোযাহেরে হক্ব ৪থ জিঃ পৃঃ ২৪৫, মসনদে আহমদ ২য় জিঃ পৃঃ ২১৮, আশআতুল লোমআত ৩য় জিঃ পৃঃ ৫৯১, ফিকহুস সুন্নাহ ৩য় জিঃ পৃঃ ৫০১, বযলুল মাজ্হুদ ৬ষ্ঠ জিঃ পৃঃ ৬৮, মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০০, আবু দাউদ ২য় জিঃ পৃঃ ২১৯)
(১৩৪-১৪৫)
عن عبد الله بن عمر اخببره ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الذين يصنعون هذه الصور- يعذبون يوم القيامة يقال لهم احيوا ما خلقتم.
فتح البارى ج১০ صفه ৩৮৫، عمدة القارى ج ২২ صفه ৮১، مسندا حمد ج২ صفه ২১৭، شرح
النووى ج৭ صفه ৯২، رياض الصالحين صفه ৬১، شرح سيوطى النساى ج ৭ صفه ২১৫، حاشية السندى النساى ج ৮ صفه ২১৫، فيض البارى ج ৪ صفه ২৮৩، تحفة الا حوذى ج৫ صفه ৪৩৩ تحفهء خواتين صفه ৯১১، المعجم المفهرس ج ৩ صفه ৪৪০، مسلم ج ২ صفه ২০১.
অর্থঃ হযরত আব্দুল্লাহ্
ইবনে ওমর আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “যারা
এরূপ প্রাণীর ছবি তৈরী করবে, তাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন শাস্তি দেয়া হবে। এবং তাদেরকে বলা
হবে তোমরা যে প্রাণীর ছবিগুলো তৈরী করেছ তার মধ্যে প্রাণ দান কর।” (ফাত্হুল বারী ১০ম জিঃ পৃঃ ৩৮৫, উমদাতুল ক্বারী ২২তম জিঃ পৃঃ ৮১, মসনদে আহমদ ২য় জিঃ পৃঃ ২১৭, শরহে নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৯২, রিয়াজুস সালেহীন পৃঃ ৬১০, শরহে সুয়ুতী নাসাঈ ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৫, হাশিয়ায়ে সিন্দী নাসাঈ ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৫, ফয়জুলবারী
৪র্থ জিঃ পৃঃ ৩৮২,
তোহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ পৃঃ ৪৩৩, তোহফায়ে খাওয়াতীন পৃঃ ৯১১, মুজামুল মুফহারিস ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৪০, মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০১)
(১৪৬-১৪৯)
عن ابى زرهو قتل دخلت مح ابى هريرة دارا با لمد
ينة- فرأى اعلا ها مضورا
يصور قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ومن اظلم ممن ذهب يخلق كخلقى فليخلقوا حبه وليخلقو اذرة. فتح البارى ج ১০ صفه ৩৮৫، مظاهر
حق ج৪ صغه ২৪৮، مسندا حمد ج২ صفه ২১৭، المعجم المفهرش ج ৩ صفه ৪৩৮.
অর্থঃ হযরত আবু র্জুয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন, আমি হযরত আবু হুরায়রা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সঙ্গে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে এক ঘরে
প্রবেশ করলাম। অতঃপর তিনি দেখলেন এক ছবি অঙ্কনকারী ঘরের উপরে প্রাণীর ছবি আঁকছে।
(ওটা দেখে) তিনি বললেন,
আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, “ঐ
ব্যক্তি অধিক অত্যাচারী,
যে মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত
তৈরী করে।” (ফাত্হুল বারী ১০ম জিঃ পৃঃ ৩৮৫, মোযাহেরে হক্ব ৪র্থ জিঃ পৃঃ ২৪৮, মসনদে আহমদ ২য় জিঃ পৃঃ ২১৭, মুজামুল মুফ্হারিস ৩য় জিঃ পৃঃ
৪৩৭)
(১৫০-১৬১)
عن عائشة قالت قدم رسول الله صلى الله عليه وسلم- من سفر
وسترت بقرام لى على سهرةلى- فيها تما ثيل- فلما رأه رسول الله صلى الله عليه وسلم هتكه وقال اشد الناس عذابا يوم القيامة الذين يضاهون بخلق الله. فتح البارىج ১০ صفه ৩৮৬، مظاهر
حق ج ৪ صفه ২৪৬، رباض الصالحين صفه ৬১০، اشعة اللمعات ج ৩ صفه ৫৯২، فقه السنه ج ৩ صفه ৫৯২، فقه السنه ج ৩ صفه ৫০২، ترجمان السنه ج ২ صفه ৩৪৮، شرح سبو طى النساى ج ৮ صفه ২১৪، المعجم المفهوس ج ৩ صفه ৪৪০، نسائ ج ২ صفه ৩০০، ابن ماجه صفه ২৬৮، مسلم ج ২ صفه ২০১.
অর্থঃ উম্মুল মু’মিনীন
হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোন এক সফর থেকে ঘরে আসলেন, আর আমি
আমার ঘরের আঙ্গিনায় প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা পর্দা ঝুলিয়েছিলাম। হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওটা দেখে ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেন, “মানুষের
মধ্যে ঐ ব্যক্তির ক্বিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি হবে, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার
সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত তৈরী করে।” (ফাত্হুল বারী ১০ম জিঃ পৃঃ
৩৮৬, মোযাহেরে হক্ব ৪র্থ জিঃ পৃঃ ২৪৬, রিয়াজুস সালেহীন পৃঃ ৬১০, আশআতুল লোমআত ৩য় জিঃ পৃঃ ৫৯২, ফিকহুস সুন্নাহ ৩য় জিঃ পৃঃ ৫০২, তরজুমানুস সুন্নাহ ৩য় জিঃ পৃঃ ৩৪৮, শরহে সুয়ূতী নাসাঈ ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৪, হাশিয়ায়ে সিন্দী নাসাঈ ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৪, মুজামুল
মুফহারিস ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৪০, নাসাঈ ২য় জিঃ পৃঃ ৩০০, ইবনে মাজা পৃঃ ২৬৮,মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০১)
(১৬২-১৬৫)
عن عائشة قالت قدم النبى صلى الله عليه وسلم- من سفر-
وعلقت درنوكا فيه تماثيل- فامرنى ان انزعه فنزعه فنز عته. فتح البارى ১০ج صفه ৩৮৭، عمدة
القارى ج ২২ صفه ৭২، نسائ ج ২ صفه ৩০০، ابن ماجه صفه ২৬৮.
অর্থঃ “উম্মুল
মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সফর থেকে ফিরে আসলেন। আমি প্রাণীর ছবিযুক্ত একটি পর্দা
টাঙ্গিয়েছিলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
আমাকে ওটা সরিয়ে ফেলার আদেশ দিলেন, অতঃপর আমি ওটা সরিয়ে ফেললাম।” (ফাত্হুল বারী ১ম জিঃ পৃঃ ৩৮৭, উমদাতুল ক্বারী ২২তম জিঃ পৃঃ ৭২, নাসাঈ ২য় জিঃ পৃঃ৩০০, ইবনে মাজাহ পৃঃ ২৬৮)
(১৬৬-১৮০)
عن عائشة انها اشترت تمرقة فيها تصاوير- فقام النبى صلى الله عليه وسلم بالباب فلم يدخل- فقلت اتوب الى الله ماذا اذ نبت- قال ما هذه النسر قة- قلت لتجلس عليها وتوسدها قال ان لصحاب هذه الصور يعذبون يوم القيامة- يقال لهم احيوا ماخلقتم وان الملعكة لا تذخل
بينا فيه التصاوير.
فتح البارى ج ১০ صفه ৩৮৯، عمدة القارى ج ২২ صفه ৭৩، مظاهر حق ج৪ صفه ২৪৫، اشعة
اللمعات ج ৩ صفه ৫৯১، طحاوى ج২ صفه ৩৬২، مؤطامالك صفه ৩৮১، اوجزا لمسالك ج ১৫ صفه ১৪৭، شرح سيو طى النسائ ج৮ صفه ২১৫، فيح البارى ج ৪ صفه ৩৮৩ تحفه، خواتين صفح ৯০৯ المعجم المفهرس ج ৩ صفه ৪৪০، بخارى ج২ صفه ৮৮১، مسلم ج২ صفه ২০২ نسائ ج ২ صفه ৩০০.
অর্থঃ উম্মুল মু’মিনীন
হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
ছবিযুক্ত একটি আসন ক্রয় করেছিলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (ওটা দেখে) ভিতরে প্রবেশ না করে দরজায়
দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর আমি বললাম, আমার ভুলের জন্য আমি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট তওবা করলাম।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “এই আসনটি
কেন কিনেছ?” আমি বললাম, আপনার বসার এবং বিছানা হিসাবে ব্যবহার করার জন্য। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “নিশ্চয়ই
এরূপ প্রাণীর ছবি তৈরীকারীদের ক্বিয়ামতের দিন শাস্তি দেয়া হবে এবং তাদেরকে বলা হবে, তোমরা যে
প্রাণীর ছবিগুলো তৈরী করেছ তার মধ্যে প্রাণ দাও এবং নিশ্চয়ই রহমতের হযরত ফেরেস্তা
আলাইহিস সালাম উনারা ঐ ঘরে প্রবেশ করেনা, যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে।” (ফাত্হুল বারী ১০ম জিঃ পৃঃ ৩৮৯, উমদাতুল ক্বারী ২২তম জিঃ পৃঃ ৫৩, মোযাহেরে হক্ব ৪র্থ জিঃ পৃঃ ২৪৫, আশআতুল লুমআত ৩য় জিঃ পৃঃ ৫৯১, তাহাবী ২য় জিঃ পৃঃ ৩৬৩, মোয়াত্তায়ে মালেক পৃঃ ৩৮১, আওয়াজুল মাসালিক ১৫তম জিঃ পৃঃ ১৪৭, শরহে সুয়ূতী নাসাঈ ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৫, হাশিয়ায়ে সিন্দী ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৫, ফয়জুল বারী ৪র্থ জিঃ পৃঃ ৩৮৩, তোহফায়ে খাওয়াতীন পৃঃ ৯০৯, মুজামুল মুফহারিস ৩য় জিঃপৃঃ ৮৮০, বুখারী ২য় জিঃ পৃঃ ৮৮১, মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০২, নাসাঈ ২য় জিঃ পৃঃ ৩০০)
(১৮১-১৮৯)
عن ابى طاحة قال ان رسول
الله صلى الله عليه سلم قال ان الملعكة لا تدخل بيتا فيه الصورة- قال ثم اشتكى زيد فعد ناه- فاذا على بابه ستر فيه صورة- فقلت لعبيد الله ربيب ميمونة زيد عن الصورة يوم الاول. فقال عبيد الله الم تسمعه حين قال الا رقمافى ثوب. فتح البارى ج ১০ صفه ৩৮৯، عمدة القارى ج ২২ صفه ৭৪، قفه السنة ج ২ صغه ৫০২، طحاوى ج২ صفه ৩৬৩، شرح سيوطى النساى ج ৮ صفه ২১২، حاشية السندى ج৮ صفه ২১২، بذل
المجهود ج ৬ صفه ৬৯، تحفهء خواتين صفه ৯১০، بخارى ج২ صفه ৮৮১.
অর্থঃ হযরত আবু তালহা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে
বর্ণিত। তিনি বলেন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “নিশ্চয়ই হযরত ফেরেস্তা আলাইহিমুস
সালাম উনারা ঐ ঘরে প্রবেশ করেনা; যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে।” অতঃপর হযরত যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন, আমি খেদমত করার জন্য উনার নিকটে
গেলাম। উনার ঘরের দরজায় ছবিযুক্ত একটি পর্দা দেখতে পেলাম। উম্মুল মু’মিনীন
হযরত মায়মুনা আলাইহাস সালাম উনার পালিত পুত্র উবাইদুল্লাহকে বললাম, হযরত
যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি কি প্রথম দিনই প্রাণীর ছবি সম্পর্কে আমাদের
নিকট পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেননি? উবাইদুল্লাহ বললেন, তিনি যখন
বলেছেন, তখন কি আপনি শুনেননি যে, তিনি কাপড়ের মধ্যে লতা, পাতা বা প্রাণহীন জিনিসের কথা বাদ
দিয়েই বলেছেন।” (ফাত্হুল বারী ১০ম জিঃ পৃঃ ৩৮৯, উমদাতুল ক্বারী ২২তম জিঃ পৃঃ ৭৪, ফিকহুস সুন্নাহ ৩য় জিঃ পৃঃ ০২, তাহাবী ২য় জিঃ পৃঃ ৩৬৩, শরহে সুয়ূতী নাসাঈ ৮ম জিঃ পৃঃ ২১২, হাশিয়ায়ে সিন্দী নাসাঈ ৮ম জিঃ পৃঃ ২১২, বযলুল
মাজ্হুদ ৬ষ্ঠ জিঃ পৃঃ ৬৯, তোহফায়ে খাওয়াতীন পৃঃ ৯১০ বোখারী ২য় জিঃ পৃঃ
৮৮১)
(১৯০-১৯১)
عن ابى جحيفة- انه اشترى- غلاما حجاما فقال- ان النبى صلى الله عليه وسلم نهى عن ثمن
الدم وثمن الكلب وكسب اليغى- ولمعن اكل الربى وموكله- والو اشمة والمستو شمة- والمصور. فتح البارى ج ১০ صفه ৩৯৩، عمدة
القارى ج ২২ صفه ৭৫.
অর্থঃ হযরত আবু জুহাইফা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত।
তিনি শিঙ্গাদানকারী একজন গোলাম ক্রয় করে আনলেন। অতঃপর বললেন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রক্ত মুবারক ও
কুকুরের মূল্য নিতে এবং যিনাকারীনীর যিনার উপার্জন নিষেধ করেছেন। এবং যে ঘুষ খায়
এবং যে ঘুষ দেয়, যে অঙ্গে উলকি আঁকে,
যে করায়, আর যে প্রাণীর ছবি তৈরী করে, তাদের সকলের উপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লা’নত করেছেন।” (ফাত্হুল বারী ১০ম জিঃ পৃঃ ৩৯৩, উমদাতুল ক্বারী ২২তম জিঃ পৃঃ ৭৫)
(১৯২-১৯৪)
عن عائشة- انها قالت- وعد رسول الله صلى الله عليه وسلم جبرائيل عليه السلام فى ساعة ياتيه فيها فجاءت تلك الساعة- ولم يا تيه- وفى بده عصا فالقاها من يده وقال ما يخلف الله وعده ولا رسله- ثم التفت فاذاهو جروكلب تحت سويره- فقال ياعائشة متى دخل هذا لكلب ههنا- فقالت ولله مادريت- فامونى فاخرج- فجاء جبرا ئيل عليه السلام فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم- واعدتتى فجلست لك فلم
تات- منعنى الكلب الذى كان فى بيتك- انالا ندخل بيتا فيه كلب ولا صورة. شرح النووى ج ৭ صفه ৭১، اعلاء
السن ج ৫ صفه ৯৭، رياص الصالحين صفه ৬১২.
অর্থঃ উম্মুল মু’মিনীন
হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম
নির্দিষ্ট এক সময়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সাথে সাক্ষাৎ মুবারক করার ওয়াদা করেছিলেন, কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে সাক্ষাৎ
মুবারক হালেনা। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
নিজের হাত মুবারক উনার মধ্যে লাঠি মুবারকখানা ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন, “মহান
আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়াদা খেলাফ করেন না।” অতঃপর লক্ষ্য করলেন উনার চৌকির
নীচে একটি কুকুরের বাচ্চা। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, হে ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম! এখানে
কুকুরটি কখন প্রবেশ করলো?
হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, মহান
আল্লাহ পাক উনার কছম! আমি জানি না। অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ মুবারক মুতাবিক কুকুরটি বের
করে দেয়া হলো। অতঃপর হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি সাক্ষাৎ মুবারক করলেন। তখন
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “আপনার ওয়াদা মুতাবিক আমি আপনার অপেক্ষায় বসে আছি, কিন্তু
আপনি আসেননি।” হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আপনার ঘরের কুকুরটি আমাকে প্রবেশ
করতে বাধা দিয়েছে। কেননা আমরা রহমতের হযরত ফেরেস্তা আলাইহিমুস সালাম ঐ ঘরে প্রবেশ
করিনা যে ঘরে কুকুর ও প্রাণীর ছবি থাকে। (শরহে নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৮১, ইলাউস সুনান ৫ম জিঃ পৃঃ ৯৭, রিয়াজুস সালেহীন পৃঃ ৬১২)
(১৯৫-১৯৯)
عن اعبد الله ابن عباس قال اخبر تنى ميمونة- ان رسول
الله صلى الله عليه وسلم اصبح يوما واجعا- فقالت ميمونة يا رسول الله صلى الله عليه وسلم لقد استنكرت هيمتك منذ اليوم- قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان جبرا ميل كان وعدنى ان يلقانى الليلة- فلم يلقنى- ام الله
ما اخلفنى- قال ثم وقح
فى نفسه جرو كلب تحت فسطا ط لنا
فامريه فاخرج- ثم اخذ بيده ماء فنضح مكانه فلما امسى لقيه جبرائيل- فقال له قد كنت وعد تنى ان تلقانى
البارحة- قال اجل- ولكنا لا ندخل
بيتا فيه كلب ولا صورة. شرح النووى ج৭ صفه ৮৩، مظاهر حق ج ৪ صفه ২৪৫، اشعة اللمعات ج ৩ صفه ৫৯০، بذل المجهود ج ৬ صفه ২৯، ابودادؤد ج২ صفه ২১৯.
অর্থঃ হযরত ইবনে আব্বাস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, হযরত মায়মুনা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আমাকে সংবাদ
দিয়েছেন যে, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
একদিন ভোরে খুব চিন্তিত অবস্থায় আসলেন। অতঃপর হযরত মায়মুনা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আজ আপনাকে খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে? তখন নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “হযরত
জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম রাত্রে আমার সাথে সাক্ষাৎ মুবারক করার ওয়াদা করেছিলেন, কিন্তু
রাত্রে সাক্ষাৎ মুবারক করেননি। অথচ মহান আল্লাহ পাক উনার কছম! তিনি আমার সাথে ওয়াদা
খেলাফ করেন না।” হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, অতঃপর
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি লক্ষ্য করলেন, উনার চাদর মুবারক উনার নীচে একটি
কুকুরের বাচ্চা। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুকুম মুবারক মুতাবিক কুকুরটি বের করে দেয়া হলো এবং নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজ হাতে পানি
দ্বারা ঐ স্থানটি পরিষ্কার করে দিলেন। যখন সন্ধ্যা হলো, হযরত
জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাক্ষাৎ মুবারক করলেন। তখন নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে বললেন, “আপনি তো
গত রাত্রে আমার সাথে সাক্ষাৎ মুবারক করার ওয়াদা করেছিলেন?” তিনি
বললেন- হ্যাঁ, তবে আমরা রহমতের হযরত ফেরেস্তা আলাইহিমুস সালাম উনারা ঐ ঘরে প্রবেশ করিনা, যে ঘরে
কুকুর এবং প্রাণীর ছবি থাকে। (শরহে নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৮৩, মুযাহেরে হক্ব ৪র্থ জিঃ পৃঃ ২৪৫, আশয়াতুল লুময়াত ৩য় জিঃ পৃঃ ৫৯০, বযলুল মাজহুদ ৬ষ্ঠ জিঃ পৃঃ ৬৯, আবু দাউদ ২য় জিঃ পৃঃ ২১৯)
(২০০-২০৭)
عن ابى طلحة عن النبى
صلى الله عليه وسلم قال لا تدخل الملعكة بينا فيه كلب ولا صورة. شرح النووى ج ৭ صفه ৭৩، مسند
احمد ج ২ صفه ২১৭، رياض الصالحين صفه ৬১২ مرقات ج ২ صفه ৪৬، تحفة الا حوذى ج ه
صفه ৪৩০، المعجم
المفهرس ج ৩ صفه ৪৩৭، مسلم ج২ صفه ২০০، اين
ما جه صفه ২৬৭.
অর্থঃ হযরত আবু তালহা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “ঐ ঘরে
রহমতের ফেরেস্তা প্রবেশ করেনা, যে ঘরে কুকুর এবং প্রাণীর ছবি থাকে।” (শরহে নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৮৩, মসনদে আহমদ, ২য় জিঃ পৃঃ ২১৭,
রিয়াজুস সালেহীন পৃঃ ৬১২, মিরকাত ২য় জিঃ পৃঃ ৪৬, তোহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ পৃঃ ৪৩০, মুজামুল মুফহারিস ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৩৭, মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০০, ইবনে মাজাহ পৃঃ ২৬৮)
(২০৮-২১২)
عن عائشة قالت كان لنا ستر فيه تمثال طا مو وكان
الداخل اذادخل استقبله- فقال لى رسول الله صلى الله عليه وسلم حولى هذا فانى كلما دخلت فرأيته ذكرت الدنيا. شرح النووى ج ৭ صفه ৮৭ فقه السنة ج ৩ صفه ৫০২، شرح سيو طى النساى ج৮ صفه ২১৩، حاشية السندى النساى ج৮ صفه ২১৩. نسائ ج ২ صفه ৩০০.
অর্থঃ হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস
সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের পাখির ছবিযুক্ত একটি পর্দা
ছিল। পর্দাটি ঘরে প্রবেশকারীদের দৃষ্টিতে পড়ত। (একদিন) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “পর্দাটি
সরিয়ে ফেলুন। কেননা যতবার আমি ঘরে প্রবেশ করি ততবারই ওটা দেখে আমার দুনিয়ার কথা
স্মরণ হয়ে যায়।” (শরহে নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৮৭, ফিকহুস সুন্নাহ ৩য় জিঃ পৃঃ ৫০২, শরহে সুয়ূতী নাসাঈ ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৩, হাশিয়ায়ে সিন্দী ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৩, নাসাঈ শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ৩০০)
(২১৩-২১৮)
عن عائشة قالت- دخل على رسول الله صلى الله عليه وسلم وانا مسترة يقرام فيه صورة فتلون وجهه ثم تناول الستر فهتكه- ثم قال
ان من اشد الناس عذايا يوم القيامة الذين يشبهون يخلق الله. شرح النووى ج৭ صفه ৮৯، مطاهرحق ج ৪ صفه ২৪৯، منداحمد ج২ صفه ২১৭، طحاوى
ج২ صفه ৩৬৩ تحفه عخواتين صفه ৯১১، المعجم المفهرس ج ৩ صفه ৪৩৮.
অর্থঃ উম্মুল মু’মিনীন
হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার নিকট আসলেন, আর আমি (প্রাণীর ছবিযুক্ত) একটি
চাদর গায়ে দিয়েছিলাম। (ওটা দেখে) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চেহারা মুবারক রঙ্গীন হয়ে গেল। অতঃপর তিনি
ওটা টেনে নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন। এবং বললেন, “নিশ্চয়ই মানুষের মধ্যে ক্বিয়ামতের
দিন ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে, যে মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত
তৈরী করবে।” (শরহে নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৮৯, মোযাহেরে হক্ব ৪র্থ জিঃ পৃঃ ২৪৬, মসনদে আহমদ ২য় জিঃ পৃঃ ২১৭, তাহাবী ২য় জিঃ পৃঃ ৩৬৩, তোহফায়ে খাওয়াতীন পৃঃ ৯১১, মুজামুল মুফহারিস ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৩৮)
(২১৯-২২৯)
عن عبد الله قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان اشد الناس عذابا يوم القيامة المصورون. شرح النووى ج৭ صفه ৯২، مصنف ابن ابى شيبة ج ৮ صفه ২৯৫، مظاهرحق ج ৪ صفه ২৪৮، رياض الصالحين صفه ৬১১، تنظيم الا شتات ج ৪ صفه ১৭৭، اشعة اللمعات ج ৩ صفه ৫৯৩، طحاوى ج২ صفه ৩৬৫، شرح سيوطى النساى ج৮ صفه ২১৬، حاشية
السنرى النساى ج৮ صفه ২১৬، تحفة
الا حوذى ج৫ صفه ৪৩৩ المعجم المفهرس ج ৩ صفه ৪৩৭.
অর্থঃ হযরত
আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার
হতে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই ক্বিয়ামতের দিন মানুষের
মধ্যে ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তৈরী করে।” (শরহে নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৯২, মোছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা ৮ম জিঃ
পৃঃ ২৯৫, মোযাহেরে হক্ব ৪র্থ জিঃ পৃঃ ২৪৮, রিয়াজুস সালেহীন পৃঃ ৬১১, তানযীমুল ইসতাত ৪র্থ জিঃ পৃঃ ১৭৭, আশআতুল লোমআত ৩য় জিঃ পৃঃ ৫৯৩, তাহাবী ২য় জিঃ পৃঃ ৩৬৫, শরহে সুয়ূতী ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৬, হাশিয়ায়ে সিন্দী ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৬, তোহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ পৃঃ ৪৩৩, মুজামুল মুফহারিস ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৩৭)
(২৩০-২৩৮)
عن سعيد بن ابى الحسن قال- جاء رجل الى ابن عباس- فقال انى رجل اصور هذه الصور- ما فتنى فيها- فقال له انبعك بما سمعت من رسول
الله صلى الله عليه وسلم سمعته يقول- كل مصورفى النار يجعل له بكل صورة صورها نفسا فتعذ به فى جهنم.
شرح النووى ج ৭ صفه ৭৩، مسندا
حمد ج ২ صفه ২১৭، رياض الصالحين صفه ৬১১، اشعة اللمعات ج৩ صفه ৫৯৩، فقه السنة ج ৩ صفه ৪৯৯، تر جمان السنة ج ২ صفه ৩৪৮، مصنف ابن ابى شيبة ج৮ صفه ৬৯৬، تحفهء خواتين صفه ৯১১ المعجم المفهرس ج৩ صفه ৪৩৭.
অর্থঃ হযরত সাঈদ ইবনে আবুল
হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি হযরত ইবনে আব্বাস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট এসে বললো, আমি এরূপ প্রাণীর ছবি তৈরী করি, এব্যাপারে
আমাকে ফতওয়া দিন। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাকে বললেন, আমি নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যা বলতে শুনেছি
তোমাকে তাই বলব। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেন, “প্রত্যেক প্রাণীর ছবি তৈরীকারীই জাহান্নামে যাবে। এবং মহান আল্লাহ পাক উনার
প্রত্যেকটি ছবির মধ্যে প্রাণ দেবেন এবং সেই ছবিগুলো তাকে জাহান্নামের মধ্যে শাস্তি
দিতে থাকবে।” (শরহে নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৯৩, মোছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা ৮ম জিঃ
পৃঃ ২৯৬, রিয়াজুস সালেহীন পৃঃ ৬১১, আশআতুল লোমআত ৩য় জিঃ পৃঃ ৫৯২, তারজুমানুস সুন্নাহ ২য় জিঃ পৃঃ ৩৪৮, তোহফায়ে খাওয়াতীন পৃঃ ৯১১, মুজামুল মুফ্হারিস ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৩৭, মসনদে আহমদ ২য় জিঃ পৃঃ ২১৭, ফিকহুস সুন্নাহ ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৯৯)
(২৩৯)
عن عائشة قالت- وعد النبى صلى الله عليه وسلم جبرائيل عليه السلام فى ساعة ياتيه فيها فراث عليه فخرج النبى صلى الله عليه وسلم فاذاهو جبرائيل عليه السلام قائم على الباب- فقال له- ما منعك ان تد خل؟ قال- ان فى البيت
كلبا وانا لا ندخل بيتا فيه صورة ولا كلب. مصنف ابن ابى شيبة ج ৮ صفه ২৯০.
অর্থঃ- উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, হযরত
জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম নির্দিষ্ট সময়ে নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাক্ষাৎ করার ওয়াদা করলেন, নির্দিষ্ট
সময় অতিবাহিত হয়ে গেল সাক্ষাৎ হলনা। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঘর থেকে বের হয়ে আসলেন, অতঃপর
হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে দরজায়
দাঁড়ানো দেখে বললেন,
“আপনাকে ভিতরে প্রবেশ করতে কে নিষেধ করল?” তিনি
বললেন, আপনার ঘরে একটি কুকুর থাকাতে আমি ভিতরে প্রবেশ করতে পারিনি। কেননা আমরা রহমতের
ফেরেস্তারা ঐ ঘরে প্রবেশ করিনা যে ঘরে কুকুর ও প্রাণীর ছবি থাকে। (মোছান্নেফ
ইবনে আবী শায়বা ৮ম জিঃ পৃঃ ২৯০)
(২৪০-২৪২)
عن اببن عمر قال قال رسوا الله صلى الله عليه وسلم يفذبون المصورون يوم القيامة ويقال لهم احيواما خلقتم. مصنف ابن ابى شيبة ج৮ صفه ২৯৬، طحاوى
ج ২ صفه ৩৬৫، المعجم
المفهرس ج ৩ صفه ৪৩৭.
অর্থঃ হযরত ইবনে উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম
উনার হতে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
বলেন, “ক্বিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি তৈরীকারীদের শাস্তি দেয়া হবে এবং তাদেরকে বলা হবে
তোমরা যে ছবিগুলো তৈরী করেছ তার মধ্যে প্রাণ দান কর। (মোছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা
৮ম জিঃ পৃঃ ২৯৬,
তাহাবী ২য় জিঃ পৃঃ ৩৬৫, আল মুজামুল মুফহারিস ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৩৭)
(২৪৩-২৪৬)
عن ابى هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يخرج عنق من النار يوم القيامة لها عينان تبصوران- وذانان تسمعان- ولسان ينطق- يقول- انى وكلت بثلثة- بكل جيارعنيد- وكل من دعا مح الله
الها اخر- وبالمصورين. مظاهر حق ج ৪ صفه ২৫০، مسند
احمد ج ২ صفه ২১৭ و تحفهء خواتين صفه ৯১১، المعجم المفهرس ج ৩ صفه ৪৩৭.
অর্থঃ হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “ক্বিয়ামতের দিন এমন একখানা আগুনের
গর্দান বের হবে যার দুটি চুক্ষু থাকবে যাদ্বারা সে দেখতে পাবে, দুটি কান
থাকবে যাদ্বারা সে শুনতে পাবে এবং মুখ থাকবে যাদ্বারা সে কথা বলবে। সে বলবে, আমি তিন
ব্যক্তির অভিভাবক। প্রত্যেক অত্যাচারী অহংকারী বাদশার, প্রত্যেক
ঐ ব্যক্তির যে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে অন্য কাউকে ইলাহ ডাকে এবং যে ব্যক্তি
প্রাণীর ছবি তৈরী করে। (মোযাহেরে হক্ব ৪র্থ জিঃ পৃঃ ২৫০, মসনদে আহমদ ২য় জিঃ পৃঃ২১৭, তোহফায়ে খাওয়াতীন পৃঃ ৯১১, মুজামুল মুফ্হারিস ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৩৭)
(২৪৭-২৪৮)
عن ابن عباس قال قال رسوا الله صلى الله عليه وسلم ان اشد الناس عذابا يوم القيامة- من قتل نبيا او قتله نبى- او قتل احد والديه- والمصورون- وعالم لم ينتفح يعلمه. مظاهر حق ج ৪ صفه ২৫৩ اشعة اللمعات ج৩ صفه ৫৯৭.
অর্থঃ হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু হতে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “ক্বিয়ামতের
দিন মানুষের মধ্যে কয়েক প্রকার লোকের কঠিন শাস্তি হবে, তার
মধ্যে যে ব্যক্তি কোন নবী আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করেছে অথবা কোন নবী আলাইহিস
সালাম যাকে হত্যা করেছে। এবং যে ব্যক্তি
পিতা-মাতার কাউকে হত্যা করেছে। এবং যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তৈরী করেছে। এবং ঐ আলেম
যে তার ইলমের দ্বারা ফায়দা হাসিল করতে পারেনি। অর্থাৎ ইলম অনুযায়ী আমল করেনি।” (মোযাহেরে হক্ব ৪র্থ জিঃ পৃঃ ২৫৩, আশআতুল লোমআত ৩য় জিঃ পৃঃ ৫৯৭)
(২৪৯)
عن ابن مسعود قال اشد الناس عذابا يوم القيامة- رجل قتل نبيا او قتله نبى- اورجل يضل الناس بغير العلم- او مصور يصو التما ثيل مسندا حسد ج ২ صفه ২১৭.
অর্থঃ হযরত ইবনে মাস্উদ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, মানুষের
মধ্যে ঐ ব্যক্তিদের ক্বিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি হবে, যারা কোন নবী আলাইহিস সালাম উনাদেরকে শহীদ করেছে অথবা কোন
নবী আলাইহিস সালাম তিনি যাদেরকে হত্যা
করেছেন। এবং ঐ সমস্ত লোক যারা বিনা ইলমে মানুষদেরকে গোম্রাহ করে এবং যারা প্রাণীর
ছবি তৈরী করে। (মসনদে আহমদ ২য় জিঃ পৃঃ২১৭)
(২৫০-২৫২)
عن على قال- صنعت طعاما قدعوت رسول الله صلى الله عليه وسلم- فجاء قوأى تصاوير- فرجع- فقلت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم ما رجعك بابى- قال رسول الله صلى الله عليه وسلم- ان فى
البيت سترا فيه تصاوبر- وان المعكة لا تدخل
بيتا فيه تصاوير. مسنداحمد ج ২ صفه ২১৭، شرح
سيوطى النساى ج ৮ صفه ২১৩.
অর্থঃ হযরত আলী
কাররামুল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
খাদ্য তৈরী করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
দাওয়াত করলাম। অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এসে প্রাণীর ছবি দেখে ফিরে গেলেন। আমি বললাম, ইয়া
রসূলুল্লাহ, ইয়া হাবীবুল্লাহু ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি আমার দরজার নিকট থেকে
কি কারণে ফিরে আসলেন?
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “ঘরের মধ্যে একটি প্রাণীর ছবিযুক্ত
পর্দা ছিল। কেননা রহমতের ফেরেস্তা উনারা ঐ ঘরে প্রবেশ করেনা যে ঘরে প্রাণীর ছবি
থাকে।” (মুসনদে আহমদ ২য় জিঃ পৃঃ ২১৭, শরহে সুয়ূতী নাসাঈ ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৩, হাশিয়ায়ে সিন্দী নাসাঈ ৮ম জিঃ পৃঃ ২১৩)
(২৫৩-২৫৪)
عن جابر قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن الصورة
فى البيت ونهى ان يصنع
ذلك. تحفة الا حوذ ج ه صفه ৪২৭، المعجم المفهرس ج ৩ سفه ৪৩৯.
অর্থঃ হযরত যাবের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘরে প্রাণীর ছবি রাখতে এবং প্রাণীর ছবি তৈরী করতে
নিষেধ করেছেন। (তোহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ পৃঃ ৪২৭, মুজামুল মুফহারিস ৩য় জিঃ পৃঃ ৪৩৯)
(২৫৫-২৬৩)
عن ابى زرعة قال دخلت مع ابى هريرة فى دارمروان- فرأى فيها تصاوير- فقال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول قال الله عزجل ومن اظلم ممن ذهب يخلق كخلقى- فليخلقوا ذرة او ليخلقوا حبة او ليخلوا شعيرة. شرح النورى ج ৭ صفه ৯৩، مصنف
ابن ابى شيبة ج ৮ صفه ২৯৬، رياض الصالحين صفه ২১১، تنظيم الاشتات ج ৪ صفه ১৭৭، اشعة اللمعات ج ৩ صفه ৫৯২، طحاوى ج ২ صفه ৩৬৩، تر جمان السنة ج ২ صفه ৩৪৮، تحفة الاحوذى ج ৫ صفه ৪৩৩، تحفه، خواتين صفه ৯১১.
অর্থঃ হযরত আবু যুরয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু তিনি বর্ণনা করেন। আমি হযরত আবু
হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার
সঙ্গে মারওয়ানের ঘরে প্রবেশ করলাম, তিনি তার ঘরে প্রাণীর ছবি দেখতে
পেলেন। অতঃপর বললেন,
আমি নূরৈ মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন,
“মহান আল্লাহ্ পাক তিনি বলেন, ঐ ব্যক্তি অধিক অত্যাচারী যে আমার
সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত তৈরী করে। (তাদেরকে বলা হবে) তাহলে তোমরা একটি
কনা অথা একটি শস্য অথবা একটি গম সৃষ্টি করে দাও।” (শরহে
নববী ৭ম জিঃ পৃঃ ৯৩,
মোছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা ৮ম জিঃ পৃঃ ২৯৬, রিয়াজুস সালেহীন পৃঃ ৬১১, তানযীমুল ইশতাত ৪র্থ জিঃ পৃঃ ১৭৭, আশআতুল লুময়াত ৩য় জিঃ পৃঃ ৫৯২, তাহাবী ২য় জিঃ পৃঃ ৩৬৩, তারজুমানুস সুন্নাহ্ ২য় জিঃ পৃঃ ৩৪৮, তোহফাতুল
আহওয়াযী ৫ম জিঃ পৃঃ ৪৩৩, তোহফায়ে খাওয়াতীন পৃঃ ৯১১)
(২৬৪)
عن ابن عباس- قال- من صور
صورة عذب وكلفا ان ينفخ
فيها وليس بنا فخ- نساى
ج ২ صفه ৩০০০.
অর্থঃ হযরত ইবনে আব্বাস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তৈরী করবে, তাকে
শাস্তি দেয়া হবে। এবং তাকে ঐ ছবির মধ্যে প্রাণ দেয়ার জন্য চাপ দেয়া হবে, কিন্তু
সে প্রাণ দিতে সক্ষম হবেনা। (নাসাঈ শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ৩০০)
(২৬৫-২৬৬)
عن ابى طلحة- قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول لا تدخل الملعكة بيتا فيه كلب ولا تمائيل- مسل ج ২ صفه ২০০، ابو
داؤد ج ২ صفه ২১৯.
অর্থঃ হযরত আবু তাল্হা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “ঐ ঘরে
রহমতের ফেরেস্তা আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রবেশ করেনা, যে ঘরে
কুকুর এবং প্রাণীর ছবি বা মূর্তি থাকে।” (মুসলিম ২য় জিঃ পৃঃ ২০০, আবু দাউদ ২য় জিঃ পৃঃ ২১৯)
(অসমাপ্ত
0 Comments:
Post a Comment