ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ দা'ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ ওয়া কারামত,
ফখরুল আওলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইসমে আ'যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ,
আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-
একজন
কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
রউফুর রহীম, রহমাতুল উম্মাহ, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে একই বিষয়ে একই সময়ে পিতা-পুত্রের
সাক্ষাৎ ও নিয়ামত লাভ
আমরা পূর্বেই বলেছি, কারামত
হলো মাহবুব ওলীগণের মাধ্যমে অবস্থাভেদে প্রকাশ পাওয়া আল্লাহ পাক-উনার ‘কুদরত’। এমন সব
ওলীআল্লাহকে এ ‘কুদরত’-উনার পরিমিত হিস্যা দান করা হয়, যাঁরা সুন্নতের ইত্তিবায় অনুক্ষণ
অধিষ্ঠিত এবং ইস্তিক্বামাত থেকে আল্লাহ পাক এবং রফিকু ছাহিবিল কুদরত, রহমাতুল
উম্মাহ, মাশুকে মাওলা,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-উনার সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য নৈকট্য সংযোগে কামিয়াবী হাছিল করেছেন। আল্লাহ পাক-উনার
মাহবুব ওলীগণের মাধ্যমে অনেক অলৌকিক
বিষয়াদি প্রদর্শিত হলেও সুক্ষ্ম কামালত-সমৃদ্ধ কামিয়াবীর তুলনায় এসব
কারামতের মর্যাদা ও মূল্য নগণ্য (তেমন
তাৎপর্যপূর্ণ নয়)। আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে নিগূঢ় নৈকট্য সংযোগে যে তাৎপর্যপূর্ণ প্রাপ্তিযোগ
(কামালত) সাধিত হয়,
মূলতঃ তারই নাম কারামত। এ কথাতো সর্বজন বিদিত যে, উপযুক্ত নিয়ামত সংকুলানের জন্য
উপযুক্ত পাত্র প্রয়োজন। কুতুবুয্ যামান, মাদারজাদ ওলী, আওলাদে
রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম এমন কারামত
লাভে ধন্য হয়েছেন। উপরে আলোচিত মুবারক
স্বপ্ন দর্শন উনার সে কারামতেরই বিশিষ্টতাপূর্ণ বহিঃপ্রকাশ। সূক্ষ্মদর্শী
ওলীআল্লাহগণের যাপিত জীবন মুবারকে এমন সব কারামতের দৃষ্টান্ত অন্তহীন।
পরিপূর্ণরূপে
সুন্নত মুবারক অনুশীলনের মাধ্যমে আল্লাহ পাক এবং মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার তরফ থেকে প্রাপ্ত নিগূঢ় কামিয়াবীরই প্রকৃত নাম ‘কারামত’
আমাদের আলোচ্য সুক্ষ্ম “কারামত” উপলব্ধির জন্য সুন্নতের তাৎপর্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে সম্যক
ধারণা থাকা চাই। একই সঙ্গে ইল্মে তাছাউফ-উনার অপরিহার্যতা উপলব্ধির জন্য উম্মুখ
অন্তর, প্রেমময় অনুভব এবং গভীর অনুসন্ধিৎসা থাকা আবশ্যক। ইলমে ফিক্বাহ-উনার ভূমিকা এ
ক্ষেত্রে সহায়ক হলেও উনার অবলম্বন অবধারিত নয়। তাছাউফ-উনার সংশ্লেষ বিহীন ইল্ম, অর্জনের
শুরু থেকেই অপাংক্তেয় এবং পরিণতিতে মারাত্মক ক্ষতিকর। অনাবিল অন্তরের মনোযোগ, ধ্যান, জ্ঞান
এবং সামান্য তাওফিকও অপ্রয়োজনীয় অনেক ইল্ম থেকে উত্তম। ইল্ম কিছু তথ্য সংগ্রহের
নাম নয়। তাছাউফ-উনার সঙ্গে ইলমে ফিক্বাহ-উনার অনিবার্য সংশ্লেষ না ঘটলে তা’ এমন মন্দ
ইল্ম হয়ে দাঁড়ায়,
যা’
আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, মাশুকে
মাওলা, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সন্তুষ্টি অর্জনে আদৌ সহায়ক হয়
না। তাছাউফ চর্চার অভাবে জগদ্বিখ্যাত ফিক্বাহবিদও ওলী আল্লাহগণের সুক্ষ্ম
কারামত-সমৃদ্ধ অধিষ্ঠান অনুধাবনে অপারগ হয়ে থাকেন।
আমরা অনেকেই হযরত আবু বকর
শিবলী আলাইহিস সালাম-উনার কথা জানি। উনার জীবনেও আমরা এমন ঘটনার অবতারণা লক্ষ্য
করি। ঐ সময়ে দুনিয়ায় এমন পারদর্শী আলিম খুব কমই ছিলেন, যিনি
ফিক্বাহ ও হাদীছ শাস্ত্রে উনার সমকক্ষতা দাবী করতে পারেন। চারশত বিশেষজ্ঞ আলিমের
কাছে তিনি ইল্ম অধ্যায়ন করেছিলেন এবং চল্লিশ হাজার হাদীছ শরীফ আত্মস্থ করেছিলেন।
জীবনের এক পর্যায়ে উনার মনে হলো, ইলমে তাছাউফে দীক্ষা লাভের জন্য একজন ওলীআল্লাহ-উনার
ছোহ্বতে যাওয়া আবশ্যক। তিনি মনে মনে ভাবলেন, কেবল ফিক্বাহ শাস্ত্রের অগাধ ইল্ম
প্রজ্ঞার আবরণে এমন এক ধরনের মূর্খতা, যা’ আপাত ক্ষতিকর না হলেও পরিণতিতে
উপাদেয় নয়। অন্তরের ব্যাকুল ইচ্ছা পূরণে তিনি একজন শায়খ-উনার সন্ধানে ব্যাপৃত
হলেন। অবশেষে তিনি ঐ যামানায় আল্লাহ পাক-উনার লক্ষ্যস্থল, মাহবুব
ওলীআল্লাহ সাইয়্যিদুত্ ত্বায়িফা, হযরত জুনাইদ বাগদাদী আলাইহিস সালাম-উনার সংবাদ পেয়ে আশ্বস্ত
হলেন। একদিন সত্যি তিনি হযরত জুনাইদ
বাগদাদী আলাইহিস সালাম-উনার মুবারক খানকা শরীফে গিয়ে উপস্থিত হলেন। (চলবে)
আবা-১৬১
0 Comments:
Post a Comment