ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইস্মে আ’যম,
লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার
স্মরণে-
একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-
আগুনে পুড়ে যাওয়া জায়নামায- নিমেষেই পূর্বের মতো নতুন হয়ে
যাওয়া-
আফযালুল
ইবাদ,
ফখরুল আউলিয়া, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা, সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম-উনার মাতা
ছিলেন একজন অতি উঁচু স্তরের ওলীয়ে কামিল। তিনি উনার রেহেম শরীফে ধারণ করেছেন এমন
এক নেক সন্তান, যিনি ওলীয়ে মাদারজাদ। অতি শৈশবেই উনার
মাতৃভক্তি ছিলো তুলনাহীন। এ নেক সন্তানকে অন্তরের পরম দরদ ও মমতা দিয়ে আম্মাজান বড়
করে তুলেছেন। অন্তর্দৃষ্টিদানে সন্তানের মুবারক পরিবৃদ্ধি ঘটিয়েছেন। তাছাউফের অমিয়
সুধায় উনাকে মহিমান্বিত করেছেন। এতো গভীর সন্তান-বাৎসল্য এবং কৈশোরে এতো
পিতৃ-মাতৃভক্তির পরাকাষ্ঠার তুলনা মেলা ভার।
তখন
কতইবা উনার বয়স মুবারক! মাত্র পৌঁনে পাঁচ। ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, আরিফবিল্লাহ, ওলীয়ে মাদারজাদ, অকুতোভয় এবং
অনুপম ব্যক্তিত্বের অধিকারী শিশুপুত্র হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর
রহমান আলাইহিস সালাম একটু আগে আম্মার পাশেই বসা ছিলেন। অন্তরঙ্গ মুহূর্তে কথা বলার
পর অদূরে কোথাও গিয়েছেন। এমন সময় সবার অলক্ষ্যে আম্মার জায়নামাযে আগুন লেগে যায়।
দেখা যায়,
জায়নামাযের বেশ খানিকটা পুড়ে গেছে। স্নেহমাখা সম্বোধনে
সন্তানকে আম্মা বলেনঃ ‘বাবা! তুমি কী
আগুন লাগিয়ে আমার জায়নামায পুড়ে ফেললে?’ আম্মার কথায় শিশু সন্তান প্রথমতঃ একটু হতবাক হয়ে উঠেন। হবারই কথা। কারণ, কিভাবে জায়নামাযে আগুন লেগেছে তা’ তিনি জানেন না। তবে এতে অত্যন্ত দুঃখ পেয়েছেন তিনি। কেননা, জায়নামাযটি পরম শ্রদ্ধেয়া বুযূর্গ আম্মাজানের। তাছাড়া, এ জায়নামাযে আম্মার সঙ্গে তিনি নামায আদায় করেন।
পুড়ে
যাওয়া জায়নামায প্রত্যয়ী অবয়বে হাতে নিয়ে তিনি গভীরভাবে কী যেনো দেখেন। পরক্ষণেই
সবিনয়ে নিবেদন করেনঃ ‘বেয়াদবী মাফ
করবেন আম্মাজান, কোথায় পুড়েছে জায়নামায! দয়া করে
দেখুন তো! জায়নামাযে তো আগুনই লাগেনি!’ মুবারক কিশোর পুত্রের কথা শুনে আম্মা লক্ষ্য করেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া জায়নামাযটি নিমিষেই পূর্বের মতো নতুন হয়ে
গেছে। কোথাও পুড়ে যাবার চিহ্নমাত্র নেই। (সুবহানাল্লাহ) শিশু সন্তানের এ অভাবিত
কারামত দেখে আম্মা অভিভূত হয়ে পড়েন। পরম আদরে সন্তানকে কোলে তুলে নেন এবং আল্লাহ
পাক-উনার হাতে উনাকে সঁপে দেন।
ঘরে আগুন
ছিলোনা। তাই জায়নামায পুড়ে যাবার প্রশ্ন
উঠেনা। তবু সত্য যে, আগুন লেগেই
জায়নামাযের খানিকটা পুড়ে যায়। কাজটি অলৌকিক। তাই আশ্চর্যজনক। আশেপাশে আগুনের
অস্তিত্ব না থাকলেও লোকাতীত উপায়ে যে কোন সময়ে এবং যে কোন স্থানে অগ্নিকা-ের উদ্ভব
হতে পারে। একান্ত অস্বাভাবিক এ ধরনের ঘটনায় মানুষ হতবাক হলেও একে “কারামত” হিসেবে মেনে
নিতে কেউ বাধ্য, আবার কেউ
অভ্যস্ত। অবশ্য অনুপলব্ধির কারণে অজ্ঞরা একে
ভেল্কিবাজি (ইস্তিদ্রাজ) বলে সাব্যস্ত করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আবার
অনেকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে। (নাঊযুবিল্লাহ) মাহবুব ওলীগণের মাধ্যমে অজস্র কারামতের
প্রকাশ ঘটিয়ে আল্লাহ পাক উনাদের মান-শান, ইজ্জত-ঐতিহ্য, বুযূর্গী এবং কামিয়াবীর সোপানের প্রতি মানুষকে বিশ্বাসী ও প্রত্যয়ী করে তোলেন।
কারামত-সমৃদ্ধ ওলীআল্লাহগণের বয়সের প্রশ্ন এখানে অবান্তর।
আগুনে
পুড়ে যাওয়া জায়নামায নিমিষেই পূর্বের মতো নতুন হয়ে যাবার আলোচ্য ঘটনা অতি অস্বাভাবিক এবং অসাধারণ। তবে উনার
চেয়ে অনেক বেশী অসাধারণ এবং আশ্চর্যজনক হলো, এ ঘটনায় মুবারক শৈশবে ওলীয়ে মাদারজাদ, আফযালুল ইবাদ, ফখরুল আউলিয়া
হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম-উনার অনুপম
চারিত্রিক দৃঢ়তা, প্রত্যয়ী
ব্যক্তিত্বের প্রভাব, উৎকণ্ঠামুক্ত
মানসিকতা,
ঘটনার আকস্মিকতায়
অবিচলতা,
অন্তর্দৃষ্টির গভীরতা এবং অত্যন্ত বিনয় ও আদবে আম্মার সঙ্গে
আলাপচারিতার বহিঃপ্রকাশ।
অবাক
বিস্ময়ে দেখ্বার এবং ভাব্বার যা বিষয় তা হলো, আল্লহ পাক উনার মাহবুব ওলী হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর
রহমান আলাইহিস সালাম-উনার শৈশবকালে এ কারামত সংঘটনের মাধ্যমে উনার বুযূর্গী প্রকাশ
করেছেন। এতে বুঝা গেল যে, মহান আল্লাহ পাক
উনার মনোনীত ওলীগণের পরিচিতি উনাদের শিশুকালেও প্রকাশ করে থাকেন। এতে উনাদের মান, শান, অবস্থান এবং
গুণ-বৈশিষ্ট্যের প্রতি মানুষের অটুট মুহব্বত ও আস্থায় আল্লাহ পাক-উনার উদ্দিষ্ট
ব্যবস্থায় যমীনে ইসলাম ধর্ম আবাদের অনুকূল ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়। বুযূর্গ আম্মার
অন্তর ইত্মিনানকারী (প্রশান্তি দানকারী) উনার মুবারক সন্তান কুতুবুয্যামান, ওলীয়ে মাদারজাদ, ছাহিবে কাশফ ওয়া কারামত, হযরতুল আল্লামা
সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম যে আল্লাহ পাক-উনার নিগৃঢ়
নৈকট্য-ধন্য শীর্ষ মাকামে অধিষ্ঠানকারী মাহবুব ওলী, শিশুকালে উনার মাধ্যমে প্রকাশিত উল্লিখিত ‘কারামত’ তারই সুস্পষ্ট আভাস । (অসমাপ্ত)
আবা-১৫৪
0 Comments:
Post a Comment