ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশফ ওয়া
কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইসমে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার
স্মরণে-
একজন
কুতুবুয যামান উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-
কারামত মুবারক
বর্তমান
আলোচনার শুরুতেই বলা হয়েছে,
আল্লাহ পাক-উনার মাহবুব ওলীগণের সকলেই ‘কারামত’ দ্বারা
সমৃদ্ধ। ওলীআল্লাহগণের মান,
শান,
প্রভাব, প্রতিপত্তি, সম্মান ইত্যাদি সব নিয়ামতই আল্লাহ
পাক-উনার দান। ওলীগণের সব কারামতই তাৎপর্যপূর্ণ। নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের
কারামতের মাধ্যমে আল্লাহ পাক-উনার ‘কুদরত’ প্রকাশিত
হয়। কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছেঃ
ان الله على كل شئ قدير.
অর্থঃ- “নিশ্চয়ই
আল্লাহ পাক সর্বোপরি ক্ষমতাবান।” (সূরা বাক্বারা-১০৯)।
আরো ইরশাদ হয়েছেঃ
يخلق ما يشاء وهو العليم القدير.
অর্থঃ- “আল্লাহ
পাক যা’ ইচ্ছে তাই সৃষ্টি করেন এবং তিনি মহাজ্ঞানী ও কুদরতওয়ালা (অসীম ক্ষমতাবান।)” (সূরা
রূম-৫৪) প্রয়োজন এবং পরিমাণ অনুপাতে সাধারণের অলক্ষ্যে (অনুপলব্ধিতে) আল্লাহ পাক-উনার
কুদরত প্রকাশ ও বিকাশের নামই ‘মু’জিযা’ ও ‘কারামত’। ওলীআল্লাহগণের মাধ্যমে সংঘটিত কারামতের মধ্যে আল্লাহ পাক-উনার
আহকাম পালনে মানুষকে অভ্যস্ত করে তোলায় প্রকাশিত কারামতই সর্বাধিক গুরুত্ববহ।
আল্লাহ পাক-উনার মাহবুব ওলীগণের কারামতে আমরা উনার প্রমাণ খুঁজে পাই।
দৃষ্টান্তস্বরূপ গাউছুছ্ ছাক্বালাইন, ইমামে
রব্বানী, মাহবুবে সুবহানী,
কুতুবুল আকতাব, গাউছুল আ’যম, মুহিউদ্দীন, সাইয়্যিদুল
আউলিয়ায়িল ইযাম, ইমামত্ ত্বরীক্বত,
মুহ্ইস্ সুন্নাহ, কামিউল বিদ্য়াত, নূরে
রহমানী, জামিউল কামালত,
নায়িবে রসূল, দস্তগীর, হযরত বড়
পীর, আব্দুল ক্বাদির জ্বিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার একটি বিশেষ কারামত এখানে
উল্লেখযোগ্য। উনার জন্ম ৪৭১ হিজরী সালের পহেলা রমাদ্বান সুবহে সাদিকের পূর্বে।
ঊনত্রিশ শা’বান আকাশ ছিলো মেঘাচ্ছন্ন। প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়েছিলো সেদিন। তাই পরের দিন ত্রিশ
শা’বান, নাকি পহেলা রমাদ্বান হবে, তা জানা সম্ভব হয়নি।
ঐদিন রোযা রাখা বা না রাখা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জটিল পরিস্থিতিতে
জানা গেলো, গাউছুল আ’যম, শায়খ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি সুবহে
সাদিকের পর থেকে পানাহার করেননি।
এমন মুবারক সংবাদে পেরেশান মানুষ ঐদিন পহেলা
রমাদ্বান সম্পর্কে প্রত্যয়ী হলেন এবং সবাই রোযা রাখলেন। পহেলা রমাদ্বান শনাক্ত
করণে আল্লাহ পাক-উনার মাহবুব ওলী, ইমামে আযাল ওয়া আকরাম, শায়খুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুল
আফরাদ, গাউছুল আ’যম, হযরত বড় পীর আব্দুল ক্বাদির জ্বিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার জন্মের অব্যবহিত
পরে সংঘটিত এ কারামতে হক্বপন্থী ঐতিহাসিকগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। আল্লাহ পাক-উনার
আহকাম প্রকাশ এবং তা প্রতিপালনে মানুষকে প্রত্যয়ী ও অভ্যস্ত করে তোলার ক্ষেত্রে এ
কারামত অতুলনীয়। সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক ইচ্ছে মতো মনোনীত ব্যক্তি বা বস্তু থেকে উনার
‘কুদরত’ জাহির করে থাকেন। হযরত মুসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস্ সালাম-উনার মুবারক লাঠি
ফিরআউনের মনোনীত বিপুল সংখ্যক যাদুকরের বানানো অলীক সাপ, রশি এবং
অন্যান্য যাবতীয় বস্তু নিমিষে গিলে ফেললো। কিন্তু এতে লাঠির আকার ও প্রকারে কোন
পরিবর্তন দেখা গেলো না।
অর্থাৎ এতো কিছু গ্রাস করেও লাঠির পেট ফুলে উঠলো
না। আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম রসূল হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম-উনার মু’জিযায়
ফিরআউন, তার সভাসদ, যাদুকর ও অন্যান্য সবাইকে বুঝিয়ে দিলেন এটি কোন প্রতারণা, যাদু
অথবা কূট-কৌশল নয়,
এটি “কুদরত।” ঐতিহাসিক বর্ণনায় রয়েছে, কম-বেশী তিন লক্ষ যাদুকর সেদিন
সমবেত হয়েছিলো। তাদের বিপুল পরিমাণ লাঠি, রশি ও অন্যান্য সামগ্রী তিনশত
উটের পিঠে বোঝাই করে আনা হয়েছিলো। ফিরআউনের সুবিধাভোগী যাদুকরদের কৌশল ছিলো চোখ
ধাঁধানো চাতুরী। ছিলো এমন এক সম্মোহনী, যা’র প্রভাব মানুষের কল্পনা ও
দৃষ্টিকে সাময়িক আচ্ছন্ন করে দেয়। পক্ষান্তরে হযরত মুসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস্
সালাম-উনার মুবারক লাঠির মাধ্যমে অনায়াসে সংঘটিত মু’জিযায় যা’ প্রকাশিত
হয়েছিলো, তা’ যাদুকরদের কৌশল ভঙ্গকারী আল্লাহ পাক-উনার ‘কুদরত’। (অসমাপ্ত)
আবা-১৪৯
0 Comments:
Post a Comment