ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ দা'ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ ওয়া কারামত,
ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইসমে আ'যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ,
আওলাদুর রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুয যামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
কারামত মুবারক-
‘কারামত’ সম্পর্কে উপরে কিঞ্চিৎ আলোচনা হয়েছে। ‘মু’জিযা’ সম্পর্কেও
অতি সংক্ষেপে আলোকপাত করা হয়েছে। এতে বোঝা গেছে যে, মানুষকে হিদায়েতে উদ্বুদ্ধকরণ এবং
হিদায়েতপ্রাপ্তদের সমঝ্ আরো শাণিত করবার জন্য নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম এবং
মাহবুব ওলীগণের মাধ্যমে আল্লাহ পাক-উনার কুদরত ও ছিফত প্রকাশ ও বিকাশের নামই
যথাক্রমে ‘মু’জিযা’ ও ‘কারামত।’ বিষয় দু’টির অর্থ দ্যোতনা,
তাৎপর্য ও বৈশিষ্ট্য এবং উনার প্রকার ও পরিধি উপলব্ধির জন্য
উপরের নাতিদীর্ঘ আলোচনা সহায়ক হবে বলে আমরা মনে করি। তবে, উনার মূল
বিষয় সম্পর্কে যা’
বুঝতে হবে তা হলো, আয়াসসাধ্য আয়োজনে যতো
ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণই করা হোক, ওলীত্বের সঙ্গে আল্লাহ পাক-উনার সদয় ইচ্ছা যখন সংযুক্ত হয়, ওলীআল্লাহগণ
তখনই কারামত-সমৃদ্ধ হয়ে উঠেন।
এতোক্ষণে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে
যে, মহান আল্লাহ পাক প্রদত্ত সম্মানরূপ বখ্শিশের অপর নাম ‘কারামত।’ ওলীআল্লাহগণের
অন্তরে, অবয়বে এবং আচরণ ও বিচরণে মিশে থাকা এ বখ্শিশের যতোটুকু মানুষের বোধগম্যের
পর্যায়ে, তা একজন ওলীআল্লাহ্র স্বাভাবিক আদত হিসেবে চিহ্নিত হয়। অনুপলব্ধির কারণে
যেটুকু অবোধ্য থাকে,
তা-ই মানুষের কাছে অলৌকিক/লোকাতীত (خرق عادت), অর্থাৎ ‘কারামত’ হিসেবে
পরিগণিত হয়।
ওলীআল্লাহগণের ‘কারামত’ বিশেষ
কোন নিয়ামতের নাম নয়। পুঞ্জীভূত নিয়ামতরাজির এক প্রকার অনুষঙ্গের নাম ‘কারামত’, প্রয়োজনে
যা’র বিকাশ ঘটে। নিয়ামতের প্রাপ্তিযোগেই মানুষ সম্মানিত হয়। তাই কারামতরূপ
অনুষঙ্গই বুযূর্গী (সম্মান) অভিধায় অভিষিক্ত হয়ে থাকে। মাহবুব ওলীগণের কামালতের
মানদণ্ডের প্রেক্ষিতে তাঁদের নিয়ামত প্রাপ্তির প্রকৃতি ও পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন।
তৎকারণে তাঁদের কারামত প্রকাশের প্রকৃতি এবং প্রেক্ষিতও পৃথক পৃথক।
নবী-রসূল আলাইহিমুস্
সালামগণের মাধ্যমে মু’জিযা প্রকাশ পাওয়া আল্লাহ পাক অত্যাবশ্যক করেছেন। কিন্তু ওলীআল্লাহগণের কারামত
প্রকাশিত হওয়া অবধারিত নয়। তবে, অনুসন্ধিৎসু মানুষ উনার প্রেক্ষিত ও আপেক্ষিক প্রয়োজন জেনে
নেয়া জরুরী বলে বিবেচনা করেন।
আল্লাহ পাক-উনার দেয়া ‘কারামত’ একজন
ওলীর নিজস্ব সম্পদ হওয়া সত্ত্বেও তা’ ব্যষ্টি ও সমষ্টির হক্ব। বিদিশা
মানুষের সিরাতুল মুস্তাকীম খুঁজে পাওয়া এবং বিধর্মীদের ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হবার
প্রয়োজনে শীর্ষ সোপানে অধিষ্ঠিত ওলীআল্লাহগণের মাধ্যমেও কারামত প্রকাশিত হওয়া
জরুরী হিসেবে সাব্যস্ত। কিন্তু তাঁদের সূক্ষ্ম কারামত উপলব্ধির জন্য প্রজ্ঞাবান
মানুষের সংখ্যা অতি নগণ্য।
কারামত বিষয়টি এমন, যা’র আলোচনা
তাত্ত্বিক ও সুদূরপ্রসারী। বক্ষ্যমাণ নিবন্ধে সবিস্তার আলোচনার সুযোগ নেই। এতো
গভীর আলোচনার প্রয়োজনও নেই। এখন মূল বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করার সময়। ওলীয়ে
মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত,
আফজালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল
আউলিয়া, ছূফিয়ে বাতিন,
ছাহিবে ইসমে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে
নেওয়াজ, কুতুবুয্ যামান,
আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ
মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম-উনার কারামত (বুযূর্গী) উপলব্ধির জন্য ‘কারামত’ সম্পর্কে
ইতোপূর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে। উনার অধিকারে থাকা অগণিত কারামত-উনার সব
জানা সম্ভব হয়নি। একান্ত সান্নিধ্যে প্রত্যক্ষ দর্শন, উপলব্ধি, শ্রুতি
এবং বিশ্বস্ত সূত্রে প্রাপ্ত বিবেক ও অন্তর স্পর্শ করা উনার তত্ত্বপূর্ণ ও সূক্ষ্ম
কিছু কারামত পর্যায়ক্রমে আমরা বর্ণনা করবো ইনশাআল্লাহ।
(অসমাপ্ত)
আবা-১৫২
0 Comments:
Post a Comment