একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-৯০

 

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-

 একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান

কারামত মুবারক

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেনঃ

قالوا يموسى اما ان تلقى واما ان نكون نحن الملقين قال القوا فلما القوا سحروا اعين الناس واسترهبوهم وجاءوا بسحر عظيم واوحينا الى موسى ان الق عصاك فاذا هى تلقف ما يافكون فوقع الحق وبطل ما كانوا يعملون فغلبوا هنالك وانقلبوا صغرين والقى السحرة سجدين قالوا امنا برب العلمين رب موسى وهرون.

অর্থঃ- তারা (ফিরআউনের মনোনীত যাদুকর) বললোঃ হে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম! আপনিই কী নিক্ষেপ করবেন, না আমরাই প্রথমে নিক্ষেপ করবো? তিনি বললেনঃ তোমরাই নিক্ষেপ করো। যখন তারা নিক্ষেপ করলো, লোকদের চোখ ধাঁধিয়ে দিলো, তাদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত করে তুললো এবং তারা এক বড় রকমের যাদু দেখালো। অতঃপর আমি হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম-উনার প্রতি ওহী পাঠালাম, আপনিও আপনার লাঠি নিক্ষেপ করুন। সহসা তা’ (লাঠি) তাদের অলীক সৃষ্টিগুলোকে (সাপ, রশি ইত্যাদি) গ্রাস করতে লাগলো। ফলে সত্য প্রতিষ্ঠিত হলো এবং তারা যাকরেছিলো তা মিথ্যে প্রতিপন্ন হলো। অতএব, তারা সেখানে পরাভূত হলো এবং অতীব লাঞ্ছিত হলো এবং যাদুকররা সিজদাবনত হলো। তারা বললোঃ আমরা ঈমান আনলাম মহা- বিশ্বপ্রতিপালকের প্রতি, যিনি হযরত মুসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস্ সালাম ও হযরত হারূন আলাইহিস্ সালাম-উনার রব।” (সূরা আরাফ ১১৫-১২২) ফিরআউনের যাদুকরদের ভেল্কিবাজীতে দেখা গেলো, হাজার হাজার লাঠি আর দড়ি সাপ হয়ে মাঠময় দৌড়াচ্ছে। এতে উপস্থিত সকলে অদ্ভুত এক ভীতিতে নিপতিত হলো। এমন সম্মোহিত পরিস্থিতিতে আল্লাহ পাক-উনার নির্দেশে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম-উনার নিক্ষেপিত লাঠি মুবারক এক ভয়ঙ্কর আযদাহা (অজগর)-উনার আকার ধারণ করে যাদুকরদের বানানো অলীক সাপ ও রশিগুলোকে অবলীলায় গ্রাস করতে লাগলো। আল্লাহ পাক-উনার উদ্দিষ্ট ব্যবস্থায় যাদুরকদের ভেল্কিবাজীর সমূল বিনাশসাধনে লাঠি মুবারকের অবিরাম নিপুণ কারুকাজ (যাদুকরদের বানানো অলীক সৃষ্টি গ্রাস) এবং হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম-উনার প্রশান্ত ও প্রত্যয়ী চেহারা মুবারক লক্ষ্য করে ভীত-বিহ্বল যাদুকর সর্দার তার সাথীদের জানালো, এটি কোন যাদু নয়। এটি হযরত মুসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস্ সালাম-উনার মহান প্রতিপালকের কুদরত’, যামুজিযারূপে প্রকাশ পাচ্ছে। এমন সূক্ষ্ম উপলব্ধির জাগরণে কিছুক্ষণ আগে নিকৃষ্টতম কুফরীতে আক্রান্ত যাদুরক সর্দার ঈমান গ্রহণ করলো। মুজিযারূপে আল্লাহ পাক-উনার কুদরত বহিঃপ্রকাশের কারণে সর্দারের পরিবর্তন লক্ষ্য করে তার সাথীরাও ঈমানদার হয়ে গেলো। অবস্থা বেগতিক দেখে ফিরআউন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলো। অতিমাত্রায় ক্রুদ্ধ ফিরআউন ঈমান গ্রহণকারীগণকে জীবন নাশের ভয় দেখালো।  কুরআন শরীফে বর্ণিত:

لاقطعن ايديكم وارجلكم من خلاف ثم لاصلبنكم اجمعين.

অর্থঃ- অবশ্যই আমি তোমাদের হাত ও পাগুলো বিপরীত দিক থেকে কেটে দেবো। তারপর নিশ্চয়ই তোমাদের সবাইকে শূলবিদ্ধ করবো।” (সূরা আরাফ-১২৪)

কালামুল্লাহ শরীফের ভাষায় ঈমানদারগণের জবাবঃ

قالوا انا الى ربنا منقلبون وما تنقم منا الا ان امنا بايت ربنا لما جاء تنا.

অর্থঃ- উনার বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আমরা আপন প্রতিপালকের দিকে গমনকারী। বস্তুতঃ আমাদের সাথে তোমার (ফিরআউন) শত্রুতা তো এটাই যে, আমরা ঈমান এনেছি আমাদের পরওয়ারদিগারের নিদর্শন সমূহের প্রতি, যখন তা আমাদের কাছে পৌঁছেছে। (সূরা আরাফ ১২৫,১২৬) আল্লাহ পাক-উনার কুদরত প্রত্যক্ষ করে ফিরআউনের দেয়া মৃত্যুর হুমকীতেও উনার ভীত হননি। মুমিনে কামিলরূপে তাৎক্ষণিকভাবে উনাদের প্রত্যয় এমন হয়েছিলো যে, ফিরআউন যদি উনাদেরকে মেরেও ফেলে তাতে কী এসে যায়? পরিণতিতে উনারতো আল্লাহ পাক-উনার সঙ্গেই মিলিত হবেন এবং আল্লাহ পাকই প্রকৃত ইতমিনান (শান্তি) দানকারী।   (অসমাপ্ত)

আবা-১৫০

0 Comments: