কাদিয়ানী রদ! (১)
(পঞ্চম ভাগ)
(মুবাহিছে আযম,
বাহরুল উলূম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল
মোহাদ্দিসীন, তাজুল মোফাসসিরীন,
হাফিজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে
কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মিল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন
রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ” কিতাবখানা
(৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ
করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফিরকা থেকে আহ্লে
সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের
প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। এক্ষেত্রে তাঁর কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা
হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্যণীয়)।
(ধারাবাহিক)
তদ্বিপরীতে যখন মির্জ্জা
ছাহেবের নবি হওয়ার আবশ্যক ধবোধ হইল, তখন তিনি উক্ত কথাগুলি ভুলাইয়া
দিয়া ‘এস্তেহারে এক গলতি কা এজালা’ তে লিখিয়াছেনঃ-
উর্দু কম্পোজ করতে হবে
‘‘যদি খোদার পক্ষ হইতে গুপ্ত সংবাদ প্রাপ্ত ব্যক্তি নবি নামে অভিহিত না হয়, তবে বল, তাহাকে
কোন্ নামে ডাকা যাইবে?
যদি তুমি বল যে, তাহার নাম মোহাদ্দাছ রাখা চাই, তবে আমি
বলি, ‘তহদিছে’র অর্থ কোন অভিধানে গুপ্ততত্ত্ব প্রকাশ করা বলিয়া লিখিত নাই।’’
মির্জ্জা ছাহেব প্রথম স্থলে ‘মোহাদ্দাছ’ হওয়া স্বীকার ও নবি হওয়া অস্বীকার করিয়াছেন, পক্ষান্তরে
তিনি দ্বিতীয় স্থলে নবি হওয়ার দাবি ও মোহাদ্দাছ হওয়া অস্বীকার করিয়াছেন, কাজেই
তিনি নিজের দাবি অনুসারে মোহাদ্দাছ নহেন এবং নবিও নহেন।
(২) যে মুছলমানেরা মির্জ্জাভক্ত
নহেন, তাহাদের কোফর ও ইছলাম সম্বন্ধে মির্জ্জা ছাহেবের ভিন্ন ভিন্ন মত ঃ- ‘তিরইয়াকোল-কুলুবের’’ ৩২৫/৩২৬
পৃষ্ঠার হাশিয়া ঃ-
উর্দু কম্পোজ করতে হবে
‘এই সূক্ষতত্ত্বটীও স্মরণ রাখা
উপযুক্ত যে, নিজের দাবি অস্বীকারকারীকে কাফের বলা, ইহা কেবল উক্ত নবিগণের কার্য্য, যাহারা
খোদাতায়ালার পক্ষ হইতে শরিয়ত ও নূতন আহকাম আনয়ন করেন, কিন্তু
শরিয়ত প্রবর্ত্তক ব্যতীত যত সংখ্যক মোলহাম ও মোহাদ্দাছ হইয়া থাকেন, আল্লাহতায়ালার
দরবারে তাঁহাদের উচ্চ দরজা হউক না কেন এবং আল্লাহতায়ালার কথোপকথন করার সম্মান লাভ
করিয়া থাকুন না কেন,
তাহাদের এন্কার করাতে কেহ কাফের হয় না।’’ (অসমাপ্ত)
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক
কাদিয়ানীদের “কাফির” ষোষণা!
(২)
(অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল
হক)
(ধারাবাহিক)
অবশ্য তাঁরা বেছে নেন হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্র
সাহচর্য। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এরসহধর্মীনিদের মধ্যে অনেকেই
সমৃদ্ধি দেখেছেন। তাঁরা (রাঃ) সম্পদশালী পরিবার থেকে এসেছিলেন। উদাহরণ স্বরূপ।
হযরত সাউদা (রাঃ),
হযরত সাফিয়া (রাঃ), হযরত উম্মে হাবীবা (রাঃ) এবং হযরত
যুওয়ায়রিয়া (রাঃ)। কিন্তু তাঁরাও অভাবের জীবন-যাপনই বেছে নিয়েছিলেন। হুজুর পাক
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্র সাহচর্য ছেড়ে যাওয়ার চেয়ে। এই সকল উচ্চ
মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের সাথে আন্য কোন মহিলার তুলনা করা এবং তাঁদের (রাঃ)
লক্বব ব্যবহার করা অভাবনীয় ব্যাপার।
অন্য আর একটি লক্বব “আহ্লে বাইত” যাহরা হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পরিবারের সদস্যদের
সম্মানার্থে ব্যবহৃত,
উহা ব্যবহারে কাদিয়ানীদের বিরত করা হয়েছে।
সূরা/১১, আয়াত
শরীফ/৭৩-এর বলা হয়েছে,
رحمت الله وبركته عليكم اهل البيت.
অর্থঃ- “হে আহ্লে
বাইত আপনাদের উপর আল্লাহ্ পাক-এর রহমত ও বরকত রয়েছে।”
সূরা/৩৩, ৩৩ নং
আয়াত শরীফে বলা হয়েছে,
انما يريد الله ليذهب عنكم الرجس اهل البيت ويطهر كم تطهيرا.
অর্থঃ- “আল্লাহ্
পাক কেবল চান আপনাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং আপনাদেরকে পূর্ণরূপে পুতঃ
পবিত্র রাখতে।”
এই আদেশের উদ্দেশ্য ছিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পরিবারকে
অবহিত করা যে তাদেরকে সকল ধরণের গুণাহ্ ও অবাধ্যতা থেকে পরহেজ করতে হবে। বিশ্বাস, কাজ ও
আচার-আচরণে পবিত্রতা এবং স্বচ্ছতা বহাল রাখতে হবে।
কুরআন শরীফে থেকে এটা সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, এ সকল গুণ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পরিবারের সদস্যগণের থাকতে হবে। আল্লাহ্ পাক-এর আদেশ অমান্য
করার কারণে হযরত নূহ আলাইহিস্ সালাম-এর ছেলেকে নবী আলাইহিস্ সালামগণের পরিবারের
সদস্য হিেিসবে গণ করা হয়নি।
সূরা হুদের ৪৫ এবং ৪৬নং
আয়াত শরীফে এরূপ আছে,
ونادى نوح ربه فقال رب ان ابنى من اهلى وان وعدك الحق وانت احكم الحكمين قال ينوح انه ليس من اهلك انه عمل غير صالح فلا تسئلن ماليس لك به علم انى اعظك ان تكون من الجهلين.
অর্থঃ- “আর নূহ
আলাইহিস্ সালাম আল্লাহ্ পাককে বললেন, আয় পরয়ারদিগার! আমার পরিজনদের
অন্তর্ভূক্ত আর আপনার ওয়াদাও নিঃসন্দেহে সত্য আর আপনিই সর্বাপেক্ষা বিজ্ঞ
ফায়সালাকারী।”
আল্লাহ্ পাক এরশাদ করেন, “হে নূর আলাইহিস্ সালাম! নিশ্চয়ই সে আপনার পরিবারভুক্ত নয়।
নিশ্চয়ই সে অবাধ্য। সুতরাং আমার কাছে এমন অনুরোধ করবেন নাা যা সম্বন্ধে আপনি অবগত
নন। আমি বলছি আপনি অজ্ঞদের দলভুক্ত হবেন না।”
বিভিন্ন ঐতিহ্য থেকে প্রমাণিত যে, অভি ব্যক্তি আহলে বাইত ব্যবহার
করা যাবে শুধুমাত্র হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পরিবারের
সদস্যদের জন্য।
ঐ সকল লোকদের আহলে বাইত বলা যাবে না। যারা মুসলমান নয় এবং মুসলমান ছিলও না।
মির্জার পরিবারের সদস্যদের আহলে বাইত বলা অমর্যাদাকর। হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পরিবারের সদস্যগণের গুণে গুণান্বিত হওয়া আর কারো পক্ষে
সম্ভব নয়। সুতরাং ইহা অপ্রত্যাশিত নয় যে, মুসলিম উম্মাহর এই অভি ব্যক্তির
অমর্যাদাকর ব্যবহারে বিক্ষুব্ধ। মির্জা পরিবারের জন্য ঐ লক্বব ব্যবহার ক্রমান্বয়ে আইন-শৃঙ্খলার পরিপন্থি
অবস্থার সৃষ্টি হয়। পরিণতিতে উম্মাহ্র স্বার্থে এ লক্বব ব্যবহারে কাদিয়ানীদের
প্রতিহত করতে। ইহা ব্যবহার তাদের জন্য আইনতঃ দন্ডনীয় করা হয়।
অভিব্যক্তি রদিয়াল্লাহু আনহু অর্থ আল্লাহ্ পাক তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট। এ লক্বব
কার জন্য ব্যবহার করা যাবে। কুরআন শরীফে তার যথেষ্ট নির্দেশ রয়েছে। নিম্নে
সংশ্লিষ্ট আয়াত শরীফ সমূহ উল্লেখ করা হলো। (অসমাপ্ত)
*********************************************************
খতমে নুবুওওয়াত প্রচার
কেন্দ্র
খতমে নুবুওওয়াত
অস্বীকারকারীরা কাফির
ইসলামী শরীয়তের হুকুম
মুতাবেক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত
হয়
(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই
ইত্যাদি)
তাদের তওবার জন্য
নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদ-
কাদিয়ানী রদ! (১)
(পঞ্চম ভাগ)
(মুবাহিছে আযম,
বাহরুল উলূম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল
মোহাদ্দিসীন, তাজুল মোফাসসিরীন,
হাফিজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে
কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মিল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন
রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ” কিতাবখানা
(৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ
করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফিরকা থেকে আহ্লে
সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের
প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। এক্ষেত্রে তাঁর কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা
হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্যণীয়)।
(ধারাবাহিক)
এজালায়-আওহাম, ১৩১
পৃষ্ঠাঃ-
উর্দু কম্পোজ করতে হবে
“জানা উচিত যে, মছিহর
নাজিল হওয়ার আক্বিদা এমন কোন আক্বিদা নহে- যাহা আমাদের ইমানের অংশ কিম্বা দীনের
কোন রোকন হইতে পারে,
বরং শত শত ভবিষ্যদ্বাণীর মধ্যে একটি ভবিষ্যদ্বাণী-যাহার
প্রকৃত ইছলামের সহিত কোনও প্রকার সম্বন্ধ নাই।”
যেরূপ কোন নূতন দোকানদার
প্রথমতঃ নরম নরম কথা বলিয়া খরিদারদিগের মন আকর্ষণ করিয়া থাকে, যখন
দোকানের উন্নতি হয়,
এবং খরিদারগণের সংখ্যা অধিক হয়, তখন
তাহার মেজাজ গরম হইয়া পড়ে। মিজ্জা ছাহেব প্রথম প্রথম উপরোক্ত প্রকার নরম সুরে কথা
বলিয়াছিলেন, কিন্তু যখন তাহার মুরিদগণের সংখ্যা বেশি হইয়াছিল, তখন তিনি
কিরূপ কঠিন মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছিলেন, তাহা নি¤œলিখিত কথাগুলিতে বেশ বুঝিতে
পারিবেন।
তিনি ‘মে’য়ারোল-আখইয়ার’-এর ৮
পৃষ্ঠায় লিেিয়ছেনঃ
উর্দু কম্পোজ করতে হবে
“যে ব্যক্তি তোমার (মির্জ্জা গোলাম
আহমদ ছাহেবের) পয়রবি না করে এবং মুরিদগণের অন্তর্ভুক্ত না হয় ও তোমার বিরুদ্ধাচরণ
করিতে থাকিবে, সে খোদা ও রাছুলের নাফরমান ও জাহান্নামি হইবে।”
মির্জ্জা ছাহেব লাহোরের
আঞ্জুমানে হেমাএতোল-ইছলামের আলেমগণ উনাকে লক্ষ্য করিয়া একটি লম্বা বক্তৃতা
দিয়াছিলেন- যাহার সারমর্ম্ব এই যে, তোমরা আমাকে এনকার করিতেছে, এই হেতু
প্লেগ হইতে নিরাপদে থাকা সম্বন্ধে তোমাদের দোয়া কবুল হইবে না, কেননা
তোমাদের সম্পর্কে খোদা বলিয়াছেন ঃ-
وما دعاء الكافرين الا فى ضلال.
“কাফিরদিগের দোয়া নিস্ফলতার মধ্যেই
থাকিবে।” দাফেয়োল-বালা ১০/১১ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য। (অসমাপ্ত)
ইসলামী শরীয়ত মুতাবেক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক
কাদিয়ানীদের “কাফির” ঘোষণা!
(২)
অনুবাদক- আলহাজ্জ মুহম্মদ
হাবিবুল হক
(ধারাবাহিক)
সংশ্লিষ্ট আয়াত শরীফসমূহ
উল্লেখ করা হলো (সূরা ৯ আয়াত নং- ১০০, সূরা ৪৮ আয়াত নং- ১৮, ৫৮, আয়াত নং-
২২)
সূরা- ৯, আয়াত-১০০
والسبقون الاولون من المهجرين والانصار والذين اتبعوهم باحسان رضى الله عنهم ورضوا عنه واعدلهم جنت تجرى تحتها الانهر خلدين فيها ابدا ذلك الفوز العظيم.
অর্থ: “আর যাঁরা
সর্বপ্রথম হিজরতকারী ও আনছারদের মধ্যে পুরাতন এবং যারা উনাদের অনুসরণ করেছেন, যিনি
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং উনারাও
উনার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। আর উনাদের জন্য তৈরি রেখেছেন বাগান, যার
তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত ঝরণাসমূহ। সেখানে উনারা থাকবেন চিরকাল। এটাই মহান কৃতকার্যতা।”
সূরা ৪৮, আয়াত নং-
১৮
لقد رضى الله عن المؤمنين اذ يبايعونك تحت الشجرة فعلم مافى قلوبهم فانزل السكينة عليهم واثابهم فتحا قريبا.
অর্থ: যিনি খালিক্ব মালিক
রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মু’মিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন যখন উনারা গাছের নীচে আপনার
কাছে শপথ করলেন। যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি অবগত ছিলেন যা উনাদের
অন্তরে ছিল। অতঃপর তিনি উনাদের প্রতি প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং উনাদেরকে আসন্ন
বিজয় পুরস্কার দিলেন।”
সূরা-৫৮, আয়াত
নং-২২
لا تجدقوما يؤمنون بالله واليوم الاخر يوادون من حاد الله ورسوله ولو كانوا اباءهم او ابناءهم او اخوانهم اوعشيرتهم اولئك كتب فى قلوبهم الايمان وايدهم بروح منه ويدخلهم جنت تجرى من تحتها الانهر خلدين فيها رضى الله عنهم ورضوا عنه اولئك حزب الله الا ان حزب الله هم المفلحون.
অর্থ: “যাঁরা
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক ও পরকালে বিশ্বাস করে, উনাদেরকে
আপনি যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
বিরুদ্ধাচরণকারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন না। যদিও উনারা উনাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা
অথবা জাতি-গোষ্ঠী হয়। উনাদের অন্তরে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি
ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং উনাদেরকে শক্তিশালী করেছেন উনার অদৃশ্য শক্তি দ্বারা। তিনি
উনাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। উনারা তথায় চিরকাল থাকবেন। যিনি
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং উনারা মহান
আল্লাহ পাক উনার প্রতি সন্তুষ্ট। উনারাই মহান আল্লাহ পাক উনার দল। জেনে রাখুন, যিনি
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার দলই সফলকাম।
এই সকল আয়াত শরীফ থেকে ইহা
পরিস্কার বুঝা যায় যে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এই সুসংবাদ
দিয়েছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং
বিশ্বাসীদের জন্য। অভিব্যক্তি “রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম” কোন অমুসলিমদের জন্য ব্যবহার করা
যাবে না, যার প্রতি যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সন্তুষ্ট নয়। এই
সুসংবাদে খারিজী ও কাফিরদের কোন অধিকার নাই। তাদের জন্য সংবাদ তারা জান্নাতের
পরিবর্তে জাহান্নামে থাকবে। এই পরিস্থিতিতে ইহা সম্ভব নয় যে, কোন একটি
নীতি উদ্ভাবন করা যায় যাতে খারিজীরা ও ঐ লক্বব ব্যবহার করতে পারে। ইসলামী শরীয়ত
অনুযায়ী মহান আল্লাহ পাক তিনি কোন অবিশ্বাসীকে ক্ষমা করবেননা যদিও মুসলমানরা
উনাদেরকে ক্ষমার জন্য দোয়া করে। সূরা-৯, আয়াত নং- ৮০, সূরা-৬৩, আয়াত- ৬
এবং সূরা-৯ আয়াত নং- ১১৪ দেখা যেতে পারে এবং নি¤েœ উল্লেখ
করা হল।” (অসমাপ্ত)
কাদিয়ানী রদ! (১)
(পঞ্চম ভাগ)
(মুবাহিছে আযম,
বাহরুল উলূম, ফখরুল ফুক্বাহা, রইছুল
মুহাদ্দিসীন, তাজুল মুফাসসিরীন,
হাফিজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে
কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মিল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন
রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ” কিতাবখানা
(৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ
করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফিরকা থেকে আহ্লে
সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের
প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। এক্ষেত্রে তাঁর কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা
হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্যণীয়)।
(ধারাবাহিক)
আঞ্জামে-আথাম,
৬২ পৃষ্ঠাঃ-
উর্দু কম্পোজ করতে হবে
‘ইনি (মির্জ্জা ছাহেব) খোদার প্রেরিত, খোদার আদেশ প্রাপ্ত, খোদার
বিশ্বাসভাজন এবং খোদার পক্ষ হইতে আগত, তিনি যাহা বলেন, তোমরা
উহার উপর ইমান আন এবং উহার শত্রু জাহান্নামি।’
আরবাইন, ৩ নম্বর, ৩৪ পৃষ্ঠার হাশিয়াঃ-
উর্দু কম্পোজ করতে হবে
‘যে ব্যক্তি আমাকে কাফের কিম্বা মিথ্যাবাদী বলে, অথবা আমার সম্বন্ধে সন্দিহান হয়, তাহার
পশ্চাতে তোমাদের (মির্জ্জাভক্তদের) নামাজ পড়া হারাম এবং নিশ্চিত হারাম।’
হকিকাতোল-অহি,
১৬৩ পৃষ্ঠাঃ-
উর্দু কম্পোজ করতে হবে
‘ যে ব্যক্তি আমাকে মান্য করে না, সে ব্যক্তি খোদা ও রাছুলকে মান্য
করে না, কেননা আমার সম্বন্ধে খোদা ও
রাছুলের ভবিষ্যদ্বাণী বর্ত্তমান আছে।’
আরও উক্ত পৃষ্ঠাঃ-
উর্দু কম্পোজ করতে হবে
‘যে ব্যক্তির নিকট আমার আহবান পৌঁছিয়াছে এবং সে আমাকে কবুল করিল না, সে
মুছলমান নহে।’
আরও হকিকাতোল-অহি,
১৭৯ পৃষ্ঠা
উর্দু কম্পোজ করতে হবে
‘দ্বিতীয় প্রকার কোফর এই যে, যেরূপ এক ব্যক্তি প্রতিশ্রুত মছিহকে মান্য করে না এবং দলীল
পূর্ণ করা সত্ত্বেও তাহাকে মিথ্যাবাদী জানে-যাহার মান্য করার ও সত্য জানার
সম্বন্ধে খোদা ও রাছুল তাকিদ করিয়াছেন এবং প্রাচীন নবিগণের কেতাবগুলিতে তাকিদ
পাওয়া যায়, যেহেতু সে খোদা ও রাছুলের হুকুমের এনকারকারী, এই হেতু সে কাফের।’ (অসমাপ্ত)
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক
কাদিয়ানীদের “কাফির” ষোষণা!
(২)
অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ
হাবিবুল হক
(ধারাবাহিক)
সূরা- ৯, আয়াত- ৮০
استغفر لهم اولاتستغفرلهم ان تستغفر لهم سبعين مرة فلن يغفر الله لهم ذلك بانهم كفروا بالله ورسوله والله لايهدى القوم الفسقين.
অর্থঃ- “আপনি
তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন আর না করেন, যদি আপনি তাদের জন্য সত্তরবারও
ক্ষমা প্রার্থনা করেন তথাপিও কখনো আল্লাহ্ পাক তাদেরকে ক্ষমা করবেননা। তা এজন্য যে, তারা
আল্লাহ্ পাককে ও তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অস্বীকার করেছে।
বস্তুতঃ আল্লাহ্ পাক নাফরমানদের পথ দেখান না।”
সূরা- ৬৩, আয়াত নং- ৬)
سواء عليهم استغفرت لهم ام لم تستغفر لهم لن يغفر الله لهم ان الله لا يهدى القوم الفسقين.
অর্থঃ- “আপনি
তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন অথবা না করুন, উভয়ই সমান। আল্লাহ্ পাক কখনও
তাদেরকে ক্ষমা করবেননা। আল্লাহ্ পাক, পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন
করেননা।”
সূরা-৯, আয়াত নং- ১১৪
وما كان استغفار ابرهيم لابيه الا عن موعدة وعدها اياه فلما تبين له انه عدو لله تبرا منه ان ابرهيم لاواه حليم.
অর্থঃ- “আর
ইব্রাহীম আলাইহিস্ সালাম কর্তৃক স্বীয় পিতার মাগফিরাত কামনা ছিল কেবল সেই
প্রতিশ্রুতির কারণে,
যা তিনি তাঁর সাথে করে ছিলেন। অতঃপর যখন তাঁর কাছে একথা
প্রকাশ পেল যে, সে আল্লাহ্ পাক-এর শত্রু, তখন তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে দিলেন। নিঃসন্দেহে
ইব্রাহীম আলাইহিস্ সালাম ছিলেন বড় কোমল
হৃদয়, সহনশীল।”
এ সকল আয়াত শরীফ থেকে এটা স্পষ্টতঃ প্রতীয়মান
হয় যে, যাদেরকে ক্ষমা করা হবে না তারা আশা করতে পারে না যে, আল্লাহ্
পাক তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবেন।
মিঃ মুজিবুর রহমান আমাদের অনেকগুলো বই দেখিয়েছেন যাতে সূফী ও অন্যান্য
মুসলমানদের জন্য এই অভিব্যক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু তা তার কোন কাজে আসবে না, যেহেতু
পূর্বে বলা হয়েছে,
কোন বিশ্বাসীর জন্য
এটা ব্যবহার করা যাবে না। ইহাও অস্বীকার করা হয়নি যে, এই
অভিব্যক্তি কোন অমুসলিম ব্যবহার করেনি। তার যুক্তি খন্ডনে এই জবাবই যথেষ্ট।
অন্য বিতর্কিত অভিব্যক্তি হচ্ছে “ছাহাবী” এই
শব্দটি শুধু হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সহচর রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহুমগণের জন্যই ব্যবহার করা হয় এবং কোন অমুসলিমের জন্য নয়। কিন্তু
কাদিয়ানীরা মির্জার সহচরদের জন্য ব্যবহার করেছে।
আল্লামা সাখাওয়াল এই লক্ববের অর্থ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছেন, ছাহাবী
তিনি, যিনি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে অনুসারী হিসেবে
অনেকদিন থেকেছেন এবং তাঁর থেকে জ্ঞান অর্জন করেছেন।
অতএব, ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এরূপ এক সৌভাগ্যবান ব্যক্তিত্ব যিনি
ঈমানদার হিসেবে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহচর্য্য লাভে
সৌভাগ্যবান এবং ইন্তিকালও করেছেন ঈমানের সাথে। (দেখুন মুলাখ্খাছ ইছাবা, ভলিয়ুম ১, পৃষ্ঠা
১৮-১৯)
মিথ্যা নবী দাবীদারের সহচরদের ঐ বিশেষ (ছাহাবী) নামে সম্বোধন করা যাবে না।
এটা যথার্থ লক্ষ্যণীয় যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
وخير القرون قرنى ثم الذين يلونهم ثم الذين يلونهم.
ইতিহাসে তিন যুগের উল্লেখ আছে। যাঁরা ছাহাবী, তাবেঈন এবং তাবে তাবেঈন নামে পরিচিত। এটা থেকেও স্পষ্টতঃ প্রতীয়মান হয় যে, ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এমন ব্যক্তিত্ব যিনি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছোহবত পেয়েছেন তাবেঈন রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখেননি এবং পরে এসেছেন। তাবে তাবেঈন রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ ঐ সকল ব্যক্তিত্ব যাঁরা তাবেঈন রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুসরণ করেছেন। (অসমাপ্ত
**********************************************
কাদিয়ানী রদ! (১)
(পঞ্চম ভাগ)
(মুবাহিছে আযম,
বাহরুল উলূম, ফখরুল ফুক্বাহা, রইছুল
মুহাদ্দিসীন, তাজুল মুফাসসিরীন,
হাফিজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে
কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মিল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন
রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ” কিতাবখানা
(৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ
করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফিরকা থেকে আহ্লে
সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের
প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। এক্ষেত্রে তাঁর কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা
হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্যণীয়)।
(ধারাবাহিক)
মির্জ্জা ছাহেব ইংরাজি ১৯০৬ সালের ২০ শে জুলাই তারিখে পীর মেহের আলী শাহ
ছাহেবের নামে যে পত্র লিখিয়াছিলেন, তাহাতে তিনি লিখিয়াছেনঃ- لعنة الله على من تخلف عنا وابى.
‘যে ব্যক্তি আমরা বিরুদ্ধাচারণ ও এনকার করে, তাহার উপর খোদার লা’নত হউক।’
ইংরাজি ১৮৯৯ সালের ২৪ শে অক্টোবর তারিখের আল-হাকাম পত্রিকায় লিখিত আছেঃ-
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
‘মির্জ্জা ছাহেবের এলহাম স্পষ্ট দলীল, স্পষ্ট দলীলের এনকারকারীরা কাফেল।
অদ্য চতুর্দশ শতাব্দীর প্রারম্ভে আল্লাহ তায়ালার রাছুল তাহার পক্ষ হইতে লোকদিগের
জন্য রহমত ও বরকত স্বরূপ,
হাঁ,
যে ব্যক্তি আল্লাহতায়ালার রাছুলকে না মানিবে, যে
অধোমস্তকে জাহান্নামে পতিত হইবে।’
মির্জ্জা ছাহেবের প্রথম খলিফা মৌলবি নুরদ্দিন ছাহেব ১৯০৮ সালের ৭ই আগষ্ট
তারিখের আল-হাকাম পত্রিকায় লিখিয়াছেনঃ-
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
‘‘যদি কেহ তাঁহার (মির্জ্জা ছাহেব) সম্বন্ধে সন্দেহ করে, তবে সে
কাফের হইবে, কিনা সন্দেহে তার স্থান জাহান্নাম হইবে।’’
তিনি লাহোরের আহমদিয়া বিল্ডিংয়ে যে লেকচার দিয়াছিলেন, তাহাতে
বলিয়াছিলেনঃ-
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
‘‘মির্জ্জা ছাহেব প্রতিশ্রুত মছিহ ছিলেন, তাহার এনকারকারী কাফের। মির্জ্জা
ছাহেব রাছুল ছিলেন,
তাহার এনকারকারী কাফের।’’
মির্জ্জা ছাহেবের পুত্র ও দ্বিতীয় খলিফা মির্জ্জা মাহমুদ ছাহেব
আনওয়ারে-খেলাফতের ৯০ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেনঃ-
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
‘‘আমাদের পক্ষে ফরজ হইয়াছে যে, আমরা আহমদী ব্যতীত অন্যান্য লোকদিগকে মুসলমান ধারণা না করি
এবং তাহাদের পশ্চাতে নামায না পড়ি।’’ (অসমাপ্ত)
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক
কাদিয়ানীদের “কাফির” ষোষণা!
(২)
অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ
হাবিবুল হক
(ধারাবাহিক)
হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হওয়ার জন্য জরুরীভাবে বিবেচনার
বিষয় বা শর্ত যা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি অবশ্যই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমমুল
মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন,
রহমতুল্লীল আলামীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর সাক্ষাত পেয়েছিলেন ও ঈমানের সাথে ইন্তিকাল করেছেন ঈমানের সাথে কিন্তু
ঈমানহীনভাবে নয়।
অন্যন্য লক্ববগুলি হলো,
আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন। এই তিনটি লক্ববে মু’মিনীন ও
মুসলিমীন শব্দ রয়েছে। যার অর্থ মুসলমান (ঈমানদার) স্পষ্টতই শুধুমাত্র মুসলমানদের
জন্য প্রজোয্য। এটা সকলেরই জানা যে, সর্বোচ্চ কর্মকর্তার একটি গুণ
অবশ্যই মুসলমান হতে হবে। যদিও তাকে প্রেসিডেন্ট বলা হোক বা প্রধানমন্ত্রী বলা হোক
বাদশাহ্, খলীফাতুল মুসলিমীন,
আমীরুল মু’মিনীন হোক।
হযরত আবু বকর ছিদ্দীক
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু খলীফাতু
রসূলিল্লাহ্ উপাধি গ্রহণ করেছিলেন। যদিও প্রত্যেক মানুষই খলীফাতুল্লাহ্ (পৃথিবীতে
আল্লাহ্ পাক-এর প্রতিনিধি) কিন্তু হযরত আবু কবর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু খলীফাতু রসূলিল্লাহ্ উপাধি ধারণ
করেছিলেন। যথন দ্বিতীয় খলীফা খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি ভেবেছিলেন, তিনি
নিজেকে খলীফাতু রসূলিল্লাহ্ নামে অভিহিত করবেন। যার অর্থ হবে, তিনি
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উত্তরাধিকারীর উত্তরাধিকারী। কিন্তু
তিনি এটাও অনুধাবন করেছিলেন যে, খলীফা (প্রতিনিধি) শব্দটি প্রত্যেক স্থলাভিষিক্ত প্রশাসকের
উপাধির সাথে যোগ করা হলে উহা অনেক লম্বা হয়ে যাবে। সেজন্য হযরত ওমর রদিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু আমীরুল মু’মিনীন উপাধি ধারন করেন। (ইসলাম-কা-নিজামে হুকমত/২৪৪-২৪৫)
আমীরুল মু’মিমীন বা খলীফাতুল মুসলিমীন বা খলীফাতুল মু’মিনীন এগুলি উপাধিতে পরিণত হলে
এবং একচেটিয়াভাবে মুসলমান শাসকরাই ব্যবহার করেছে। কোন মুসলমানই এটা পছন্দ করেব না
যে, এই উপাধি কোন অমুসলিম বা মুসলিম উম্মাহ্ থেকে খারিজ ব্যক্তি এটা ব্যবহার করুক।
এই অডিনেন্সটি জারী করা হয়েছে এ কারণে বিশেষভাবে এ সকল উপাধি ও লক্বব কাদিয়ানীদের
ব্যবহারের বিরূদ্ধে মুসলমানদের বিরোধীতার জন্য।
মিঃ মুজিবুর রহমান যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেষ্টা করেন যে, অনেক
সূফী, দরবেশের জন্য রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু লক্বব ব্যবহার করা হয়েছে। এবং আরো বলেন, “আমীরুল মু’মিনীন
লক্ববটি ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর জন্য ব্যবহার করা হয়। তাঁকে বলা হয়
আমীরুল মু’মিনীন ফিল হাদীস। এবং হায়দারাবাদের নিজামের জন্যও ব্যবহার করা হয়েছে। একজন
দরবেশের মহিলা শিষ্যদের জন্য উম্মুল মু’মিনীন শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছিল।
এই যুক্তিগুলি সঠিক বিষয় থেকে ভিন্ন। মুসলমানদের বা সূফীদের জন্য আকস্মিকভাবে
এই পরিভাষা ব্যবহারের কোন আপত্তি করা হয়নি। কেননা যাঁদের জন্য এটা ব্যবহার করা
হয়েছে তাঁরা মুসলিম উম্মাহ্র অন্তর্ভূক্ত
এবং তাঁরা অবিশ্বাসীও নয়। দ্বিতীয়তঃ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, রহমতুল্লীল আলামীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে ব্যঙ্গ করার জন্য এটা করা হয়নি। তৃতীয়তঃ এই উদাহরণগুলি ছিল আকস্মিক।
কাদিয়ানীদের এই সকল অভিব্যক্তি ব্যবহারের ভিত্তি মূরতঃ মির্জার নিজেকে
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, রহমতুল্লীল
আলামীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গুপ্ত বিষয়াদির প্রকাশক দাবী এবং
তাঁর সম্বন্ধে অভিযোগে বর্ণিত আবির্ভাব হলো সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন,
রহমতুল্লিল আলামীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর দ্বিতীয় আবির্ভাবের দাবী। ফলস্বরূপ তার অনুসারীরা, তার
স্ত্রী, তার পরিবারের সদস্যরা,
তার উত্তরাধিকারীরা, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন,
রহমতুল্লীল আলামীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর অনুসারী,
তাঁর স্ত্রী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্নাগণ, তাঁর
পরিবারের সদস্যগণ এবং উত্তরাধিকারীগণের মতই সম্মান ও স্বীকৃতি পাওয়ার দাবীদার।
(নাউযুবিল্লাহ্) (অসমাপ্ত)
কাদিয়ানী রদ! (১)
(পঞ্চম ভাগ)
(মুবাহিছে আযম,
বাহরুল উলূম, ফখরুল ফুক্বাহা, রইছুল
মুহাদ্দিসীন, তাজুল মুফাসসিরীন,
হাফিজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে
কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মিল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন
রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ” কিতাবখানা
(৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ
করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফিরকা থেকে আহ্লে
সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের
প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। এক্ষেত্রে তাঁর কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা
হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্যণীয়)।
(ধারাবাহিক)
অদ্য ১৩ শত বৎসরের অধিক হইতে যে কোর-আন, তওহিদ ও রেছালাত নাযাতের একমাত্র
অবলম্বন বলিয়া প্রায় সমস্ত মুছলমান সমাজ কর্ত্তৃক স্বীকৃত হইয়া আসিতেছে, তাহা
মির্জ্জা ছাহেব ও তাহার বাতীল মতগুলি মান্য না করিলে, বাতিল
হইয়া যাইতেছে, ইহা আশ্চর্য্যজনক কথা নহে কি?
মূলকথা, মির্জ্জা ছাহেবের উভয় মতের মধ্যে আছমান ও জমিনের প্রভেদ আছে।
(৩) নবুয়াত শেষ হওয়া সম্বন্ধে
মতভেদ।
‘তবলিগে-রেছালাত ২/২০ পৃষ্ঠাঃ-
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
‘আমি খাতেমোল-মোরছালিনের পরে অন্য
কোন রেছালাত ও নবুয়তের দাবিকারীকে মিথ্যাবাদী ও কাফির জানি, রেছালাতের
অহি হজরত আদম ছফিউল্লাহ্ হইতে আরম্ভ হইয়াছিল এবং হজরত মোহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম -এর উপর শেষ হইয়া গিয়াছে।’
‘আছমানি-ফয়ছলা, ৩
পৃষ্ঠাঃ-
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
‘আর আমি নবুয়াতের দাবিকারী নহি, বরং এইরূপ দাবিকারীকে ইছলামের
গন্ডি হইতে খারিজ ধারণা করি।’
‘হামামাতোল-বোশরা, ৯৬
পৃষ্ঠাঃ-
وما كان لى ان ادعى النبوة واخرج من الاسلام والحق بقوم كافرين.
‘‘আমার পক্ষে কোন্ সময় জায়েয হইবে
যে, নবুয়াতের দাবি করিয়া ইছলাম হইতে খারিজ হইয়া কাফিরদিগের দলভুক্ত হই?’’ (অসমাপ্ত)
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক
কাদিয়ানীদের “কাফির” ঘোষণা!
(২)
অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ
হাবিবুল হক
(ধারাবাহিক)
মির্জা সাহেব বেশী বিশদ ও স্পষ্টরূপে নির্দিষ্ট করেছে। সে বলেছে, আমার
উপস্থিতি তার ব্যক্তিত্বের (ماروجودى وجوره) প্রকাশ। যে আমার উম্মায় প্রবেশ করবে সে পবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের অন্তর্ভূক্ত হবে।
(খুবা-ই-ইলহামিয়া/২৫৮,২৫৯)
সত্যতা অস্বীকার করা অর্ডিনেন্সটি এ প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ ন্যায্য।
পরবর্তী প্রশ্ন হলো,
আযানের নিষেধাজ্ঞা আরোপ। অধ্যাদেশটি অমুসলিমদের উপর
নিষেধাজ্ঞা অর্থাৎ আযানের ফরমূলায় কাদিয়ানীদের মানুষকে নামাযে ডাকা। আযান শব্দের
অর্থ ডাকা। মুয়াজ্জিন ঐ ব্যক্তি, যে ডাকে। এই আভিধানিক অর্থগুলি সূরা ৭, আয়াত ৪৪, সূরা ১২, আয়াত ৭০
এবং সূরা ২২, আয়াত ২৭ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত।
পবিত্র কুরআন শরীফে বলা হয়েছে,
قالوا نعم فاذن مؤذن بينهم ان ...
অর্থঃ- “একজন
ঘোষণা করবে, আল্লাহ্ পাক-এর অভিসম্পাত জালিমদের উপর।” (সূরা ৭, আয়াত
শরীফ ৪৪)
সূরা ১২, আয়াত ৭০ঃ
ثم اذن مؤذن ايتها العير انكم لسرقون.
অর্থঃ- “একজন
ঘোষক ডেকে বললো, হে উষ্ট্রারাহীরা,
তোমরা অবশ্যই চোর।”
সূরা ২২, আয়াত ২৭ঃ
واذن فى الناس بالجح ياتوك رجالا وعلى كل ضامر ياتين من كل فج عميق.
অর্থঃ- “এবং
মানুষের মধ্যে হজ্বের ঘোষণা করুন। তারা আপনার নিকট পায়ে হেঁটে, কৃশকায়
উটের পিঠে সওয়ার হয়ে আসবে।”
এ তিনটি আয়াত শরীফে আযান (اذن) শব্দটি ডাকার
জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। তথ্য সরবরাহের জন্য ডাকা হয়েছে। মুয়াজ্জিনের শব্দটি
আহবানকারীর অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। এইগুলোই আযান ও মুয়াজ্জিন অভিধানিক অর্থ।
সূরা ৬২ এর ৯নং আয়াত শরীফে (نودى للصلوة) (যখন নামাযে ডাকা হয়) নামাযের জন্য আহবান করাকে আযান হিসেবে
অভিহিত করা হয়েছে। এই কারণে এই শব্দগুলোর অনুবাদ এ রকম করা হয়েছে, “যখন আযান
দেয়া হয়।”
আয়াত শরীফ এবং অনুবাদ
নিম্নরূপ- সূরা ৬২,
আয়াত ৯ঃ
يايها الذين امنوا اذانودى للصلوة من يوم الجمعة فاسعوا الى ذكر الله وذروا البيع ذالكم خيرلكم ان كنتم تعلمون.
অর্থঃ- “হে
বিশ্বাসীগণ! জুমুয়ার দিনে যখন আযান দেয়া হয় তখন তোমরা আল্লাহ্ পাক-এর স্মরণের পানে
সাড়া দাও এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। যদি তোমরা বুঝ, এটাই তোমাদের জন্য উত্তম।”
হিজরতের পূর্বে আযানের ধারণা প্রকাশ পায়নি। হিজরতের পর জামায়াতে শরীক হওয়ার
জন্য ব্যক্তিগতভাবে লোকদের আহবান করা হত। (الصلوة جامعة) অর্থ বুঝানো হত জামায়াত শুরু হতে যাচ্ছে। হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযে আহবানের নির্দেশের গুরুত্ব প্রকাশ করেন। তিন ছাহাবী
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, হযরত আবূ
বকর ছিদ্দিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু এবং হযরত আব্দুল্লাহ্ বিন যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু স্বপ্নে আযানের
পদ্ধতি অবগত হন। তিনজনের স্বপ্নের মধ্যে হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং
হযরত আব্দুল্লাহ্ বিন জায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা-এর স্বপ্নই অধিক
উল্লিখিত। তাঁদের স্বপ্নের কথা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে
আব্দুল্লাহ্ বিন যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ঐ রাতেই জানান। কিন্তু হযরত ওমর
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ভোরে জানান। ঐ দিন থেকেই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে আযান দিয়ে মানুষদের নামাযের
জন্য আহবানের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (الصلوة خير من النوم) (ঘুম অপেক্ষা নামায উত্তম) যোগ করেন এবং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনুমোদন করেন। (আল জামিউল আহকামুল কুরআন, কুরতুবী
ভলিউম ৬, পৃষ্ঠা ২২৫) (অসমাপ্ত)
আবা-৮৬,৮৭,৮৮,৮৯,৯০
0 Comments:
Post a Comment