কাদিয়ানী রদ! (১) (পঞ্চম
ভাগ) (মুবাহিছে
আযম, বাহরুল উলূম,
ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল
মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস,
মুফতীয়ে আজম, পীরে কামিল, মুর্শিদে
মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ) কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী
রদ” কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায়
ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল
ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়।
আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। এক্ষেত্রে তাঁর কিতাব
থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো,
তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা
পার্থক্য লক্ষ্যণীয়)। (ধারাবাহিক) মির্জ্জা ছাহেবের এই দাবির মূলে একেবারে সত্যের
লেশ নাই, ইহা ধোকা ব্যতীত আর কিছুই নহে, এই এক দাবিই মির্জ্জা ছাহেবের
অসত্য হওয়ার স্পষ্ট প্রমাণ। যদি মির্জ্জায়িদের খোদার ভয় থাকে, তবে
তাহারা ইহা চিন্তা করিলেই তাহার মত ত্যাগ করিতে বাধ্য হইবেন। এক্ষণে বাইবেলে উল্লিখিত ঘটনাটী নিরপেক্ষ
পাঠকগণের সম্মুখে পেশ করিতেছি, ইহাতে মির্জ্জা ছাহেবের সত্যাসত্য আরও পরিস্কার রূপে
পরিস্ফুট হইয়া উঠিবে। প্রথম রাজাবলী, ২২
অধ্যায়ে লিখিত আছে,
চারিশত গণককে ইছরাইলের রাজা নিজের জয় পরাজয়ের কথা জিজ্ঞাসা
করেন, ইহাতে তাহারা তাহার জয়ী হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী প্রচার করেন, কেবল
তখনকার একজন নবী তাহার পরাজয়ের কথা ঘোষণা করেন, অবশেষে রাজা যুদ্ধে নিহত হয়। মির্জ্জা
ছাহেব গণকদিগকে প্রকৃত নবি বলিয়া সত্যের অপলাপ করিয়াছেন। তিনি এজালায় আওহামের ৩৩৯/৩৪০ পৃষ্ঠায় অবিকল ঐরূপ মিথ্যা কথা
লিখিয়াছেন। (৯) পাদরি আথামও আছমানি নেকাহ সংক্রান্ত মির্জ্জা ছাহেবের ভবিষ্যদ্বাণী
পূর্ণ না হওয়ায় তিনি অতিশয় লাঞ্ছিত ও লজ্জিত হইয়া তোহফায়-গলোড়িয়া পুস্তকের ৬৩
পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন-
یہ پیشگونیان ایک دو نھین بلکہ اسی قسم کی سو سے زیادہ پیشگوئیان ھین جو کتاب تریاق القلوب مین درج ھین- پھر ان سب کا کچھہ بھی ذکر نہ کرنا اور جاربار احمد بیگ گے داماد یا اتھم کا ذکر ناکس قدر مخلوق کو دھوکا دینا ھے-
“এই ভবিষ্যদ্বাণী এক দুইটী নহে, বরং এই প্রকার শতাধিক
ভবিষ্যদ্বাণী ‘তিরইয়াকোল-কুলুব’
কেতাবে লিখিত আছে, এই সমস্ত ভবিষ্যদ্বাণীর কোন
উল্লেখ না করিয়া এবং বারম্বার আহমদ বেগের জামাতার কিম্বা আথামের উল্লেখ করিয়া
কতদূর লোককে ধোকা দেওয়া হইতেছে।” পাঠক, মির্জ্জা ছাহেব খ্রীষ্টান ও মুছলমানগণের পক্ষে উপরোক্ত দুইটী ভবিষ্যদ্বাণীকে
উচ্চ শ্রেণীর নিদর্শন এবং নিজের সত্য মিথ্যা হওয়ার মাপকাঠি স্থির করিয়াছিলেন, এই হেতু
প্রতিপক্ষগণ বারম্বার উহা উল্লেখ করিয়া থাকেন। মির্জ্জা
ছাহেব এত বৎসর অপেক্ষা করিয়া এরূপ সুর নরম করিয়া দুর্ব্বলতা দেখাইতেছেন, ইহা তাহার
পক্ষে স্পষ্ট মিথ্যাবাদিতার প্রমাণ নহে কি? তৎপরে তিনি উহার ৬৩/৬৪ পৃষ্ঠায়
লিখিতেছেন
اس کی مثال ایسی ھے کہ مثلا کوئی شریر النفس ان تین ھزار معجزات کا کبھی ذکر نہ کرے جو ھمارے نبی صلی اللہ علیہ وسلم سے ظھور مین ائے اور حدیبیہ کی پیشگوئی کو بار ذکر کرے کہ وقت اندازہ کردہ پر پوری نھوئی-
“ইহার দৃষ্টান্ত এই যে,
যেমন কোন দুষ্ট প্রকৃতির লোক আমাদের নবি (ছাঃ) কর্ত্তৃক যে
তিন সহস্র মো’জেজা (অলৌকিক কার্য্য) প্রকাশিত হইয়াছিল, তৎসমুদয় কখনও উল্লেখ না করে এবং
যে হোদায়বিয়ার ভবিষ্যদ্বাণী নির্দ্ধারিত সময়ে পূর্ণ হয় নাই তাহা বারম্বার উল্লেখ
করে।” পাঠক, মির্জ্জা
ছাহেব কতক ভবিষ্যদ্বাণী প্রকাশ করিয়াছেন, কিন্তু তৎসমস্ত পূর্ণ হয় নাই, কাজেই
তিনি নিজের দোষ ঢাকিবার উদ্দেশ্যে হজরত নবি (ছাঃ) এর উপর অযথা আক্রমণ ও মিথ্যা
অপবাদ প্রয়োগ করিয়াছেন,
ইহাতে মির্জ্জা ছাহেবের চতুরতা, ধোকাবাজি
ও ইমানের নমুনা প্রকাশ হইতেছে। আমরা বজ্র-নিনাদে ঘোষণা করিতেছি যে, মির্জ্জা
ছাহেবের এই অপবাদ যে,
হজরত নবি (ছাঃ) এর ভবিষ্যদ্বাণী নির্দ্ধারিত সময়ে পূর্ণ হয়
নাই, সর্ব্বৈব মিথ্যা। এস্থলে
হোদায়বিয়ার ঘটনাটী উল্লেখ করিতেছি;- হজরত নবি (ছাঃ) ৬ই হিজরীর জেলকা’দা মাসে ‘ওমরা’ করার
ইচ্ছা করিয়াছিলেন,
সেই সময় মক্কা শরিফ কাফেরদিগের অধিকারে ছিল, কিন্তু
মক্কার কাফেরেরা মজহাবি ধারণায় কোন হজ্জ ও ওমরাকারী ব্যক্তিকে বাধা প্রদান করিত না
এবং শওয়াল, জেলকা’দা, জেলহাজ্জা ও রজব মাসে যুদ্ধ করা নিষিদ্ধ মনে করিত। হজরত
(ছাঃ) চৌদ্দ পনর শত ছাহাবার সহিত ‘ওমরা’ করার
জন্য রওয়ানা হইয়া গেলেন,
হোদায়বিনা নামক স্থানে পৌঁছিয়া কিম্বা রওয়ানা হওয়ার
পূর্ব্বে হজরত (ছাঃ) স্বপ¦যোগে দেখিলেন যে,
তিনি ছাহাবাগণ সহ নির্ভীক ও নিঃশঙ্কোচ ভাবে মক্কা শরিফে
দাখিল হইয়া হজ্জের আরকান আদায় করিলেন। ইহা হজরতের স্বপ¦, ইহা কোন এলহামি ভবিষ্যদ্বাণী নহে, ইহাতে
কোন সময় নির্দ্ধারিত ছিল না। হজরত এই স্বপ¦ ছাহাবাগণের
নিকট উল্লেখ করিলেন। হজরত এই বৎসর ওমরার ইচ্ছা করিয়াছিলেন, নবিগণের
স্বপ¦ সত্য হইয়া থাকে, এই হেতু
ছাহাবাগণ বিশ্বাস করিয়াছিলেন যে, তাঁহারা এই বৎসরেই হজ্জ করিবেন, কিন্তু এ
বিষয় লক্ষ্য করেন নাই যে,
হজরত রাছুলুল্লাহ্ (ছাঃ) বৎসর নির্দ্দিষ্ট করেন নাই।
কাফরেরা মক্কা শরিফে প্রবেশ করিতে বাধা প্রদান করিল, কিন্তু কতকগুলি শর্ত্তের সহিত এই
বিষয়ের উপর সন্ধি স্থাপিত হইল যে, এই বৎসর মক্কা শরিফে প্রবেশ না করিয়া আগামী বৎসরে ‘ওমরা’ করিবেন।
যখন হুজুর (ছাঃ) হোদায়বিয়া হইতে মদিনা শরিফের দিকে প্রত্যাবর্ত্তন করার ইচ্ছা
করিলেন, তখন হজরত ওমার (রাঃ) স্বপে¦র কথা উল্লেখ করিয়া বলিলেন যে, আপনি তা বলিয়াছিলেন যে, আমরা কা’বাগৃহে
প্রবেশ করিব এবং তওয়াফ করিব। তৎশ্রবণে হজরত (ছাঃ) বলিলেন, হাঁ, আমি
বলিয়াছিলাম, কিন্তু আমি কি বলিয়াছিলাম যে, আমরা এই বৎসরেই দাখিল হইব? হজরত ওমার (রাঃ) বলিলেন, না। হজরত
নবি (ছাঃ) বলিলেন,
তোমরা কা’বাগৃহে প্রবেশ করিবে এবং তওয়াফ করিবে, অর্থাৎ
আমার স্বপে¦র কথা এক
সময় নিশ্চয় প্রকাশিত হইবে। ইহা ছহিহ বোখারির ১ম খন্ডের ৩৮০ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে। খোদাতায়ালা আগামী বৎসরে এই স্বপে¦র কথা সত্য করিয়া দেখাইলেন, এক বৎসর
পরে মক্কা শরিফ হজরতের অধিকারভূক্ত হইয়া গেল এবং সম্পূর্ণরূপে স্বপে¦র সত্যতা প্রকাশিত হইল। এস্থলে
ইহা প্রকাশ করা আবশ্যক যে, ৬ই হিজরীতে হজরত (ছাঃ) এর ওমরা
করিতে যাওয়া কি উক্ত স্বপ¦ দেখার
জন্য হইয়াছিল, কিম্বা ওমরা করার আগ্রহ ও মক্কার কাফেরদের অবস্থা জ্ঞাত হওয়ার জন্য হইয়াছিল? বিশেষরূপ
তত্ত্বানুসন্ধান করিয়া প্রমাণিত হইয়াছে যে, ওমরা করার আগ্রহই এই
বিদেশ-যাত্রার মূল কারণ,
কেননা কোন রেওয়াএতে স্বপ¦ দেখা বিদেশ-যাত্রার মূল কারণ বলিয়া প্রমাণিত হয় নাই। ছহিহ রেওয়াএতে আছে যে, হজরত (ছাঃ) হোদায়বিয়াতে উপস্থিত
হইয়া এই স্বপ¦ দেখিয়াছিলেন, এই
রেওয়াএত প্রত্যেক প্রকারে ছহিহ, অধিকাংশ তফছির ও হাদিছ তত্ত্ববিদ্গণ এই রেওয়াএতটি উদ্ধৃত
করিয়াছেন। তফছিরে-দোররোল-মনছুর, ৬/৮০
পৃষ্ঠা;-
عن مجاهد قال ارى رسول الله صلى الله عليه وسلم وهو بالحديبية انه يدخل مكة هو والصحابه امنين.
মোজহেদ বলিয়াছেন, রাচুলুল্লাহ
(ছাঃ) হোদায়বিয়াতে ছিলেন,
এমতাবস্থায় তিনি স্বপে¦ দেখিয়াছিলেন
যে, নিশ্চয় তিনি ও তাঁহার ছাহাবাগণ নির্ভীক চিত্তে মক্কায় দাখিল হইতেছেন। এইরূপ
তফছিরে তাবারি, ফৎহোল-বারি, আয়নি ও এরশাদোছছাবি দেখিয়াছিলেন। যে
রেওয়াএতে আছে যে,
হজরত (ছাঃ) মদিনা শরীফে এই স্বপ¦ দেখিয়াছিলেন, উহা জইফ, আরও উক্ত
জইফ রেওয়াএতে ইহা উল্লিখিত হয় নাই যে, হজরত উক্ত স্বপ¦ দেখার জন্য এই বিদেশ যাত্রা করিয়াছিলেন। (অসমাপ্ত)
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের “কাফির” ষোষণা!
(২) (অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক)
সূরা/১০৯ আয়াত/৪, ৫ ও ৬
দ্বারা বিষয়টি চুড়ান্ত মীমাংসা করা হয়েছে এবং যার যার ধর্ম তার জন্য ছেড়ে দেয়া
হয়েছে। নিম্নরূপ-
ولاانا عبد ما عبدتم.
অর্থঃ- “এবং আমি
এবাদত করি না যার এবাদত তোমরা কর।” (সূরা/১০৯, আয়াত/৪)
ولا انتم عبدون ما اعبد.
অর্থঃ- “তোমরা
ইবাদত কর না, আমি যারা ইবাদত করি।”
(সূরা/১০৯, আয়াত/৫)
لكم دينكم ولى دين.
অর্থঃ- “তোমাদের
ধর্ম তোমাদের জন্য,
আমার ধর্ম আমার জন্য।” (সূরা/১০৯, আয়াত/৬) ১০
নং সূরার ১০০ নং আয়াত শরীফের উপর মন্তব্য করে সৈয়দ কুতেব লিখেছেন, “ইহা বলা
হয়েছে, যদি আল্লাহ্ পাক ইচ্ছা করতেন সকল মানুষকে বাধ্য করতে তবে তিনি তা করতেন এবং
কাউকে নিজস্ব বিচার-বিবেচনা অনুসারে বিপরীত কাজ করার ক্ষমতা দিতেন না। কিন্তু দৈব
জ্ঞান যার কিছু আমরা অবগততা মানুষকে সৎ পথে পরিচালিত করে আবার অসৎ পথেও পরিচালিত
করে। বিশ্বাস এরূপ একটি বিষয় যা নির্ভর করে বিচার-বিবেচনার উপর। এমনকি হুজুর পাক
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও কাউকে ঈমান আনতে বাধ্য করতে পারেননি। কেননা (قلب) কাল্বের ব্যাপারে জোর করার কোন সুযোগ নেই। (ঋও- তওখঅখ-ওখ ছটজঅঘ.
চঅজঞ-ওও, চঅএঊ ১৮৮) ইসমাঈল হক্বী লিখিত তাফসীরে রুহুল বয়ান (ঠঙখটগঊ ৪. চঅএঊ ৮৪) এর
বিবরণীতে একই অর্থ উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, “ইহা
আল্লাহ্ পাক-এর বিজ্ঞ ও বিচক্ষণ ভাবনায় ও ছিল না যে সকল মানুষই ঈমানদার হবে।
ঐশ্বরিক নীতি অনুযায়ী ঈমান গ্রহণ করা বা না করা, মানুষের পছন্দের উপর নির্ভরশীল।
এখানে আরও বলা হয়েছে যে,
যখন আল্লাহ্ পাক-এর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
ইচ্ছা করলেন, সকলেই ঈমান আনুক তখন আল্লাহ্ পাক এই আয়াত শরীফ নাযিল করেন এবং তাঁর রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মতকে তাঁর মতে মিলিয়ে দেন এবং বলেন, হেদায়ের
মালিক আল্লাহ্ পাক। এবং বলেন, “আপনার সৃষ্টিকর্তা ইহা চায় না, আপনার
সৃস্টিকর্তা যা চায় না আপনি কি তা করতে বাধ্য করতে পারেন যে, (সকল লোকই
ঈমান আনবে)।” বিবরণটিতে আল কাশফী-এর
উল্লেখিত বর্ণনার উল্লেখ করে বলা হয়েছে, “আয়াত শরীফ জিহাদের আয়াত শরীফ
দ্বারা বাতিল করা হয়েছে।”
তারপর বলা হয়েছে, কিন্তৃ প্রকৃত অর্থে বাতিল নয়।
কারণ ঈমান গ্রহণে জোর করা যাবে না। কেননা ইহা কাল্বের সাথে সম্পৃক্ত বিষয়। আরও
অন্যান্য কিতাবও দেখা যেতে পারে। যেমন মাদারিক-উল-তানজিল, ভলিয়্যূম-২৩
পৃষ্ঠা ২৮, আল মানার চঅজঞ ওও. চঅএঊ- ৪৮৩ ঞঙ ৪৮৪, মা’রেফুল কুরআন (ঠঙঊ ৪, চঅএঊ
১৫৮), তাফসীরুল মারামি (চঅজঞ ১১ চঅএঊ ৫৭৭)
বাক্য সমূহ
وما جعلنك عليهم حفيظا
وما انت عليهم بوكيل.
অর্থঃ- “আপনি
তাদের রক্ষা করতে পারবেন না এবং আপনি তাদের জন্য দায়ীও হবেন না।” (সূরা ৬, আয়াত
১০৮) একই ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, (দেখুন
ঞঅঋঝঊঊজটখ গঅজঅএঐও. চঅজঞ ৭. চঅএঊ ২১১. জটঐটখ ইঙণঅঘ ঠঙখ ৩. চঅজঞ ৪. চঅএঊ ৪৮.
অখ-গঅঘঅজ ঠঙখ ৭. চঅএঊঝ ৫০১-৫০২. ঋ১- তওখঅখ-ওখ-ছটজঅঘ চঅজঞ ৭. চঅএঊঝ ৩০৫-৩০৬. গঅ'অজওঋটখ
ছটজঅঘ ঠঙখ, ৩. চঅএঊ ৪১৩,
ঞঅঋঝঊঊজটখ কঅইওজ ইণ জঅতও চঅজঞ ১২. চঅএঊ ১০৩) আল মানারয়ে উকিল বা হেফাজতকারীর দায়িত্ব
বর্ণনা করা হয়েছে। ইহাতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ্ পাক তাঁর রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঠিয়েছেন মানুষদের ধর্ম সম্বন্ধে জানাতে এবং
শিখাতে বা তাদের অবগত করাতে সুসংবাদ বা যদি তারা বিশ্বাস না করে পরিণতীতে
দুঃসংবাদ। ইহাই আল্লাহ্ পাক-এর ধর্ম প্রতিষ্ঠার নিয়ম। এই সকল কাজই রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দায়িত্ব। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার তরফ থেকে তিনি
বান্দাদের ঈমানের হিফাজতকারী নন। ঈমান গ্রহণে তাঁকে জোর করারও কোন ক্ষমতা দেয়া
হয়নি। (ফাইযীলাল ইল কুরআন) সৈয়দ
কুতেব শহীদের ভাষ্য অনুযায়ী আয়াত শরীফ উম্মাহ্ গঠনের কথাই বুঝায়। সকল তাফসীরবিদগণ ইকরাহ বা জবরদস্তির নীতি
অনুসরণের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছেন। (অসমাপ্ত)
**********************************************************************
খতমে নুবুওওয়াত প্রচার
কেন্দ্র
খতমে নুবুওওয়াত
অস্বীকারকারীরা কাফির
ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে
খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়
(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি)
তাদের তওবার জন্য
নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড
কাদিয়ানী রদ! (১)
(পঞ্চম ভাগ)
(মুবাহিছে আযম,
বাহরুল উলূম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল
মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন,
হাফেজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে
কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ)
কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ”
কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত
পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ
সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার
হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। এক্ষেত্রে
তাঁর কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে
প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্যণীয়)।
(ধারাবাহিক)
উপরোক্ত বিবরণে স্পষ্ট বুঝা যাইতেছে যে, মির্জ্জা ছাহেবের এই দাবি যে, হোদায়বিয়ার
ভবিষ্যদ্বাণী নির্দ্দিষ্ট সময়ে পূর্ণ হয় নাই, একেবারে ভ্রান্তিমূলক ও মিথ্যা, মির্জ্জা
ছাহেবের কথা অনুসারে দুষ্টপ্রকৃতির লোক ব্যতীত হজরতের উপর এই অপবাদ করিতে পারে না।
কোর-আন শরিফের ছুরা ফৎহোর
৪ রুকুতে আছে;-
لقد صدق رسوله الرؤيا بالحق.
“নিশ্চয়ই আল্লাহ্ নিজের রাছুলের
স্বপ¦কে সত্য
করিয়া দেখাইয়াছেন।”
কোর-আনের এই আয়াতের
বিরুদ্ধে মির্জ্জা ছাহেবের হজরতের স্বপ¦কে ভ্রান্তিমূলক স্থির করা দুঃসাহস নহে কি? ইহাই কি তাঁহার ইমানদারির লক্ষণ?
(১০) মির্জ্জা ছাহেব এই
ভবিষ্যদ্বাণী প্রচার করিয়াছিলেন যে, আমার উপর অহি হইয়াছে যে, মির্জ্জা
আহমদ বেগের কন্যা মোহাম্মদী বেগমের সহিত আমার নিকাহ হইবে, খোদা
আছমানে তাহার সহিত আমার নিকাহ পড়াইয়া দিয়াছেন, কিন্তু যখন তাঁহার এই
ভবিষ্যদ্বাণী সফল হইল না এবং চারিদিক হইতে দুর্নাম রটিতে লাগিল, তখন তিনি
নিরাশ হইয়া ব্যথিত হৃদয়ে তাঁহার শেষ রচিত ‘তাতেম্মায়-হকিকাতোল-অহি’ কেতাবের
১৩১/১৩৩ পৃষ্ঠায় লিখিলেন-
الھام مین یہ بھی تھا کہ اس عورت کا نکح اسمان پر میرے ساتہ پزھا گیا ھے یہ درست ھے مگر اس نکاح کے ظھور کے لئے ایکشرط بھی تھی پس جب ان لوگون نے اس شرط کو پورا گردیا تو نکاح فسخ ھوگیا یا تاخیر مین پرگیا-
“এলহামে ইহা ছিল যে, উক্ত
স্ত্রীলোকের সহিত আমার নেকাহ আছমানে পড়ান হইয়াছিল, ইহা সত্য কথা, কিন্তু
এই নিকাহ প্রকাশ হওয়ার জন্য একটী শর্ত্ত ছিল, যখন লোকে উক্ত শর্ত্ত পুর্ণ
করিলেন, তখন হয়ত নেকাহ ফছ্খ হইয়া গিয়াছে, কিন্তু বিলম্ব হইয়া গিয়াছে।”
পাঠক, ইহার
বিস্তারিত বিবরণ অন্য খন্ডে পাইবেন।
তৎপরে তিনি লিখিয়াছেনঃ-
کیا یونس علیہ السلام کی پیشگوئی نکاح پرھنے سے کچہ کم نھی جس مین بتایا گیا تھا کہ اسمان پریہ فیصلہ ھوچکا ھے کہ ৪০ دن تک اس قوم پر عذاب نازل ھوگا مگر عذاب نازل نہ ھوا حالانکہ اس من کسی شرط کی تصریح نہ تھی پس خدا جس نے ایسا ناطق فیصلہ منسوخ کردیا کیا اسپر مشکل تھا کہ اس طرح نکاح کو بھی منسوخ یا کسی وقت پر ٹال دے-
(অসমাপ্ত)
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের “কাফির” ষোষণা!
(২)
-অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক
(ধারাবাহিক)
সকল তাফসীর বিশারদগণ তাফসীরে-ধর্মে ইকরাহ বা জবরদস্তির অনুসরণের উল্লেখ
করেছেন। (দেখুন আল মাঘনী পার্ট/৮, পৃষ্ঠা/২৪৩, তাফসীর-ই-বাইজাবী ভলিউম/১, পৃষ্ঠা/
৩৬২, মাদারিক-উত-তানজীল পার্ট/১, পৃষ্ঠা ১৭০, ফী-যিলাল-ইল-কুরআন পার্ট/৩, পৃষ্ঠা
৩৬, আল মারাখী পার্ট/১৩,
পৃষ্ঠা/২৬৭, তাফসীর তাফহীমুল কুরআন ভলিউম/১, পৃষ্ঠা/১৯৬, রুহুল
মায়ানী ভলিউম/৩, পৃষ্ঠা/১২-১৩)।
আল মাঘনী অনুযায়ী একটি মত হলো, শুধু ভয় প্রদর্শনই ইকরায় পরিণত
হতে পারে। আল-মানার অনুযায়ী বিশ্বাসই আসল ধর্ম। (ভলিউম/৩, পৃষ্ঠা/১৬)
মনের সন্তুষ্টির মাধ্যমেই ইহা পাওয়া যায়। ইহা সম্ভব নয় যে, জবরদস্তি
করে মনের সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। একমাত্র যুক্তি এবং কারণ (হেতু) দ্বারা ইহা
অর্জন করা যায়।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় (দেখুন আল মানার ভলিউম/৯, পৃষ্ঠা ৬৫) হলো একটি বিশ্বাস
ত্যাগ করার জন্য কাউকে জবরদস্তি করা অনুমতিযোগ্য নয়। যে অধিকারের উপর জরবদস্তি করা
যায় না তাই মৌলিক অধিকার। (ফী-যিলাল-ইল-কুরআন ভলিউম/৩, পৃষ্ঠা/২৬-২৮)
সূরা ১৮ এর ২৯নং আয়াত শরীফের ব্যাখ্যার জন্য নিম্নে উল্লিখিত তাফসীর গ্রন্থের
উপর আস্থা রাখা হয়েছিল। (আল মারাখী পার্ট/১৫, পৃষ্ঠা ১৪৩, ফী-যিলাল-ইল-কুরআন
পার্ট/১৫, পৃষ্ঠা/৯৫, তাফসীরে মাযহারী ভলিউম/৬, পৃষ্ঠা ২৩)।
এই আয়াত শরীফে ইহা পরিস্কার যে, ঈমান গ্রহণ করা বা না করা
প্রত্যেক মানুষের এখতিয়ার। এই সকল আয়াত শরীফসমূহের নিরিখে, যুক্তিসমূহের
সার এবং বস্তু সংক্ষেপ হল ধর্মের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই এবং আল্লাহ্ পাক-এর পরিকল্পনায়ও
নেই যে, সকল মানুষই ঈমান আনবে। আল্লাহ্ পাক পবিত্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে পাঠিয়েছিলেন তাঁর (আল্লাহ্ পাক)
কথা মানুষকে অবহিত করতে। ইহা কখনও উদ্দেশ্য ছিল না যে, তিনি
(রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষকে ঈমান গ্রহণে জবরদস্তি করবেন।
কুরআন এবং হাদীস শরীফে,
কোথাও এমন কিছু নেই যার দ্বারা অবিশ্বাসীদের মধ্যে আল্লাহ্
পাক-এর একত্ব বিশ্বাসে,
তাঁর ওহীসমূহের সত্যতা অনুধাবনে, রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রয়োজনীয়তা বিশ্বাসে, কুরআন
শরীফ-এর বার্তা বা কুরআন শরীফকে যথার্থ আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করার প্রতি বাধ্য করা
যাবে। একইভাবে যে ব্যক্তি তার ধর্মে বহাল থাকার জন্য আগ্রহী তাকে তা ত্যাগ করার
জন্য শক্তি প্রয়োগ করাও আইনসিদ্ধ নয়।
তিনি (মিঃ মুজিবুর রহমান) উল্লেখ করেন যে, অর্ডিনেন্সটির প্রয়োগ ইহাই হয় যে, কাদিয়ানীদের
জোর করে ইসলাম থেকে খারিজ করা। যদিও তারা এতে (ইসলামে) থাকতে চায়।
মিঃ মুজিবুর রহমানের উত্থাপিত ১ম ৪টি সুওয়ালের জবাব হ্যাঁ-সূচক। একজন কাফিরের
আল্লাহ্ পাক-এর একত্ব,
পবিত্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দাবীর
সত্যতা, কুরআন একটি ভাল জীবন ব্যবস্থার পথ-প্রদর্শক স্বীকার করা এবং এর আদেশ-নিষেধ
মেনে চলার সাংবিধানিক,
আইনগত বা শরীয়তগত কোন বাধা নেই। যেহেতু ৪র্থ সুওয়ালের জবাব হ্যাঁ-সূচক। ৫ম সুওয়াল আর
থাকছে না। ৬ষ্ঠ সুওয়ালের পরিষ্কার জবাব হল, কোন অমুসলিম কুরআন শরীফ ও হাদীস
শরীফ-এর আলোকে অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মতই অধিকার ভোগ করবে। যা বিবেচনা
করা হবে প্রয়োজন অনুযায়ী।
ইকরাহ্ (বাধ্য করা) সম্বন্ধে মিঃ মুজিবুর রহমানের উত্থাপিত ৪টি মূলনীতিও
সমালোচনার অতীত কিন্তু মিঃ মুজিবুর রহমানের উত্থাপিত ৩য় নীতির প্রয়োগ যেভাবে করা
হয়েছে তা ঠিক হয়নি। ৩য় নীতিটি হল “কাউকেই জোর করে তার ধর্ম ত্যাগ
করানো যাবে না।” তার লিখিত যুক্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, “যেমন আমাদের (কাদিয়ানীদের) বের
করে দেয়া হয়েছে।”
প্রত্যাখ্যাত অধ্যাদেশে তাদেরকে (কাদিয়ানী) তাদের ধর্ম থেকে
বহিস্কার করা হয়েছে বলে কোন উল্লেখ নেই। (অসমাপ্ত)
*****************************
খতমে নুবুওওয়াত প্রচার
কেন্দ্র
খতমে নুবুওওয়াত
অস্বীকারকারীরা কাফির
ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে
খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়
(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি)
তাদের তওবার জন্য
নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড
কাদিয়ানী রদ! (১)
(পঞ্চম ভাগ)
(মুবাহিছে আযম,
বাহরুল উলূম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল
মোহাদ্দিসীন, তাজুল মোফাসসিরীন,
হাফিজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে
কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মিল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ)
কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ”
কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত
পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ
সমস্ত বাতিল ফিরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার
হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। এক্ষেত্রে
তাঁর কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে
প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্যণীয়)।
(ধারাবাহিক)
‘‘ইউনোছ (আঃ)এর ভবিষ্যদ্বাণী নেকাহ
পড়ান অপেক্ষা কি কম ছিল?
উক্ত ভবিষ্যদ্বাণীতে কথিত হইয়াছিল যে, আছমানে
ইহা মীমাংসিত হইয়াছে যে,
৪০ দিবসের মধ্যে এইদলের উপর আজাব নাজেল হইবে, কিন্তু
আজাব নাজিল হয় নাই,
অথচ উহাতে শর্ত্তের কোন উল্লেখ ছিল না। ইহা সত্ত্বেও খোদ
এইরূপ স্পষ্ট মীমাংসাকে মনছুখ করিয়া দিলেন। সেই খোদার পক্ষে উক্ত প্রকারে নেকাহ
মনছুখ করা কিম্বা কোন সময় অবধি বিলম্ব করা কি অসাধ্য?’’
আরও তিনি জমিমায়-আঞ্জামে- আথামের ৫৪ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেনঃ-
میں نے حدیثوں اور اسمانی کتابوں کو اگے رکھدیا
‘‘অর্থাৎ আমি ইউনোছ (আঃ)এর ঘটনা
হাদিছ ও আছমানি কেতাব সকল হইতে উদ্ধৃত করিয়া পেশ করিয়াছি।’’
এস্থলে মির্জ্জা ছাহেব মিথ্যা কথা বলিয়াছেন, তিনি লিখিয়াছেন, হজরত
ইউনোছ (আঃ)এর উম্মতের উপর ৪০ দিবসের মধ্যে আজাব নাজিল হওয়া আছমানে স্থিরীকৃত
হইয়াছিল, ইহা একেবারে ভ্রান্তিমূলক কথা, ইহার প্রমাণ কোরআন শরিফে নাই, তওরাত ও
ইঞ্জিলে নাই, কোন ছহিহ হাদিছে নাই।
হজরত ইউনোছ (আঃ)এর ঘটনা কোর-আন শরিফের চারি স্থানে আছে।
(১) ছুরা আম্বিয়াতে এই আয়াত আছে,
وذاالنون اذ ذهب مغاضبا فظن ان لن نقدر عليه فنادى فى الظلمات ان لا اله الا انت سبحنك انى كنت من الظلمين فاستجبنا له ونجينه من الغم وكذلك ننجى المؤمنين.
“জুন্নুন (ইউনোছ)কে স্মরণ কর, যে সময়
তিনি (নিজের স্বজাতিদের) উপর নারাজ ইইয়া হেজরত করিলেন, তৎপরে
তিনি ধারণা করিলেন যে,
আমি কখনও তাঁহার উপর কঠোরতা অবলম্বরন করিব না, তৎপরে
তিনি অন্ধকার রাশির মধ্যে উচ্চস্বরে বলিলেন, তোমা ব্যতীত মা’বুদ নাই, নিশ্চয়ই আমি অত্যাচারিগণের অন্তর্গত। ইহাতে আমি তাহার দোয়া কবুল করিলাম এবং
তাঁহাকে দুঃখ ইহতে নিষ্কৃতি প্রদান করিলাম। এইরূপ আমি ইমানদারগণকে নিষ্কৃত প্রদান
করিয়া থাকি।” (অসমাপ্ত)
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের “কাফির” ষোষণা!
(২)
-অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক
(ধারাবাহিক)
যুক্তি দেখানো হয়েছে যে, আহমদীদের নিজেদেরকে মুসলমান দাবী করা থেকে বিরত রাখার
নির্দেশই মূলতঃ তাদেরকে ধর্ম থেকে বহিষ্কার করার শামীল। যেহেতু তারা তাদের ধর্মকেই
ইসলাম মনে করে (কাদিয়ানীদের) এই সুওয়ালটি ইতিমধ্যে আমরা নিরীক্ষা করেছি এবং এই
সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে,
কাদিয়ানীদের সকল মতাবলম্বিরাই কাফের। প্রত্যাদেশটি তাদেরকে
বিরত করে, তার যা নয় (মুসলমান) তা বলতে। যেহেতু
মুসলমানের ছদ্মবেশে তাদের (কাদিয়ানী) দ্বারা কাহাকেও বিশেষভাবে মুসরিম উম্মাহ্কে
প্রতারিত হওয়ার সুযোগ দেয়া যায় না। ইতোমধ্যে লক্ষ্য করা গেছে যে, মির্জা
সাহেব এবং লাহোরী প্রুপ ভিন্ন অনান্য কাদিয়ানীরা মুসলিম উম্মাহ্কে উল্টো অমুসলিম
এবং খারিজী বলছে এবং তাদেরকে (কাদিয়ানীদেরকে) মুসলিম উম্মাহ্র স্থালাভিষিক বলে
দাবী করছে যে, উম্মাহ্ কুরআনের প্রতি অনুরাগ এবং শ্রদ্ধাই সর্বোৎকৃষ্ট বলে দাবী করছে ইহা
সহ্য করা যায় না। এবং মুসলমানদে স্বার্থ সুযোগ-সুবিধাসমূহে কাফেরদের অবৈধ্য
হস্তক্ষেপ এবং চুড়ান্ত পর্যায়ে উম্মাহ্কে বিভন্ত করার চেষ্টা মানিয়ে নেয়া যায় না।
উপরন্ত ইহা মির্জাকে কাদিয়ানীদের নবী, মুজাদ্দিদ প্রতিশ্রুত মসীহ্
হিসেবে বিশ্বাসের প্রকাশ্য ঘোষণা করার ক্ষমতা খর্ব করে না। এবং তাদের
(কাদিয়ানীদের) ধর্মশালায় ধর্মের নির্দেশ অনুযায়ী তাদের উপসানা ও ধর্ম পালনেও কোন
বাধার সৃষ্টি করে না। অমুসলিম এবং তাদের ধর্ম পালনে মুসলিম আইনে সকল প্রকার
নিশ্চয়তার বিধান রয়েছে। কোরআন শরীফে ইহার সমর্থন পূর্বে উল্লিখিত আয়াত শরীফসমূহে
বর্ণনা করা হয়েছে তাফসীরেও উল্লেখ করা হয়েছে। ইহা এজন্য যে পবিত্র রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর মহান উত্তরসূরীগণ ও জিহাদের সময়েও বহু
ঈশ্বরবাদ ও অমুসলিম ধর্ম পালনে স্বাধীনতার শর্ত পালন করেছেন।
এ প্রেক্ষিতে প্রথম যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল তাহল হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনার ইহুদী, খৃষ্টান ও অন্যান্য অমুসলিমদের সাথে একটি লিখিত দলীল
সম্পাদন করেছিলেন। ডঃ মুহম্মদ হামীদুল্লাহ্র ভাষায় উক্ত দলীলের প্রথম অনুচ্ছেদে
ইহাই প্রমাণিত যে,
এই দলীলের শর্তে যারা একমত তারা সকলে একই উম্মাহর
অন্তর্ভূক্ত।” ইহা স্পষ্টতঃই একটি রাজনৈতিক জাতি গঠনের প্রচেষ্টা যা মুসলিম এবং অমুসলিম
সকলকেই সহযোগীতা করতে পারে।
এই দলীলের ২৬ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বণী আওফের ইহুদীরা মুসলমানদের
সাথে একই উম্মাহ্র অন্তর্ভূক্ত, যার অর্থ এই যে, তারা রাজনৈতিক মৈত্রীর ভিত্তিতে
একটি রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত হয়েছে। মতৈক্যে উপনীত দলসমূহের অন্যান্য সবার মধ্যে
মুসলিম উম্মাহ দলীলের শর্তানুযায়ী একটি রাজনৈতিক দলে পরিবর্তীত হওয়ায় সম্মত হয়, যার নাম
দেয়া হয় امته واحدته من دون الناس (অন্যান্যদের বিপক্ষে একটি রাজনৈতিক সত্ত্বা) (অনুচ্ছেদ-১) এবং امته واحدته (একটি সম্মিলিত রাজনৈতিক সত্ত্বা) (অনুচ্ছেদ-২৬)
امته واحدته من دون الناس
গঠনের পর নিজ নিজ ন্যায়
সম্মত দাবী ও নৈতিক বাধ্যবাধকতা সম্বন্ধে বর্ণনা করেন যাতে বুঝা যায় প্রত্যেকেরই
নিজ নিজ ধর্ম পালন ও প্রচারের অধিকারের ইঙ্গিতের উল্লেখ ছিল। অনুচ্ছেদ ২৬এ ইহা
বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইহুদীরা নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে এবং মুসলমানরা নিজ নিজ ধর্ম
পালন করবে। (ইবনে হিশাম- উর্দূ অনুবাদ, ভলিউম-১)
উমর আবু নাসার রচিত আল-হারুন আল ব্রামকাইয় (শেখ মুহম্মদ আহমদ পানি পথির উর্দূ
অনুবাদ পৃষ্ঠা- ২৭৮-২৭৯) উল্লেখ করা হয়েছে যে হারুন-উর-রশীদের খিলাফত কালে পক্ষপাত
বা পরমত অসহিষ্ণুতার একটি উদাহরণও পাওয়া যায়না। সিরিয়া, মিশর এবং
রোমে খৃষ্টানদের উপাসনার জন্য গীর্জা নির্মাণের এবং ক্রশ নিয়ে মিছিল করার আদেশও
ছিল। ইহুদীদের উপাসনাস্থলে একত্রিত হয়ে উপাসনা করার পূর্ণ অধিকারও ছিল। আগুন
উপাসনা করা কোন প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই তাদের আগুন জ্বেলে রাখতো এবং উপাসনা করতে
পারতো। সিন্ধে হিন্দুদের মন্দিরে পূজা অর্চনা করা বা তাদের মূর্তির সামনে সিজদা
করার কোন বাধা ছিলনা। সংক্ষেপে বলা যায় যে ধর্মে কোন বাধ্যবাধকতা ছিলনা। (অসমাপ্ত)
***************************************************
খতমে নুবুওওয়াত প্রচার
কেন্দ্র
খতমে নুবুওওয়াত
অস্বীকারকারীরা কাফির
ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে
খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়
(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি)
তাদের তওবার জন্য
নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড
কাদিয়ানী রদ! (১)
(পঞ্চম ভাগ)
(মুবাহিছে আযম,
বাহরুল উলূম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল
মোহাদ্দিসীন, তাজুল মোফাসসিরীন,
হাফিজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে
কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মিল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ)
কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ”
কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত
পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ
সমস্ত বাতিল ফিরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার
হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। এক্ষেত্রে
তাঁর কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে
প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্যণীয়)।
(ধারাবাহিক)
(২) ছুরা ছাফ্যাতের আয়াত,
وان يونس لمن المرسلين اذ ابق الى الفلك المشحون فساهم فكان من المدحضين فالتقمه الحوت وهو مليم فلولا انه كان من المسبحين للبث فى بطنه الى يوم يبعثون فنبذنه بالعراء وهو سقيم وانبتنا عليه شجرة من يقطين وارسلنه الى مائة الف او يزيدون فامنوا فمتعنهم الى حين.
“নিশ্চয়ই ইউনুছ রাসুলগণের অন্তর্গত, যে সময়
তিনি পূর্ণ নৌকার দিকে পলায়ন করিয়াছিলেন, তৎপরে তিনি (নৌকার লোক দিগের
সহিত) কোরা’ নিক্ষেপ করিলেন,
ইহাতে তিনি পরাস্ত হইলেন। তৎপরে একটি মৎস্য তাঁহাকে গ্রাস
করিয়া ফেলিল অথচ তিনি লজ্জিত ছিলেন। যদি তিনি তছবিহ পাঠ কারিদিগের অন্তর্গত না
ইহতেন, তবে তিনি কেয়ামতের দিবস পর্য্যস্ত উহার উদরে অবস্থিতি করিতেন। তৎপরে আমি
তাঁহাকে তৃণলতা-শুণ্য ময়দানে নিক্ষেপ করিলাম, অথচ তিনি পীড়িত ছিলেন এবং আমি
তাঁহার উপর লাউবৃক্ষ উৎপাদন করিলাম এবং আমি তাহাকে লক্ষ কি তদধিক লোকের নিকট
প্রেরণ করিলাম, ইহাতে তাহারা ইমান আনিলেন, কাজেই আমি তাহাদিগকে এক জামানা পর্যন্ত ফলভোগী করিলাম।”
(৩) ছুরা নূনের আয়াত,
ولاتكن كصاحب الحوت اذ نادى وهو مكظوم لولا ان تدركه نعمة من ربه لنبذ بالعراء وهو مذموم فاجتبه ربه فجعله من الصلحين.
“তুমি মৎস্যধিষ্ঠিত ব্যক্তির ন্যায়
হইও না, যে সমস্ত তিনি দুঃখিত অবস্থায় (খোদাকে) ডাকিলেন, যদি তাঁহার প্রতিপালকের অনুগ্রহ
তাঁহাকে আশ্রয় প্রদাণ না করিত, তবে তিনি লাঞ্চিত অবস্থায় তৃণলতা শুণ্য ময়দানে নিক্ষিপ্ত
থাকিতেন। তৎপরে তাঁহার প্রতিপালক তাহাকে মনোনীত করিলেন, পরে
তাঁহাকে নেককারদিগের অন্তর্গত লইলেন।” (অসমাপ্ত)
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের “কাফির” ষোষণা!
(২)
-অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক
(ধারাবাহিক)
মিশরের আল হিলাল পত্রিকার সম্পাদক যারজি জাইদান রচিত তারিখ আল তামাদ্দন আল
ইসলামী পুস্তকে উল্লেখ করেন (ভলিউম-৩, পৃষ্ঠা-১৯৪) “শিক্ষাক্ষেত্রে
মুসলমানদের দ্রুত উন্নতির কারণ ছিল, বিদ্বান ব্যক্তিদের প্রতি
খলীফাগণের উচ্চ সম্মানবোধ এবং তাদেরকে উদার সম্মানী প্রদান। তাঁরা (খলীফাগণ) কখনও
তাদের (বিদ্বানগণের) ধর্ম,
বংশ বা জাতি সম্বন্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেননি। তাদের
(বিদ্বান) মধ্যে সকল ধর্মের লোকই ছিল। যেমন খৃষ্টান, ইহুদী, ঐশ্বরিক
দূত উপাসনাকারী, সামারিতান এবং আগুন উপাসক। খলীফাগণ তাদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মানের আচরণ
প্রকাশ করতেন। অমুসলিমরাও মুসলমান আমির, ওমরাহগণের এবং কর্মকর্তাগণের মতই
স্বাধীনতা ও মর্যাদা ভোগ করতেন।
২৮২ পৃষ্ঠায় খলীফা হারুনুর
রশিদের আচরণ এবং খৃষ্টানদের প্রতি তাঁর সহিষ্ণুতার একটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, এই সহিষ্ণুতা ছিল খুবই চরম আকারের। রোমের শাসকদের বারংবার অঙ্গীকার ভঙ্গ করার
ও সীমান্তে লুক্তনের ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি (খলীফা)। প্রধান বিচারক ইমাম আবু ইউসুফ
(রঃ) সাহেবকে প্রশ্ন রাখেন,
“ইসলামী রাষ্ট্রের অধিকৃত এলাকায়”খৃষ্টানদের
গীর্জা কেন সংরক্ষণ করা হচ্ছে এবং কে তাদেরকে ক্রশ সহ শহরে মিছিল করার অনুমতি
দিয়েছে? ইমাম আবু ইউছুফ (রঃ) নির্ভীক জাওয়াবে বলেন, “হযরত উমর (রাঃ)-এর খিলাফতকালে
রোমের প্রদেশসমূহ বিজয়ের পর তিনি (হযরত উমর (রাঃ)) খৃষ্টানদেরকে লিখিত দিয়েছিলেন
যে, তাদের গীর্জা মুসলমানগণ সংরক্ষণ করবেন এবং তারা তাদের ধর্ম পালনে পূর্ণ
স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবে ও তাদের ক্রশ নিয়ে শহরে মিছিলও করতে পারবে। প্রধান
বিচারপতি বলেন, “এখন ঐ আদেশ রদ করার ক্ষমতা কারো নাই।
ইহা সর্বজনবিদিত যে হযরত উমর (রাঃ) বিজিত দেশের বন্দীদের জমি মুসলমানগণের দাবী
সত্ত্বেও তাদের মধ্যে বন্টন করে দিতে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন। হযরত উমর (রাঃ) কর্তৃক
বাইতুল মাকদাস অধিবাসীদের দেয়া ক্ষমার দলীল এক ঐতিহাসিক দলীল।
“এই সাধারণ ক্ষমা আল্লাহ্ পাক এর বান্দা, আমীরুল মু’মিনীন এর
তরফ থেকে ইলিয়ার (ايليا) জনগণের প্রতি।
এই ক্ষমা তাদের জীবন,
সম্পত্তি, গির্জা, ক্রশ, স্বাস্থ্যবান, অসুস্থ্য এবং তাদের ধর্মের সকল
জনগণের জন্য প্রয়োজ্য। তাদের গির্জা অধিাকার করা হবে না বা ধ্বংস ও করা হবে না বা
তাদের সম্পত্তি ও কমিয়ে দেয়া হবে না ধর্ম্মিয় আচার অনুষ্ঠানে ও কোন জোর জবর দস্তি
করা হবে না” (সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহীম কর্তৃক তারীখে তারব্রী ভলিয়ুম-২ এর উর্দূ অনুবাদ
পৃষ্ঠা- ৫০১; ডঃ মুহম্মদ হামিদ উল্লাহ রচিত সীয়াসি ওসিকা-যাত পৃষ্ঠা ৩০৪ এবং ৩০৫, চুক্তি
নামানং ৩৫৭, শিবলী নোমান রচিত আল-ফারুক, ভলিউম-২ পৃষ্ঠা ১৪৯)
যায়ান বিজয়ের সময় চুক্তি নামাজ উল্লেখ করা হয়েছিল যে, সাধারণ
ক্ষমায় তাদের জীবন,
সম্পত্তি, ও ধর্মের নিরাপত্তার নিশ্চয়তার বিধান করা হবে এবং কোনটাই
পবির্তন করা হবে না (আই,
বি আই ডি পৃষ্টা ১৫৫)।
পবিত্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পক্ষ থেকে মাকনা, হুনাইন
এবং খাইবারের অধিবাসীদের জন্ম যে ক্ষমা মঞ্জুর করা হয়েছিল তাতে উল্লেখ করা হয়েছিল
যে, তিনি (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওহীর মাধ্যমে অবগত হয়েছেন যে, এই তিনটি
দল তাদের গৃহে প্রত্যাবর্তন করেছে। তাদের প্রত্যাবর্তন করতে দেয়া হউক।” আল্লাহ্
পাক এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পক্ষ থেকে তাদের জন্য
ক্ষমা মঞ্জুর করা হয়েছে। এ ক্ষমায় শুধু তোমাদের জীবনের নিরাপত্তাই নয় বরং তোমাদের
ধর্ম। সম্পত্তি, লোকজন এবং অন্য সকল কিছু যা তোমাদের রয়েছে তারও নিরাপত্তা রয়েছে। তোমাদের এই
সকল জিনিসই আল্লাহ্ পাক এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দ্বারা
নিরাপদকৃত। এই সকল ছাড়াও তাদেরকে নিম্নে উল্লেখিত বিশেষ ছাড় দেয়া হয়েছে।
(১) জিজিয়া কর দেয়া থেকে অব্যাহতি, (২) বাধ্যতা মুলক মজুরি করা থেকে
অব্যাহতি, (৩) সামরিক কৌশল পরিচালনায় অংশ গ্রহণে অব্যাহতি, (৬) সামরিক জরুরী প্রয়োজনে তাদের
গৃহ দখল থেকে অব্যাহতি,
(৯) তাদেরকে স্বশস্ত্র বাইরে যাওয়ার অনুমতি, (১০) কেহ
তোমাকে আক্রমণ করলে তুমি তার সাথে রড়তে পারবে এবং এরূপ লড়াইয়ের জন্য তোমাকে দীয়াত
(উওণঅঞ) প্রদানে জবর দস্তি করা হবে না বা তোমার শক্রর খুন হওয়ার জন্য কোন
প্রতিকারও দাবী করা হবে না,
(১৮) তোমাদের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়াতেও কোন নিষেধাজ্ঞা থাকবে না, (১৯)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পরিবার এবং সকল (অসমাপ্ত)
**************************************************************************************
খতমে নুবুওওয়াত প্রচার
কেন্দ্র
খতমে নুবুওওয়াত
অস্বীকারকারীরা কাফির
ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে
খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়
(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি)
তাদের তওবার জন্য
নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড
কাদিয়ানী রদ! (১)
(পঞ্চম ভাগ)
(মুবাহিছে আযম,
বাহরুল উলূম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল
মোহাদ্দিসীন, তাজুল মোফাসসিরীন,
হাফিজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে
কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মিল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ)
কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ”
কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত
পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ
সমস্ত বাতিল ফিরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার
হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। এক্ষেত্রে
তাঁর কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে
প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্যণীয়)।
(ধারাবাহিক)
(৪) ছুরা ইউনোছের আয়াত,
فلو لا كانت قرية امنت فنفعها ايمانها الا قوم يونس لم امنوا كشفنا عنهم عذاب الخزى فى الحيوة الدنيا ومتعنهم الى حين.
“কোন গ্রামের (সমস্ত লোক) ইমান
আনিয়া উক্ত ইমানের দ্বারা ফলবান হয় নাই, কিন্তু ইউনোছের সমস্ত দল যে সময়
তাহারা ইমান আনিয়াছিল,
আমি তাহাদিক হইতে এই পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনার আজাব
দুরিভুত করিয়াছিলাম এবং তাহাদিগকে এক
জামানা পর্য্যন্ত ফলভোগী করিয়াছিলাম।”
উপরোক্ত চারি আয়াত এমন কোন কথা নাই যে, যাহাতে বুঝা যায় যে, ৪০
দিবসের মধ্যে আজাব নাজিল হইবে।
কোন ছহিহ হাদিছে এরূপ কোন কথা নাই। যদি কোন জইফ রেওয়াএত থাকে, তবে
উহাতে আছমানি ফয়ছলা বলিয়া দাবি করা যাইতে পারে না।
দিতীয়, মির্জ্জা
ছাহেব দাবি করিয়াছেন যে,
উহাতে কোন শর্ত ছিল না, ইহাও তাহার বাতীল দাবি।
কোন ছহিহ রেওয়াএত বা
কোর-আনের আয়াত ইহা উল্লিখিত হয় নাই যে, হজরত ইউনোছ (আঃ) আজাব সম্বন্ধে
কোন ভবিষ্যদ্বানী করিয়াছিলেন, অবশ্য কোন কোন জইফ রেওয়াএতে ভবিষ্যদ্বানীর কথা উল্লিখিত
হইয়াছে, উহাতে শর্ত্তের কথা উল্লিখিত আছে।
তফছির-কবির ৬/১৮৮ পৃষ্ঠা,
عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه فاوحى الله تعالى اليه قل لهم ان لم تؤمنوا جاعكم العذاب فابلغهم فابوا فخرج من عندهم فلما فقدوه ندموا على فعلهم فامنوا به.
“ইবনে-আব্বাছ (রাঃ) হইতে রেওয়াএত করা হইয়াছে, আল্লাহ্তায়ালা তাঁহার নিকট এই অহি
প্রেরণ করিলেন, তুমি তাহদিগকে বল,
যদি তোমরা ইমান না আন, তবে তোমাদের উপর আজাব আসিবে।
ইহাতে তিনি তাহদিগকে সংবাদ দিলেন, তাহারা অস্বীকার করিলেন, তখন তিনি তাহাদের নিকট হইতে বাহির
হইয়া সংবাদ দিলে,
তাহারা অস্বীকার করিলেন, তখন তিনি তাহাদের নিকট হইতে বাহির হইয়া গেলেন। যখন তাহারা তাঁহার
সাক্ষাত পাইলেন না,
তাহারা নিজেদের কার্য্যের উপর লজ্জিত হইলেন, তৎপরে
তাঁহার উপর ইমান আনিলেন।”
হাশিয়ায়-শেখজাদা,
২/৩৬৫ পৃষ্ঠা,
فاوحى الله اليه قل لهم ان لم يؤمنواجاء هم العذاب فابلغهم فابوا فخرج من عندهم.
“আল্লাহ্তায়ালা তাঁহার নিকট অহি
প্রেরণ করিলেন, তুমি তাহাদিগকে বল যদি তাহারা ইমান না আনে, তবে তাহাদের উপর আজাব আসিবে। তিনি
তাহাদিগকে এই সংবাদ পৌঁছাইলেন, ইহাতে তাহারা অস্বীকার করিলেন। তখন তিনি তাহাদের নিকট হইতে
বাহির হইয়া গেলেন।”
রুহোল-মায়ানি ৫/৩৮৪ পৃষ্ঠা,
فاوحى الله تعالى اليه قل لهم ان لم يومنوا جاء هم العذاب فابلغهم فابوا فخرج من عندهم فلما فقدروه ندموا على فعلهم فانطلقوا يطلبونه فلم يقدروا عليه.
“আল্লাহ্ তাঁহার নিকট অহি প্রেরণ
করিলেন, তুমি তাহাদিগকে বল,
যদি তাহারা ইমান না আনে তবে তাহাদের উপর আজাব উপস্থিত হইবে।
তিনি তাহাদিগকে এই সংবাদ পৌঁছাইলেন, তাহারা এনকার করিল। তখন তিনি
তাহাদের নিকট হইতে বাহির হইয়া গেলেন। যখন তাহারা তাহাকে দেখিতে পাইলেন না, নিজেদের
কার্য্যে লজ্জিত হইলেন,
ইহাতে তাহারা তাঁহার অনুসন্ধানে রওয়ানা হইলেন, কিন্তু
তাঁহার সাক্ষাৎ পাইলেন না।”
আর ছুরা ছাফ্যাতের উল্লিখিত আয়াতে প্রমাণিত হয় যে, তাহারা
ইমান আনিয়াছিলেন। এক্ষণে বুঝা গেল যে, হজরত ইউনোছ (আঃ)এর ভবিষ্যদ্বানীতে
যে শর্ত্ত ছিল, তাহা প্রতিপালন করিবার জন্য তাহারা নিষ্কৃতি পাইয়াছিলেন।
তৃতীয়, তিনি আজাব আসিবার ওয়াদা করিয়াছিলেন, কোর-আন শরিফের ছুরা ইউনোছের আয়াতে
বুঝা যায় যে, আজাব আসিয়াছিল,
কিন্তু তাহাদের ইমান আনায় উহা ফিরিয়া গিয়াছিল, মুলকথা, যেরূপ
ভবিষ্যদ্বাণী করা হইয়াছিল,
ঠিক সেইরূপ হইয়াছিল। কাজেই মির্জ্জা ছাহেবের এইরূপ দাবি যে, হযরত
ইউনোছ (আঃ)এর ভবিষ্যদ্বাণী সফল হইয়াছিল না, একেবারে বাতীল দাবি।
(১১) মির্জ্জা ছাহেব কিস্তিয়ে নূহের ৫ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন,
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
“ইহা স্মরণ রাখা কর্ত্তব্য, কোর-আন
শরিফে বরং তওরাতের কোন পুস্তকে এই সংবাদ বর্ত্তমান আছে যে, প্রতিশ্রুত
মছিহের জামানায় প্লেগ প্রকাশিত হইবে, বরং হজরত মছিহ (আঃ) ইঞ্জিলে এই সংবাদ
প্রদাণ করিয়াছেন।”
তিনি উহার হাশিয়াতে লিখিয়াছেন,
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
“প্রতিশ্রুত মছিহের জামানায় প্লেগ
প্রকাশিত হওয়া বাইবেলের নিম্নোক্ত পুস্তকগুলিতে বর্ত্তমান আছে, সখরিয় ১৪
অধ্যায় ও ১২ পদ, মথি, ২৪ অধ্যায় ৮ পদ,
প্রকাশিত বাক্য, ২২ অধ্যায় ৮ পদ।”
মির্জ্জা ছাহেব এস্থলে চারটি মিথ্যা কথা বলিয়াছেন,
(১) কোর-আনে কোন স্থানে এইরূপ কথা
নাই।
(২) সখরিয় পুস্তকের ১৪/১২ পদে
লিখিত আছে, যে সমস্ত পরজাতি যিরুশামের বিরূদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করিবে, তাহাদের
মধ্যে মহামারী উপস্থিত হইবে। এস্থলে মছিহ সংক্রান্ত কোন কথা নাই।
(৩) মথির ২৪ অধ্যায়ের ৩-৮ পদে
লিখিত আছে, মিথ্যা মছিহরা আগমন করিলে, মহামারী উপস্থিত হইবে।
(৪) প্রকাশিত বাক্যের ২২/৮ পদে
উপরোক্ত কথার নাম-গন্ধ নাই।
এক্ষনে মির্জ্জায়িদিগকে জিজ্ঞাসা করি, যিনি কোর-আন ও বাইবেলের উপর
মিথ্যা অপবাদ করিতে পারেন,
তাহার সমস্ত এলহাম শয়তানি হইবে না কেন?
(১২) মির্জ্জা ছাহেব
এজালাতোল-আওহামের ৩৬৩ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন,
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
“এইরূপ উক্ত হাদিছ যাহার শব্দগুলি
এই .... স্পষ্টভাবে প্রকাশ করিতেছে যে, হজরত (ছাঃ) নিজ এজতেহাদে
ভবিষ্যদ্বাণীর লক্ষ্যস্থল যাহা কিছু বুঝিয়াছেন, তাহা ভ্রান্তমূলক হইয়া পড়িয়াছে।” (অসমাপ্ত)
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের “কাফির” ষোষণা!
(২)
-অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক
(ধারাবাহিক)
মুসলমানের জন্য আবশ্যকীয় যে তারা তোমাদের সম্মানিত লোকদের প্রতি সম্মানবোধ
পোষণ করা। (২২) কোন লোককেই মুসলমান হওয়ার জন্য জোর করা ইসলামে গ্রহণীয় নয়। (২৭) এই
পত্রের বিষয়সমূহ পড়ে বা শুন্যে যদি কেউ কোন কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব করে বা
বিরোধীতা করে তবে সে আল্লাহ্, তাঁর ফেরেশ্তা এবং সকল মখলুকাত কর্তৃক নিন্দনীয় গণ্য হবে।
..... আমি তার শত্রু হব (বিচারের দিনে)। (ছিয়াছী ওছিকাযাত কভনেষ্ট ৩৪,পৃষ্ঠা
৫৯-৬২)
৯৪ নং চুক্তিনামটি (আই,
বি,
আই,
ডি পৃষ্ঠা ৯৬ থেকে ৯৮) ছিল হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এবং নজরান এর খৃষ্টানদের মধ্যকার চুক্তিনামা। ইহাতে ছিল খুবই উদার
শর্তসমূহ। ধর্ম সম্বন্ধীয় শর্তসমূহ ছিল ৮বি এবং ৯ অধ্যায়ে। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ দায়িত্বে রেখেছিলেন। (স্বাধীনতার জন্য) তাদের ধর্ম পালন, তাদের
ভবিষ্যদ্বক্তা এবং ধর্মীয় নেতা যারা নির্জনতা অবলম্বি ছিল। পবিত্র রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর (আর্টিকেল-৫) চুক্তিনামা অনুসারে সাইয়্যিদ বিন
হারিস সম সাময়িক খৃষ্টানদের সাথে চুক্তিনামায় তাদের ধর্ম বিশ্বাসে এবং ধর্ম পালনে
অনুরূপ স্বাধীনতার নিশ্চয়তার বিধান করেছিলেন। উল্লেখ ছিল যে, তাদের
গির্জাসমূহ তাদের উপসনা স্থান, আশ্রম, পর্যটকদের বিশ্রাম স্থান পাহাড়েই হোক, সমতল
স্থানেই হোক বা অন্ধকার গুহাতেই হোক বা জনাকীর্ণ স্থানেই হউক বা উপত্যকায় বা
মরুভূমিতে হোক নিরাপত্তা বিধান করা হবে (চুক্তিনামা নং ৯৫ আই, বি, আই ডি, পৃষ্ঠা
১০৯)। “মুসলমান হওয়ার জন্য কোন খৃষ্টানকে জোর করা যাবে না।” (আর্টিকেল
২৩) “ধর্মোপদেশ বা ওয়াজ-নসিহতে তাদের সাথে সদ্বব্যবহার করা হবে।” (আর্টিকেল
২৪)
হযরত সালমান ফার্সী (রাঃ)-এর আত্মীয়দের যারা ছিলেন অগ্নি উপাসক (আই, বি, আই, ডি, পৃষ্ঠা
৩৩১) তাদের সম্বন্ধে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদেশে একই রকম
ধর্মীয় নিরাপত্তার উল্লেখ ছিল। (আর্টিকেল ৮৮)
“তাদের উপাসনা স্থানসমূহের পুনঃস্থাপন, তাদের উপার্জনের এবং সম্প্রসারনের
উন্নয়ন স্বাধীনতার উল্লেখ ছিল।” (আর্টিকেল ৪, আই বি আই ডি পৃষ্ঠা ৩৩৪, ৩৩৫) “যদি কোন
মুসল মানের খৃষ্টান স্ত্রী থাকে তবে সে তার ধর্ম পালন এবং ধর্মীয় ব্যাপারে তাদের
(খৃষ্টান) বিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করার পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে। যে তার
খৃষ্টান স্ত্রীকে তার ধর্মপালনে বাধা দিবে সে আল্লাহ্ পাক ও তাঁর রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তরফ থেকে এই চুক্তিনামার প্রতিপক্ষ এবং সে
একজন মিথ্যাচারী।”
(আর্টিকেল ৩৫)
হযরত ওমর (রাঃ) তাঁর খিলাফত কালে নজরানের লোকদের জন্য একটি নতুন সাধারণ ক্ষমা
ঘোষণা করেন। তিনি হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মঞ্জুরকৃত সকল
সুবিধাদি এবং ছাড় বহাল রাখেন ও আরও কিছু অতিরিক্ত বিশেষ সুবিধার ঘোষণা দেন। যেগুলি
ছিল অন্যান্য সব কিছুর মধ্যে তাদের উপাসনার ধরণ। তাদের পাদ্রি এবং সন্নাসিদের
সংরক্ষণ। (চুক্তিনামা নং ৯৮ আই বি আই ডি ১১৪, ১১৫)
ডঃ মুহম্মদ হামিদুল্লাহ্র “দি মুসলিম কনডাক্ট অব ষ্টেট”-এর ২০৮, ২০৯
নাম্বার পরিচ্ছেদ নিম্নরূপঃ
(২০৮) বিখ্যাত হানাফি আইন সংগ্রহ
গ্রন্থ যেমন, আল- বাহরুর রায়েকে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, কাফিরদের কবরস্থানও একইভাবে
সম্মান করতে হবে;
এবং তাদের জীবিত অবস্থায় তাদের সম্পত্তি এবং তাদের
মর্যাদাকে যেমনভাবে সম্মান করা হয়েছে, তেমনই সম্মান করতে হবে তাদের
হাড্ডিকে তাদের মৃত্যুর পর।
(২০৯) হযরত ইমাম আবূ হানিফা (রঃ) এবং হযরত ইমাম শাফি (রঃ) উভয়েই একমত পোষণ করেছেন যে, যদি কোন কাফির কুরআন-হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বা মুসলিম আইন (ফিক্বাহ্) পড়তে চায় তবে তাদেরকে বাধা দেয়া যাবে না। বইটির অনুচ্ছেদ ২০০তে উল্লেখ করা হয়েছে, মুসলিম আইন মুসলমান ও কাফির প্রজাদের মধ্যে বেশ পার্থক্য রক্ষা করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে কাফিরদের অবস্থানই ভাল। উদ্ধৃত্ত সম্পত্তির খাজনা (যাকাত) দেয়া থেকে তাদের অব্যহতি দেয়া হয়েছে, যা সকল মুসলমান নর বা নারী, যুবক বা বৃদ্ধ সকলকেই তাদের উদ্বৃত্তের বার্ষিক শতকরা আড়াই ভাগ হিসেবে সর্বনিম্ন ২০০ দিরহাম পরিশোধ করতে হয়। তাদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক বাহিনীতে নিযুক্তি থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। অন্য দিকে সকল মুসলমানদের বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক কাজে অংশগ্রহণ করতে হবে। তারা এক প্রকার স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ভোগ করে। তাদের মামলা-মোকদ্দমার বিচার তাদের সমধর্মীদের দ্বারা তাদের আইনে সম্পাদন করান হয়। তাদের জীবন ও সম্পদ মুসলিম রাজ্য কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় মুসলমান প্রজাদের মতই। (অসমাপ্ত)
আবা-৭৬,৭৭,৭৮,৭৯,৮০
0 Comments:
Post a Comment