খতমে নুবুওওয়াত
প্রচার কেন্দ্র
খতমে নুবুওওয়াত
অস্বীকারকারীরা কাফির
(
ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক
যারা মুসলমান থেকে
খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়
(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময়
৩দিন। এরপর তওবা
না করলে,
তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড
)
(১)
কাদিয়ানী রদ!
(চতুর্থ ভাগ)
বাহরুল উলূম, ফখরুল ফোক্বাহা,
রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন,
হাফেজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম,
পীরে কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ) কর্তৃক
প্রণীত “কাদিয়ানী রদ” কিতাবখানা (৬ষ্ঠ
খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে
কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের
অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন
(আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার
সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
মির্জ্জার আকায়েদ
তিনি ‘জরুরাতোল-এমাম’ কেতাবের ২ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন -
حدیث
صحیح
سے
ثابت
ھے
کہ
جو
شخص
اپنے زمانے کے امام کو شنا خت نہ کرے اس کی موت جاھلیت کی ھوتی ھے-
“ছহিহ হাদিছে প্রমাণিত হয় যে, যে ব্যক্তি আপন
জামানার এমামকে চিনিতে না পারে,
তাহার জাহিলিএতের মৃত্যু হইবে।” এই হাদিছটী আহমদ,
তেরমেজি, এবনো খোজায়মা ও এবনো হাব্বান রেওয়াএত করিয়াছেন।
এমাম বোখারি এই হাদিছটী রেওয়াএত করেন নাই, কাজেই মির্জ্জা
ছাহেবের দাবি অনুসারে উহা জইফ হইবে, কিন্তু মির্জ্জা
ছাহেব নিজে এমামোজ্জমান বনিবার ধারনায় উহা ছহিহ বলিয়া স্বীকার করিয়াছেন। যদি এই হাদিছটী
ছহিহ বোখারিতে না থাকা সত্ত্বেও ছহিহ হয়, তবে এমাম মোছলেম
বর্ণিত দাজ্জাল সংক্রান্ত হাদিছটী বহুগুণে শ্রেষ্ঠ হইয়াও কেন ছহিহ হইবে না?
মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল আওহামের ৯৭৯ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;-
اگر
ھم
بخاری
اور
مسلم
کی
ان
حدیثون
کو
صحیح
سمجھین
جو
دجال
کو
اخری
زمانہ
مین
اتاو
رھی
ھے
تویہ
حدیثین
ان
کی
موضوع
تھیرتی
ھین
اور
اگر
ان
حدیثون
کو
صحیح
قرار
دین
تو
پھر
ان
کا
موضوع
ھونا
ماننا
پرتا
ھے-
“যদি আমরা বোখারি ও মোছলেমের শেষ জামানায় দাজ্জালের আবির্ভাব
হওয়া সংক্রান্ত হাদিছগুলি ছহিহ ধারণা করি, তবে উক্ত কেতাবদ্বয়ের
(এবনো-ছাইয়াদের দাজ্জাল হওয়া সংক্রান্ত) হাদিছগুলি জাল হওয়া স্থিরীকৃত হয়। আর যদি শেষোক্ত
হাদিছগুলি ছহিহ স্থির করি,
তবে প্রথমোক্ত হাদিছগুলির জাল হওয়া স্বীকার
করিতে হয়।”
মির্জ্জা ছাহেব এস্থলে স্বার্থপরতার খাতিরে ছহিহ বোখারি ও মোছলেমের হাদিছ জাল বলিয়া
ফেলিলেন!
(চতুর্থ ভাগ সমাপ্ত)
(পরবর্তী সংখ্যা হতে পঞ্চম ভাগ আরম্ভ হবে ইন্শাআল্লাহ্)
(২)
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট
কর্তৃক কাদিয়ানীদের-
‘কাফের’
ঘোষণা!
অনুবাদক - আল্হাজ্ব
মুহম্মদ হাবিবুল হক
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
ইহা অর্জিত হয়ে
সার্বলৌকিক ধর্ম দ্বারা যাহা বর্তমানে তাঁরা অবলম্বন করে থাকে। ইহা রূঢ়তা ও অহংকার
দূর করে এবং নিজেদের মধ্যকার শত্রুতা এবং ঈর্ষা সংযত করে। যখন একজন রাসূল বা অলী আল্লাহ্
তাদেরকে আল্লাহ্ পাক-এর আদেশ মেনে চলার আহবান করেন এবং তাদের মধ্য থেকে দূর করেন নিন্দনীয়
কাজ এবং উদ্বুদ্ধ করেন প্রশংসনীয় কাজে এবং যখন তিনি তাদের সকল শক্তি একত্রিত করেন সত্যকে
প্রতিষ্ঠা করতে। তারা পরিপূর্ণ ভাবে ঐক্য বদ্ধ হয় (একটি সামাজিক সংগঠন হিসাবে)। বর্তমানে
প্রচলিত ধর্মদ্বারাই ইহা অর্জন সম্ভব হয়েছে। ইহা রুক্ষ্মতা ও অহঙ্কার দূর করে এবং প্রয়োগ
করে পরস্পরের ঈর্ষা ও হিংসা নিবারণে একটি বিশেষ প্রভাব। এবং অর্জন করে শ্রেষ্ঠত্ব ও
রাজকীয় কর্তৃত্ব। তাছাড়া অন্য কোন জাতিই অত তাড়াতাড়ি (আরবদের মত) সত্যকে (ধর্মীয়) ও
সঠিক পরিচালনা গ্রহণ করতে পারেনা। কারণ তাদের স্বভাবকে বিকৃত অভ্যাসের সংক্রমন থেকে
মুক্ত রাখা হয়েছে এবং মূল চারিত্রিক গুণই সংক্রমিত না হওয়া। একমাত্র বিরোধ, তাদের কঠোরতা,
অবশ্য খুব সহজেই নিয়ন্ত্রিত হয়। যাহা ভাল
গ্রহণে প্রস্তুত,
কেননা ইহা তার প্রাথমিক প্রাকৃতিক অবস্থায়ই
বিদ্যমান-কুপ্রথা এবং কুস্বভাব থেকে মুক্ত, যাহা মনের উপর দাগ
রেখে দেয়। “প্রত্যেক শিশুই প্রাকৃতিক স্বভাব সম্পন্ন ভাবে জন্ম গ্রহণ করে”। ঐতিহ্যের কথাই
উপরোক্ত বক্তব্যে বলা হয়েছে।
ইহাও অনস্বীকার্য যে,
সহযোগীতা সহানুভূতি, বর্ণ বৈষম্য,
বন্ধুত্ব ও আদর্শ গত ঐক্য, উচ্চমার্গীয়,
সাম্প্রদায়িক, ভাষা সম্বন্ধীয় এবং সাংস্কৃতিক বাধা অতিক্রমে বিশ্বাসই শক্তিশালী উদ্দিপক। আবেগপূর্ণ
ঐকান্তিকতা ও ঐক্যে সহজ প্রকৃতি এবং আদর্শগত ভিত্তি, ভ্রাতৃসূলভ মনোভাব
সঞ্চার করে,
ইসলামের ইতিহাসে এ নজীরের অভাব নাই। সিন্ধুর
রাজা দাহিরের বিরুদ্ধে মুসলমানদের সোচ্চারই ছিল অন্য মুসলমান ভাইয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে
মুসলমান সৈন্যরা প্রবল অসুবিধা অতিক্রম করে দীর্ঘ সফর করে পৌঁছে ছিলেন সিন্ধুতে।
তবে,
আধুনিক যুগের জাতীয়তা বাদ ও ধর্মীয় উম্মাহর
মধ্যে একটি বিরাট পার্থক্য রয়েছে। কয়েকটি দলের সম্মিলিত হওয়াই একটি জাতি গঠন। কিন্তু
ঐ সম্মিলিত হওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যই থাকে নিজ স্বার্থ অর্জন। সম্মিলিত হওয়ার
মধ্যে জটিল বিষয় ও গুণাবলী আছে। কিন্তু ব্যক্তি এবং দলীয় স্বার্থ ঐ গুণাবলীর মধ্যে
একটি বরং উহাই প্রধান মাপকাঠি। কিন্তু ধর্মীয় উম্মাহ (ইসলাম) ঐ সকল দোষ থেকে মুক্ত।
মুসলিম উম্মাহ গঠনে এবং ঐক্য মতে একত্রিত থাকায় যে বিষয়গুলি সহায়ক তা হলো ইসলাম
ধর্মের মানব হিতৈষী চরিত্র,
সকল ধনী ও দরিদ্র, প্রভু ও ভৃত্য,
নর ও নারীর মধ্যে সমভাব নির্দেশ, নিরপেক্ষভাবে কোন ভেদাভেদহীন ভাবে দেশ, বর্ণ, কুল গৌরব,
ভাষা বা সংস্কৃতি নির্বিশেষে ব্যক্তি স্বাধীনতার
দৃঢ় অঙ্গীকার।
ইসলামের সেনাবাহিনী ছিলেন সেই সকল গুণের আলো বহনকারী এবং তাঁরা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন
ধৈর্য্যরে মানসিকতা ও আত্ম সংযম,
শিক্ষা ও গবেষণার প্রতি আকর্ষণ, দুঃখ জনকভাবে এ যুগের কাছে রাজনৈতিক দুর্বলতার জন্য তারা নৃশংস ও অসহিঞ্চু হিসাবে
পরিগণিত। তাদের উত্তরাধিকারিত্বের প্রতি অনুরাগ এবং ঐতিহ্যের লালন ছিল উম্মাহর সংমিশ্রনের
আরও কিছু কারণসমূহ। এই সকল গুনাবলী ধর্মীয় শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট এবং শ্রেষ্ঠত্বের
প্রধান শক্তি। তবে মুসলমানদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুণ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি মহব্বত ও সম্মান, যাঁর মাধ্যমে এই
সকল রহমত এই উম্মার প্রতি দান করা হয়েছে। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
প্রতি মহব্বত ও সম্মানের গভীরতা প্রকাশ পায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
জীবনের বিস্তারিত সব কিছু সংরক্ষণ-এর প্রক্রিয়ায় এবং সীরাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর উপর হাজার হাজার কিতাব মুসলমানরা লিখেছেন। কোরআন ও রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাহ মেনে চলা মুসলমানদের জন্য অবশ্য কর্তব্য এবং তাঁরা সংরক্ষণ
করেছে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জীবনের আচার-আচরণের সকল সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম
বিষয় সমূহ- এমন কি মামুলী বিষয়ও। তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাধ্যতা
অর্থ তাঁকে মহব্বত করা,
কিন্তু যে মহব্বত বাধ্যতার সীমা ছাড়িয়ে
যায় তা আবেগপূর্ণ ও ভাবালু।
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- ‘কাফের’ ঘোষণা! (পূর্ব প্রকাশিতের পর) অনুবাদক - আল্হাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
প্রতি গভীর মহব্বতের কারণে প্রত্যেক মুসলমানের বিশ্বাসই হল নুবূওওয়াতের চুড়ান্ত দলীল
এবং আল্লামা ইকবাল বলেন,
প্রত্যেক মুসলমানের জন্য, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি মহব্বতের গভীরতা বুঝতে, শেষ নবী হিসাবে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি বিশ্বাস করা
ঈমানের একটি অঙ্গ বিশেষ এবং উম্মাহ্র ঐক্য ও সংহতির জন্য হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম যে শেষ নবী,
বিশ্বাস করা একটি প্রধান উপাদান। উম্মাহ্র
ঘনিষ্টতার চেতনা এবং বিশুদ্ধতা ইহার মধ্যে দৃঢ়তা বৃদ্ধির সহায়তা করে। যাহা সাথে সাথে
উম্মাহ্র নানা অংশে বিভক্ত হওয়ার আবেগ প্রতিহত করে। সুতরাং প্রধান বিশ্বাসের ধারাকে
বিশুদ্ধ রাখার লক্ষ্যে উম্মাহ্,
নবী দাবীর কঠোর প্রতিবাদ করে। ফলশ্রুতিতে
ইসলাম ও শেষ নবীর (মির্জার দাবী) সাথে সম্বন্ধ স্থাপনের সকল প্রচেষ্টা (কাদিয়ানীদের)
তাঁরা (আহ্লে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত) অসন্তোষের সাথে প্রতিবাদ করে। কাদিয়ানীরা মুসলিম উম্মাহ্র অন্তর্ভূক্ত নয়।
ইহা তাদের নিজেদের আচরণেই প্রমাণিত। তারা একটি আলাদা উম্মাহ্ গঠন করেছে। আপাতঃ দৃষ্টিতে
স্ববিরোধী মনে হলেও সত্য বর্জিত নয় যে, তারা নিজেদেরকে
মুসলিম উম্মাহ্র বিকল্প হিসাবে জাহির করেছে এবং মুসলমানদের (আহ্লে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতে)
তাদের উম্মাহ্ থেকে বের করে নিয়েছে। মুসলমানরা তাদেরকে (কাদিয়ানীদের) মুসলিম উম্মাহ্
থেকে খারিজ হিসাবে মনে করে এবং বিশেষভাবে আজগুবী যে তারা (কাদিয়ানীরা) মুসলমানদেরকে
(আহ্লে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত) বাতিল বলে থাকে। ইহা পরিস্কার যে দুটি দল একই উম্মাহ্র
অন্তর্ভূক্ত নয়। মুসলিম উম্মাহ্র অন্তর্ভূক্তকে- প্রশ্নটি অনিষ্পন্ন থাকতে পারত যেহেতু, বৃটিশ অধিকৃত ভারতে প্রকাশ্য আলোচনার কোন ব্যবস্থা ছিলনা।
খ্রীষ্টান প্রোটেষ্ট্যান্ট মৌলবাদী আন্দোলনের মানসপুত্র, গান্ধীর ভাবশিষ্য তথাকথিত ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মুখপাত্র জাহেল ও গোমরাহ্্
পীর সাহেবের এক অন্ধ পুঁজারীর মিথ্যা সাফাই প্রসঙ্গে (পূর্ব প্রকাশিতের পর) অবশেষে পালের গোদা ধরা পড়েছে। ধরাটা মূলতঃ
নিতান্তই আহম্মকের কায়দায় ধরা খাওয়া। আহম্মকের গায়ে ময়লা যে রকম তিন জায়গায় লাগে, সেরকমই তিনবার তিন জায়গায় ধরা খাওয়া।
আমীরুল আহম্মক তথা আহম্মকদের আমীর
তথাকথিত এই নামধারী জাহিল পীর গত ২০শে আগষ্ট বক্তব্য দিয়েছিল, ‘নবুওয়তী বয়স আমার শেষ। তাই বাকী জীবনটা বোনাস বলে মনে করি।’ সঙ্গতকারনেই খতমে নুবুওওয়তের প্রেক্ষিতে তার এ বক্তব্য কুফরীর পর্যায়ে পড়ে বিধায়
হক্বের অতন্দ্র প্রহরী,
বাতিলের আতঙ্ক, মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর মতামত বিভাগে তার তীব্র প্রতিবাদ চলে আসছিল। সাবধান করা
হয়েছিল,
‘নব্য নুবুওওয়তের দাবীদারদের থেকে সাবধান
থাকুন।’
মূলতঃ সে আলোচনায় উক্ত ব্যক্তিকে সরাসরি
কাফির বলা হয়নি। তবে তাকে জাহিল সাব্যস্ত করে তার আলোচনাটা কুফরী হয়েছে, এই ছিল উক্ত বক্তব্যের সারকথা। যা কিনা ছিল জাহিল, তথাকথিত সে পীর-এর প্রতি নসীহত। আকল থাকলে উক্ত ব্যক্তি সহজেই তা স্বীকার করে বলতে
পারত, ‘আসলে নবী বা নুবুওওয়ত দাবী প্রকাশ পায় এমন কোন কথা বলা আমার
উদ্দেশ্য ছিলনা,
বর্ণিত বক্তব্যে নবুওয়তী বয়স না হয়ে বিষয়টি
সুন্নতী বয়সই হবে।’ উল্লেখ্য যে, “নবুওয়তী বয়স আমার
শেষ” জাহিল পীর সাহেবের এই বক্তব্যটি প্রকাশ পায় তারই মুখপত্র ৩/ক
পুরানা পল্টন থেকে প্রকাশিত একটি অখ্যাত পত্রিকার সেপ্টেম্বর সংখ্যায়। উক্ত সংখ্যায় সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক বর্ণনা করে, “তিনি বলেন,
আমার বয়স ৬৩ বছর হয়ে গেছে। ‘নবুওয়তী বয়স আমার
শেষ। তাই আমার বাকী জীবনটা বোনাস বলে মনে করি।” উল্লেখ্য, এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আল বাইয়্যিনাত অক্টোবর সংখ্যায় তার সমালোচনা করা হলে উক্ত
একই পত্রিকার অক্টোবর-নভেম্বর সংখ্যায় প্রতিবেদনের উক্ত ভাষ্য হুবহু তুলে ধরা হয় এবং
এ প্রেক্ষিতে ডিসেম্বর সংখ্যায়ও ঐ বক্তব্যের কোন রদ-বদল করা হয়না। এখানে উল্লেখ্য যে, এই পত্রিকাটির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে নাম পত্রস্থ হয় তথাকথিত সে জাহিল পীর সাহেবেরই।
এবং এই পত্রিকার সম্পাদক,
নির্বাহী সম্পাদক এই ফের্কার অত্যন্ত শক্তিশালী
কর্মী বলে সাব্যস্ত। এবং কেউ কেউ উক্ত আহম্মকের যুগ্ম মহাসচিবও বটে। অর্থাৎ কিনা এরা মূলতঃ জাহিল, তথাকথিত সে পীর সাহেবেরই বিশেষ দিক-নির্দেশনায় পরিচালিত। সহজ করণে বলা যায় যে, জাহিল,
তথাকথিত সে পীর সাহেবেরই সমর্থনে এই পত্রিকায়
লেখা প্রকাশ পায়। কিন্তু মজার ব্যাপার
হল, অন্য আরেকটি অখ্যাত মাসিক পত্রিকা যার সম্পাদকীয় কার্যালয় ওয়ারলেস
টি এন্ড টি কলোনী মসজিদ মার্কেট এবং যা ১০৮/৩, উত্তর বাড্ডা গুলশান
থেকে প্রকাশিত। যার উপদেষ্টা মন্ডলী, সম্পাদকীয় সদস্যগণ
একই ভাবে জাহিল,
গোমরাহ, তথাকথিত সে পীর
সাহেবের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন এবং একই ভাবে ঐ পত্রিকার পৃষ্ঠপোষক হিসেবেও জাহিল, তথাকথিত সে পীর সাহেবের নামই পত্রস্থ হয় উক্ত পত্রিকায় অক্টোবর-নভেম্বর ’৯৮ সংখ্যায়। প্রসঙ্গত অখ্যাত পত্রিকার উদ্ধৃতি উল্লেখ্য, “এখন পাঠক সমাজ বলতে পারেন উক্ত পত্রিকা এমন ভুল প্রতিবেদন প্রকাশ করল কিভাবে? এর উত্তরে আমরা শুধু এতটুকু বলতে পারি উক্ত অখ্যাত পত্রিকায় চরমোনাইর হুজুর সম্পর্কে
যে প্রতিবেদন ছাপিয়েছিল সেপ্টেম্বর ’৯৮ সংখ্যায় তা ছিল
সম্পূর্ণ ভুল। এখন পত্রিকা কর্তৃপক্ষ তা স্বীকার করুক বা না করুক সেটা তাদের ব্যাপার।
এ ব্যাপারে আপনারা তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। তবে
ঐ প্রতিবেদন সম্পর্কে আমরা সরাসরি চরমনোইর হুজুরের সাথে আলোচনা করেছি। তিনি দ্ব্যার্থহীন
কক্তে বলেছেন,
“আমার নবুয়তীর বয়স শেষ” এমন জঘন্য কথা আমি কখনই বলিনি, আল্লাহর ফজলে। এটা
সম্পূর্ণ মিথ্যা,
তিনি বলেন, আমি ২০শে আগষ্ট ’৯৮ তারিখে পল্টনে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মিটিং এ শুধু
একথা বলেছি,
আমার বয়স ৬৩ বছর পাড় হয়ে গেছে। সুতরাং
আমার সুন্নতী বয়স শেষ।”
প্রিয় পাঠক! সত্যিই যদি তথাকথিত এই জাহিল পীর একথা বলে থাকে, তবে নবুওয়তী বয়স সম্পর্কিত বর্ণনা তা পুরানা পল্টন থেকে প্রকাশিত পত্রিকায় আসল
কিভাবে এবং একবার নয় তারই পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত পত্রিকায় পর পর তিনবার সে বক্তব্য
পত্রস্থ হয় কি করে?
তাহলে কি আমরা বুঝব যে, ৩/ক,
পুরানা পল্টন থেকে প্রকাশিত পত্রিকাটি
তথাকথিত ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মুখপাত্র, হাক্বীকতে আমীরুল
আহম্মক,
জাহিল, সে পীর(৪৪ পৃষ্ঠায়
দেখুন) সম্পাদকীয় সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্
পাক-এর জন্য। যিনি পবিত্র মহামহিম। সর্বোত্তম
আখলাকের অধিকারী হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি অনন্ত কালের জন্য
অফুরন্ত সালাত ও সালাম। যিনি স্বীয় উম্মতকে ফিৎনা সম্পর্কে নসীহত করেছেন। যুগে
যুগে আল্লাহ্ পাক নবী-রাসূল ও আওলিয়া-ই-কিরাম (রঃ) প্রেরণ করে দুনিয়াকে ফিৎনা মুক্ত
করেন। কিন্তু মানুষ কালক্রমে বার বার দুনিয়াতে ফিৎনা-ফাসাদের অবতারণা করে। আল্লাহ্
পাক বলেন,
“পৃথিবীকে কুসংস্কার মুক্ত ও ঠিক করার পর
তাতে ফিৎনা তৈরী করো না।”
(সূরা কাসাস) উল্লেখ্য,
ফিৎনা তৈরী করা আল্লাহ্ পাক-এর কাছে খুবই
নাখোশের বিষয়। আল্লাহ্ পাক বলেন,
“ফিৎনা-ফাসাদ করা, দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা আল্লাহ্ পাক-এর কাছে হত্যার চেয়েও বেশী অপরাধ।” (সূরা বাক্বারা) অন্যত্র ইরশাদ করেন, “পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করতে প্রয়াসী হয়োনা। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক ফিৎনা-ফাসাদ সৃষ্টি
কারীকে পছন্দ করেননা। (সূরা কাসাস) সত্যের সাথে অহেতুক বিরোধ করাতেই ফিৎনার
উৎপত্তি। এই ধারাবাহিকতায় ইবলিশই সিজদা না করে; অন্যায় তর্ক করে
ফিৎনার প্রথম প্রচলন করেছিল এবং তার অনুচরেরা অনর্থক তর্ক করেই ফিৎনার বিস্তার ঘটায়। আল্লাহ্ পাক বলেন, “নিশ্চয়ই শয়তানেরা তাদের বন্ধুদেরকে প্রত্যাদেশ করে, যেন তারা তোমাদের (হক্ব পথাবলম্বীদের) সাথে তর্ক করে।” (সূরা আনআম) মূলতঃ সহীহ্ আক্বীদার
সাথে তর্ক করে এ যাবৎ ইসলামকে ঘিরে তৈরী হয়েছে হাজারো ফিৎনা। এ পর্যায়ে আল্লাহ্ পাক-এর
আকার-আকৃতি বর্ণনাকারী;
ইবনে তাইমিয়ার ফিৎনা, তক্বদীরের অপব্যাখ্যাকারী;
ক্বাদরিয়া ফিৎনা, খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী;
কাদিয়ানী ফিৎনা, বাহাই ফিৎনা,
হযরত আলী (রাঃ)কে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেয়ে বেশী প্রাধান্য দানকারী; শিয়া ফিৎনা, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মর্যাদা অমান্যকারী, মীলাদ ক্বিয়াম অস্বীকারকারী,
বেয়াদব, বিদয়াতী; ওহাবী ফিৎনা,
পাশাপাশি হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর মর্যাদা আল্লাহ্ পাক-এর সাথে একাত্মকারী এবং তাঁকে আল্লাহ্ পাক-এর জাতি
নূর ঘোষণাকারী;
অতি সুন্নী ফিৎনা, হযরত সাহাবা-ই-কিরাম(রাঃ)-এর সমালোচনাকারী, তাঁদেরকে সত্যের
মাপকাঠি হিসেবে স্বীকারে গররাজী;
খারেজী তথা মওদুদী ফিৎনা, ইসলামের নামে হারাম গণতান্ত্রিক রাজনীতিকারী তাবত নামধারী ইসলামী দলের ফিৎনা, ইসলামী আন্দোলনের নামে বিজাতীয়, বেহায়া, বিদয়াতী হারাম কাজ তথা লংমার্চ, কুশপুত্তলিকা দাহ, ব্লাসফেমী,
মৌলবাদ এস্তেমালকারী বর্তমান শাইখুল হদস
গং-এর ফিৎনা,
তথাকথিত ইসলামী পত্রিকা নিয়ে ব্যবসায়ী, ভুল ফতওয়া প্রদানে মানুষকে পথভ্রষ্টকারী, জাহেল মাহিউদ্দীনী
ফিৎনা, পীর-মুরীদীর নামে গোমরাহ্কারী; আহমক ফজলুলী ফিৎনা,
এ সবকিছু মিলিয়ে এক মহা ফিৎনার যুগে আমরা
অবস্থান করছি। এতসব ফিৎনার বেড়াজালে প্রকৃত পথ খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে কষ্টসাধ্য
আয়াসের ক্ষেত্রে অন্য হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “আখেরী জামানায় ঈমান
রক্ষা করা হাতের তালুতে গরম কয়লা রাখার চেয়েও কষ্টকর।” তবে কষ্টকর হলেও ফিৎনা নির্মূলে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোই
ঈমানী কর্তব্য। আল্লাহ্ পাক বলেন,
“আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর যে পর্যন্ত
না ফিৎনার অবসান হয় এবং আল্লাহ্ পাক-এর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়। (সূরা বাকারা) হাদীস
শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
“বণী ঈস্রাইলের মধ্যে তৈরী হয়েছিল বাহাত্তর
ফিরকা, আর উম্মতে মুহম্মদীর মধ্যে তৈরী হবে তিয়াত্তর ফিরকা।” স্মর্তব্য, উল্লিখিত সকল বাতিল ফির্কার মাঝে, আল্লাহ্ পাকের রাসূল-এর
সুন্নতের অনুসারী দলটিই সহীহ্ ও মকবুল। তাই বর্তমান ফিৎনার জামানায় প্রকৃত হক্ব দল খুজে পাওয়ার ক্ষেত্রে সুন্নতের মূল্যায়নই
একমাত্র মাপকাঠি আর দ্বীন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিদয়াত দূর করে সুন্নতের বাস্তবায়নই
একমাত্র পথ। হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “আমার উম্মতের ফিৎনা-ফাসাদের জামানায় একটি লুপ্ত প্রায় সুন্নত পালন করা, একশত শহীদের চেয়েও বেশী ফযীলত। এ প্রেক্ষিতে বিবেচ্য যে, যিনি যত বেশী সুন্নতের পাবন্দ তিনিই তত
বেশী মর্যাদাবান। মূলতঃ যারা উলামায়ে হক্বানী-রব্বানী তারাই
সুন্নতের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম পাবন্দের উপর গুরত্বারোপ করেন। মহান আল্লাহ্ পাক আমাদের সকলকে তাঁদের নেক সোহ্বতের
উসীলায় পরিপূর্ণ সুন্নতের আমলদার করে যাবতীয় ফিৎনা হতে হিফাযত করুন। (আমীন)
***************************************************************************************************
খতমে নুবুওওয়াত প্রচার
কেন্দ্র
খতমে নুবুওওয়াত
অস্বীকারকারীরা কাফির
(ইসলামী শরীয়তের হুকুম
মোতাবেক
যারা মুসলমান থেকে
খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়
(যেমন- কাদিয়ানী,
বাহাই ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত
সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে,
তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড)
(১)
কাদিয়ানী রদ!
(চতুর্থ ভাগ)
বাহরুল উলূম,
ফখরুল ফোক্বাহা,
রইছুল মোহাদ্দেসীন,
তাজুল মোফাসসেরীন,
হাফেজে হাদীস,
মুফতীয়ে আজম,
পীরে কামিল,
মুর্শিদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা
শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ) কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ” কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায়
ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা
থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক
আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো,
তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার
কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
মির্জ্জার আকায়েদ
নূরে মুহম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
ও তাঁর প্রাসঙ্গিক
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া
গবেষণা কেন্দ্র
মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ
[সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্
রাব্বুল আলামীনের জন্যে এবং অসংখ্য দরূদ ও সালাম আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব,
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
প্রতি। মহান আল্লাহ্ পাক-এর অশেষ রহ্মতে আমাদের গবেষণা কেন্দ্র,
“মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ”-এর ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে, বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের একমাত্র দলীল ভিত্তিক
মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত”
পত্রিকায় যথাক্রমে টুপির ফতওয়া,
অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান,
নিয়ত করে মাজার শরীফ জিয়ারত করা,
ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া,
জুমুয়ার নামাজ ফরজে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে
ফতওয়া, মহিলাদের মসজিদে গিয়ে
জামায়াতে নামাজ পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া,
কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া,
তাহাজ্জুদ নামাজ জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী
ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া,
ফরজ নামাজের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়
সম্পর্কে ফতওয়া, ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া,
তারাবীহ্-এর নামাজে বা অন্যান্য সময় কোরআন
শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়েয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া,
তারাবীহ্ নামাজ বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত
ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয়
সম্পর্কে ফতওয়া এবং খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া প্রকাশ করার
পর ১৮তম ফতওয়া হিসেবে “নূরে মুহম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার প্রাসঙ্গিক
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করে আসতে পারায় মহান আল্লাহ্ পাক-এর দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া।]
নূরে মুহম্মদী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার প্রাসঙ্গিক
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া
দেয়ার কারণ
হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক, দ্বীনের নির্ভীক সৈনিক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের একমাত্র
দলীলভিত্তিক মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় এযাবৎ যত লেখাই পত্রস্থ হয়েছে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য
বা লক্ষ্য এক ও অভিন্ন অর্থাৎ মাসিক আল বাইয়্যিনাতে এমন সব লেখাই পত্রস্থ করা হয়,
যা মানুষের আক্বীদা ও আমল সমূহ পরিশুদ্ধ করণে
সহায়ক।
অনুরূপ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত”-এর বর্তমান সংখ্যায় “নূরে মুহম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম”
ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার
উদ্দেশ্যও ঠিক তাই। কারণ এ ব্যাপারে আজ বহুদিন যাবৎ সারা বিশ্বেই দু’ধরণের ভ্রান্ত আক্বীদা প্রচারিত হয়ে আসছে। যেমন কেউ কেউ বলছে-
“সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
‘নূর মোবারকের’
তৈরী নন বরং তিনি মাটি ও রক্তে-গোশ্তে গড়া
আমাদের মতই মানুষ।”
আবার কেউ কেউ বলছে-“তিনি শুধু নূরের তৈরীই নন বরং মহান আল্লাহ্ পাক-এর ‘জাতি নূরের জ্যোতি’ অর্থাৎ মহান আল্লাহ্ পাক-এর নিজ নূর থেকে তৈরী।”
অথচ দালায়েলে আরবায়া অর্থাৎ কোরআন শরীফ,
হাদীস শরীফ,
ইজমা ও ক্বিয়াসের দৃষ্টিতে উল্লিখিত উভয় আক্বীদাই
কূফরীর অন্তর্ভূক্ত। কারণ প্রথমতঃ “তিনি নূরের তৈরী নন” একথা বলার অর্থই হলো- কোরআন শরীফের আয়াত ও একাধিক সহীহ্ হাদীস
শরীফকে অস্বীকার করা, যা সুস্পষ্ট কূফরী। কেননা কোরআন শরীফ ও হাদীস শরীফ দ্বারা অকাট্টভাবে
প্রমাণিত যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরের তৈরী। অর্থাৎ
“নূরে মুজাস্সাম।”
দ্বিতীয়তঃ তিনি মহান আল্লাহ্ পাক-এর নিজ নূর হতে তৈরী বলার অর্থ
হলো- মহান আল্লাহ্ পাককে নূর ও হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাঁর অংশী
সাব্যস্ত করা। যা শরীয়তের দৃষ্টিতে সুস্পষ্ট র্শিক ও অকাট্ট কূফরী।
এ ধরণের কূফরী আক্বীদা যারা পোষণ করে, তারা অবশ্যই আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত বহির্ভূত বাতিল ফেরকাহ।
আর যারা এ আক্বীদা পোষণ করা অবস্থায় মারা যাবে তারা চির জাহান্নামী। কারণ এ ধরনের আক্বীদায়
বিশ্বাসীরা শরীয়তের দৃষ্টিতে কাফের। যদিও তারা শরীয়তের অন্যান্য ব্যাপারে সঠিক আক্বীদা
পোষণ করে ও শরীয়তের যাবতীয় আমল সঠিকভাবে পালন করে। যেমন- ৭২টি বাতিল ফেরকাহ শরীয়তের
অধিকাংশ ব্যাপারে সঠিক আক্বীদা পোষণ করার ও নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি নেক আমল সমূহ পালন করার পরও কতিপয় বিষয়ে কূফরী
আক্বীদা পোষণ করার কারণে হাদীস শরীফে তাদেরকে জাহান্নামী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। অর্থাৎ
যারা দ্বীন ইসলামের মৌলিক বিষয়সহ প্রতিটি বিষয়েই কোরআন,
হাদীস, ইজমা ও ক্বিয়াস সম্মত আক্বীদা পোষণ করে তারাই নাজী বা নাজাত
প্রাপ্ত দল। অর্থাৎ আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অন্তর্ভূক্ত। আর যাদের আক্বীদা এর
বিপরীত তারা গোমরাহ্, বাতিল ও চির জাহান্নামী। যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে স্পষ্ট
উল্লেখ আছে যে-
ستفترق
امتى
على
ثلاث
وسبعين
ملة
كلهم
فى
النار
الا
ملة
واحدة
- قالوا
من
هى
يا
رسول
الله
قال
انا
عليه
واصحابى
- رواه
الترمذى
وفى
رواية
احمدو
ابى
دواد
عن
معاوية
ثنتان
وسبعون
فى
النار
و
واحدة
فى
الجنة
وهى
الجماعة.
অর্থঃ- “অতি শীঘ্রই আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে,
একটি দল ব্যতীত বাহাত্তরটি দলই জাহান্নামে
যাবে। তখন সাহাবা-ই-কিরাম (রাঃ)গণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যে একটি
দল নাযাত প্রাপ্ত, সে দলটি কোন দল? হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
আমি এবং আমার সাহাবা (রাঃ)গণের মত ও পথের
উপর যারা কায়েম থাকবে, (তারাই নাযাত প্রাপ্ত দল)।”
ইমাম তিরমিযী ইহা বর্ণনা করেন। আর মসনদে আহ্মদ ও আবূ দাউদের
বর্ণনায় “হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ)
হতে বর্ণিত আছে যে, ৭২টি দল জাহান্নামে যাবে, আর একটি দল জান্নাতে যাবে। মূলতঃ সে দলটিই হচ্ছে আহ্লে সুন্নত
ওয়াল জামায়াত।”
উল্লিখিত হাদীস শরীফ দ্বারা মূলতঃ এটাই বুঝানো হয়েছে যে,
“কলেমা গো মুসলমানই”
৭৩ দলে বিভক্ত হবে,
তন্মধ্যে ৭২টি দলই জাহান্নামী,
গোমরাহ্ ও বাতিল,
মূলতঃ তারা মুসলমানের অন্তর্ভূক্ত নয়। আর
একটি মাত্র দল জান্নাতী, আর সেটা হচ্ছে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত।
এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত মুহাদ্দিস,
রঈসুল মুহাদ্দিসীন,
ইমাম মুল্লা আলী ক্বারী (রঃ) তাঁর বিখ্যাত
কিতাব মিশকাত শরীফের শরাহ্ “মিরকাত শরীফ”-এর ১ম জিঃ ২৪৮নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন যে,
ونقل
الابهرى
ان
المراد
بالامة
امة
الاجابة
عند
الاكثر
(كلهم
فى
النار)
............. (الا ملة) بالنصب اى الا اهل ملة (واحدة قالوا من هى) اى تلك الملة اى اهلها الناجية ....... (قال ما انا عليه واصحابى) ............ فكذا هنا المرادهم المهتدون المتمسكون بسنتى وسنة الخلفاء الراشدين من بعدى فلاشك ولا ريب انهم هم اهل السنة والجماعة - وقيل التقدير اهلها من كان على ما انا عليه واصحابى من الاعتقاد والقول والفعل فان ذالك يعرف بالاجماع فما اجمع عليه علماء الاسلام فهو حق وما عداه باطل.
অর্থঃ- আবহুরী বর্ণনা
করেন, নিশ্চয় (হাদীস শরীফে
বর্ণিত) উম্মত শব্দ দ্বারা উম্মতে ইজাবত তথা “কলেমাগো”দেরকেই বুঝানো হয়েছে। অধিকাংশ আলেমগণের এটাই অভিমত। (উম্মতে
ইজাবতের) প্রত্যেক দল জাহান্নামী .......... একদল ব্যতীত। হযরত সাহাবা-ই-কিরাম (রাঃ)গণ
বললেন, সে দল কোনটি অর্থাৎ
নাযাত প্রাপ্ত দল কোনটি? .................. হুজুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
আমি ও আমার সাহাবা-ই-কিরাম (রাঃ)গণের মত ও
পথে যারা কায়েম থাকবে (তারাই নাযাত প্রাপ্ত দল) .......... মূলতঃ উহার দ্বারা এটাই
বুঝিয়েছেন যে, তারা হেদায়েতপ্রাপ্ত। আমার এবং আমার পর খোলাফা-ই-রাশেদীনগণের সুন্নত ধারণকারী।
অতএব, এতে কোন প্রকার সন্দেহ
নেই যে, তারাই আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত। আর বলা হয়েছে যে,
আক্বীদা, ক্বওল ও ফে’লের দিক থেকে তারা আমি ও সাহাবা-ই-কিরাম (রাঃ)গণের অনুসারী হবে।
এটা মূলতঃ ইজ্মা দ্বারা প্রমাণিত, ওলামায়ে ইসলাম যার উপর ইজ্মা করেছেন,
সেটাই হক্ব। এছাড়া (অর্থাৎ আহ্লে সুন্নত ওয়াল
জামায়াত ছাড়া) যা রয়েছে, সবই বাতিল।”
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে,
উম্মতে ইজাবত তথা “কলেমাগো” বা কলেমা পাঠকারীদের মধ্যেই আক্বীদা,
ক্বওল ও ফে’লের ভিত্তিতে ৭৩টি দল হবে, তন্মধ্যে একটি মাত্র দল নাযাতপ্রাপ্ত,
জান্নাতী ও হক্ব। আর ৭২টি দল জাহান্নামী,
গোমরাহ্ ও বাতিল। এ ব্যাপারে আহ্লে সুন্নত
ওয়াল জামায়াতের অনুসরণীয় সকল ইমাম, মুজ্তাহিদ, মুহাক্কিক, মুদাক্কিক, মুহাদ্দিস, মুফাস্সির, ফক্বীহ্ ও আওলিয়া-ই-কিরাম (রঃ)গণ একমত।
উক্ত হাদীস শরীফের ব্যাখ্যায় মিরকাত শরীফের উক্ত স্থানে আরো
উল্লেখ আছে যে,
واعلم
اصول
البدع
كما
نقل
فى
"المواقف"
ثماينة
(১) المعتزلة
....... وهم
عشرون
فرقة
(২) والشيعة
...... وهم
اثنان
وعشرون
فرقة
(৩) والخوارج
...... وهم
عشرون
فرقة
(৪) والمرجئة
........ وهى
خمس
فرقا
(৫) والنجارية
......... وهم
ثلاث
فرق
(৬) والجبرية
........ فرقة
واحدة
(৭) والمشبهة
....... فرقة
ايضا
فتلك
اثنان
وسبعون
فرقة
كلهم
فى
النار
(৮) والفرقة
الناجية
هم
اهل
السنة
البيضاء
المحمدية
والطريقة
النقية
الاحمدية-
অর্থ ঃ- “জেনে রাখ! (উক্ত ৭৩টি দল) প্রধাণতঃ ৮টি দলে বিভক্ত,
যা “মাওয়াক্বিফ” কিতাবে বর্ণিত রয়েছে -
১। মু’তাজিলাহ্ .............. এরা বিশ (২০) দলে বিভক্ত,
২। শিয়া .................. এরা বাইশ (২২) দলে বিভক্ত,
৩। খারেজী ................. এরা বিশ (২০) দলে বিভক্ত,
৪। মরজিয়্যাহ্ ............... এরা পাঁচ (৫) দলে বিভক্ত,
৫। নাজ্জারিয়্যাহ্
.............. এরা তিন (৩) দলে বিভক্ত,
৬। জাবারিয়্যাহ্
............. এরা এক (১) দলেই রয়েছে,
৭। মুশাব্বেহা
.............. এরাও এক (১) দলেই রয়েছে,
সুতরাং উল্লেখিত ৭২টি দল, তারা প্রত্যেকেই জাহান্নামী।
৮। আর (ناجية)
নাজিয়াহ্ বা নাযাত প্রাপ্ত দল, তারা হলো- সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
স্পষ্ট সুন্নত ও উজ্জ্বল তরীক্বতের অনুসারী। অর্থাৎ আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত।”
অতএব, বিখ্যাত মুহাদ্দিস, ইমাম মুল্লা আলী ক্বারী (রঃ)-এর উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা সুস্পষ্টভাবেই
প্রমাণিত হলো যে, উল্লেখিত ৭২টি দল “কলেমাগো” হওয়া সত্ত্বেও জাহান্নামী, গোমরাহ্ ও বাতিল তথা অমুসলিম। আর যাদের আক্বীদা ও আমল আহ্লে
সুন্নত ওয়াল জামায়াত তথা কোরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, ইজ্মা ও ক্বিয়াস ভিত্তিক, একমাত্র তারাই নাযাতপ্রাপ্ত।
এছাড়াও মেশকাত শরীফের শরাহ্- শরহুত্ ত্বীবী,
আশয়াতুল লুময়াত,
তানযীমুল আশতাত,
মোযাহেরে হক্ব,
তা’লীকুছ ছবীহ্, মিরআতুল মানাজীহ্ ও রদ্দে রাওয়াফেজ,
তোহ্ফায়ে ইছ্না আশারীয়া,
গুনিয়াতুত ত্বালেবীন,
তালবীসুল ইবলীস ইত্যাদি আরো অনেক কিতাবেই
উল্লেখিত ৭২টি দলকেই
(كلهم فى لنار الا ملة واحدة)
এ হাদীস শরীফের ভিত্তিতে
গোমরাহ্, বাতিল ও জাহান্নামী বলা হয়েছে।
কারণ,
তাদের ঈমান-আক্বীদা,
আমল-আখলাক সম্পূর্ণই কোরআন শরীফ,
হাদীস শরীফ,
ইজ্মা ও ক্বিয়াসের বিপরীত। অথচ আল্লাহ্ পাক
কালামে পাকে এরশাদ করেন,
والعصر
- ان
الانسان
لفى
خسر
الا
الذين
امنوا
وعملوا
الصالحات-
অর্থ ঃ- “আছরের সময়ের কসম! সকল মানুষ ধ্বংসপ্রাপ্ত একমাত্র তারা ব্যতীত,
যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে।”
(সূরা আছর)
উল্লেখিত আয়াত শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে,
যাদের আক্বীদা ও আমল কোরআন শরীফ,
হাদীস শরীফ,
ইজ্মা ও ক্বিয়াস ভিত্তিক,
একমাত্র তারাই নাযাতপ্রাপ্ত ও ধ্বংস হতে মুক্ত।
সাথে সাথে এটাও প্রমাণিত হলো যে, সর্ব প্রথম ঈমান বা আক্বীদাকে দুরুস্ত করতে হবে অর্থাৎ দ্বীন
ইসলামের প্রতিটি বিষয়ে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত ভিত্তিক আক্বীদা পোষণ করতে হবে,
অতঃপর ‘আমলে সালেহ্’ করতে হবে।
আর হাদীস শরীফে সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন,
تركت
فيكم
امرين
لن
تضلوا
ما
تمسكتم
بهما
كتاب
الله
وسنتى.
অর্থঃ- “তোমাদের নিকট আমি দু’টি জিনিস রেখে গেলাম, যতদিন তোমরা এ দু’টোকে আঁকড়িয়ে ধরে থাকবে, অর্থাৎ অনুসরণ-অনুকরণ করবে, তোমরা গোমরাহ্ বা পথভ্রষ্ট হবেনা। সে দু’টো হলো- ১। কোরআন শরীফ ও ২। হাদীস শরীফ।”
(মেশকাত, মেরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ্, মোযাহেরে হক্ব)
অন্য হাদীস শরীফে এরশাদ
হয়েছে,
ومن
يعش
منكم
بعدى
فسيرى
اختلافا
كثيرا
فعليكم
بسنتى
وسنة
الخلفاء
الراشدين
المهديين
تمسكوا
بها
وعضوا
عليها
بالنواجذ.
অর্থঃ- “আমার পর তোমরা যারা পৃথিবীতে থাকবে,
তারা অনেক মতবিরোধ দেখতে পাবে। সুতরাং তখন
তোমাদের জন্যে আমার সুন্নত ও আমার খোলাফা-ই-রাশেদীনগণের সুন্নত অবশ্য পালনীয়। তোমরা
মাড়ীর দাঁত দিয়ে মজবুত করে তা আঁকড়িয়ে ধর।” (মেশকাত, মেরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ্, মোযাহেরে হক্ব)
উপরোক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীস শরীফের দৃষ্টিতে এটাই বুঝা যাচ্ছে
যে, নাযাতপ্রাপ্ত তথা খাঁটি
মুসলমান হতে হলে সর্ব প্রথম দ্বীন ইসলাম বিশেষ করে দ্বীন ইসলামের মৌলিক বিষয় সম্পর্কে
আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত ভিত্তিক সঠিক আক্বীদা পোষণ করতে হবে। অতঃপর আমলে সালেহ্
তথা কোরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, ইজ্মা ও ক্বিয়াসকে অনুসরণ-অনুকরণ করতে হবে। আর তাই আল্লাহ্র রাসূল,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,
ما
انا
عليه
واصحابى
অর্থাৎ “যাদের আক্বীদা ও আমল, আমি ও আমার সাহাবা-ই-কিরাম (রাঃ)গণের আক্বীদা ও আমলের ন্যায়
হবে, একমাত্র তারাই নাযাতপ্রাপ্ত।”
আর যারা উল্লেখিত আক্বীদা ও আমলের অনুসারী,
তারাই আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অন্তর্ভূক্ত।
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটাই ছাবেত হলো যে,
বিশুদ্ধ তথা শরীয়ত সম্মত আক্বীদা ব্যতীত আমলের
কোনই মূল্য নেই। অর্থাৎ কূফরী আক্বীদা পোষণ করে যতই নেক আমল করা হোক না কেন,
তা মহান আল্লাহ্ পাক-এর দরবারে মোটেও গ্রহণযোগ্য
নয়। তাই আক্বীদাকে বিশুদ্ধ রাখা বা শরীয়ত সম্মত আক্বীদা পোষণ করা যেরূপ সকলের জন্য
ফরজ। তদ্রুপ আক্বীদা সংক্রান্ত বিষয়ে জরুরত আন্দাজ ইল্ম অর্জন করাও প্রত্যেকের জন্য
ফরজ।
অতএব, “নূর” সম্পর্কিত বিষয়ে যারা বিভ্রান্তিতে রয়েছে তাদের সে বিভ্রান্তি
দূরীকরণে ও “নূর”
সম্পর্কে সঠিক,
দলীল ভিত্তিক ও শরীয়ত সম্মত ফায়সালা তুলে
ধরাই মাসিক আল বাইয়্যিনাতে “নূরে মুহম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার প্রাসঙ্গিক
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার মূল উদ্দেশ্য। যাতে করে সকলেই দ্বীন সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয়ে
আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত-এর আক্বীদার অনুরূপ আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং তদানূযায়ী
আমল করে মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব, নূরে মুজাস্সাম হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
খাছ রেজামন্দী হাছিল করতে পারে।
তাই আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাতে পর্যায়ক্রমে “নূর মোবারক” ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সমূহের সঠিক ও শরীয়ত সম্মত ফায়সালা তুলে
ধরার চেষ্টা করবো-ইনশাআল্লাহ্।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
নূর তথা “নূরে মুজাস্সাম হওয়ার
হাদীসী দালায়েল”
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
যে, “নূরে মুজাস্সাম”
তাঁর একটি উজ্জ্বল,
সুস্পষ্ট ও অকাট্য দলীল হলো,
“ছায়াহীন কায়া মোবারক।”
কারণ অসংখ্য অনুসরনীয় ও বিখ্যাত ইমাম-মুজতাহিদ,
মুহাদ্দিস-ফক্বীহ ও ওলীগণের মত এই যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেহ মোবারকের
কোন ‘ছায়া’
ছিলনা, কেননা তিনি ছিলেন আপাদমস্তক ‘নূর’। এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত ও প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আল্লামা হাকীম তিরমিযী
(রঃ) তাঁর “নাওয়াদেরুল উছূল” কিতাবে হাদীস বর্ণনা করেন,
اخرج
الحكيم
الترمذى
عن
ذكوان
فى
"نوادر
الاصول"
ان
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم
لم
يكن
يرى
له
ظل
فى
شمس
ولاقمر
অর্থঃ- হযরত হাকীম
তিরমিযী (রঃ) “নাওয়াদেরুল উছূল”
কিতাবে হযরত জাকওয়ান থেকে বর্ণনা করেন। নিশ্চয়ই
সূর্য ও চাঁদের আলোতেও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর “ছায়া মোবারক” দেখা যেত না।” ইমামুল মুহাদ্দেসীন আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ূতী (রঃ) ও তাঁর
“খাছায়েছুল কোবরা”
নামক কিতাবে উক্ত হাদীস শরীফ খানা উল্লেখ
করে এ মতের সমর্থন করেন।
কেউ কেউ বলে থাকে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর “ছায়া মোবারক” ছিল না এ কথা ঠিক নয়। কারণ সিহাহ্ সিত্তাহ্ সহ কোন হাদীস শরীফেই
এ সম্পর্কিত কোন সহীহ্ হাদীস শরীফ বর্ণিত নেই। আর হযরত হাকীম তিরমিযী (রঃ) বর্ণিত হাদীস
শরীফ খানা জঈফ, অনেকে মওজুও বলেছেন।
একথার জবাবে প্রথমতঃ
বলতে হয় যে, কোন হাদীস শরীফ সহীহ্ হতে হলে সিহাহ্ সিত্তায় থাকতে হবে এরূপ কোন শর্ত শরীয়তে নেই।
কারণ সিহাহ্ সিত্তার বাইরেও আরো ৫০ এর অধিক সহীহ্ হাদীস শরীফে কিতাব রয়েছে।
দ্বিতীয়তঃ বলতে হয়
যে, ফাযায়েল বর্ণনার ক্ষেত্রে
জঈফ হাদীস শরীফই দলীল হিসেবে যথেষ্ট। যেমন এ প্রসঙ্গে ইমামুল মুহাদ্দেসীন, আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী (রঃ)-তাঁর মওজুয়াতুল কবীরে”
উল্লেখ করেন,
الضعيف
يعمل
به
فى
فضائل
الاعمال
اتفاقا
ولذا
قال
ائمتنا
ان
مسح
الرقبة
مستحب
او
سنة.
অর্থঃ- “সকলেই একমত যে, জঈফ হাদীস শরীফ ফযীলত হাছিল করার জন্য আমল করা জায়েয। আর তাই
আমাদের সম্মানিত ইমামগণ বলেন যে, ওযুর মধ্যে গর্দান মসেহ্ করা মুস্তাহাব বা সুন্নত।”
শুধু তাই নয়, যেক্ষেত্রে জঈফ হাদীস শরীফ রয়েছে,
সেক্ষেত্রে কোন প্রকার ক্বিয়াসও গ্রহণযোগ্য
নয়। তাই সকল ইমামগণই ব্যক্তিগত রায় বা ক্বিয়াসের উপর জঈফ হাদীস শরীফকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে ইমামুল মুজ্তাহিদীন, ইমামুল বাহ্রে ওয়াল বার, ইমামুল আইম্মা, ইমামুল আ’যম, হযরত আবু হানীফা (রঃ) বলেন,
الخبر
الضعيف
عن
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم
اولى
من
القياس
ولا
يحل
القياس
مع
وجوده.
অর্থঃ-“সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত জঈফ হাদীস
শরীফ ক্বিয়াস থেকে উত্তম। আর জঈফ হাদীস শরীফ পাওয়া যাওয়া সত্ত্বেও ক্বিয়াস করা হারাম।”
(মুকাদ্দিমায়ে ইলাউস্ সুনান)
তৃতীয়তঃ বলতে হয় যে, এমন কোন হাদীস শরীফের কিতাব নেই,
যে কিতাবের সকল হাদীস শরীফ সহীহ্ বা বিশুদ্ধ
হওয়ার ব্যাপারে সকল মুহাদ্দিসগণ একমত হয়েছেন। বরং কোন একখানা হাদীস শরীফকে কোন একজন
সহীহ্ বলেছেন, অন্য একজন সেটাকে জঈফ বা হাসান বলেছেন। যেমন- ইমাম বোখারী ও মুসলিম (রঃ) এমন বহু
হাদীস শরীফ সহীহ্ নয় বলে ছেড়ে দিয়েছেন, অথচ সেগুলোকেই ইমাম আবূ দাউদ, ইমাম তিরমিযী, ইমাম নাসাঈ, ইমাম ইবনে মাজা, ইমাম দারে কুতনী (রঃ) প্রমুখ ইমামগণ সহীহ্ বলে গ্রহণ করেছেন।
আবার এমন অনেক হাদীস শরীফ রয়েছে,
যেগুলো ইমাম বোখারী ও মুসলিম (রঃ) সহীহ বলে
গ্রহণ করেন, কিন্তু সিহাহ্ সিত্তার অন্যান্য ইমামগণ সেগুলো সহীহ্ নয় বলে পরিত্যাগ করেন। (সায়েকাতুল
মুসলিমীন)
আর তাই বিখ্যাত মুহাদ্দিস হযরত মুল্লা আলী ক্বারী (রঃ) বলেন,
ইমাম সাখাবী (রঃ) “আলফিয়া” কিতাবের হাশিয়ায় উল্লেখ করেন যে,
“সহীহ্ বোখারীর ৮০ জন ও সহীহ্ মুসলিমের ১৬০
জন রাবীর বর্ণনাকৃত হাদীস জঈফ বলে প্রমাণিত হয়েছে।” (নুয্হাতুন্ নাজার)
ইমাম নববী (রঃ) বলেন, “ইমাম দারে কুত্নী, আবূ আলী ও আবূ দাউদ দামেস্কী (রঃ) সহীহ্ বোখারী ও মুসলিমের ২০০
হাদীসকে জঈফ বলে উল্লেখ করেন।” (মুকাদ্দিমায়ে শরহে মুসলিম)
ইমাম কুস্তলানী (রঃ)
বলেন, “সহীহ্ বোখারীতে এরূপ
হাদীসও রয়েছে, যা কারো মতে সহীহ্ আর কারো মতে জঈফ।” (শরহে বোখারী)
কাশ্ফুয্যুনূন, মুকাদ্দিমায়ে ফাতহুল বারী ইত্যাদি কিতাবে সহীহ্ বোখারী শরীফের
কিছু কিছু হাদীসকে জঈফ বলে প্রমাণ করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, সহীহ্ বোখারী ও মুসলিম শরীফে ২০জন মরজিয়া,
২৩জন কদ্রিয়া,
২৮জন শিয়া, ৪জন রাফেজী, ৯জন খারেজী, ৭জন নাসেবী ও ১জন জহ্মিয়া কর্তৃক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। (সায়েকাতুল
মুসলিমীন)
অতএব, প্রমাণিত হলো যে, সকল সহীহ্ হাদীসের কিতাবেই কারো কারো মতে কিছু সংখ্যক জঈফ হাদীস
রয়েছে। কাজেই জঈফ হাদীস মাত্রই পরিত্যাজ্য বা বাতিল নয়। কারণ কোন হাদীস শরীফকে কেউ
জঈফ বললেও অন্য আরেকজন সেটাকে সহীহ্ বলেছেন। সুতরাং কেউ কেউ উক্ত হাদীস শরীফখানা জঈফ
বা মওজু বললেও সকল মুহাদ্দিসগণের নিকট এই হাদীস শরীফখানা জঈফ বা মওজু নয়। কেননা হাদীস
শরীফ সমূহের মধ্যে এইরূপ অনেক হাদীস শরীফ রয়েছে যাকে কোন কোন মুহাদ্দিস জইফ বা মওজু বা অন্য কিছু বলেছেন। আবার কোন কোন মুহাদ্দিস সে হাদীসকেই সহীহ্,
হাসান,মারফূ, মুরসাল ইত্যাদিও বলেছেন।
অতএব উক্ত হাদীস শরীফখানা
সম্পর্কে একাধিক বর্ণনা থাকা সত্ত্বেও শুধু মওজু বলে উল্লেখ করা জেহালত বৈ কিছুই নয়।
কেননা উক্ত হাদীস শরীফখানা যদি শুধু মওজুই হতো অর্থাৎ একেবারে অগ্রহণযোগ্য হতো তাহলে
বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস হযরত মুল্লা আলী ক্বারী (রঃ),
ইমাম হাকিম তিরমীযী (রঃ),
হাফেজ ইবনে জাওযী (রঃ),
ইমাম জুরকানী (রঃ),
ইমাম সূয়ুতী (রঃ) এর মত বিশ্ব বিখ্যাত সর্বজন
মান্য মুহাদ্দিসগণ উক্ত হাদীস শরীফখানা তাঁদের স্বলিখিত কিতাবে বর্ণনা করে তার বরাত
দিয়ে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছায়া মোবারক ছিলনা বলে উল্লেখ করতেন
না। তাছাড়া ‘ইকতেবাছ’
কিতাবের লেখক আল্লামা ইমাম ইবনুল হাজ (রঃ)
বলেন (ছায়ার ন্যায়) এ ধরনের মাসয়ালা সমূহের ক্ষেত্রে এরূপ সনদ বিশিষ্ট হাদীসই যথেষ্ট।
কেননা ইহা হারাম, হালালের মাসয়ালা নয়।
এছাড়া বিশিষ্ট সূফী,
ফক্বীহ, বিশ্বখ্যাত মুহাদ্দিস ও বুযুর্গ,
যিনি প্রতিদিন হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর যিয়ারতে ধন্য হতেন, তিনি হচ্ছেন শায়খে মুহাক্কিক্ব হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিস দেহলভী
(রঃ) তাঁর ‘মাদারিজুন নুবুওয়াত’
কিতাবে উল্লেখ করেছেন যে,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
ছায়া মোবারক ছিলনা।
অনুরূপভাবে বিশ্বখ্যাত মুফাস্সিরে আ’যম ও মুদাক্কিক্ব, বিশিষ্ট মুহাদ্দিস, ফক্বীহ, বুযুর্গ ও সূফী হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলভী (রঃ)
তাঁর ‘তাফসীরে আযীযীতে’
উল্লেখ করেন যে,
আল্লাহ্র রাসূল হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর “ছায়া মোবারক”
ছিলনা।
আরো উল্লেখযোগ্য যে, যিনি আফজালুল আউলিয়া, কাইউমে আউয়াল, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী (রঃ),
যাঁর সম্পর্কে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর হাদীস বর্ণিত রয়েছে- ‘জামউল জাওয়াম ও জামিউদ্ দোরার’
কিতাবে। তিনি তাঁর বিশ্ববিখ্যাত ও বিশ্বসমাদৃত
‘মাকতুবাত শরীফ”,
যার সম্পর্কে তিনি নিজেই বলেছেন যে,
আমি যখন এই সমস্ত মাকতুব লিপিবদ্ধ করি তখন
আমি নিজেই দেখেছি, আল্লাহ্ পাক-এর তরফ থেকে ফেরেশ্তারা আমার ঘর পাহারা দিচ্ছেন এর কারণ হচ্ছে,
যাতে আমার মাকতুবে শয়তান কোন প্রকার ওয়াস্
ওয়াসা দিতে না পারে। তিনি আরো উল্লেখ করেন- আমার পরবর্তীতে যখন হযরত ইমাম মাহদী (আঃ)
যমীনে আগমন করবেন, তখন তাঁর কাছে আমার এ মাকতুবাত পেশ করা হবে। তিনি মাকতুবাতে লিখিত বিষয় সমূহকে
সত্য বলে প্রতিপাদন করবেন।
স্মরণীয় যে, এই মাকতুবাত শরীফেই আফজালুল আউলিয়া,
কাইউমে আউয়াল,
হযরত মুজাদ্দিদে আল্ফেছানী (রঃ) বলেন যে,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
“ছায়া মোবারক”
ছিলনা। এছাড়াও
আরো বহু ওলামা-ই-কিরাম উক্ত হাদীস শরীফের উপর ভিত্তি করে নিজ নিজ কিতাবে লিখেছেন যে,
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
ছায়া মোবারক ছিলনা। এর দ্বারা সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে,
অনুসরণীয় ওলামা-ই-কিরাম (রঃ) গণ উক্ত হাদীস
শরীফের উপর আস্থা স্থাপন করেছেন বা উক্ত হাদীস শরীফকে নিঃসংকোচে কবুল করে নিয়েছেন।
আর উছূলের কিতাবে উল্লেখ আছে যে, অর্থাৎ “কোন হাদীস শরীফকে ইমামগণ নিঃসংকোচে কবুল করে নেয়াই উক্ত হাদীস
শরীফখানা শক্তিশালী বা সহীহ্ হওয়ার জন্যে যথেষ্ট। ইমাম তিরমিযী (রঃ) তাঁর “জামে” তে এ দিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। আর আলেমগণ তা উছূলের কিতাবে সুস্পষ্টভাবে
বর্ণনা করেছেন।
সুতরাং হযরত হাকীম তিরমিযী (রঃ) বর্ণিত ছায়া সম্পর্কিত হাদীস
শরীফ খানা যেহেতু ওলামা-ই-কিরাম গণ কবুল করে নিয়েছেন,
তাই এ দৃষ্টিকোন থেকে উক্ত হাদীস শরীফখানা
শক্তিশালী বা সহীহ্।
বিশ্ববিখ্যাত হক্কানী
ওলামা-ই-কিরাম “ছায়া”
সম্পর্কিত হাদীস
শরীফকে কবুল করে নেয়ার
আরো প্রমাণ
(পুর্ব প্রকাশিতের পর)
পূর্ববর্তী আলোচনা দ্বারা এটাই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত
হলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম “নূর” তথা ‘নূরে মুজাস্সাম’ তাই চন্দ্র বা সূর্যের আলোতে তাঁর জিস্ম বা শরীর মোবারকের ‘ছায়া’ মাটিতে পড়তোনা। সাথে সাথে এটাও প্রমাণিত হলো যে,
বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা হাকীম তিরযিযী
(রঃ) বর্ণিত ‘ছায়া’
সম্পর্কিত হাদীস শরীফখানা সহীহ্ ও শক্তিশালী।
কারণ পৃথিবীর প্রায় সকল বিখ্যাত ও অনুসরণীয় হক্বানী ওলামা-ই-কিরামগণ উক্ত হাদীস শরীফখানাকে
বিনা দ্বিধায় কবুল করে নিয়েছেন। যেমন,
রঈসুল মুহাদ্দিসীন,
আল্লামা হযরত জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রঃ),
ইমামুল মুফাস্সিরীন,
আল্লামা হাফেজ ইবনে জাওযী (রঃ),
বাহরুল উলূম,
আল্লামা ইবনে সাবা (রঃ),
শায়খুল ওলামা,
আল্লামা শায়খ ইব্রাহীম বেজোরী (রঃ),
ইমামুল মুহাদ্দিসীন,
আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী (রঃ),
হাফিজুল হাদীস,
আওলাদে রাসূল আল্লামা সাইয়্যিদ যুরকানী (রঃ),
ওলীয়ে কামিল আল্লামা হুসাইন ইবনে মুহম্মদ দিয়ারে বিরকী(রঃ),
আশেকে রাসূল,
আল্লামা সুলায়মান জামাল (রঃ),
ফক্বীহুল উম্মত শায়খ মুহম্মদ তাহের (রঃ),
ইমামুল জলীল আল্লামা কাজী আয়াজ (রঃ),
আলিমুল ফাযিল আল্লামা মুহম্মদ বিন সিবান
(রঃ), ইমামুল আইম্মা আল্লামা
আহমদ বিন মুহম্মদ কুস্তলানী (রঃ), বিখ্যাত বুযুর্গ ইমাম ইবনে হাজর মক্কী (রঃ),
তাজুল মুফাস্সীরিন,
আল্লামা মাহমূদ নাসাফী (রঃ),
কাইয়্যূমুজ্জামান হযরত মুজাদ্দিদে আলফে সানী
(রঃ), শায়খুল মুহাদ্দিসীন
শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলবী (রঃ), ফক্বীহুল আছর, আল্লামা শাহ্ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলবী (রঃ),
ও বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা শিহাবুদ্দীন
খাফফাজী (রঃ)সহ বিখ্যাত অনেকেই আল্লামা হাকীম তিরমিযী (রঃ) বর্ণিত হাদীস শরীফের উপর
ভিত্তি করে ফতওয়া দেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেহ মোবারকের
“ছায়া”
ছিল না। আর তাঁর দেহ মোবারকের “ছায়া” না থাকার কারণ হলো, তিনি আপাদমস্তক ‘নূর’ তথা নূরে মুজাস্সাম।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ‘নূর’ তথা নূরে মুজাস্সাম তা প্রমাণ করতে গিয়ে হক্বের অতন্দ্র প্রহরী,
বাতিলের আতঙ্ক,
মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় এযাবত প্রায়
১৭০টি দলীল পেশ করা হয়েছে। তন্মধ্যে গত সংখ্যায় “ছায়াহীন কায়া মোবারক” সম্পর্কে কতিপয় দলীল পেশ করা হয়েছিল এ সংখ্যায়ও কতিপয় দলীল পেশ
করা হলো-
(১৭১)
বিখ্যাত ও সুপ্রসিদ্ধ
সীরাত গ্রন্থ “নূরুল আবছার ফী মানাক্বেবে
আলে নাবিয়্যিল আত্হার” নামক কিতাবে উল্লেখ আছে,
لم
يقطع
ظله
على
الارض
ولا
روى
له
ظل
فى
شمس
ولا
فى
قمر -
অর্থঃ- “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেহ মোবারকের
“ছায়া”
জমিনে পড়তো না। আর সূর্য ও চন্দ্রের আলোতেও
তাঁর “ছায়া”
দেখা যেত না।
(১৭২)
বিখ্যাত মুহাদ্দিস
ও ফক্বীহ আল্লামা ইউসুফ নাবেহানী (রঃ) তাঁর বিখ্যাত কিতাব “জাওয়াহিরুল বিহার”-১ম জিঃ ৪৫৩ পৃষ্ঠায় লিখেন,
وكان
اذا
مشى
فى
قمر
او
شمس
لا
يظهر
له
ظل-
অর্থঃ- “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সূর্য ও চন্দ্রের
আলোতে হাঁটতেন তখনও তাঁর “ছায়া” পড়তো না।”
(১৭৩)
বিখ্যাত সূফী সাধক,
কবিকুল শিরমনী,
আল্লামা জালালুদ্দীন রুমী (রঃ) তাঁর বিখ্যাত
কিতাব “মছনবী শরীফে”
লিখেন,
چو
فنا
شی
از
فقر
پیرایہ
بود
او
محمد
وار
بے
سایہ
بود-
অর্থঃ “যে ব্যক্তি সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
‘জাত মোবারকে’
ফানা হবে, সে ব্যক্তি তাঁর মত “ছায়াহীন” হয়ে যাবে।
(১৭৪-১৭৫)
মছনবী শরীফের উক্ত
বক্তব্যের ব্যখ্যায় বাহরুল উলূম, হযরতুল আল্লামা আব্দুল আলী (রঃ) “শরহে মছনবীতে” উল্লেখ করেন,
مصرع
ثانى
بمعجزهء
ان
سرور
صلى
الله
عليه
وسلم
كه
ان
سرور
صلى
الله
عليه
وسلم
را
سايه
نمى
افتاد-
অর্থঃ- “দ্বিতীয় পদ্যাংশ দ্বারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
ম’ুযিযা এর প্রতিই ইঙ্গিত
করা হয়েছে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেহ মোবারকের
“ছায়া”
পড়তো না।”
(১৭৬)
কাইয়্যুমে আউয়াল,
আফজালুল আউলিয়া,
শায়খ আহমদ ফারুকী সিরহিন্দী হযরত মুজাদ্দেদে
আলফে সানী (রঃ) তাঁর জগৎখ্যত কিতাব “মাকতুবাত শরীফ” ৩য় জিঃ ১৫৫ পৃষ্ঠায়
আরো লিখেন,
واجب
را
تعالی
چرا
ظل
بود
کہ
ظل
موھم
تولید
مثل
است
و
مبنئی
ازشابہ
عدم
کمال
لطافت
اصل
ھرکاہ
محمد
رسول
اللہ
صلی
اللہ
علیہ
وسلم
را
از
لطافت
ظل
نبود
خداے
محمد
را
چگونہ
ظل
باشد-
অর্থঃ- “মহান আল্লাহ্ পাক-এর কি করে “ছায়া” পড়তে পারে? “ছায়া” তো তিনিই সৃষ্টি করেছেন। তবে কি তাঁর কোন মেছাল রয়েছে?
তবে কি তিনি কামালে লাতাফাত-এর অধিকারী নন?
দেখুন সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম “কামালে লাতাফাত-এর অধিকারী হওয়ার কারণে তাঁর দেহ মোবারকের “ছায়া” পড়তো না। যদি তাই হয়ে থাকে তবে মহান আল্লাহ্ পাক-এর কি করে ‘ছায়া’ থাকতে পারে।
(১৭৭)
সুন্নী জামায়াতের ইমাম
আল্লামা আহ্মদ রেজা খান ব্রেলবী (রঃ) তাঁর “নাফিয়্যূল ফায়” কিতাবের ৩য় পৃষ্ঠায় লিখেন,
بے
شک
اس
مھر
سپھر
اصفاء
ماہ
منیر
اجتباء
صلی
اللہ
علیہ
وسلم
کے
لے
سایہ
نہ
تھا
اور
یہ
امر
احادیث
و
اقوال
علماء
کرام
سے
ثابت
اور
اکابر
ائمہ
وجھابذ
فضلاء
مثل
حافظ
رزین
محدث
و
علامۃ
ابن
سبع
صاحب
شفاء
الصدور
و
امام
علامۃ
قاضی
عیاض
صاحب
کتاب
الشفاء
فی
تعریف
حقوق
المصطفی
و
امام
عارف
باللہ
سیدی
جلال
الملۃ
و
الدین
محمد
بلخی
رومی
قد
سرہ
... وغیرھم
دائما
اپنی
تصانیف
مین
اسکی
تصریح
کرتے
اے-
অর্থঃ- নিঃসন্দেহে
মহরে সাপহারে আছফা, মাহে মুনীরে ইজতেবা, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেহ মোবারকের
‘ছায়া’
ছিলনা। এটা অসংখ্য হাদীস শরীফ ও ওলামায়-ই-কিরামগণের
ক্বওল দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত। অনুরূপ আকাবিরে আইম্মা ও জগৎখ্যত ফাযিলগণ যেমন
হাফেয রযীন, মুহাদ্দিস ও আল্লামা ইবনে সাবা ছাহেবে শেফাউছ্ছুদূর,
ইমাম ও আল্লামা ক্বাজী আয়াজ ছাহেবে কিতাবুশ
শেফা ও ইমাম আরেফ বিল্লাহ্, সাইয়্যিদী জালালূল মিল্লাতে ওয়াদদ্দীন মুহম্মদ বলখী রুমী (রঃ)সহ
........ আরো অনেক ইমাম, মুজতাহিদ, ওলামা-ই-কিরাম সর্বদা নিজ কিতাব সমূহে এটা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা
করেছেন।
(১৭৮)
মুফতী আহমদ ইয়ার খান
নঈমী সাহেব তাঁর রচিত “রেসালায়ে নূর” নামক কিতাবের ২য় বাব ৪৯ পৃষ্ঠায় লিখেন,
اللہ
تعالی
نے
اپنے
محبوب
صلی
اللہ
علیہ
وسلم
جھان
اور
صدھا
معجزے
بخشے
و
ھان
یہ
معجزہ
بھی
عطا
فرمایا
کہ
حضور
کے
جسم
شریف
کو
بے
سایہ
بنایا
دھوپ
چاندنی
چراغ
و
غیرہ
کی
روشنی
مین
اپ
کے
جسم
اطھر
کا
بالکل
سایہ
نہ
پرھتا
تھا-
অর্থঃ- “মহান আল্লাহ্ পাক তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে
যে সকল মু’যিযাহ প্রদান করেছেন,
তন্মধ্যে এটাও একটি মু’যিযা যে, তাঁর দেহ মোবারকের “ছায়া” ছিল না। সূর্য, চন্দ্র ও বাতির আলোতে তাঁর দেহ মোবারকের “ছায়া’ মাটিতে পড়তো না।
(১৭৯)
আলা হযরত ইমাম আহমদ
রেজা খান ব্রেলবী তাঁর রচিত “কামরুত তামাম ফী নাফয়িয্যিল্লে আন সাইয়্যিদিল আনাম”
নামক কিতাবের ৩য় পৃষ্ঠায় লিখেন,
احادیث
صحیحہ
اقوال
صحابہ
و
تابعین
سے
کہ
اپ
کا
رضی
اللہ
عنھم
سے
ثابت
ہ
اور
نہ
سایہ
نہ
افتاب
کی
روشنی
مین
تھا
ماھتاب
کی
روشنی
مین-
حجدد
الف
ثانی
رحمۃ
اللہ
علیہ
جن
کے
علم
و
تقوی
– اپکے
سایہ
کو
سب
ھی
ما
نتے
ھین
نہ
ھونے
کی
وجہ
یہ
لکھتے
ھین
کہ سایہ "سایہ والی چیز سے لطیف ھوا کرتا بلکہ عالم امرھے اور اللہ نے عالم خلق مین بھی کوئی مخلوق اپ سے زائد لطیف نھین پیدا کی تو پھر اپکا سایہ کیو نکر ھو سکتا تھا؟
অর্থঃ- আহাদীছে ছহীহা
ও আকওয়ালে ছাহাবা ও তাবেয়ীন (রাঃ) দ্বারা প্রমাণিত যে,
সূর্য ও চন্দ্রের আলোতেও সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
দেহ মোবারকের “ছায়া”
পড়তো না। কাইয়্যূমে আউয়াল হযরত মুজাদ্দেদে
আলফে সানী (রঃ) যার ইল্ম ও তাকওয়ার ব্যাপারে সকলেই সম্যক অবগত সেই মুজাদ্দেদে আলফে
সানী (রঃ) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর “ছায়া” না থাকার কারণ সম্পর্কে লিখেন,
“ছায়া” ছায়াদার বস্তু হতেও সুক্ষ্ম হয়ে থাকে। আর মহান আল্লাহ্ পাক
(আলমে খালক্ব) এমনকি (আলমে আমরের) মধ্যেও এরুপ কোন মাখলুক সৃষ্টি করেননি যা সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সুক্ষ্ম। যদি
তাই হয়ে থাকে তবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেহ মোবারকের
“ছায়া”
কি করে হতে পারে?”
(১৮০)
দেওবন্দীদের মুরুব্বী
মৌলুবী রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী সাহেব তাঁর রচিত কিতাব “ইমদাদুস্ সুলূক” এর ৮৬ পৃষ্ঠায় লিখেন,
بتواتر
ثابت
شدكه
انحضرت
صلى
الله
عليه
وسلم
سايه
نداشتند
- وظاهر
است
كه
بجز
نور
همه
اجسام
ظل
مى
دارند -
অর্থঃ- “একথা মুতাওয়াতির বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত যে,
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
দেহ মোবারকের “ছায়া”
ছিলনা। প্রকাশ থাকে যে,
নূরের দেহ ছাড়া সকল দেহেরই ছায়া রয়েছে।
মূলকথা হলো- বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা হাকীম তিরযিযী (রঃ) বর্ণিত
হাদীস শরীফসহ অসংখ্য হাদীস শরীফ,
হযরত সাহাবা-ই-কিরাম,
তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন, আইম্মায়ে মুজতাহিদীন, সুফীয়ানে ইজাম, আউলিয়া-ই-কিরাম ও হক্বানী-রব্বানী আলেম-ওলামাগণের বক্তব্য দ্বারা
এটাই সুস্পষ্ট ও অকাট্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেহ মোবাকের “ছায়া” ছিল না। কারণ তিনি হলেন নূরের তৈরী অর্থাৎ “নূরে মুজাস্সাাম” এটাই আহ্লে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা আর এটাই সহীহ্ মত।
সাথে সাথে এটও ছাবেত হলো যে, “ছায়া’ সম্পর্কিত প্রতিটি বর্ণনা সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
‘নূর’
তথা “নূরে মুজাস্সাম” হওয়ার এক একটি পৃথক দলীল। কেননা তিনি নূরের তৈরী হওয়ার কারণে
তাঁর দেহ মোবারকের কোন “ছায়া” ছিল না। (অসমাপ্ত)
**********************************************************************************************
প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত
অস্বীকারকারীরা কাফির
( ইসলামী শরীয়তের
হুকুম মোতাবেক
যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়
(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্যনির্ধারিত
সময়
৩দিন। এরপর তওবা না করলে,
তাদের শাস্তি মৃত্যুদ-)
(১)
কাদিয়ানী রদ!
(পঞ্চম ভাগ)
বাহরুল উলূম,
ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন,
তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস,
মুফতীয়ে আজম, পীরে কামিল,
মুর্শিদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা
শাহ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ?কিতাবখানা (৬ষ্ঠ
খন্ডে সমাপ্ত আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের
সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের
ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)।
ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার
সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
(পূর্ব প্রকাশিতের
পর)
মির্জ্জার আকায়েদ
সেই নাহার ইয়ামামা দেশে এই কথা প্রচার করিয়া ফেলে যে, হজরত নবি (ছাঃ) মোছায়লামাকে নিজের নবুয়তের শরিক করিয়াছেন। ইমামাবাসিগণ নব-ইছলামধারী
ছিল, দীনের প্রকৃত মর্ম্ম অবগত হইতে পারেন নাই এবং নাহার সকলের মধ্যে
আলেম ও শিক্ষা-দাতা ছিল,
এই হেতু তাহারা ভাল ধারণায় তাহার কথার
উপর বিশ্বাস স্থাপন করিয়া লইল এবং মোছায়লামার অনুগত হইয়া গেল। মোছায়লামা বুদ্ধিমান
ও সুবক্তা ছিল,
এইহেতু দাবি, করিয়া বসিল যে,
আমার উপর অহি নাজিল হইয়া থাকে, আর কতকগুলি ‘কাফিয়া’যুক্ত কথা প্রস্তুত করিয়া বলিত যে, ইহা আমার উপর অহি হইয়াছে।
আল্লামা খয়রুদ্দিন আলুছি লিখিয়াছেন, সে একখানা কেতাব প্রস্তত করিয়া উহা এলহামি কেতাব বলিয়া দাবি করিয়াছিল। মূলকথা, সে নব-ইছলামধারিদিগকে বাধ্য করিয়া বক্তৃতার বলে নবি হইয়া বসিল, সে কোন নূতন শরিয়ত প্রচারকরে নাই, বরং পাঁচ ওয়া?নামাজ পড়িত এবং
হজরত নবি (ছাঃ) এর নবুয়ত স্বীকার করিত। হজরত আবুবকর ছিদ্দিক খেলাফত কালে তাহার বিরুদ্ধে
যুদ্ধ ঘোষণা করেন এবং তাহার হত্যা সাধন করেন।
(২) আছওয়াদ আনাছি, এই ব্যক্তি হজরত নবি (ছাঃ) এর জামানায় নবুয়তের দাবি করিয়াছিল, সে ভোজ-বিদ্যা দ্বারা অলৌকিক কার্য্য-কলাপ দেখাইত, দুইটা শয়তান তাহার নিকট লোকদের অবস্থা প্রকাশ করিত, সেইহেতু সে গায়েব জানিবার দাবি করিত, তাহার সম্মুখ দিয়া
একটী গর্দ্দভ যাইতেছিল,
হঠাৎ গর্দ্দভটী পড়িয়া যায়, ইহাতে সে বলিতে লাগিল যে,
গর্দ্দভটী আমাকে সেজদা করিয়াছে, যখন গর্দ্দভটী উঠিতে লাগিল,
তখন আছওয়াদ কিছু বলিতে লাগিল, যেন লোকে বুঝিতে পারে যে,
উক্ত প্রাণী তাহার আদেশে উঠিয়া দাঁড়াইয়াছে।
সে ইহাকে মো’জেজা স্থির করিয়াছিল। নাজারাণের লোকেরা তাহার অনুগত হইয়া পড়ে, সে ৬শত লোক লইয়া ‘ছানয়া’
দেশ অধিকার করিয়া লয়। হজরত নবি (ছাঃ) তাহাকে
হত্যা করার আদেশ দিয়াছিলেন,
চারি মাস পর্য্যন্ত তাহার প্রচার কার্য
প্রবল বেগে চলিয়াছিল,
ফারকাদে দয়লমী ধোকা দিয়া তাহাকে হত্যা করিয়াছিল। -জরকানি।
(৩) এবনো-ছাইয়াদ
মদিনা শরিফের একজন য়িহুদীর পুত্র তাহার একটী চুক্ষ কানা ও দাঁতগুলি উচ্চ ছিল, হজরত নবি (ছাঃ) তাহার নিকট উপস্থিত হইয়া বলিয়াছিলেন, তুমি আমাকে রাছুলুল্লাহ বলিয়া সাক্ষ্য প্রদান কর কিনা? তদুত্তরে সে বলিয়াছিল,
হাঁ, আপনাকে আরবের উম্মিদের
নবি বলিয়া সাক্ষ্য প্রদান করি। তৎপরে এবনো ছাইয়াদ বলিয়াছিল, আপনি আমাকে নবি বলিয়া স্বীকার করেন কিনা? তৎশ্রবনে নবি (ছাঃ)
বলিলেন,
আমি মহান আল্লাহ পাক ও উনার রাসূলগণ উনাদের
প্রতি ইমান আনিয়াছি। তৎপরে হজরত তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি দেখিয়া থাক?
সে বলিল, আমি পানির উপর সিংহাসন দেখিয়া থাকি। হজরত বলিয়াছিলেন, তুমি সমুদে?ইবলিছের সিংহাসন দেখিয়া থাক। হযরত বলিলেন, তুমি আর কি দেখিয়া থাক?
সে বলিল, দুইটী সত্যবাদী লোককে এবং একজন মিথ্যাবাদী লোককে দেখিয়া থাকি-অর্থাৎ আমার নিকট
জ্বেনেরা সংবাদ আনয়ন করিয়া থাকে,
দুইজন সত্য সংবাদ প্রদান করিয়া থাকে, আর একজন মিথ্যা সংবাদ প্রদান করে। হজরত বলিলেন, শয়তান তোমার উপর
সত্য মিথ্যা মিলাইয়া দিয়াছে। হযরত বলিলেন, আমি তোমার পরীক্ষার
জন্য একটি আয়ত মনে মনে স্থির করিয়াছি, তুমি বলত, সেকি?
সে বলিল, دغ (দোখ)।
হজরত বলিলেন, তুমি লাঞ্ছিত হও,
তোমার সম্মান বৃদ্ধি হইবে না। হজরত এই
আয়ত মনে করিয়াছিরেন,
يوم تاتى السماء بد خان مبين-
এবনো-ছাইয়াদ সম্পূর্ণ ‘দোখান’
বলিতে না পারিয়া কেবল ‘দোখ’ বলিয়াছিল।
কেহ কেহ বলিয়াছেন, এবনো ছাইয়াদ মদিনা শরীফে মুসলমান অবস্থায় মরিয়াছিল। কেহ কেহ বলিয়াছেন, সে নিরুর্দ্দিষ্ট হইয়া গিয়েছিল, তাহার সন্ধান পাওয়া
যায় নাই।
(৪) তোলায়খা বেনে
খোয়া এলেদ,
এই ব্যক্তি বুন-আছাদ সম্প্রদায়ভুক্ত ছিল, হযরত আবুবকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার খেলাফাত কালে খয়বরের এক অঞ্চলে নবুয়তের
দাবি করে। গাৎফান সম্প্রদায় তাহার সহায়তা করিয়াছিল, তৎপরে তওবা করিয়া
মুছলমান হইয়াছিল,
ইহা ফৎহোল বারিতে আছে। এবনো আছাকের বর্ণনা
করিয়াছেন,
তোলায়খা হজরত নবি (আঃ) এর জামানায় নবুয়তের
দাবি করিয়াছিল,
কিন্তু হজরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস
সালাম উনার জামানায় এই দাবি প্রসিদ্ধ হইয়াছিল।
(৫) ছোয়াত্রদের কন্যা
ছাজাহ, এই স্ত্রীলোকটী ‘তাগলাব’ সম্প্রদায়ভুক্ত ছিল,
বনুয়তের দাবি করিয়াছিল। তামিম সম্প্রদায়
তাহার সাহায্যের জন্য সাংগৃহীত হইয়াছিল, নেকড়ে বাঘের উপর
আরোহণ করিত,
হঠাৎ লোকের প্রাণবধ করিত। মোছয়লামা সেই
সময় খুব প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল। ছাজাহ বলিল, তোমরা চল, আমরা মোছায়লামাকে পরীক্ষা করিন, সে বৃহৎ একদল সৈন্য
লইয়া ইমামায় উপস্থিত হইল। মোছায়লামা ইহা জানিতে পারিয়া ভীত হইয়া পড়িল এবং উপঢৌকন পাঠাইয়া
তাহার প্রাণভিক্ষা চাহিল। একটি তাবুতে উভয়ের সাক্ষাৎ হইল, ছাজাহ জিজ্ঞাসা করিল,
তোমার উপর কি অহি নাজিল হইয়াছে। মোছায়লামা
কিছু রচনা করিয়া পড়িল। ইহাতে ছাজাহ তাহাকে
নবি বলিয়া স্বীকার করিল। মোছয়ালামা বলিল, যদি তুমি আমার সঙ্গে
নিকাহ কর,
তবে আমাদের উভয়ের সৈন্যদল দ্বারা আরব দেশ
অধিকার করিয়া লইতে পারিব। ছাজাহ তাহাই স্বীকার করিল এবং তাহার উপর দরুদ পড়িল। ইহার
দেনমোহরে মোছায়লামা ফরজ ও এশার নামাজ মাফ করিয়া দিল। এই হেতু মুরুভুমির বনু-তমিম সম্প্রদায়
উক্ত দুই ওয়াক্ত নামাজ পড়ে না। হযরত আবু বকরের জামানায় ছাজাহ নবুয়তের দাবী করিয়াছিল
এবং হযরত মোয়াবিয়ার জামানায় তওবা করিয়া মুছলমান হইয়াছিল। ইহা গোরাবোল-খাছায়েছে আছে।
(৬) মিথ্যাবাদী মোখতার, ছোফাএফ সম্প্রদায়ভুক্ত ছিল,
সে হজরত এবনোজ্জোবাএরের জামানায় নবুয়তের
দাবি করিয়াছিল,
নিজের পত্রে মোখতার রাছুলুল্লাহ লিখিত
এবং বলিত যে আমার উপর অহি নাজিল হইয়া থাকে। হজরত নবি (ছাঃ) ইহার সংবাদ দিয়া গিয়াছিলেন।
(৭) কবি মোতানাবি, সে নবুয়তের দাবি করিয়াছিল,
তাহার কবিতাবলী ‘দিওয়ান মোতানাব্বি’ নামে অভিহিত রহিয়াছে।
(৮) মিথ্যাবাদী বাহবুজ, খলিফা মো’তামেদের জামানায় নবুয়তের দাবি করিয়াছিল, সে জাঞ্জে অশান্তি উৎপাদন করিয়াছিল, এরাক বরবাদ করিয়াছিল, ছৈয়দদিগকে লাঞ্ছিত করিয়াছিল। সে বলিয়াছিল, খোদা আমাকে রাসূল
করিয়া প্রেরণ করিয়াছেন,
কিন্তু আমি রেছালত স্বীকার করি নাই। আরও
সে গায়েব জানিবার দাবি করিত।
(৯) এহইয়া বেনে জেকরাওয়হে
কেরমাতি,
এই ব্যক্তি খলিফা মোকতাফির জামানায় নবুয়তের
দাবি করিয়াছিল।
(১০) তাহার ভ্রাতা
হোছাএন নবুয়তের দাবি করিয়াছিল।
(১১) ইছা বেনে মেহরাওয়হে, এই লোকটা বলিয়াছিল দেশে আধিপত্য বিস্তার করিয়াছিল এবং মহা অশান্তি ঘটাইয়াছিল, অবশেষে সে তথায় নিহত ইহয়াছিল।
(১২) আবু তাহের কেরমতি, এই ব্যক্তি খলিফা মোক্তাদেরকে জামানায় নবুয়তের দাবি করিয়াছিল এবং হাজরে আছওয়াদকে
কা’বা হইতে উৎপাঁন করিয়া লইয়াছিল।
(১৩) এক ব্যক্তি
নাহাওয়ান্দের অঞ্চলে মোস্তাজহার খলিফার জামানায় ৪৯৯ হিজরীতে পয়গম্বর বলিয়া দাবি করিয়াছিল, বহু লোক তাহার অনুগত হইয়া পড়ে, অবশেষে তাহাকে ধৃত
করিয়া হত্যা করা হয়।
(১৪) এক ব্যক্তির
নাম “লা”
ছিল, মগরের দেশ ইহার
আবির্ভাব হইয়াছিল,
সে لانبى بعدى আমার পরে কোন নবি
হইবে না।”
এই হাদিছের এইরূপ বিকৃত অর্থ করিয়াছিল, “আমার পরে “লা”
মানক একজন নবি হইবে।” আর সেই “লা”
আমি।
(১৫) গাজারি নবুয়তের
দাবি করিয়াছিল,
এই ব্যক্তি যাদুকর ছিল, মালেকা নামক স্থানে ইহার প্রাদুর্ভবা হইয়াছিল। যখন সে ব্যক্তি গারনাতা নামক স্থানে
(ছফির) হইয়া আসিয়াছিল,
সেই সময় আবুজা’ফর বেনে জোবাএর
তাহাকে হত্যা করিয়াছিল।
(১৬) একটি স্ত্রীলোক
নবিয়া হওয়ার দাবি করিয়াছিল,
লোকে যখন তাহাকে বলিয়াছিল যে, হাদিছে আসিয়াছে,
হজরত বলিয়াছে, আমার পরে কোন নবী হইবে না,
তখন সে বলিয়াছিল, কোন স্ত্রী লোক নবী হইবে না,
এমন কথা তো হাদিছে নাই। (অসমাপ্ত)
(২)
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম
কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- ‘কাফের’
ঘোষণা!
(পূর্ব প্রকাশিতের
পর)
অনুবাদক - আলহাজ্জ মুহম্মদ হাবিবুল হক
নামায ও বিবাহ সম্বন্ধীয় নির্দেশগুলি মির্জা সাহেবেরই, তার স্থলাভিষিক্তদের কারো নয়। এমনকি নির্দিষ্টভাবে নবী দাবীর আগেও তিনি লিখেছেন, যে কেউ আমাকে অনুসরন না করবে এবং আমাদের বাইয়াত গ্রহণ না করবে অথবা আমার বিরোধীতা
করবে, সে আল্লাহর বিরোধীতা করবে এবং তার স্থায়ী ঠিকানা হবে জাহান্নাম।
(তাজকিরাহ পৃষ্ঠা ৩৪২-৩৪৩)
বাবু এলাহী বসকে লিখিত
মির্জার লিখা চিঠি উদ্ধৃতাংশ তারিখ ১৬ই জুন ১৮৯৯)।
মির্জা ইহা বলেছে, যদিও তিনি পূর্বে
বলেছে যে,
মসীহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন ঈমানের অক্ত
নয়। হকীকাতুল ওহী এর ১৭৯ এবং ১৮০ পৃষ্ঠায় তিনি দুই রকমের অবিশ্বাসের ব্যাখ্যা দিয়েছে।
প্রথমতঃ কোন ব্যক্তি ইসলামের সত্যতায় বিশ্বাস করে না এবং পবি নবীকে (ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) মহান আল্লাহ পাক উনার রাসূল হিসেবে স্বীকার করে না। দ্বিতীয়তঃ যে প্রতিশ্রুত
মসীহকে বিশ্বাস করে না যদিও যুক্তি দ্বারা চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং পূর্ববর্তী
আসমানী কিতাবে উল্লেখ আছে। এ কারণে তিনি অবিশ্বাসী (মির্জাকে অস্বীকার করার জন্য যেহেতু
তিনি মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রাসূলের (মির্জার কথা) নির্দেশ অস্বীকার করেছে। কেহ
বিষয়টি সম্বন্ধে একটু চিন্তা করলেই উপলব্ধি করতে পারবে যে, উভয় প্রকার অবিশ্বাসই একই পর্যায়ের (একই সংখ্যক অসংখ্য ছিদ্রপূর্ণ পরিনতি)
যেহেতু যে ব্যক্তি মহান
আল্লাহ পাক ও উনার রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশবলীর জ্ঞান সম্পন্ন
অথচ মহান আল্লাহ পাক ও উনার রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি বিশ্বাস
স্থাপন করলনা,
তাকে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রাসূল ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশ্বাসী বলা যায় না। কুরআন শরীফ-এর নির্দিষ্ট আয়াতনুযায়ী
যদি কোন ব্যক্তি অজ্ঞানতাবশতঃ অবিশ্বাস করে তবে সে কাফির (অবিশ্বাসী) এবং শরীয়তের নির্দেশ
অমান্য করার জন্যআমরা তাকে তাই বলি।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা বলেন, “কোন মিথ্যা প্রচারকারীর মতে (হাকীক্বত-উল-ওহী, পৃষ্ঠা ১৬৩) যদি
আমি মহান আল্লাহ পাক উনার বিরূদ্ধে কোন মিথ্যার উদ্ভাবক হই তবে সেক্ষেত্রে আমি অবিশ্বাসী
নই। মহা অবিশ্বাসী এবং যদি আমি মিথ্যার উদ্ভাবক না হই তেব ইহা তাহার উপরই বর্তাবে।
(মির্জা সম্বন্ধে মিথ্যাবাদীর অপবাদকারী)। ইহা ছাড়াও যে আমাকে বিশ্বাস না করবে তিনি
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ও
বিশ্বাসী নয়।”
নাউযুবিল্লাহ!
মিঃ রিয়াজুল হাসান জিলানীর এ সকল যুক্তি মিঃ মুজিবুর রহমান আপত্তিকর
হিসেবে প্রতিবাদ করে এবং বলে,
যারা আহম্মদী নয় তাদের খারেজী হওয়া সম্বন্ধে
উপরোক্ত ধারণা ১৯২৩ সাল পর্যন্ত প্রচলিত ছিল এবং এ ব্যাপারে সকল বরাত (সূত্র) ঐ সময়ের
জন্যই সীমা বহু ছিল। তিনি বলেন,
“মির্জা বশির আহমেদ আহম্মদীদের ইমাম বা
খলীফা ছিল না,
তিনি শুদু মুখপাত্র ছিলেন।” কিন্তু মুনীর তদন্ত কমিশনের কাছে, মির্জা বশির উদ্দিন
মাহমুদ ব্যাখ্যা করে যে যারা আহমদী নয় তাদেরকে তিনি এই অর্থে খারেজী বলেন নাই যে তারা
মুসলিম উম্মাহর বহির্ভূত বরং এই অর্থে বলা হয়েছিল যে, এ কূফরী বড় কূফরী ছিল না। পাকিস্তানের মুসলিম উম্মাহর প্রতিবাদের আলোড়ন যখন তুঙ্গে
বিপদের মুখে মির্জা বশির উদ্দিন মাহমুদের এই ব্যাখ্যা, মির্জার বহুবার পশ্চাদপসরনের ঘটনার উদাহরণ বলা যায়। যাহা পূর্বেই বলা হয়েছে। মির্জা
নিজেই বলেছে,
ঐ ধরণের লোক কাফির যেহেতু তাকে ধরা হবে
যে তিনি মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রাসূল (মির্জা) প্রতি বিশ্বাসী নয়। তিনি যে মুসিলম
উম্মাহর বহির্ভূত এর চেয়ে ভাল আর কোন প্রমাণ থাকতে পারে না।
মির্জা তার প্রতিবাদী মুসলমান কুফরের নেতা হিসেবে অভিহিত করে। (তাজকিরা, পৃষ্ঠা ১১১,
৩৭৩)
মার্চ ১৯০৬ সালে ডঃ আব্দুল হাকিমকে লেখা তার (মির্জা) চিঠিতে
তিনি লিখেছেন,
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে ওহী পাঠিয়েছেন, যাদের নিকট ইহা পৌঁছেছে এবং আমাকে স্বীকার করেনি তারা মুসলমান নয়। (তাযকিরা পৃষ্ঠা
৬০০)
মির্জা বশির উদ্দিন মাহমুদ যারা আহমদী নয় তাদেরকে খৃষ্টানদের
সমতুল্য বলেছেন। শেখ নূর মুহম্মদ জামায়াত (আহম্মদীয়া জাময়াত) থেকে তারা অব্যাহতির জন্য
মির্জাকে বলেছিল,
যার উত্তরে মির্জা বলেছিল, “শেখ নূর মুহম্মদকে বল,
যে তাকে শুধু জাময়াত থেকে অব্যহতি দেয়া
হল না, তাকে ইসলাম তেকে বাদ দেয়া হল। (সীরাতে মাহদী, ভলিউম-৩ পৃষ্ঠা ৪৯)
ইহা সকলেই জানে যে, পাকিস্তানের প্রাক্তন
পররাষ্ট্র মন্ত্রি স্যার জাফর উল্লাহ খান ‘কায়েদে আযমের’ জানাযায় অংশগ্রহণ করেনি। ১৯৫০ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারীর ‘জমিনদার’ অনুযায়ী এবোদাবাদের জামিয়া মসজিদের খতীব মাওলানা মুহম্মদ ইসহাক, স্যার জাফর উল্লাহ খানকে জানাযায় অংশগ্রহণ না করার কারণ সম্বন্ধে জানতে চান। জবাবে
তিনি (জাফর উল্লাহ খান) বলেন যে,
কাযদে আযমকে তিনি একজন রাজনৈতিক নেতাই
মনে করতেন,
তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, মির্জাকে অস্বীকার করার কারণে, তিনিও মুসলমানদের
ঈমান নাই মনে করেন কিনা?
যদিও আপনি সরকারের একজন মন্ত্রি।” স্যার জাফরউল্লাহ বলেছিলেন,
“আপনার আমাকে কাফের সরকারের একজন মুসলমান
কর্মচারি ধরে নিতে পারেন বা মুসলমান সরকারের এক খারেজী কর্মচারীও মনে করতে পারেন। (অসমাপ্ত)
***********************************************
খতমে নুবুওওয়াত
প্রচার কেন্দ্র
খতমে নুবুওওয়াত
অস্বীকারকারীরা কাফির
( ইসলামী শরীয়তের
হুকুম মোতাবেক
যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়
(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত
সময়
৩দিন। এরপর তওবা না করলে,
তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড )
(১)
কাদিয়ানী রদ!
(পঞ্চম ভাগ)
বাহরুল উলূম,
ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন,
তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস,
মুফতীয়ে আজম, পীরে কামিল,
মুর্শিদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা
শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ) কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ” কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে
প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে
সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার
কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
(পূর্ব প্রকাশিতের
পর)
মির্জ্জার আকায়েদ
(১৭) খোরাছানে ওস্তাওছিছ
নামে একজন লোক নবুওয়তের দাবি করেছিল, হেরাত, ছিস্তান ইত্যাদি স্থানের ৩ লক্ষ যোদ্ধা তাহার সহকারী হইয়া যায়। মর্দ্দরোজের শাসনকর্তা তাহার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে
গিয়া পরাজিত হইয়া যায়। মনছর খলিফার আদেশে হাজেম বেনে খোজায়মা, মাহদীর সৈন্যদলের সহিত মিলিত হইয়া তাহার উপর আক্রমণ করে, ওস্তাওছিছকে তাহার সন্তানগণ ও ১৪ সহস্র সৈন্যসহ আহত করে ও ৭০ সহস্র সৈনকে হত্যা
করে।
(১৮) সুডানের দামিয়া
নাম্নী একটি স্ত্রীলোক নবুয়তের দাবী করিয়াছিল, অধিকাংশ সুডানবাসি
তাহার অনুগত হইয়া পড়ে,
অবশেষে দামিয়া মুছলমানদিগের হস্তে নিহত
হয়।
(১৯) ইউশিয়া নামক
একটি লোক মাহদীর জামানায় নবুয়তের দাবি করিয়াছিল, অবশেষে মাহদীর সৈন্যদল
তাহাকে ধৃত করিয়া ফাঁসি দিয়াছিল।
(২০) মাকনা খোরছানি, ইহার আসল নাম আতা ছিল,
এই ব্যক্তি মরবের অধিবাসী ছিল, সে কানা,
অতি কদাকার, বেঁেট প্রকৃতির ছিল,
সে সোনালী বোরকা দ্বারা মুখমন্ডল ঢাকিয়া
রাখিত, এজন্য মাকনা’ নামে অভিহিত হইয়াছিল, মাহদীর জামানায় নবুয়তেকর দাবি করিয়াছিল, সে নখশবে যাদুবলে
চন্দ্র বানাইয়া দেখাইয়াছিল,
জন্মান্তরবাদী ছিল, নিজের মধ্যে খোদা প্রবেশ করিয়াছে বলিয়া দাবি করিয়াছিল। যখন তাহাকে গেরেফতার করা
হয় সেই সময় সে বিষপান করিয়া মরিয়া গিয়াছিল।
(২১) আকদে-ফরিদে
আছে, মামুন খলিফার জামানায় এক ব্যক্তি এবরাহিম খলিলুল্লাহ হওয়ার দাবি
করিয়াছিল।
(২২) এক ব্যক্তি
খালেদ বেনে আব্দুল্লাহ্র জামানায় নবুওয়তের দাবী করিয়া কোন-আনের সহিত প্রতিদ্বন্দ্বিতা
করিয়াছিল,
অবশেষে সে শুলকাক্তে প্রাণত্যাগ করে।
(২৩) এক ব্যক্তি
নুহ নবি হওয়ার দাবি করিয়াছিল যে,
আমি নৌকা প্রস্তুত করিয়াছিলাম এবং অন্য
একটি ঝটিকা আসিবে।
(২৪) আবূ ছবিহ তরিফ, দ্বিতীয় শতাব্দীর প্রথম ভাগে বাদশাহি স্থাপন করিয়াছিল এবং নবুয়তের দাবী করিয়া নিজের
বংশের মধ্যে নূতন মজহাব স্থাপন করিয়াছিল।
(২৫) ছালেহ বেনে
তরিফ, ১২৭ হিজরীতে পিতার সিংহাসনের অধিকারী হয়. এই ব্যক্তি নবুয়তের
এবং নিজের উপর নুতন কোর-আন নাজিল হওয়ার দাবি করিয়াছিল। ৪৭ বৎসর পর্যন্ত নিজের মজহাব
প্রচার করিয়া মৃত্যমুখে পতিত হয়।
(২৬) আবু মনছুর ইছা, পিতার সিংহাসনের অধিকারী হইয়া নবুয়তের দাবী করিয়া ২৭ বৎসর নিজের মজহাব প্রচার করিয়া
মরিয়া যায়।
(২৭) বানান বেনে
ছময়ান তমিমি,
এই ব্যক্তি নবুয়তের দাবি করিয়াছিল, সে এছমে-আজম জানিবার দাবি করিত এবং বলিত যে, হযরত আলির শরীরে
আল্লাহ্ তায়ালার এক অংশ প্রবেশ করিয়াছিল, এই হেতু তিনি খয়বরের
দরওয়াজিাটি উৎপাদন করিয়াছিলেন। (অসমাপ্ত)
(২)
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- ‘কাফের’ ঘোষণা!
( পূর্ব প্রকাশিতের
পর )
অনুবাদক - আল্হাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক
মিঃ মুজিবুর রহমান,
স্যার জাফরউল্লাহ্র অবস্থানের কোন প্রতিবাদ
করতে পারে নাই। সুতরাং কোন সন্দেহের অবকাশ
না রেখে ইহা প্রতিষ্ঠিত যে,
দুই দল কখনই আর একত্রিত হবে না এবং ইহাই
উম্মাহ্র অন্তর্ভূক্ত হবে না,
কেননা স্যার জাফর উল্লাহ্ খান যেভাবে বলেছে
তাহলো, হয়ত পাকিস্তানের অধিকাংশ লোক(সংখ্যাগরিষ্ঠ) অবিশ্বাসী (কাফের)
অথবা কাদিয়ানীরাই অবিশ্বাসী)
উভয় দলের একত্রিত হওয়ার কোন সুযোগ নাই। যেহেতু মুসলমানগণ শেষ
নবীতে বিশ্বাসী। আর অন্যদিকে কাদিয়ানীরা বিশ্বাস করে মির্জা সাহেব এক নতুন নবী। (নাউযুবিল্লাহ্)।
কাদিয়ানীদের মুসলিম উম্মাহ্র ঐক্যের হুমকি স্বরূপ মনে করা হত এবং মত ভিন্নতা রোধকারী
শক্তির নূর বহন মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতিভাবান ব্যক্তিত্বগণ বলেছেন, “হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শেষ নবী, এই ধারণাই মুসলিম উম্মাহ্র ঐক্য রক্ষা করচ হিসাবে যথেষ্ট। (ঞযড়ঁমযঃং ধহফ জবভষবপঃরড়হ
ড়ভ ওয়নধষ. চধমব-২৪৯)। তিনি আরো বলেছেনঃ-
“সর্বোপরি, যদি একটি উম্মাহ্র ঐক্য হুমকির সম্মুখিন হয় তবে ঐক্য নষ্টকারী সংঘের বিরুদ্ধাচরণ
করাই ঐ উম্মাহ্র প্রধান কর্তব্য।
এবং আত্মরক্ষার উপায়গুলি কি যখন- আহ্লে সুন্নত আল জামায়াতের
মতে ধর্মীয় ফটকাবাজ ব্যক্তির বিতর্কিত প্রবন্ধ এবং নাকচ করা দাবীর পুনঃরুত্থান হয়।
যখন উম্মাহ্র ঐক্য হুমকির সম্মুখিন বিদ্রোহী দলের শাস্তির ঝুকি ছাড়া মতবাদ প্রচার মেনে
নেয়া এবং তা যখন,
খুবই অপমানকর পর্যায়ে, সেই সময়ে কি উম্মাহ্র (আহ্লে সুন্নাত-আল-জামায়াত) মধ্যে ধৈর্য্যরে উপদেশ প্রচার
করা ঠিক হবে?
(আইবি আইডি- পৃঃ- ২৫৩)
সাম্রাজ্যবাদ এবং ঔপনিবেশিকতাবাদের সমর্থক ব্রিটিশ সরকারের প্রতি
মির্জা সাহেবের আনুগত্য এবং ভালবাসা ছিল স্বতঃসিদ্ধ। তার প্রায় প্রত্যেক পুস্তিকার
কয়েক পৃষ্ঠায়ই তিনি ব্রিটিশ সরকারের উচ্চ প্রশংসায় মনোনিবেশ করেছেন এবং তার উত্তরসূরীরাও
তাই করেছে। ঐ সকল লিখার কিছু নমুনা নিম্নে উল্লেখ করা হল।
(ক) “কিছু নির্বোধ লোক
আমাকে (মির্জা) জিজ্ঞাসা করেছিলেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে
জিহাদ করা ঠিক হবে কিনা?
তাঁদের স্মরণ রাখা উচিত যে, এই প্রশ্নটি করা নিছক বোকামী,
কেননা, উপকারীর বিরুদ্ধে
কিভাবে জিহাদ করা যায়?
বরং তার উপকার (احسان)
করা বিবেক নির্দেশিত কর্তব্য। আমি (মির্জা) অঙ্গীকার করে বলছি। উপকারীর অমঙ্গল কামনাকারী
একজন জারয এবং এক পাপীষ্ট। সুতরাং আমার বিশ্বাস, যা আমি পুনঃ পুনঃ
প্রকাশ করেছি তাহা হল এই যে,
ইসলামের দু’টি অংশ একটি হল-
তাহা আল্লাহ্র নির্দেশ মানবে এবং অন্যটি হল- তারা এই সরকারের শান্তিতে বসবাস করার নিশ্চয়তা
দিয়েছে এবং আমাদিগকে নৃশংস শাসকদের থেকে আশ্রয় দিয়েছে (শাহাদাতুল কোরআন, প্রকাশিত- ১৮৯৩,
পৃষ্ঠা-৩)
(খ) সেই ব্যক্তি জ্ঞানী যে, আমার লেখায় একদিকে
বুঝতে পারে ধর্মের প্রতি সমর্থন এবং অন্যদিকে আমার পরামর্শ মানে যে, এই সরকারের পূর্ণ সমর্থন দিতে হবে এবং তাদের (সরকারের) কল্যাণ কামনা করতে হবে এবং
কেনই বা তারা তা করবে। ইহা সত্য যে মুসলমানরা ঐশ্বরিক এবং রাসূলদের প্রতি অনুগত এবং
তারা ঐ সরকারের ও অনুগত তারা যার প্রজা। আমি আমার পুস্তিকাসমূহে, এই সকল ধর্মীয় নির্দেশের বিশদ ব্যাখ্যা করেছি। এখন সরকার বিবেচনা করতে পারে যে, আমার (মির্জা) পিতা এই সরকারের কত বড় হিতাকাঙ্খী ছিলেন, আমার ভাই তাকে পূঙ্খানুপুঙ্খ অনুসরণ করেছেন এবং আমিও (মির্জা) আমার লেখনী দ্বারা
গত ১৯ বছর যাবত এই সরকারের সাহায্য সহযোগীতা করে যাচ্ছি (কাশফুল ঘাটা, প্রকাশিত ১৮৯৮,
পৃষ্ঠা-১০)
(গ) এবং আমি (মির্জা)
আমার বাইয়াত গ্রহণের প্রতিজ্ঞায় ইহা পরিস্কার শর্ত রেখেছি (ঈষধংং-৪) যে তারা ব্রিটিশ
সরকারের হিতাকাঙ্খী হবে এবং মানবতার জন্য প্রকাশ করবে সঠিক সমবেদনা। বিরত থাকবে অন্যদেরকে
উত্তেজিত করা থেকে,
নিজেরা হবে দয়ার আদর্শ, ধর্মীয় আদর্শে নিয়োজিত থাকবে এবং প্রতারক ও খারাপ কাজ থেকে মুক্ত থাকবে (কিতাবুল
বারিয়াহ্,
প্রকাশিত হয় ১৯৯৮ পৃষ্ঠা- ২২)
(ঘ) ডেপুটি কমিশনার নির্দেশ জারী করে যে, নূতন আইন অনুযায়ী যদি কোন আহ্মদীর কোন অসুবিধা হয় তবে সকল মুসলমান নেতাদের এদেশ থেকে বের করে দেয়া হবে। সমগ্র মানবতার প্রতি সমবেদনশীল না হলে কোন ব্যক্তি এরূপ আদেশ দিতে পারেনা। এই নতুন ব্যবস্থায়, এই সরকার তোমাদের মালাবাড়ীর ভাইদের অংশ (ন্যায্য) ভাগ করে দেয়। যে নিজ ভাইয়ের প্রতি দয়ালু হবে সে তার প্রতিদান পাবে। সুতরাং আমাদের সরকারের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত, কেননা মালাবাড়ীর আহমদীরা আমাদের ভাই। আমাদের এক ধর্ম প্রচারক মরীশাশে গিয়েছিল। ঐখানে যারা আহ্মদী নয় তারা চেয়েছিল সে যেন যেখানে ইচ্ছা সেখানে বক্তব্য রাখতে না পারে। কিন্তু সে ব্যক্তি সরকারের নিকট আবেদন করেছিল তার বক্তব্য রাখার জন্য সরকারী অডিটোরিয়ামটি ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য। গভর্ণর তাকে সপ্তাহে তিনদিন ব্যবহারের অনুমোদন দেন এবং তিনদিন গভর্ণর তার নিজের ব্যবহারের জন্য রেখেছিলেন। (অসমাপ্ত)
*********************************************
খতমে নুবুওওয়াত
প্রচার কেন্দ্র
খতমে নুবুওওয়াত
অস্বীকারকারীরা কাফির
( ইসলামী শরীয়তের
হুকুম মোতাবেক
যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়
(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত
সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে,
তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড )
(১)
কাদিয়ানী রদ!
( পঞ্চম ভাগ )
বাহরুল উলূম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন,
তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস,
মুফতীয়ে আজম, পীরে কামিল,
মুর্শিদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা
শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ) কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ” কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে
প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে
সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার
কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
(পূর্ব প্রকাশিতের
পর)
মির্জ্জার আকায়েদ
(২৮) মির্জ্জা গোলাম
আহ্মদ, ইনি পাঞ্জাবের জেলা গুরুদাশপুরের কাদেয়ান নামক গ্রমের বাশেন্দা, ইনি নবুয়তের দাবি করিয়াছিল।
হজরত নবি (ছাঃ) এর ভবিদ্বাণী অনুসারে মির্জ্জা ছাহেবের ন্যায়
উল্লিখিত ২৭ জন লোক নবুয়তের দাবি করিয়াছিল, মির্জ্জা ছাহেব
যেরূপ হজরতের শরিয়ত পালনকারী হইয়া নবি হওয়ার দাবি করিয়াছেন, মোছয়লামা প্রভৃতি ঠিক ঐরূপ দাবি করিয়াছিল। মির্জ্জা ছাহেব মো’জেজা দেখাইবার দাবি
করিয়াছেন,
উক্ত মিথ্যাবাদিদিগের মেধ্য কতকে সেইরূপ
দাবি করিয়াছিল। মির্জ্জা সাহেবের ভবিষ্যদ্বাণী কতক সত্য হইয়াছে, উল্লিখিত লোকদের অবিকল সেইরূপ অবস্থা হইয়াছিল, যদি মির্জ্জা ছাহেবকে
সত্যপরায়ণ বলিয়া মানিতে হয়,
তবে উল্লিখিত মিথ্যাবাদিদিগকে সত্যপরায়ণ
বলিয়া মানিতে হইবে না কেন,
তাহা কাদেয়ানি সম্প্রদায়কে জিজ্ঞাসা করার
অধিকার আমাদের নিশ্চিয় আছে।
দ্বিতীয় অধ্যায়
মির্জ্জার পনরটী উন্নত
দরজার বিবরণ
(১) মির্জ্জা ছাহেব
প্রথমে শিয়ালকোটের আদালতে সাধারণ মুহুরী ছিলেন। বেতনের অল্পতা হেতু মোক্তারী পরীক্ষা
দেন, কিন্তু তিনি এই পরীক্ষায় অকৃতকার্য্য হয়েন, তৎপরে মজহাবী-তত্বে পীর হওয়ুধারণা তাহার হৃদয়ে বলবৎ হইয়া পড়ে, ইহার প্রমাণের আবশ্যক নাই। কারণ পক্ষ বিপক্ষ সকলেই ইহা স্বীকার করিয়া থাকেন।
(২) তাঁহার মোজাদ্দেদ
হওয়ার দাবিঃ
এতমামোল- হোজ্জা,
১৩ পৃষ্ঠাঃ-
وقد بعثت على رأس المائة لاجدد الدين.
আইনায়-কামালাতে-ইছলাম,
১৪৬ পৃষ্ঠা,
وبعثنى على رأس هذه المائة مجددأ
উপরোক্ত দুই কেতাবে তিনি মোজাদ্দেদ হওয়ার দাবী করিয়াছেন।
(৩) তাহার মোহাুদ্দাছ
ওয়ার দাবীঃ
এজালায় আওহাম,
২৪৭ পৃষ্ঠা.
نبوت کا دعوی نھین بلکہ محدثیت کا دعوی ھے جو خدا یتعالی کے حکم سے کیا گے حکم سے کیا گیا ھے،
“আমি নবুয়তের দাবি
করি নাই,
বরং মোহাদ্দাছ (এলহাম প্রাপ্ত) হওয়ার দাবি
করিয়াছি-ইহা খোদার হুকুম অনুসারে করা হইয়াছে।”
এই রূপ তওজিহ-মারামের ৪৭ পৃষ্ঠায় এবং তবলিগের ৩;৬ পৃষ্ঠায় লিখিত
আছে।
(৪) তাঁহার প্রতিশ্রুত
মছিহ ুও মাহদী হওয়ার দাবী,
লেকচারে- শিয়ালকোট, ৩৩ পৃষ্ঠা,
خدا نے مجھے مسلمانون او عیسا ئیون کے مسیح موعود کرکے بھیجا ھے،
“খোদা আমাকে মুছলমানদিগের
এবং খ্রীষ্টানদিগের প্রতিশ্রুত মছিহ করিয়া প্রেরণ করিয়াছেন।”
এজালায়-আওহান,
২১৪ পৃষ্ঠা,
عیسے ھی مھدی ھے “ইছাই মাহদী হইবেন।”
বরং নিজেকে মছিহ ও মাহদী প্রমাণ করা উদ্দেশ্য এজালায় আওহাম কেতাব লিখিয়াছেন।
(৫) তাহার এমামোজ্জমান
হওয়ার দাবি,
তিনি জরুরাতোল-এমাম পুস্তকে এমামোজ্জামান হওয়া জরুরি ও উহার লক্ষণগুলি উল্লেখ করিয়া
২৪ পৃষ্ঠায় বড় অক্ষরে লিখিয়াছেন। امام الزمان مين هون “আমিই এমামোজ্জামান।”
দুন্ইয়ায় যত এমামোজ্জমান, মোহাদ্দাছ (এলহাম-প্রাপ্ত)
ও মোজাদ্দেদ হইয়াছেন,
কেহই নিজে মুখে জোর গলায় এইরূপ জাবি করেন
নাই, অবশ্য জগতের বিদ্বানগণ আনুমানিক ভাবে মোজাদ্দেদ ও এমামোজ্জামান
স্থির করিতে চেষ্টা করিয়াছেন,
যিনি প্রকৃত পক্ষে এমামোজ্জামান ও মোজাদ্দেদ
হইবেন, তিনি কখনও ইহার অহংকার করিতে পারেন না। কোরআন শরিফের এই আয়াত,
ان الله لا يحب من كان مختالا فخورا
এবং হজরতের এই হাদিছ অনুযায়ী- لا
يدخل
الجنة
من كان فى قلبه مثقال ذرة من كبر
অহংকারী ব্যক্তির মোজাদ্দেদ হওয়া দুরের কথা একজন পরহেজগারও হইতে পারে না।
মির্জ্জা সাহেব নিজের মোজাদ্দেদ, মাহদী,
মছিহ ও এমামোজ্জামান হওয়ার জন্য প্রায়
সমস্ত কালি ও কলম ব্যয় করিয়াছেন এবং জীবনের অমূল্য সময়টুকুকে বিপক্ষ লোকদের প্রতি গালি
বর্ষন করিতে ব্যয় করিয়াছেন,
ইহাই কি মোজাদ্দেদ, মাহদী,
মছিহ ও এমামোজ্জামান হওয়ার লক্ষণ।
(৬) মির্জ্জা ছাহেবের নবি হওয়ার দাবীঃ-
তিনি “আইয়ামোছ ছোলহ” কেতাবের ৭৫ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন,
هو الذى ارسل رسوله بالهدى مراد از رسول درين مقام اين بنده عاجزاست وباز در كتاب مذكور اين الهام مذكوراست جرى الله فى حلل الانبياء ومنى اش انكه رسول خدا در لباس انبياء درين الهام مرا بانام رسول ونبى ياد فرموده اند،
“ তিনিই নিজের রাছূলকে
হেদাএত সহ প্রেরণ করিয়াছেন,
এই স্থলে রাছূলের অর্থ এি অক্ষশ বান্দা, আরও উল্লিখিত কিতাবে এই এলহাম বর্ণিত হইয়াছে, পয়গম্বরগণের পোষাকে
খোদার রাছুল আসিয়াছেন,
এই এলহামে খোদা আমাকে রাছুল ও নবী নামে
অভিহিত করিয়াছেন।”
দায়েয়োল-বালা,
১১ পৃষ্ঠা-ঃ
سچا خدا وھی خدا ھے
جس
نے
قادیان
مین
اپنا
رسول
بھیجا-
“সত্য খোদা উক্ত
খোদা যিনি কাদিয়ানে নিজের রাছুল পাঠাইয়াছেন।”
মেয়ারোল-আখবারের,
২-২ পৃষ্ঠার, এজালায়-আওহামের ২-৩৫৭ পৃষ্ঠায়, জমিমায়-বারহিনে-আহমদিয়ার
৫-১৩৮-১৩৯ পৃষ্ঠায়,
তওজিহে- মারামের ৪৭-৪৮ পৃষ্ঠায়, হকিকাতোল-অহির ৯১-১০১,
১০৭ ও ৩০১ পৃষ্ঠায়, আরবায়িনের,
৩-৩৬-৪০ পৃষ্ঠায়, আঞ্জামেআৎহামের ৬২-৭৯ পৃষ্ঠায়, এজাজে-আহমদীর ৭
পৃষ্ঠায় ও হকিকাতোন্নবুয়তের ৮ পৃষ্ঠায় মির্জ্জা ছাহেবের স্পষ্ট নবুয়তের দাবির কথা লিখিত
আছে।
(৭) মির্জ্জা ছাহেবের
কৃষ্ণ অবতর হওয়ার দাবিঃ-
লেক্চারে-সিয়ালকোট, ৩৩ পৃষ্ঠা,
وہ خدا جو زمین و اسمان کا خدا ھے اس نے یہ میرے پر ظرھر کیا ھے اور نہ ایک دفعہ بلکہ کئی دفعہ مجکو بتلا دیا ھے کہ تو ھندون کے لئے کرشن اور مسلھانون اور عیسائیون کیلئے مسیح موعود ھے-
“ যে খোদা জমি ও আছমানের
খোদা, তিনি আমার নিকট প্রকাশ করিয়াছেন, একবার নহে,
বরং কয়েকবার আমাকে অবগত করাইয়াছেন যে, তুমি হিন্দুদের
পক্ষে কৃষ্ণ এবং মুছলমান ও খৃষ্টানদিগের পক্ষে প্রতিশ্রুত মছিহ্।”
পাঠক,
জন্মান্তরবাদ ও অবতারবাদ কাফেরদিগের মত, ইহা মুছলমানদিগের মত হইতে পারে না।
(৮) মির্জ্জা সাহেবের
খোদার পুত্র হওয়ার দাবিঃ-
হকিকাতোল-অহি, ৮৬ পৃষ্ঠা,
انت منى بمنرلة ولدى
আরবাই,
৪-২৩ পৃষ্ঠা
انت منى بمنرلة اولادى
“তুমি আমার নিকট আমার সন্তানগণের তুল্য।”
আলবোশ্রা,
১-৪৯ পৃষ্ঠা, اسمع ولدى “তুমি শুন,
হে আমার পুত্র।” (অসমাপ্ত)
(২)
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক
পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানিদের- “কাফের” ঘোষণা
( পূর্ব প্রকাশিতের
পর )
অনুবাদক - আল্হাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক
(চ) কিতাবুল বারিয়াহ্
পুস্তিকার সাত এবং আট পৃষ্ঠায় ঐ সকল প্রকাশনার তারিখ ও পৃষ্ঠা নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে
যাতে মির্জা ব্রিটিশ সরকারের উচ্ছাসিত প্রশংসা
করেছে। তিনি চব্বিশটি পুস্তিকা এবং প্যামফ্লেটের উল্লেখ করেছেন যাতে মির্জা ব্রিটিশ
সরকারের উচ্ছাসিত প্র্রশংসা করেছে। তার মৃত্যুর এগার বছর পূর্বেই ঐ পৃষ্ঠা সংখ্যা ছিল
কয়েক ডজন।
মিঃ রিয়াজুল হাসান জিলানী এই কয়েকটি উদাহারণ দিয়ে বলেন যে, “ব্রিটিশ সরকারের প্রতি মির্জার এই অটল আনুগত্য বিশেষ কারণ বা উদ্দেশ্যবিহীন ছিল
না। (মির্জা) তার অনুসারীদের জন্য ইহাকে ঈমানের
অংশ বিশেষ হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং প্রতি আনুগত্যতার স্বীকারোক্তিতেও উল্লেখ রাখেন।
যদিও কোরআন শরীফে নির্দেশ রয়েছে তথাপিও তিনি জিহাদকারও নিষেধ করেন। স্বয়ং রাজার চেয়েও
মির্জা ব্রিটিশ সরকারের প্রতি বেশ অনুগত ছিলো। কেননা আহম্মদীয়া আন্দোলনে ব্রিটিশ সরকারের
পূর্ণ সহযোগীতা ছিল এবং সরকারের নির্দেশ- “সরকার কর্তৃক নিরাপত্তার
নিশ্চয়তায় এই আন্দোলন আরম্ভ হয়েছিল। ১৮৫৭ সালের স্বাধীনতা আন্দোলনের পর সরকারের মনোযোগ
ছিল মুসলিম উম্মাহ্র মধ্যে বিভেদ এবং অনৈক্যের উদ্ভাবন এবং ইসলাম ধর্মের মধ্য থেকে
নতুন ধর্মের উদ্ভাবন। মির্জা তাদের উদ্দেশ্যকে সফলতা দেয় বিজ্ঞ উকিল মির্জা কর্তৃক
কোরআন শরীফের বিরুদ্ধে জিহাদের বিলোপ সাধনের সমালোচনা করেন। তাঁর এই বক্তব্য প্রমাণে
তিনি মির্জার লেখার উল্লেখ করেন এবং নিম্নে উল্লিখিত কিছু উদাহারণ পেশ করেনঃ-
(১) বন্ধুগন এখন জিহাদের কল্পনা ত্যাগ করুন। শরীয়ত অনুযায়ী এখন
যুদ্ধ ও গুপ্ত হত্যা নিষিদ্ধ। মসীহ এখন আবির্ভূত হয়েছেন তিনি শরীয়তে নির্দেশক। এখন
ধর্মীয় যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া নিষেধ। (جنت) জান্নাত এখন আল্লাহ্ পাক-এর নূর আসছে; যুদ্ধ ও জিহাদের সিদ্ধান্ত এখন সম্পূর্ণ অযৌত্তিক। যিনি জিহাদে অংশগ্রহণ করবেন
এবং পয়গম্বরকে অস্বীকার করবেন তিনি আল্লাহ্ পাক-এর দুশমন।” (মির্জার কবিতা তুহফা-ই-গোলাভিয়া পৃঃ ৪১ ১৯০২ সালে প্রকাশিত)
(২) ইহার (ক্রশভঙ্গ) অর্থ এই নয় যে, খৃষ্ঠানদের ঝুলানো কাঠের ক্রশ মসীহ ভেঙ্গে ফেলবেন। ইহা অন্য একটি সত্যের ইঙ্গিত
বহন করে যা আমরা উল্লেখ করেছি যে,
জিহাদ করা এখন নিষেধ। কেননা উহা (শান্তি
স্থাপন) মসীর দায়িত্ব। সুতরাং যুদ্ধাবস্থার ব্যবস্থা করা তার দায়িত্ব। এ উদ্দেশ্য আমাদের
জন্য জরুরী ছিল জিহাদ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া। সুতরাং আমরা বলেছি, ইহা এখন নিষিদ্ধ এবং জিহাদের নামে তলোয়ার বের করা বা কোন অস্ত্র উঠানো এখন নিকৃষ্ট
গুনাহ্র সামিল। (মালফুযাত ভলিউম ৪ পৃষ্ঠা; ১৯০২ ইং সালে প্রকাশিত)
(৩) প্রতিশ্রুত মসীহ
জিহাদের কর্তৃপক্ষীয় আদেশ বাতিল করেছেন। (আরবাইন ৪, পৃষ্ঠা ১৫, ১৯০০ ইং সালে প্রকাশিত)
(৪) জীবন পরিচালনার জন্য আমার নির্দেশা বলিতে যুদ্ধাবস্থার বা
সহিংসতার কোন উল্লেখ নেই। আমি বিশ্বাস করি যে, আমার অনুসারী যতই
বাড়তে থাকবে জিহাদে বিশ্বাসীদের সংখ্যা ততই কমতে থাকবে। যেহেতু আমাকে মসীহ এবং মেহদী
হিসেবে বিশ্বাস করা জিহাদে অস্বীকৃতি। (মাযমুয়া-ই-ইশতিহারাহ ভলিউম-৩, পৃষ্ঠা ১৯, প্রকাশকাল ১৮৯৮-১৯০৮
ইং সাল)
এরূপ আরোও উদাহরণ সংযোগ অপ্রয়োজনীয় যেহেতু এর সংখ্যা অনেক।
মিঃ মুজিবুর রহমান যুক্তি দেন যে, উনবিংশ শতাব্দিতে বা বিশ শতাব্দির প্রথম দিকে একমাত্র মির্জা সাহেবই
ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের নমুনা দেখাননি বরং ঐ শতাব্দিতে আরোও বেশ কয়েকজন
আলেম এবং বুদ্ধিজীবি সাম্রাজ্যবাদী ক্ষমতার প্রশংসায় লিখেছেন বা প্রত্রিকায় প্রকাশ
করেছেন।
মিঃ মুজিবুর রহমানের উদাহরণ সমূহ থেকে বুঝা যায় যে, আলেম গণ বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করে জিহাদের প্রতিবাদ করেছেন। প্রধান কারণ উল্লেখ
যোগ্য যে,
মুসরমানদের বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করা
হয়েছিল। কিন্তু তারা ধর্মীয় স্বাধীনতাও ভোগ করতো। এবং তাদের নিজস্ব শরীয়তের বিধান অনুযায়ী
পরিচালিত হতে পারতো। কিছু আলেম যে বিষয়টির বিবেচনায় জিহাদ অনুমতি যোগ্য নয় বলেছেন তাহলো, নেতৃত্ব দেয়ার কোন ইমাম ছিল না এবং যুদ্ধের কোন অস্ত্রও ছিল না। অর্থাৎ জিহাদে
জয় লাভের অসম্ভবতাই এ সকল সিদ্ধান্ত দেয়ার
উদ্দেশ্য।
মিঃ মুজিবুর রহমান যেভাবে উপস্থাপন করেছেন বিষয়টি তেমন সহজ নয়। এই বিষয়টি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করার পূর্বে এটা বলা যায় যে, প্রতিশ্রুত মসীহর নির্দেশে জিহাদ নিষিদ্ধ ঘোষণা (يضع الحرب) করাতে ইহাই বুঝায় যে, ইসলামের প্রভাবে সংখ্যায় অধিকতর হওয়ার কারণেই জিহাদের প্রয়োজন নেই। যার প্রভাবে খৃষ্টান বিরোধীদের বিধন, ক্রশ ভেঙ্গে ফেলা। শুকুর নিধন করা এবং পৃথিবীতে কোন অবিশ্বাসী না থাকা। ইহার অর্থ এই নয় যে, অবিশ্বাসীদের নিয়মনীতির প্রতিবাদ করা যাবে না। মির্জ যখন কোরআন এর জিহাদের নির্দেশ বাতিল করে, জিহাদের নিষেধাজ্ঞা উত্থাপন করে তখন জিহাদ না করার যে পিিস্থতি হওয়ার কথা সে পরিস্থিতি বিরাজমান ছিল না। (অসমাপ্ত)
আবা-৬৬,৬৭,৬৮,৬৯,৭০
0 Comments:
Post a Comment